আইনি লড়াইয়ে বড় মোড়: জিয়া অরফানেজ মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার আপিল মঞ্জুর করে তাঁকে খালাস দিয়ে আপিল বিভাগের দেওয়া রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়েছে। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় হাইকোর্টের দেওয়া ১০ বছরের কারাদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে তিনি আপিল করেছিলেন। সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে ৫৯ পৃষ্ঠার এই পূর্ণাঙ্গ রায়টি প্রকাশ করা হয়েছে, যা লিখেছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ।
গত ১৫ জানুয়ারি প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে গঠিত পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ সর্বস্মতিক্রমে এই রায়টি দিয়েছিলেন।
বিদ্বেষমূলক মামলা ও খালাসের রায়
রায়ের পর ১৫ জানুয়ারি আপিল পক্ষের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন সাংবাদিকদের কাছে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেছিলেন, এই মামলার মধ্যে কোনো সারবত্তা ছিল না। তিনি অভিযোগ করেন, "ফ্যাসিস্ট সরকার যেভাবে বলত, সেভাবে রায় হতো।" তবে আজকের রায়ে মনে হয়েছে বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে কাজ করেছে।
তিনি জানান, আপিল বিভাগ রায়ে বলেছেন যে, আপিল মঞ্জুর (আপিল ইজ অ্যালাউ) করা হলো। একইসঙ্গে বিচারিক আদালত এবং হাইকোর্ট বিভাগের যে রায় দেওয়া হয়েছিল, সেগুলো বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। আইনজীবী জয়নুল আবেদীন আরও জানান, যারা আপিল করতে পারেননি, অর্থাৎ তারেক রহমানসহ অন্যান্য আসামি, তাদেরও আদালত খালাস দিয়েছেন। তিনি এই মামলাটিকে বিদ্বেষমূলক এবং প্রতিহিংসামূলক প্রসিকিউশন হিসেবে অভিহিত করেন, যা পুরো জিয়া পরিবার ও সারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে করা হয়েছিল।
দুদকের আইনজীবী আসিফ হাসানও সে সময় রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মোট চারটি আপিল ছিল এবং সবগুলোই মঞ্জুর করা হয়েছে। হাইকোর্ট বিভাগ এবং বিচারিক আদালতের রায় বাতিল করা হয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, যেহেতু আপিল বিভাগ পুরো মামলাটাকেই 'ম্যালিসাস প্রসিকিউশন' (বিদ্বেষপূর্ণ কার্যধারা) বলে অভিহিত করেছেন, তাই যারা আপিল করতে পারেননি—তারেক রহমান ও কামাল সিদ্দিকীসহ অন্যান্য আসামিরাও এ সুবিধা পেয়ে খালাস পেলেন।
মামলার প্রেক্ষাপট ও আপিল প্রক্রিয়া
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বকশীবাজারে কারা অধিদফতরের প্যারেড গ্রাউন্ডে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫-এর বিচারক মো. আখতারুজ্জামান জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন। একইসঙ্গে খালেদা জিয়ার ছেলে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমানকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
ওই বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আপিল করেন খালেদা জিয়া। একই বছরের ২৮ মার্চ খালেদার সাজা বৃদ্ধি চেয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা আবেদনে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। সাজা বৃদ্ধিতে দুদকের আবেদনে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ খালেদা জিয়ার সাজা পাঁচ বছর থেকে বাড়িয়ে ১০ বছর করেন।
তবে পাঁচ বছরের দণ্ড থেকে খালাস চেয়ে খালেদা জিয়া এবং ১০ বছরের দণ্ড থেকে খালাস চেয়ে মাগুরার সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে কাজী কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদের করা আপিল খারিজ করেছিলেন আদালত। গত বছরের ১১ নভেম্বর খালেদা জিয়াকে আপিলের অনুমতি দিয়ে হাইকোর্টের দেওয়া সাজার রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত করেছিলেন আপিল বিভাগ। এরপর খালেদা জিয়া আপিল করেন, যার চূড়ান্ত রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি আজ প্রকাশিত হলো।
আদালতে আপিলের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, বদরুদ্দোজা বাদল, রুহুল কুদ্দুস কাজল ও আইনজীবী কায়সার কামাল। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী জাকির হোসেন ভুঁইয়া ও মাকসুদ উল্লাহ। কাজী সালিমুল হক কামালের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল আরশাদুর রউফ ও অনীক আর হক। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আসিফ হাসান।
ঢাকা ছাড়ছেন ডা. জুবাইদা রহমান: কাতার বিমানে যাত্রা
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সহধর্মিনী ডা. জুবাইদা রহমান সংক্ষিপ্ত সফর শেষে আজ শনিবার (২০ ডিসেম্বর) পুনরায় লন্ডনের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করছেন। বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে ডা. জুবাইদা রহমান আজ সকাল সাড়ে ৮টার দিকে কাতার এয়ারলাইন্সের একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইটে যুক্তরাজ্যের লন্ডনের অভিমুখে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছাড়বেন। দীর্ঘদিন পর দেশে ফিরে মাত্র ১৫ দিন অবস্থান করে তিনি পুনরায় প্রবাসে ফিরে যাচ্ছেন।
এর আগে গত ৫ ডিসেম্বর দীর্ঘ সময় পর ডা. জুবাইদা রহমান বিদেশ থেকে বাংলাদেশে পৌঁছান। দীর্ঘ প্রবাস জীবন কাটিয়ে দেশে ফেরার পরপরই তিনি অসুস্থ শাশুড়ি ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসার খোঁজ নিতে সরাসরি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে গিয়েছিলেন। সেখানে চিকিৎসাধীন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার পাশে দীর্ঘ সময় অতিবাহিত করেন তিনি।
ডা. জুবাইদা রহমানের এই আকস্মিক সফর নিয়ে রাজনৈতিক মহলে নানা জল্পনা থাকলেও মূলত অসুস্থ শাশুড়িকে দেখা এবং পারিবারিক কারণেই তিনি দেশে এসেছিলেন বলে দলের পক্ষ থেকে আভাস পাওয়া গেছে। সফরকালে তিনি অত্যন্ত নিভৃতে ছিলেন এবং খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের সার্বিক তদারকি করেছেন। আজ সকালে বিমানবন্দরে বিদায় জানানোর সময় দলের সীমিত সংখ্যক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন বলে জানা গেছে।
জরুরি বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটি, সভাপতিত্বে তারেক রহমান
দেশের চলমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহকে কেন্দ্র করে জরুরি বৈঠকে বসেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটি। শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) রাত পৌনে ৯টার দিকে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এই বৈঠক শুরু হয়।
দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বৈঠকে ভার্চুয়ালি সভাপতিত্ব করছেন। বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, এটি একটি জরুরি বৈঠক এবং এতে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক ইস্যু নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।
দলীয় সূত্র অনুযায়ী, বৈঠকে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, আইনশৃঙ্খলা অবস্থা, সাম্প্রতিক সহিংস ঘটনা, দলীয় কৌশল এবং সাংগঠনিক প্রস্তুতি নিয়ে বিস্তারিত পর্যালোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। একই সঙ্গে ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা ও রাজনৈতিক অবস্থান নিয়েও আলোচনা হতে পারে বলে জানা গেছে।
বৈঠকে সরাসরি উপস্থিত রয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ স্থায়ী কমিটির একাধিক সদস্য। উপস্থিত সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সালাহউদ্দিন আহমেদ, বেগম সেলিমা রহমান এবং মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ।
এ ছাড়া দলের কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতা ভার্চুয়ালি বৈঠকে যুক্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু এবং অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
-রাফসান
হাদির আসনে নির্বাচনে নামছেন যিনি
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শহীদ শরীফ ওসমান হাদির শূন্য আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঘোষণা দিয়েছেন আলোচিত মডেল ও সমাজকর্মী মেঘনা আলম। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি ঢাকা-৮ আসন থেকে প্রার্থী হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বৃহস্পতিবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক ঘোষণায় তিনি বিষয়টি নিশ্চিত করেন এবং সম্ভাব্য সংসদ সদস্য হিসেবে এলাকার জন্য তার উন্নয়ন ভাবনার কথাও তুলে ধরেন।
ফেসবুক পোস্টে মেঘনা আলম উল্লেখ করেন, ঢাকা-৮ আসনকে তিনি দেশের মধ্যে নারীদের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ ও বসবাসযোগ্য এলাকা হিসেবে গড়ে তুলতে চান। তার ভাষায়, অতীতে বহুবার ‘দেশকে সিঙ্গাপুর বানানোর’ প্রতিশ্রুতি শোনা গেলেও বাস্তবতায় সেসব রূপ পায়নি। একটি দেশ বা নগরীকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে হলে প্রয়োজন এমন নেতৃত্ব, যাদের জীবনধারা, শিক্ষা, চিন্তা ও সামাজিক যোগাযোগে বৈশ্বিক মানসিকতার প্রতিফলন থাকে এবং যারা আন্তর্জাতিক পরিসরে গ্রহণযোগ্য। তিনি দাবি করেন, নিজেকে তিনি সেই বাস্তবধর্মী রূপান্তরের প্রতিনিধি হিসেবে দেখতে চান।
পোস্টে আরও বলা হয়, বিশেষ করে ঢাকা-৮ এলাকায় নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর সিসিটিভি নজরদারি ব্যবস্থা চালু করা হবে। এর মাধ্যমে রাস্তাঘাটে চলাচলের সময় নারী ও কিশোরীদের স্ট্রিট হ্যারাসমেন্ট বা অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণ থেকে সুরক্ষা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হবে। পাশাপাশি এলাকায় একটি সমন্বিত ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা কাঠামো গড়ে তোলার পরিকল্পনার কথাও জানান তিনি, যেখানে হাঁটাচলা ও সাইকেল ব্যবহারের জন্য নিরাপদ ও আলাদা সুযোগ থাকবে।
জনস্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়ে স্বল্প ব্যয়ে আধুনিক পাবলিক ওয়াশরুম স্থাপনও তার প্রতিশ্রুতির অন্যতম অংশ। এসব স্থানে গোসল, ব্রেস্টফিডিং এবং শিশুর ডায়াপার পরিবর্তনের সুবিধা থাকবে। একই সঙ্গে কমিউনিটি লন্ড্রি সিস্টেম চালুর কথা বলা হয়েছে, যাতে বস্তিবাসী, পথচারী কিংবা পার্কে আসা সাধারণ মানুষ পরিচ্ছন্ন জীবনযাপনের সুযোগ পান।
মেঘনা আলম আরও জানান, সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে ঢাকা-৮ এলাকার মানুষের পুষ্টি নিরাপত্তা, পরিচ্ছন্ন পরিবেশ এবং সামাজিক ও আইনগত সচেতনতা বৃদ্ধিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হবে। তার মতে, টেকসই উন্নয়ন শুধু অবকাঠামোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়; মানুষের জীবনমান উন্নয়নই হওয়া উচিত মূল লক্ষ্য।
তবে তিনি এখনো স্পষ্ট করে জানাননি কোন রাজনৈতিক দলের ব্যানারে তিনি নির্বাচনে অংশ নেবেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তিনি লড়বেন কি না, সে বিষয়েও আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি। তবে খুব শিগগিরই এ বিষয়ে পরিষ্কার অবস্থান জানাবেন বলে রাজনৈতিক মহলে আলোচনা চলছে।
-শরিফুল
ওসমান হাদির জানাজা শনিবার জানাজা কোথায় ও কখন
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শহীদ ওসমান হাদির মরদেহ শুক্রবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশে এসে পৌঁছেছে। তার শেষ বিদায়ে অংশ নিতে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ এলাকায়। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, শনিবার দুপুরে জাতীয় সংসদ ভবন প্রাঙ্গণে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় প্রকাশিত প্রেস উইংয়ের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, শনিবার বেলা আড়াইটায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় শহীদ ওসমান হাদির নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। নিরাপত্তাজনিত কারণে জানাজায় অংশগ্রহণকারীদের ব্যাগ বা কোনো ভারি সামগ্রী বহন না করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে সংসদ ভবন ও আশপাশের এলাকায় জানাজার সময় ড্রোন ওড়ানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদি। গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় দীর্ঘ চিকিৎসা চললেও শেষ পর্যন্ত তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
গত ১২ ডিসেম্বর দুপুরে জাতীয় নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে গণসংযোগ ও নির্বাচনি প্রচারে অংশ নেওয়ার সময় হাদির ওপর সশস্ত্র হামলা চালানো হয়। মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনি আশঙ্কাজনক অবস্থায় প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং পরে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি হন। অবস্থার অবনতি হলে তিন দিন পর উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানিয়েছে, ওসমান হাদির ওপর গুলিবর্ষণকারী হিসেবে ফয়সাল করিম মাসুদ নামে এক ব্যক্তিকে শনাক্ত করা হয়েছে। তদন্তে উঠে এসেছে, তার সহযোগী হিসেবে মোটরসাইকেল চালকের ভূমিকা পালন করেন আলমগীর শেখ। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলোর দাবি, ঘটনার পর এই দুজন অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে পালিয়ে গেছে।
এই হামলার ঘটনায় এখন পর্যন্ত পুলিশ ও র্যাব যৌথভাবে ১৪ জনকে আটক ও গ্রেপ্তার করেছে। ঘটনার তদন্ত অব্যাহত রয়েছে এবং সংশ্লিষ্টদের আইনের আওতায় আনতে অভিযান চলমান রয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
-রফিক
হাসিনার গুলিই দমাতে পারেনি, সন্ত্রাসীদের তোয়াক্কা করি না
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক এবং নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) আসনের শাপলা কলি প্রতীকের প্রার্থী আব্দুল হান্নান মাসউদকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে ‘রূপক নন্দী’ নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে দেওয়া এক পোস্টে তাকে হাতিয়ায় নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি ভয়াবহ পরিণতির হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়, যা নিয়ে স্থানীয় রাজনীতিতে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
ভাইরাল হওয়া ওই ফেসবুক পোস্টে আব্দুল হান্নান মাসউদকে সরাসরি উদ্দেশ্য করে লেখা হয়েছে, ‘হান্নান, আগুন নিয়ে খেলা করো না। পরে পস্তাতে হবে—বলে দিলাম।’ পোস্টে আরও উল্লেখ করা হয় যে, সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল হালিম আজাদকে (পিচ্চি আজাদ) যারা ভালোবাসেন, তারা হান্নান মাসউদকে ছাড় দেবেন না। এমনকি হালিম আজাদকে গ্রেপ্তার করা হলে হান্নান মাসউদকে হাতিয়ায় নিষিদ্ধ করার ঘোষণাও দেওয়া হবে বলে ওই পোস্টে হুঁশিয়ার করা হয়। একই সময়ে আব্দুল হালিম আজাদের ছেলে ইসরাত রায়হান অমি এনসিপির এক কর্মীকে মেসেঞ্জারে চরম উসকানিমূলক বার্তা পাঠিয়েছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই বার্তায় তিনি লিখেছেন, আব্দুল হালিম আজাদকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করা হলে হান্নান মাসউদ ও তানভীরসহ অন্যান্য নেতাদের হাতিয়ার উত্তর অঞ্চলে চলাচল ‘হারাম’ করে দেওয়া হবে এবং তাদের নেতাকর্মীরা ‘ডাইরেক্ট গিলে খেয়ে ফেলবে’।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, হাতিয়ার রাজনীতিতে সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল হালিম আজাদের সাম্প্রতিক কিছু রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে এনসিপি প্রার্থী হান্নান মাসউদের সমর্থকদের সঙ্গে এক ধরনের স্নায়ুযুদ্ধ চলছে। সম্প্রতি আব্দুল হালিম আজাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার গুঞ্জন শুরু হলে তার অনুসারীরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং এর দায় হান্নান মাসউদের ওপর চাপিয়ে এ ধরনের হুমকি দিতে শুরু করেন। এ ঘটনায় হাতিয়ার সাধারণ ভোটারদের মধ্যে ভীতিকর পরিস্থিতি ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
হুমকির বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে আব্দুল হান্নান মাসউদ বলেন, তিনি এসব হুমকিতে মোটেও শঙ্কিত নন। জুলাই অভ্যুত্থানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গুলির মুখেও তারা ভয় পাননি, তাই এসব সন্ত্রাসীদের তিনি তোয়াক্কা করেন না। তবে তিনি প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, প্রশাসন শুরু থেকেই কঠোর ব্যবস্থা নিলে সন্ত্রাসীরা এত বড় সাহস পেত না। ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র হাদির মৃত্যুর প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, আজ হাদির মতো জুলাই অভ্যুত্থানের একজন নেতাকে হত্যা করা হয়েছে, যা গভীর উদ্বেগের বিষয়। এ ঘটনায় হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল আলম জানিয়েছেন, থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে যারা পরিবেশ অশান্ত করার চেষ্টা করছে, তাদের শনাক্ত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।
প্রতিদিন হত্যার হুমকি পাচ্ছি: হাসনাত আব্দুল্লাহ
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক এবং কুমিল্লা-৪ (দেবিদ্বার) আসনে দলের মনোনীত প্রার্থী হাসনাত আব্দুল্লাহ জানিয়েছেন, তিনি নিয়মিতভাবে প্রাণনাশের হুমকির মুখে রয়েছেন। তার ভাষায়, প্রতিদিনই তাকে ভয় দেখানো হচ্ছে এবং মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার জাফরগঞ্জ ইউনিয়নের চরবাকর এলাকায় আয়োজিত একটি উঠান বৈঠকে এসব কথা বলেন হাসনাত আব্দুল্লাহ। আধিপত্যবাদবিরোধী পদযাত্রা ও গণসংযোগ কর্মসূচি শেষ করে স্থানীয় জনগণের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় তিনি এ অভিযোগ করেন।
হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, একটি প্রভাবশালী গোষ্ঠী ক্ষমতায় যাওয়ার আগেই ভোটারদের ভয়ভীতি প্রদর্শন শুরু করেছে। তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, যারা এখনই হুমকি ও দমনমূলক আচরণে লিপ্ত, তারা ক্ষমতায় গেলে তাদের প্রকৃত চরিত্র আরও ভয়ংকরভাবে প্রকাশ পাবে।
তিনি আরও বলেন, ক্ষমতার বাইরে থাকলে তারা নিজেদের বিনয়ী হিসেবে উপস্থাপন করে, কিন্তু ক্ষমতার স্বাদ পেলেই তারা বেপরোয়া হয়ে ওঠে। তার মতে, এই ধরনের লোকেরা প্রকৃত অর্থে দেশ ও জনগণের কল্যাণ চায় না।
আসন্ন নির্বাচন প্রসঙ্গে এনসিপির এই নেতা বলেন, আগামী নির্বাচন হবে টেন্ডারবাজ, মামলাবাজ ও চাঁদাবাজ রাজনীতির বিরুদ্ধে জনগণের রায় দেওয়ার নির্বাচন। তিনি স্পষ্ট করে জানান, কোনো টেন্ডারবাজ বা চাঁদাবাজের ওপর নির্ভর করে তিনি নির্বাচনী রাজনীতি করতে চান না এবং জনগণের শক্তিকেই নিজের একমাত্র ভরসা হিসেবে দেখেন।
এই উঠান বৈঠকে হাসনাত আব্দুল্লাহর সঙ্গে এনসিপির বিভিন্ন স্তরের স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। তারা দলীয় কর্মসূচি বাস্তবায়ন এবং জনগণের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ জোরদারের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
-রাফসান
এবার এনসিপি নেতা হান্নান মাসউদকে মেরে ফেলার হুমকি
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক এবং নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) আসনে শাপলা কলি প্রতীকের প্রার্থী আব্দুল হান্নান মাসউদকে প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ সংক্রান্ত একাধিক স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক উদ্বেগ ও প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। ঘটনার প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার রাতে হাতিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) দায়ের করা হয়েছে।
জিডিটি করেছেন আব্দুল হান্নান মাসউদের চাচা ও এনসিপির হাতিয়া উপজেলা সমন্বয় কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী হেডমাস্টার শামছল তিব্রিজ। জিডিতে উল্লেখ করা হয়, ১৮ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৭টা ৪ মিনিটে ‘রুপক নন্দী’ নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে হান্নান মাসউদকে প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। একই সঙ্গে ওই হুমকির স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, যা এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি করে।
জিডিতে আরও বলা হয়, একই দিন বিকেল ৪টা ৫৫ মিনিটে ‘Israt Raihan Ome’ নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে এনসিপির এক কর্মীর মেসেঞ্জারে বার্তা পাঠিয়ে আব্দুল হান্নান মাসউদ ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। এসব বার্তায় স্পষ্টভাবে সহিংসতার ইঙ্গিত পাওয়া যায় বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
সাধারণ ডায়েরিতে মোট সাতজনের নাম উল্লেখ করে বলা হয়েছে, তারা বিভিন্ন সময়ে ও নানা কৌশলে আব্দুল হান্নান মাসউদ এবং তার সহকর্মীদের হত্যার হুমকি দিয়ে আসছে। জিডিতে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয় যে, অভিযুক্তরা যেকোনো সময় বড় ধরনের ক্ষতি সাধনে সক্ষম হতে পারে।
অভিযোগে যাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে তারা হলেন হাতিয়া উপজেলার কান্তি লালের ছেলে রুপক নন্দী (২৫), চরঈশ্বর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হালিম আজাদ (৪৬), তার ছেলে ইসরাত রায়হান অমি (২৭), সংকর চন্দ্রের ছেলে প্রেম নাল (২৫), তোফায়েল সেরাংয়ের ছেলে নুর হোসেন রহিম (২৬), সংকর চন্দ্র দাসের ছেলে বাবুলাল (৩২) এবং বেলায়েত হোসেনের ছেলে ওমর ফারুক (৩২)।
জানা গেছে, ভাইরাল হওয়া স্ক্রিনশটগুলো মূলত চরঈশ্বর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হালিম আজাদের ছেলে ইসরাত রায়হান অমি এবং তার অনুসারী রুপক নন্দীর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাকাউন্ট থেকে ছড়ানো হয়েছে। স্ক্রিনশটগুলোতে হুমকিমূলক ও উসকানিমূলক বক্তব্য দেখা যায়, যা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির জন্য উদ্বেগজনক বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
আব্দুল হান্নান মাসউদের চাচা শামছল তিব্রিজ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে তার ভাতিজাকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এতে পরিবার ও রাজনৈতিক সহকর্মীরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তিনি প্রশাসনের কাছে অবিলম্বে কার্যকর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান।
এদিকে হাতিয়া উপজেলা যুবশক্তির আহ্বায়ক মো. ইউসুফ রেজা বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে একটি চা-দোকানে সাবেক এক জনপ্রতিনিধির বক্তব্য থেকেই এই হুমকির সূচনা হয়েছে বলে তারা মনে করছেন। এরপর থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হচ্ছে। তিনি দ্রুত আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান।
বাগছাসের কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক হাফিজুর রহমান বলেন, ন্যায় ও ইনসাফের পথে থাকার কারণেই জুলাইয়ের সহযোদ্ধাদের মতো আব্দুল হান্নান মাসউদকেও হত্যার হুমকির মুখে পড়তে হচ্ছে। তিনি প্রশাসনের নীরবতাকে চরম ব্যর্থতা হিসেবে উল্লেখ করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান।
এ বিষয়ে আব্দুল হান্নান মাসউদ বলেন, হত্যার হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন একটি গুরুতর অপরাধ এবং এটি সরাসরি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ও আইনশৃঙ্খলার ওপর আঘাত। তিনি দোষীদের দ্রুত শনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল আলম বলেন, বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে। একটি সাধারণ ডায়েরি গ্রহণ করা হয়েছে এবং প্রাপ্ত স্ক্রিনশট যাচাই করে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
-রফিক
প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারে হামলার প্রতিবাদে মির্জা ফখরুল
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সম্মুখসারির যোদ্ধা ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শহীদ শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে জাতীয় দৈনিক প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টারের কার্যালয়ে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি এই ঘটনাকে দেশের জন্য গভীরভাবে উদ্বেগজনক উল্লেখ করে এর সম্পূর্ণ দায় সরকারের ওপর বর্তায় বলে মন্তব্য করেছেন।
শুক্রবার ১৯ ডিসেম্বর ভোরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশ একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র এবং এখানে বসবাসরত প্রতিটি নাগরিকের জানমাল রক্ষার দায়িত্ব বর্তমান সরকারের। তিনি উল্লেখ করেন, শহীদ হাদির মৃত্যুর পর যখন জাতি শোকাহত অবস্থায় তার আত্মার মাগফিরাত কামনায় প্রার্থনা করছে, ঠিক সেই সময় প্রথম আলো, ডেইলি স্টারসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং বরেণ্য সাংবাদিক নূরুল কবীরসহ একাধিক ব্যক্তির ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
এই ঘটনাকে ন্যক্কারজনক উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সংকটময় পরিস্থিতিকে পুঁজি করে যারা সহিংসতা ও ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়, তারা দেশের শত্রু। তার ভাষায়, একটি শোকাবহ মুহূর্তকে ব্যবহার করে যারা সমাজকে অস্থিতিশীল করতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। তিনি এই ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে স্পষ্ট ভাষায় প্রতিবাদ জানান এবং সরকারকে অবিলম্বে দায়িত্ব গ্রহণের আহ্বান জানান।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে মব সন্ত্রাস দেশের সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিবেশকে গভীরভাবে বিভক্ত করে ফেলেছে। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন যে, শহীদ শরিফ ওসমান হাদি একজন নির্বাচনী প্রার্থী ছিলেন এবং জনগণের কাছে গিয়ে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়েছিলেন। তার মতে, বাংলাদেশে নির্বাচন হবে এবং জনগণের ভোটে একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে। সেই সঙ্গে তিনি হাদির হত্যাকারীদের বিচার এবং প্রতিটি মব সন্ত্রাসের ঘটনায় জড়িতদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান।
বিবৃতির শেষাংশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, স্বৈরাচারী আওয়ামী সরকারের পতনের পর নতুন সরকারের প্রথম ও প্রধান দায়িত্ব হলো জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করা এবং একটি গণতান্ত্রিক, স্থিতিশীল ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গড়ে তোলা। তিনি সকল রাজনৈতিক ও সামাজিক পক্ষকে দায়িত্বশীল আচরণের মাধ্যমে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান।
উল্লেখ্য, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম সংগঠক শরিফ ওসমান হাদি গত ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় গণসংযোগকালে চলন্ত রিকশায় থাকা অবস্থায় দুর্বৃত্তের গুলিতে গুরুতর আহত হন। গুলিটি তার মাথায় লাগে। পরবর্তীতে ঢাকায় এবং পরে সিঙ্গাপুরে দীর্ঘ চিকিৎসা শেষে বৃহস্পতিবার রাতে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুর পর রাজধানী ঢাকায় রাজনৈতিক উত্তেজনা ও অস্থিরতা স্পষ্টভাবে লক্ষ করা যাচ্ছে।
-শরিফুল
যখন দেশে ফিরছে শরিফ ওসমান হাদির মরদেহ
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সম্মুখসারির সাহসী কর্মী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মরদেহ শুক্রবার সন্ধ্যায় সিঙ্গাপুর থেকে বাংলাদেশে আনা হচ্ছে। সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যুর পর প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষে মরদেহ দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা সম্পন্ন করা হয়েছে।
এনসিপির স্বাস্থ্য সেলের প্রধান এবং হাদির চিকিৎসা কার্যক্রমে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ডা. আব্দুল আহাদ সাংবাদিকদের জানান, বাংলাদেশ বিমানের একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইটে শুক্রবার স্থানীয় সময় বিকাল ৩টা ৫০ মিনিটে সিঙ্গাপুর থেকে মরদেহটি ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হবে। নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী ফ্লাইটটি সন্ধ্যা আনুমানিক ৬টা ৫ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের কথা রয়েছে।
বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন শরিফ ওসমান হাদি। তার মৃত্যুতে রাজনৈতিক অঙ্গনসহ বিভিন্ন মহলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
এর আগে গত শুক্রবার রাজধানীর বিজয়নগরের বক্স কালভার্ট রোড এলাকায় রিকশায় চলাচলের সময় মোটরসাইকেলে আসা দুর্বৃত্তদের গুলিতে গুরুতর আহত হন তিনি। মাথায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং পরবর্তীতে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য গত সোমবার তাকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণ ও চেষ্টা সত্ত্বেও বৃহস্পতিবার তার মৃত্যু হয়। তার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে হামলার তদন্ত ও নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।
-রাফসান
পাঠকের মতামত:
- বয়স বাড়লেও টেস্টোস্টেরন থাকবে অটুট: জানুন কার্যকরী উপায়
- শনিবার দুপুরে ঢাকার আবহাওয়ার পূর্বাভাস
- আজকের খেলার সূচি: টিভিতে সরাসরি দেখবেন যেসব ম্যাচ
- ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার নামাজের সময়: ২০ ডিসেম্বর
- আজ ৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকবে না যেসব এলাকায়
- রাজধানীতে আজ কোথায় কী? বের হওয়ার আগে জানুন আজকের সূচি
- বিজিবি এখন সীমান্ত নিরাপত্তায় আরও পেশাদার: প্রধান উপদেষ্টা
- আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি: মূল্যস্ফীতির চাপে দিশাহারা সাধারণ মানুষ
- ঢাকা ছাড়ছেন ডা. জুবাইদা রহমান: কাতার বিমানে যাত্রা
- হাদি হত্যার বিচার দাবিতে উত্তাল দেশ: দিকে দিকে বিক্ষোভ
- বেরিয়ে এলো ওসমান হাদি হত্যার ভয়ংকর পরিকল্পনা
- জরুরি বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটি, সভাপতিত্বে তারেক রহমান
- এবার মুখোমুখি ভারত ও পাকিস্তান
- হাদির আসনে নির্বাচনে নামছেন যিনি
- হাদির জানাজা উপলক্ষে রাজধানীতে বিশেষ ট্রাফিক নির্দেশনা
- মরুভূমির দেশে সাদা চাদর, তুষারে ঢাকল সৌদি পাহাড়
- শনিবারের যে পরীক্ষা বাতিল ঘোষণা
- ওসমান হাদির জানাজা শনিবার জানাজা কোথায় ও কখন
- জুমার দিনে দরুদ পাঠের বিশেষ ফজিলত
- শেয়ারবাজারের সাপ্তাহিক পূর্ণাঙ্গ বিশ্লেষণ
- হাদি হত্যার প্রতিবাদে উত্তাল শাহবাগ: বাড়ছে জনস্রোত
- থামবে বয়সের চাকা: বৃদ্ধ কোষকে তারুণ্য দেবে ‘জাদুকরী ফুল’
- রাজশাহী আ.লীগ অফিস এখন ধ্বংসস্তূপ
- জুমার দিন কেন সেরা? হাদিসে বর্ণিত ৫টি বড় কারণ
- হাসিনার গুলিই দমাতে পারেনি, সন্ত্রাসীদের তোয়াক্কা করি না
- ওষুধের বাজার নিয়ন্ত্রণে নেই সরকারের, ভাঙেনি পুরোনো সিন্ডিকেট
- শুক্রবার সোনার বাজারে কী অবস্থা? জানুন আজকের দর
- হাদির মৃত্যু ঘিরে আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
- বদলে গেল ইতিহাস: পৃথিবীতে প্রাণের জন্ম নিয়ে বিজ্ঞানীদের নতুন দাবি
- প্রতিদিন হত্যার হুমকি পাচ্ছি: হাসনাত আব্দুল্লাহ
- হাড়ের ব্যথায় ভুগছেন? শুধু বয়স নয়, দায়ী আপনার ৫টি অভ্যাস
- লিখিত পরীক্ষা নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিজ্ঞপ্তি
- হাদির প্রথম জানাজা কোথায় ও কখন? জানাল ইনকিলাব মঞ্চ
- হাদি মৃত্যুতে জ্বলছে দেশ: মিডিয়া অফিস ও হাই কমিশনে হামলা
- খেলার খবর: বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচসহ আজকের টিভি সূচি
- খুলনায় সাংবাদিককে গুলি করে হত্যা
- ছুটির দিনেও উত্তপ্ত ঢাকা: আজ কোথায় কী কর্মসূচি?
- এবার এনসিপি নেতা হান্নান মাসউদকে মেরে ফেলার হুমকি
- হাদির মৃত্যুতে শায়খ আহমাদুল্লাহ ও আজহারীর আবেগঘন বার্তা
- দিল্লি না ঢাকা? স্লোগানে স্লোগানে কাঁপছে শাহবাগ চত্বর
- শুক্রবার কেমন থাকবে ঢাকার আকাশ? জেনে নিন
- রাজধানীতে আজ কেমন থাকবে আবহাওয়া, জানাল অধিদপ্তর
- প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারে হামলার প্রতিবাদে মির্জা ফখরুল
- ধ্বংস নয়, পুনর্গঠনেই বাঁচবেন হাদি: হাসনাত আবদুল্লাহ
- যুব এশিয়া কাপসহ আজকের পূর্ণ ক্রীড়া সূচি
- আজ বাংলাদেশ–পাকিস্তান সেমিফাইনাল এর সময় জানুন
- আজকের নামাজের সময়সূচি: ১৯ ডিসেম্বর
- যখন দেশে ফিরছে শরিফ ওসমান হাদির মরদেহ
- সবাইকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে শরিফ ওসমান হাদি
- ৭১-এর পর ভারতের বড় কৌশলগত চ্যালেঞ্জ এখন বাংলাদেশ
- বুধবার টানা ১০ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকবে না যেসব এলাকায়
- শনি-রবিবার বিদ্যুৎ থাকবে না বহু এলাকায়
- মাধ্যমিক স্কুলে ভর্তি শুরুর সময়সূচি প্রকাশ
- এমপি হওয়ার আগেই ভিআইপি প্রোটোকল পেলেন হাদি: ডা. মাহমুদা মিতু
- রোববার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বিদ্যুৎহীন যেসব এলাকা
- বাজুসের নতুন ঘোষণা: আজ থেকে কার্যকর স্বর্ণের বর্ধিত দাম
- ১২ ফেব্রুয়ারি জাতীয় নির্বাচন ঘোষণা
- দেশের বাজারে স্বর্ণের দামের নতুন রেকর্ড
- ১৬ অক্টোবর ২০২৫: জেনে নিন আজকের মুদ্রা বিনিময় হার
- সিঙ্গাপুরে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে ওসমান হাদি
- মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় দেশসেরা জাহাঙ্গীর আলম শান্ত
- আগামী ৫ দিনের আবহাওয়ার আগাম বার্তা দিল আবহাওয়া অফিস
- ডলারসহ বিভিন্ন বৈদেশিক মুদ্রার আজকের বিনিময় হার
- কারা ভোটে দাঁড়াতে পারবেন না, স্পষ্ট করল নির্বাচন কমিশন
- আইপিএল নিলামে তোলপাড়: রেকর্ড দামে বিক্রি ফিজ








