গণঅভ্যুত্থানের সময় সেনানিবাসে আশ্রয়: সেনাবাহিনীর ব্যাখ্যা ও তালিকা প্রকাশ

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ মে ২২ ২৩:৩৫:০৬
গণঅভ্যুত্থানের সময় সেনানিবাসে আশ্রয়: সেনাবাহিনীর ব্যাখ্যা ও তালিকা প্রকাশ

২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে প্রাণরক্ষায় সেনানিবাসে আশ্রয় নেওয়া ব্যক্তি ও পরিবারগুলোর বিষয়ে আনুষ্ঠানিক অবস্থান জানিয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। আজ বৃহস্পতিবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, সেই সময় শুধুমাত্র মানবিক দায়বদ্ধতা থেকে আশ্রয়প্রার্থীদের জীবনরক্ষাই ছিল সেনাবাহিনীর মূল লক্ষ্য।

আইএসপিআর জানায়, অনিশ্চিত ও অস্থির পরিস্থিতিতে দেশের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ, বিশেষ করে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, বিচারক, পুলিশ সদস্য এবং তাঁদের পরিবারবর্গ প্রাণের নিরাপত্তার জন্য দেশের বিভিন্ন সেনানিবাসে আশ্রয় চেয়েছিলেন। পরিস্থিতির তাৎক্ষণিকতায় পরিচয় যাচাইয়ের চেয়ে মানবিক বিবেচনায় জীবনরক্ষাকেই অগ্রাধিকার দেওয়া হয়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, গণঅভ্যুত্থানের প্রেক্ষিতে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটে। এই সময় হামলা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, বিচারবহির্ভূত শাস্তি ও নানা সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। এতে সাধারণ মানুষের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতা বৃদ্ধি পায়।

সেনাবাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, মোট ৬২৬ জনকে সেনানিবাসে সাময়িকভাবে আশ্রয় দেওয়া হয়, যাঁদের মধ্যে ছিলেন—২৪ জন রাজনৈতিক নেতা, ৫ জন বিচারক, ১৯ জন অসামরিক প্রশাসনের কর্মকর্তা, ৫১৫ জন পুলিশ সদস্য, বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা, ৫১ জন নারী ও শিশু এবং আরও কয়েকজন ভিন্ন পেশার মানুষ। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তাঁদের অধিকাংশই এক বা দুই দিনের মধ্যেই সেনানিবাস ত্যাগ করেন।

আইএসপিআরের বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, আশ্রয়গ্রহণকারী ব্যক্তিদের তালিকা এর আগেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে এবং এ বিষয়ে ১৮ আগস্ট একটি আনুষ্ঠানিক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করা হয়। সে তালিকায় ১৯৩ জন ব্যক্তি এবং আরও ৪৩২ জন পুলিশ সদস্য ও ১ জন এনএসআই কর্মকর্তার নাম অন্তর্ভুক্ত ছিল। এবার পূর্ণাঙ্গ তালিকা সংযুক্ত করে তা জনসমক্ষে উপস্থাপন করা হলো।

সেনাবাহিনী অভিযোগ করে, কিছু স্বার্থান্বেষী মহল উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে তাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে চায় এবং জনগণের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করার অপপ্রয়াস চালাচ্ছে। এ ধরনের অপপ্রচারে কান না দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে সেনাবাহিনী তাদের পেশাদারিত্ব, নিষ্ঠা ও জাতির প্রতি অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে।

সেনাবাহিনী দৃঢ়ভাবে জানায়, তারা দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি সংকটকালে মানবিক ভূমিকা পালনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিল এবং থাকবে।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ