ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচন ঘিরে যমুনায় উচ্চপর্যায়ের বৈঠক

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ২৯ ১৫:৫৮:২৯
ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচন ঘিরে যমুনায় উচ্চপর্যায়ের বৈঠক
ছবি : সংগৃহীত

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে দেশের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক অঙ্গনে নির্বাচনি প্রস্তুতি এখন কেন্দ্রবিন্দুতে। সেই প্রস্তুতির অংশ হিসেবে বুধবার (২৯ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত হয়েছে এক গুরুত্বপূর্ণ উচ্চপর্যায়ের বৈঠক। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সভায় উপস্থিত ছিলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টাগণ, নির্বাচন কমিশনের প্রতিনিধি, সেনাবাহিনী, পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তা এবং পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবরা। বৈঠকটি ছিল মূলত আসন্ন নির্বাচনের সামগ্রিক প্রস্তুতি ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করার ওপর কেন্দ্রিত।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, বৈঠকে জাতীয় নির্বাচনের স্বচ্ছতা, অবাধতা ও অংশগ্রহণমূলক চরিত্র বজায় রাখতে করণীয় বিষয়গুলো বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়। বৈঠকে প্রশাসনের কার্যকর সমন্বয়, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখা, রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করা এবং ভোটারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সূত্রমতে, সভায় নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে প্রশাসনের ধারাবাহিক সমন্বয়ের ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়। মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের নিরপেক্ষতা বজায় রাখার পাশাপাশি ভোটকেন্দ্রভিত্তিক নিরাপত্তা পরিকল্পনা প্রণয়নের দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়। বিশেষ করে নির্বাচনের সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কার্যক্রমে রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা ও জনবিশ্বাস বজায় রাখার বিষয়টি বৈঠকের আলোচনায় প্রধান স্থান দখল করে।

বৈঠকে সাইবার ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর তথ্য, গুজব বা প্রভাব বিস্তারমূলক প্রচারণা নিয়ন্ত্রণে একটি সমন্বিত কাঠামো তৈরির প্রস্তাব করা হয়। একই সঙ্গে, বিদেশি পর্যবেক্ষক দলগুলোর আগমন, নিরাপত্তা, এবং তাদের কার্যক্রমে সহযোগিতা প্রদানের জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এছাড়া, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বজায় রেখে নির্বাচনি সংবাদ কাভারেজে দায়িত্বশীলতা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করার বিষয়েও আলোচনা হয়।

সভায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “জাতীয় নির্বাচন শুধু রাজনৈতিক প্রক্রিয়া নয়, এটি জনগণের আস্থার প্রতিফলন। তাই নির্বাচনের প্রতিটি ধাপ হতে হবে স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক এবং সর্বজনগ্রাহ্য।” তিনি আরও বলেন, “তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মূল দায়িত্ব হলো এমন একটি পরিবেশ তৈরি করা যেখানে প্রতিটি ভোটার নির্ভয়ে ভোট দিতে পারেন, প্রতিটি প্রার্থী সমান সুযোগ পান এবং ফলাফল নিয়ে জনগণের মধ্যে আস্থা বজায় থাকে।”

বৈঠকে অংশগ্রহণকারী উপদেষ্টারা একমত হন যে, নির্বাচন যেন কোনোভাবেই সহিংসতা, প্রশাসনিক পক্ষপাত বা বিদেশি প্রভাবের শিকার না হয়। তারা বলেন, নির্বাচন কমিশনের নেতৃত্বে প্রশাসনের প্রতিটি স্তরে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে, যাতে জনগণ মনে করে এটি সত্যিকার অর্থে ‘তাদের নির্বাচন’।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, বৈঠকের পর বিকেল ৪টায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে একটি বিস্তারিত প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হবে। সেখানে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় নির্বাচনি প্রস্তুতির অগ্রগতি, প্রশাসনিক পরিকল্পনা এবং আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থার আপডেট তথ্য সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরবে।

সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে রয়েছে ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা রোডম্যাপ চূড়ান্ত করা, নির্বাচনি সামগ্রী পরিবহনের সময় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা, রাজনৈতিক সহনশীলতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আন্তদলীয় বৈঠক আয়োজন করা এবং ভোটার শিক্ষার ওপর গণসচেতনতা কার্যক্রম বাড়ানো।

সভা শেষে কর্মকর্তারা জানান, নির্বাচনকে ঘিরে সরকারের অগ্রাধিকার হচ্ছে আস্থা ও অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা। এরই অংশ হিসেবে আগামী সপ্তাহে মাঠ প্রশাসনের সঙ্গে একাধিক সমন্বয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে জেলা পর্যায়ে নির্বাচনি প্রস্তুতি পর্যালোচনা করা হবে।

-রফিক


হঠাৎ যমুনায় তিন বাহিনী প্রধানের আগমন নির্বাচনের নিরাপত্তা নিয়ে যা জানা গেল

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০১ ২১:৩২:৪৪
হঠাৎ যমুনায় তিন বাহিনী প্রধানের আগমন নির্বাচনের নিরাপত্তা নিয়ে যা জানা গেল
ছবিঃ সংগৃহীত

আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিতব্য ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যেন নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বজায় রেখে শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়; সে বিষয়ে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী এবং বিমানবাহিনী প্রধানকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, শান্তিপূর্ণ এবং উৎসবমুখর করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

শনিবার (১ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৭টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধান—সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ নাজমুল হাসান, এবং বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন সাক্ষাৎ করেন। এসময় জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে তিন বাহিনীর প্রধান প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন যে; নির্বাচনের জন্য সামরিক বাহিনী সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। নির্বাচন ঘিরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় প্রায় ৯০ হাজার সেনাসদস্য, আড়াই হাজার নৌবাহিনীর সদস্য এবং কিছু বিমানবাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী; প্রতিটি উপজেলায় এক কোম্পানি সেনা মোতায়েন থাকবে বলে জানা গেছে।

ড. ইউনূস গত ১৫ মাসে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কঠোর পরিশ্রমের জন্য সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের সাধুবাদ জানান; পাশাপাশি আসন্ন নির্বাচন যেন নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা থাকে, সেজন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন।

বৈঠকে তিন বাহিনীর প্রধান আগামী ২১ নভেম্বর সশস্ত্র বাহিনী দিবসের আয়োজনে প্রধান উপদেষ্টাকে আমন্ত্রণ জানান।


ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে সরকার বদ্ধপরিকর: ইসি আনোয়ারুল

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০১ ১৪:৫৫:১৩
ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে সরকার বদ্ধপরিকর: ইসি আনোয়ারুল
ছবিঃ সংগৃহীত

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে আয়োজন করতে সরকার সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার। তিনি নিশ্চিত করেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং সুষ্ঠু নির্বাচন করতে সরকার বদ্ধপরিকর।

শনিবার সকালে পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় 'নির্বাচন প্রক্রিয়ায় ভোটগ্রহণকারী কর্মকর্তাদের দায়িত্ব পালনে চ্যালেঞ্জসমূহ নিরূপণ ও উত্তরণের উপায়' শীর্ষক দিনব্যাপী এক কর্মশালার উদ্বোধনকালে তিনি এই মন্তব্য করেন।

ইসি কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, "আমাদের ওপর দেশের ভালো-মন্দ নির্ভর করে।" তিনি আরও বলেন, প্রতিটি কেন্দ্রে প্রিজাইডিং অফিসারের নেতৃত্বে যদি দায়িত্বশীলভাবে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন করা যায়, তবে কোনো জেলাতেই অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে কোনো বাধা থাকবে না।

সামাজিক মাধ্যমে ছড়ানো বিভিন্ন ধরনের প্রোপাগান্ডা নিয়ে চিন্তিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, "সরকার ও নির্বাচন কমিশন যে সিদ্ধান্ত নেবে, সেই অনুযায়ীই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।" তিনি জানান, সরকার ও নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

বরিশাল অঞ্চলের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ফরিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ, পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ শহীদ হোসেন চৌধুরী এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অপু সরোয়ার। পটুয়াখালী জেলার আট উপজেলার নির্বাচন কর্মকর্তা ও সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের প্রায় ৬০ জন কর্মকর্তা এই কর্মশালায় অংশ নেন।


ধাপে ধাপে জানুন বিদেশ থেকে আনা হ্যান্ডসেট নিবন্ধনের প্রক্রিয়া

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০১ ১৪:৩৫:১০
ধাপে ধাপে জানুন বিদেশ থেকে আনা হ্যান্ডসেট নিবন্ধনের প্রক্রিয়া
ছবিঃ সংগৃহীত

আগামী ১৬ ডিসেম্বর থেকে দেশে ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) ব্যবস্থা চালু হচ্ছে। এর ফলে দেশের নেটওয়ার্কে অনিবন্ধিত বা অননুমোদিত মোবাইল ফোনের সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হবে। নতুন এই ব্যবস্থায় প্রতিটি বৈধ আন্তর্জাতিক আইএমইআই নম্বর ব্যবহারকারীর জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ও ব্যবহৃত সিমের সঙ্গে যুক্ত করে নিবন্ধিত হবে, যা অবৈধ ফোন শনাক্ত করতে সাহায্য করবে।

দেশের বাজারে কেনা ফোনের নিবন্ধন প্রক্রিয়া নিয়ে সংশয় না থাকলেও, অনেকের মনে প্রশ্ন—বিদেশ থেকে আনা বা উপহার হিসেবে পাওয়া হ্যান্ডসেটগুলো কি ব্যবহার করা যাবে? নাকি তা নেটওয়ার্কে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে?

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) জানিয়েছে, বিদেশ থেকে ব্যক্তি পর্যায়ে বৈধভাবে কেনা বা উপহার হিসেবে পাওয়া হ্যান্ডসেটগুলো প্রাথমিকভাবে দেশের নেটওয়ার্কে সচল থাকবে। তবে এসএমএসের মাধ্যমে গ্রাহককে পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে অনলাইনে প্রয়োজনীয় তথ্য দাখিলের নির্দেশনা দেওয়া হবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তথ্য যাচাই-বাছাই শেষে কেবল বৈধ হ্যান্ডসেটগুলোকেই নিবন্ধন করে নেটওয়ার্কে স্থায়ীভাবে সচল রাখা হবে। নিবন্ধন ছাড়া কোনো বিদেশি ফোন দীর্ঘমেয়াদে বাংলাদেশের মোবাইল নেটওয়ার্কে চালু রাখা যাবে না।

বিদ্যমান ব্যাগেজ নিয়ম অনুযায়ী, একজন ব্যক্তি দেশের নেটওয়ার্কে আগে ব্যবহৃত একটি ব্যক্তিগত হ্যান্ডসেটের পাশাপাশি বিদেশ থেকে সর্বোচ্চ একটি হ্যান্ডসেট বিনা শুল্কে আনতে পারবেন। অতিরিক্ত আরও একটি হ্যান্ডসেট শুল্ক দিয়ে আনার সুযোগ রয়েছে।

বিদেশ থেকে ক্রয়কৃত বা উপহারপ্রাপ্ত মোবাইল হ্যান্ডসেট নিবন্ধনের জন্য গ্রাহককে নিম্নোক্ত ধাপগুলো অনুসরণ করতে হবে বলে বিটিআরসি জানিয়েছে:

১. অ্যাকাউন্ট রেজিস্টার: প্রথমে neir.btrc.gov.bd পোর্টালে প্রবেশ করে ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট রেজিস্টার করতে হবে।

২. স্পেশাল রেজিস্ট্রেশন: পোর্টালে 'Special Registration' সেকশনে গিয়ে মোবাইলের আইএমইআই নম্বর দিতে হবে।

৩. ডকুমেন্ট আপলোড: প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের স্ক্যান কপি বা ছবি—যেমন পাসপোর্টের ভিসা বা ইমিগ্রেশন পৃষ্ঠা, ক্রয়ের রসিদ ইত্যাদি—আপলোড করে 'Submit' করতে হবে।

হ্যান্ডসেট বৈধ হলে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিবন্ধিত হয়ে যাবে। অবৈধ হলে এসএমএসের মাধ্যমে গ্রাহককে জানিয়ে সেই ফোনটি নেটওয়ার্ক থেকে বিচ্ছিন্ন করা হবে।

বিদেশ থেকে কেনা মোবাইল হ্যান্ডসেট নিবন্ধনের জন্য লাগবে

পাসপোর্টের ব্যক্তিগত তথ্যযুক্ত পাতার ছবি।

পাসপোর্টে ইমিগ্রেশন সিল থাকা পাতার ছবি।

ক্রয় রসিদ।

প্রয়োজনে কাস্টমস শুল্ক প্রদানের প্রমাণপত্র (যদি একটির বেশি হ্যান্ডসেট হয়)।

উপহার হিসেবে পাওয়া হ্যান্ডসেটের ক্ষেত্রে ওপরের কাগজপত্রের সঙ্গে অতিরিক্তভাবে দিতে হবে 'উপহারদাতার প্রত্যয়নপত্র'। অন্যদিকে, এয়ারমেইলে পাওয়া হ্যান্ডসেটের জন্য প্রেরক ও প্রাপকের জাতীয় পরিচয়পত্রের স্ক্যান কপিসহ ক্রয় রসিদ ও শুল্ক প্রদানের রসিদ (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) প্রয়োজন হবে।


বিচার বিলম্বিত করার নতুন কৌশল নভেম্বরের মধ্যে শেখ হাসিনার মামলার রায় অনিশ্চিত

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০১ ১৪:০৫:৪৯
বিচার বিলম্বিত করার নতুন কৌশল নভেম্বরের মধ্যে শেখ হাসিনার মামলার রায় অনিশ্চিত
ছবিঃ সংগৃহীত

শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা এবং ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়সহ শেখ পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে রাজউকের প্লট দুর্নীতির ছয়টি মামলার বিচার নভেম্বরের মধ্যে শেষ হওয়ার যে ধারণা ছিল, তা বিলম্বিত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এতদিন এই মামলাগুলোর দ্রুত নিষ্পত্তি এবং রায় হওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা চলছিল।

সংশ্লিষ্টদের ধারণা ছিল অক্টোবরের শেষ নাগাদ বা নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে মামলার রায় আসতে পারে। কিন্তু সাক্ষ্যগ্রহণের প্রায় শেষ পর্যায়ে এসে হঠাৎ করেই পলাতক এক আসামির আত্মসমর্পণের ঘটনায় এই বিচার প্রক্রিয়া পিছিয়ে যাওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

পলাতক আসামির আত্মসমর্পণ

গত বুধবার (২৯ অক্টোবর) হঠাৎ করেই মামলার চার্জশিটভুক্ত পলাতক এক আসামি, রাজউকের সাবেক সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। তার আত্মসমর্পণের পর জামিন আবেদন নাকচ করে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

দুদক চেয়ারম্যান ড. আব্দুল মোমেন গত ২৪ সেপ্টেম্বর আশা প্রকাশ করেছিলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির ছয়টি মামলার রায় অক্টোবর বা নভেম্বরের মাঝামাঝি আসবে। প্রসিকিউশন বিভাগ এতদিন পলাতক আসামিদের অনুপস্থিতিতেই বিচার শুনানি প্রায় শেষ পর্যায়ে নিয়ে এসেছিল।

তবে প্রসিকিউশন বিভাগ এখন আশঙ্কা করছে, এই আসামির আত্মসমর্পণের সূত্র ধরে মামলার বিচার শুনানি ত্বরান্বিত করার প্রক্রিয়া পেছানোর সম্ভাবনা রয়েছে।

বিচার বিলম্বিত করার কৌশল?

আদালত-সংশ্লিষ্ট সূত্র এবং প্রসিকিউশন বিভাগ ধারণা করছে, এই আসামির আত্মসমর্পণ একটি সুচিন্তিত কৌশল হতে পারে। বিচার বিলম্বিত করার জন্য পলাতক আসামিরা হয়তো এক এক করে আত্মসমর্পণ করে সাক্ষী 'রিকল' (পুনরায় তলব) করার কৌশল অবলম্বন করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে মামলার বিচার শেষ হতে কত সময় লাগবে, তা বলা কঠিন।

দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর দেলোয়ার জাহান রুমি যুগান্তরকে বলেছেন, আসামি মোহাম্মদ খুরশীদ আলমের আইনগত অধিকার রয়েছে সাক্ষী রিকল করার। তিনি বলেন, "আসামি আত্মসমর্পণ করে যদি সাক্ষী রিকল করে, এটা তার আইনগত অধিকার। তার আইনগত অধিকারে তো আদালত অথবা দুদকের বাধা দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।" তিনি স্বীকার করেন, এই কারণে বিচার সামান্য বিলম্বিত হতে পারে, কিন্তু বিচারকার্য সম্পন্ন হবেই।

ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪০ ধারা অনুযায়ী, আদালত ন্যায়ের স্বার্থে যে কোনো পর্যায়ে সাক্ষীকে পুনরায় হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিতে পারেন। এই আইনি বিধানটি আসামিদের বিচার বিলম্বিত করার কৌশলকে আরও সহজ করে দিতে পারে বলে আইনসংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।

মামলার সংক্ষিপ্ত পটভূমি

গত ৩১ জুলাই ঢাকার দুটি বিশেষ জজ আদালত পৃথক ছয় মামলায় শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা পরিবারের সাত সদস্যসহ মোট ২৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। এর মধ্যে ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুনের আদালতে তিন মামলায় শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। অপরদিকে ঢাকার চতুর্থ বিশেষ জজ রবিউল আলমের আদালতে শেখ রেহানা, তার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি, মেয়ে টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক ও আজমিনা সিদ্দিকদের বিরুদ্ধে আরও তিন মামলার বিচার শুনানি শুরু হয়।

এই মামলাগুলো শুরু হয়েছিল গত বছর দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)-এর অনুসন্ধানের পর। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে দুদক এই অনুসন্ধান শুরু করে।


আপনার এনআইডিতে কয়টি সিম নিবন্ধিত জেনে নিন এখনই বন্ধ হতে পারে অতিরিক্ত সিম

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০১ ১০:৪৬:২৪
আপনার এনআইডিতে কয়টি সিম নিবন্ধিত জেনে নিন এখনই বন্ধ হতে পারে অতিরিক্ত সিম
ছবিঃ সংগৃহীত

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আজ শনিবার (০১ নভেম্বর) থেকে একটি জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) বিপরীতে ১০টির বেশি সক্রিয় সিম রাখা যাবে না। সংশ্লিষ্ট মোবাইল অপারেটরগুলো আজ থেকেই এই অতিরিক্ত সিমগুলো নিষ্ক্রিয় করার প্রক্রিয়া শুরু করবে।

বিটিআরসি সম্প্রতি এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) সময়সীমা শেষ হওয়ার পর থেকেই অতিরিক্ত সিমগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ করা হবে। এর আগে একজন নাগরিক এনআইডির বিপরীতে সর্বোচ্চ ১৫টি সিম ব্যবহার করতে পারতেন।

বিটিআরসি চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) এমদাদ উল বারী নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, আজ শনিবার থেকেই অপারেটররা অতিরিক্ত সিম নিষ্ক্রিয় করবে এবং ডিসেম্বরের মধ্যে নিশ্চিত করা হবে যে কোনো এনআইডির নামে ১০টির বেশি সিম সক্রিয় থাকবে না।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও নিরাপত্তা উদ্বেগ

সম্প্রতি দেশের বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিবেচনায় ব্যক্তিগত সিম নিবন্ধনের সর্বোচ্চ সংখ্যা আরও কমানোর বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বিশেষ আইনশৃঙ্খলা সভায় সিদ্ধান্ত হয়।

বিটিআরসির সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা জানান, ওই সিদ্ধান্ত এবং দেশের বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিবেচনায় আগামী ১ জানুয়ারি থেকে নতুন সিম রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৫টিতে সীমাবদ্ধ রাখার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত অনুমোদনের জন্য ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগে পাঠানো হবে এবং অনুমোদন পেলে ২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকে নতুন সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হবে।

এর আগে গত ২৬ অক্টোবর স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) জানিয়েছিলেন, নির্বাচনের আগে ব্যক্তিগত পর্যায়ে সিম ব্যবহারের সংখ্যা কমিয়ে পাঁচ থেকে সাতটি করা হবে। তবে সরকারের লক্ষ্য রয়েছে ব্যক্তি পর্যায়ের সিম ব্যবহার আরও কমিয়ে দুটিতে নামিয়ে আনা।

নিবন্ধিত সিম যাচাইয়ের প্রক্রিয়া

একটি এনআইডির বিপরীতে কতগুলো সিম নিবন্ধিত আছে, তা জানতে যেকোনো মোবাইল অপারেটর থেকে *১৬০০১# লিখে ডায়াল করতে হবে। ফিরতি মেসেজে জাতীয় পরিচয়পত্রের শেষ চারটি সংখ্যা চাওয়া হবে। সেই সংখ্যা পাঠানোর পর এসএমএসের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে যে ওই এনআইডিতে মোট কয়টি সিম নিবন্ধিত আছে এবং কোন কোন অপারেটরের সিম রয়েছে।


আত্মনির্ভরশীল বাংলাদেশ গড়ার পথ দেখালেন ড. ইউনূস 

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০১ ০৯:৫৯:৫৮
আত্মনির্ভরশীল বাংলাদেশ গড়ার পথ দেখালেন ড. ইউনূস 
ছবিঃ সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, সমবায়ভিত্তিক অর্থনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে একটি আত্মনির্ভরশীল বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব। আজ '৫৪তম জাতীয় সমবায় দিবস' উপলক্ষে গতকাল দেওয়া এক বাণীতে তিনি এই মন্তব্য করেন।

ড. ইউনূস বলেন, "বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার সমবায় খাতকে আধুনিক ও গতিশীল করতে নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।" তিনি বিশ্বাস করেন, কৃষি, মৎস্য, পশুপালন, সঞ্চয় ও ঋণদান এবং কুটিরশিল্পের মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে সমবায়ভিত্তিক অর্থনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে একটি আত্মনির্ভরশীল বাংলাদেশ গঠন করা যেতে পারে।

প্রধান উপদেষ্টা '৫৪তম জাতীয় সমবায় দিবস, ২০২৫' উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, "'সাম্য ও সমতায়, দেশ গড়বে সমবায়'—এ প্রতিপাদ্য সামনে রেখে প্রতি বছরের মতো এবারও ১ নভেম্বর যথাযোগ্য মর্যাদায় দেশব্যাপী এই দিবসটি উদ্যাপিত হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত।"

ড. মুহাম্মদ ইউনূস মনে করেন, দেশ ও জনগণের উন্নয়নে গৃহীত যেকোনো কার্যক্রম সফলভাবে বাস্তবায়নের জন্য সামাজিক সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করা অপরিহার্য। তিনি বলেন, সমবায়ের অমিত সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে এই কাজ অনায়াসে সম্পন্ন করা যায়।

তিনি উল্লেখ করেন, সমবায় সমিতিগুলো কেবল আর্থিক প্রতিষ্ঠান নয়, বরং সমাজের নানাবিধ সমস্যা দূর করতে বহুমুখী কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। তিনি বলেন, "দেশের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জীবনমান উন্নয়ন, দক্ষ জনশক্তি তৈরি ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে সমবায় আন্দোলনের বিকল্প নেই।"

প্রধান উপদেষ্টা তার বাণীতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, ন্যায়ভিত্তিক ও টেকসই সমাজ প্রতিষ্ঠার পথে এগিয়ে যেতে চায়। এই লক্ষ্য বাস্তবায়নের মাধ্যমে একটি বৈষম্যমুক্ত নতুন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় সমবায়ের ভূমিকা অপরিসীম।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস '৫৪তম জাতীয় সমবায় দিবস, ২০২৫' উপলক্ষে গৃহীত সব কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।


জুলাই সনদ বাস্তবায়নে অচলাবস্থা নিরসনে সরকারের বড় উদ্যোগ আলোচনায় দুই প্রধান দল

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০১ ০৯:২৬:২১
জুলাই সনদ বাস্তবায়নে অচলাবস্থা নিরসনে সরকারের বড় উদ্যোগ আলোচনায় দুই প্রধান দল
ছবিঃ সংগৃহীত

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন পদ্ধতি এবং গণভোটের সময় নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে তৈরি হওয়া তীব্র মতবিরোধ নিরসনে উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। ইতোমধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ এবং জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহেরের সঙ্গে দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টারা অনানুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু করেছেন। রাজনৈতিক সমঝোতা হলেই জুলাই সনদ বাস্তবায়ন-সংক্রান্ত আদেশ জারি করা হতে পারে।

গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে মন্ত্রীপাড়ায় দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টারা নিজেদের মধ্যে বৈঠক করে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। এর আগে গত বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরুর সিদ্ধান্ত হয় এবং কয়েকজন উপদেষ্টাকে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়।

সমঝোতার বার্তা ও দরকষাকষি

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন পদ্ধতি এবং গণভোটের সময় নিয়ে সৃষ্ট রাজনৈতিক বিতর্ক নিরসনে দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টারা কয়েকটি বিষয়ে দলগুলোর কাছে ছাড়ের অনুরোধ জানিয়েছেন:

বিএনপির প্রতি অনুরোধ: ১৫টি সংস্কার প্রস্তাবে ভিন্নমত (নোট অব ডিসেন্ট) দিলেও, দলটিকে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষ গঠন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের গঠন পদ্ধতিতে আপত্তি তুলে নিতে অনুরোধ করা হয়েছে।

জামায়াতের প্রতি অনুরোধ: দলটিকে নির্বাচনের আগে গণভোটের দাবি এবং নিম্নকক্ষে পিআর (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতির দাবি প্রকাশ্যে ত্যাগ করতে অনুরোধ করা হয়েছে।

একাধিক উপদেষ্টার ভাষ্যমতে, বিএনপি উচ্চকক্ষে পিআরের বিষয়টি পর্যালোচনা করার ইঙ্গিত দিয়েছে। তবে তারা চায় জামায়াত আগে প্রকাশ্যে গণভোট ও নিম্নকক্ষে পিআরের দাবি প্রত্যাহার করুক। জামায়াত জানিয়েছে, বিএনপি যদি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের গঠন এবং আসন্ন সংসদ নির্বাচনে পিআর পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষ গঠন মেনে নেয়, তবে তারা সমঝোতায় রাজি আছে।

তারেক রহমানের সঙ্গে আলোচনার পরামর্শ

রাজনৈতিক অচলাবস্থা নিরসনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টাকে অনানুষ্ঠানিকভাবে আলোচনা করার পরামর্শ দিয়েছেন একজন উপদেষ্টা। তারা মনে করছেন, উচ্চকক্ষে পিআরের সুরাহা করতে প্রধান উপদেষ্টার সরাসরি হস্তক্ষেপ প্রয়োজন, কারণ দলের পক্ষ থেকে এর আগে অবস্থান পরিবর্তনের সুযোগ নেই বলে সরকারকে জানানো হয়েছিল।

উপদেষ্টা পরিষদের চূড়ান্ত অভিমত

বৃহস্পতিবারের বৈঠকে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়। অধিকাংশ উপদেষ্টা মনে করেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন বাধ্যতামূলক (স্বয়ংক্রিয়ভাবে কার্যকর) না করে, বরং পরবর্তী সংসদের জন্য গঠিত 'সংবিধান সংস্কার পরিষদ'-এর জন্য তা নির্দেশনামূলক রাখা উচিত। তারা সংসদ নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে আয়োজনের পক্ষেও মত দিয়েছেন।

আইনগত খুঁটিনাটি পর্যালোচনার পর উপদেষ্টারা এই মর্মে অভিমত দিয়েছেন যে, 'জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ-২০২৫' প্রধান উপদেষ্টা নয়, বরং রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে জারি হওয়া উচিত। তবে এসব বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের এখতিয়ার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে দিয়েছে পরিষদ।

উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং প্রশাসন ও পুলিশের রাজনৈতিক আনুগত্যের কারণে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের চ্যালেঞ্জ নিয়েও আলোচনা হয়। উপদেষ্টারা প্রশাসন ও পুলিশের নিরপেক্ষতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

বৈঠক শেষে ড. ইউনূস কোনো বিষয়ে মন্তব্য না করলেও সব উপদেষ্টার মতামত শোনেন এবং জানান যে, সার্বিক অবস্থা পর্যালোচনা করে কয়েকদিনের মধ্যে তিনি গণভোট ও আদেশ জারির বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবেন। উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার সরকারের কাছে সুপারিশ জমা দেওয়ার মাধ্যমে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন তার কাজের ইতি টেনেছে।


একই দিনে নির্বাচন ও গণভোট? জুলাই সনদ বাস্তবায়নে কঠিন দ্বিধায় অন্তর্বর্তী সরকার

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ৩১ ১৮:৫০:৪৫
একই দিনে নির্বাচন ও গণভোট? জুলাই সনদ বাস্তবায়নে কঠিন দ্বিধায় অন্তর্বর্তী সরকার

রাজনৈতিক দলগুলোর তীব্র মতবিরোধের কারণে জুলাই জাতীয় সনদ বা সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নে বড় ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার এখন এই বাস্তবায়ন প্রক্রিয়াকে “দুরূহ চ্যালেঞ্জ” হিসেবে দেখছে। তবে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, সরকার গণভোট ও সনদ বাস্তবায়নের বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে। আলোচনায় এমন প্রস্তাবও উঠে এসেছে যে, জাতীয় নির্বাচনের দিনই গণভোট আয়োজনের বিষয়টি সরকার গভীরভাবে বিবেচনা করছে, যদিও এ বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।

গতকাল বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অনির্ধারিত আলোচনায় জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ও গণভোটের প্রসঙ্গটি বিশেষ গুরুত্ব পায়। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বৈঠকে উপস্থিত উপদেষ্টাদের মতামত চান। উপদেষ্টাদের বেশিরভাগই জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট একদিনে করার পক্ষে মত দেন, তবে প্রধান উপদেষ্টা কোনো সিদ্ধান্ত ঘোষণা না করে শুধু মতামত গ্রহণ করেন।

গত মঙ্গলবার জাতীয় ঐকমত্য কমিশন জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের প্রস্তাব জমা দেয় অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে। কমিশনের সুপারিশে বলা হয়, সনদের সংবিধানসংক্রান্ত সংস্কারগুলো বিশেষ সরকারি আদেশ (Executive Order) আকারে ঘোষণা করে তার ভিত্তিতে গণভোট আয়োজন করা উচিত। গণভোটে প্রস্তাব পাস হলে নবনির্বাচিত সংসদকে সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে কাজ করার দায়িত্ব দেওয়া হবে, যারা ২৭০ দিনের মধ্যে চূড়ান্ত সংস্কার সম্পন্ন করবে। তবে গণভোটের তারিখ নির্ধারণের দায়িত্ব সরকারের ওপরই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

সুপারিশ জমা দেওয়ার পর থেকেই রাজনৈতিক দলগুলোর অবস্থান স্পষ্টভাবে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। বিএনপি বলেছে, সংবিধান অনুযায়ী অন্তর্বর্তী সরকারের জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের এখতিয়ার নেই। দলটির মতে, জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট আয়োজন অপ্রয়োজনীয়, অযৌক্তিক ও অবিবেচনাপ্রসূত। অপরদিকে জামায়াতে ইসলামীসহ আটটি দল নভেম্বরের মধ্যে গণভোটসহ পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলনে রয়েছে। এনসিপি জানিয়েছে, তারা জুলাই সনদে স্বাক্ষর দেবে কি না, তা নির্ভর করবে অন্তর্বর্তী সরকারের পরবর্তী পদক্ষেপের ওপর। ফলে সংস্কার বাস্তবায়নের প্রশ্নে রাজনৈতিক অনৈক্য নতুন মাত্রা পেয়েছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, “২৭০ দিন ধরে আলোচনার পরও আমরা এখনো প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য দেখতে পাচ্ছি না, বরং অনৈক্য আরও গভীর হয়েছে। এটি আমাদের জন্য একটি কঠিন চ্যালেঞ্জ।” তাঁর ভাষায়, এখন বিরোধ দুইভাবে দেখা দিচ্ছে—প্রথমত, সংস্কার প্রস্তাব কীভাবে পাস করা হবে এবং দ্বিতীয়ত, গণভোট কখন অনুষ্ঠিত হবে। তিনি বলেন, “এখন যারা জুলাই অভ্যুত্থানের পক্ষে ছিল, তারাও একে অপরের বিরুদ্ধে উত্তেজিত অবস্থান নিয়েছে। এ অবস্থায় সরকার কীভাবে অগ্রসর হবে, তা নিয়ে আমাদের চিন্তা করতে হচ্ছে।

সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান প্রথম আলোকে বলেন, সরকার এখন প্রস্তাবগুলো বিশ্লেষণ করছে এবং দ্রুতই পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে। আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলও জানান, গণভোট একসঙ্গে হবে কি না, এ নিয়ে মতভেদ চরমে উঠেছে। তবে সরকার দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে প্রস্তুত এবং সেই সিদ্ধান্ত দৃঢ়ভাবে বাস্তবায়ন করবে।

সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে। রাজনৈতিক দলগুলোর ভিন্নমতের কারণে ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাব বাস্তবায়ন নিয়ে যে জটিলতা তৈরি হয়েছে, তা কাটাতে সরকার চূড়ান্তভাবে আলোচনায় ফিরবে কি না, না কি নির্বাহী আদেশ জারি করে সরাসরি বাস্তবায়নের পথে যাবে—সেই প্রশ্নের উত্তর এখনো অনিশ্চিত। তবে উপদেষ্টারা ইঙ্গিত দিয়েছেন, খুব শিগগিরই প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস নিজেই এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।


শেষ হলো জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ৩১ ১২:১৬:৪৮
শেষ হলো জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ
ছবি: সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশন’-এর মেয়াদ শেষ হয়েছে। এই কমিশন দেশের রাজনৈতিক সংস্কার প্রক্রিয়ায় একটি ঐতিহাসিক ভূমিকা রেখে গেলেও, আনুষ্ঠানিকভাবে এর কার্যক্রম ৩১ অক্টোবরের মধ্যেই শেষ হয়েছে। কমিশনের প্রধান কাজ ছিল ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ প্রণয়ন এবং এর বাস্তবায়ন সংক্রান্ত চূড়ান্ত সুপারিশমালা তৈরি করে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে হস্তান্তর করা।

চলতি বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি গঠিত হয় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন, যার উদ্দেশ্য ছিল—আগামী জাতীয় নির্বাচনের পূর্বে নির্বাচন ব্যবস্থা, পুলিশ, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন, সংবিধান ও দুর্নীতি দমন সংক্রান্ত বিভিন্ন সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবগুলো পর্যালোচনা করা এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের মাধ্যমে একটি সমন্বিত জাতীয় ঐকমত্য তৈরি করা। এই কমিশনের মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকার দেশের নতুন রাজনৈতিক কাঠামো ও নির্বাচনী সংস্কারের দিকনির্দেশনা পেতে সক্ষম হয়।

কমিশনের নেতৃত্বে ছিলেন নোবেলজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস, যিনি সভাপতি ও প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সহসভাপতির দায়িত্বে ছিলেন অধ্যাপক আলী রীয়াজ, যিনি সংবিধান সংস্কার কমিশনেরও প্রধান ছিলেন। কমিশনকে প্রথমে ছয় মাসের সময় দেওয়া হয়েছিল, যা ১৫ আগস্ট শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কার্যক্রমের জটিলতা ও রাজনৈতিক সংলাপের দীর্ঘসূত্রতার কারণে দুই দফায় এক মাস করে এবং শেষ দফায় আরও ১৫ দিন সময় বাড়িয়ে আজ ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানো হয়।

এই মেয়াদকালে কমিশন জুলাই ঘোষণাপত্র প্রস্তুত ও রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিক সংলাপের মাধ্যমে সংস্কারের বিষয়ে একটি ঐতিহাসিক জাতীয় ঐকমত্যে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছে। কমিশনের অন্যতম সাফল্য হলো- জুলাই জাতীয় সনদে দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর স্বাক্ষর, যা বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার ভিত্তি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

তবে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এখনো এই সনদে স্বাক্ষর করেনি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এনসিপির অবস্থান স্পষ্ট না হওয়ায় জাতীয় ঐকমত্যের পূর্ণতা অর্জিত হয়নি, যদিও সামগ্রিকভাবে কমিশন তার দায়িত্ব সফলভাবে সম্পন্ন করেছে।

-শরিফুল

পাঠকের মতামত:

রাজনীতি, নির্বাসন ও নৈতিকতা: শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকার দক্ষিণ এশিয়ার বাস্তবতাকে কোথায় নিচ্ছে

রাজনীতি, নির্বাসন ও নৈতিকতা: শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকার দক্ষিণ এশিয়ার বাস্তবতাকে কোথায় নিচ্ছে

বাংলাদেশের রাজনীতিতে আবারও এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে। নির্বাসনে থাকা সাবেক প্রধানমন্ত্রী দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট পত্রিকাকে... বিস্তারিত