ঝিনাইদহ সীমান্তে ১১৯ কোটি টাকার ভারতীয় মাদক ধ্বংস করলো বিজিবি

সারাদেশ ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ মে ২২ ১৯:৫৫:৩৬
ঝিনাইদহ সীমান্তে ১১৯ কোটি টাকার ভারতীয় মাদক ধ্বংস করলো বিজিবি

সত্য নিউজ:ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর সীমান্তে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে উদ্ধার করা প্রায় ১১৯ কোটি ৬৪ লাখ টাকার মাদকদ্রব্য আনুষ্ঠানিকভাবে ধ্বংস করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। বৃহস্পতিবার (২২ মে) সকালে মহেশপুর ৫৮ বিজিবি সদর দপ্তর প্রাঙ্গণে এ কার্যক্রম পরিচালিত হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিজিবির রিজিওনাল কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হুমায়ুন কবীর এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন কুষ্টিয়া সেক্টরের কমান্ডার আহসান হাবিব। স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন মহেশপুর ৫৮ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল রফিকুল আলম। এই মাদক ধ্বংস কার্যক্রমকে ঘিরে আয়োজন করা অনুষ্ঠানে ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া জেলার প্রশাসনিক কর্মকর্তা, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য এবং বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

ধ্বংস করা মাদকদ্রব্যের পরিমাণ ও ধরন অনুযায়ী বিজিবি যে তথ্য দিয়েছে, তাতে দেখা যায়, উদ্ধারকৃত মাদকের মোট বাজারমূল্য আনুমানিক ১১৯ কোটি ৬৪ লাখ ৮৩ হাজার ২০২ টাকা। এই বিপুল পরিমাণ মাদকের মধ্যে ছিল ২৫ হাজার ৮১৩ বোতল ফেনসিডিল এবং ৩৮ হাজার ৯৮০ বোতল বিদেশি মদ। গাঁজার পরিমাণ ছিল ১৩০ কেজি, আর ইয়াবা ট্যাবলেট ছিল ৬৫ হাজার ১৭৪ পিস। হেরোইনের পরিমাণ ছিল ৩৭ কেজি এবং কোকেনের পরিমাণ ৭৯ কেজি। এছাড়া ধ্বংস করা হয়েছে ৭ কেজি ক্রিস্টাল ম্যাথ (আইস) এবং ২৯ বোতল এলএসডি।

এছাড়াও, সেবন বা বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের ট্যাবলেট ধ্বংস করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ২১ হাজার ৩১৬ পিস ভায়াগ্রা ট্যাবলেট এবং ৩০ হাজার ৭০ পিস ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেট। পাশাপাশি ধ্বংস করা হয় ৯ হাজার ৮৪৫ পিস ভারতীয় ওষুধ ও ৯ হাজার ৯৬০ পিস বাংলাদেশি ওষুধ। এই পরিসংখ্যান থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়, সীমান্তবর্তী অঞ্চলে মাদক চোরাচালান কতটা বিপজ্জনক মাত্রায় পৌঁছেছে, এবং বিজিবির সক্রিয় অভিযান কীভাবে সমাজকে এই ভয়াবহতা থেকে রক্ষায় ভূমিকা রাখছে।

মহেশপুর ৫৮ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল রফিকুল আলম জানান, ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে ২০২৫ সালের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত অর্থাৎ ১৫ মাসে মহেশপুর ও জীবননগর সীমান্ত থেকে এসব বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়। তিনি আরও বলেন, বিজিবির কঠোর নজরদারি ও সুশৃঙ্খল অভিযানের কারণেই এই সাফল্য সম্ভব হয়েছে।

বিজিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়, মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ অব্যাহত থাকবে এবং সীমান্তে আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে বিজিবি সদা প্রস্তুত রয়েছে। এছাড়া মাদক পাচার রোধে স্থানীয় জনগণের সচেতনতা বাড়ানোর জন্য তারা কমিউনিটি পর্যায়ে সচেতনতামূলক কার্যক্রমও পরিচালনা করছে।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ