শহরের বুকে ‘গণপিটুনি’ ঢাবি শিক্ষার্থীদের! চক্রের ৩ সদস্য গ্রেপ্তার

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে চাঁদনী চক মার্কেটের ব্যবসায়ীদের চরম অমানবিক আচরণের ঘটনায় উত্তাল হয়ে উঠেছে রাজধানী। কাপড় কিনতে গিয়ে এক ছাত্রীকে হেনস্তা ও অশালীন মন্তব্যের প্রতিবাদ করায় বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত ও নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ, দায়ের করা হয়েছে মামলা।
ঘটনা ঘটে সোমবার (২৬ মে) রাত সাড়ে ৮টার দিকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাহেদুল ইসলাম, আয়াজুর রহমান এবং তাঁদের এক নারী সহপাঠী চাঁদনী চক মার্কেটে কাপড় কিনতে যান। দামাদামির একপর্যায়ে দোকানদার ওই ছাত্রীকে উদ্দেশ্য করে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করে। সঙ্গে থাকা দুই শিক্ষার্থী প্রতিবাদ করতেই উত্তেজনা ছড়ায়। অভিযোগ অনুযায়ী, দোকানের ম্যানেজারসহ আশপাশের দোকানদাররা দলবদ্ধ হয়ে দুই ছাত্রের ওপর হামলা চালায়। একপর্যায়ে শাহেদুল ইসলামকে একটি কক্ষে প্রায় ৪০ মিনিট আটকে রেখে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়, দেওয়া হয় প্রাণনাশের হুমকিও।
খবর ছড়িয়ে পড়লে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ঘটনাস্থলে ছুটে যান এবং নিউ মার্কেট থানার সামনে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম, প্রক্টর অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমদ এবং বিভিন্ন হলের প্রাধ্যক্ষগণ। আহত শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টার এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
ঢাবি প্রশাসন ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ জানানো হয়েছে এবং ভবিষ্যতে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
এ ঘটনায় ৫ জনের নাম উল্লেখসহ আরও ৫০ জন অজ্ঞাতনামা ব্যবসায়ীকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ ইতোমধ্যে ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে এবং বাকি অভিযুক্তদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার আশ্বাস দিয়েছে নিউ মার্কেট থানা পুলিশ।
থানায় ঢুকে এএসআইকে ছুরিকাঘাত, পরদিন মিলল যুবকের লাশ
গাইবান্ধার সাঘাটা থানায় এক অজ্ঞাত যুবকের আচরণ ঘিরে সৃষ্টি হয়েছে চাঞ্চল্য। বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) রাতে থানার ভেতরে ঢুকে পুলিশের এক সহকারী উপপরিদর্শককে (এএসআই) ছুরিকাঘাত করার পর পালিয়ে যাওয়া ওই যুবকের মরদেহ পরদিন সকালে কাছাকাছি বিদ্যালয়ের পুকুর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাত আনুমানিক ১০টার দিকে এক যুবক আচমকাই সাঘাটা থানার মূল ফটক পেরিয়ে ভেতরে ঢুকে পড়ে। তখন ডিউটিতে থাকা কনস্টেবল সেরাজুল ইসলামের কাছ থেকে রাইফেল ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন তিনি। বাধা দিতে গেলে এএসআই মহসিন আলীর ওপর ছুরি দিয়ে আক্রমণ চালান তিনি। এতে গুরুতর আহত হন ওই পুলিশ কর্মকর্তা। ঘটনার পর হামলাকারী দৌঁড়ে থানার পাশের পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের পুকুরে ঝাঁপ দেন এবং সেখানেই নিখোঁজ হয়ে যান।
রাতভর অভিযান চালানোর পর শুক্রবার (২৫ জুলাই) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল কচুরিপানায় ঢাকা পুকুরের নিচ থেকে যুবকের মরদেহ উদ্ধার করে। এ বিষয়ে গাইবান্ধা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারী পরিচালক মো. মাহমুদুল হাসান বলেন, “ঘটনার পর থেকেই উদ্ধার কাজ শুরু করা হয়। ধারণা করছি, মরদেহ কচুরিপানার নিচে আটকে ছিল।”
পরে মরদেহটি সাঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সাঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাদশা আলম জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, যুবকটি মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন। মরদেহের পকেট থেকে গাইবান্ধা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের একটি প্রবেশপত্র পাওয়া গেছে। সেখানকার তথ্য অনুযায়ী, তার নাম সাজু মিয়া, পিতা দুলাল মিয়া ও মাতা রিক্তা বেগম। প্রবেশপত্রে থাকা ছবি ও তথ্য যাচাই করে পরিচয় নিশ্চিতের চেষ্টা চলছে।
এএসআই মহসিন আলীর আঘাত গুরুতর না হলেও তাঁকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। পুলিশ ঘটনাটিকে বিচ্ছিন্ন নাকি পূর্বপরিকল্পিত তা খতিয়ে দেখছে। পুরো ঘটনার পেছনে অন্য কোনো উদ্দেশ্য বা উসকানি আছে কি না, সেটিও তদন্তের আওতায় আনা হয়েছে।
-রফিক, নিজস্ব প্রতিবেদক
গোপালগঞ্জে এনসিপি নেতাদের হত্যার নির্দেশ দেন শেখ হাসিনা, লাইভে এসে নির্দেশনা দেন সাদ্দাম!
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ‘১৬ জুলাই: মার্চ টু গোপালগঞ্জ’ কর্মসূচি পণ্ড করতে পরিকল্পিতভাবে সংঘটিত হয় সন্ত্রাসী হামলা। এনসিপির অভিযোগ, ওই হামলার পেছনে ছিল ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরাসরি নির্দেশনা। জানা গেছে, ভারত থেকে মোবাইল ফোনে গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাদের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করেন শেখ হাসিনা এবং এনসিপির শীর্ষ নেতাদের হত্যা করে দলটির গোপালগঞ্জ কর্মসূচি ধ্বংস করে দেওয়ার নির্দেশ দেন। তার পাঠানো একাধিক অডিও বার্তাও এই ঘটনার প্রমাণ হিসেবে উঠে এসেছে।
ভয়াবহ অডিও বার্তায় শেখ হাসিনার কণ্ঠ
যুগান্তরের হাতে থাকা একটি অডিও বার্তায় শোনা যায়, শেখ হাসিনা গোপালগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান পিয়ালকে বলেন, “ওরা নাকি গোপালগঞ্জে যাচ্ছে। টুঙ্গিপাড়ায় আমার বাবার কবর ভেঙে ফেলার ঘোষণা দিয়েছে। এর আগে ৩২ নম্বরের বাড়ি গুঁড়িয়ে দিয়েছে। এবার টুঙ্গিপাড়ায় হামলা চালাবে। তোমরা বসে আছ কেন? প্রতিহত করো। ওদের কাউকে যেন গোপালগঞ্জের মাটি থেকে জীবিত ফিরে যেতে না দেওয়া হয়।”
আরেকটি অডিও বার্তায় শেখ হাসিনাকে গোপালগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নিউটন মোল্লাকে বলতে শোনা যায়, “ওরা আশপাশের জেলা থেকে লোক জড়ো করছে। পিরোজপুর, বাগেরহাট, খুলনা, ফরিদপুর—সব দিক থেকে ঢুকবে গোপালগঞ্জে। একটাই নির্দেশ—প্রতিহত করো। যদি টুঙ্গিপাড়ায় ঢুকেই পড়ে, একজনও যেন জীবিত না ফিরে যায়।”
হামলার বাস্তবায়নে মাঠপর্যায়ে সহিংসতা
এই অডিও বার্তাগুলোর পরদিনই, ১৭ জুলাই সকালে গোপালগঞ্জ পৌর পার্কে এনসিপির শান্তিপূর্ণ সমাবেশের দিন আতাউর রহমান পিয়ালের নেতৃত্বে পুলিশের গাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও আগুন লাগানো হয়। একইদিন শহরের মোহাম্মদপাড়ায় এনসিপি নেতাদের গাড়িবহরে গুলি ও বোমা হামলাও চালানো হয়।
ভারতে ও লন্ডনে থাকা নেতাদের সমন্বয় ও উসকানি
এই হামলার পেছনে শুধু ছাত্রলীগ নয়, জড়িত ছিল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও। অভিযোগ রয়েছে, কলকাতা থেকে শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ ফুপাত ভাই ও গোপালগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম হামলাকারীদের সমন্বয় করেন। লন্ডন থেকে তদারকি করেন প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ফরিদপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান এবং শরীয়তপুর-১ এর সাবেক সাংসদ ইকবাল হোসেন অপু। গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহবুব আলী খান ও সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল আলম কাজল মাঠপর্যায়ের তৎপরতা পরিচালনা করেন।
লাইভে এসে নির্দেশনা দেন সাদ্দাম
কলকাতায় আত্মগোপনে থাকানিষিদ্ধঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ফেসবুক লাইভে এসে সরাসরি বলেন, “ওদের প্রতিহত করতে হবে, কাউকে ছেড়ে দিও না।” ওই লাইভ থেকেই এনসিপির কর্মসূচিতে হামলার নির্দেশনা দেওয়া হয় বলে জানা গেছে।
নারীদের সংগঠনে জড়িত মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী
এনসিপির অভিযোগ অনুযায়ী, কলকাতায় আত্মগোপনে থাকা মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী ও শফিকুল আলম কাজলের স্ত্রী ইয়াসমিন আলম স্থানীয় নারী নেত্রীদের সংঘবদ্ধ করে এনসিপি কর্মীদের ওপর হামলায় অংশগ্রহণ করান। পরে পুলিশ তাকে আটক করে।
গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর শেখ হাসিনা বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে। এনসিপির ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচি ইতোমধ্যেই দেশজুড়ে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এই কর্মসূচির অংশ হিসেবে ১৭ জুলাই গোপালগঞ্জে সমাবেশ ও রোডমার্চের আয়োজন করে এনসিপি। গোপালগঞ্জে কর্মসূচি শেষে দলটির শরীয়তপুরের জাজিরায় যাওয়ার কথা ছিল।
শুরু থেকেই আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনগুলো এই পদযাত্রাকে ঠেকাতে মরিয়া হয়ে ওঠে। এনসিপির ভাষ্য অনুযায়ী, ‘গোপালগঞ্জে ঢুকতে দেওয়া হলেও, বের হতে দেওয়া হবে না’—এই ছিল শেখ হাসিনা ও তার ঘনিষ্ঠ মহলের নির্দেশনা। এবং সেই অনুযায়ী পরিকল্পনা, উসকানি ও হামলা—সবই সমন্বিতভাবে চালানো হয়।
যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় নারীর দুর্ধর্ষ চুরি, মার্কিন ভিসা বাতিলের হুঁশিয়ারি
যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় রাজ্যের একটি ডেইলি শপিং স্টোর থেকে এক ভারতীয় নারী প্রায় ১ লাখ ১০ হাজার টাকার (১৩০০ মার্কিন ডলার) পণ্য চুরি করে পালানোর সময় হাতেনাতে ধরা পড়েছেন। এ ঘটনার পর মার্কিন দূতাবাস ভারতসহ বিদেশি ভ্রমণকারীদের জন্য একটি ভিসা সংক্রান্ত সতর্কতা জারি করেছে, যেখানে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে—চুরি, ডাকাতি কিংবা সহিংসতায় জড়ালে ভিসা বাতিল বা ভবিষ্যতে ভিসা পাওয়ার যোগ্যতা হারানোর ঝুঁকি রয়েছে।
ঘটনার বিবরণ
এনডিটিভি-র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছে গত ১ মে, ইলিনয়ের একটি সুপারশপে। অভিযুক্ত ভারতীয় নারী দোকানে প্রবেশ করে সাত ঘণ্টার বেশি সময় ধরে বিভিন্ন পণ্য বাছাই করছিলেন। একপর্যায়ে তিনি দোকানের পশ্চিম গেট দিয়ে কোনো মূল্য পরিশোধ না করেই বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন।
দোকানের এক কর্মচারী বিষয়টি লক্ষ্য করে তাকে থামান এবং চ্যালেঞ্জ করেন। ঘটনাটি ভাইরাল হয়ে পড়ে এবং পরে স্থানীয় পুলিশের বডিক্যাম ফুটেজও প্রকাশ্যে আসে। ফুটেজে দেখা যায়, কর্মচারী বলছেন, “এই মহিলা সাত ঘণ্টা ধরে দোকানে ঘুরছিলেন, জিনিস তুলছিলেন, ফোনে ব্যস্ত ছিলেন, কিন্তু কিছু না দিয়েই বেরিয়ে যাচ্ছিলেন।”
পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে ওই নারী দাবি করেন, তিনি পণ্যের দাম পরিশোধ করতে চেয়েছিলেন। তবে তখনই পুলিশ তাকে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে থানায় নিয়ে যায়। এক পুলিশ কর্মকর্তা তাকে প্রশ্ন করেন, “আপনার দেশে কি চুরি বৈধ? আমার তো মনে হয় না।”
যদিও তাকে তাৎক্ষণিকভাবে গ্রেফতার করা হয়নি, তবে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তার বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ গঠন করা হয়েছে এবং আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মার্কিন দূতাবাসের হুঁশিয়ারি
এই ঘটনার পর ভারতের মার্কিন দূতাবাস সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স (সাবেক টুইটার)–এ একটি সতর্কবার্তা প্রকাশ করে। বার্তায় বলা হয়, “যুক্তরাষ্ট্রে হামলা, চুরি বা ডাকাতির মতো অপরাধ শুধু আইনি ঝামেলায় ফেলবে না, বরং এতে আপনার ভিসা বাতিল হতে পারে এবং ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণের যোগ্যতা হারাতে পারেন।”
দূতাবাস আরও বলেছে, “মার্কিন নাগরিকেরা আইন মেনে চলে এবং আশা করা হয়, বিদেশি দর্শনার্থীরাও একইভাবে আইনশৃঙ্খলা মেনে চলবেন।”
ভিসা ও অভিবাসন ঝুঁকি
যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী, চুরি, জালিয়াতি, ডাকাতি বা বেআইনি প্রবেশের মতো অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হলে তা শুধু কারাদণ্ডেই সীমাবদ্ধ থাকে না, বরং বিদেশি নাগরিকের অভিবাসন বা পর্যটন ভিসা বাতিল হতে পারে এবং ভবিষ্যতে পুনঃভিসা প্রাপ্তিও অসম্ভব হয়ে উঠতে পারে।
এই ঘটনায় মার্কিন দূতাবাসের সতর্কতা মূলত একটি কড়া বার্তা—যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত বা সেখানে যেতে ইচ্ছুক বিদেশি নাগরিকদের জন্য। বিশেষ করে ভারতীয় শিক্ষার্থী, পর্যটক ও অভিবাসন প্রত্যাশীদের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ও বাস্তবসম্মত সতর্কসংকেত।
বিশ্লেষকদের মতে, আন্তর্জাতিক ভ্রমণে আইন লঙ্ঘনের ঘটনা শুধু ব্যক্তিগত নয়, বরং রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে নাগরিকদের ওপর আস্থার প্রশ্নও তৈরি করে। তাই ভিসা পাওয়া বা বিদেশে সম্মানের সঙ্গে অবস্থানের জন্য সুনাগরিকসুলভ আচরণ অপরিহার্য।
মিটফোর্ডে ভাঙারি ব্যবসায়ীর হত্যাকাণ্ডে নতুন মোড়
পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগ (৩৯) কে পিটিয়ে, ইট-পাথর ছুঁড়ে এবং নির্মম ভাবে হত্যার ঘটনাটি শুধু একটি নৃশংস হত্যা না, বরং এলাকার ব্যবসায়িক স্বার্থ ও চাঁদাবাজির এক ভয়াবহ সংকটের প্রতিফলন। হত্যাকাণ্ডের সূত্র ধরে জানা যায়, সোহাগ দীর্ঘদিন ধরে মহিন নামের এক চাঁদাবাজ গ্রুপের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে পড়ে। মহিন গ্রুপ মাসিক ফিক্সড চাঁদা আদায়ের মাধ্যমে মিটফোর্ড এলাকা ও আশপাশের ব্যবসায়িক নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখে। সোহাগের দোকান ‘সোহানা মেটাল’ ছিল ভাঙারি ব্যবসার জন্য সুপরিচিত।
তবে সোহাগ চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানায় এবং মহিন গ্রুপের নির্দিষ্ট চাঁদার হার মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হয়। এ কারণে দুই পক্ষের মধ্যে তীব্র মতবিরোধ এবং হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পুলিশ জানায়, পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য তাদের মধ্যকার দ্বন্দ্ব সাময়িক মিটমাট হয়, কিন্তু মহিন গ্রুপ সোহাগকে বাজার থেকে সরিয়ে দিতে পরিকল্পনা শুরু করে।
৭ জুলাই সন্ধ্যায়, সোহাগ দোকানে আসার মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যে সাতটি মোটরসাইকেলে প্রায় ১৯ জন হামলাকারী রজনী বোস লেনে প্রবেশ করে এবং সোহাগকে ধরে নিয়ে যেয়ে মিটফোর্ড হাসপাতালের গেটের সামনে নির্মমভাবে ইট-পাথর ও অন্যান্য কঠিন বস্তু দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে। হত্যাকাণ্ডের পর মৃতদেহ টেনে এনে গেটের বাইরে উল্লাস করা হয়, যা স্থানীয় ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসীর মধ্যে ব্যাপক আতঙ্ক সৃষ্টি করে।
তদন্তে জানা গেছে, মহিন ও টিটন নামে দুই খুনির মধ্যে ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বও ছিল সোহাগের সঙ্গে। সোহাগ পুরোনো সময়ে তাদের মারধর করায় তাদের মধ্যে শত্রুতার সূত্রপাত হয়। এছাড়া হত্যাকাণ্ডে রাজনীতির প্রভাবও রয়েছে বলে পুলিশ ধারণা করছে। হত্যাকাণ্ডে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে রাজনৈতিক দলের যুবদল ও অন্য গোষ্ঠীর লোকজন রয়েছে।
এ ঘটনার পর থেকে মিটফোর্ড এলাকার ভাঙারি ব্যবসায়ীরা ব্যাপক ভয়ে ভুগছেন। মহিন গ্রুপের মতো আরও কয়েকটি চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী গোষ্ঠী এলাকায় প্রভাব বিস্তার করছে। গ্রেফতার হওয়া মহিন গ্রুপের অনুসারীরা এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্কের কারণ। অনেক ব্যবসায়ী আশঙ্কা প্রকাশ করছেন, মহিন গ্রুপের কেউ গ্রেফতার হলেও, অন্য গোষ্ঠীগুলো প্রতিশোধ নিতে পারে।
পুলিশ এখন পর্যন্ত সাতজনকে গ্রেফতার করেছে, যাদের মধ্যে একজন স্বীকারোক্তি দিয়েছে। তদন্ত চলছে বাকি আসামিদের ধরতে। ডিবির যুগ্ম কমিশনার জানিয়েছেন, ডিবি মামলাটি ছায়া তদন্ত করছে এবং দ্রুত আসামিদের আইনের আওতায় আনার জন্য কাজ করছে।
এদিকে, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানিয়েছিলেন, হত্যাকাণ্ড দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। একই সাথে সুপ্রিম কোর্টে একটি রিট দায়ের করা হয়েছে, যাতে এই হত্যা মামলার তদন্তের জন্য উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বিচারিক কমিশন গঠন করার দাবি করা হয়েছে, যাতে সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ তদন্ত নিশ্চিত করা যায়।
অন্যদিকে, বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ বলেছেন, হাসপাতালের সামনে এই ঘটনার সময় আনসার সদস্যরা দায়িত্বে ছিলেন না এবং তাদের পক্ষ থেকে কোনো অবহেলা ঘটেনি।
স্থানীয় অ্যাম্বুলেন্স চালক ও ব্যবসায়ীরা জানান, মহিন গ্রুপ মিটফোর্ডে অ্যাম্বুলেন্স চালকদের কাছ থেকে মাসে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ চাঁদা নিত এবং যারা তাদের কথা না শুনত তাদের ওপর হামলা চালানো হত। অনেকেই চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসের ভয়ে ব্যবসায় নাম রাখা থেকে বিরত থাকছেন।
মোটের উপর, এই ঘটনা মিটফোর্ড এলাকা এবং পুরান ঢাকার অপরাধ, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজির সমস্যা কতটা গভীর এবং জটিল তা প্রমাণ করে। সুষ্ঠু বিচার ও কড়া ব্যবস্থা গ্রহণ ছাড়া এ ধরনের নৃশংসতা বন্ধ হওয়া কঠিন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এলাকাবাসী ও ব্যবসায়ী সমাজ দ্রুত কার্যকর ন্যায়বিচারের দাবি জানিয়েছেন, যাতে পুনরায় এমন অবস্থা সৃষ্টি না হয় এবং জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়।
অনলাইন ক্লাসে ‘অশ্লীলতা’র অভিযোগে থানায় অভিভাবকের অভিযোগ
বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের অনলাইন প্রস্তুতির এক কোচিং প্ল্যাটফর্মে লাইভ ক্লাসে শিক্ষক ও শিক্ষিকার ‘অশালীন আচরণের’ অভিযোগে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন এক অভিভাবক।
বুধবার (৯ জুলাই) রাজধানীর ভাটারা থানায় অভিযোগটি করেন আশরাফ বিজয় নামের এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, “আমি একজন অভিভাবক হিসেবে শিক্ষার পরিবেশে এমন অশ্লীলতা মেনে নিতে পারছি না।”
অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, ৮ জুলাই রাত ১২টার দিকে অনলাইন লাইভ ক্লাস চলাকালে এক নারী ও এক পুরুষ শিক্ষক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে “অসামাজিক কার্যকলাপ” করেন। এই আচরণ অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মানসিকভাবে আঘাত করেছে এবং শিক্ষকতার পেশাগত মর্যাদা ক্ষুণ্ন হয়েছে বলেও অভিযোগে বলা হয়।
ঘটনার ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এতে দেখা যায়, কোচিং সেন্টারের একজন শিক্ষিকা ও শিক্ষক লাইভ ক্লাস চলাকালে ঘনিষ্ঠ আচরণ করছেন এবং পরস্পরকে চুম্বন করছেন। ভিডিওটি অন্বেষণ কোচিং সেন্টারের ইউটিউব চ্যানেল থেকে নেওয়া বলে অভিযোগকারী দাবি করেছেন।
এই ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর অভিভাবক, শিক্ষার্থী ও সচেতন মহলের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে ভাটারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম বলেন, “আমরা অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
অভিযোগকারী আশরাফ বিজয় বলেন, “এই ধরনের কনটেন্ট শিক্ষার্থীদের জন্য ক্ষতিকর। আমি ওই দুই শিক্ষক এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা চাই।”
সামাজিক মাধ্যমে অনেক অভিভাবক এবং শিক্ষার্থীও শিক্ষার পরিবেশ রক্ষায় দ্রুত প্রশাসনিক পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
সত্য প্রতিবেদন/আশিক
প্রতিবন্ধী কিশোরীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ, গ্রাম্য সালিসে ৫০ হাজার টাকায় মীমাংসার চেষ্টা
শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলার খুদেজঙ্গল গ্রামে ১৬ বছর বয়সী এক বাকপ্রতিবন্ধী কিশোরীকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (৭ জুলাই) সকালে ওই কিশোরীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত ব্যক্তি হচ্ছেন একই এলাকার যুবক এমরান।
ঘটনার পর কিশোরীর পরিবার বিষয়টি স্থানীয় মাতবরদের জানালে সালিসের আয়োজন করা হয়। সেখানে অভিযুক্তকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে, সেই টাকা ভুক্তভোগী পরিবারকে দেওয়া হয়নি। পাশাপাশি ঘটনাটি আইনি পথে না গিয়ে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে বলেও দাবি উঠেছে।
ভুক্তভোগীর দাদী বলেন, ‘আমার নাতনি কথা বলতে পারে না। আমি সকালে রান্নাঘরে ছিলাম। এই ফাঁকে এমরান ঘরে ঢুকে তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। আমি টের পেয়ে গেলে সে পালিয়ে যায়। পরে আমি ও আমার ছেলে বিষয়টি স্থানীয় মুরব্বিদের জানাই।’
এরপর অভিযুক্তের বাড়িতে বসে গ্রাম্য সালিস। উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় ইউপি সদস্য সালাউদ্দিন, আব্দুল হাই, রফিক ফকির ও আক্তার বেপারী। সালিসে সিদ্ধান্ত হয়, অভিযুক্ত এমরান ভুক্তভোগী পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা দেবেন ওষুধ ও অন্যান্য খরচ বাবদ। ভুক্তভোগীর বাবার কাছ থেকে সাদা কাগজে স্বাক্ষরও নেওয়া হয় বলে জানা গেছে।
তবে ইউপি সদস্য সালাউদ্দিন দাবি করেন, তিনি শুধু বিষয়টি জানতে পেরে সালিসের আয়োজন করেছেন, টাকা আদান-প্রদানের বিষয়ে কিছু জানেন না। তার ভাষায়, ‘সকালে কয়েকজন মহিলা এসে বিষয়টি জানায়। পরে গ্রামের মুরব্বিদের সঙ্গে বসে সালিস করি।’
ঘটনার দুই ঘণ্টা পর দুপুর ১টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। হাটুরিয়া পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই আব্দুল হক বলেন, ‘ভুক্তভোগী পরিবারের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। পরে অভিযুক্ত এমরানের বাড়িতেও যাই, কিন্তু সে এরইমধ্যে পালিয়ে যায়।’
গোসাইরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাকসুদ আলম বলেন, ‘ধর্ষণচেষ্টার ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। ভুক্তভোগী কিশোরীকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে পাঠানো হবে মেডিকেল পরীক্ষার জন্য।’
এ ঘটনায় গ্রাম্য সালিসের মাধ্যমে আইনি প্রক্রিয়া এড়িয়ে ঘটনা মীমাংসার চেষ্টা এবং জরিমানার অর্থ ভুক্তভোগী পরিবারকে না দেওয়ায় ব্যাপক সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে।
মিরপুরে আওয়ামীপন্থী ব্যক্তির পরিবারকে জিম্মি করে চাঁদা দাবি, ছাত্রদল-যুবদলের বিরুদ্ধে মামলা
রাজধানীর মিরপুরে এক ব্যক্তির বাসায় ঢুকে চাঁদা দাবি ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগে ছাত্রদল ও যুবদলের চার নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়েছে।
পুলিশ ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, রোববার (৭ জুলাই) রাতে মিরপুরের পশ্চিম মনিপুর এলাকায় ১০–১৫ জনের একটি দল সিরাজুল ইসলামের বাসায় প্রবেশ করে। ৫৬ বছর বয়সী সিরাজুল একসময় শ্রমিক লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। অভিযুক্তরা বাসায় ঢুকে তাকে ও তার স্ত্রীকে জিম্মি করে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন এবং না দিলে পুলিশ দিয়ে গ্রেপ্তারের হুমকি দেন। রাতভর ভীতি ও চাপের মুখে সিরাজুলের পরিবার পাঁচ লাখ টাকা দেয়।
তবে রাত তিনটার দিকে পুলিশের হস্তক্ষেপে চারজনকে ঘটনাস্থল থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন মিরপুর থানা ছাত্রদলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আতিকুর রহমান মিন্টু (৩৫), যুগ্ম আহ্বায়ক তাবিত আহমেদ আনোয়ার (৩৫), যুবদলকর্মী রতন মিয়া (৩৪) এবং ছাত্রদলকর্মী ইসমাইল হোসেন (২৪)। তাদের কাছ থেকে ১৬ হাজার টাকা ও একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে।
মিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাজ্জাদ রোমন জানান, ‘রাতে একজন নাগরিক আমার সরকারি নম্বরে ফোন করে জানান যে, পুলিশ পরিচয়ে কয়েকজন ব্যক্তি চাঁদা দাবি করছে। আমরা তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে যাই এবং র্যাবও সহযোগিতা করে।’
ভুক্তভোগী সিরাজুল ইসলামের স্ত্রী জাহানারা ইসলাম সোমবার সকালে মিরপুর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় গ্রেপ্তার চারজনসহ অজ্ঞাত আরও আট থেকে দশজনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, অভিযুক্তরা শুরুতে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে ২০ হাজার টাকা নেন। পরে আরও চাপ প্রয়োগে সিরাজুল বিভিন্নজনের কাছ থেকে ধার করে ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে আরও প্রায় পাঁচ লাখ টাকা দেন।
ঘটনার সময় আসামিরা বাসার দরজা বন্ধ করে দীর্ঘ সময় জিম্মি করে রাখেন সিরাজুল দম্পতিকে। পুলিশ ও র্যাব রাত তিনটার দিকে সেখানে পৌঁছালে অভিযুক্তরা পালানোর চেষ্টা করেন। তবে চারজনকে ধাওয়া করে আটক করা হয়।
/আশিক
এক কিডনির গ্রাম: বাংলাদেশ-ভারত জুড়ে দারিদ্র্যের ফাঁদে অঙ্গপাচার
মৃদু বিকেলের রোদে, বাংলাদেশে জয়পুরহাট জেলার কালাই উপজেলার বৈগুনী গ্রামে নিজের অপূর্ণ ইটের দেওয়ালের ঘরের সামনে বসে আছেন ৪৫ বছর বয়সী সফিরউদ্দিন। পাঁজরের একপাশে ধীরে ধীরে পোড়া ব্যথা জানান দিচ্ছে অস্ত্রোপচারের চিহ্ন।
২০২৪ সালের গ্রীষ্মে, তিনি ভারতের এক হাসপাতালে নিজের একটি কিডনি বিক্রি করেন ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা (প্রায় ২,৮৫০ ডলার) মূল্যে। আশা ছিল এই টাকায় দারিদ্র্যের জাঁতাকল থেকে পরিবারকে টেনে তুলবেন, দুই কন্যা ও এক পুত্রকে নিয়ে একটি পাকাবাড়ি তুলবেন। কিন্তু সেই টাকা এখন ইতিহাস, বাড়ির কাজ থমকে আছে, আর শরীরের যন্ত্রণাই যেন সারাক্ষণের সতর্কবার্তা—কি মূল্য দিয়েছেন তিনি।
এখন তিনি কাজ করছেন একটি কোল্ডস্টোরেজে দৈনিক মজুরিভিত্তিক শ্রমিক হিসেবে। কিন্তু দিনদিন তার স্বাস্থ্যের অবনতি হচ্ছে। শরীরের স্থায়ী ব্যথা ও দুর্বলতা তাকে সাধারণ কাজ করতেও কষ্টে ফেলে।
“আমি আমার কিডনি দিয়েছি শুধুমাত্র পরিবারের জন্য। আমার স্ত্রী আর সন্তানদের ভালো রাখার জন্য সব করেছি,” বলছিলেন সফিরউদ্দিন।
তাকে যখন দালালরা প্রথম প্রস্তাব দেয়, তখন বিষয়টি খুব ভয়াবহ বলে মনে হয়নি। বরং দালালদের কথায় এটি যেন ছিল এক ‘সুযোগ’—ঝুঁকির কিছু নয়। প্রথমে তিনি সন্দিহান ছিলেন, কিন্তু দারিদ্র্যের তীব্রতা শেষ পর্যন্ত তার সংশয়কে জয় করে।
তাকে ভারতে নেওয়া হয় মেডিকেল ভিসায়। সব আয়োজন—ভিসা, বিমানভাড়া, নথিপত্র ও হাসপাতালের যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা—দালালরাই সামাল দেয়। ভারতে গিয়ে যদিও তিনি নিজের আসল বাংলাদেশি পাসপোর্টে ভ্রমণ করেন, তবুও বাকি কাগজপত্র—যেমন একজন রোগীর সঙ্গে তার ভুয়া আত্মীয়তার প্রমাণ হিসেবে তৈরি করা হয় নকল সনদ ও পরিচয়পত্র।
তার পরিচয়ই পরিবর্তন করে ফেলা হয়। তার কিডনি যে ব্যক্তিকে প্রতিস্থাপন করা হয়, তাকে তিনি কখনও দেখেননি। “আমি জানি না আমার কিডনি কে পেয়েছে। দালালরা কিছুই বলেনি,” জানান সফিরউদ্দিন।
ভারতের আইনে কেবলমাত্র নিকট আত্মীয়দের মধ্যেই অঙ্গদান অনুমোদিত, অথবা সরকার অনুমোদিত বিশেষ অনুমতির ভিত্তিতে। কিন্তু পাচারকারীরা দস্তাবেজ, পরিবারের তথ্য, এমনকি ডিএনএ রিপোর্ট পর্যন্ত জাল করে আইনি সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করে।
“সাধারণত বিক্রেতার নাম পরিবর্তন করা হয়, তারপর একজন আইনজীবীর সীল দেওয়া নোটারী সনদ দিয়ে প্রমাণ দেখানো হয় যে, দাতা ও গ্রহীতা আত্মীয়। ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে এমন দেখা যায় যেন বোন, কন্যা বা কোনো আত্মীয় ‘মানবিক কারণে’ কিডনি দিচ্ছে,” বলেন মনির মনিরুজ্জামান, মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অঙ্গ প্রতিস্থাপন বিষয়ক টাস্কফোর্সের সদস্য।
সফিরউদ্দিনের ঘটনা ব্যতিক্রম নয়। কিডনি বিক্রি এতো বেশি এই বৈগুনী গ্রামে, যে মাত্র ৬,০০০ জনসংখ্যার এই এলাকাকে সবাই চেনে “এক কিডনির গ্রাম” নামে। ২০২৩ সালে BMJ Global Health-এ প্রকাশিত একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, কালাই উপজেলায় প্রতি ৩৫ জন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের মধ্যে একজন কিডনি বিক্রি করেছেন।
কালাই উপজেলা বাংলাদেশের অন্যতম দরিদ্র এলাকা। অধিকাংশ দাতা ৩০ বছরের আশপাশের পুরুষ, যাদের কাছে এই কিডনি বিক্রি মানে হঠাৎ করে একটা ‘বাঁচার পথ’। ৮৩ শতাংশ দাতা বলেছেন, কিডনি বিক্রির প্রধান কারণ দারিদ্র্য। বাকিরা বলেছে ঋণ শোধ, মাদকাসক্তি বা জুয়াসহ অন্যান্য চাপ।
সফিরউদ্দিন বলেন, তার পাসপোর্ট দালালরাই নিয়ে নিয়েছিল, আর তা ফেরত পায়নি। এমনকি অস্ত্রোপচারের পর ডাক্তার যে ওষুধ লিখে দিয়েছিলেন, তাও পায়নি। “ওরা সব নিয়ে গেছে,” বলেন তিনি।
অস্ত্রোপচারের পর দালালরা প্রায়ই দাতাদের পাসপোর্ট ও প্রেসক্রিপশন রেখে দেয়, যাতে অপারেশনের কোনো প্রমাণ না থাকে এবং চিকিৎসার পরবর্তী সেবা থেকেও তারা বঞ্চিত হন।
এই কিডনিগুলো বিক্রি হয় ধনী রোগীদের কাছে—বাংলাদেশ বা ভারতে—যারা দীর্ঘ অপেক্ষা ও আইনি সীমাবদ্ধতা এড়াতে চায়। ভারতে ২০২৩ সালে কেবল ১৩,৬০০ কিডনি প্রতিস্থাপন হয়েছে, অথচ প্রতি বছর প্রায় ২ লাখ মানুষ শেষ পর্যায়ের কিডনি ব্যর্থতায় ভোগে।
আল জাজিরা এক ডজনের বেশি কিডনি দাতার সঙ্গে কথা বলেছে—তারা সবাই দারিদ্র্যকে দায়ী করেছেন। এই পাচারের সরল কিন্তু নিষ্ঠুর হিসাব হলো: দারিদ্র্য সরবরাহ তৈরি করে, আর বিত্তবানদের চাহিদা ও দুর্বল আইন প্রয়োগ ব্যবস্থা সেই চাহিদাকে থামতে দেয় না।
ছবি: সফিরউদ্দিন কিডনি প্রতিস্থাপনের পর তার অস্ত্রোপচারের দাগ দেখাচ্ছেন
এক ভুল সিদ্ধান্তের ফলাফল
৪৫ বছর বয়সী জোসনা বেগম, কালাই উপজেলার বিনাই গ্রামের বিধবা। ২০১২ সালে স্বামী মারা যাওয়ার পর দুই মেয়েকে নিয়ে চরম সংকটে পড়েন। ঢাকায় গার্মেন্টসে কাজ করতে গিয়ে বেলাল নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে বিয়ে হয় তার। তারপর দুজনকেই দালালরা প্রলুব্ধ করে ভারতে কিডনি বিক্রি করতে।
“এটা ছিল একটা ভুল,” বলেন জোসনা। শুরুতে ৫ লাখ টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দিলেও পরে তা ৭ লাখ বলে বাড়িয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু অস্ত্রোপচারের পর হাতে পান মাত্র ৩ লাখ টাকা।
জোসনা ও বেলালকে নিয়ে যাওয়া হয় কলকাতার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ কার্ডিয়াক সায়েন্স হাসপাতালে। তাদেরকে বেনাপোল দিয়ে বাসে করে সীমান্ত পার করানো হয়, হাসপাতালের পাশে একটি ভাড়াবাড়িতে রাখা হয়।
দালালরা কাগজপত্রে জোসনার সঙ্গে গ্রহীতার আত্মীয়তা জাল করে। “আমার পাসপোর্ট, প্রেসক্রিপশন—সব তাদের হাতে। আমি শুধু পাসপোর্ট চেয়েছিলাম, তাও দেয়নি।”
ভারতে প্রায় দুই মাস থেকে ফিরে আসেন তিনি—তবে দালালের অনুগ্রহে, প্রতিশ্রুতি থাকা সত্ত্বেও তারা আর যোগাযোগ রাখেনি। কিছু টুকরো টাকা ঈদের সময় দেওয়া হলেও, এরপর তারা হাওয়া হয়ে যায়।
অপারেশনের পর বেলাল তাকে ছেড়ে অন্য নারীকে বিয়ে করে। “আমার জীবনটা শেষ হয়ে গেছে,” বলেন জোসনা।
চিরস্থায়ী ব্যথা আর ওষুধের খরচ সামাল দিতে না পেরে এখন কোনো ভারী কাজই করতে পারেন না। “সারাক্ষণ ওষুধ লাগে,” কাঁপা কণ্ঠে বলেন তিনি।
দাতা থেকে দালাল—একটা দারিদ্র্যচক্র
মোহাম্মদ সাজল (ছদ্মনাম), একসময় ঢাকায় ইভ্যালির মাধ্যমে হাউজহোল্ড সামগ্রী বিক্রি করতেন। ২০২১ সালে ইভ্যালি কেলেঙ্কারিতে তার সব সঞ্চয় শেষ হয়ে যায়। দেনা শোধে তিনি ২০২২ সালে নয়াদিল্লির ভেঙ্কটেশ্বর হাসপাতালে নিজের কিডনি বিক্রি করেন। প্রলোভন ছিল ১০ লাখ টাকা, কিন্তু পান মাত্র ৩ লাখ ৫০ হাজার।
তার ভাষায়, “ওরা আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছে।” এরপর একসময় নিজেই হয়ে যান দালাল—বাংলাদেশি দাতাদের ভারতীয় হাসপাতালে অপারেশনের ব্যবস্থা করে দেন। পরে দালালচক্রের সঙ্গে আর্থিক বিরোধে জড়িয়ে পড়লে, জীবন রক্ষার ভয়ে পিছু হটেন।
“আমি এখন এই গ্যাংয়ের বন্দুকের সামনে,” বলেন তিনি। তার দাবি, এই চক্র বাংলাদেশ ও ভারতের হাসপাতাল পর্যন্ত বিস্তৃত। “ডাক্তার, রোগী, দালাল—সব একসঙ্গে কাজ করে।”
বর্তমানে তিনি ঢাকায় রাইডশেয়ার ড্রাইভার হিসেবে কাজ করেন। অতীত ভুলে সামনে এগোতে চান। “কেউ শখে কিডনি দেয় না। এটা কেবল বাঁচার হিসাব।”
অস্ত্রোপচারের ছাপ রেখে নিখোঁজ হয়ে যায় দালালেরা
সফিরউদ্দিন নিজের শরীরের ক্ষত দেখিয়ে বলেন, “ওরা আমার কিডনি নিয়ে উধাও হয়ে গেছে।” যেমন তাঁর কথা, তেমনি আরও বহু দাতার—যাদের কাছে অপারেশনের পরে থাকেনি কোনো কাগজপত্র, নেই ফলোআপ চিকিৎসার সুবিধা।
অনেকে যেমন নিজের কিডনির গ্রহীতার নাম পর্যন্ত জানেন না। আইনত ভারত বা বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থায় দান শুধুমাত্র নিকট আত্মীয়ের মধ্যে হতে পারে, অথচ কাগজপত্র জাল করে এই নিয়মকে ঠেকানো যায় না। দালালদের কাছে এটা এখন রীতিমতো কৌশলগত ব্যবসা। জাতীয় পরিচয়পত্র থেকে শুরু করে নোটারী সনদ, সবই ভুয়া। এমনকি প্রয়োজনে ডিএনএ রিপোর্টও জাল করা হয়।
মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ও WHO-র অঙ্গ প্রতিস্থাপন টাস্কফোর্সের সদস্য মনির মনিরুজ্জামান বলেন, “এই ভুয়া পরিচয়ের কাগজপত্র খুব সহজেই তৈরি করা যায়। এতে সময় লাগে কম, খরচও খুব কম।”
এভাবে তৈরি হওয়া নকল আত্মীয়তার ভিত্তিতে যখন অপারেশন হয়, তখন তা যেন আইনগতভাবেই বৈধ। হাসপাতালগুলো নিজেদের দায় অস্বীকার করে বলে, “কাগজপত্র তো ঠিক ছিল।”
বাংলাদেশ ও ভারতের কর্তৃপক্ষ কী বলছে?
বাংলাদেশ পুলিশের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) এনামুল হক সাগর বলেন, এই পাচার রোধে গোপন তদন্ত ও নিয়মিত অভিযানে নামা হয়েছে। “এই বিষয়টি আমরা গুরুত্ব দিয়ে দেখছি, এবং যথাযথ পদক্ষেপ নিচ্ছি।” তিনি জানান, ইতোমধ্যে কয়েকজন দালাল ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
অন্যদিকে ভারতে পুলিশ একাধিক ঘটনায় চিকিৎসকদের জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার করেছে। ২০২৪ সালের জুলাইয়ে দিল্লি পুলিশ গ্রেপ্তার করে ৫০ বছর বয়সী কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট সার্জন ডা. বিজয়া রাজকুমারীকে। তদন্তে জানা যায়, ২০২১ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে তিনি ভারতের একটি বেসরকারি হাসপাতালে কমপক্ষে ১৫ জন বাংলাদেশির কিডনি প্রতিস্থাপন করেছেন।
কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন বিচ্ছিন্ন গ্রেপ্তার কোনো কাজে আসছে না। কারণ, পুরো ব্যবস্থাটির ভিত্তিই গড়ে উঠেছে নিয়মের ফাঁক গলে গোপনে চলা লাভজনক বাণিজ্যের ওপর।
বিশেষত ভারতে ‘মেডিকেল ট্যুরিজম’ বা চিকিৎসা-ভ্রমণ শিল্পটি ২০২৪ সালে প্রায় ৭.৬ বিলিয়ন ডলারের বাজারে পরিণত হয়। ফলে সরকার একদিকে আইনি বাধ্যবাধকতা বজায় রাখার চেষ্টা করে, অন্যদিকে আন্তর্জাতিক রোগী আনতে আগ্রহী হাসপাতালগুলোর ব্যবসায়িক স্বার্থকেও প্রশ্রয় দেয়।
মনিরুজ্জামান বলেন, “যখন জালিয়াতির ঘটনা প্রকাশ্যে আসে, হাসপাতালগুলো বলে—আমরা তো কাগজ দেখে কাজ করেছি। কিন্তু এই কাগজগুলো যে তৈরি করাই হয় দালালের সুবিধার্থে, সেটা তারা বোঝে না— এমন দাবি বিশ্বাসযোগ্য নয়। আসলে বেশি ট্রান্সপ্লান্ট মানে বেশি আয়। তাই চোখ বন্ধ করে রাখাই সুবিধাজনক।”
ছবি:ভারতে কিডনি প্রতিস্থাপন ব্যবসা দীর্ঘদিন ধরেই লাভজনক হিসেবে পরিচিত। ২০০৮ সালে নেপালের পুলিশ গ্রেপ্তার করে অমিত কুমার নামের ৪০ বছর বয়সী এক ভারতীয়কে, যাকে ভারতের একটি অবৈধ কিডনি পাচার চক্রের মূলহোতা হিসেবে সন্দেহ করা হয়।
দালাল ও চিকিৎসকদের গোপন যোগসাজশ
বাংলাদেশের এক দালাল মিজানুর রহমান জানান, এই ব্যবসায় হাসপাতাল বোর্ড থেকে শুরু করে চিকিৎসকরাও যুক্ত। অনেক সময় দালালরা সরাসরি চিকিৎসকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের একটি বড় অংশ মুনাফার প্রতিশ্রুতি দেয়। তিনি বলেন, “ভারতে আমাদের পার্টনারদের মাধ্যমেই এসব ডাক্তারদের ঠিক করা হয়।”
ভারতের জাতীয় অঙ্গ ও টিস্যু প্রতিস্থাপন সংস্থার (NOTTO) পরিচালক ডা. অনিল কুমার এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে NOTTO-র সাবেক এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) স্বীকার করেছেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রায়শই ধনী রোগী ও নকল কাগজ নিয়ে আসা দাতা–দু’পক্ষের চাপের মুখে পড়ে যান। “যদি বোর্ড অনুমোদন না দেয়, রোগী আদালতে যায়, উচ্চ পর্যায়ে চাপ সৃষ্টি করে। তাই হাসপাতালগুলো অযথা ঝামেলা এড়াতে ট্রান্সপ্লান্ট করিয়েই ফেলে।”
পুলিশের নজর এড়াতে হাসপাতাল বদল
মনিরুজ্জামান বলেন, “এই ট্রান্সপ্লান্টগুলোর জন্য কোনো একটি নির্দিষ্ট হাসপাতাল নির্ধারিত নয়। যখন কোনো স্থানে পুলিশি অভিযান হয়, তখন দালালরা স্থান পরিবর্তন করে।”
তিনি জানান, বাংলাদেশ ও ভারতের দালালরা একত্রে কাজ করে। একটি নেটওয়ার্কের মাধ্যমে তারা ঠিক করে কখন কোন হাসপাতালে, কোন রোগীর জন্য দাতা পাঠানো হবে।
বাণিজ্যের হিসাব: ধনী পায় ২৬,০০০ ডলারে, গরিব পায় ৩ লাখ টাকা
ভারতে একজন কিডনির রোগী যদি লাইনে দাঁড়িয়ে আইনি পদ্ধতিতে অঙ্গপ্রাপ্তির চেষ্টা করে, তাহলে তার জন্য অপেক্ষা কয়েক বছর। এই দীর্ঘ অপেক্ষা ও কঠিন প্রক্রিয়া এড়িয়ে অনেকেই সরাসরি ২২,০০০–২৬,০০০ ডলার দিয়ে কিডনি কেনে।
আর সেই কিডনির জন্য দাতাকে দেওয়া হয় মাত্র ৩–৫ লাখ টাকা (২,৫০০–৪,০০০ ডলার)। বাকি অর্থ চলে যায় দালাল, ভুয়া কাগজ প্রস্তুতকারী, হাসপাতাল স্টাফ ও কখনো কখনো চিকিৎসকের পকেটে।
আরও ভীতিকর ঘটনা হলো—সব দাতা যে জানে তারা কিডনি দিচ্ছে, তা নয়। কেউ কেউ চাকরির প্রলোভনে ভারতে গিয়ে অপারেশনের পর বুঝে ওঠেন কী হয়েছে।
২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ভারতের একটি চক্র বাংলাদেশি তরুণদের “চাকরি” দেওয়ার নামে জিম্মি করে কিডনি নিয়েছিল। ঢাকায় এই চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা অন্তত ১০ জনকে এই কৌশলে দিল্লিতে নিয়ে গিয়ে অপারেশন করিয়েছিল।
বের হতে না পারা এক দারিদ্র্য-শোষণের চক্র
ব্র্যাকের মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের সহযোগী পরিচালক শরিফুল হাসান বলেন, “কেউ কেউ দারিদ্র্যের কারণে কিডনি বিক্রি করে, কিন্তু একটা বড় অংশ সম্পূর্ণভাবে প্রতারিত হয়।”
তিনি বলেন, “ভারতের কোনো ধনী রোগী কিডনি চায়, মধ্যস্বত্বভোগী একজন দরিদ্র বাংলাদেশিকে খুঁজে আনে, চাকরি বা দ্রুত আয় দেখিয়ে প্রলুব্ধ করে। তারপর শুরু হয় দালালের খেলা।”
ভবিষ্যতের ভাবনা: নিয়ন্ত্রণ নাকি ন্যায্যতা?
ভারতের কিডনি ওয়ারিয়রস ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী বাসুন্ধরা রঘুবন বলেন, “কিডনি রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে, কিন্তু আইনি দাতার অভাব এই সমস্যাকে ভয়াবহ করে তুলেছে।”
তিনি বলেন, “আইনের চোখে অঙ্গ বেচাকেনা অপরাধ হলেও বাস্তবে তা চলে আসছে। সম্পূর্ণ নির্মূল সম্ভব না হলে, অন্তত একটি নিয়মতান্ত্রিক ও মানবিক পদ্ধতি নিয়ে ভাবা দরকার।”
তার প্রস্তাব অনুযায়ী, আইনি ব্যবস্থা আরও মানবিক হওয়া উচিত। দাতাদের স্বাস্থ্যপরীক্ষা, অস্ত্রোপচারের পর দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা সুবিধা, এবং আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কথা ভাবতে হবে।
একটি অপূর্ণ বাড়ি, এক পিতার বোবা যন্ত্রণা
সফিরউদ্দিন এখন আর আগের মতো কাজ করতে পারেন না। তার দেহ দুর্বল, প্রতিদিনের কাজ করাও কষ্টকর। মাঝরাতে ঘুম ভেঙে যায়, চোখে ভাসে অপারেশনের কথা, দালালদের প্রতিশ্রুতি, আর অপূর্ণ স্বপ্নের ছবি।
“আমি ভেবেছিলাম, টাকা পাবো, বাড়ি শেষ করবো। এখন আমার সন্তানদের জন্য শুধু অসুস্থ এক বাবা রয়ে গেছে,” বলেন তিনি।
এই ছিল ‘এক কিডনির গ্রাম’-এর ভিতরকার সত্য। এখানে প্রতিটি দাতা একেকটি ভাঙা স্বপ্ন, প্রতিটি অপারেশন একেকটি প্রতারণার দলিল। দারিদ্র্য, দুর্বল আইন, এবং লোভের মোড়কে গড়ে ওঠা এই মানবিক সংকট আজ আমাদের সামনে এক ভয়ঙ্কর প্রশ্ন ছুঁড়ে দেয়—আমরা কি মানুষের অঙ্গকেও পণ্য বানিয়ে ফেলেছি?
লেখক: জ্যোতি ঠাকুর, আমিনুল ইসলাম মিঠু ও হানান জাফর
মূল উৎস: আল জাজিরা, ৪ জুলাই ২০২৫
পাবনার আমিনপুরে কবরস্থানে চাঞ্চল্য: রাতের আঁধারে উধাও ২১টি কঙ্কাল, আতঙ্কে এলাকাবাসী

এম এস রহমান
স্টাফ রিপোর্টার, পাবনা
পাবনার সুজানগর উপজেলার আমিনপুরে ঘটেছে এক অভূতপূর্ব ও রীতিমতো ভয়াবহ কাণ্ড। স্থানীয় বিরাহিমপুর কবরস্থান থেকে রাতের আঁধারে চুরি হয়ে গেছে অন্তত ২১টি কবরের কঙ্কাল ও মাথার খুলি। শুক্রবার (৪ জুলাই) ভোররাতে সংঘটিত এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে পুরো এলাকায়।
সকালবেলা ফজরের নামাজ শেষে স্বজনদের কবর জিয়ারত করতে গিয়ে প্রথমে বিষয়টি টের পান স্থানীয় বাসিন্দারা। তারা দেখতে পান—কবরগুলোর উপরের মাটি খোঁড়া, বাঁশের চরাট সরে আছে, এবং ভেতরে কোনো কঙ্কাল নেই। পরে চারদিক ছড়িয়ে পড়ে খবর, যা আতঙ্কে ফেলে পুরো জনপদকে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ।
স্থানীয়দের ধারণা: সংঘবদ্ধ চক্রের কাজ
বিরাহিমপুর এলাকার বাসিন্দা ফারুক হোসেন ও মনিরুল ইসলাম জানান, “আমাদের আত্মীয়স্বজন এই কবরস্থানেই শায়িত। আমরা প্রতি শুক্রবার সকালে জিয়ারতে আসি। আজ এসে দেখি কিছু কবর খোঁড়া, বাঁশের বেড়া সরানো, আর ভেতরে কিছুই নেই। বেশিরভাগ কবর থেকে মাথার খুলি পর্যন্ত গায়েব। আমাদের দৃঢ় ধারণা, এটি কোনো সংঘবদ্ধ চক্রের কাজ যারা মাথার খুলি ও কঙ্কাল চুরি করে নিয়ে গেছে।”
পুলিশ বলছে, গুরুত্বসহকারে তদন্ত চলছে
আমিনপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গোলাম মোস্তফা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “খবর পেয়ে আমরা কবরস্থানটি পরিদর্শন করেছি এবং স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেছি। এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। আমরা বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছি এবং চক্রটিকে চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।” তিনি আরও জানান, এখন পর্যন্ত কেউ আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দায়ের করেনি।
পূর্বেও ঘটেছে এমন চুরি
উল্লেখযোগ্যভাবে, এই ঘটনা কোনো একক বিচ্ছিন্ন চুরি নয়। এর আগে সুজানগরের খাস আমিনপুর ও সাঁথিয়া উপজেলার রাজাপুর কবরস্থান থেকেও এ রকম কঙ্কাল চুরির ঘটনা ঘটেছিল। ফলে ধারণা করা হচ্ছে, এই এলাকায় একটি সক্রিয় মানবদেহের অস্থিচালান সিন্ডিকেট কাজ করছে।
বিশেষজ্ঞ মত: কী উদ্দেশ্যে কঙ্কাল চুরি?
এই ধরনের কঙ্কাল চুরির পেছনে উদ্দেশ্য হতে পারে নানা রকম—জাদুবিদ্যা, চিকিৎসাবিজ্ঞান সংক্রান্ত অবৈধ ব্যবসা, কিংবা বিদেশে মানবদেহের হাড়ের কালোবাজার। বিশেষ করে মাথার খুলি ও পুর্ণাঙ্গ কঙ্কালের আন্তর্জাতিক বাজারে রয়েছে উচ্চমূল্য, যা একাধিক অপরাধচক্রকে এই কাজে যুক্ত করে তুলতে পারে।
জনমনে শঙ্কা ও দাবি
এই ভয়াবহ ঘটনার পর এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ও ক্ষোভ দুটোই বাড়ছে। তারা দ্রুত অপরাধীদের শনাক্ত করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তারা চায়, কবরস্থানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হোক এবং প্রতি রাতে পাহারার ব্যবস্থা চালু করা হোক।
এমন ঘটনা দেশের ধর্মীয়, সামাজিক ও মানবিক মূল্যবোধের ওপর বড় আঘাত বলেই মনে করছেন স্থানীয় সমাজ বিশ্লেষকেরা। সুষ্ঠু তদন্ত ও দ্রুত বিচারের মাধ্যমে এই পৈশাচিক কর্মকাণ্ডের অবসান চান সকলে।
পাঠকের মতামত:
- পাকিস্তান সরে যাওয়ায় ভাগ্য খুলল বাংলাদেশ হকি দলের
- মাই টিভি চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন সাথীর ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর
- ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের আজকের লেনদেন: বাজারের সামগ্রিক বিশ্লেষণ
- ১৮ আগস্ট ডিএসইর দরপতনের শীর্ষ দশ শেয়ার
- ১৮ আগস্ট ডিএসইতে দর বৃদ্ধির শীর্ষ দশ শেয়ার
- শিবিরের প্যানেলে নারী, প্রতিবন্ধী ও চাকমা শিক্ষার্থী: ডাকসু নির্বাচনে নতুন চমক
- ইচ্ছাকৃতভাবে গাজায় ফিলিস্তিনিদের অনাহারে রাখছে ইসরায়েল:অ্যামনেস্টি
- হারুন অর রশীদসহ ১৮ পুলিশ কর্মকর্তা বরখাস্ত
- জাতীয় মৎস্য সপ্তাহে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরলেন প্রধান উপদেষ্টা
- পিকাসো থেকে নিকোলস: প্রতিভা, সংগ্রাম আর অর্থপূর্ণ জীবনের দিশা
- ঢাকা ব্যাংকের হাল ধরলেন নতুন এমডি
- বিনিয়োগকারীদের জন্য জরুরি ঘোষণা
- জনগণ ভোট দেওয়ার অপেক্ষায়: এ্যানি
- অসুস্থ ভাষাসৈনিক আহমদ রফিক: একাকী জীবনের দীর্ঘ সংগ্রাম
- অপপ্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন: গাইবান্ধা বিএনপি
- ডিএসইতে সূচকের উত্থান, প্রথম ঘণ্টায় লেনদেন যত
- দেশের বাজারে স্বর্ণের নতুন চিত্র
- হোয়াইট হাউজে আজ ট্রাম্প-জেলেনস্কি বৈঠক, পাশে ইউরোপীয় মিত্ররা
- বাংলাদেশি টাকায় আজকের আন্তর্জাতিক মুদ্রার রেট
- ইতিহাসের সর্বোচ্চ ধান-চাল সংগ্রহ করল খাদ্য অধিদপ্তর
- খালেদা জিয়ার ৮০তম জন্মবার্ষিকীতে প্রবীণদের মাঝে উপহার বিতরণ
- চট্টগ্রামে সিএমপি কমিশনারের বার্তা ফাঁস: কনস্টেবল অমি দাশ গ্রেফতার
- দুই দশকের বেশি সময় ধরে মার্কিন প্রেসিডেন্টদের কৌশলে আটকে রেখেছেন পুতিন
- তৌহিদ আফ্রিদিকে গ্রেপ্তারে ২৬ ঘণ্টার আলটিমেটাম
- সাড়ে ৫ মাস পর বন্দরে ভারতীয় পেঁয়াজ: আমদানি শুরু হওয়ায় স্বস্তিতে ক্রেতারা
- পাতাল মেট্রোরেল ব্যয় বাড়ল প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা
- ‘মুজিব আমল ছিল স্বৈরতন্ত্রের অন্ধকার’: ইতিহাসের ভিন্ন চিত্র তুলে ধরলেন সায়ের
- ক্রিকেট ব্যাটের ভেতরে ইয়াবা: অভিনব কৌশলেও ধরা পড়লেন ২ যাত্রী
- প্রধান উপদেষ্টাকে হুঁশিয়ারি দিলেন জামায়াতের নায়েবে আমির
- গ্রেপ্তার হলেন মাই টিভির চেয়ারম্যান নাসির উদ্দীন সাথী
- ‘ধর্মব্যবসায়ীদের কোনো জায়গা হবে না বাংলাদেশে’: রুমিন ফারহানার হুঁশিয়ারি
- মহাখালীর পেট্রোল পাম্পে ভয়াবহ আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৩ ইউনিট
- জুলাই সনদ জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন নয়: যুক্তরাজ্যের সাংবাদিক
- দুদকের জালে সাবেক আইজিপি: ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ নিয়ে তদন্তে নামল দুদক
- ‘না ভোট’ বিএনপির প্রস্তাব নয়, দাবি নজরুল ইসলাম খানের
- এবার বিশ্বমঞ্চে হানিয়া আমির,পাকিস্তানের জন্য গৌরবের নতুন অধ্যায়
- রেকর্ড ভাঙছে রেমিট্যান্স: আগস্টে কি নতুন মাইলফলক?
- গাজায় মানবিক সংকট: ত্রাণ বিতরণে বাধা, দুর্ভিক্ষে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা
- এনবিআরের নতুন নির্দেশনা, আয়কর অডিটে ঝুঁকিভিত্তিক স্বয়ংক্রিয় বাছাই
- ফেসবুকে বিনা খরচে রিচ বাড়াবেন যেভাবে: জেনে নিন ৫ সহজ কৌশল
- আবারও দুই প্রতিবন্ধীকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠাল বিএসএফ
- সিলেটে মাটিচাপা দেওয়া ১১ হাজার ঘনফুট পাথর উদ্ধার
- জুলাই সনদের খসড়ায় ‘অসামঞ্জস্য’ আছে: সালাহউদ্দিন আহমদ
- জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের গুণগত পরিবর্তনের কারিগর: মাহফুজ আলম
- জাবি ছাত্রদলে তুমুল উত্তেজনা: কেন্দ্রীয় নেতাদের সামনেই দুই গ্রুপের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া
- ১৪.৫ লাখ টাকার ক্ষতিপূরণ চেয়ে আর্টসেলেকে ১২ ঘণ্টার আলটিমেটাম সাবেক সমন্বয়কের
- ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ফুল দিতে গিয়ে মারধরের শিকার রিকশাচালক জামিনে মুক্ত
- সরকারের অবস্থান স্পষ্ট, ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন: রিজওয়ানা হাসান
- ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের আজকের লেনদেন: বাজারের সামগ্রিক বিশ্লেষণ
- ১৭ আগস্ট ডিএসইর দরপতনের শীর্ষ দশ শেয়ার
- "Black Skin, White Masks": উপনিবেশবাদ, বর্ণবাদ ও মানসিক মুক্তির গভীর পাঠ
- শেখ মুজিব: দেবতা, ভিলেন নাকি রাজনৈতিক ট্রাজেডির নায়ক?
- ১৪ আগস্ট ব্লক মার্কেটে বড় চুক্তি
- ৮১ বছরে বেগম খালেদা জিয়া: গণতন্ত্রের আপোষহীন কণ্ঠস্বর ও রাজনৈতিক উত্তরাধিকার
- ১২০ বার পেছালো সাগর সারোয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার শুনানি
- দেব-শুভশ্রীর ‘ধূমকেতু’ গড়ল মুক্তির আগে রেকর্ড
- চূড়ান্ত বিপ্লবের পথে: চিন্তার পুনর্গঠন ও আত্মার জাগরণ
- অবাধ লুটপাটে পাথরশূন্য হয়ে যাচ্ছে সিলেটের সাদাপাথর
- অনলাইনে কলেজে আবেদন: জানুন কলেজ চয়েজ পরিবর্তনের ধাপ
- ১৪ আগস্ট ডিএসইতে দর বৃদ্ধির শীর্ষ দশ শেয়ার
- ১৪ আগস্ট সেরা দশ লেনদেনকারী শেয়ার
- সম্মতি ছাড়া ৫ মিনিট ধরে চুমু, শুটিং সেটেই কান্নায় ভেঙে পড়েন রেখা
- ১৪ আগস্ট ডিএসইর দরপতনের শীর্ষ দশ শেয়ার
- আন্দোলন থামাতে চাঁদা দাবি নিয়ে ভিডিও ভাইরাল, শোকজ এনসিপি নেতা
- বাফুফের সহসভাপতি ফাহাদ করিম ও স্ত্রীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি