ভারতে ছয় বাংলাদেশি টিভি চ্যানেল বন্ধ ইউটিউবে

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ মে ১০ ১৪:১৪:১৪
ভারতে ছয় বাংলাদেশি টিভি চ্যানেল বন্ধ ইউটিউবে

সত্য নিউজ: জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত কারণ দেখিয়ে ভারতে বাংলাদেশের ছয়টি স্বীকৃত টেলিভিশন চ্যানেলের ইউটিউব সম্প্রচার বন্ধ করেছে ইউটিউব কর্তৃপক্ষ। এর ফলে ভারতীয় ভৌগোলিক অবস্থান থেকে এই চ্যানেলগুলোর ইউটিউব কনটেন্ট আর দেখা যাচ্ছে না। বিষয়টি ঘিরে শুরু হয়েছে কূটনৈতিক ও তথ্যপ্রযুক্তি-ভিত্তিক আলোচনার নতুন অধ্যায়।

প্রতিবন্ধিত চ্যানেলগুলো

প্রথমে যমুনা টিভি, একাত্তর টিভি, বাংলাভিশন এবং মোহনা টিভির সম্প্রচার বন্ধ হওয়ার কথা জানানো হয়। পরে ডিসমিস ল্যাব নামে তথ্য যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান হালনাগাদ প্রতিবেদন দিয়ে জানায়, সময় টিভি ও ডিবিসি নিউজের ইউটিউব চ্যানেলও ভারত থেকে ব্লক করে দেওয়া হয়েছে। এই ছয়টি চ্যানেলই ইউটিউব ভেরিফায়েড এবং এদের সম্মিলিত সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা ৫ কোটির বেশি।

ভারতীয় ভূ-অবস্থান থেকে চ্যানেলগুলো দেখতে গেলে ইউটিউবের স্ক্রিনে একটি বার্তা ভেসে উঠছে: “এই কনটেন্টটি বর্তমানে এই দেশে প্রবেশযোগ্য নয়। কারণ, এটি জাতীয় নিরাপত্তা বা জনশৃঙ্খলা–সংক্রান্ত সরকারি আদেশের আওতায় রয়েছে।”

বাংলাদেশ সরকারের প্রতিক্রিয়া

বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি জানান, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) মাধ্যমে ইউটিউবের কাছে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা চাওয়া হবে এবং আগামী দুই কর্মদিবসের মধ্যেই এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠানো হবে।

ফয়েজ আহমদ বলেন, “এসব চ্যানেল বৈধভাবে সম্প্রচার করে আসছে। এদের বিরুদ্ধে ভুয়া তথ্য প্রচার বা উসকানিমূলক কনটেন্টের কোনো অভিযোগ নেই। ইউটিউব যদি বন্ধের যৌক্তিক ব্যাখ্যা দিতে না পারে, তবে ধরে নিতে হবে, এটি ভারতের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত।” তিনি আরও জানান, এর জবাবে বাংলাদেশও প্রতিক্রিয়ামূলক পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবে।

পাল্টা ব্যবস্থার ইঙ্গিত

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব দাবি করেন, ভারতের কিছু গণমাধ্যম—বিশেষ করে রিপাবলিক বাংলা—বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নিয়মিত ভুল ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে আসছে। “আমাদের হাতে এসব প্রচারের যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে। প্রয়োজনে আমরা সেই চ্যানেলগুলোর বিরুদ্ধেও অনুরূপ পদক্ষেপ নিতে পারি।”

তিনি আরও বলেন, “ভারতে অবস্থানরত বাংলাদেশি প্রবাসীরা এসব চ্যানেল নিয়মিত দেখেন। ফলে তাদের ভোক্তা অধিকার ক্ষুণ্ন হচ্ছে। এই সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক কনজিউমার রাইটস নীতিরও লঙ্ঘন।”

বিশ্লেষকদের দৃষ্টিভঙ্গি

তথ্যপ্রযুক্তি ও কনটেন্ট নীতিমালার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন পদক্ষেপ শুধু কনটেন্ট নিয়ন্ত্রণ নয়, বরং আন্তর্জাতিক সম্পর্কেও প্রভাব ফেলতে পারে। এই ঘটনায় বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের সূক্ষ্ম ভারসাম্যে এক ধরনের টানাপোড়েন সৃষ্টি হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেছেন তারা।

তথ্য ও গণমাধ্যম ব্যবস্থাপনায় উন্মুক্ত ও দ্বিপাক্ষিক যোগাযোগ চ্যানেল বজায় রাখার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন বিশেষজ্ঞরা, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের সংকট এড়ানো যায়।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ