বিচার বিলম্বিত করার নতুন কৌশল নভেম্বরের মধ্যে শেখ হাসিনার মামলার রায় অনিশ্চিত

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০১ ১৪:০৫:৪৯
বিচার বিলম্বিত করার নতুন কৌশল নভেম্বরের মধ্যে শেখ হাসিনার মামলার রায় অনিশ্চিত
ছবিঃ সংগৃহীত

শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা এবং ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়সহ শেখ পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে রাজউকের প্লট দুর্নীতির ছয়টি মামলার বিচার নভেম্বরের মধ্যে শেষ হওয়ার যে ধারণা ছিল, তা বিলম্বিত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এতদিন এই মামলাগুলোর দ্রুত নিষ্পত্তি এবং রায় হওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা চলছিল।

সংশ্লিষ্টদের ধারণা ছিল অক্টোবরের শেষ নাগাদ বা নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে মামলার রায় আসতে পারে। কিন্তু সাক্ষ্যগ্রহণের প্রায় শেষ পর্যায়ে এসে হঠাৎ করেই পলাতক এক আসামির আত্মসমর্পণের ঘটনায় এই বিচার প্রক্রিয়া পিছিয়ে যাওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

পলাতক আসামির আত্মসমর্পণ

গত বুধবার (২৯ অক্টোবর) হঠাৎ করেই মামলার চার্জশিটভুক্ত পলাতক এক আসামি, রাজউকের সাবেক সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। তার আত্মসমর্পণের পর জামিন আবেদন নাকচ করে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

দুদক চেয়ারম্যান ড. আব্দুল মোমেন গত ২৪ সেপ্টেম্বর আশা প্রকাশ করেছিলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির ছয়টি মামলার রায় অক্টোবর বা নভেম্বরের মাঝামাঝি আসবে। প্রসিকিউশন বিভাগ এতদিন পলাতক আসামিদের অনুপস্থিতিতেই বিচার শুনানি প্রায় শেষ পর্যায়ে নিয়ে এসেছিল।

তবে প্রসিকিউশন বিভাগ এখন আশঙ্কা করছে, এই আসামির আত্মসমর্পণের সূত্র ধরে মামলার বিচার শুনানি ত্বরান্বিত করার প্রক্রিয়া পেছানোর সম্ভাবনা রয়েছে।

বিচার বিলম্বিত করার কৌশল?

আদালত-সংশ্লিষ্ট সূত্র এবং প্রসিকিউশন বিভাগ ধারণা করছে, এই আসামির আত্মসমর্পণ একটি সুচিন্তিত কৌশল হতে পারে। বিচার বিলম্বিত করার জন্য পলাতক আসামিরা হয়তো এক এক করে আত্মসমর্পণ করে সাক্ষী 'রিকল' (পুনরায় তলব) করার কৌশল অবলম্বন করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে মামলার বিচার শেষ হতে কত সময় লাগবে, তা বলা কঠিন।

দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর দেলোয়ার জাহান রুমি যুগান্তরকে বলেছেন, আসামি মোহাম্মদ খুরশীদ আলমের আইনগত অধিকার রয়েছে সাক্ষী রিকল করার। তিনি বলেন, "আসামি আত্মসমর্পণ করে যদি সাক্ষী রিকল করে, এটা তার আইনগত অধিকার। তার আইনগত অধিকারে তো আদালত অথবা দুদকের বাধা দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।" তিনি স্বীকার করেন, এই কারণে বিচার সামান্য বিলম্বিত হতে পারে, কিন্তু বিচারকার্য সম্পন্ন হবেই।

ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪০ ধারা অনুযায়ী, আদালত ন্যায়ের স্বার্থে যে কোনো পর্যায়ে সাক্ষীকে পুনরায় হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিতে পারেন। এই আইনি বিধানটি আসামিদের বিচার বিলম্বিত করার কৌশলকে আরও সহজ করে দিতে পারে বলে আইনসংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।

মামলার সংক্ষিপ্ত পটভূমি

গত ৩১ জুলাই ঢাকার দুটি বিশেষ জজ আদালত পৃথক ছয় মামলায় শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা পরিবারের সাত সদস্যসহ মোট ২৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। এর মধ্যে ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুনের আদালতে তিন মামলায় শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। অপরদিকে ঢাকার চতুর্থ বিশেষ জজ রবিউল আলমের আদালতে শেখ রেহানা, তার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি, মেয়ে টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক ও আজমিনা সিদ্দিকদের বিরুদ্ধে আরও তিন মামলার বিচার শুনানি শুরু হয়।

এই মামলাগুলো শুরু হয়েছিল গত বছর দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)-এর অনুসন্ধানের পর। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে দুদক এই অনুসন্ধান শুরু করে।


আপনার এনআইডিতে কয়টি সিম নিবন্ধিত জেনে নিন এখনই বন্ধ হতে পারে অতিরিক্ত সিম

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০১ ১০:৪৬:২৪
আপনার এনআইডিতে কয়টি সিম নিবন্ধিত জেনে নিন এখনই বন্ধ হতে পারে অতিরিক্ত সিম
ছবিঃ সংগৃহীত

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আজ শনিবার (০১ নভেম্বর) থেকে একটি জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) বিপরীতে ১০টির বেশি সক্রিয় সিম রাখা যাবে না। সংশ্লিষ্ট মোবাইল অপারেটরগুলো আজ থেকেই এই অতিরিক্ত সিমগুলো নিষ্ক্রিয় করার প্রক্রিয়া শুরু করবে।

বিটিআরসি সম্প্রতি এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) সময়সীমা শেষ হওয়ার পর থেকেই অতিরিক্ত সিমগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ করা হবে। এর আগে একজন নাগরিক এনআইডির বিপরীতে সর্বোচ্চ ১৫টি সিম ব্যবহার করতে পারতেন।

বিটিআরসি চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) এমদাদ উল বারী নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, আজ শনিবার থেকেই অপারেটররা অতিরিক্ত সিম নিষ্ক্রিয় করবে এবং ডিসেম্বরের মধ্যে নিশ্চিত করা হবে যে কোনো এনআইডির নামে ১০টির বেশি সিম সক্রিয় থাকবে না।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও নিরাপত্তা উদ্বেগ

সম্প্রতি দেশের বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিবেচনায় ব্যক্তিগত সিম নিবন্ধনের সর্বোচ্চ সংখ্যা আরও কমানোর বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বিশেষ আইনশৃঙ্খলা সভায় সিদ্ধান্ত হয়।

বিটিআরসির সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা জানান, ওই সিদ্ধান্ত এবং দেশের বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিবেচনায় আগামী ১ জানুয়ারি থেকে নতুন সিম রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৫টিতে সীমাবদ্ধ রাখার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত অনুমোদনের জন্য ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগে পাঠানো হবে এবং অনুমোদন পেলে ২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকে নতুন সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হবে।

এর আগে গত ২৬ অক্টোবর স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) জানিয়েছিলেন, নির্বাচনের আগে ব্যক্তিগত পর্যায়ে সিম ব্যবহারের সংখ্যা কমিয়ে পাঁচ থেকে সাতটি করা হবে। তবে সরকারের লক্ষ্য রয়েছে ব্যক্তি পর্যায়ের সিম ব্যবহার আরও কমিয়ে দুটিতে নামিয়ে আনা।

নিবন্ধিত সিম যাচাইয়ের প্রক্রিয়া

একটি এনআইডির বিপরীতে কতগুলো সিম নিবন্ধিত আছে, তা জানতে যেকোনো মোবাইল অপারেটর থেকে *১৬০০১# লিখে ডায়াল করতে হবে। ফিরতি মেসেজে জাতীয় পরিচয়পত্রের শেষ চারটি সংখ্যা চাওয়া হবে। সেই সংখ্যা পাঠানোর পর এসএমএসের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে যে ওই এনআইডিতে মোট কয়টি সিম নিবন্ধিত আছে এবং কোন কোন অপারেটরের সিম রয়েছে।


আত্মনির্ভরশীল বাংলাদেশ গড়ার পথ দেখালেন ড. ইউনূস 

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০১ ০৯:৫৯:৫৮
আত্মনির্ভরশীল বাংলাদেশ গড়ার পথ দেখালেন ড. ইউনূস 
ছবিঃ সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, সমবায়ভিত্তিক অর্থনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে একটি আত্মনির্ভরশীল বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব। আজ '৫৪তম জাতীয় সমবায় দিবস' উপলক্ষে গতকাল দেওয়া এক বাণীতে তিনি এই মন্তব্য করেন।

ড. ইউনূস বলেন, "বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার সমবায় খাতকে আধুনিক ও গতিশীল করতে নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।" তিনি বিশ্বাস করেন, কৃষি, মৎস্য, পশুপালন, সঞ্চয় ও ঋণদান এবং কুটিরশিল্পের মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে সমবায়ভিত্তিক অর্থনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে একটি আত্মনির্ভরশীল বাংলাদেশ গঠন করা যেতে পারে।

প্রধান উপদেষ্টা '৫৪তম জাতীয় সমবায় দিবস, ২০২৫' উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, "'সাম্য ও সমতায়, দেশ গড়বে সমবায়'—এ প্রতিপাদ্য সামনে রেখে প্রতি বছরের মতো এবারও ১ নভেম্বর যথাযোগ্য মর্যাদায় দেশব্যাপী এই দিবসটি উদ্যাপিত হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত।"

ড. মুহাম্মদ ইউনূস মনে করেন, দেশ ও জনগণের উন্নয়নে গৃহীত যেকোনো কার্যক্রম সফলভাবে বাস্তবায়নের জন্য সামাজিক সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করা অপরিহার্য। তিনি বলেন, সমবায়ের অমিত সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে এই কাজ অনায়াসে সম্পন্ন করা যায়।

তিনি উল্লেখ করেন, সমবায় সমিতিগুলো কেবল আর্থিক প্রতিষ্ঠান নয়, বরং সমাজের নানাবিধ সমস্যা দূর করতে বহুমুখী কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। তিনি বলেন, "দেশের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জীবনমান উন্নয়ন, দক্ষ জনশক্তি তৈরি ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে সমবায় আন্দোলনের বিকল্প নেই।"

প্রধান উপদেষ্টা তার বাণীতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, ন্যায়ভিত্তিক ও টেকসই সমাজ প্রতিষ্ঠার পথে এগিয়ে যেতে চায়। এই লক্ষ্য বাস্তবায়নের মাধ্যমে একটি বৈষম্যমুক্ত নতুন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় সমবায়ের ভূমিকা অপরিসীম।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস '৫৪তম জাতীয় সমবায় দিবস, ২০২৫' উপলক্ষে গৃহীত সব কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।


জুলাই সনদ বাস্তবায়নে অচলাবস্থা নিরসনে সরকারের বড় উদ্যোগ আলোচনায় দুই প্রধান দল

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০১ ০৯:২৬:২১
জুলাই সনদ বাস্তবায়নে অচলাবস্থা নিরসনে সরকারের বড় উদ্যোগ আলোচনায় দুই প্রধান দল
ছবিঃ সংগৃহীত

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন পদ্ধতি এবং গণভোটের সময় নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে তৈরি হওয়া তীব্র মতবিরোধ নিরসনে উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। ইতোমধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ এবং জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহেরের সঙ্গে দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টারা অনানুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু করেছেন। রাজনৈতিক সমঝোতা হলেই জুলাই সনদ বাস্তবায়ন-সংক্রান্ত আদেশ জারি করা হতে পারে।

গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে মন্ত্রীপাড়ায় দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টারা নিজেদের মধ্যে বৈঠক করে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। এর আগে গত বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরুর সিদ্ধান্ত হয় এবং কয়েকজন উপদেষ্টাকে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়।

সমঝোতার বার্তা ও দরকষাকষি

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন পদ্ধতি এবং গণভোটের সময় নিয়ে সৃষ্ট রাজনৈতিক বিতর্ক নিরসনে দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টারা কয়েকটি বিষয়ে দলগুলোর কাছে ছাড়ের অনুরোধ জানিয়েছেন:

বিএনপির প্রতি অনুরোধ: ১৫টি সংস্কার প্রস্তাবে ভিন্নমত (নোট অব ডিসেন্ট) দিলেও, দলটিকে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষ গঠন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের গঠন পদ্ধতিতে আপত্তি তুলে নিতে অনুরোধ করা হয়েছে।

জামায়াতের প্রতি অনুরোধ: দলটিকে নির্বাচনের আগে গণভোটের দাবি এবং নিম্নকক্ষে পিআর (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতির দাবি প্রকাশ্যে ত্যাগ করতে অনুরোধ করা হয়েছে।

একাধিক উপদেষ্টার ভাষ্যমতে, বিএনপি উচ্চকক্ষে পিআরের বিষয়টি পর্যালোচনা করার ইঙ্গিত দিয়েছে। তবে তারা চায় জামায়াত আগে প্রকাশ্যে গণভোট ও নিম্নকক্ষে পিআরের দাবি প্রত্যাহার করুক। জামায়াত জানিয়েছে, বিএনপি যদি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের গঠন এবং আসন্ন সংসদ নির্বাচনে পিআর পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষ গঠন মেনে নেয়, তবে তারা সমঝোতায় রাজি আছে।

তারেক রহমানের সঙ্গে আলোচনার পরামর্শ

রাজনৈতিক অচলাবস্থা নিরসনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টাকে অনানুষ্ঠানিকভাবে আলোচনা করার পরামর্শ দিয়েছেন একজন উপদেষ্টা। তারা মনে করছেন, উচ্চকক্ষে পিআরের সুরাহা করতে প্রধান উপদেষ্টার সরাসরি হস্তক্ষেপ প্রয়োজন, কারণ দলের পক্ষ থেকে এর আগে অবস্থান পরিবর্তনের সুযোগ নেই বলে সরকারকে জানানো হয়েছিল।

উপদেষ্টা পরিষদের চূড়ান্ত অভিমত

বৃহস্পতিবারের বৈঠকে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়। অধিকাংশ উপদেষ্টা মনে করেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন বাধ্যতামূলক (স্বয়ংক্রিয়ভাবে কার্যকর) না করে, বরং পরবর্তী সংসদের জন্য গঠিত 'সংবিধান সংস্কার পরিষদ'-এর জন্য তা নির্দেশনামূলক রাখা উচিত। তারা সংসদ নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে আয়োজনের পক্ষেও মত দিয়েছেন।

আইনগত খুঁটিনাটি পর্যালোচনার পর উপদেষ্টারা এই মর্মে অভিমত দিয়েছেন যে, 'জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ-২০২৫' প্রধান উপদেষ্টা নয়, বরং রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে জারি হওয়া উচিত। তবে এসব বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের এখতিয়ার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে দিয়েছে পরিষদ।

উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং প্রশাসন ও পুলিশের রাজনৈতিক আনুগত্যের কারণে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের চ্যালেঞ্জ নিয়েও আলোচনা হয়। উপদেষ্টারা প্রশাসন ও পুলিশের নিরপেক্ষতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

বৈঠক শেষে ড. ইউনূস কোনো বিষয়ে মন্তব্য না করলেও সব উপদেষ্টার মতামত শোনেন এবং জানান যে, সার্বিক অবস্থা পর্যালোচনা করে কয়েকদিনের মধ্যে তিনি গণভোট ও আদেশ জারির বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবেন। উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার সরকারের কাছে সুপারিশ জমা দেওয়ার মাধ্যমে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন তার কাজের ইতি টেনেছে।


একই দিনে নির্বাচন ও গণভোট? জুলাই সনদ বাস্তবায়নে কঠিন দ্বিধায় অন্তর্বর্তী সরকার

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ৩১ ১৮:৫০:৪৫
একই দিনে নির্বাচন ও গণভোট? জুলাই সনদ বাস্তবায়নে কঠিন দ্বিধায় অন্তর্বর্তী সরকার

রাজনৈতিক দলগুলোর তীব্র মতবিরোধের কারণে জুলাই জাতীয় সনদ বা সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নে বড় ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার এখন এই বাস্তবায়ন প্রক্রিয়াকে “দুরূহ চ্যালেঞ্জ” হিসেবে দেখছে। তবে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, সরকার গণভোট ও সনদ বাস্তবায়নের বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে। আলোচনায় এমন প্রস্তাবও উঠে এসেছে যে, জাতীয় নির্বাচনের দিনই গণভোট আয়োজনের বিষয়টি সরকার গভীরভাবে বিবেচনা করছে, যদিও এ বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।

গতকাল বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অনির্ধারিত আলোচনায় জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ও গণভোটের প্রসঙ্গটি বিশেষ গুরুত্ব পায়। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বৈঠকে উপস্থিত উপদেষ্টাদের মতামত চান। উপদেষ্টাদের বেশিরভাগই জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট একদিনে করার পক্ষে মত দেন, তবে প্রধান উপদেষ্টা কোনো সিদ্ধান্ত ঘোষণা না করে শুধু মতামত গ্রহণ করেন।

গত মঙ্গলবার জাতীয় ঐকমত্য কমিশন জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের প্রস্তাব জমা দেয় অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে। কমিশনের সুপারিশে বলা হয়, সনদের সংবিধানসংক্রান্ত সংস্কারগুলো বিশেষ সরকারি আদেশ (Executive Order) আকারে ঘোষণা করে তার ভিত্তিতে গণভোট আয়োজন করা উচিত। গণভোটে প্রস্তাব পাস হলে নবনির্বাচিত সংসদকে সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে কাজ করার দায়িত্ব দেওয়া হবে, যারা ২৭০ দিনের মধ্যে চূড়ান্ত সংস্কার সম্পন্ন করবে। তবে গণভোটের তারিখ নির্ধারণের দায়িত্ব সরকারের ওপরই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

সুপারিশ জমা দেওয়ার পর থেকেই রাজনৈতিক দলগুলোর অবস্থান স্পষ্টভাবে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। বিএনপি বলেছে, সংবিধান অনুযায়ী অন্তর্বর্তী সরকারের জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের এখতিয়ার নেই। দলটির মতে, জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট আয়োজন অপ্রয়োজনীয়, অযৌক্তিক ও অবিবেচনাপ্রসূত। অপরদিকে জামায়াতে ইসলামীসহ আটটি দল নভেম্বরের মধ্যে গণভোটসহ পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলনে রয়েছে। এনসিপি জানিয়েছে, তারা জুলাই সনদে স্বাক্ষর দেবে কি না, তা নির্ভর করবে অন্তর্বর্তী সরকারের পরবর্তী পদক্ষেপের ওপর। ফলে সংস্কার বাস্তবায়নের প্রশ্নে রাজনৈতিক অনৈক্য নতুন মাত্রা পেয়েছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, “২৭০ দিন ধরে আলোচনার পরও আমরা এখনো প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য দেখতে পাচ্ছি না, বরং অনৈক্য আরও গভীর হয়েছে। এটি আমাদের জন্য একটি কঠিন চ্যালেঞ্জ।” তাঁর ভাষায়, এখন বিরোধ দুইভাবে দেখা দিচ্ছে—প্রথমত, সংস্কার প্রস্তাব কীভাবে পাস করা হবে এবং দ্বিতীয়ত, গণভোট কখন অনুষ্ঠিত হবে। তিনি বলেন, “এখন যারা জুলাই অভ্যুত্থানের পক্ষে ছিল, তারাও একে অপরের বিরুদ্ধে উত্তেজিত অবস্থান নিয়েছে। এ অবস্থায় সরকার কীভাবে অগ্রসর হবে, তা নিয়ে আমাদের চিন্তা করতে হচ্ছে।

সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান প্রথম আলোকে বলেন, সরকার এখন প্রস্তাবগুলো বিশ্লেষণ করছে এবং দ্রুতই পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে। আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলও জানান, গণভোট একসঙ্গে হবে কি না, এ নিয়ে মতভেদ চরমে উঠেছে। তবে সরকার দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে প্রস্তুত এবং সেই সিদ্ধান্ত দৃঢ়ভাবে বাস্তবায়ন করবে।

সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে। রাজনৈতিক দলগুলোর ভিন্নমতের কারণে ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাব বাস্তবায়ন নিয়ে যে জটিলতা তৈরি হয়েছে, তা কাটাতে সরকার চূড়ান্তভাবে আলোচনায় ফিরবে কি না, না কি নির্বাহী আদেশ জারি করে সরাসরি বাস্তবায়নের পথে যাবে—সেই প্রশ্নের উত্তর এখনো অনিশ্চিত। তবে উপদেষ্টারা ইঙ্গিত দিয়েছেন, খুব শিগগিরই প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস নিজেই এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।


শেষ হলো জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ৩১ ১২:১৬:৪৮
শেষ হলো জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ
ছবি: সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশন’-এর মেয়াদ শেষ হয়েছে। এই কমিশন দেশের রাজনৈতিক সংস্কার প্রক্রিয়ায় একটি ঐতিহাসিক ভূমিকা রেখে গেলেও, আনুষ্ঠানিকভাবে এর কার্যক্রম ৩১ অক্টোবরের মধ্যেই শেষ হয়েছে। কমিশনের প্রধান কাজ ছিল ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ প্রণয়ন এবং এর বাস্তবায়ন সংক্রান্ত চূড়ান্ত সুপারিশমালা তৈরি করে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে হস্তান্তর করা।

চলতি বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি গঠিত হয় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন, যার উদ্দেশ্য ছিল—আগামী জাতীয় নির্বাচনের পূর্বে নির্বাচন ব্যবস্থা, পুলিশ, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন, সংবিধান ও দুর্নীতি দমন সংক্রান্ত বিভিন্ন সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবগুলো পর্যালোচনা করা এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের মাধ্যমে একটি সমন্বিত জাতীয় ঐকমত্য তৈরি করা। এই কমিশনের মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকার দেশের নতুন রাজনৈতিক কাঠামো ও নির্বাচনী সংস্কারের দিকনির্দেশনা পেতে সক্ষম হয়।

কমিশনের নেতৃত্বে ছিলেন নোবেলজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস, যিনি সভাপতি ও প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সহসভাপতির দায়িত্বে ছিলেন অধ্যাপক আলী রীয়াজ, যিনি সংবিধান সংস্কার কমিশনেরও প্রধান ছিলেন। কমিশনকে প্রথমে ছয় মাসের সময় দেওয়া হয়েছিল, যা ১৫ আগস্ট শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কার্যক্রমের জটিলতা ও রাজনৈতিক সংলাপের দীর্ঘসূত্রতার কারণে দুই দফায় এক মাস করে এবং শেষ দফায় আরও ১৫ দিন সময় বাড়িয়ে আজ ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানো হয়।

এই মেয়াদকালে কমিশন জুলাই ঘোষণাপত্র প্রস্তুত ও রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিক সংলাপের মাধ্যমে সংস্কারের বিষয়ে একটি ঐতিহাসিক জাতীয় ঐকমত্যে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছে। কমিশনের অন্যতম সাফল্য হলো- জুলাই জাতীয় সনদে দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর স্বাক্ষর, যা বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার ভিত্তি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

তবে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এখনো এই সনদে স্বাক্ষর করেনি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এনসিপির অবস্থান স্পষ্ট না হওয়ায় জাতীয় ঐকমত্যের পূর্ণতা অর্জিত হয়নি, যদিও সামগ্রিকভাবে কমিশন তার দায়িত্ব সফলভাবে সম্পন্ন করেছে।

-শরিফুল


সামরিক শাসন থেকে সংসদীয় ব্যবস্থা বাংলাদেশে গণভোটের অতীত জানা-অজানা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ৩১ ০৯:১৩:২৮
সামরিক শাসন থেকে সংসদীয় ব্যবস্থা বাংলাদেশে গণভোটের অতীত জানা-অজানা
ছবিঃ সংগৃহীত

বাংলাদেশে চতুর্থবারের মতো গণভোট আয়োজনের আলোচনা শুরু হয়েছে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী, এর বিষয়বস্তু হলো জুলাই জাতীয় সনদ অনুযায়ী সংবিধান ও আইনি সংস্কারের অনুমোদন। কিন্তু এই প্রক্রিয়ার আইনি ভিত্তি, ব্যালটের প্রশ্ন এবং এর আগে অনুষ্ঠিত গণভোটের অতীত অভিজ্ঞতা নিয়ে রাজনৈতিক ও জনমনে নানা প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।

সাধারণ নির্বাচনের ভোটদানে যেখানে ভোটারের সামনে থাকে প্রার্থী ও দলীয় পরিচিতি, সেখানে গণভোটের ক্ষেত্রে ভোটারকে কেবল ব্যালটে থাকা প্রশ্নের পক্ষে বা বিপক্ষে 'হ্যাঁ' অথবা 'না' মত দিতে হয়। এই প্রশ্নটি তৈরি করা হয় কতগুলো সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবের ভিত্তিতে, যার বিস্তারিত সম্পর্কে ভোটারকে অবহিত থাকতে হয়।

গত মঙ্গলবার ঐকমত্য কমিশন জুলাই সনদ বাস্তবায়ন পদ্ধতির সুপারিশসংক্রান্ত দুটি খসড়া প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দিয়েছে। কমিশন প্রস্তাব করেছে, গণভোটের ব্যালটে প্রশ্নটি হবে নিম্নরূপ:

'আপনি কি জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ, ২০২৫ এবং ইহার তপশিল-১-এ সন্নিবেশিত সংবিধান সংস্কার সম্পর্কিত খসড়া বিলের প্রস্তাবসমূহের প্রতি আপনার সম্মতি জ্ঞাপন করিতেছেন?'

এই প্রশ্নে উল্লিখিত তপশিল-১-এ মোট ৪৮টি প্রস্তাব সন্নিবেশিত আছে। এই প্রস্তাবগুলো জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের আলোচনার ভিত্তিতে চূড়ান্ত করা হয়েছে, যেখানে দলগুলোর কোনো 'নোট অব ডিসেন্ট' বা ভিন্নমত নেই। এই ৪৮টি প্রস্তাবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো— সংবিধান সংশোধন প্রক্রিয়া, জরুরি অবস্থা ঘোষণা, মৌলিক অধিকারের তালিকা সম্প্রসারণ, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচন পদ্ধতি ও ক্ষমতা, সংসদের উচ্চকক্ষের গঠন এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ইত্যাদি।

উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশে প্রধানমন্ত্রীর পদের মেয়াদ সর্বোচ্চ ১০ বছর করার বিধান রয়েছে। যদি গণভোটে এই খসড়া বিলের প্রস্তাবসমূহের প্রতি 'হ্যাঁ' ভোট বেশি পড়ে, তবে পরবর্তী সংসদ এই বিধান সংবিধানে যুক্ত করবে।

২০১১ সালের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধান থেকে গণভোটের বিধান বাতিল হলেও চলতি বছর হাইকোর্ট এক রায়ে তা পুনর্বহালের নির্দেশ দেন। তবে বিধানটি সংবিধানে যুক্ত করতে প্রয়োজন সংসদীয় প্রক্রিয়া। যেহেতু বর্তমানে সংসদ নেই, তাই অন্তর্বর্তী সরকার যাতে গণভোট আয়োজন করতে পারে, সেজন্য একটি বিশেষ আদেশ জারির সুপারিশ করেছে ঐকমত্য কমিশন।

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ-২০২৫ এর খসড়া-১ এ বলা হয়েছে, গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে প্রকাশিত জনগণের সার্বভৌম ক্ষমতা ও অভিপ্রায়ের ভিত্তিতে সরকার এই আদেশ জারি করবে। কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী, গণভোটে প্রস্তাব পাস হলে পরবর্তী সংসদটি 'সংবিধান সংস্কার পরিষদ' হিসেবে ২৭০ দিনের (৯ মাস) মধ্যে সংবিধান সংস্কারের কাজ সম্পন্ন করবে। কমিশন গণভোটের সময় নির্ধারণের দায়িত্ব সরকারের ওপর ছেড়ে দিয়েছে, তবে সুপারিশে উল্লেখ করেছে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন বা এর আগে গণভোট করা যাবে।

জুলাই জাতীয় সনদে মোট ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাব থাকলেও, ভিন্নমত থাকা প্রস্তাবগুলো কমিশনের সুপারিশে বাদ পড়ায় বিএনপি প্রতিবাদ জানাচ্ছে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ভিন্নমত থাকা প্রস্তাবগুলো বাদ দেওয়াকে 'প্রতারণা' বলে উল্লেখ করে বলেন, ভিন্নমতও লিপিবদ্ধ করার প্রতিশ্রুতি কমিশন ভঙ্গ করেছে। অন্যদিকে, কমিশনের সুপারিশকে স্বাগত জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।

বাংলাদেশে এ পর্যন্ত মোট তিনবার গণভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে।

প্রথম গণভোট (১৯৭৭): এটি ছিল তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এবং তার ১৯-দফা কর্মসূচি ও নীতির প্রতি আস্থা জ্ঞাপন সংক্রান্ত। 'হ্যাঁ'-এর পক্ষে ভোট পড়েছিল ৯৮.৯৭ শতাংশ।

দ্বিতীয় গণভোট (১৯৮৫): সামরিক শাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের অনুসৃত নীতি এবং তার প্রেসিডেন্ট পদে অধিষ্ঠিত থাকা নিয়ে এই ভোট হয়। 'হ্যাঁ'-এর পক্ষে ভোট পড়ে ৯৪.১৪ শতাংশ।

তৃতীয় গণভোট (১৯৯১): রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার ব্যবস্থা থেকে সংসদীয় ব্যবস্থায় রূপান্তর নিয়ে এই ভোট অনুষ্ঠিত হয়। 'হ্যাঁ'-এর পক্ষে ভোট পড়েছিল ৮৪.৩৮ শতাংশ।

বিশ্লেষণ অনুযায়ী, ১৯৯১ সালের গণভোটের বিষয়বস্তু সম্পর্কে মানুষের পরিষ্কার ধারণা থাকলেও প্রদত্ত ভোটের হার ছিল সবচেয়ে কম (৩৫.১৯ শতাংশ)। পক্ষান্তরে, সামরিক শাসকদের সময়ে অনুষ্ঠিত ভোটগুলোতে প্রদত্ত ভোটের হার ছিল অনেক বেশি (৭২ থেকে ৮৮ শতাংশের মধ্যে), যা জনমতের সঠিক প্রতিফলন নিয়ে প্রশ্ন তোলে।


অধ্যাপক ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুমোদন পেল নতুন মানবাধিকার কমিশন অধ্যাদেশ

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ৩০ ২১:৩৩:৪৮
অধ্যাপক ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুমোদন পেল নতুন মানবাধিকার কমিশন অধ্যাদেশ
ছবিঃ সংগৃহীত

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে (এনএইচআরসি) আরও শক্তিশালী ও কার্যকর করার লক্ষ্যে নতুন একটি অধ্যাদেশ অনুমোদন করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। নতুন এই আইনি কাঠামোর মাধ্যমে কমিশনকে সত্যিকারের ক্ষমতা ও এখতিয়ারসম্পন্ন প্রতিষ্ঠানে রূপ দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের সভায় এই অধ্যাদেশের চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।

আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, "আমাদের আগে একটি মানবাধিকার কমিশন ছিল, কিন্তু সেটি কার্যত একটি দন্তহীন প্রতিষ্ঠান ছিল। নিয়োগ পদ্ধতিতে ত্রুটি, এখতিয়ারে ঘাটতি এবং নেতৃত্বের দুর্বলতার কারণে প্রতিষ্ঠানটি কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেনি।"

তিনি জানান, নতুন অধ্যাদেশে কমিশনের কাঠামো, এখতিয়ার এবং নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বেশ কিছু মৌলিক পরিবর্তন আনা হয়েছে। এখন থেকে কমিশন একজন চেয়ারম্যান ও চারজন সার্বক্ষণিক সদস্য নিয়ে গঠিত হবে।

নতুন অধ্যাদেশে নিয়োগের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও যোগ্যতা নিশ্চিত করতে আপিল বিভাগের একজন বিচারকের নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি বাছাই কমিটি গঠনের বিধান রাখা হয়েছে। গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আবেদন আহ্বান করা হবে এবং প্রার্থীদের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে বাছাই কমিটি সুপারিশ করবে।

আইন উপদেষ্টা বলেন, "আমরা নিয়োগ পদ্ধতিটা এমনভাবে করেছি যাতে অভিজ্ঞ, যোগ্য ও মানবাধিকার রক্ষায় সক্রিয় মানুষরা কমিশনে জায়গা পান।"

নতুন অধ্যাদেশের মাধ্যমে কমিশনের এখতিয়ার বহুলাংশে বাড়ানো হয়েছে। এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো, এখন থেকে শৃঙ্খলা বাহিনীসহ রাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতায় সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলোতেও কমিশন তদন্ত করতে পারবে।

আসিফ নজরুল বলেন, "আগের কমিশনের এখতিয়ারে গুরুতর সীমাবদ্ধতা ছিল, বিশেষ করে শৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগের ক্ষেত্রে। এবার সেই সীমাবদ্ধতা দূর করা হয়েছে।"

তিনি আরও জানান, দেশের সংবিধানের মৌলিক অধিকারের পাশাপাশি বাংলাদেশ কর্তৃক অনুসমর্থিত আন্তর্জাতিক মানবাধিকার চুক্তি এবং প্রথাগত আন্তর্জাতিক আইনে স্বীকৃত মানবাধিকারগুলোকেও কমিশনের এখতিয়ারে আনা হয়েছে। এর ফলে কমিশন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদণ্ড অনুযায়ী কাজ করতে পারবে।

নতুন অধ্যাদেশে কমিশনের আদেশ প্রতিপালনকে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। আইন উপদেষ্টা বলেন, "এখন থেকে কমিশনের সুপারিশ বা নির্দেশ উপেক্ষা করা যাবে না। এর বাধ্যবাধকতা আইনি কাঠামোয় যুক্ত করা হয়েছে।"

এছাড়াও, গুম প্রতিরোধ, প্রতিকার ও ভুক্তভোগীদের সুরক্ষা আইনসহ মানবাধিকার সংরক্ষণমূলক যেকোনো আইনের বাস্তবায়নের দায়িত্ব মানবাধিকার কমিশনের ওপর ন্যস্ত করা হয়েছে। এর ফলে আলাদা করে 'গুম কমিশন' গঠনের আর প্রয়োজন হবে না বলেও তিনি উল্লেখ করেন।


আমরা কীভাবে কী করব, বুঝতে পারছি না: আসিফ নজরুল

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ৩০ ২১:২১:০৪
আমরা কীভাবে কী করব, বুঝতে পারছি না: আসিফ নজরুল
ছবিঃ সংগৃহীত

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি ও সময় নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর পরস্পরবিরোধী ও উত্তেজিত ভূমিকার কারণে সরকার গভীরভাবে চিন্তিত বলে মন্তব্য করেছেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, প্রায় ২৭০ দিন ধরে আলাপ-আলোচনার পরও প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য না আসাটা হতাশাব্যঞ্জক এবং এটি সরকারের সামনে একটি দুরূহ চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) বিকেলে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন।

আইন উপদেষ্টা বলেন, "আপনারা যদি এ রকম ভূমিকা নেন, সরকার কী করবে, আমরা ঠিক বুঝতে পারছি না। এত দিন আলোচনার পর যদি ঐকমত্য না আসে, তো আমরা আসলে কীভাবে কী করব, সত্যি আমাদের চিন্তা করতে হচ্ছে।"

ড. আসিফ নজরুল উল্লেখ করেন, জুলাই সনদের বিষয়বস্তু নিয়ে আগেও বিরোধ ছিল। বর্তমানে আরও দুই ধরনের বিরোধ তৈরি হয়েছে, যা সমস্যাকে তীব্র করেছে

১. পদ্ধতিগত বিরোধ: জুলাই সনদকে কী পদ্ধতিতে পাশ করা হবে, তা নিয়ে মতভেদ।

২. গণভোটের সময়: গণভোট কবে হবে, তা নিয়ে তীব্র মতবিরোধ।

আইন উপদেষ্টা বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পক্ষে থাকা দলগুলোই এখন পরস্পরবিরোধী ও উত্তেজিত ভূমিকা নিয়েছে। এই তীব্র বিরোধের মধ্যে কীভাবে সমঝোতার দলিল পাশ হবে, তা নিয়ে সরকার উদ্বিগ্ন।

তিনি জানান, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন এই অচলাবস্থা নিরসনে দুটি বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছে

১.প্রথমে 'জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ' জারি করা হবে, এরপর গণভোট অনুষ্ঠিত হবে, এবং গণভোটের রায় ২৭০ দিনের মধ্যে বাস্তবায়িত না হলে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংবিধান সংশোধন হয়ে যাবে। তবে, এমন নজির আদৌ আছে কি না বা এটি সম্ভব কি না, সরকার তা খতিয়ে দেখবে।

২.এই সংস্কারের দায়দায়িত্ব নব-নির্বাচিত সংসদের হাতে ছেড়ে দেওয়া।

আইন উপদেষ্টা বলেন, এই দুটি বিকল্পের মধ্যে কোনটি বেশি গ্রহণযোগ্য, তা নিয়ে দলগুলোর মধ্যে তীব্র মতবিরোধ রয়েছে। বিশেষ করে, "গণভোট কবে হবে, এটা নিয়ে বিরোধ তীব্রতম পর্যায়ে পৌঁছে গেছে বোধ হয়।"

ড. আসিফ নজরুল জানান, এই অচলাবস্থা নিরসনে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তিনি বলেন, "সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধান উপদেষ্টা। প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে আমরা থাকব, তাকে সহায়তা করার জন্য থাকব। আমরা যে সিদ্ধান্ত নেব, আমরা খুব দৃঢ় থাকব। আর সিদ্ধান্ত খুব দ্রুত নেওয়া হবে।"


বিটিআরসি'র নতুন নিয়ম ১৬ ডিসেম্বর থেকে: আপনার ফোন বৈধ কিনা, জেনে নিন প্রক্রিয়া

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ৩০ ১২:৫৫:০১
বিটিআরসি'র নতুন নিয়ম ১৬ ডিসেম্বর থেকে: আপনার ফোন বৈধ কিনা, জেনে নিন প্রক্রিয়া
ছবিঃ সংগৃহীত

অবৈধ আমদানি ও নকল (ক্লোন) আইএমইআইযুক্ত মোবাইল ফোনের ব্যবহার সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করতে যাচ্ছে সরকার। এই লক্ষ্যেই আগামী ১৬ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হতে যাচ্ছে ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) ব্যবস্থা। এই ব্যবস্থা চালু হলে কেবলমাত্র অনুমোদিত, মানসম্মত এবং বৈধভাবে আমদানি বা দেশে উৎপাদিত মোবাইল ফোনই দেশের মোবাইল নেটওয়ার্কে সংযুক্ত থাকতে পারবে। অবৈধ বা ক্লোন আইএমইআইযুক্ত কোনো ফোন নেটওয়ার্কে কাজ করবে না।

বুধবার (২৯ অক্টোবর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেওয়া হয়। এ সময় প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব জানান, এনইআইআর ব্যবস্থা চালুর মাধ্যমে একদিকে যেমন রাজস্ব সুরক্ষা হবে, তেমনি ডিজিটাল প্রতারণা ও অপরাধও কমবে।

তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের ২০২৪ সালের প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, দেশে সংঘটিত ডিজিটাল জালিয়াতির ৭৩ শতাংশই ঘটে অবৈধ ডিভাইস ও সিম ব্যবহার করে। এছাড়া, অবৈধ মোবাইল হ্যান্ডসেটের কারণে সরকার প্রতিবছর ৫০০ কোটি টাকারও বেশি রাজস্ব হারায়। নতুন এই ব্যবস্থা এই ধরনের ঝুঁকি ও রাজস্ব ক্ষতি অনেকটাই কমিয়ে আনবে।

নতুন নিয়মে ফোন বৈধতা যাচাই ও নিবন্ধন

বিটিআরসি জানিয়েছে, ১৬ ডিসেম্বর থেকে মোবাইল ফোন কেনার আগে ক্রেতাদের অবশ্যই ফোনের আইএমইআই নম্বর যাচাই করে বৈধতা নিশ্চিত করতে হবে। বৈধ ফোন ক্রয়ের পর সেটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে এনইআইআর সিস্টেমে নিবন্ধিত হয়ে যাবে।

যেভাবে বৈধতা জানবেন

মোবাইল ফোনটি বৈধ কি না, তা জানতে ক্রেতাদের ফোনের মেসেজ অপশনে গিয়ে KYD ১৫ ডিজিটের আইএমইআই নম্বর লিখে ১৬০০২ নম্বরে পাঠাতে হবে। ফিরতি বার্তার মাধ্যমে ফোনের বৈধতা নিশ্চিত হওয়া যাবে।

বিদেশ থেকে আনা ফোনের নিবন্ধন

বিদেশ থেকে ব্যক্তিগতভাবে কেনা বা উপহার হিসেবে পাওয়া মোবাইল ফোন প্রাথমিকভাবে ৩০ দিনের জন্য নেটওয়ার্কে সচল থাকবে। এই সময়ের মধ্যে এসএমএস-এর মাধ্যমে প্রয়োজনীয় তথ্য অনলাইনে দাখিল করার নির্দেশনা দেওয়া হবে। দাখিল করা তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের পরই কেবল সেসব বৈধ ফোন নেটওয়ার্কে স্থায়ীভাবে সচল থাকবে।

বিশেষ নিবন্ধনের জন্য গ্রাহককে neir.btrc.gov.bd পোর্টালে ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট রেজিস্টার করতে হবে এবং ‘Special Registration’ সেকশনে গিয়ে আইএমইআই নম্বরসহ পাসপোর্টের ভিসা/ইমিগ্রেশন, ক্রয় রশিদ (ক্রয় রসিদ) ও শুল্ক পরিশোধের প্রমাণপত্রের (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) স্ক্যান কপি আপলোড করতে হবে। যাত্রী (অপর্যটক) ব্যাগেজ বিধিমালা অনুযায়ী, একজন ব্যক্তি শুল্ক ছাড়া একটি এবং শুল্ক দিয়ে আরও একটি, অর্থাৎ মোট দুটি মোবাইল ফোন বিদেশ থেকে আনতে পারবেন।

বর্তমান ব্যবহৃত ফোনের অবস্থা যাচাই

বর্তমানে মোবাইল নেটওয়ার্কে ব্যবহৃত সব হ্যান্ডসেট আগামী ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিবন্ধিত হয়ে যাবে। এই ফোনগুলো আলাদাভাবে নিবন্ধনের প্রয়োজন নেই। ব্যবহৃত হ্যান্ডসেটের হালনাগাদ অবস্থা জানতে হ্যান্ডসেট থেকে *১৬১৬১# নম্বরে ডায়াল করে ১৫ ডিজিটের আইএমইআই নম্বর লিখে পাঠাতে হবে।

বিক্রি বা হারালে করণীয়

১৬ ডিসেম্বর থেকে গ্রাহক তার ব্যবহৃত হ্যান্ডসেট বিক্রি বা হস্তান্তর করতে চাইলে অবশ্যই ‘ডি-রেজিস্ট্রেশন’ করতে হবে। ডি-রেজিস্ট্রেশনের সময় জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) শেষের চার ডিজিট ব্যবহার করতে হবে। এছাড়া, মোবাইল ফোন চুরি হলে বা হারিয়ে গেলে সিটিজেন পোর্টাল, মোবাইল অ্যাপস বা অপারেটরের কাস্টমার কেয়ার সেন্টারের মাধ্যমে যেকোনো সময় ফোনটি লক বা আনলক করার সুযোগ থাকবে।

এনইআইআর সম্পর্কিত যেকোনো তথ্য জানতে বিটিআরসির হেল্প ডেস্ক নম্বর (১০০) অথবা মোবাইল অপারেটরের কাস্টমার কেয়ার নম্বরে (১২১) ডায়াল করা যাবে।

পাঠকের মতামত:

রাজনীতি, নির্বাসন ও নৈতিকতা: শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকার দক্ষিণ এশিয়ার বাস্তবতাকে কোথায় নিচ্ছে

রাজনীতি, নির্বাসন ও নৈতিকতা: শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকার দক্ষিণ এশিয়ার বাস্তবতাকে কোথায় নিচ্ছে

বাংলাদেশের রাজনীতিতে আবারও এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে। নির্বাসনে থাকা সাবেক প্রধানমন্ত্রী দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট পত্রিকাকে... বিস্তারিত