পেশায় শ্রমিক হান্নানের মোটরসাইকেলটি যেভাবে ব্যবহৃত হলো হাদির ওপর হামলায়

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৪ ১১:১৯:২৭
পেশায় শ্রমিক হান্নানের মোটরসাইকেলটি যেভাবে ব্যবহৃত হলো হাদির ওপর হামলায়
ছবি : সংগৃহীত

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা ৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আব্দুল হান্নানকে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রোববার ১৪ ডিসেম্বর সকালে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন বা র‍্যাব এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।

র‍্যাব জানায় সিসিটিভি ফুটেজ ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ওসমান হাদির ওপর হামলায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। এরপর অভিযান চালিয়ে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে মোটরসাইকেলের মালিক আব্দুল হান্নানকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাকে পল্টন থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

কে এই আব্দুল হান্নান

র‍্যাবের দেওয়া তথ্যমতে গ্রেপ্তারকৃত হান্নানের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার সুন্দরপুর ইউনিয়নের বাগডাঙ্গা পশ্চিমপাড়া এলাকায়। তার বাবার নাম মো. আবুল কাশেম ও মায়ের নাম মোসা. ফুরকোন। পেশায় তিনি একজন শ্রমিক। হামলায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটির নম্বর ৫৪ ৬৩৭৫। তবে হাদির ওপর হামলার ঘটনায় হান্নান সরাসরি জড়িত কি না নাকি তার বাইকটি অন্য কেউ ব্যবহার করেছে সে বিষয়টি এখন খতিয়ে দেখছে র‍্যাব ও পুলিশ।

ঘটনার প্রেক্ষাপট

এর আগে গত শুক্রবার দুপুর সোয়া ২টার দিকে রাজধানীর বিজয়নগর পানির ট্যাংকির সামনে রিকশায় করে যাওয়ার সময় শরিফ ওসমান হাদিকে লক্ষ্য করে গুলি করে দুর্বৃত্তরা। ওই সময় একটি মোটরসাইকেলে করে এসে দুইজন তাকে খুব কাছ থেকে গুলি করে দ্রুত পালিয়ে যায়।

হামলার পর আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাদিকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে এবং পরিবারের ইচ্ছায় তাকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে সেখানে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে বা আইসিইউতে তার চিকিৎসা চলছে এবং তিনি জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন।


শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার বিনম্র শ্রদ্ধা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৪ ০৮:৩০:৫২
শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার বিনম্র শ্রদ্ধা
ছবি : সংগৃহীত

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। রবিবার ১৪ ডিসেম্বর সকালে রাজধানীর মিরপুর বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে তারা এই শ্রদ্ধা জানান।

সকাল ৭টায় রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন মিরপুর বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এর কিছুক্ষণ পর সকাল ৭টা ২০ মিনিটে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

পুষ্পস্তবক অর্পণের পর রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা ১৯৭১ সালের শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। এ সময় বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল রাষ্ট্রীয় সালাম প্রদান করে এবং বিউগলে করুণ সুর বাজানো হয় যা পুরো এলাকায় এক শোকাবহ পরিবেশ তৈরি করে।

শ্রদ্ধা নিবেদন পর্ব শেষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা পৃথকভাবে সেখানে উপস্থিত উপদেষ্টামণ্ডলী এবং শীর্ষ বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এছাড়া তারা যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং অন্য আমন্ত্রিত অতিথিদের সঙ্গেও কুশল বিনিময় করেন।


সীমান্ত পাড়ি দিয়ে আসামে ফয়সাল

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৪ ০৮:২৫:০২
সীমান্ত পাড়ি দিয়ে আসামে ফয়সাল
ছবি : সংগৃহীত

ইনকিলাব মঞ্চের সংগঠক ওসমান হাদির ওপর হামলাকারীরা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রবাসী বাংলাদেশি সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের দাবি করেছেন হামলাকারীদের বর্তমান অবস্থান ভারতের আসাম রাজ্যের গুয়াহাটি শহরে।

শনিবার ১৩ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে জুলকারনাইন সায়ের এই চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেন।

তিনি লিখেন ইনকিলাব মঞ্চের সংগঠক ওসমান হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্য গুলি করার ঘটনার সঙ্গে জড়িত শ্যুটার সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান এবং তার সহযোগী মোটরবাইক চালক আলমগীর হোসেন গত ১২ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তাদের বর্তমান অবস্থান আসামের গুয়াহাটি শহরে।

পোস্টে আরও দাবি করা হয় ভারতে তাদের সহায়তা করছেন আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানকের ব্যক্তিগত সহকারী বা পিএস মো. মাসুদুর রহমান বিপ্লব। বিপ্লবের তত্ত্বাবধানেই এই হত্যাকারীরা বর্তমানে ভারতে নিরাপদে অবস্থান করছে।

জুলকারনাইন সায়ের তার নির্ভরযোগ্য সূত্রের বরাতে জানান অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে এই আক্রমণ করা হয়েছে এবং আরও কয়েকটি হিট টিমের একইরকম ঘটনার পুনরাবৃত্তির পরিকল্পনা বা চেষ্টা রয়েছে। তিনি হামলার বিস্তারিত সম্পর্কে উল্লেখ করেন মূল শ্যুটার ফয়সাল তার ঘনিষ্ঠ মহলে দাবি করেছে ব্যবহৃত অস্ত্রটি জ্যাম হয়ে যাওয়ায় সে কেবল একটি গুলি করতে সক্ষম হয় অথচ তার পরিকল্পনা ছিল চারটি গুলি করার।

সায়ের তার স্ট্যাটাসে জামিনে থাকা সন্ত্রাসীদের বিষয়েও সতর্কবার্তা দিয়েছেন। তিনি সূত্রের বরাতে বলেন ফয়সালের মতোই আরেক অস্ত্রধারী ক্যাডার চট্টগ্রাম নগর যুবলীগের সাবেক কার্যনির্বাহী সদস্য মো. সাজ্জাদ। যাকে গত ১৩ মে ২০২৫ সালে রাজধানী ঢাকার গুলশান এলাকা হতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে চট্টগ্রামের মুরাদপুরে ফয়সাল আহমেদ শান্ত হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়। তবে গত ২৯ জুলাই ২০২৫ তারিখে সাজ্জাদ সুপ্রিম কোর্ট হতে জামিন প্রাপ্ত হয়ে কারামুক্ত হয়েছেন।

সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের মনে করেন অনতিবিলম্বে কার্যক্রম নিষিদ্ধ সংগঠনের যেসকল অস্ত্রধারী ক্যাডারদের বিভিন্ন মামলায় জামিন প্রদান করা হয়েছে তাদের প্রত্যেকের বর্তমান অবস্থান যাচাই ও কর্মকাণ্ড সম্পর্কে খোঁজ নেওয়া জরুরি।


সারা দেশে আতঙ্কে সম্ভাব্য প্রার্থীরা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৪ ০৮:১১:২৬
সারা দেশে আতঙ্কে সম্ভাব্য প্রার্থীরা
ছবি : সংগৃহীত

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা ৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান বিন হাদিকে ঢাকার রাজপথে প্রকাশ্য দিবালোকে গুলির ঘটনায় দেশজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তপসিল ঘোষণার পরদিনই এই ঘটনা ঘটায় সারা দেশের সম্ভাব্য প্রার্থীরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এই ঘটনাকে তারা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সুস্পষ্ট দুর্বলতা হিসেবে দেখছেন এবং নিজেদের জীবনের নিরাপত্তা বাড়াতে ইতোমধ্যেই সম্ভাব্য প্রার্থীদের কেউ কেউ আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেছেন। উদ্বেগ প্রকাশ করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা প্রশ্ন তুলেছেন এই অবস্থায় প্রার্থী হিসেবে প্রচারণায় নামতে গেলে জীবনের নিরাপত্তা কোথায়।

হাদির ওপর গুলির ঘটনার প্রেক্ষিতে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস গতকাল রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বিএনপি জামায়াত ও জাতীয় নাগরিক পার্টি বা এনসিপির নেতাদের নিয়ে জরুরি বৈঠক করেছেন। বৈঠকে তিনটি দলের নেতারাই নির্বাচনের আগে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এবং প্রার্থীদের নিরাপত্তা জোরদারের পাশাপাশি দ্রুত দেশব্যাপী অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা উপস্থিত দলগুলোর নেতাদের সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন এই আক্রমণটি খুবই সিম্বলিক। এখন পর্যন্ত যে তথ্য পাওয়া গেছে তাতে মনে হচ্ছে ষড়যন্ত্রকারীরা তাদের নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করেছে। তারা প্রশিক্ষিত শুটার নিয়ে মাঠে নেমেছে এবং এর পেছনে বিরাট শক্তি কাজ করছে। তারা তাদের শক্তি প্রদর্শন করতে চায় এবং নির্বাচনের সব আয়োজন ভেস্তে দিতে চায়।

যমুনায় বৈঠক শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ সাংবাদিকদের বলেন আমরা এ ধরনের আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছি না। তবে সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর দায়িত্ব আছে এবং পাশাপাশি জনগণের সচেতনতা অত্যন্ত জরুরি। অন্যদিকে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন ক্ষুদ্র দলীয় স্বার্থে আমরা একে অন্যকে প্রতিপক্ষ বানিয়ে ফেলেছি আর এর ফলে বিরোধীরা সুযোগ নিচ্ছে।

এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বৈঠক শেষে যমুনার সামনে সাংবাদিকদের বলেন শুধু আমাদের নেতা নেত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করলেই হবে না কারণ নেতাদের নিরাপত্তা দিয়ে জুলাই বিপ্লব টিকে থাকবে না। সামগ্রিকভাবে সমাজ থেকে ও রাজনীতি থেকে আওয়ামী লীগের প্রশ্নের সুরাহা করতে না পারলে আমাদের কোনো নিরাপত্তা নেই বলে তিনি মন্তব্য করেন। হাদির ওপর হামলার ঘটনায় সম্মিলিতভাবে প্রতিবাদ সভা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি জামায়াত ও এনসিপি যা আগামী দু এক দিনের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জে. (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী গতকাল সচিবালয়ে জানান আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স ইস্যুর ক্ষেত্রে এতদিন শুধু সামরিক ও বেসামরিক কর্মচারীদের অনুকূলে ইস্যু করা হতো। তবে পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনায় এখন জাতীয় নির্বাচনের প্রার্থীদের মধ্যে যারা আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স চাইবেন তাদেরও লাইসেন্স ইস্যু করা হবে।

লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এক কর্মশালায় নেতাকর্মীদের সতর্ক করে বলেছেন ষড়যন্ত্র থেমে নেই এবং এই ষড়যন্ত্রগুলো এখনই থামবে না বরং আরও খারাপও হতে পারে। তিনি বলেন আমাদের ভয় পেলে চলবে না এবং আতঙ্কগ্রস্ত হলে চলবে না। যেকোনো মূল্যে নির্বাচন হবে এবং এই পরিস্থিতি যত আমরা তৈরি করব ষড়যন্ত্রকারীরা তত পিছু হটতে বাধ্য হবে।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদও এক সংবাদ সম্মেলনে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন তপশিল ঘোষণার পরদিনই একজন সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থীকে মেরে ফেলার জন্য মাথায় গুলি করা হলো। তিনি প্রশ্ন রাখেন তাহলে প্রার্থীদের নিরাপত্তা কোথায় এবং এটাই যদি উৎসবমুখর ও ইতিহাসের সেরা নির্বাচন হয়ে থাকে তাহলে আমার বলার কিছু নেই।


রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ছবি এবং ছাত্রলীগ সদস্যপদ থাকা ফয়সালই কি সেই হামলাকারী?

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৩ ২০:৩৪:২২
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ছবি এবং ছাত্রলীগ সদস্যপদ থাকা ফয়সালই কি সেই হামলাকারী?
ছবি : সংগৃহীত

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা ৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসেছে। পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে সন্দেহভাজন একজনকে শনাক্ত করেছে যার নাম ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান। এই ব্যক্তিকে ধরিয়ে দিতে পারলে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

বিভিন্ন গণমাধ্যম ও অনুসন্ধানে জানা গেছে শনাক্ত হওয়া ফয়সাল করিম নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৯ সালের ১১ মে ঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তিনি সদস্য পদ পেয়েছিলেন। তার পুরো নাম ফয়সাল করিম দাউদ খান। ছাত্রলীগের একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে যে ওসমান হাদির ওপর গুলির ঘটনায় সন্দেহভাজন ব্যক্তি এবং ছাত্রলীগের সাবেক ওই সদস্য একই ব্যক্তি।

সবচেয়ে উদ্বেগজনক তথ্য হলো ২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের দমনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীদের সঙ্গে মাঠে সক্রিয় ছিলেন ফয়সাল। এছাড়া হাদির ওপর হামলার পর ফয়সালের সঙ্গে সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের বেশ কিছু নেতার ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

পেশাগত জীবনে ফয়সাল নিজেকে আইটি ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচয় দিতেন। তার লিংকডইন প্রোফাইল অনুযায়ী তিনি অ্যাপল সফট আইটি ওয়াইসিইউ টেকনোলজি ও এনলিস্ট ওয়ার্ক নামে তিনটি প্রতিষ্ঠানের মালিক। তিনি ২০১৩ সালে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার বিজ্ঞানে স্নাতক এবং পরে এমবিএ সম্পন্ন করেছেন।

শনিবার দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশ বা ডিএমপি গণমাধ্যমে ফয়সালের ছবি পাঠিয়ে তাকে শনাক্ত করার কথা জানায়। ডিএমপি জানায় হাদির প্রতিষ্ঠিত ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারসহ বিভিন্ন জায়গায় ফয়সালের সাম্প্রতিক সময়ের কিছু ছবি পাওয়া গেছে। সিসিটিভি ফুটেজের আততায়ীর সঙ্গে ওই ছবির চেহারার সাদৃশ্য থাকায় তাকেই মূল হামলাকারী হিসেবে সন্দেহ করা হচ্ছে।

এদিকে শরিফ ওসমান হাদির শারীরিক অবস্থা নিয়ে শনিবার মেডিকেল বোর্ড একটি আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দিয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন হাদিকে বর্তমানে কনজারভেটিভ ম্যানেজমেন্টে রাখা হয়েছে। তার চিকিৎসার বিষয়ে মেডিকেল বোর্ড ১১টি পর্যবেক্ষণ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।


এআই দিয়ে তৈরি ছবি দেখে ভুল তথ্য ছড়িয়েছেন রিজভী:  ডিএমপি কমিশনার

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৩ ২০:২৮:৫১
এআই দিয়ে তৈরি ছবি দেখে ভুল তথ্য ছড়িয়েছেন রিজভী:  ডিএমপি কমিশনার
ছবি : সংগৃহীত

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলাকারী ইসলামী ছাত্রশিবিরের সদস্য বলে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী যে বক্তব্য দিয়েছেন তা সত্য নয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করে ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী রিজভীর বক্তব্যকে বোগাস বা ভুয়া বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।

শনিবার ১৩ ডিসেম্বর দুপুরে নয়াপল্টনে এক সমাবেশে রুহুল কবির রিজভী দাবি করেন পুলিশ কমিশনার জানিয়েছেন হত্যাকারী শনাক্ত হয়েছে এবং সে শিবিরের সদস্য। রিজভীর এই দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএমপি কমিশনার সরাসরি বলেন আমি শুনেছি এবং এটি বোগাস কথাবার্তা। এটি সম্পূর্ণ ভুয়া এবং আমি এমন কোনো বক্তব্য দিইনি। এ বিষয়ে ইতিমধ্যে পুলিশের পক্ষ থেকে একটি রিজনডার বা প্রতিবাদলিপি জারি করা হয়েছে।

ডিএমপি কমিশনার আরও জানান এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি করা একটি ছবি প্রচার করা হয়েছে এবং সেটি দেখেই রিজভী ডিএমপি কমিশনারের বরাতে বোগাস তথ্য ছড়িয়েছেন।

এর আগে শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশের বক্তৃতায় রুহুল কবির রিজভী একটি ছাত্র সংগঠনের নেতার ওপর তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন তদন্ত শেষ হওয়ার আগেই মির্জা আব্বাসের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। ঘটনার এক ঘণ্টা পর ফেসবুকে একটি পক্ষ মির্জা আব্বাসকে গ্যাংস্টার বলে আক্রমণ করেছে। তিনি প্রশ্ন তোলেন ঠাকুর ঘরে কে রে আমি কলা খাইনি প্রবাদের মতো এক ঘণ্টা পরেও তাদের ওপর কেন হামলা হলো না।

রিজভী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন এই এলাকায় বারবার আসেন মেয়র এবং তার সামাজিক ও জাতীয় রাজনৈতিক অবস্থান বিবেচনা না করেই কেবল একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতা সিনিয়র নেতাকে অপমান করেছেন। তিনি বলেন আপনার চেয়ে ৩৬ বছর আগে আমরা ছাত্রনেতা ছিলাম এবং একটি বড় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিপি হলেও কখনো অন্য দলের সিনিয়র নেতাকে এভাবে অপমান করিনি।

হামলাকারীর পরিচয় নিয়ে রিজভী পাল্টা অভিযোগ করে বলেন হাদির ওপর হামলাকারী আগে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিল। এছাড়া তাকে সাদিক কায়েমের সঙ্গে একই টেবিলে বসে চা খেতে দেখা গেছে বলেও দাবি করেন বিএনপি নেতা। তিনি মন্তব্য করেন যারা একাত্তরে গণহত্যা চালিয়েছে তাদের বিবেকবোধের কোনো অস্তিত্ব নেই।


ফ্যাসিস্ট সন্ত্রাসীদের দমনে শুরু হচ্ছে অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৩ ২০:১৬:৫৯
ফ্যাসিস্ট সন্ত্রাসীদের দমনে শুরু হচ্ছে অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ
ছবি : সংগৃহীত

জাতীয় নির্বাচনের সময় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করা এবং ফ্যাসিস্ট সন্ত্রাসীদের দমন করতে অবিলম্বে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ ২’ চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। শনিবার ১৩ ডিসেম্বর দুপুরে বাংলাদেশ সচিবালয়ের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এ তথ্য জানান।

উপদেষ্টা বলেন লুটপাট এবং অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান চলমান রয়েছে। এটিকে আরও জোরদার ও ত্বরান্বিত করতে এবং ফ্যাসিস্ট সন্ত্রাসীদের দমন করার লক্ষ্যে কোর কমিটি অবিলম্বে অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ ২ চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সম্মুখসারির যোদ্ধাদের নিরাপত্তা প্রসঙ্গে তিনি বলেন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার যোদ্ধাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। সরকারের পক্ষ থেকে তাদের জন্য বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে এবং এ জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি সার্বিকভাবে বিষয়গুলো পর্যালোচনা করে জুলাই যোদ্ধাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। এছাড়া ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনা সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখছে উল্লেখ করে তিনি বলেন ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং এ হামলায় জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশে ফিরলে তার নিরাপত্তায় কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন সরকার তারেক রহমানের নিরাপত্তার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে এবং তার সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।

অস্ত্রের লাইসেন্স প্রাপ্তির নিয়মে পরিবর্তনের কথা জানিয়ে উপদেষ্টা আরও বলেন আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স ইস্যু করার ক্ষেত্রে এতদিন কেবল সামরিক ও বেসামরিক কর্মচারীরা সুবিধা পেতেন। তবে এখন থেকে জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদেরও আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স ইস্যু করা হবে বলে তিনি নিশ্চিত করেন।

ব্রিফিংয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি এবং আইজিপি বাহারুল আলম বিপিএমসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।


আলু পেঁয়াজের গল্প শুনতে চাই না স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ চাই

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৩ ১২:২৯:৫৯
আলু পেঁয়াজের গল্প শুনতে চাই না স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ চাই
ছবি : সংগৃহীত

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা ৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলাকারীদের গ্রেফতারে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ এনে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করেছেন মঞ্চ ২৪ এর আহ্বায়ক ফাহিম ফারুকী। শনিবার ১৩ ডিসেম্বর সকালে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই দাবি জানান এবং কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।

ফাহিম ফারুকী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন আমাদের পুলিশ প্রশাসন অকার্যকর। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার যে নিষ্ক্রিয়তা এর জন্য আমরা তার পদত্যাগ দাবি করছি এবং দ্রুততম সময়ে সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি। তিনি প্রশাসনের উদ্দেশে আল্টিমেটাম দিয়ে বলেন আগামী ৬ ঘণ্টার মধ্যে যদি হামলাকারীদের গ্রেফতার করা না হয় তবে আমরা লাগাতার কর্মসূচি ঘোষণা করব। উপদেষ্টাকে পদ থেকে নামিয়ে আমরা ঘরে ফিরব। আমরা আলু পেঁয়াজের গল্প শুনতে চাই না বরং আমরা বিচার চাই।

নির্বাচন প্রসঙ্গ টেনে ফাহিম ফারুকী বলেন নির্বাচনকে বানচাল করার জন্যই ওসমান হাদির ওপর আক্রমণ করা হয়েছে। এই আক্রমণের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ বার্তা দিয়েছে যে এদেশে নির্বাচন হলে তাদের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাবে। সুতরাং নির্বাচন যেন কোনোভাবেই না হয় সেই লক্ষ্যে আওয়ামী লীগ কাজ করছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শরিফ ওসমান হাদির শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে তিনি জানান হাদি এখন নিঃশ্বাস নিচ্ছেন এবং তাকে রক্ত দেওয়া হচ্ছে। তার পরিবারের সদস্যরা হাসপাতালেই উপস্থিত আছেন। পরিবারের পক্ষ থেকে হাদিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করা হয়েছে বলে জানান ফাহিম।

উল্লেখ্য গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগরে পানির ট্যাংকি এলাকায় প্রকাশ্যে দিবালোকে ওসমান হাদিকে গুলি করে দুর্বৃত্তরা। এরপর তাকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয় এবং পরে অবস্থার অবনতি হলে সন্ধ্যার পর এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে সেখানেই জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে চিকিৎসাধীন রয়েছেন এই তরুণ নেতা।


হামলার আগে হাদির পাশে বসেছিলেন সন্দেহভাজন ব্যক্তি

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৩ ১০:৫১:৩৪
হামলার আগে হাদির পাশে বসেছিলেন সন্দেহভাজন ব্যক্তি
ছবি: সংগৃহীত

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর গুলিবর্ষণের ঘটনায় নতুন করে চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এনেছে একটি অনুসন্ধানী গণমাধ্যম। ডিজিটাল ইনভেস্টিগেটিভ প্ল্যাটফর্ম দ্য ডিসেন্ট দাবি করেছে, হামলার ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে উঠে আসা এক ব্যক্তি ঘটনার কয়েক দিন আগেই ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে উপস্থিত ছিলেন এবং হাদির একেবারে কাছেই বসে একটি আলোচনায় অংশ নেন।

দ্য ডিসেন্টের প্রকাশিত তথ্যে বলা হয়, গত ৯ ডিসেম্বর ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে ধারণ করা সিসিটিভি ফুটেজ, ১২ ডিসেম্বরের হামলার সময় পুলিশের সংগ্রহ করা ভিডিও, বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবি এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে থাকা বিপুল পরিমাণ আলোকচিত্র তুলনামূলকভাবে বিশ্লেষণ করে এই মিল পাওয়া গেছে। তিনটি ভিন্ন ঘটনার ছবিতে দেখা ব্যক্তির চেহারার সঙ্গে ফয়সাল করিম মাসুদ, যিনি দাউদ খান নামেও পরিচিত, তার শারীরিক বৈশিষ্ট্যের সাদৃশ্য লক্ষ্য করা গেছে বলে দাবি করা হয়।

অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, দ্য ডিসেন্ট প্রায় ৫০টির বেশি ছবি বিশ্লেষণ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে কালচারাল সেন্টারের সিসিটিভি ফুটেজ, হামলার দিনের ভিডিও এবং ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামে ফয়সাল করিম মাসুদ নামের অ্যাকাউন্ট থেকে পাওয়া ছবি। পাশাপাশি আওয়ামীপন্থি বিভিন্ন পেজ ও ব্যক্তিগত প্রোফাইলেও একই ধরনের ছবি পাওয়া গেছে বলে জানানো হয়।

বিশ্লেষণে আরও বলা হয়, সন্দেহভাজন হামলাকারীর বাম হাতে থাকা একটি বিশেষ ডিজাইনের ঘড়ির সঙ্গে ফয়সাল করিম মাসুদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা একাধিক ছবিতে দেখা ঘড়ির মিল রয়েছে। দুটি ফেস ডিটেকশন অ্যাপ ব্যবহার করে করা যাচাইয়েও ওই ব্যক্তির চেহারার সঙ্গে সিসিটিভি ফুটেজে দেখা ব্যক্তির সাদৃশ্য পাওয়া গেছে বলে দাবি করা হয়।

ফয়সাল করিম মাসুদ সম্পর্কে পুরোনো সংবাদসূত্র উদ্ধৃত করে দ্য ডিসেন্ট জানায়, তিনি একসময় রাজধানীর আদাবর থানা ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন। ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের আদাবর এলাকায় একটি অফিসে ঢুকে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুটের ঘটনায় তাকে প্রধান আসামি হিসেবে র‍্যাব গ্রেপ্তার করেছিল বলে বিভিন্ন মূলধারার গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। তবে পরবর্তীতে তিনি কীভাবে মুক্তি পান, সে বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক তথ্য পাওয়া যায়নি।

এদিকে অনুসন্ধানী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের তার ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে দাবি করেন, হাদির ওপর হামলার ঘটনায় সম্পৃক্ত একজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। তিনি ফয়সাল করিম মাসুদকে সাবেক ছাত্রলীগ সহ-সভাপতি (ঢাকা মহানগর উত্তর) ও আদাবর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হিসেবে উল্লেখ করেন। সায়ের ৯ ডিসেম্বর ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে তোলা একটি ছবিও শেয়ার করেন, যেখানে লাল বৃত্ত দিয়ে চিহ্নিত করে একজন ব্যক্তিকে হাদির পাশে বসে থাকতে দেখা যায়।

এই হামলার ঘটনা ঘটে শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পল্টন এলাকার বিজয়নগর কালভার্ট সড়কে। প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, মোটরসাইকেলে আসা দুই দুর্বৃত্ত রিকশায় থাকা শরিফ ওসমান হাদিকে লক্ষ্য করে গুলি করে দ্রুত পালিয়ে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয় এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

হামলার পরপরই বিষয়টি দেশজুড়ে আলোচনার সৃষ্টি করে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে ঢাকা মহানগর পুলিশ, গোয়েন্দা পুলিশ এবং র‍্যাবের সমন্বয়ে সাঁড়াশি অভিযান চালানো হচ্ছে। তদন্তের স্বার্থে সম্ভাব্য সব দিক বিবেচনায় নিয়ে কাজ চলছে বলেও সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে।

-রাফসান


কারা ভোটে দাঁড়াতে পারবেন না, স্পষ্ট করল নির্বাচন কমিশন

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৩ ০৯:৩০:০৮
কারা ভোটে দাঁড়াতে পারবেন না, স্পষ্ট করল নির্বাচন কমিশন
ছবি: সংগৃহীত

নির্বাচন কমিশনের জারি করা সর্বশেষ পরিপত্র অনুযায়ী আদালত কর্তৃক ফেরারি বা পলাতক হিসেবে ঘোষিত কোনো ব্যক্তি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না। একই সঙ্গে সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার মেয়র, উপজেলা পরিষদ, জেলা পরিষদ এবং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা পদে বহাল থেকে নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। তবে এসব জনপ্রতিনিধি নিজ নিজ পদ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগ করলে প্রার্থী হওয়ার সুযোগ পাবেন। পাশাপাশি প্রজাতন্ত্রের বা কোনো সংবিধিবদ্ধ সরকারি প্রতিষ্ঠানের লাভজনক পদে কর্মরত ব্যক্তিরাও পদত্যাগ ছাড়া নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।

পরিপত্রে আরও বলা হয়েছে, একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ তিনটি সংসদীয় আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারবেন। কেউ যদি একসঙ্গে তিনটির বেশি আসনে প্রার্থী হন, তাহলে তার দাখিল করা সব মনোনয়নপত্র বাতিল বলে গণ্য হবে। মনোনয়নপত্র জমাদানের ক্ষেত্রেও কঠোর বিধান আরোপ করা হয়েছে। প্রার্থী নিজে অথবা তার প্রস্তাবক কিংবা সমর্থককে সশরীরে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং বা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে হবে।

ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় নির্ধারণ করা হয়েছে ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত। পরবর্তী সময়ে ৩০ ডিসেম্বর থেকে ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই কার্যক্রম চলবে।

পরিপত্রে প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা ও অযোগ্যতার বিষয়গুলো বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। সংবিধানের ৬৬(১) ও ৬৬(২) অনুচ্ছেদ এবং গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) ১৯৭২-এর ১২(১) ধারা অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি যদি বাংলাদেশের নাগরিক হন এবং তার বয়স ন্যূনতম ২৫ বছর পূর্ণ হয়, তাহলে তিনি সংসদ সদস্য পদে প্রার্থী হতে পারবেন। তবে আদালত কর্তৃক ফেরারি বা পলাতক ঘোষিত ব্যক্তি এই যোগ্যতার আওতায় পড়বেন না।

এছাড়া যেসব ব্যক্তি নির্বাচনে অযোগ্য বিবেচিত হবেন, তাদের মধ্যে রয়েছেন আদালত কর্তৃক অপ্রকৃতিস্থ ঘোষিত ব্যক্তি, দেউলিয়া ঘোষিত হয়ে দায়মুক্ত না পাওয়া ব্যক্তি, বিদেশি রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব গ্রহণ বা আনুগত্য স্বীকারকারী ব্যক্তি এবং নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে কমপক্ষে দুই বছর কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তি, যদি তার মুক্তির পর পাঁচ বছর অতিক্রান্ত না হয়।

১৯৭২ সালের বাংলাদেশ যোগসাজশকারী (বিশেষ ট্রাইব্যুনাল) আদেশের অধীনে দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরাও নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। একই সঙ্গে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অবসরে যাওয়ার পর তিন বছর পূর্ণ না হলে প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য হবেন। দুর্নীতির অভিযোগে প্রজাতন্ত্রের বা কোনো সংবিধিবদ্ধ সরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরি থেকে বরখাস্ত, অপসারিত বা বাধ্যতামূলক অবসরপ্রাপ্ত ব্যক্তিরাও পাঁচ বছর না পার হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না। পাশাপাশি ঋণখেলাপি এবং টেলিফোন, গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানিসহ সরকারি সেবার বিল বকেয়া থাকা ব্যক্তিরাও প্রার্থী হওয়ার সুযোগ পাবেন না।

-রফিক

পাঠকের মতামত:

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

রাষ্ট্রের ধারণাটি একসময় কেবল প্রশাসনিক ক্ষমতা, আইনের শাসন এবং নিরাপত্তা প্রদানের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল। কিন্তু আধুনিক বিশ্বে রাষ্ট্রের ভূমিকা এখন... বিস্তারিত

৪.৪ লাখ শেয়ার কেনার ঘোষণা এমডির

৪.৪ লাখ শেয়ার কেনার ঘোষণা এমডির

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠান সালভো কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড (SALVO)-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক কোম্পানির শেয়ার কেনার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রক... বিস্তারিত