উদ্বোধনের আগেই বঙ্গোপসাগরে বিলীন মেরিন ড্রাইভ

কুয়াকাটায় নির্মাণাধীন ১৩০০ মিটার দীর্ঘ মেরিন ড্রাইভ সড়কের এক-তৃতীয়াংশ বঙ্গোপসাগরের উত্তাল ঢেউয়ে ভেঙে যাওয়ার ঘটনায় স্থানীয় জনমনে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। উদ্বোধনের আগেই সড়কটির এমন পরিণতিতে প্রকল্পের নকশা ও বাস্তবায়ন নিয়ে উঠেছে নানা প্রশ্ন। এ ঘটনায় গঠিত হয়েছে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বঙ্গোপসাগরের প্রবল ঢেউয়ে মাত্র দুই ঘণ্টার মধ্যেই সড়কের এক বড় অংশ সম্পূর্ণ ভেঙে যায়। কুয়াকাটা পৌরসভার হোটেল সিভিউ থেকে জাতীয় উদ্যানের ঝাউবন পর্যন্ত সৌন্দর্যবর্ধন ও পর্যটকদের চলাচলের সুবিধার্থে এই সড়ক নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়।
তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, সড়কটি নির্মাণে ছিল চরম অব্যবস্থাপনা ও অনিয়ম। কোনো রকম ফিজিবিলিটি স্টাডি ছাড়াই সমুদ্রের পানির স্তরে কাজ শুরু হয়। ফলে সামান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগেই তা ধসে পড়ে।
৪ কোটি ৮৬ লাখ টাকার এই প্রকল্পের কাজ দেওয়া হয় কুয়াকাটা পৌরসভার তৎকালীন মেয়র মো. আনোয়ার হাওলাদারের ঘনিষ্ঠ তিনটি প্রতিষ্ঠানে। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো—
- মোল্লা ট্রেডার্স (মালিক: সগীর মোল্লা, পৌর শ্রমিকলীগের সদস্য-সচিব)
- আবরার ট্রেডার্স (মালিক: বেলাল হোসেন, পৌর শ্রমিকলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক)
- এসএম ট্রেডার্স (মালিক: সাদ্দাম মাল)
এ তিন প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যে প্রায় ১ কোটি ৫০ লাখ টাকার বিল উত্তোলন করেছে।
এসএম ট্রেডার্সের মালিক সাদ্দাম মাল দাবি করেন, তিনি সরাসরি কাজটি করেননি, সাব-কন্ট্রাক্ট দিয়েছেন রুহুল আমিন নামে এক ব্যক্তিকে। তিনি স্বীকার করেন, প্রকল্পটি ছিল পৌরসভার একটি "অপরিকল্পিত সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্প", যা সৈকতের ভাঙন প্রতিরোধে কার্যকর নয়।
সাবেক মেয়র আনোয়ার হাওলাদার বলেন, কাজ পাইয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে তাঁর কোনো হাত নেই। তিনি আরও বলেন, প্রকল্পটি যেখানে ছিল, সেখান থেকে অন্তত ১০০ ফুট সাগরের দিকে সরে গেছে, যা তার আমলে পরিকল্পনার মধ্যে ছিল না। তিনি গাইডওয়াল নির্মাণের কথা ভেবেছিলেন, তবে তা বাস্তবায়ন করতে পারেননি।
১৩০০ মিটার সড়কের এক-তৃতীয়াংশ বিলীন হওয়ার ঘটনায় উপজেলা প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে। কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম জানিয়েছেন,“কুয়াকাটা পৌর প্রশাসক ইয়াসীন সাদেকের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সাত কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
তবে স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, শুধু তদন্ত নয়—এই ভয়াবহ ব্যর্থতার জন্য দায়ীদের শাস্তি এবং প্রকল্পে লুটপাটকারীদের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক স্থানীয় বাসিন্দা জানান, সমুদ্রতীরবর্তী এই স্পর্শকাতর এলাকায় এমন প্রকল্প নেওয়ার আগে সঠিক সমীক্ষা ও পরিকল্পনা প্রয়োজন ছিল। রাজনৈতিক সুবিধাভোগীদের কাজ পাইয়ে দিতে গিয়ে দুর্বল নির্মাণকাজ ও অদূরদর্শী সিদ্ধান্তই এই বিপর্যয়ের মূল কারণ বলে মনে করছেন তারা।
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে চার্জ দাখিল, বিটিভিতে সরাসরি সম্প্রচার
- চীন না ভারত? উন্নয়ন না আনুগত্য? বুলেট ট্রেন বলছে স্পষ্ট জবাব
- অবশেষে বিসিবি সভাপতি ফারুককে নিয়ে মুখ খুললেন আসিফ
- বিশ্বশক্তির নজর এখন বাংলাদেশে: খনিজ ভাণ্ডারের নতুন মানচিত্র
- হালদা নদীতে ডিম ছাড়ল রুই জাতীয় মা মাছ, সংগ্রহ প্রায় ১৪ হাজার কেজি নিষিক্ত ডিম
- নতুন বিসিবি সভাপতিবুলবুলের কাছে আশরাফুলের চাওয়া
- শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান: রাষ্ট্র নির্মাণের এক উজ্জ্বল প্রতিমূর্তি
- ঈদের দিন বৃষ্টি হবে কি?
- জবি’র সাবেক অধ্যাপক আনোয়ার বেগম হত্যাচেষ্টা মামলায় সুত্রাপুরে আটক
- চট্টগ্রাম বন্দরে নতুন ভোর: দক্ষিণ এশিয়ার তেলের ‘রাজসিংহাসন’ দখলের পথে বাংলাদেশ?
- ধ্বংস থেকে নেতৃত্ব: ৫ আগস্ট থেকে যেভাবে শুরু হলো অর্থনীতির পুনর্জাগরণ
- ধর্ম-সংস্কৃতি উপেক্ষা নয়: সংবিধান সংশোধনে ১৮০ শিক্ষকের সরব প্রতিবাদ
- সোনাক্ষীর ‘নিকিতা রায়’-এর মুক্তি পেছাল, ঘোষণা দিলেন নতুন তারিখ
- দেশের ৬ জেলায় ৮০ কিলোমিটার বেগে ঝড়-বৃষ্টির শঙ্কা, নদীবন্দরে ২ নম্বর সতর্কতা
- ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ৪০৫ কোটি টাকার লোকসান