নিত্যপণ্যে জোয়ার-ভাটা: কে বাড়ল, কে কমল?

সত্য নিউজ: রাজধানীরভোক্তাবাজারে আবারও নিত্যপণ্যের দামে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। ডিম, ব্রয়লার ও সোনালি মুরগি, এমনকি কিছু মৌসুমি সবজির দাম বাড়লেও কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে মিনিকেট চালের দামে। সরবরাহ ও চাহিদার বৈষম্য, উৎপাদন ঘাটতি এবং মৌসুমি পরিবর্তনকে দামের এই তারতম্যের কারণ হিসেবে দেখছেন বিক্রেতা ও বাজার বিশ্লেষকেরা।
ডিমের বাজারে আবার উত্তাপ
খুচরা বাজারে ডিমের দাম এক সপ্তাহের ব্যবধানে ডজনে ৫ টাকা এবং এক মাসে ১৫ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। বর্তমানে প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায়, যা মাসখানেক আগে ছিল ১১৫–১২০ টাকা। বিক্রেতারা বলছেন, সবজির উচ্চমূল্যের কারণে ক্রেতারা প্রোটিনের বিকল্প উৎস হিসেবে ডিমের দিকে ঝুঁকছেন, যা চাহিদা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছে। তবে উৎপাদন বাড়েনি, ফলে দামের এই উর্ধ্বগতি।
মুরগির বাজারেও ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা
ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭০–১৮০ টাকা কেজি এবং সোনালি মুরগির দাম ২৫০–২৮০ টাকা। গত সপ্তাহের তুলনায় এ হার কেজিপ্রতি ১০ থেকে ১৫ টাকা বেশি। ভোক্তারা বলছেন, ঈদের আগে থেকেই মুরগির দামে ধীরে ধীরে ঊর্ধ্বগতি শুরু হয়েছে।
মিনিকেটে স্বস্তি, চালের দামে খানিকটা শীতলতা
বাজারে নতুন বোরো ধান আসার প্রভাবে সরু বা মিনিকেট চালের দাম কেজিতে ১–২ টাকা কমেছে। বর্তমানে খুচরা বাজারে মঞ্জুর, সাগর ও ডায়মন্ড ব্র্যান্ডের মিনিকেট চাল ৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা মাসখানেক আগে ছিল ৮৫ টাকার ওপরে। রসিদ মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে ৭২ টাকায়, তবে কিছু ব্র্যান্ড যেমন মোজাম্মেল এখনও বিক্রি হচ্ছে ৮২ টাকায়।
অন্যান্য চাল যেমন নাজিরশাইল (৮০–৯৫ টাকা), ব্রি-২৮ ও ব্রি-২৯ (৫৮ টাকা), এবং স্বর্ণা (৫৫ টাকা)–এর দাম আপাতত স্থিতিশীল।
সবজির বাজারে মিশ্র চিত্র
সবজির বাজারে গত সপ্তাহের তুলনায় টমেটো ও পেঁপের দাম কিছুটা বেড়েছে। টমেটো, পটোল, ঝিঙে, ঢ্যাঁড়সের মতো সবজি বিক্রি হয়েছে ৪০–৬০ টাকায়; আর বরবটি, কাঁকরোল, বেগুন, পেঁপে বিক্রি হয়েছে ৬০–৮০ টাকায়। সবজির দামে ঊর্ধ্বগতি থাকলেও সরবরাহ স্থিতিশীল থাকায় পরিস্থিতি এখনও নিয়ন্ত্রণের মধ্যে।
পেঁয়াজ ও অন্যান্য পণ্যে স্থিতিশীলতা
পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৫৫ থেকে ৭০ টাকার মধ্যে অবস্থান করছে, যা আগের সপ্তাহের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। আলু ২০–২৫ টাকা, দেশি রসুন ১২০–১৪০ টাকা এবং আমদানি করা রসুন ২২০–২৪০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।
মাছ-মাংসেও জিনিসপত্রের ধারাবাহিক চাপ
মাছের বাজারেও ভোক্তাদের জন্য কোনো বড় স্বস্তি নেই। পাবদা বিক্রি হয়েছে ৩৫০–৪৫০ টাকা কেজি, রুই ৩৫০–৪০০, তেলাপিয়া ২২০–২৪০ এবং পাঙাশ ২০০–২৫০ টাকায়। গরুর মাংস বিক্রি হয়েছে ৭০০–৮০০ টাকা কেজি এবং খাসির মাংস ১,০০০–১,১৫০ টাকায়।
বিশ্লেষণ: বাজারে ভারসাম্যের সংকট
বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্তমানে বাজারে পণ্যের সরবরাহ ব্যবস্থাপনা, উৎপাদন খরচ ও পরিবহন খাতে নানা রকম চাপ সৃষ্টি হওয়ায় দামের এই অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে। অপরদিকে, চাহিদা বাড়লেও উৎপাদন ও সরবরাহে ছন্দপতন বাজারে প্রতিনিয়ত চড়া দামের চাপ তৈরি করছে।
ভোক্তারা আশাবাদী, সরকারের নজরদারি ও নীতিগত হস্তক্ষেপ বাড়লে বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরবে। বিশেষ করে, চালের দামে যে স্বস্তি দেখা যাচ্ছে, সেটি যদি অন্য পণ্যে বিস্তৃত হয়, তবে ভোক্তার কষ্ট কিছুটা লাঘব পাবে।
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- শেয়ারবাজারে গেম্বলারদের দৌরাত্ম্য: আস্থা ফেরাতে চাই কঠোর শাস্তি ও কাঠামোগত সংস্কার
- জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ঈদের দীর্ঘ ছুটি, চালু থাকবে জরুরি সেবা
- বাংলাদেশে সেনা-সরকার উত্তেজনা ও ‘কু’ এর গুঞ্জন: নেপথ্যে কি?
- নতুন রাজনৈতিক সমীকরণে কারা টিকে থাকবে, কারা হারিয়ে যাবে?
- সেনাপ্রধানের বক্তব্য, জুলকারনাইন তাতে যা বললেন!
- তারকা পরিচিতি: রক্ষাকবচ না কি সমাজবিমুখ অব্যাহতি?
- নাহিদের স্পষ্ট বার্তা: এনসিপিতে নেই দুই উপদেষ্টা আসিফ ও মাহফুজ
- বিএনপির সালাউদ্দিনকে নিয়ে কি লিখলেন প্রেস সচিব শফিকুল?
- বাংলাদেশে আন্তর্বর্তী সরকারের পদক্ষেপে মৌলিক অধিকার হুমকিতে
- দারুননাজাত: নৈতিকতার আলোকবর্তিকা
- মুহাম্মদ ইউনূস প্রশাসনের ভবিষ্যৎ কেন অনিশ্চিত
- ইউজিসি-ম্যাকগিল পিএইচডি স্কলারশিপ: শুধুমাত্রবাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য
- ডিপ্লোমেটিক শেকআপ: জসীম উদ্দিন দূতাবাসে , সচিব হচ্ছেন নজরুল
- ডিসেম্বরে নির্বাচন চান সেনাপ্রধান
- "ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি সব রাজনৈতিক দল অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছে"