ভরসা নয়, দুর্ভোগের নাম ফরিদপুরের ‘ভাজনডাঙ্গা সেতু’

ফরিদপুর সদর উপজেলার ভাজনডাঙ্গা ঘাট এলাকায় পদ্মার শাখা নদীর ওপর ৫৮০ মিটার দীর্ঘ একটি সেতু নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল সাত বছর আগে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)-এর বাস্তবায়নে প্রায় ৭৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিতব্য পিএসসি গার্ডার সেতুটি এখনো অসম্পূর্ণ থেকে গেছে। এতে দুই পাড়ের নর্থচ্যানেল ও ডিগ্রিচর ইউনিয়নের প্রায় ৫০ হাজার মানুষকে প্রতিদিন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষাগমন ও কৃষিপণ্য বাজারজাতকরণে চরম অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছেন তারা।
চরাঞ্চলের এই দুই ইউনিয়নের মানুষ প্রতিনিয়ত ঝুঁকি নিয়ে ট্রলার ও ইঞ্জিনচালিত নৌকায় পারাপার হন। বর্ষাকালে নদী উত্তাল হয়ে উঠলে নৌযান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তখন রোগী পরিবহন তো দূরের কথা, সাধারণ যাতায়াতও হয়ে ওঠে দুঃসাধ্য। শিশুরা স্কুলে পৌঁছাতে পারে না, পরীক্ষাও মিস করে অনেক সময়। কৃষকদের উৎপাদিত ফসল বাজারে পৌঁছায় না, ফলে লোকসান গুনতে হয়। এমন বাস্তবতায় উন্নয়নের প্রতিশ্রুত সেতু এখন যেন অভিশাপে পরিণত হয়েছে।
২০১৮ সালের শেষ দিকে শুরু হয় সেতুর নির্মাণ। দায়িত্ব পায় আলোচিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রাফিয়া কনস্ট্রাকশন। কিন্তু প্রতিষ্ঠানের মালিক রুবেল ও বরকত ২০২০ সালে দুর্নীতির মামলায় গ্রেফতার হলে কাজ বন্ধ হয়ে যায় প্রায় দুই বছর। ২০২২ সালের নভেম্বরে নতুন করে কার্যাদেশ দেওয়া হয় জান্নাত কনস্ট্রাকশন লিমিটেড এবং দি নির্মিত নামের দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে। তারপরও অগ্রগতি হয়েছে মাত্র ৬০–৬৫ শতাংশ।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানাচ্ছেন, বর্ষা মৌসুমে কাজ করা সম্ভব নয়। জান্নাত কনস্ট্রাকশনের সাইট ম্যানেজার আবু হানিফ জানান, বাকি কাজ শেষ করতে আরও দুই বছর সময় প্রয়োজন হবে। এলজিইডির ফরিদপুর সদর উপজেলার প্রকৌশলী দেবাশীষ বাকচী বলছেন, চলতি বছরের জুন পর্যন্ত ঠিকাদারের সময়সীমা রয়েছে এবং তারা সময়মতো কাজ শেষ করার চেষ্টা করছেন।
তবে এলাকার মানুষ আর আশ্বাসে ভরসা পাচ্ছেন না। চরসুলতানপুর গ্রামের স্কুলছাত্র ইমন শেখ বলেন, “নদী পার না হতে পারলে স্কুলে পৌঁছাতে পারি না, পরীক্ষা মিস হয়ে যায়। ব্রিজটা হলে জীবনটা সহজ হয়ে যেত।” কৃষক মতিউর রহমান বলেন, “ফসল তুলেও বাজারে নিতে পারি না, লোকসান হয়।” আর গৃহবধূ রহিমা বেগমের কণ্ঠে ফুটে ওঠে অসহায়ত্ব“রাতে কেউ অসুস্থ হলে হাসপাতালে নেওয়ার উপায় নেই, নৌকা না পেয়ে চোখের সামনে ছেলের কষ্ট দেখা ছাড়া কিছুই করতে পারিনি।”
উন্নয়নের স্লোগানে যেখানে গ্রাম-শহরের ব্যবধান কমিয়ে আনার কথা বলা হয়, সেখানে এই অবহেলিত সেতু যেন রাষ্ট্রীয় উদাসীনতার এক করুণ নিদর্শন হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্থানীয়দের প্রশ্ন, আর কত বছর অপেক্ষা করতে হবে একটি সেতুর জন্য, যার প্রয়োজনীয়তা শুধু উন্নয়ন নয়, জীবন রক্ষার সঙ্গেও ওতপ্রোতভাবে জড়িত?
-রফিক, নিজস্ব প্রতিবেদক
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে চার্জ দাখিল, বিটিভিতে সরাসরি সম্প্রচার
- হালদা নদীতে ডিম ছাড়ল রুই জাতীয় মা মাছ, সংগ্রহ প্রায় ১৪ হাজার কেজি নিষিক্ত ডিম
- শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান: রাষ্ট্র নির্মাণের এক উজ্জ্বল প্রতিমূর্তি
- জবি’র সাবেক অধ্যাপক আনোয়ার বেগম হত্যাচেষ্টা মামলায় সুত্রাপুরে আটক
- ঈদের দিন বৃষ্টি হবে কি?
- চট্টগ্রাম বন্দরে নতুন ভোর: দক্ষিণ এশিয়ার তেলের ‘রাজসিংহাসন’ দখলের পথে বাংলাদেশ?
- সোনাক্ষীর ‘নিকিতা রায়’-এর মুক্তি পেছাল, ঘোষণা দিলেন নতুন তারিখ
- তারকা পরিচিতি: রক্ষাকবচ না কি সমাজবিমুখ অব্যাহতি?
- দেশের ৬ জেলায় ৮০ কিলোমিটার বেগে ঝড়-বৃষ্টির শঙ্কা, নদীবন্দরে ২ নম্বর সতর্কতা
- সড়ক দুর্ঘটনায় সেনা কর্মকর্তা নিহত
- ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ৪০৫ কোটি টাকার লোকসান
- ধ্বংস থেকে নেতৃত্ব: ৫ আগস্ট থেকে যেভাবে শুরু হলো অর্থনীতির পুনর্জাগরণ
- জেনে নিন ঈদের ছুটিতে কোন কোন এলাকায় ব্যাংক খোলা থাকবে
- “ভারতের দালালরা ঘাপটি মেরে বসে আছে”: মুফতি রেজাউল করিম
- বিএনপির সালাউদ্দিনকে নিয়ে কি লিখলেন প্রেস সচিব শফিকুল?