টিউলিপ সিদ্দিকির মামলা নিয়ে বিষ্ফোড়ক মন্তব্য ব্রিটিশ আইনজীবীদের

ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিকি, সাবেক স্বৈরাচার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা এবং আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে পূর্বাচল প্লট বরাদ্দ দুর্নীতি মামলার রায় আগামী ১ ডিসেম্বর ঘোষণা করা হবে। মামলাটি বর্তমানে শুধু বাংলাদেশেই নয়, যুক্তরাজ্যেও বড় রাজনৈতিক ও আইনি বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান জানায়, লন্ডনের বেশ কয়েকজন শীর্ষ আইনজীবী এই মামলাকে ‘পরিকল্পিত, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং অন্যায্য’ বলে বর্ণনা করেছেন এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলামের কাছে একটি আনুষ্ঠানিক চিঠিতে নিজেদের উদ্বেগ তুলে ধরেছেন।
চিঠিতে স্বাক্ষর করা ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন ব্রিটেনের সাবেক বিচারমন্ত্রী রবার্ট বাকল্যান্ড কেসি, সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ডমিনিক গ্রিভি, খ্যাতনামা আইনজীবী চেরি ব্লেয়ার কেসি, ফিলিপ সেন্ড কেসি এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনজীবী জিওফ্রে রবার্টসন কেসি। তারা অভিযোগ করেছেন যে টিউলিপ সিদ্দিকি তার মামলার বিষয়ে যথাযথ তথ্য পাননি, তার আইনি প্রতিনিধিকে আদালতে পেশ হওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়নি এবং যার সঙ্গে তিনি পরামর্শ করছিলেন তাকে গৃহবন্দি করা হয়েছে। এমনকি ওই আইনজীবীর মেয়েকে হুমকির মুখে পড়তে হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তারা। তাদের মতে, এসব ঘটনা ন্যায়বিচারের মৌলিক নীতি এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদণ্ডের পরিপন্থী।
টিউলিপ সিদ্দিকি হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড হাইগেট আসনের নির্বাচিত এমপি এবং যুক্তরাজ্যের নাগরিক। তিনি দীর্ঘদিন ধরে লন্ডনে বসবাস করছেন এবং কোনোভাবেই পলাতক আসামি নন। তবু শেখ হাসিনার পতনের পর গত বছরের আগস্টে টিউলিপ, তার মা, ভাই এবং আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে পূর্বাচল আবাসিক এলাকায় প্লট বরাদ্দ সংক্রান্ত দুর্নীতির মামলা করা হয়। অভিযোগ রয়েছে, শেখ হাসিনার প্রভাব ব্যবহার করে নিজের মায়ের নামে প্লট বরাদ্দ নিয়েছিলেন টিউলিপ। তিনি অবশ্য শুরু থেকেই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন।
জুলাই গণঅভ্যুত্থান চলাকালে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত হয়ে শেখ হাসিনা গত সপ্তাহে মৃত্যুদণ্ড পান। তার পরপরই টিউলিপ সিদ্দিকির মামলাটিতেও নতুন করে আন্তর্জাতিক মনোযোগ আসে। দুর্নীতির অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পর টিউলিপ ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন এবং শেষ পর্যন্ত তিনি সিটি মিনিস্টারের পদ থেকে পদত্যাগ করেন। তার দাবি, তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সরকারের মনোযোগ বিচ্যুত করছিল, তাই তিনি স্বেচ্ছায় দায়িত্ব ছেড়েছেন।
বাংলাদেশে মামলার রায় ঘোষণার তারিখ ১ ডিসেম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে। মামলার রায় দুই দেশের রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্কেও প্রভাব ফেলতে পারে বলে মত বিশ্লেষকদের। লন্ডনের সংসদ সদস্য, মানবাধিকার সংগঠন ও আইনি মহল ঘটনাটি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানাচ্ছে।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান
পাকিস্তানের জাহাজ-বিধ্বংসী ব্যালিস্টিক মিসাইলের সফল পরীক্ষা
পাকিস্তান তাদের প্রতিরক্ষা ইতিহাসে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক স্পর্শ করলো। সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে উদ্ভাবিত জাহাজ-বিধ্বংসী ব্যালিস্টিক মিসাইলের সফল পরীক্ষা চালিয়েছে পাকিস্তান নৌবাহিনী, যা সমুদ্র ও স্থল—উভয় ক্ষেত্রেই নির্ভুল আঘাত হানতে সক্ষম। আঞ্চলিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি, বিশেষ করে ভারত–পাকিস্তান সামরিক উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে এই সফল উৎক্ষেপণ উল্লেখযোগ্য ভূ-কৌশলগত গুরুত্ব বহন করছে।
মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) পাকিস্তানের প্রথম সারির দৈনিক ডন সেনাবাহিনীর মিডিয়া শাখা আইএসপিআরের বরাতে জানায়, অত্যাধুনিক নির্দেশনা ব্যবস্থা ও উন্নত ম্যানুভারিং প্রযুক্তিসমৃদ্ধ এই ক্ষেপণাস্ত্রটি অত্যন্ত উচ্চগতিতে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। এতে স্টেট অব দ্য আর্ট গাইডেন্স সিস্টেম, উন্নত অ্যাভিওনিক্স, অ্যান্টি-জ্যামিং ন্যাভিগেশন সিস্টেম এবং শেষ মুহূর্তে দিক পরিবর্তন করার ক্ষমতা যুক্ত করা হয়েছে, যা শত্রুপক্ষের নজরদারি ব্যবস্থা ভেদ করতে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।
আইএসপিআরের বিবৃতিতে বলা হয়, এই সফল উৎক্ষেপণ পাকিস্তানের স্বয়ংসম্পূর্ণ প্রতিরক্ষা প্রযুক্তির শক্তি প্রমাণ করে এবং ভবিষ্যতের নৌকৌশলগত সক্ষমতা নিশ্চিত করার পথে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। ক্ষেপণাস্ত্রটি পরীক্ষার সময় নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল নাভিদ আশরাফসহ দেশীয় বিজ্ঞানী ও প্রতিরক্ষা প্রকৌশলীরা উপস্থিত ছিলেন।
বিশ্লেষকদের মতে, সমুদ্র-ভিত্তিক নিরাপত্তা হুমকি মোকাবিলা, ভারতীয় নৌবাহিনীর বাড়তি সক্ষমতা প্রতিরোধ এবং আরব সাগরে কৌশলগত ভারসাম্য বজায় রাখতে এই নতুন ব্যালিস্টিক মিসাইল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বিশেষ করে শত্রুপক্ষের বড় যুদ্ধজাহাজ, বিমানবাহী রণতরী ও উচ্চমূল্যের সামরিক সম্পদের বিরুদ্ধে এ মিসাইল এক গভীর প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করবে।
পর্যবেক্ষকদের ধারনা, নৌবাহিনীর বহরে যুক্ত হলে মিসাইলটি পাকিস্তানের সমুদ্রসীমা রক্ষা, দূরপাল্লার সামরিক প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো এবং আঞ্চলিক সমুদ্রশক্তির ভারসাম্য নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করতে পারে।
এর মাত্র দুই মাস আগে পাকিস্তান সফলভাবে পরীক্ষা করেছিল দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি নতুন ক্রুজ মিসাইল ফাতাহ–৪, যার পাল্লা ছিল প্রায় ৭০০ কিলোমিটার। ধারাবাহিক পরীক্ষাগুলো ইঙ্গিত দিচ্ছে যে পাকিস্তান তাদের ক্ষেপণাস্ত্র উন্নয়ন কর্মসূচি দ্রুত গতিতে এগিয়ে নিচ্ছে।
-রফিক
ই–১ প্রকল্প ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের ‘শেষ কফিন’
ইসরায়েল অধিকৃত পশ্চিম তীরে আজ যে সহিংস বাস্তুচ্যুতি চলছে, তা কেবল বিচ্ছিন্ন কিছু সামরিক অভিযান নয় বরং সুদীর্ঘ সময় ধরে চালানো একটি পরিকল্পিত ও কাঠামোগত দখলনীতির সর্বশেষ রূপ। গাজায় অব্যাহত গণহত্যা, অবরোধ ও নির্বিচার বোমাবর্ষণের সমান্তরালে পশ্চিম তীরও ধীরে ধীরে পরিণত হচ্ছে অবরুদ্ধ ও ধ্বংসস্তূপে ভরা আরেকটি ফ্রন্টে। আন্তর্জাতিক পরিসরে লজ্জাজনক নীরবতা ও নিষ্ক্রিয়তার সুযোগে ইসরায়েলের সামরিক ও রাজনৈতিক নেতৃত্ব পশ্চিম তীরের জনসংখ্যাগত মানচিত্র পাল্টে ফেলতে চায় বলে মানবাধিকার সংগঠনগুলোর বক্তব্য।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) গত সপ্তাহে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানায়, ২০২৪ সালের পুরোটা জুড়ে জেনিন, নুর শামস ও তুলকারেম শরণার্থী ক্যাম্পে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর কঠোর অভিযান ও ধ্বংসযজ্ঞে ৩২ হাজার ফিলিস্তিনিকে ঘরবাড়ি হারাতে হয়েছে যা ১৯৬৭ সালের পর এই অঞ্চলের সবচেয়ে বড় উচ্ছেদ।
আন্দোলনের ভাষায়, এটি “সাধারণ সামরিক অভিযান” নয়; বরং একটি ক্যাম্পকে পুরোপুরি কার্যক্ষমতা হারানোর মতো করে ধ্বংস করে ফেলা রাস্তা কেটে দেওয়া, ঘর ধ্বংস, বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা, হাসপাতালের প্রবেশপথ অবরুদ্ধ করা এবং চলাচলের শেষ অবশিষ্ট পথও বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া। ইসরায়েল দাবি করছে, এটি “নিরাপত্তার প্রয়োজনীয়তা” এবং “অপারেশন আয়রন ওয়াল”–এর অংশ, যার লক্ষ্য ক্যাম্প থেকে প্রতিরোধমুখী ফিলিস্তিনিদের নির্মূল করা।
কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, বহু মাস পেরিয়ে গেলেও অধিবাসীদের ফিরতে দেওয়া হয়নি। বরং পুরো ক্যাম্পকে পরিণত করা হয়েছে সামরিক নিয়ন্ত্রণাধীন একটি নিষিদ্ধ অঞ্চলে।
গাজায় গণহত্যা চলার পর থেকে পশ্চিম তীরজুড়েও ইসরায়েলি সহিংসতা তীব্রভাবে বেড়েছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ১,০০০–রও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত, যা পশ্চিম তীরের জন্য নতুন বাস্তবতা। প্রতিদিনই রাতের অভিযান, আটক, গুলি, বুলডোজার দিয়ে রাস্তা-কাটা, ঘর ভাঙা ও অবরোধ চালানো হচ্ছে।
বিটসেলেম–এর নির্বাহী পরিচালক ইউলি নোভাক বলেছেন, “পশ্চিম তীরে যা ঘটছে, তা হচ্ছে আয়তন ছোট কিন্তু উদ্দেশ্যে গাজার মতোই ধ্বংসাত্মক। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নীরবতা ইসরায়েলের সহিংসতাকে আরও বেপরোয়া করে তুলছে।”
পশ্চিম তীরের সবচেয়ে বড় অংশ এরিয়া সি, যেখানে ফিলিস্তিনিদের প্রশাসনিক ক্ষমতা একেবারেই নেই। এখানে ইসরায়েল যেকোনো ঘরবাড়ি ভেঙে দিতে পারে, এবং সেটিই ঘটছে ব্যাপকভাবে। জাতিসংঘ (ওসিএইচএ) জানিয়েছে, শুধু ২০২৪ সালেই এরিয়া সি–তে ঘরবাড়ি ভেঙে ১,০০০–র বেশি মানুষকে গৃহহীন করা হয়েছে। অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমেও আরও ৫০০ মানুষ ঘরহারা।
ইসরায়েল বলছে, “পারমিট ছিল না” কিন্তু জাতিসংঘ ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, এই এলাকায় ফিলিস্তিনিদের জন্য পারমিট পাওয়া প্রায় অসম্ভব, এবং সেটাই ইসরায়েলের একটি কৌশল: পারমিট না দিয়ে পরে ঘর ভাঙার অজুহাত তৈরি করা।
চরম ডানপন্থী ইসরায়েলি নেতৃত্ব, বিশেষ করে অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোত্রিচ প্রকাশ্যেই বলেছেন:
- “আমার জীবনের সবচেয়ে বড় মিশন হলো ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠন ঠেকানো।”
- “জুদিয়া–সামারিয়া (পশ্চিম তীর) ইসরায়েলের অংশ এটি আগে স্থলভাগে, পরে আইনে প্রতিষ্ঠা করা হবে।”
- “সব অবৈধ বসতিকে বৈধ ঘোষণা করা হবে।”
ইসরায়েলি সংসদ ইতিমধ্যে একটি প্রাথমিক বিল পাস করেছে, যা পশ্চিম তীরকে ইসরায়েলের আইনগত এখতিয়ারে আনার পথ খুলতে পারে যা আন্তর্জাতিক আইনের ঘোর লঙ্ঘন।
আগস্টে স্মোত্রিচ ঘোষণা করেন নতুন ই–১ বসতি ৩,000 ঘর তৈরি হবে পূর্ব জেরুজালেম ও পশ্চিম তীরের মধ্যবর্তী জায়গায়। এই অঞ্চল আলাদা হয়ে গেলে ভবিষ্যতে কোনোভাবেই ভৌগোলিকভাবে যুক্ত একটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠন সম্ভব হবে না। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় একে “সমাধিস্বরূপ প্রকল্প” বলে অভিহিত করছে।
বর্তমানে পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে ৭ লাখের বেশি ইসরায়েলি অবৈধ বসতি স্থাপনকারী রয়েছে। এদের অনেকেই আবার সরকারের উচ্চপদে কাজ করছেন, ফলে বসতিদের সহিংসতা আরও প্রতিষ্ঠানিক রূপ পাচ্ছে।
জাতিসংঘের ওসিএইচএ বলছে, ২০২৩–২৪ সালে বসতি উগ্রপন্থীদের সহিংসতা সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে গড়ে প্রতিদিন ৮টি হামলা। এর মধ্যে রয়েছে:
- জলপাই গাছ কেটে ফেলা
- কৃষিজমি দখল
- ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলি
- ঘরবাড়িতে আগুন
- পশুপাল হত্যা
- রাস্তায় প্রতিরোধ গড়ে তোলা
জলপাই মৌসুমে এসব হামলা বহুগুণে বেড়েছে। প্যালেস্টাইনি ফার্মার্স ইউনিয়ন বলছে, “এটি গ্রামীণ ফিলিস্তিনি সভ্যতাকে ধ্বংসের কৌশল।”
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, বিটসেলেমসহ বহু মানবাধিকার সংগঠন ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডকে যুদ্ধাপরাধ, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ ও জাতিগত নির্মূল হিসেবে চিহ্নিত করলেও পশ্চিমা শক্তিগুলোর কার্যকর পদক্ষেপ রাজনীতিকভাবেই অনুপস্থিত।
ইসরায়েলকে পাশ কাটিয়ে সৌদি আরবের দিকে ঝুঁকছেন ট্রাম্প
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এখন সৌদি আরবের দিকে ঝুঁকছেন বলে আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। হোয়াইট হাউসে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে দেওয়া জাঁকজমকপূর্ণ অভ্যর্থনা তা আরও স্পষ্ট করে তুলেছে। ঘোড়সওয়ার রক্ষী পতাকা ও যুদ্ধবিমানের শোভাযাত্রায় তাঁকে স্বাগত জানানো হয় যা ট্রাম্প প্রশাসনে কোনো বিদেশি নেতার জন্য সবচেয়ে বড় আয়োজন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
সম্প্রতি ওভাল অফিসে বৈঠকের সময় ট্রাম্প যুবরাজকে বারবার রাজকীয় বন্ধু বলে প্রশংসা করেন। তবে এক সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যার প্রসঙ্গ তুলতেই ট্রাম্প বিরক্ত হয়ে ওঠেন এবং যুবরাজের পক্ষে সাফাই দেন যা মার্কিন গোয়েন্দা রিপোর্টের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় বলে সমালোচকরা বলছেন।
সবচেয়ে বড় পরিবর্তন এসেছে সামরিক নীতি নিয়ে। ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্রের মতো এফ ৩৫ যুদ্ধবিমান পাবে এবং ইসরায়েলের সমমানের প্রযুক্তিও তাদের হাতে থাকবে। বহুদিন ধরে মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলকে সেরা অস্ত্র অগ্রাধিকার দিয়ে আসা মার্কিন নীতি এই সিদ্ধান্তে ভেঙে গেছে। ট্রাম্পের এই ঘোষণায় ইসরায়েল বেজায় অসন্তুষ্ট হয়েছে।
এর পাশাপাশি সৌদি আরব ও আমিরাতের কাছে উন্নত এআই চিপ বিক্রির নিষেধাজ্ঞাও তুলে নেওয়া হয়েছে। এটি সৌদির বৈশ্বিক প্রযুক্তি কেন্দ্র হওয়ার স্বপ্নকে আরও এগিয়ে দিল। বিশেষজ্ঞরা বলছেন ১৯৩০ এর দশকে সৌদির তেলক্ষেত্র নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে গভীর সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল এআই যুগেও তার পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে।
সাম্প্রতিক আরও কিছু পদক্ষেপ থেকে বিশ্লেষকরা মনে করছেন ট্রাম্প প্রশাসন ইসরায়েলকেন্দ্রিক নীতি থেকে সাময়িকভাবে সরে যাচ্ছে। জাতিসংঘে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের সম্ভাবনা রাখা সিরিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা এবং মধ্যপ্রাচ্য সফরে ইসরায়েল বাদ দিয়ে সৌদি কাতার ও ইউএই সফর করার পরিকল্পনায় বোঝা যায় ট্রাম্প এখন সৌদির সমর্থন আদায়কেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন।
তথ্যসূত্র : দ্য গার্ডিয়ান
সৌদিতে প্রথমবার বার চালু, বিশ্বজুড়ে বাড়ছে কৌতূহল
সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয়েছে ‘এ–১২’ নামে একটি নতুন ক্যাফে–বার, যেখানে প্রথমবারের মতো বার-স্টাইল পরিবেশে বিয়ারসহ বিভিন্ন নন–অ্যালকোহলিক পানীয় পরিবেশনের অনুমতি দিয়েছে সৌদি কর্তৃপক্ষ। মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম রক্ষণশীল দেশটিতে এটি একটি ঐতিহাসিক পরিবর্তন হিসেবে দেখা হচ্ছে।
বহির্বিশ্বে যেসব পানীয় সাধারণত অ্যালকোহলযুক্ত, সেগুলোর স্বাদ-অনুভূতি অনুসরণ করে সম্পূর্ণ অ্যালকোহলমুক্ত পানীয়ই পরিবেশন করা হচ্ছে ‘এ–১২’ তে। পুরো পরিবেশ সাজানো হয়েছে আন্তর্জাতিক বারের আদলে, যেখানে নারী-পুরুষ একসঙ্গে বসে আড্ডা দেওয়া ও পানীয় উপভোগের সুযোগ পাচ্ছেন যা সৌদিতে সামাজিকভাবে এক নতুন অভিজ্ঞতা।
১৯৫২ সাল থেকে সৌদি আরবে অ্যালকোহল বিক্রি ও পান সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। আইন লঙ্ঘন করলে কঠোর শাস্তি, জরিমানা ও শারীরিক দণ্ডের বিধান রয়েছে। উপসাগরীয় অঞ্চলে সৌদি আরব ও কুয়েতেই অ্যালকোহল নিষিদ্ধ, যা দেশটির ইসলামী বিধানভিত্তিক সামাজিক কাঠামোর প্রধান বৈশিষ্ট্য।
তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সৌদি আরব বিনোদন, সামাজিক জীবন ও অর্থনৈতিক নীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন আনছে। দেশটির কার্যত শাসক ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের ‘ভিশন–২০৩০’–এর অংশ হিসেবে সমাজকে তুলনামূলকভাবে উন্মুক্ত ও অর্থনৈতিকভাবে বহুমুখী করার প্রচেষ্টা চলছে। তারই ধারাবাহিকতায় রিয়াদে প্রথমবারের মতো নন–অ্যালকোহলিক বার চালুর অনুমতি দেওয়া হলো।
এর আগে ২০২৪ সালে অমুসলিম বিদেশি কূটনীতিকদের জন্য রিয়াদে সীমিত পরিসরে অ্যালকোহল বিক্রির অনুমতি দেওয়া হয়। পরবর্তীতে ফ্রান্স–২৪ জানায়, অমুসলিম বিদেশি কর্মী, বিশেষত সৌদি রাষ্ট্রীয় তেল কোম্পানি আরামকোতে কর্মরত অ-সৌদি নাগরিক এবং জেদ্দায় অবস্থানরত কূটনীতিকদের জন্য ২০২৬ সালে আরও দুটি নিয়ন্ত্রিত মদের দোকান চালুর পরিকল্পনা করছে সৌদি সরকার। তবে সাধারণ নাগরিকদের জন্য অ্যালকোহল বিক্রির কোনো সম্ভাবনা নেই।
-রফিক
ইথিওপিয়ায় বিরল অগ্ন্যুৎপাতের দৃশ্য এবং ১২ হাজার বছরের নীরবতা ভাঙার গল্প
ইথিওপিয়ার উত্তর পূর্বাঞ্চলে প্রায় ১২ হাজার বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো একটি ঘুমিয়ে থাকা বা সুপ্ত আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত ঘটেছে। এর ফলে আকাশে ১৪ কিলোমিটার পর্যন্ত ঘন ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়েছে যা বিজ্ঞানীদের অবাক করেছে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে রোববার ২৩ নভেম্বর উত্তর পূর্বে ইথিওপিয়ার আফার অঞ্চলে অবস্থিত হায়লি গুব্বি আগ্নেয়গিরিতে কয়েক ঘণ্টা ধরে এই অগ্ন্যুৎপাত হয়।
প্রায় ৫০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত এই আগ্নেয়গিরিটি রিফ্ট ভ্যালির মধ্যে অবস্থিত। বিজ্ঞানীরা বলছেন এখানে দুটি টেকটোনিক প্লেট মিলিত হয়ে তীব্র ভূতাত্ত্বিক কার্যকলাপ দেখা যায় যা এই ঘটনার অন্যতম কারণ। দেশটির আগ্নেয়গিরি পর্যবেক্ষণ সংস্থা জানিয়েছে আগ্নেয়গিরি থেকে সৃষ্ট ছাইয়ের মেঘ ইয়েমেন ওমান ভারত এবং উত্তর পাকিস্তানের ওপর দিয়ে বয়ে গেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা ভিডিওগুলোতে সাদা ধোঁয়ার ঘন স্তম্ভ উঠতে দেখা গেছে যা পরিস্থিতির ভয়াবহতা তুলে ধরে।
স্মিথসোনিয়ান ইনস্টিটিউশনের গ্লোবাল আগ্নেয়গিরি প্রোগ্রাম বলেছে হলোসিন উপযুগের সময় হেইলি গুব্বির কোনো অগ্ন্যুৎপাতের ঘটনা ঘটেনি। এই যুগ প্রায় ১২ হাজার বছর আগে শেষ বরফ যুগের শেষে শুরু হয়েছিল। অর্থাৎ মানব ইতিহাসের লিখিত রেকর্ডে এই আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের কোনো তথ্য নেই। মিশিগান টেকনোলজিক্যাল ইউনিভার্সিটির একজন আগ্নেয়গিরিবিদ এবং অধ্যাপক সাইমন কার্ন ব্লুস্কিতে নিশ্চিত করেছেন যে এই আগ্নেয়গিরিতে অগ্ন্যুৎপাতের কোনো পূর্ব রেকর্ড নেই যা ভূতত্ত্ববিদদের জন্য নতুন গবেষণার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মার্কিন সন্ত্রাসী তালিকায় যুক্ত হচ্ছে নতুন নাম
মার্কিন সন্ত্রাসী তালিকায় আরও একটি সংগঠনের নাম যুক্ত করা হয়েছে। ভেনেজুয়েলার কথিত কার্টেল দে লস সোলেসকে বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন বা এফটিও হিসেবে ঘোষণা করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করবে বলে জানা গেছে। সোমবার ২৪ নভেম্বর আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে কার্টেল দে লস সোলেস বাস্তবে কোনো সংগঠিত বা প্রথাগত কার্টেল নয়। বরং ভেনেজুয়েলার সামরিক কর্মকর্তাদের এবং সরকারি ব্যক্তিদের অনিয়ম দুর্নীতি ও অবৈধ কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার এক প্রচলিত নাম এটি। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে ক্যারিবিয় সাগরে ভেনেজুয়েলা ঘিরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক তৎপরতার মাঝে সম্ভাব্য সরাসরি সামরিক হামলার জন্য আইনি ভিত্তি তৈরি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েকজন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন ওয়াশিংটন শিগগিরই ওই অঞ্চলে নতুন পর্যায়ের অভিযান চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে অভিযান কবে শুরু হবে বা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কি না তা এখনো পরিষ্কার নয়। একজন জ্যেষ্ঠ প্রশাসনিক কর্মকর্তা জানান ভেনেজুয়েলা নিয়ে তারা কোনো কিছুই বিবেচনার বাইরে রাখছেন না। দুজন কর্মকর্তা আরও বলেন নতুন পরিকল্পনার প্রথম ধাপে গোপন অভিযান চালানো হতে পারে যার মধ্যে প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে উৎখাতের প্রচেষ্টাও থাকতে পারে।
কার্টেল দে লস সোলেস এর পরিচয় সম্পর্কে জানা যায় ১৯৯০ এর দশকে ভেনেজুয়েলার জনগণ সামরিক কর্মকর্তাদের মাদক পাচারে জড়িত থাকার অভিযোগে প্রথম এই শব্দটি ব্যবহার শুরু করে। পরে দুর্নীতি ও অবৈধ খনিসহ নানা অপরাধে জড়িত পুলিশ ও সরকারি কর্মকর্তাদের বর্ণনাতেও শব্দটি ব্যবহৃত হয়ে আসছে। সোলেস বা সূর্যচিহ্ন বলতে মূলত উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তাদের ইউনিফর্মে থাকা বিশেষ প্রতীককে বোঝায়।
২০২০ সালে মার্কিন বিচার বিভাগ মাদুরো ও তার ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে নার্কো টেরোরিজমসহ বিভিন্ন অভিযোগে মামলা দায়ের করে এই শব্দটিকে একটি কথিত আন্তর্জাতিক মাদক চক্র হিসেবে আরও পরিচিত করে তোলে। তবে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো বরাবরই দাবি করে আসছেন ট্রাম্প প্রশাসন তাকে উৎখাত করতে চায় এবং দেশটির জনগণ ও সামরিক বাহিনী এমন প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।
এবার তিন মুসলিম দেশে ভূমিকম্প
সৌদি আরবের পশ্চিমাঞ্চলীয় হরাত আল-শাকা এলাকায় শনিবার ভোরে ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে জনবসতি ও পার্শ্ববর্তী আগ্নেয় লাভাক্ষেত্র অঞ্চল। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৩.৪। একই সময়ে ইরাক–ইরানের সীমান্ত অঞ্চলেও ৫.০৯ মাত্রার ভূমিকম্প রেকর্ড করা হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে ভূ-কম্পনীয় অস্থিরতার ইঙ্গিত দিচ্ছে এই ধারাবাহিক কম্পন।
সৌদি জিওলজিক্যাল সার্ভে (এসজিএস) জানায়, দেশের জাতীয় সিসমিক মনিটরিং নেটওয়ার্ক স্থানীয় সময় শনিবার ভোরে ভূমিকম্পটি রেকর্ড করে। কম্পনের উৎপত্তিস্থল ছিল মদিনা অঞ্চলের আল-আইস এবং তাবুক অঞ্চলের উমলুজ গভর্নরেটের মধ্যে অবস্থিত হরাত আল-শাকা এলাকা যা সৌদি আরবের একটি গুরুত্বপূর্ণ আগ্নেয় লাভাক্ষেত্র।
ভূমিকম্পটির কেন্দ্রস্থল ছিল হরাত আল-শাকায়, যা জনবসতি থেকে প্রায় ৮৬ কিলোমিটার উত্তর–পশ্চিমে অবস্থিত। এলাকাটি অতীতে আগ্নেয়গিরির সক্রিয়তার ইতিহাসের কারণে ভূতত্ত্ববিদদের বিশেষ নজরকাড়া অঞ্চলের একটি।
একই সময়ে ইরাক ও ইরানের সীমান্তবর্তী এলাকায় ৫.০৯ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প রেকর্ড করেছে সংশ্লিষ্ট সিসমোলজিক্যাল কর্তৃপক্ষ। তাৎক্ষণিকভাবে ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া না গেলেও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
মধ্যপ্রাচ্যের ভূতাত্ত্বিক অবস্থান এমনিতেই নেস্টেড ফল্ট লাইন দ্বারা প্রভাবিত। ফলে একই সময়ে বিভিন্ন দেশে কম্পন দেখা গেলেও তা অস্বাভাবিক নয়, তবে বিশেষজ্ঞরা এটিকে সম্ভাব্য টেকটোনিক স্ট্রেস জমার ইঙ্গিত হিসেবেও বিবেচনা করছেন।
হরাত আল-শাকা সৌদি আরবের প্রধান প্রধান আগ্নেয় লাভাক্ষেত্রগুলোর একটি। এখানকার আগ্নেয় শিলাস্তর, লাভা ট্রেইল এবং ভূগর্ভস্থ প্লেট টেনশন এসব এলাকায় মাঝেমধ্যেই ছোট ভূকম্পন তৈরি করে। অতীতে এ অঞ্চলে উল্লেখযোগ্য আগ্নেয়গিরির কার্যকলাপও নিবন্ধিত হয়েছে। এ কারণে ভূমিকম্পটির মাত্রা যদিও কম, তবুও আগ্নেয়ক্ষেত্রে কম্পন বিশেষজ্ঞদের সতর্ক দৃষ্টিভঙ্গি দাবি করে।
সৌদি গেজেট ও এসজিএস জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত কোনো অঞ্চল থেকে বড় ধরনের ক্ষতি, হতাহত বা অবকাঠামোগত ধসের খবর পাওয়া যায়নি। তবে ভূমিকম্পটির উৎস আগ্নেয় লাভাক্ষেত্র হওয়ায় স্থানীয় প্রশাসন পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণে রেখেছে।
গত কয়েক বছরে সৌদি আরব, ইরান, ইরাক এবং তুরস্কে মাঝারি ও ছোট ভূমিকম্পের পরিমাণ বেড়েছে। ভূতত্ত্ববিদরা বলছেন- এর পেছনে রয়েছে টেকটোনিক প্লেটের ধীরচাপ, আগ্নেয় অঞ্চলের ভূগর্ভস্থ তাপমাত্রা বৃদ্ধি ও লাভা চেম্বারের চাপ।
একাধিক দেশে একই সময়ে ভূমিকম্প হওয়া তাই প্রযুক্তিগতভাবে "চেইন সিসমিক রেসপন্স" হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
-রাফসান
কাক দিয়ে শহর পরিষ্কার করছে উন্নত যে দেশ
বিশ্বজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা একটি প্রশ্ন আবারও সামনে এসেছে কাককে কি সত্যিই রাস্তার ময়লা পরিষ্কারে প্রশিক্ষণ দেওয়া যায়? কয়েক বছর আগেও এই ধারণা ছিল ভবিষ্যৎ প্রযুক্তির মতো রোমাঞ্চকর। সাধারণ পাখি কাককে ব্যবহার করে শহরের সিগারেটের অবশিষ্ট পরিষ্কার করানোর উদ্যোগ নিয়ে ২০২২ সালে প্রত্যাশার শীর্ষে ওঠে সুইডেনের ছোট স্টার্টআপ Corvid Cleaning AB।
স্টার্টআপটির পরিকল্পনা ছিল অপারেন্ট কন্ডিশনিং পদ্ধতি ব্যবহার করে কাককে প্রশিক্ষণ দেওয়া। কাক সিগারেটের অবশিষ্ট কুড়িয়ে নির্দিষ্ট বিনে ফেলবে, আর প্রত্যেক সফল প্রয়াসের পর মেশিন খাবারের একটি পেলেট দিয়ে তাকে পুরস্কৃত করবে। ধারণা ছিল, একজন কাক কাজটি শিখলে অন্য কাকেরাও তার অনুকরণ করবে, আর খুব কম খরচে শহরের জন্য তৈরি হবে ডানাওয়ালা পরিচ্ছন্নতা বাহিনী।
ধারণাটি এতটাই অভিনব ছিল যে মুহূর্তেই আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ভাইরাল হয়। বহু মানুষ কল্পনায় দেখতে শুরু করে ছোট কালো পাখিরা শহরের রাস্তা রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব সামলাচ্ছে।
তবে শুরুর উত্তেজনার মধ্যেও সুইডেনের একাধিক গবেষক নৈতিক ও স্বাস্থ্যগত ঝুঁকির সতর্কতা দেন। সিগারেটের অবশিষ্টে থাকে নিকোটিন, টার, ভারী ধাতু এবং মাইক্রোপ্লাস্টিকসহ অসংখ্য টক্সিন যা পাখির স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। স্টকহোম বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা প্রশ্ন তোলেন বন্য কাককে ইচ্ছাকৃতভাবে বিষাক্ত বস্তু তুলতে বাধ্য করা প্রাণী কল্যাণের নীতির পরিপন্থী কি না।
এই উদ্বেগের ফলে সুইডেনে সরকারি অর্থায়নে গবেষণা শুরু হয় “Bird Litter Picking: Nicotine Items and Health” শিরোনামে। গবেষণার মূল লক্ষ্য ছিল নিশ্চিত হওয়া যে কাকের জন্য কোনো স্বাস্থ্যঝুঁকি না থাকলে তবেই এই কার্যক্রম চালানো যাবে।
যদিও একটি ক্ষুদ্র পাইলট প্রকল্প শুরু হয়েছিল, তবে কী পরিমাণ সিগারেট সংগ্রহ করা হয়েছে, প্রশিক্ষিত কাক কতটা কার্যকর ছিল, বা মানুষের তুলনায় খরচ সত্যিই কম হতো কি না—এসবের কোনো তথ্য আর প্রকাশিত হয়নি। প্রকল্পের কার্যকারিতা নিয়ে বৈজ্ঞানিক বা আর্থিক কোনো স্বচ্ছতা প্রকাশ না পাওয়ায় আলোচনাও ধীরে ধীরে স্তিমিত হয়ে যায়।
সবশেষে নিশ্চিত হওয়া খবর আসে সুইডেনের কোম্পানি রেজিস্ট্রি থেকে। ২০২৫ সালের অক্টোবরে Corvid Cleaning AB আনুষ্ঠানিকভাবে দেউলিয়া হয়ে যায়। পাবলিক নথিতে দেখা যায়, কোম্পানিটির কোনো কর্মী ছিল না, আয় ছিল মাত্র ৭ হাজার সেক (প্রায় ৭৫০ ডলার), এবং তারা কোনোভাবেই বিশ্বজুড়ে কাক-নির্ভর পরিচ্ছন্নতা ব্যবস্থার স্বপ্ন বাস্তবায়নের কাছাকাছি ছিল না।
-রফিক
দুটি বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল পাকিস্তান
পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর পেশোয়ারে আধাসামরিক বাহিনী ফেডারেল কনস্ট্যাবুলারি (এফসি)-এর সদর দপ্তরে সোমবার সকালে সশস্ত্র বন্দুকধারীরা আকস্মিক হামলা চালিয়েছে। হামলার মুহূর্তে এলাকাজুড়ে দুই দফা শক্তিশালী বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়, যা চারপাশে আতঙ্ক ছড়িয়ে দেয়। হামলার পরপরই দ্রুতগতিতে পুলিশ ও এফসি সদস্যরা পুরো এলাকা ঘিরে ফেলে এবং সশস্ত্র অবস্থায় পাল্টা অভিযান শুরু করে।
পাকিস্তানি দৈনিক দ্য ডন এবং বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, এই হামলার বিষয়টি পেশোয়ার ক্যাপিটাল সিটি পুলিশ অফিসার ড. মিয়াঁ সাঈদ আহমদ নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, এফসি সদর দপ্তর সরাসরি হামলার মুখে পড়েছে এবং নিরাপত্তা বাহিনী পাল্টা ব্যবস্থা নিচ্ছে। তবে তাৎক্ষণিক কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে খাইবার পাখতুনখাওয়া ও বেলুচিস্তান অঞ্চলে সন্ত্রাসী হামলা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। ২০২২ সালের নভেম্বরে সরকার ও তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি)-এর মধ্যে যুদ্ধবিরতি ভেঙে যাওয়ার পর জঙ্গিগোষ্ঠী আবারও নিরাপত্তা বাহিনী, পুলিশ ও সরকারি কর্মকর্তাদের ওপর হামলার হুমকি দিয়ে তৎপরতা বাড়ায়। সেই পরিপ্রেক্ষিতেই নতুন এই হামলাটি ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এর আগে গত সেপ্টেম্বরে খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের বান্নু জেলায় এফসি সদর দপ্তরে অনুরূপ হামলার চেষ্টা হয়েছিল, যা সেনাবাহিনী প্রতিহত করতে সক্ষম হলেও ছয় সেনা সদস্য নিহত হন এবং পাঁচ হামলাকারী মারা যায়। সেই ঘটনায় পাকিস্তান সামরিক বাহিনী ভারতের সমর্থিত জঙ্গিগোষ্ঠী ‘ফিতনা–আল–খারিজ’-কে দায়ী করেছিল, যা সাধারণত নিষিদ্ধঘোষিত টিটিপি-সংশ্লিষ্ট সন্ত্রাসীদের বোঝাতে ব্যবহৃত হয়।
সোমবারের হামলার পর পেশোয়ার শহরের গুরুত্বপূর্ণ সরকারি স্থাপনা, নিরাপত্তা চৌকি ও সংবেদনশীল এলাকাগুলোতে অতিরিক্ত নিরাপত্তা মোতায়েন করা হয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থাগুলো হামলাকারীদের পরিচয় ও সম্ভাব্য নেটওয়ার্ক সনাক্তে তদন্ত জোরদার করেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুরো এলাকা সিল করে তল্লাশি অভিযান চলছে।
-শরিফুল
পাঠকের মতামত:
- টিউলিপ সিদ্দিকির মামলা নিয়ে বিষ্ফোড়ক মন্তব্য ব্রিটিশ আইনজীবীদের
- পাকিস্তানের জাহাজ-বিধ্বংসী ব্যালিস্টিক মিসাইলের সফল পরীক্ষা
- ই–১ প্রকল্প ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের ‘শেষ কফিন’
- যবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের তুমুল সংঘর্ষে রণক্ষেত্র বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা
- পানির তীব্র সংকটে আগুন নেভাতে বেগ পেতে হচ্ছে ফায়ার সার্ভিসকে
- টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে কবে কার বিপক্ষে লড়বে বাংলাদেশ জেনে নিন সময়সূচি
- ক্ষুধার্ত সন্তানের কান্না আর নিঃস্ব বাবা মায়ের হাহাকারে ভারী বনানীর বাতাস
- পুষ্টির বিচারে হাঁস নাকি মুরগির ডিম কোনটি শরীরের জন্য সেরা? জানালেন বিশেষজ্ঞ
- বাউল শিল্পী আবুল সরকারের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি খতমে নবুওয়তের
- নারী ও শিশু নির্যাতনে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ব্যবস্থা নিতে সরকারের নতুন কৌশল জানালেন উপদেষ্টা
- বিপিএলে বাতিল হওয়া প্রতিষ্ঠানকে ফিরিয়ে এনে শেষ মুহূর্তে বিসিবির নাটকীয় ইউ টার্ন
- মাইগ্রেনের তীব্রতা কমাতে দৈনন্দিন জীবনে যে পরিবর্তন আনা জরুরি
- পশ্চিম আকাশে সূর্যোদয় ও দাজ্জালসহ কেয়ামতের ১০টি ভয়াবহ আলামত
- অবশেষে জানা গেল নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার সম্ভাব্য সময়
- চট্টগ্রাম ৫: মীর হেলাল নাকি অধ্যাপক মালেক কার পাল্লা ভারী হাটহাজারীর ভোটে
- চট্টগ্রাম বন্দরের এনসিটি নিয়ে রিটকারীর পেছনে ভোমা বিড়াল বসে আছে: অ্যাটর্নি জেনারেল
- রাজধানীর কড়াইল বস্তিতে ভয়াবহ আগুন
- জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি ঝালাই করতে ইসির বিশেষ আয়োজনের ঘোষণা
- কোনোরকম ঝামেলা ছাড়াই আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে: মির্জা ফখরুল
- গাজীপুরে গভীর রাতে কবর খুঁড়ে মায়ের লাশ বাড়িতে আনার লোমহর্ষক ঘটনা
- এনসিপি নিয়ে রিজভীর মন্তব্যে রাজনীতির নতুন সমীকরণের আভাস
- সেরে উঠুন দেশনেত্রী বলে খালেদা জিয়াকে নিয়ে মির্জা ফখরুলের আবেগঘন বার্তা
- ইসরায়েলকে পাশ কাটিয়ে সৌদি আরবের দিকে ঝুঁকছেন ট্রাম্প
- শান্তিতে ঘুমান ধরমজি বলে বলিউড কিং খান জানালেন শেষ শ্রদ্ধা
- ২৫ নভেম্বর ডিএসই লেনদেনের সারসংক্ষেপ
- ২৫ নভেম্বর ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ লুজার তালিকা প্রকাশ
- ২৫ নভেম্বর ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- ভারতীয় সিনেমার টাকা নিয়ে প্রযোজককে আইনি চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন তিশা
- মেট্রোরেলের কার্ড এখন ঘরে বসেই রিচার্জ করা যাবে, জানুন পুরো প্রক্রিয়া
- বিপিএলে শেষ মুহূর্তে বড় চমক হিসেবে যুক্ত হলো নতুন দল
- সমুদ্র পরিবহন খাতে ঢাকার সঙ্গে হাত মেলাতে ইসলামাবাদের নতুন প্রস্তাব
- অবশেষে ঘনিয়ে এল প্লট জালিয়াতি মামলায় শেখ হাসিনা,শেখ রেহানা ও টিউলিপের রায়ের দিনক্ষণ
- এক দিনেই দুই ভোট আয়োজনে অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন করল সরকার
- সরকারি কলেজ এখন চার ক্যাটাগরিতে শিক্ষা ব্যবস্থায় বড় পরিবর্তন
- শুধু আওয়ামী লীগ করার কারণে যেন বিচার না হয়: আইনজীবী আমির হোসেন
- সৌদিতে প্রথমবার বার চালু, বিশ্বজুড়ে বাড়ছে কৌতূহল
- বাউল অধিকার ও নাগরিক নিরাপত্তা নিয়ে ৭৫ জন বিশিষ্ট নাগরিকের গভীর উদ্বেগ ও তীব্র প্রতিবাদ
- জমি রেকর্ডে জনসাধারণকে সরকারের জরুরি সতর্কতা
- কোরআন–হাদিসে গিবতের ভয়াবহ শাস্তির বর্ণনা
- ডিএসই মিউচুয়াল ফান্ডে বড় বৈষম্য NAV বিশ্লেষণে বাজারচাপ স্পষ্ট
- ফরচুন সুজ লিমিটেডের নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা
- নতুন পে স্কেলে বড় ঘোষণা সামনে আলোচনার অন্তরালে কী ঘটছে
- এক সপ্তাহে দ্বিতীয়বার পরিবর্তন স্বর্ণের দামে নতুন সমন্বয়
- জামায়াত নেতার বক্তব্যে পুলিশের তীব্র প্রতিবাদ
- দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে নতুন লঘুচাপের সম্ভাবনা
- ২৫ নভেম্বর, আজকের নামাজের সময়সূচি
- এশিয়া কাপে বাংলাদেশ কবে খেলছে জানুন বিস্তারিত
- সন্দ্বীপে উপকূলীয় বন উজাড়ের অভিযোগ বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে
- রাজধানীতে আজ ব্যস্ত রাজনৈতিক কর্মসূচিতে
- রাজধানীতে আজ মঙ্গলবার যেসব মার্কেট বন্ধ জানুন এক নজরে
- শিরোপা জয়ের রেসে আজ বাংলাদেশ নাকি পাকিস্তান কার পাল্লা ভারীে
- ভয়ংকর ঝুঁকিতে দেশের তিন বড় শহর: মাটির নিচ থেকে আসছে বড় বিপদের বার্তা
- আজকের ভূমিকম্প আমাদের কী শিক্ষা দিচ্ছে: একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্লেষণ
- ফায়ার সার্ভিসে ফোনের বন্যা, হেলে পড়েছে কয়েকটি ভবন
- ভূমিকম্পের উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা জেলাগুলোর তালিকা এবং বিশেষজ্ঞদের ভয়াবহ পরিসংখ্যান
- ভূমিকম্পের পর আগামী ৭২ ঘণ্টাকে কেন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলছেন বিশেষজ্ঞরা
- ২৫০ বছরের ইতিহাস বিশ্লেষণ: বাংলাদেশ কি বড় ভূমিকম্পের দ্বারপ্রান্তে?
- প্রপাগান্ডা আর ষড়যন্ত্র পেরিয়ে জনতার কাতারে: জন্মদিনে তারেক রহমানকে নিয়ে ভাবনা
- ঢাকার বংশালে ভূমিকম্পে ৩ জনের মৃত্যু হলো যেভাবে
- মাটির নিচে তিন প্লেটের সংযোগস্থলে থাকা চট্টগ্রাম যেভাবে মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে
- ভারতকে হারানোর পর ৯ বছরের মধ্যে সেরা র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ
- ভূমিকম্প মুহূর্তে যে দোয়া পড়তেন রাসূল (সা.)
- নৌকার ভোট বাগে আনতে বিএনপি ও জামায়াতের যত কৌশল
- সপ্তাহজুড়ে টানা উত্থানে চাঙ্গা শেয়ারবাজার
- চট্টগ্রাম ১ আসনে বিএনপির নুরুল আমিন নাকি জামায়াতের সাইফুর রহমান কার পাল্লা ভারী








