সারাদেশে ৮ হাজারের বেশি মোবাইল টাওয়ার বিচ্ছিন্ন

সারাদেশ ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ মে ৩০ ১৮:১১:১৫
সারাদেশে ৮ হাজারের বেশি মোবাইল টাওয়ার বিচ্ছিন্ন

দেশব্যাপী বিরাজমান নিম্নচাপ, ঝড়ো হাওয়া এবং উপকূলীয় এলাকায় দেখা দেওয়া জলোচ্ছ্বাসের প্রভাবে টেলিযোগাযোগ খাতে চরম বিপর্যয় নেমে এসেছে। মূলত দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থায় ব্যাঘাত সৃষ্টি হওয়ায় মোবাইল ফোন নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেট সেবায় বড় ধরনের সমস্যা দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে পাঁচ হাজারেরও বেশি মোবাইল টাওয়ার বা বেজ স্টেশন বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে, যার ফলে এসব স্থানে সিগনাল সংযোগ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে গেছে।

শুক্রবার (৩০ মে) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া একটি স্ট্যাটাসে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ তৈয়্যব আহমদ এ উদ্বেগজনক তথ্য তুলে ধরেন। তিনি জানান, প্রবল বর্ষণ, ঝোড়ো হাওয়া এবং জলোচ্ছ্বাসের কারণে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিদ্যুৎ সঞ্চালন ব্যাহত হচ্ছে। এরই প্রেক্ষিতে মোবাইল টাওয়ারগুলো পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ না পেয়ে কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে। বিশেষ করে পল্লী বিদ্যুৎ বিতরণ এলাকা এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলে এই সংকট আরও প্রকট হয়ে উঠেছে।

ফয়েজ তৈয়্যব তাঁর পোস্টে আরও উল্লেখ করেন, এখন পর্যন্ত টেলিযোগাযোগ সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রায় ৫ হাজার মোবাইল টাওয়ার বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে অচল হয়ে আছে। পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ আকার ধারণ করেছে বরিশাল, সিলেট দক্ষিণ, টাঙ্গাইল, চাঁদপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা উত্তর, কুমিল্লা, নোয়াখালী এবং চট্টগ্রাম দক্ষিণ অঞ্চলে। এসব এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ একেবারে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ায় টেলিকম সেবাও কার্যত মুখ থুবড়ে পড়েছে।

টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থার তথ্যমতে, বর্তমানে দেশের মোট মোবাইল টাওয়ার বা বেজ স্টেশনের সংখ্যা প্রায় ১৮ হাজারের মতো। এর মধ্যে ৮ হাজার ২৬২টি টাওয়ার বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে, যা মোট সাইটের প্রায় ৪৪ শতাংশ। এ মুহূর্তে কেবল ৬৪.২ শতাংশ টাওয়ার সচল রয়েছে, অর্থাৎ প্রায় ৩৫.৮ শতাংশ টাওয়ার এখনও সম্পূর্ণভাবে কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি।

এমন সংকটময় পরিস্থিতিতে টেলিকম অপারেটর ও টাওয়ার পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বিকল্প উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। তারা জরুরি ভিত্তিতে কিছু সাইটে পোর্টেবল জেনারেটর সংযুক্ত করেছে, যাতে নেটওয়ার্ক আংশিক হলেও সচল রাখা যায়। বর্তমানে ৬২৪টি মোবাইল টাওয়ারে এসব জেনারেটর যুক্ত করা হয়েছে এবং আরও ৫০৪টি সাইটে জেনারেটর স্থাপনের কাজ চলছে। সংশ্লিষ্ট কর্মীরা ঝুঁকি নিয়েও বৃষ্টিপাত ও প্রতিকূল পরিবেশ উপেক্ষা করে রাতদিন কাজ করে যাচ্ছেন যাতে করে দ্রুত সময়ের মধ্যে টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক করা সম্ভব হয়।

এদিকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার এই বিপর্যয় শুধু সাধারণ মানুষের যোগাযোগের ক্ষেত্রেই বাধা সৃষ্টি করছে না, এর প্রভাব পড়ছে ব্যাংকিং, ই-কমার্স, স্বাস্থ্যসেবা এবং জরুরি উদ্ধার তৎপরতার ওপরও। তাই যত দ্রুত সম্ভব বিদ্যুৎ সরবরাহ পূর্ণভাবে পুনরায় চালু করা না গেলে, এই সঙ্কট আরও গভীরতর হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এই পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট সব সংস্থাকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানানো হয়েছে, যাতে সাধারণ মানুষ আবার নিরবিচারে টেলিযোগাযোগ সুবিধা ভোগ করতে পারে এবং জাতীয় তথ্যপ্রযুক্তি অবকাঠামোর ওপর নির্ভরশীল সেবাগুলোও স্থিতিশীল থাকে।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যযুদ্ধ: বৈশ্বিক অর্থনীতি এবং ভবিষ্যৎ প্রতিযোগিতা

চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যযুদ্ধ: বৈশ্বিক অর্থনীতি এবং ভবিষ্যৎ প্রতিযোগিতা

বিশ্ব অর্থনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে, এবং এই পরিবর্তনটির মূল কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধ।... বিস্তারিত