দেশে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্টের হুমকি, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ১১ দফা সতর্কতা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ১১ ১৬:২০:৩৩
দেশে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্টের হুমকি, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ১১ দফা সতর্কতা

বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসের নতুন সাব-ভ্যারিয়েন্টগুলোর সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশেও সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।পার্শবর্তী দেশে করোনার LF.7, XFG, JN.1 ও NB.1.8.1 সহ একাধিক সাব-ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হওয়ার প্রেক্ষাপটে বুধবার এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে সংক্রমণ প্রতিরোধে ১১ দফা নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর সংবাদ সম্মেলনে বলেন, "আন্তর্জাতিক ভ্রমণকারীদের মাধ্যমে দেশে সংক্রমণ বিস্তারের ঝুঁকি বেড়েছে। এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থল, নৌ ও বিমানবন্দরে আইএইচআর ডেস্কগুলোর কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে।" তিনি আরও জানান, করোনার ঝুঁকি মোকাবেলায় জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের বিষয়ে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

সংক্রমণ প্রতিরোধে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ১১ দফা নির্দেশনা:

১. জনসমাগম এড়িয়ে চলুন, উপস্থিত হতেই হলে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করুন।

২. শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ প্রতিরোধে নিয়মিত মাস্ক ব্যবহার করুন।

৩. হাঁচি-কাশির সময় বাহু বা টিস্যু দিয়ে মুখ-নাক ঢেকে রাখুন।

৪. ব্যবহৃত টিস্যু আবর্জনার ঝুড়িতে ফেলুন।

৫. বারবার সাবান-পানি বা হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলুন (কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড)।

৬. অপরিষ্কার হাতে চোখ, নাক ও মুখ স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকুন।

৭. আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শ এড়িয়ে চলুন এবং কমপক্ষে ৩ ফুট দূরত্ব বজায় রাখুন।

৮. দেশে আগত যাত্রীদের যথাযথ স্ক্রিনিং ও স্যাম্পল টেস্ট নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।

৯. স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য পর্যাপ্ত পার্সোনাল প্রটেকশন ইকুইপমেন্ট (PPE) সরবরাহ ও ব্যবহারে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

১০. সচেতনতামূলক প্রচারণা জোরদার করতে গণমাধ্যমের সহায়তা আহ্বান করা হয়েছে।

১১. নতুন কোনো উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত আইইডিসিআর (০১৪০১-১৯৬২৯৩) বা স্বাস্থ্য বাতায়নে (১৬২৬৩) যোগাযোগের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

সন্দেহজনক রোগীদের ক্ষেত্রে করণীয়:

  • অসুস্থ হলে ঘরে থাকুন এবং প্রয়োজনে হাসপাতালে যোগাযোগ করুন।
  • রোগী ও সেবাদানকারীর মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করুন।
  • নতুন উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত পরীক্ষা ও চিকিৎসা গ্রহণ করুন।

সরকারি প্রস্তুতির বিস্তারিত:

  • দেশে RT-PCR ও র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট চালু আছে।
  • পর্যাপ্ত টিকা, অক্সিজেন, ওষুধ ও চিকিৎসাসামগ্রী মজুত রাখা হয়েছে।
  • কোভিড চিকিৎসার জন্য নির্ধারিত হাসপাতাল প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
  • স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য PPE, KN95 মাস্ক, ফেইস শিল্ডসহ সুরক্ষাসামগ্রী নিশ্চিত করা হয়েছে।
  • আইসিইউ ও হাই-ডিপেন্ডেন্সি ইউনিট (HDU) সুবিধা সমৃদ্ধ হাসপাতালসমূহকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

প্রশাসনের বার্তা:

সংক্রমণ ঠেকাতে দেশের সকল স্থলবন্দর, সমুদ্রবন্দর এবং বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্যবিধি (IHR-2005) অনুযায়ী নজরদারি ও স্ক্রিনিং জোরদার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যাত্রীর শরীরে উপসর্গ থাকলে তাৎক্ষণিকভাবে পরীক্ষা ও আলাদা রাখার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে সকল নাগরিককে দায়িত্বশীল আচরণ করতে আহ্বান জানানো হয়েছে, যেন পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে পুনরায় বড় বিপর্যয় এড়ানো সম্ভব হয়।

সরকারের দেওয়া নির্দেশনাগুলো অনুসরণ করে সচেতন থাকুন, নিজে বাঁচুন, অন্যকেও বাঁচান।

-সালেহ কবির, স্টাফ রিপোর্টার।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ

স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ

একজন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ, সামাজিক ব্যবসার পথপ্রদর্শক এবং গণতান্ত্রিক উত্তরণের নেতৃত্বদানকারী রাষ্ট্রনায়ক—এই তিনটি পরিচয়ই এখন সমভাবে প্রযোজ্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের... বিস্তারিত