শেখ হাসিনা-সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ২২২ জনের বিরুদ্ধে মামলা!

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ১৩ ২০:৪৪:৪৯
শেখ হাসিনা-সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ২২২ জনের বিরুদ্ধে মামলা!

রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গুলি করে এক ব্যক্তিকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ২২২ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বাদী সোহেল রানা (৩৮) গত ৫ আগস্ট মোহাম্মদপুরের তিন রাস্তার মোড়ে ময়ূর ভিলার এলাকায় অনুষ্ঠিত ছাত্র মিছিলে অংশগ্রহণ করার সময় শেখ হাসিনা সরকারের নির্দেশে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা হামলা চালায় বলে অভিযোগ করেছেন। হামলায় সোহেল গুলিবিদ্ধ হন এবং দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন থাকার কারণে মামলার আবেদন দেরিতে করা হয়।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ওইদিন দুপুর আড়াইটার দিকে সোহেল মিছিলে ছিলেন, তখন পুলিশ ও দলীয় নেতাকর্মীরা তাঁদের ওপর হামলা চালিয়ে গুলি ছোড়েন। গুলিতে তিনি গুরুতর আহত হন। এরপর তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকেন দীর্ঘদিন। এই ঘটনাকেই কেন্দ্র করে মামলায় ২২২ জনকে আসামি করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছেলে ও সাবেক জনপ্রতিনিধি সজীব ওয়াজেদ জয়, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক মন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব মমতাজ বেগম, অভিনেত্রী শমী কায়সার, ডিএমপির সাবেক ডিবিপ্রধান হারুন অর রশিদসহ বিভিন্ন পর্যায়ের দলীয় নেতা-কর্মী ও সরকারিভাবে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা।

মোহাম্মদপুর থানার আদালতের প্রসিকিউশন বিভাগের এসআই মিজানুর রহমান জানান, মামলার এজাহার গ্রহণ করেছেন মহানগর হাকিম সেফাতুল্লাহ, যিনি আগামী ২০ জুলাইয়ের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা, সশস্ত্র হামলা, অবৈধ অস্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গের মতো গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে।

অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, হামলার সময় পুলিশ ও দলীয় সন্ত্রাসীরা বিক্ষুব্ধ জনতার মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টি করে এবং ঘটনাস্থলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের পরিবর্তে সহিংসতা বৃদ্ধি করেন। ফলে আন্দোলনকারীদের শান্তিপূর্ণ দাবি চাপা পড়ে এবং সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়ে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই মামলা এবং এতে নাম উল্লেখিত নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ অনেকটা রাজনৈতিক উত্তেজনা এবং ক্ষমতা সংগ্রামের বহিঃপ্রকাশ। তারা বলছেন, এই মামলার প্রেক্ষিতে আগামী দিনগুলোতে রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র বিতর্ক ও সামাজিক উত্তেজনার আশঙ্কা রয়েছে।

আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা এই মামলার মাধ্যমে জনস্বার্থে প্রতিষ্ঠিত ন্যায়ের পথে অটল থাকবেন এবং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে লড়াই অব্যাহত রাখবেন।

এদিকে, আওয়ামী লীগ এই মামলার বিষয়ে এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি। তবে রাজনৈতিক মহল থেকে পাওয়া কিছু প্রতিক্রিয়া থেকে জানা গেছে, তারা এই অভিযোগকে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছে এবং আইনি প্রক্রিয়ায় নিজেকে সাফ করার চেষ্টা করবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

-ইসরাত, নিজস্ব প্রতিবেদক

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ

স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ

একজন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ, সামাজিক ব্যবসার পথপ্রদর্শক এবং গণতান্ত্রিক উত্তরণের নেতৃত্বদানকারী রাষ্ট্রনায়ক—এই তিনটি পরিচয়ই এখন সমভাবে প্রযোজ্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের... বিস্তারিত