জুলাই সনদ নিয়ে সরকারের মধ্যস্থতা, গোপন আলোচনায় কী ঘটছে

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০২ ১০:১৫:০৭
জুলাই সনদ নিয়ে সরকারের মধ্যস্থতা, গোপন আলোচনায় কী ঘটছে
ফাইল ছবি

জুলাই জাতীয় সনদ ও গণভোটকে কেন্দ্র করে দেশের তিন প্রধান রাজনৈতিক শক্তি বিএনপি, জামায়াত এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মধ্যে প্রকাশ্য বিরোধ তীব্র আকার ধারণ করেছে। সনদ বাস্তবায়ন, নির্বাচন সময়সূচি ও সরকারের নিরপেক্ষতা ইস্যুতে এখন দুই প্রধান শরিক দলের শীর্ষ নেতারা একে অপরের বিরুদ্ধে সরাসরি তির্যক ভাষায় অভিযোগ তুলছেন। অন্যদিকে সংস্কার প্রক্রিয়া নিয়ে এনসিপি নেতারাও সরকারের ভূমিকা ও দুই দলের রাজনৈতিক অবস্থানকে কঠোরভাবে সমালোচনা করছেন।

এই অচলাবস্থা ও মুখোমুখি অবস্থানে সরকারও এখন বিব্রত। তাই পরিস্থিতি সামাল দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে পর্দার আড়ালে একটি সমঝোতা প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নির্দেশে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের নেতৃত্বে চারজন উপদেষ্টা ইতোমধ্যে বিএনপি ও জামায়াতের সঙ্গে দুই দফা আলোচনা করেছেন বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে। যদিও এখনো পর্যন্ত এ আলোচনায় কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি বা সমঝোতার ইঙ্গিত মেলেনি।

সম্প্রতি বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রকাশ্যে অভিযোগ করেছেন যে, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন “পুরো জাতির সঙ্গে প্রতারণা করেছে।” তিনি ঘোষণা দেন যে, জুলাই সনদের বাস্তবায়নের সঙ্গে জাতীয় নির্বাচন একসঙ্গে করতে হবে, অর্থাৎ একই দিনে গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। অপরদিকে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ জানিয়েছেন, তারা সরকারের সঙ্গে যোগাযোগে ছিলেন, কিন্তু একই দিনে গণভোট ও জাতীয় নির্বাচন মেনে নেওয়া তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তাঁর দাবি, গণভোট অবশ্যই নির্বাচনের আগে হতে হবে। একই অবস্থান নিয়েছে এনসিপিও।

২৮ অক্টোবর জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সরকারের কাছে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশপত্র জমা দেওয়ার পর থেকেই রাজনৈতিক অঙ্গনে এই বিরোধ প্রকাশ্যে আসে। একদিকে বিএনপি চাইছে গণভোট ও নির্বাচন একদিনে, অপরদিকে জামায়াত ও এনসিপি চাইছে আগে গণভোট, পরে নির্বাচন। সূত্র জানায়, সরকারের পক্ষ থেকে দুটি সমঝোতা প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছে প্রথমত, বিএনপিকে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতিতে সংসদের উচ্চকক্ষ গঠনে সম্মতি দিতে বলা হয়েছে, এবং দ্বিতীয়ত, জামায়াতকে একই দিনে জাতীয় নির্বাচন ও গণভোটে রাজি হতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

তবে উভয় দলই এখনো পর্যন্ত নিজেদের অবস্থানে অনড়। এ কারণে সরকার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের উদ্যোগ নিয়েছে। জানা গেছে, লন্ডনে অবস্থানরত তারেক রহমানের সঙ্গে আলোচনার জন্য প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে কূটনৈতিক চ্যানেলেও প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

এদিকে ঐকমত্য কমিশনের একটি সূত্র জানিয়েছে, রাজনৈতিক দলগুলো যে বক্তব্য দিচ্ছে, তার অধিকাংশই সত্য নয়। কমিশন বলছে, আলোচনাগুলোর অনেকাংশই রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন বিটিভিতে সরাসরি প্রচারিত হয়েছে এবং তার সব রেকর্ড সরকারের হাতে রয়েছে। তবুও তারা প্রকাশ্যে কোনো প্রতিক্রিয়া দিতে চান না, কারণ এতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে মুখোমুখি অবস্থান তৈরি হতে পারে।

সরকারের অভ্যন্তরীণ একটি সূত্র জানায়, এই বিরোধ নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সর্বশেষ বৈঠকেও দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের নেতৃত্বে চারজন উপদেষ্টাকে সমঝোতার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাঁরা ইতোমধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ এবং জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহেরের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। সমঝোতা সফল হলে দ্রুত জুলাই সনদ বাস্তবায়নসংক্রান্ত আদেশ জারি হতে পারে বলেও সূত্র জানিয়েছে।

উপদেষ্টা পরিষদ তিনটি বিকল্প নিয়ে চিন্তা করছে প্রথমত, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন বাধ্যতামূলক না রেখে তা ভবিষ্যৎ সংসদের সংবিধান সংস্কার পরিষদের ওপর ছেড়ে দেওয়া; দ্বিতীয়ত, জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট একসঙ্গে করার নীতিগত অনুমোদন দেওয়া; তৃতীয়ত, সনদের বাস্তবায়নে প্রধান উপদেষ্টার বদলে রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরে আদেশ জারি করা। তবে এসব বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়নি।

বিএনপি নেতৃত্বাধীন সূত্র বলছে, ঢাকায় থাকা নেতারা বড় কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না এই কারণেই সরকারের পক্ষ থেকে তারেক রহমানের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, “সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যদি মতবিরোধ থেকে যায়, সরকারের পক্ষে এককভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন। তাই দলগুলোর উচিত নিজেদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান খোঁজা।”

প্রসঙ্গত, জুলাই জাতীয় সনদে মোট ৮৪টি প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যার মধ্যে ৬১টি প্রস্তাবে অন্তত একটি রাজনৈতিক দলের ভিন্নমত (নোট অব ডিসেন্ট) রয়েছে। এর মধ্যে ৪৮টি প্রস্তাব সংবিধান সংশোধনের সঙ্গে সম্পর্কিত। বিএনপি, জামায়াতসহ ২৫টি রাজনৈতিক দল ইতোমধ্যেই সনদে স্বাক্ষর করেছে।

সনদ বাস্তবায়নের প্রস্তাব অনুযায়ী, ৯টি বিষয় নির্বাহী আদেশে, ২৭টি অধ্যাদেশের মাধ্যমে এবং সংবিধান সংশোধনের ৪৮টি প্রস্তাব গণভোটের মাধ্যমে বাস্তবায়ন হবে। আগামী সংসদ প্রথম অধিবেশন শুরুর ২৭০ দিনের মধ্যে এই প্রস্তাবসমূহ সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করতে ব্যর্থ হলে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে কার্যকর হবে। পরে ৪৫ দিনের মধ্যে পিআর পদ্ধতিতে সংসদের উচ্চকক্ষ গঠন করা হবে।

অন্যদিকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শনিবার এক অনুষ্ঠানে স্পষ্টভাবে জানান, “আমরা জুলাই সনদের যে অংশে সই করেছি, তার দায় নেব, কিন্তু যেখানে সই করিনি, তার দায় আমাদের নয়।” তিনি আরও বলেন, “আমরা নির্বাচন করতে চাই, নির্বাচনে অংশ নেব। কিন্তু নির্বাচনের আগে গণভোট করার কোনো সুযোগ নেই। নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে হবে।”

অন্যদিকে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, “আমরা আগে গণভোট চাই। একই দিনে নির্বাচন ও গণভোট হলে তা জটিলতা সৃষ্টি করবে। দেশ ও জনগণের স্বার্থে আমরা কোনো ছাড় দেব না।”

-রফিক


নতুন অপারেশনের ঝুঁকি: হাদির চিকিৎসায় জটিলতা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৭ ২০:৪৩:১৮
নতুন অপারেশনের ঝুঁকি: হাদির চিকিৎসায় জটিলতা
ছবি : সংগৃহীত

সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র এবং আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির শারীরিক অবস্থা এখনো সংকটাপন্ন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার অবস্থা আপাতত ‘স্ট্যাটিক’ বা অপরিবর্তিত রয়েছে।

বুধবার সন্ধ্যায় এক ভিডিও বার্তায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের চিকিৎসক ও ন্যাশনাল হেলথ অ্যালায়েন্সের সদস্যসচিব ডা. মো. আব্দুল আহাদ এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ডা. আহাদ জানান, বুধবার হাদির সিটিস্ক্যান করা হয়েছে। রিপোর্নায় দেখা গেছে, তার মস্তিষ্কে ইস্কেমিয়া বা রক্ত সঞ্চালনজনিত সমস্যা আগের চেয়ে কিছুটা বেড়েছে, যা উদ্বেগের কারণ।

বর্তমানে শরিফ ওসমান হাদিকে ভেন্টিলেশন সাপোর্টে রাখা হয়েছে। তার হার্ট, ফুসফুস ও কিডনি যন্ত্রের সহায়তায় কাজ করছে। ইউরিন আউটপুটও সাপোর্টের মাধ্যমেই বজায় রাখা হচ্ছে।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, হাদির মস্তিষ্কে গুলির একটি ছোট অংশ এখনো রয়ে গেছে। সেটি অপসারণের জন্য নতুন করে অস্ত্রোপচার করা হবে কি না, তা নিয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মধ্যে আলোচনা চলছে।

গুলিটি মস্তিষ্কের যে জায়গায় রয়েছে, সেখানে অপারেশন করলে নতুন কোনো জটিলতা তৈরি হতে পারে কি না, সে বিষয়টি এখনো নিশ্চিত নয়। তাই আপাতত তাকে কনজারভেটিভ ম্যানেজমেন্টের আওতায় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে যুক্তরাজ্য বা যুক্তরাষ্ট্রে স্থানান্তর করা হবে কি না, সে বিষয়টিও বিবেচনায় রয়েছে। তবে হাদির বর্তমান শারীরিক অবস্থা দীর্ঘ ভ্রমণের ধকল নিতে পারবে কি না, তা মূল্যায়ন করছেন চিকিৎসকরা। এ ক্ষেত্রে তার পরিবারের ইচ্ছাকেও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

ডা. আহাদ সাধারণ মানুষকে গুজবে কান না দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন এবং শরিফ ওসমান হাদির সুস্থতার জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন।


মামলা দেখার দরকার নেই, আ.লীগ হলেই অ্যাকশন: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৭ ২০:৩৫:৪১
মামলা দেখার দরকার নেই, আ.লীগ হলেই অ্যাকশন: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
ছবি : সংগৃহীত

আওয়ামী লীগের যারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট মামলা না থাকলেও আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য পুলিশকে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, সন্ত্রাসীদের ধরতে ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বুধবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জে একটি অনুষ্ঠান শেষে ফেরার পথে এই নির্দেশনা দেন তিনি। এ সময় ছাত্রনেতারা উপদেষ্টার পথ আটকে দাঁড়ালে সেখানে এক নাটকীয় পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

ছাত্ররা অভিযোগ করেন, জুলাই অভ্যুত্থানের সময় যারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়েছে, পুলিশ ‘মামলা নেই’ অজুহাতে তাদের গ্রেপ্তার করছে না। তাদের এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ঘটনাস্থলে উপস্থিত জেলা পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান মুন্সীকে তাৎক্ষণিকভাবে ডেকে পাঠান উপদেষ্টা।

পুলিশ সুপারকে উদ্দেশ্য করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা স্পষ্ট ভাষায় বলেন, আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসী হলে তার বিরুদ্ধে মামলা আছে কি না, সেটা দেখার কোনো প্রয়োজন নেই। তাদের সঙ্গে সঙ্গে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।

তিনি পুলিশ কর্মকর্তাদের সতর্ক করে বলেন, যদি সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় না আনা হয়, তবে পুলিশের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উপদেষ্টার এই বক্তব্যে উপস্থিত ছাত্ররা সন্তোষ প্রকাশ করেন।

এর আগে ছাত্রনেতারা উপদেষ্টার কাছে ৭ দফা দাবি পেশ করেন। এর মধ্যে রয়েছে জুলাই অভ্যুত্থানে লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার, আওয়ামী লীগ ও ওসমান পরিবারের সহযোগী সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার, সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার এবং থানা ও আদালতকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখা।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ছাত্রদের এসব দাবিকে ‘যৌক্তিক’ হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি জানান, দাবিগুলো বাস্তবায়নে ইতিমধ্যে সরকার কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে এবং বাকিগুলো পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হবে।

জুলাই আন্দোলনে আহত ওসমান হাদির ওপর হামলার বিষয়েও কথা বলেন উপদেষ্টা। তিনি জানান, মূল অভিযুক্তকে এখনো গ্রেপ্তার করা সম্ভব না হলেও তার ব্যবহৃত হাতিয়ার উদ্ধার করা হয়েছে এবং এক সহযোগীকে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।

এছাড়া সম্প্রতি অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার প্রসঙ্গে ‘আলু-পেঁয়াজ’ নিয়ে দেওয়া নিজের আগের মন্তব্যের ব্যাখ্যাও দেন জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, সেটি কৃষি মন্ত্রণালয়ের অনুষ্ঠান ছিল বলে তিনি কৃষকদের সমস্যার কথা জানতে চেয়েছিলেন। কিন্তু স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিষয়গুলো নিয়ে তিনি নিয়মিত সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন।

তথ্যসূত্র: ডেইলি স্টার


অবশেষে কাটল জটিলতা: বইমেলার নতুন তারিখ ঘোষণা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৭ ১৯:০৮:২১
অবশেষে কাটল জটিলতা: বইমেলার নতুন তারিখ ঘোষণা
ছবি : সংগৃহীত

অবশেষে অমর একুশে বইমেলা ২০২৬-এর সময়সূচি নিয়ে চলা দীর্ঘদিনের জটিলতার অবসান হয়েছে। নানা জল্পনা-কল্পনার পর সিদ্ধান্ত হয়েছে যে ভাষার মাস ফেব্রুয়ারিতেই প্রাণের এই মেলা অনুষ্ঠিত হবে।

তবে দীর্ঘদিনের রেওয়াজ অনুযায়ী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে মেলা শুরু হলেও এবার তা হচ্ছে না। আগামী বছর মেলা শুরু হবে ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে এবং চলবে ১৫ মার্চ পর্যন্ত।

বুধবার বাংলা একাডেমিতে অনুষ্ঠিত এক জরুরি সভায় এই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিকেলে একাডেমির শহীদ মুনীর চৌধুরী সভাকক্ষে মেলার তারিখ নির্ধারণ সংক্রান্ত এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মফিদুর রহমান এবং বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমদ, প্রকাশক প্রতিনিধি ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা আলোচনায় অংশ নেন।

বাংলা একাডেমি নিশ্চিত করেছে যে, সভায় উপস্থিত সবার সম্মতিক্রমে মেলার উদ্বোধনের তারিখ ২০ ফেব্রুয়ারি নির্ধারণ করা হয়েছে। ওইদিন সকাল ১১টায় মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে।

সাধারণত প্রতি বছর ১ ফেব্রুয়ারি আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মাসব্যাপী এই মেলার পর্দা ওঠে। তবে এবারের প্রেক্ষাপটে সেই ঐতিহ্যে কিছুটা পরিবর্তন এনে তারিখ পেছানো হয়েছে।

নতুন সময়সূচি অনুযায়ী মেলা ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে শুরু হয়ে মার্চ মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত গড়াবে। এই সিদ্ধান্তের ফলে লেখক, প্রকাশক ও পাঠকদের মধ্যে থাকা অনিশ্চয়তা দূর হলো।


নিরাপত্তা নিয়ে কোনো সংশয় নেই, সবাই নিরাপদে চলছে: উপদেষ্টা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৭ ১৮:৪৭:৪২
নিরাপত্তা নিয়ে কোনো সংশয় নেই, সবাই নিরাপদে চলছে: উপদেষ্টা
ছবি : সংগৃহীত

দেশের সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে কোনো ধরনের সংশয় নেই বলে আশ্বস্ত করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেছেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে সবাই নিরাপদে চলাফেরা করছে এবং উদ্বেগের কোনো কারণ নেই।

বুধবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জে বিকেএমইএ ভবনে জেলা পুলিশ ও শিল্প পুলিশের কাছে ৬টি লেগুনা গাড়ি হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

নিরাপত্তার শঙ্কায় নারায়ণগঞ্জে একজন প্রার্থীর নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানো প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা স্পষ্ট করেন যে, কে নির্বাচন করবে আর কে করবে না, সেটি সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত বিষয়।

তিনি বলেন, কোনো প্রার্থী যদি নিরাপত্তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন বা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন, তবে সেটি তার একান্ত ব্যক্তিগত অনুভূতি বা মতামত হতে পারে। এ বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে মন্তব্য করার সুযোগ নেই।

উপদেষ্টা আরও বলেন, এখানে সাংবাদিক ও ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত আছেন এবং সবাই স্বাভাবিকভাবে কাজ করছেন। সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার দিক থেকে দেশে কোনো সংকট নেই।

অনুষ্ঠানে জুলাই আন্দোলনের অন্যতম যোদ্ধা ওসমান হাদির প্রসঙ্গও উঠে আসে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, ওসমান হাদি বর্তমানে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন আছেন। তাকে ‘জুলাই যোদ্ধা’ হিসেবে অভিহিত করে তার দ্রুত সুস্থতার জন্য সবার কাছে দোয়া চান তিনি।

নিরাপত্তা শঙ্কায় ঢাকায় ভারতীয় ভিসা সেন্টার বন্ধের বিষয়ে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, বিষয়টি তার জানা নেই এবং তিনি সাংবাদিকদের কাছ থেকেই প্রথম এটি শুনেছেন।

অনুষ্ঠানে বিকেএমইএর পক্ষ থেকে পুলিশকে গাড়ি উপহার দেওয়ার উদ্যোগের প্রশংসা করেন তিনি। উপদেষ্টা উল্লেখ করেন, জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের সময় পুলিশের অনেক যানবাহন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। ব্যবসায়ীদের এই সহায়তা আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশের কাজকে আরও সহজ করবে।

বিকেএমইএর সভাপতি মো. হাতেমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরী, অতিরিক্ত আইজিপি গাজী জসিম উদ্দিনসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।


নির্বাচন নিয়ে ভারতের ‘নসিহত’ অগ্রহণযোগ্য: তৌহিদ হোসেন

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৭ ১৮:২৬:১১
নির্বাচন নিয়ে ভারতের ‘নসিহত’ অগ্রহণযোগ্য: তৌহিদ হোসেন
ছবি : সংগৃহীত

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ভারতের ‘নসিহত’ বা উপদেশকে অগ্রহণযোগ্য বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন যে, একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাওয়া বাংলাদেশের জন্য প্রতিবেশীদের উপদেশের কোনো প্রয়োজন নেই।

বুধবার বিকেলে সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। উপদেষ্টার মতে, ভারত এখন নির্বাচন নিয়ে অযাচিত পরামর্শ দিচ্ছে, যা ঢাকার কাছে কোনোভাবেই কাম্য নয়।

শেখ হাসিনার প্রসঙ্গ টেনে তৌহিদ হোসেন বলেন, ভারতে বসে সাবেক প্রধানমন্ত্রী আগে শুধু সোশ্যাল মিডিয়ায় বক্তব্য দিতেন, এখন সংবাদমাধ্যমেও কথা বলছেন। তার এসব বক্তব্যে যথেষ্ট উসকানি রয়েছে বলে মনে করে অন্তর্বর্তী সরকার।

তিনি অভিযোগ করেন, আদালতের মাধ্যমে দণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে পাশের দেশে বসে শেখ হাসিনা অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা করছেন। বাংলাদেশ তাকে ফেরত চাইবে, কিন্তু ভারত তাকে ফেরত পাঠাচ্ছে না এবং তার বক্তব্যও বন্ধ করার কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না।

নির্বাচন প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, গত ১৫ বছর দেশে যে প্রহসনের নির্বাচন হয়েছে, তখন ভারত কোনো শব্দ করেনি। অথচ বর্তমান সরকার যখন একটি অত্যন্ত ভালো পরিবেশে নির্বাচনের আয়োজন করতে যাচ্ছে, তখন তারা উল্টো নসিহত করছে।

ভারতের সেভেন সিস্টার্স নিয়ে হাসনাত আব্দুল্লাহর মন্তব্যের বিষয়েও সরকারের অবস্থান পরিষ্কার করেন তিনি। উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ কোনো সন্ত্রাসবাদে বিশ্বাস করে না এবং কোনো বিচ্ছিন্নতাবাদীকে এই ভূমিতে আশ্রয় দেওয়া হবে না।

তিনি উল্লেখ করেন, একজন রাজনৈতিক নেতা ব্যক্তিগতভাবে অনেক কিছুই বলতে পারেন। কিন্তু বাংলাদেশের কোনো সরকারই এ ধরনের বিচ্ছিন্নতাবাদী চিন্তাধারাকে সমর্থন করবে না বা প্রশ্রয় দেবে না।

এছাড়া মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাম্প্রতিক মন্তব্যেরও কড়া জবাব দেন তৌহিদ হোসেন। তিনি বলেন, ভারত সব সময় মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের ভূমিকাকে খাটো করে দেখানোর চেষ্টা করে, যা বাংলাদেশের জন্য সম্মানজনক নয়।


ডেভিল হান্ট ফেজ-২: চব্বিশ ঘণ্টায় বড় সাফল্য পেল পুলিশ

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৬ ২১:২০:১৭
ডেভিল হান্ট ফেজ-২: চব্বিশ ঘণ্টায় বড় সাফল্য পেল পুলিশ
ছবি : সংগৃহীত

দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এবং ফ্যাসিস্টদের দমনের লক্ষ্যে গত শনিবার সন্ধ্যা থেকে দেশজুড়ে চলমান ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ নামক বিশেষ অভিযানে যৌথ বাহিনী বড় ধরনের সাফল্য অর্জন করেছে। মঙ্গলবার বিকেলে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে যে সোমবার থেকে মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে পরিচালিত এই অভিযানে মোট ৮২৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্যানুযায়ী একদিনের এই জোরালো অভিযানে আটককৃতদের মধ্যে বিভিন্ন মামলার ও ওয়ারেন্টভুক্ত ৬১৬ জন আসামি রয়েছে যাদের দীর্ঘদিন ধরে পুলিশ খুঁজছিল।

অভিযানের সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অপরাধীদের কাছ থেকে বেশ কিছু অবৈধ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে যার মধ্যে রয়েছে তিনটি এলজি, একটি দেশীয় ওয়ান শুটারগান, আট রাউন্ড রাইফেলের গুলি, চার রাউন্ড পিস্তলের গুলি, তিন রাউন্ড কার্তুজ এবং দুটি বার্মিজ চাকু। পুলিশ সদর দপ্তরের দেওয়া পরিসংখ্যান বলছে গত চার দিন ধরে চলা এই বিশেষ অভিযানের ফলে সারা দেশ থেকে এখন পর্যন্ত মোট দুই হাজার ৪৩৩ জনকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে যা অপরাধীদের মধ্যে বড় ধরনের আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। এছাড়া চার দিনের এই নিরলস প্রচেষ্টায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সর্বমোট ১২টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে পুলিশ প্রশাসন।


হাদির চিকিৎসার সর্বশেষ আপডেট জানাল পরিবার

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৬ ২১:১২:১২
হাদির চিকিৎসার সর্বশেষ আপডেট জানাল পরিবার
ছবি : সংগৃহীত

রাজধানীর পল্টনে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করার পর তার প্রয়োজনীয় সব প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। মঙ্গলবার ১৬ ডিসেম্বর সিঙ্গাপুর থেকে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে তার ভাই ওমর বিন হাদি নিশ্চিত করেছেন যে হাদির শারীরিক অবস্থার কিছুটা অবনতি লক্ষ্য করা গেলেও চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে বর্তমানে তিনি স্থিতিশীল পর্যায়ে রয়েছেন। চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে তিনি জানান হাদির সুস্থতার জন্য আরেকটি জটিল অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন রয়েছে তবে তার বর্তমান শারীরিক পরিস্থিতি সেই ধকল সওয়ার মতো উপযোগী না হওয়ায় এখনই অপারেশন টেবিলে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।

এর আগে সোমবার বাংলাদেশ সময় বিকেল ৫টা ৫০ মিনিটে একটি বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সযোগে হাদিকে সিঙ্গাপুরের সেলেতার বিমানবন্দরে পৌঁছে দেওয়া হয় এবং সেখান থেকে কালক্ষেপণ না করে সরাসরি তাকে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। পূর্বপ্রস্তুতি থাকায় হাসপাতালে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গেই তাকে ভর্তি করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের অধীনে পূর্ণাঙ্গ ডায়াগনস্টিক প্রক্রিয়া শুরু হয় যেখানে হাদির সার্বক্ষণিক দেখভালের জন্য তার ভাই ওমর বিন হাদি এবং ঘনিষ্ঠ বন্ধু আমিনুল হাসান ফয়সালও সিঙ্গাপুরে অবস্থান করছেন। উল্লেখ্য গত শুক্রবার দুপুরে পল্টন এলাকায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে আহত হওয়ার পর হাদিকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ এবং পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল কিন্তু অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় রোববার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নির্দেশে এক জরুরি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তাকে দ্রুত বিদেশে পাঠানোর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে যে শরিফ ওসমান হাদির চিকিৎসার যাবতীয় ব্যয় রাষ্ট্রীয়ভাবে বহন করা হচ্ছে এবং প্রধান উপদেষ্টা নিজে তার চিকিৎসার বিষয়টি সার্বক্ষণিকভাবে মনিটরিং করার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন। সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বিষয়ক বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমানের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে উন্নত চিকিৎসার এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হচ্ছে এবং পরিবারের পক্ষ থেকে হাদির দ্রুত আরোগ্য কামনায় দেশবাসীর কাছে বিশেষ দোয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।


হাদির চিকিৎসার সর্বশেষ আপডেট জানাল পরিবার

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৬ ২১:১২:১২
হাদির চিকিৎসার সর্বশেষ আপডেট জানাল পরিবার
ছবি : সংগৃহীত

রাজধানীর পল্টনে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করার পর তার প্রয়োজনীয় সব প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। মঙ্গলবার ১৬ ডিসেম্বর সিঙ্গাপুর থেকে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে তার ভাই ওমর বিন হাদি নিশ্চিত করেছেন যে হাদির শারীরিক অবস্থার কিছুটা অবনতি লক্ষ্য করা গেলেও চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে বর্তমানে তিনি স্থিতিশীল পর্যায়ে রয়েছেন। চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে তিনি জানান হাদির সুস্থতার জন্য আরেকটি জটিল অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন রয়েছে তবে তার বর্তমান শারীরিক পরিস্থিতি সেই ধকল সওয়ার মতো উপযোগী না হওয়ায় এখনই অপারেশন টেবিলে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।

এর আগে সোমবার বাংলাদেশ সময় বিকেল ৫টা ৫০ মিনিটে একটি বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সযোগে হাদিকে সিঙ্গাপুরের সেলেতার বিমানবন্দরে পৌঁছে দেওয়া হয় এবং সেখান থেকে কালক্ষেপণ না করে সরাসরি তাকে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। পূর্বপ্রস্তুতি থাকায় হাসপাতালে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গেই তাকে ভর্তি করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের অধীনে পূর্ণাঙ্গ ডায়াগনস্টিক প্রক্রিয়া শুরু হয় যেখানে হাদির সার্বক্ষণিক দেখভালের জন্য তার ভাই ওমর বিন হাদি এবং ঘনিষ্ঠ বন্ধু আমিনুল হাসান ফয়সালও সিঙ্গাপুরে অবস্থান করছেন। উল্লেখ্য গত শুক্রবার দুপুরে পল্টন এলাকায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে আহত হওয়ার পর হাদিকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ এবং পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল কিন্তু অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় রোববার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নির্দেশে এক জরুরি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তাকে দ্রুত বিদেশে পাঠানোর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে যে শরিফ ওসমান হাদির চিকিৎসার যাবতীয় ব্যয় রাষ্ট্রীয়ভাবে বহন করা হচ্ছে এবং প্রধান উপদেষ্টা নিজে তার চিকিৎসার বিষয়টি সার্বক্ষণিকভাবে মনিটরিং করার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন। সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বিষয়ক বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমানের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে উন্নত চিকিৎসার এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হচ্ছে এবং পরিবারের পক্ষ থেকে হাদির দ্রুত আরোগ্য কামনায় দেশবাসীর কাছে বিশেষ দোয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।


খালেদা জিয়া ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ: প্রধান উপদেষ্টা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৬ ২০:৪২:৫০
খালেদা জিয়া ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ: প্রধান উপদেষ্টা
ছবি : সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ঐতিহাসিক ভাষণে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে অভিহিত করে তাকে রাষ্ট্রের ‘অতিগুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ বা ভিআইপি হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন। মঙ্গলবার ১৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় দেওয়া এই ভাষণে তিনি উল্লেখ করেন যে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্রের প্রতি খালেদা জিয়ার অবিচল অঙ্গীকার এবং তিনবারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেশের উন্নয়নে তার অবদান বিবেচনা করেই সরকার তাকে এই বিশেষ মর্যাদায় ভূষিত করেছে। বর্তমানে অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এই প্রবীণ নেত্রীর শারীরিক অবস্থা নিয়ে সরকার শুরু থেকেই গভীরভাবে উদ্বিগ্ন এবং তার পরিবারের ইচ্ছাকে সম্মান জানিয়ে দেশে বা প্রয়োজনে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য সব ধরনের রাষ্ট্রীয় সহযোগিতা প্রদান করা হচ্ছে বলে নিশ্চিত করেছেন প্রধান উপদেষ্টা।

একই ভাষণে জুলাই গণঅভ্যুত্থান ও পরবর্তী বিচার প্রক্রিয়ার সর্বশেষ পরিস্থিতি তুলে ধরতে গিয়ে ড. ইউনূস এক চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেন যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল স্বাধীন ও স্বচ্ছ বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডের প্রধান নির্দেশদাতা হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেছেন। তিনি দেশবাসীকে জানান যে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে অভ্যুত্থানের পর ভারতে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনা এবং এই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত অপর আসামি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানকে দেশে ফিরিয়ে এনে দণ্ড কার্যকর করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ভারত সরকারকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন যে জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার, রাষ্ট্রকাঠামোর মৌলিক সংস্কার এবং একটি সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন— এই তিনটি বিষয়কে তার সরকার সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছে এবং ইতিমধ্যেই ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক একটি মামলার রায় ঘোষিত হওয়ার মাধ্যমে ন্যায়বিচারের পথ সুগম হয়েছে।

বিজয় দিবসের এই বিশেষ মুহূর্তে ড. ইউনূস ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের পাশাপাশি সাম্প্রতিক ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আত্মত্যাগকারী বীরদের গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন এবং বলেন যে বিগত বছরগুলোতে স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদের কারণে স্বাধীনতার সূর্য ম্লান হলেও জুলাই অভ্যুত্থান জাতিকে আবারও একটি বৈষম্যহীন ও দুর্নীতিমুক্ত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়ার সুযোগ করে দিয়েছে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে অন্তর্বর্তী সরকার যে বিস্তৃত সংস্কার কর্মসূচি হাতে নিয়েছে দেশের আপামর জনগণের সম্মিলিত অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে তা সফল পরিণতির দিকে এগিয়ে যাবে এবং একটি জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে।

পাঠকের মতামত:

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

রাষ্ট্রের ধারণাটি একসময় কেবল প্রশাসনিক ক্ষমতা, আইনের শাসন এবং নিরাপত্তা প্রদানের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল। কিন্তু আধুনিক বিশ্বে রাষ্ট্রের ভূমিকা এখন... বিস্তারিত