ঘোলা পানিতে মাছ শিকার: নির্বাচনের আগে এক রাজনৈতিক দলের সমালোচনায় রিজভী

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ২৯ ১৯:১৭:৩১
ঘোলা পানিতে মাছ শিকার: নির্বাচনের আগে এক রাজনৈতিক দলের সমালোচনায় রিজভী
ছবিঃ সংগৃহীত

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভী বলেছেন, আগামী নির্বাচনে রাজপথে ফুল বিছানো হবে না, বরং অনেক কাঁটা-কণ্টক পথ অতিক্রম করতে হবে। বুধবার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে নরসিংদীর হেরিটেজ রিসোর্টে আয়োজিত বিএনপির নতুন সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কার্যক্রম উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন।

গণঅভ্যুত্থান ও ষড়যন্ত্র

ত্যাগের রাজনীতি: রিজভী বলেন, বেগম জিয়া যে নির্বাচন নিশ্চিত করতে জেল খেটেছেন ও চিকিৎসাবঞ্চিত হয়েছেন, এবং তারেক রহমান পরিবারের ঐতিহ্যের সঙ্গে তাল মিলিয়ে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছেন, তারই ফলশ্রুতিতে ২৪-এর গণঅভ্যুত্থান হয়েছে ও শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালিয়েছেন।

ষড়যন্ত্র: তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ভিন্ন দেশে গিয়েও বসে নেই, নানামুখী ষড়যন্ত্র করেই যাচ্ছেন এবং নির্বাচন যাতে না হয়, সেজন্য নির্দেশ দিচ্ছেন।

অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সমালোচনা

রিজভী একটি রাজনৈতিক দলের কঠোর সমালোচনা করে বলেন:

“’২৪-এর আন্দোলনে অংশ নিলেও বর্তমানে একটি রাজনৈতিক দল ঘোলা পানিতে মাছ স্বীকারের চেষ্টা করে যাচ্ছেন। যদি নির্বাচনে বাধাই হোন, তাহলে পালিয়ে যাওয়া দলের সঙ্গে আপনাদের পার্থক্য কোথায়?”

অনুষ্ঠানে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও নরসিংদী জেলা বিএনপির সভাপতি খায়রুল কবির খোকন এর সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী সাইদুল আলম বাবুল সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।


রাজনীতির স্বার্থে ইসলামকে ব্যবহার করা হচ্ছে কড়া সমালোচনা সালাহউদ্দিন আহমদের

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০১ ২০:২৮:১৬
রাজনীতির স্বার্থে ইসলামকে ব্যবহার করা হচ্ছে কড়া সমালোচনা সালাহউদ্দিন আহমদের
ছবিঃ সংগৃহীত

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, তারা মওদুদী ইসলামের অনুসারী নন, বরং মদিনার ইসলামের অনুসারী। তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং সাহাবায়ে কেরামরা যে ইসলামের চর্চা করেছেন, বিএনপি সেই আদর্শে বিশ্বাসী; রাজনীতির স্বার্থে ইসলামকে বিকৃতভাবে ব্যবহার করা কখনো কাম্য নয়।

শনিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ শহরের ইসদাইরে কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে 'আজমাতে সাহাবা' শীর্ষক এক সমাবেশে তিনি এসব মন্তব্য করেন।

সালাহউদ্দিন আহমদ জামায়াতে ইসলামীর সমালোচনা করে বলেন, একটি দল রাজনৈতিক স্বার্থে ইসলামকে ব্যবহার করে জাতির মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করতে চায়; যারা বিভ্রান্তি সৃষ্টির জন্য ইসলামকে ব্যবহার করতে চায়, তাদের কাছ থেকে সবাইকে দূরে থাকতে হবে। তিনি দাবি করেন, বাংলাদেশের ৯০ থেকে ৯২ ভাগ মানুষ মদিনার ইসলামের অনুসারী; তাই আদর্শিক ও ভালো রাজনীতি করতে হবে।

তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, বাংলাদেশে সবসময়, বিশেষ করে নির্বাচনের আগে ইসলামকে রাজনীতিতে ব্যবহার করা এবং বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় ব্যবহার করে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করার বিষয়টি লক্ষ্য করা যায়; ইদানিং এই প্রবণতা আরও বেশি দেখা যাচ্ছে।

তিনি সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, বিগত ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনা সরকার ইসলামবিদ্বেষী সরকার ছিল; আওয়ামী লীগের রাজনীতি ছিল অপরাজনীতি এবং আলেম ও ইসলামবিদ্বেষী রাজনীতি। তিনি বলেন, আল্লাহর হুকুমে তারা কীভাবে বিদায় নিয়েছে, সবাই সে ইতিহাসের সাক্ষী। ভালো আদর্শের মধ্য দিয়ে যাতে ফ্যাসিবাদী ও অপরাজনীতির সংস্কৃতি বিলুপ্ত হয়, সেজন্য সবাইকে সঠিক পথে রাজনীতি করতে হবে।

সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে হেফাজতে ইসলামের আমির শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরীর উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও তিনি আসেননি। তবে সংগঠনটির মহাসচিব সাজিদুর রহমান মঞ্চে বক্তব্য রাখেন। হেফাজতে ইসলামের নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার আমির মুফতি মুনির হোসাইন কাসেমীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিএনপি, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ও হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।


যুবদল নেতার চাঁদাবাজির টাকা দিয়েই গণভোট সম্ভব: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০১ ২০:১৭:৪১
যুবদল নেতার চাঁদাবাজির টাকা দিয়েই গণভোট সম্ভব: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর
ছবিঃ সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী মন্তব্য করেছেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট আয়োজনের খরচ নিয়ে বিএনপির বক্তব্য 'অযৌক্তিক'। তিনি বলেন, "৫ আগস্টের পরে বিএনপির একজন আসনের প্রার্থী যেই টাকা চাঁদাবাজি করেছে, সেই টাকা দিয়েই একটা গণভোট আয়োজন করা যাবে।"

শনিবার (১ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর পল্টনে 'জুলাই সনদ বাস্তবায়নে তরুণ আলেমদের ভাবনা' শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি ঢাকা মহানগর যুবদল নেতা নয়নের চাঁদাবাজির উদাহরণ দিয়েও একই মন্তব্য করেন।

এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক অভিযোগ করেন, বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে একটি অভ্যন্তরীণ বোঝাপড়ার কথা তারা শুনতে পাচ্ছেন; যেখানে বিএনপি নোট অব ডিসেন্টের বিষয় থেকে সরে আসবে এবং জামায়াত নির্বাচনের আগে গণভোটের দাবি থেকে সরে আসবে।

নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, "আমরা সিনিয়র নেতাদের এত দিন জমজমের পানি দিয়ে গোসল করিয়েছি, এখন তাদের বুড়িগঙ্গার পানি দিয়ে গোসল করাব; তাহলে তাদের মাথাটা খুলবে।"

তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রয়োজন আছে বলে মনে করেন; তবে এই নির্বাচন অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনেই হবে। তিনি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, "আপনি যদি জুলাই সনদের আদেশটা জারি করতে পারেন, তাহলে আপনি জনগণের সরকার হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করতে পারবেন।" তিনি সব রাজনৈতিক দল ও জনগণকে সঙ্গে নিয়ে শহীদ মিনারে গিয়ে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারি করার জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে আহ্বান জানান।


সোনার বাংলাদেশ নয় এবার 'খেলাফতের বাংলাদেশ' দেখতে চান মাওলানা মামুনুল হক

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০১ ১৯:৩৫:৫১
সোনার বাংলাদেশ নয় এবার 'খেলাফতের বাংলাদেশ' দেখতে চান মাওলানা মামুনুল হক
ছবিঃ সংগৃহীত

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক বলেছেন, জুলাই জাতীয় সনদের আইনি ভিত্তি ছাড়া আগামী ফেব্রুয়ারির নির্বাচন দেশের জনগণ মেনে নেবে না। তাই আগামী নভেম্বরের মধ্যেই গণভোটের মাধ্যমে জুলাই সনদকে আইনি ভিত্তি দিতে হবে। তিনি আরও দাবি করেন, সবার আগে সব গণহত্যা ও গুমের বিচার সম্পন্ন করতে হবে; এরপরই কেবল ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের কথা ভাবা যেতে পারে।

শনিবার বিকালে ময়মনসিংহের ফুলপুর সরকারি ডিগ্রি কলেজ মাঠে জুলাই সনদ বাস্তবায়নসহ পাঁচ দফা দাবিতে খেলাফত মজলিস আয়োজিত এক গণসমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। ফুলপুর ও তারাকান্দা উপজেলা শাখা যৌথভাবে এই গণসমাবেশের আয়োজন করে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাওলানা মামুনুল হক বলেন, তারা নতুন বাংলাদেশ, সোনার বাংলাদেশ, এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ দেখেছেন; তবে তারা আরেকটি বাংলাদেশ দেখতে চান—সেটি হলো 'ইসলামের বাংলাদেশ' এবং 'খেলাফতের বাংলাদেশ'। তিনি বলেন, খেলাফত ব্যবস্থা হলো আল্লাহ প্রদত্ত রাজনৈতিক ব্যবস্থার নাম; ইসলাম ছাড়া পৃথিবীর কোনো ধর্মে পরিপূর্ণ রাষ্ট্র শাসনব্যবস্থা নেই।

তিনি আরও দাবি করেন, স্বৈরাচার ও তাদের দোসরদের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে।

খেলাফত মজলিস ফুলপুর শাখার সভাপতি মুফতি আজিমুদ্দিন শাহ জামালীর সভাপতিত্বে এই গণসমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন ময়মনসিংহ-২ (ফুলপুর-তারাকান্দা) আসনে খেলাফত মজলিসের মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মুফতি মুহাম্মাদুল্লাহ। এ সময় দলটির নায়েবে আমির মাওলানা ইউসুফ আশরাফ এবং যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমীনসহ কেন্দ্রীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।


নির্বাচন কমিশন কেকের মতো ভাগাভাগি হয়ে গেছে: হাসনাত

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০১ ১৯:৩১:০৯
নির্বাচন কমিশন কেকের মতো ভাগাভাগি হয়ে গেছে: হাসনাত
বরগুনায় সমন্বয় সভা শেষে গণমাধ্যমে কথা বলেন হাসনাত আবদুল্লাহ। ছবি : কালবেলা

সম্প্রতি নেওয়া নির্বাচন কমিশনের প্রতীক অন্তর্ভুক্তির সিদ্ধান্তকে 'স্বেচ্ছাচারী' বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। তিনি অভিযোগ করেছেন, নির্বাচন কমিশন কেকের মতো ভাগাভাগি হয়ে গেছে এবং সেখানে অনেকগুলো পক্ষের শক্তি জড়িত রয়েছে।

শনিবার (১ নভেম্বর) দুপুরে বরগুনা জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে এনসিপি আয়োজিত এক সমন্বয় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

নির্বাচন কমিশনের কাঠামো প্রসঙ্গে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ৫ আগস্টের পর যখন নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়, তখন বিএনপি বলেছিল—তাদের পক্ষ থেকে একজন, জামায়াতের একজন এবং সেনাবাহিনী থেকেও একজন দেওয়া হয়েছে; অর্থাৎ এটিকে কেকের মতো ভাগাভাগি করে নেওয়া হয়েছে। তার মতে, এখন নির্বাচন কমিশন তাদের সেই উদ্দেশ্যই বাস্তবায়ন করছে।

'শাপলা কলি' প্রতীক অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, নির্বাচন কমিশনের কোনো নীতিমালা নেই; কোন নীতিমালার অধীনে 'শাপলা কলি' প্রতীক অন্তর্ভুক্ত করেছে, কিংবা কোন নীতিমালায় তা অন্তর্ভুক্ত হবে না, সেটি এখনো স্পষ্ট নয়। তিনি প্রশ্ন তোলেন, কোন প্রক্রিয়ায় অন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে প্রতীক দেওয়া হয়েছে, সেটাও পরিষ্কার নয়; অর্থাৎ এই নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া পুরোপুরি স্বেচ্ছাচারী।

এনসিপির এই প্রভাবশালী নেতা গণমাধ্যমকে জানান, সংস্কার ও প্রতীক ইস্যুতে তারা সবসময়ই এক অবস্থানে ছিলেন এবং এখনো সেই অবস্থানেই আছেন।

এ সময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন এনসিপির বরিশাল বিভাগের যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাংগঠনিক সম্পাদক মুজাহিদুল ইসলাম শাহীন এবং যুগ্ম সদস্য সচিব ও শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক ফয়সাল মাহমুদ শান্তসহ কেন্দ্রীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতারা।


নির্বাচনের আগে গণভোট চায় না যারা তারা গণতন্ত্রে বিশ্বাসী নয়: জামায়াত নেতা

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০১ ১২:১৭:২৬
নির্বাচনের আগে গণভোট চায় না যারা তারা গণতন্ত্রে বিশ্বাসী নয়: জামায়াত নেতা
ছবিঃ সংগৃহীত

যারা জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোটের আয়োজন চায় না, তারা গণতন্ত্রে বিশ্বাসী নয় বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, গণভোট ও জাতীয় নির্বাচন একই দিনে অনুষ্ঠিত হলে সেই গণভোটের কোনো মূল্য থাকবে না।

শনিবার (১ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর শাহবাগে জামায়াতের আয়োজিত এক ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প উদ্বোধন শেষে তিনি সাংবাদিকদের কাছে এসব কথা বলেন।

অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, "বিগত সরকারগুলোর আমলে দেশের জনগণ পরিপূর্ণ নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে।" তিনি জানান, জামায়াত-শিবির জনকল্যাণমুখী রাজনীতির চর্চা করে এবং এই ধারা অব্যাহত রাখতে তারা জনবান্ধব নেতৃত্ব তৈরি করে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, মানুষের মতো দেশেরও 'চিকিৎসা' দরকার। দীর্ঘদিন ধরে দেশের নানা অঙ্গ প্রতিষ্ঠান রোগে শোকে ভুগছে। তিনি ঘোষণা দেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সকল ইসলামি দল ঐক্যবদ্ধ হয়ে মানুষের অধিকার আদায়ে ভোটযুদ্ধে নামবে।

গণভোটের মাধ্যমে জনগণের ভোটের সঠিক মূল্যায়নে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব বা পিআর (Proportional Representation) পদ্ধতির কোনো বিকল্প নেই বলেও দাবি করেন জামায়াতের এই শীর্ষ নেতা। তিনি বলেন, "পিআর পদ্ধতিতে ভোট হলে নির্বাচনে কালোটাকা-পেশীশক্তির দৌরাত্ম্য কমে যাবে। ভোট ডাকাতি বন্ধ করতে পিআর পদ্ধতিতেই নির্বাচন হতে হবে।"


ভারত কি পরামর্শ দেবে আওয়ামী লীগকে নিয়ে নির্বাচন করতে যা জানা গেল দিল্লিতে

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০১ ১২:০৮:৫৫
ভারত কি পরামর্শ দেবে আওয়ামী লীগকে নিয়ে নির্বাচন করতে যা জানা গেল দিল্লিতে
ছবিঃ সংগৃহীত

২০২৪ সালের ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর বাংলাদেশে আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এই পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে রাজনীতিতে আওয়ামী লীগের অবস্থান এবং নির্বাচনে তাদের অংশগ্রহণের সম্ভাবনা নিয়ে প্রতিবেশী ভারতে চলছে জোর আলোচনা। এমন পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ভারত আওয়ামী লীগকে নিয়ে নির্বাচনে আসার কোনো পরামর্শ দেবে কি না, সেই প্রশ্ন উঠেছে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংবাদ সম্মেলনেও।

গত বৃহস্পতিবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংবাদ সম্মেলনে মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়ালকে সরাসরি এই প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়। ভারতীয় সাংবাদিক ইয়েশি সেলি প্রশ্ন করেন, "বাংলাদেশ নিয়ে আমার একটা প্রশ্ন আছে। আগামী বছর তাদের নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা আছে। ভারত কি তাদেরকে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার আহ্বান জানাবে? আওয়ামী লীগকে সে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়ার প্রস্তাবও কি দেবে?"

জবাবে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল অবশ্য আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশগ্রহণ বা তাদের নিয়ে কোনো প্রস্তাব দেওয়ার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। তিনি শুধু ভারতের সাধারণ প্রত্যাশার কথাই তুলে ধরেছেন।

রণধীর জয়সওয়াল বলেন, "আমাদের প্রত্যাশা, বাংলাদেশের নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং অংশগ্রহণমূলক হবে।"

উল্লেখ্য, ৫ আগস্ট পরবর্তী পরিস্থিতিতে পতিত সরকারের অনেক নেতাই পলাতক অবস্থানে থাকায় আগামী ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশ নেওয়ার সম্ভাবনা শূন্য বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।


পাকিস্তান আমলের সঙ্গে তুলনায় দুর্নীতি এখন সমাজের অনুষঙ্গ: জামায়াত আমির

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০১ ০৯:৪৮:৪৭
পাকিস্তান আমলের সঙ্গে তুলনায় দুর্নীতি এখন সমাজের অনুষঙ্গ: জামায়াত আমির
ছবিঃ সংগৃহীত

দুর্নীতির তীব্র সমালোচনা করে জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান মন্তব্য করেছেন, দুর্নীতিকে 'গলা টিপে' ধরা না গেলে এই সমাজ কখনোই মেরুদণ্ড সোজা করে দাঁড়াতে পারবে না। তিনি বলেন, "এই সমাজ বেঁচে থাকলে একটা ক্ষণভঙ্গুর সমাজ হিসেবে বেঁচে থাকবে। এরকম সমাজ তো কোনো দেশের নাগরিক কামনা করে না।"

যুক্তরাষ্ট্র সফর শেষে দেশে ফেরার পথে শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) লন্ডনে এক দিনের যাত্রা বিরতি করেন জামায়াত আমির। এ সময় একটি হোটেলে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।

দুর্নীতির বিস্তার

বিগত বছরগুলোতে দেশে দুর্নীতির সর্বব্যাপী বিস্তৃতি নিয়ে শফিকুর রহমান পাকিস্তান আমলের সঙ্গে বর্তমান পরিস্থিতির তুলনা করেন। তিনি বলেন, "পাকিস্তান আমলে আমরা নিভুনিভু জ্ঞান বুদ্ধি ছিল। তখন কোনো জায়গায় কোনো ঘুষখোর অফিসার আসলে সারা জেলা জেনে যেত যে এই অফিসারটা ঘুষখোর। আর এখন যদি কোনো সৎ অফিসার আসে, সবাই বলে যে এই একটা মানুষ সৎ। দেখেন অবস্থাটা কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে। একেবারে পুরা রিভার্স হয়ে গেছে।"

তিনি আক্ষেপ করে বলেন, যেই সমাজে দুর্নীতি নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে যায়, সেই সমাজ মেরুদণ্ড সোজা করে দাঁড়াতে পারে না। তিনি অভিযোগ করেন, শিক্ষা খাত থেকে শুরু করে সর্বত্র দুর্নীতির ছয়লাব। তিনি বলেন, "কোনো জায়গায় নাই সুবিচার। যেখানেই যাবে মানুষ পায় অবিচার।"

পরিবর্তন ও প্রত্যাশা

জুলাই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দেশে যে বড় পরিবর্তন এসেছে, তা উল্লেখ করে শফিকুর রহমান বলেন, এই পরিবর্তন এসেছে একটাই প্রত্যাশায় যে সমাজে কোনো অনিয়ম ও বৈষম্য থাকবে না। তিনি বলেন, "সকল অনিয়ম এবং বৈষম্যের মূলে হচ্ছে দুর্নীতি।" তার মতে, দুর্নীতিবাজদের কারণে সমাজে মানুষের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়নি এবং প্রত্যেকটি মানুষ নিগৃহীত।

প্রবাসীদের হয়রানি ও ভোট

আসন্ন নির্বাচনে প্রবাসীদের ভোট দেওয়ার সুযোগ নিয়েও জামায়াত আমির হয়রানির কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বার্থ সার্টিফিকেট বা ইউটিলিটি বিলের মতো অপ্রয়োজনীয় কাগজপত্রের অজুহাতে প্রবাসীদের হয়রানি করা হচ্ছে। তিনি বলেন, "ওই সুযোগই নাই অনেকের। সেটাও দিতে হবে।" তিনি ভোট নিবন্ধনের সময় আরও ১৫ দিন বাড়ানোর জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

শফিকুর রহমান প্রবাসীদের কাছে ভোটের অধিকারকে 'ভেটো পাওয়ার' হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, এটি হাতছাড়া হলে কেউ তাদের পাওনা দিতে চাইবে না।

ন্যায়বিচার ও অন্যান্য বিষয়ে বক্তব্য

গুমের মামলায় সেনা কর্মকর্তাদের বিচার প্রসঙ্গে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে জামায়াত আমির বলেন, "আমরা এটা চাই না কারো উপর অবিচার হোক, কিন্তু অপরাধ হলে তার ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার ভিকটিমের অবশ্যই আছে।" তিনি তার দলের অন্যতম অঙ্গীকার হিসেবে সমাজে সর্বস্তরে ন্যায়বিচার কায়েমের প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

সংবিধান বা জুলাই সনদে জিয়াউর রহমান, জেনারেল ওসমানী বা আ স ম আব্দুর রবের মতো ব্যক্তিত্বদের নাম না থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, "সবাইকে তো কিছু কিছু অংশ দিতে হবে যার যেটা পাওনা।" তিনি সুযোগ পেলে কারও অবদানের উপর অবিচার করা হবে না বলে আশ্বাস দেন।

বঙ্গবন্ধুর ছবি অপসারণ নিয়ে জামায়াত নেতার নামে ছড়িয়ে পড়া ফটোকার্ডকে 'মিথ্যা' বলে তিনি উড়িয়ে দেন। জামায়াতের ইশতেহার সম্পর্কে তিনি বলেন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে ইশতেহার প্রকাশ করা হবে না এবং কোনো 'মিথ্যা আশ্বাস' তারা দেবেন না। গণভোট নিয়ে তিনি তার দলের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন, "আমাদের স্ট্যান্ড ভেরি ক্লিয়ার। গণভোট আগে হতে হবে, নইলে এটা মূল্যহীন।"

যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেশের স্বার্থে ভালো আলোচনা হয়েছে বলেও তিনি সাংবাদিকদের জানান।


একই দিনে নির্বাচন ও গণভোট? জুলাই সনদ বাস্তবায়নে কঠিন দ্বিধায় অন্তর্বর্তী সরকার

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ৩১ ১৮:৫০:৪৫
একই দিনে নির্বাচন ও গণভোট? জুলাই সনদ বাস্তবায়নে কঠিন দ্বিধায় অন্তর্বর্তী সরকার

রাজনৈতিক দলগুলোর তীব্র মতবিরোধের কারণে জুলাই জাতীয় সনদ বা সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নে বড় ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার এখন এই বাস্তবায়ন প্রক্রিয়াকে “দুরূহ চ্যালেঞ্জ” হিসেবে দেখছে। তবে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, সরকার গণভোট ও সনদ বাস্তবায়নের বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে। আলোচনায় এমন প্রস্তাবও উঠে এসেছে যে, জাতীয় নির্বাচনের দিনই গণভোট আয়োজনের বিষয়টি সরকার গভীরভাবে বিবেচনা করছে, যদিও এ বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।

গতকাল বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অনির্ধারিত আলোচনায় জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ও গণভোটের প্রসঙ্গটি বিশেষ গুরুত্ব পায়। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বৈঠকে উপস্থিত উপদেষ্টাদের মতামত চান। উপদেষ্টাদের বেশিরভাগই জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট একদিনে করার পক্ষে মত দেন, তবে প্রধান উপদেষ্টা কোনো সিদ্ধান্ত ঘোষণা না করে শুধু মতামত গ্রহণ করেন।

গত মঙ্গলবার জাতীয় ঐকমত্য কমিশন জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের প্রস্তাব জমা দেয় অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে। কমিশনের সুপারিশে বলা হয়, সনদের সংবিধানসংক্রান্ত সংস্কারগুলো বিশেষ সরকারি আদেশ (Executive Order) আকারে ঘোষণা করে তার ভিত্তিতে গণভোট আয়োজন করা উচিত। গণভোটে প্রস্তাব পাস হলে নবনির্বাচিত সংসদকে সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে কাজ করার দায়িত্ব দেওয়া হবে, যারা ২৭০ দিনের মধ্যে চূড়ান্ত সংস্কার সম্পন্ন করবে। তবে গণভোটের তারিখ নির্ধারণের দায়িত্ব সরকারের ওপরই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

সুপারিশ জমা দেওয়ার পর থেকেই রাজনৈতিক দলগুলোর অবস্থান স্পষ্টভাবে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। বিএনপি বলেছে, সংবিধান অনুযায়ী অন্তর্বর্তী সরকারের জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের এখতিয়ার নেই। দলটির মতে, জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট আয়োজন অপ্রয়োজনীয়, অযৌক্তিক ও অবিবেচনাপ্রসূত। অপরদিকে জামায়াতে ইসলামীসহ আটটি দল নভেম্বরের মধ্যে গণভোটসহ পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলনে রয়েছে। এনসিপি জানিয়েছে, তারা জুলাই সনদে স্বাক্ষর দেবে কি না, তা নির্ভর করবে অন্তর্বর্তী সরকারের পরবর্তী পদক্ষেপের ওপর। ফলে সংস্কার বাস্তবায়নের প্রশ্নে রাজনৈতিক অনৈক্য নতুন মাত্রা পেয়েছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, “২৭০ দিন ধরে আলোচনার পরও আমরা এখনো প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য দেখতে পাচ্ছি না, বরং অনৈক্য আরও গভীর হয়েছে। এটি আমাদের জন্য একটি কঠিন চ্যালেঞ্জ।” তাঁর ভাষায়, এখন বিরোধ দুইভাবে দেখা দিচ্ছে—প্রথমত, সংস্কার প্রস্তাব কীভাবে পাস করা হবে এবং দ্বিতীয়ত, গণভোট কখন অনুষ্ঠিত হবে। তিনি বলেন, “এখন যারা জুলাই অভ্যুত্থানের পক্ষে ছিল, তারাও একে অপরের বিরুদ্ধে উত্তেজিত অবস্থান নিয়েছে। এ অবস্থায় সরকার কীভাবে অগ্রসর হবে, তা নিয়ে আমাদের চিন্তা করতে হচ্ছে।

সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান প্রথম আলোকে বলেন, সরকার এখন প্রস্তাবগুলো বিশ্লেষণ করছে এবং দ্রুতই পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে। আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলও জানান, গণভোট একসঙ্গে হবে কি না, এ নিয়ে মতভেদ চরমে উঠেছে। তবে সরকার দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে প্রস্তুত এবং সেই সিদ্ধান্ত দৃঢ়ভাবে বাস্তবায়ন করবে।

সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে। রাজনৈতিক দলগুলোর ভিন্নমতের কারণে ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাব বাস্তবায়ন নিয়ে যে জটিলতা তৈরি হয়েছে, তা কাটাতে সরকার চূড়ান্তভাবে আলোচনায় ফিরবে কি না, না কি নির্বাহী আদেশ জারি করে সরাসরি বাস্তবায়নের পথে যাবে—সেই প্রশ্নের উত্তর এখনো অনিশ্চিত। তবে উপদেষ্টারা ইঙ্গিত দিয়েছেন, খুব শিগগিরই প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস নিজেই এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।


ফখরুলের অভিযোগ: অন্তর্বর্তী সরকার আস্থার সেতু ভেঙে দিয়েছে

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ৩১ ১৬:১০:১৮
ফখরুলের অভিযোগ: অন্তর্বর্তী সরকার আস্থার সেতু ভেঙে দিয়েছে

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশের বর্তমান রাজনৈতিক সংকটের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারই দায়ী, কারণ তারা জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। তিনি অভিযোগ করেন, ঐকমত্যের নথি তৈরির সময় সব রাজনৈতিক দল একসঙ্গে কাজ করলেও চূড়ান্তভাবে সেটি উপস্থাপনের পর দেখা যায়, মূল বিষয়গুলো বিকৃত করা হয়েছে এবং বিএনপির দেওয়া “নোট অব ডিসেন্ট” বা ভিন্নমতগুলো উপেক্ষা করা হয়েছে। শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) ৫৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

ফখরুল স্মরণ করেন, “যেদিন ঐকমত্যের নথি জমা দেওয়া হয়েছিল, সেদিন বৃষ্টি হচ্ছিল। সব দল ছাতা হাতে বৃষ্টির মধ্যে দাঁড়িয়ে স্বাক্ষর করেছিলাম। দীর্ঘ আলোচনার পর আমরা ঐকমত্যে পৌঁছেছিলাম, কিছু বিষয়ে মতভেদ ছিল, সেগুলো আমরা লিখিতভাবে জমা দিয়েছিলাম। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে সেটি উপস্থাপন করার পর দেখা গেল, সেখানে অনেক পরিবর্তন আনা হয়েছে, যা ছিল একেবারেই অপ্রত্যাশিত।” তিনি বলেন, “এটা শুধু রাজনৈতিক দলের সঙ্গে নয়, জনগণের সঙ্গেও বিশ্বাসঘাতকতা। আমরা যেই আস্থা রেখেছিলাম, তারা সেই আস্থা ভেঙে দিয়েছে। এটি জনগণের সঙ্গে এক ধরনের প্রতারণা—একটি ‘ব্রিচ অব ট্রাস্ট’। তাই আজকের রাজনৈতিক অচলাবস্থার দায় সম্পূর্ণভাবে অন্তর্বর্তী সরকারের।”

বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত কমিশন প্রায় এক বছর ধরে সংস্কার ও অন্যান্য বিষয়ে আলোচনা করেছে। আমরা বেশির ভাগ বিষয়ে একমত হয়েছি, কেবল কিছু বিষয়ে মতভেদ থাকায় আমরা ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দিয়েছিলাম। অথচ চূড়ান্ত নথিতে সেই ভিন্নমতগুলো অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।” তিনি দাবি করেন, বিএনপি নির্বাচনে গেলে এসব সংস্কার প্রস্তাব তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে থাকবে, জনগণ যদি সমর্থন দেয়, তবে সংসদে তা পাস করে দেশের কাঠামোগত পরিবর্তন আনা হবে।

বিশ্লেষকদের মতে, ফখরুলের এই বক্তব্য মূলত অন্তর্বর্তী সরকারের জবাবদিহি, নীতিগত স্বচ্ছতা এবং রাজনৈতিক ঐকমত্যের সংস্কৃতি পুনর্বিবেচনার আহ্বান। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ধারণা, দীর্ঘ আলোচনার পর প্রস্তুত নথিতে পরিবর্তন বা বাদ পড়া বিষয়গুলো প্রকাশ্যে না আনা হলে আস্থার সংকট আরও গভীর হবে। এখন অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য প্রয়োজন, সব পক্ষের উপস্থিতিতে নথির প্রকাশ্য যাচাই, ‘নোট অব ডিসেন্ট’ আলাদা সংযোজন হিসেবে প্রকাশ এবং ভবিষ্যৎ সংস্কারের জন্য নিরপেক্ষ মধ্যস্থতার উদ্যোগ।

পাঠকের মতামত:

রাজনীতি, নির্বাসন ও নৈতিকতা: শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকার দক্ষিণ এশিয়ার বাস্তবতাকে কোথায় নিচ্ছে

রাজনীতি, নির্বাসন ও নৈতিকতা: শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকার দক্ষিণ এশিয়ার বাস্তবতাকে কোথায় নিচ্ছে

বাংলাদেশের রাজনীতিতে আবারও এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে। নির্বাসনে থাকা সাবেক প্রধানমন্ত্রী দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট পত্রিকাকে... বিস্তারিত