ভারতের ডিজিটাল খাঁচায় পিনাকী, ইলিয়াসসহ একাধিক বাংলাদেশী ইউটিউবার ও টিভি চ্যানেল!

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ মে ১১ ১৭:৩৭:৪৯
ভারতের ডিজিটাল খাঁচায় পিনাকী, ইলিয়াসসহ একাধিক বাংলাদেশী ইউটিউবার ও টিভি চ্যানেল!

সত্য নিউজ: ভারত সরকার সেদেশে বিভিন্ন বাংলাদেশী অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট, সাংবাদিক এবং একাধিক মূলধারার টেলিভিশন নিউজ চ্যানেলের ইউটিউব কন্টেন্টে প্রবেশাধিকারনিষিদ্ধ(ব্লক) করেছে। এই পদক্ষেপটি ভারতের তথ্যপ্রযুক্তি আইনের অধীনে জাতীয় নিরাপত্তা ও জনশৃঙ্খলার কারণ দেখিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

শনিবার ১০ মে, অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট পিনাকী ভট্টাচার্য তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে জানান যে তার, সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন এবং ড. কনক সরওয়ারের ইউটিউব চ্যানেল ভারতে ব্লক করা হয়েছে। পরবর্তীতে জুলকারনাইন সায়ের খানও তার ইউটিউব চ্যানেল ভারতে প্রবেশযোগ্য না থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

পিনাকী ভট্টাচার্য তার পোস্টে মন্তব্য করেন, "আমার, ইলিয়াসের এবং কনকের ইউটিউব চ্যানেল ব্লক করে দেওয়া হয়েছে ভারতে। ভারতমাতা তার শত্রুদেরকে চিনে।" জুলকারনাইন সায়ের খান তার প্রতিক্রিয়ায় বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, "কোন অপরাধে যে আমার চ্যানেলও ব্লক করা হলো, বুঝতে পারছি না।"

এই ব্যক্তিগত চ্যানেলগুলো ব্লক করার আগে, শুক্রবার ৯ মে, ভারতের অভ্যন্তরে ইউটিউবে বাংলাদেশের অন্তত চারটি প্রধান টেলিভিশন চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধ করে দেওয়া হয়। এই চ্যানেলগুলো হলো – যমুনা টিভি, একাত্তর টিভি, বাংলাভিশন এবং মোহনা টিভি।বিবিসি নিউজএই খবর নিশ্চিত করে জানায় যে ভারতে এই চ্যানেলগুলো দেখতে গেলে একটি বার্তা প্রদর্শিত হচ্ছে, যেখানে লেখা – "সরকারি নির্দেশে জাতীয় নিরাপত্তা ও জনশৃঙ্খলার কারণে এই কনটেন্ট এই দেশে (ভারতে) পাওয়া যাচ্ছে না।"

ভারতের তথ্যপ্রযুক্তি (মধ্যস্থতাকারী নির্দেশিকা এবং ডিজিটাল মিডিয়া নীতিশাস্ত্র কোড) বিধিমালা, ২০২১ এবং তথ্যপ্রযুক্তি আইন, ২০০০-এর ধারা ৬৯এ অনুযায়ী, যদি সরকার কোনো তথ্যকে জাতীয় নিরাপত্তা, সার্বভৌমত্ব, অখণ্ডতা বা জনশৃঙ্খলার জন্য হুমকি বলে মনে করে, তাহলে সেই কন্টেন্ট ব্লক করার নির্দেশ দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। ডিজিটাল অধিকার এবং তথ্য যাচাইকারী বিভিন্ন সংস্থা, যেমন ডিসমিসল্যাব (DismissLab) তাদের প্রতিবেদনে এই আইনি দিকটি তুলে ধরেছে।

এর আগে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমএক্স (টুইটার)জানিয়েছিল যে তারা ভারতীয় সরকারের অনুরোধে সেদেশে প্রায় আট হাজার অ্যাকাউন্ট ব্লক করেছে।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বিষয়ক পর্যবেক্ষকরা প্রায়শই এই ধরনের পদক্ষেপ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে থাকেন।রয়টার্স (Reuters)এবংঅ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (AP)-এর মতো আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থাগুলো বিভিন্ন সময়ে ভারতের তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ব্যবহার এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতার উপর তার প্রভাব নিয়ে প্রতিবেদন করেছে। বর্তমান ঘটনাটিও ডিজিটাল পরিসরে তথ্যের অবাধ প্রবাহ এবং রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ