স্বামী মর্গে, মেয়ে আইসিইউতে, যন্ত্রণায় কাতর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী

সারাদেশ ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ মে ২০ ০০:০৫:৫১
স্বামী মর্গে, মেয়ে আইসিইউতে, যন্ত্রণায় কাতর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী

সত্য নিউজ:রাজশাহীর বাঘা উপজেলার বানিয়াপাড়ায় সোমবার সকালে একটি যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায় একটি পরিবারের ওপর নেমে আসে ভয়াবহ বিপর্যয়। মেয়েকে স্কুলে নিতে গিয়ে প্রাণ হারালেন বাবা, আর মা ও শিশু মেয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি। দুর্ঘটনায় মারা গেছেন শান্ত নামের এক ব্যক্তি। মেয়ে উম্মে তুরাইয়া রয়েছেন আইসিইউতে, আর তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী চিকিৎসাধীন এক নম্বর ওয়ার্ডে—যিনি এখনও জানেন না, তার স্বামী আর বেঁচে নেই।

সকাল ৮টা ৪০ মিনিটে শান্ত, তার স্ত্রী ও কন্যাকে নিয়ে মোটরসাইকেলে মেয়ের স্কুলে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে বানিয়াপাড়ায় পৌঁছালে ঢাকাগামী 'সুপার সনি' নামের একটি যাত্রীবাহী বাস তাদের মোটরসাইকেলটিকে চাপা দেয়। বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই বাবা-মেয়ের দুই পা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

স্থানীয়রা দ্রুত আহতদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে জরুরি ভিত্তিতে অস্ত্রোপচারের পর শান্ত ও তার মেয়েকে আইসিইউতে রাখা হয়। অন্যদিকে শান্তর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকেও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান শান্ত।

চিকিৎসকেরা জানান, শিশুকন্যা উম্মে তুরাইয়ার অবস্থা এখনও আশঙ্কাজনক। তাকে ঢাকায় স্থানান্তরের জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ডাকা হলেও, শান্তর মৃত্যু সংবাদে সেটি বাতিল করা হয়। স্ত্রীর শরীরের ডান পাশ অবশ হয়ে গেছে, তার চিকিৎসা অব্যাহত রয়েছে। এখনো তাকে স্বামীর মৃত্যুর খবর জানানো হয়নি।

শান্তর মরদেহ রামেক হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। তার দাফনের জন্য লাশ নাটোরের লালপুরে গ্রামের বাড়িতে নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।

এদিকে, দুর্ঘটনার পর বাসের চালক ও সহকারী পালিয়ে গেছে। পুলিশ বাসটি জব্দ করেছে। বাঘা থানার ওসি আ.ফ.ম আছাদুজ্জামান বলেন, এখনও কোনো লিখিত অভিযোগ আসেনি, তবে ঘটনার প্রেক্ষিতে মামলা হবে।

একই দিনে, একই সময়ে—একটি দুর্ঘটনা ভেঙে দিল এক পরিবার। একদিকে মৃত্যু, আরেকদিকে লড়াই জীবনের জন্য। রাজপথে আরেকবার প্রশ্ন উঠে গেল—আর কত প্রাণ গেলে থামবে বেপরোয়া যান চলাচল?

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ