বিশেষ প্রতিবেদন

মিঠামইনের অঘোষিত রাজা,হারুন অর রশীদের দুর্নীতির সাম্রাজ্য

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ২৩ ০৯:৫০:৩৪
মিঠামইনের অঘোষিত রাজা,হারুন অর রশীদের দুর্নীতির সাম্রাজ্য
ছবিঃ সংগৃহীত

সাবেক ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ তার জন্মস্থান কিশোরগঞ্জের মিঠামইনে নিরীহ মানুষের জমি দখল করে শতকোটি টাকা ব্যয়ে গড়ে তুলেছিলেন অত্যাধুনিক ও বিলাসবহুল একটি প্রমোদাগার—‘প্রেসিডেন্ট রিসোর্ট’। মূলত সাবেক প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদের ছত্রছায়ায় বেড়ে ওঠা হারুন, তার পদোন্নতির তদবিরসহ নানা সহযোগিতা পেতেন। কিন্তু পরবর্তীতে হারুনই হয়ে ওঠেন মিঠামইনের ‘রাজা’।

শতকোটি টাকার রিসোর্ট ও জমি দখলের অভিযোগ

রিসোর্টের বিবরণ: মিঠামইন উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামে ৪০ একরেরও বেশি জায়গা নিয়ে এই রিসোর্টটি তৈরি করা হয়েছে। প্রিমিয়াম স্যুটের প্রতিদিনের ভাড়া ২০ হাজার টাকা।

দখলের অভিযোগ: রিসোর্টটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন হারুনের ছোট ভাই ডা. শাহরিয়ার। রিসোর্টের জন্য দখল করা অন্তত ৩৫ একর জায়গা ছিল অন্যদের। এসব জায়গার মালিকদের অনেকেই পুরো দাম পাননি। মিঠামইন সদর ইউনিয়নের দিলীপ বণিক অভিযোগ করেন, হারুন তার ১ একর ১০ শতাংশ জায়গা নিয়েছেন, যার মূল্য ২০ লাখ টাকা হলেও তিনি পেয়েছেন মাত্র ৫০ হাজার টাকা। টাকা না পাওয়ায় অন্তত ১০-১২ জন জমির দলিল রেজিস্ট্রি করে দেননি।

প্রেসিডেন্টের প্রভাব: এলাকাবাসী বলছেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদের আশীর্বাদ ও সহযোগিতায় হারুন পুলিশের বিভিন্ন উচ্চপদে আসীন হতে পারেন। তাকে খুশি করতেই রিসোর্টটির নাম দেওয়া হয় ‘প্রেসিডেন্ট রিসোর্ট’।

এনবিআরের তদন্ত ও রিসোর্ট জব্দ

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর থেকে রিসোর্টটিতে দর্শনার্থীদের প্রবেশ বন্ধ রাখা হয়েছে। সরকারি রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল-সিআইসি হারুনের বিলাসবহুল এই রিসোর্টে অভিযান চালায়।

অভিযান: গত বছরের ৯ ডিসেম্বর এনবিআর অভিযান চালিয়ে রিসোর্ট থেকে চারটি কম্পিউটারের হার্ডডিস্ক ও বেশ কিছু নথিপত্র জব্দ করে।

বর্তমান অবস্থা: তদন্তের পরিপ্রেক্ষিতে এনবিআর এখন এই প্রেসিডেন্ট রিসোর্ট জব্দ করেছে।

সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন।


আগের ৯৬টি বাতিল করে নতুন ৮১ সংস্থাকে ভোটের মাঠে নামাচ্ছে কমিশন

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ০৮ ১৯:১০:৩৮
আগের ৯৬টি বাতিল করে নতুন ৮১ সংস্থাকে ভোটের মাঠে নামাচ্ছে কমিশন
ছবি : সংগৃহীত

আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে চূড়ান্তভাবে ৮১টি দেশীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থাকে নিবন্ধন দিয়েছে নির্বাচন কমিশন বা ইসি। সোমবার ৮ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশনের জনসংযোগ শাখা থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। এর আগে গত ২৮ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পর্যবেক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য ৭৩টি স্থানীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থার প্রাথমিক তালিকা নির্ধারণপূর্বক গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল নির্বাচন কমিশন।

এ সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে যেকোনো দাবি আপত্তি বা অভিযোগ ২০ অক্টোবরের মধ্যে নির্বাচন কমিশন সচিবের কাছে লিখিতভাবে জমা দিতে বলা হয়েছিল এবং অভিযোগের স্বপক্ষে সহায়ক প্রমাণও জমা দেওয়ার নির্দেশ ছিল। দাবি আপত্তি নিষ্পত্তি শেষে প্রথম ধাপে ৬৬টি দেশি পর্যবেক্ষক সংস্থাকে চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে ইসি। এই ৬৬ পর্যবেক্ষক সংস্থাকে চলতি বছরের ৬ নভেম্বর থেকে ২০৩০ সালের ৫ নভেম্বর পর্যন্ত ইসির নিবন্ধন দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া দ্বিতীয় ধাপে যাচাই বাছাই করে আরও ১৫টি পর্যবেক্ষক সংস্থাকে চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এই ১৫ সংস্থাকে চলতি বছরের ৪ ডিসেম্বর থেকে ২০৩০ সালের ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট পাঁচ বছরের জন্য নিবন্ধন দেওয়া হলো। ইসি জানায় বিগত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে নিবন্ধিত ৯৬টি স্থানীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধন নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নীতিমালা ২০২৫ এর ধারা ১৬ মোতাবেক স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হয়ে গেছে।

ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট উল্লেখ করে ইসি জানায় ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে পর্যবেক্ষক নিবন্ধন প্রথা শুরু করে কমিশন। সেই সময় ১৩৮টি সংস্থা নিবন্ধন পেয়েছিল এবং ওই নির্বাচনে দেশি পর্যবেক্ষক ছিল এক লাখ ৫৯ হাজার ১১৩ জন। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ২০১৪ সালে ৩৫টি সংস্থার ৮ হাজার ৮৭৪ জন পর্যবেক্ষক ভোট দেখেছিলেন। এরপর ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১১৮টি নিবন্ধিত সংস্থার মধ্যে ৮১টি দেশি সংস্থার ২৫ হাজার ৯০০ জন পর্যবেক্ষক ভোট পর্যবেক্ষণ করেন। সর্বশেষ ২০২৪ সালের দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ৯৬টি নিবন্ধিত সংস্থার মধ্যে ৮০টির মতো সংস্থার ২০ হাজার ২৫৬ জন ভোট আয়োজনে নজর রেখেছিলেন।


গ্রামের গর্ভবতী মা থেকে শহরের কর্মজীবী নারী সবার জন্য প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ বার্তা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ০৮ ১৮:৫৩:২৯
গ্রামের গর্ভবতী মা থেকে শহরের কর্মজীবী নারী সবার জন্য প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ বার্তা
ছবি : সংগৃহীত

প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন নারীমুক্তি ও মানবাধিকার নিয়ে ব্যাপক সামাজিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে নারী সমাজকে অন্ধকার থেকে আলোর পথে নিয়ে এসেছিলেন বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন। আগামীকাল মঙ্গলবার ৯ ডিসেম্বর বেগম রোকেয়া দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ৯ ডিসেম্বর দেশে নারী শিক্ষার অগ্রদূত বেগম রোকেয়া স্মরণে বেগম রোকেয়া দিবস উদ্‌যাপিত হচ্ছে জেনে প্রধান উপদেষ্টা আনন্দ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন এই অঞ্চলের নারী সমাজকে যথাযোগ্য মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করার প্রয়াসে বেগম রোকেয়ার অসামান্য অবদান জাতি চিরদিন শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে। দিবসটি উপলক্ষে তিনি এই মহীয়সী নারীর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান।

বাণীতে ডক্টর ইউনূস উল্লেখ করেন ঊনবিংশ শতাব্দীতে রক্ষণশীল সমাজ ব্যবস্থায় পিছিয়ে পড়া নারীদের ভাগ্য উন্নয়নের মূল চাবিকাঠি ছিল শিক্ষা। এই উপলব্ধি থেকে বেগম রোকেয়া নারীশিক্ষা বিস্তারে বিরাট সাহসী ভূমিকা পালন করেন। বেগম রোকেয়া নারী উন্নয়নের পথে যে যাত্রা শুরু করেছিলেন তার ধারাবাহিকতায় নারীর ক্ষমতায়নে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কাজ করে যাচ্ছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

নারীর ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে তার বিস্তারিত তুলে ধরেন প্রধান উপদেষ্টা। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে গ্রামীণ অসচ্ছল নারীদের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে ভালনারেবল উইমেন বেনিফিট বা ভিডব্লিউবি কর্মসূচি এবং গ্রামীণ এলাকায় দরিদ্র গর্ভবতী মায়েদের ও শহর এলাকায় স্বল্প আয়ের কর্মজীবী মায়েদের জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদান। এছাড়া দেশব্যাপী তৃণমূল পর্যায়ে নারীদের আত্ম কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।

তিনি আরও জানান প্রান্তিক নারীদের উদ্যোক্তা তৈরিতে সহায়তা প্রদান করাসহ কর্মজীবী নারীদের নিরাপদ আবাসনের লক্ষ্যে কর্মজীবী মহিলা হোস্টেল পরিচালিত হচ্ছে। নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিকার ও প্রতিরোধে সমন্বিত সেবা জোরদারকরণ এবং কুইক রেসপন্স টিমের কার্যক্রম প্রকল্পের আওতায় টোল ফ্রি হট লাইন সেবা ১০৯ সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘণ্টা চালু রয়েছে।

বাণীর শেষাংশে বেগম রোকেয়ার আদর্শ অনুসরণে নারী অধিকার ও আর্থ সামাজিক উন্নয়নে অবদানের জন্য যাঁরা বেগম রোকেয়া পদক পেয়েছেন তাঁদের অভিনন্দন জানান প্রধান উপদেষ্টা। একই সঙ্গে তিনি বেগম রোকেয়া দিবস ২০২৫ উপলক্ষে আয়োজিত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।


জুলাই গণহত্যার বিচারে ট্রাইব্যুনালের কাঠগড়ায় শেখ হাসিনার ১৭ মন্ত্রী ও উপদেষ্টা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ০৮ ১১:৩১:০২
জুলাই গণহত্যার বিচারে ট্রাইব্যুনালের কাঠগড়ায় শেখ হাসিনার ১৭ মন্ত্রী ও উপদেষ্টা
ছবি : সংগৃহীত

চব্বিশের জুলাই আগস্ট আন্দোলন ঘিরে হত্যা ও গণহত্যার দায়ে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনা সরকারের আমলের সাবেক মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীসহ ১৭ জনকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে। সোমবার ৮ ডিসেম্বর সকাল পৌনে ১০টার দিকে কেরানীগঞ্জ ও কাশিমপুরসহ বিভিন্ন কারাগার থেকে কড়া নিরাপত্তায় তাঁদের ট্রাইব্যুনালে আনা হয়। এরপর একে একে প্রিজনভ্যান থেকে নামিয়ে পুলিশ সদস্যরা তাঁদের হাজতখানায় নেন।

এদিন ট্রাইব্যুনাল ১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন বিচারিক প্যানেলে মামলার অগ্রগতি নিয়ে শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে। ট্রাইব্যুনালে আনা আসামিদের তালিকায় রয়েছেন সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী সাবেক শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু এবং সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম। এছাড়া সাবেক কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক সাবেক নৌমন্ত্রী শাহজাহান খান ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু সাবেক বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক সাবেক স্বরাষ্ট্রসচিব জাহাঙ্গীর আলম সাবেক এমপি সোলায়মান সেলিম সাবেক এমপি ফারুক খান সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা তৌফিক ই ইলাহী চৌধুরী শেখ হাসিনার সাবেক বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদারকেও হাজির করা হয়েছে।

এর মধ্যে সালমান এফ রহমান আনিসুল হক হাসানুল হক ইনু ও জুনাইদ আহমেদ পলকের বিরুদ্ধে আলাদা আলাদা ফরমাল চার্জ বা আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করেছে প্রসিকিউশন। ইনুর মামলায় ইতিমধ্যে সাক্ষ্যগ্রহণও চলছে। এ ছাড়া জুলাই অভ্যুত্থানে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে গণহত্যার দায়ে শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়সহ পলকের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল ১। একইসঙ্গে জয়ের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।

অন্যদিকে সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও উপদেষ্টা সালমানের ফরমাল চার্জে কারফিউ জারি করে ছাত্র জনতাকে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ আমলে নিয়ে শুনানির জন্য দিন ধার্য করেছেন আদালত। এর আগে গত ১৫ অক্টোবর পৃথক মামলায় সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত শেষ করে আজকের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন ট্রাইব্যুনাল। আজ সকাল থেকেই ট্রাইব্যুনালের সামনে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে এবং সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।


কে হচ্ছেন দেশের নতুন প্রধান বিচারপতি? জল্পনা চূড়ায়

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ০৮ ১১:১২:৫৯
কে হচ্ছেন দেশের নতুন প্রধান বিচারপতি? জল্পনা চূড়ায়
ছবি: সংগৃহীত

দেশের ২৫তম প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ আগামী ২৭ ডিসেম্বর অবসরে যাচ্ছেন। তার অবসরের সময় ঘনিয়ে আসায় বিচারাঙ্গনে জল্পনা তৈরি হয়েছে কে হচ্ছেন দেশের পরবর্তী প্রধান বিচারপতি। বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে ছয়জন বিচারপতি রয়েছেন। জ্যেষ্ঠতার তালিকায় শীর্ষে থাকা বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরীর নাম সবচেয়ে বেশি আলোচিত হচ্ছে। রীতি অনুযায়ী আপিল বিভাগের বিচারপতিদের মধ্য থেকেই প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেওয়া হয়ে থাকে, যদিও সংবিধানে রাষ্ট্রপতিকে এই বিষয়ে পূর্ণ ক্ষমতা দেওয়া আছে।

আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, এবারও আপিল বিভাগ থেকেই প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। তবে জুলাই–আগস্টের অভ্যুত্থান-পরবর্তী অস্থির সময়ে একটি ব্যতিক্রমী ঘটনা ঘটে ছাত্র-জনতার দাবির মুখে হাইকোর্ট বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদকে অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেয়। বিচার বিভাগের ইতিহাসে এটি এক অনন্য নজির, কারণ অতীতে সব প্রধান বিচারপতি আপিল বিভাগ থেকে নিয়োগ পেয়েছেন।

সংবিধানের ৯৫ ও ৯৭ অনুচ্ছেদে বলা আছে, রাষ্ট্রপতি প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেবেন এবং প্রয়োজনে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠতম বিচারপতি ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। যদিও সংবিধানে জ্যেষ্ঠতা বাধ্যতামূলক বলা হয়নি, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন আপিল বিভাগের সিনিয়র বিচারপতিকে প্রধান বিচারপতি করার সুপারিশ করেছিল। কমিশন আরও বলেছে, জ্যেষ্ঠ বিচারপতির বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ থাকলে দ্বিতীয় জ্যেষ্ঠ বিচারপতিকে নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে।

আইনজীবী শিশির মনির বলেন, বর্তমান সংবিধানে জ্যেষ্ঠতার বাধ্যবাধকতা নেই; রাষ্ট্রপতি আপিল বিভাগের যেকোনো বিচারপতিকে প্রধান বিচারপতি করতে পারেন। এখন সিদ্ধান্ত রাষ্ট্রপতির হাতে তিনি কাকে দেশের ২৬তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে বেছে নেবেন।

আসন্ন নিয়োগকে সামনে রেখে আপিল বিভাগের ছয় বিচারপতির প্রোফাইল নিয়েও আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট এ কে এম নুরুল ইসলাম ও একুশে পদকপ্রাপ্ত কবি জাহানারা আরজুর সন্তান। ১৯৮৩ সালে আইন পেশায় প্রবেশ করে তিনি ২০০৩ সালে হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারপতি এবং ২০২২ সালে আপিল বিভাগের বিচারপতি হন। বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী ২০০৩ সালে হাইকোর্টে অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর ধাপে ধাপে উন্নীত হয়ে ২০২৪ সালে আপিল বিভাগে যোগ দেন। তিনিও সুপ্রিম কোর্টের বিচারক পরিবারের সন্তান।

বিচারপতি মো. রেজাউল হক ১৯৮৪ সালে জেলা আদালতে আইনজীবী হিসেবে যাত্রা শুরু করেন এবং ২০০৪ সালে হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে নিয়োগ পান। ২০২৪ সালে তিনি আপিল বিভাগের বিচারপতি হন। বিচারপতি এস.এম. ইমদাদুল হক ১৯৯০ সালে আইন পেশায় প্রবেশ করেন। ২০০৪ সালে হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর ২০২৪ সালে আপিল বিভাগে উন্নীত হন।

বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান দীর্ঘ আইনি অভিজ্ঞতার পর ২০০৩ সালে হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে নিয়োগ পেয়ে ২০২৫ সালে আপিল বিভাগে ওঠেন। বিচারপতি ফারাহ মাহবুব আইনজীবী পরিবারের সন্তান হাইকোর্টের বিচারক হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালনের পর ২০২৫ সালে আপিল বিভাগের বিচারপতি হন।

প্রধান বিচারপতি নিয়োগকে ঘিরে এখন আদালতপাড়া সরগরম। আইনজীবী মহলে চলছে সম্ভাব্য প্রার্থীদের যোগ্যতা, সিনিয়রিটি ও ভূমিকা নিয়ে আলোচনা। সবশেষ সিদ্ধান্ত এখন রাষ্ট্রপতির হাতে, যিনি ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহেই দেশের ২৬তম প্রধান বিচারপতির নাম ঘোষণা করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

-রফিক


ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে সরকারের নতি স্বীকার, বাড়ল ভোজ্যতেলের দাম

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ০৭ ২০:৪৫:৪৯
ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে সরকারের নতি স্বীকার, বাড়ল ভোজ্যতেলের দাম
ছবি : সংগৃহীত

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে দীর্ঘ বৈঠকের পর অবশেষে সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ৬ টাকা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে। নতুন দাম অনুযায়ী এক লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ১৯৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে যা সোমবার ৮ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হবে। রবিবার ৭ ডিসেম্বর বৈঠকের পর বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে নতুন এই মূল্য ঘোষণা করে।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় এক লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল খুচরা পর্যায়ে বিক্রি হবে ১৯৫ টাকায় যা আগে সরকার নির্ধারিত মূল্য ১৮৯ টাকা ছিল। পাশাপাশি প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হবে ১৭৬ টাকায় যা আগে ১৭০ টাকা ছিল। এছাড়া প্রতি লিটার পাম তেলের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১৬৬ টাকা এবং পাঁচ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেলের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৯৫৫ টাকা।

এর আগে গত ১০ নভেম্বর লিটারে ৯ টাকা বাড়ানোর অনুমতি চেয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছিল সংগঠনটি। অনুমতি না পেয়েই ব্যবসায়ীরা এক প্রকার বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বাজারে প্রতি লিটারে ৯ টাকা বাড়িয়ে খুচরা পর্যায়ে বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৯৮ টাকায় বিক্রি শুরু করেছিলেন। মোড়কে নতুন দাম সংবলিত করে বাজারে তেল ছাড়ায় ক্রেতাদের বাড়তি দামেই তেল কিনতে হচ্ছিল।

বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন দাবি করেছিলেন সরকারকে না জানিয়েই আমদানিকারক ও বাজারজাতকারী কোম্পানিগুলো ভোজ্যতেলের দাম বাড়িয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ব্যবসায়ীদের শোকজও করা হয়। তবে শেষ পর্যন্ত বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে বৈঠকের পর লিটারে ৯ টাকার বদলে ৬ টাকা বাড়ানোর বিষয়ে সমঝোতা হয়।


নির্বাচনে আপনারা চালকের আসনে আছেন বলে ইসিকে প্রধান উপদেষ্টা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ০৭ ১৮:৫৪:৫১
নির্বাচনে আপনারা চালকের আসনে আছেন বলে ইসিকে প্রধান উপদেষ্টা
ছবি : সংগৃহীত

প্রধান উপদেষ্টা ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন জাতির জন্য প্রতীক্ষিত এই নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন বা ইসি চালকের আসনে আছে। তিনি মন্তব্য করেন যে আমাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতেই হবে। রবিবার সন্ধ্যায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশনের ৪ কমিশনার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় প্রধান উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।

নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতিতে সন্তোষ প্রকাশ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে নির্বাচন কমিশনকে সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে সরকার। তিনি আরও বলেন জাতিকে একটি সুন্দর নির্বাচন উপহার দিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতিকে ইতিহাসের সেরা নির্বাচন উপহার দেওয়ার প্রত্যয়ে সরকার এগিয়ে চলছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন আগামী সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের প্রস্তুতি সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন। বৈঠকে নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ তাহমিদা আহমদ মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার এবং ব্রিগেডিয়ার জেনারেল অব. আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ ও নির্বাচন কমিশন সচিব আখতার আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ডক্টর খলিলুর রহমান ও প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব এম সিরাজ উদ্দিন মিয়াও বৈঠকে অংশ নেন।

সিইসি নাসির উদ্দিন জানান নির্বাচন আয়োজনের ক্ষেত্রে সব ধরনের প্রস্তুতি সঠিক ও সুন্দরভাবে এগোচ্ছে এবং ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন ও একই দিনে গণভোট আয়োজনের জন্য কমিশন সম্পূর্ণ প্রস্তুত। প্রস্তুতিকালে ইসিকে পূর্ণ সহযোগিতা প্রদানের জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানান সিইসি ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনাররা। এছাড়া নির্বাচনের প্রস্তুতিকালে সর্বাত্মক সহযোগিতা করায় সিইসি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সেনাবাহিনীর সদস্যদেরও প্রধান উপদেষ্টার মাধ্যমে ধন্যবাদ জানান। তিনি উল্লেখ করেন যে ইতোমধ্যে নাগরিকরা নির্বাচনী কর্মকাণ্ডে নিজেদের সম্পৃক্ত করেছেন যা দেশে নির্বাচনী আমেজ সৃষ্টি করেছে।


নির্বাচনী যাত্রা শুরু: তফসিল নিয়ে ইসির চূড়ান্ত ঘোষণা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ০৭ ১৮:৩২:০৩
নির্বাচনী যাত্রা শুরু: তফসিল নিয়ে ইসির চূড়ান্ত ঘোষণা
ছবি : সংগৃহীত

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল চলতি সপ্তাহেই ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার বা ইসি আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ। রবিবার ৭ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশনে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানান। একই সঙ্গে তিনি ভোটের সময়সীমা ও আচরণবিধি প্রতিপালন নিয়ে কমিশনের নতুন সিদ্ধান্তের কথা তুলে ধরেন।

ইসি সানাউল্লাহ বলেন চলতি সপ্তাহেই তফসিল ঘোষণা করা হবে। নির্বাচনের আচরণবিধি কঠোরভাবে প্রতিপালনে তফসিল ঘোষণার দিন থেকেই প্রতিটি উপজেলায় দুজন করে ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে থাকবেন। এরপর ভোটের পাঁচ দিন আগে ম্যাজিস্ট্রেটের সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে। তিনি সতর্ক করে বলেন তফসিল ঘোষণার পর প্রার্থীদের পোস্টার ও ব্যানার সরাতে ৪৮ ঘণ্টা সময় দেওয়া হবে এবং না সরালে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ সময় আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ জানান নির্বাচনে ভোটের সময় এক ঘণ্টা বাড়িয়েছে ইসি। নতুন সময়সূচি অনুযায়ী ভোটগ্রহণ শুরু হবে সকাল সাড়ে ৭টায় এবং শেষ হবে বিকেল সাড়ে ৪টায়। সাধারণত সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ করা হয় কিন্তু এবার সংসদ নির্বাচন ও জুলাই জাতীয় সনদ নিয়ে গণভোট একই দিনে হওয়ায় সময় বাড়ানোর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি আরও জানান সোমবার ৮ ডিসেম্বর থেকে প্রবাসী ভোটারদের জন্য ব্যালট পেপার ছাপানোর কাজ শুরু হবে।

নির্বাচনের দিন সাধারণ ছুটি থাকবে বলে নিশ্চিত করেছেন ইসি কমিশনার। তবে ইসির প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যাংক ও পোস্ট অফিস খোলা রাখা হবে। অন্তর্বর্তী সরকার ইতোমধ্যে ঘোষণা করেছে যে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে একই দিনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট অনুষ্ঠিত হবে।

ইসি সূত্র জানায় শুরু থেকে ইসির প্রস্তুতি ছিল শুধু সংসদ নির্বাচনের এবং সে হিসেবে ৪২ হাজার ৭৬১টি ভোটকেন্দ্র এবং ২ লাখ ৪৪ হাজার ৬৪৯টি ভোটকক্ষ নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু এখন সংসদ নির্বাচনের সঙ্গে গণভোট যুক্ত হওয়ায় একজন ভোটারকে দুটি করে ভোট দিতে হবে যাতে সময় বেশি লাগবে। এই চাপ সামলাতে ভোটকেন্দ্র না বাড়িয়ে প্রতিটি ভোটকক্ষে একটির জায়গায় দুটি করে গোপন কক্ষ স্থাপন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন যা মক ভোটিংয়ের তথ্যের ভিত্তিতে নেওয়া হয়েছে।


আজ থেকে জুলাই আন্দোলনে নিহত ১৮২ মরদেহ উত্তোলনের কাজ শুরু

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ০৭ ০৯:১০:২৪
আজ থেকে জুলাই আন্দোলনে নিহত ১৮২ মরদেহ উত্তোলনের কাজ শুরু
ছবি : সংগৃহীত

জুলাই আগস্ট আন্দোলনে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের রায়েরবাজার কবরস্থানে দাফন করা অজ্ঞাত ১৮২ শহীদের মরদেহ উত্তোলনের প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে আজ রোববার ৭ ডিসেম্বর। শহীদদের ডিঅক্সিরাইবোনিউক্লিক অ্যাসিড বা ডিএনএ নমুনা সংগ্রহে আজ থেকেই কাজ শুরু করবে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ বা সিআইডি।

ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ ডাক্তার লুইস ফন্ডেব্রিডার এবং সিআইডি প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মো. ছিবগাত উল্লাহসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে এই স্পর্শকাতর কার্যক্রম শুরু হবে। এর আগে গত ২ ডিসেম্বর রায়েরবাজার বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে অজ্ঞাত শহীদদের কবর পরিদর্শন করেছিলেন সিআইডির কর্মকর্তারা এবং প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করেন।

সিআইডির ফরেনসিক ইউনিটের কর্মকর্তারা জানান বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে জুলাই আন্দোলনে নিহত অজ্ঞাত শহীদদের মরদেহ উদ্ধারে কবরস্থান এলাকায় বিশেষ তাঁবু স্থাপন করা হয়েছে। সেখানেই কবর থেকে মরদেহ উত্তোলন করার পর প্রক্রিয়াগত সব কাজ সম্পন্ন করা হবে। এই অস্থায়ী তাঁবুতেই ময়নাতদন্ত করা হবে এবং নমুনা সংগ্রহের পর মরদেহ আবার যথাযথ প্রক্রিয়ায় দাফন করা হবে।

আইনি প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে গত ৪ আগস্ট ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পুলিশের আবেদনের প্রেক্ষিতে মরদেহ উত্তোলনের নির্দেশ দিয়েছিলেন। পুলিশের পক্ষ থেকে আদালতে আবেদনটি করেছিলেন মোহাম্মদপুর থানার উপপরিদর্শক মাহিদুল ইসলাম। আবেদনে উল্লেখ করা হয় কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে জন্ম নেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় বিভিন্ন বয়সের নারী পুরুষ জীবন দেন যাদের অনেকের পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। তাই ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে তাদের পরিচয় নিশ্চিত করতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।


নির্বাচন নিয়ে বাইরে পজিটিভ দেখালেও ভেতরে ভেতরে চলছে নেগেটিভ তৎপরতা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ০৭ ০৮:৪৭:২৮
নির্বাচন নিয়ে বাইরে পজিটিভ দেখালেও ভেতরে ভেতরে চলছে নেগেটিভ তৎপরতা
ছবি : সংগৃহীত

নির্বাচনের তফসিল নির্ধারণে আজ রোববার ৭ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সম্ভবত আজকেই নির্বাচনের তফসিল চূড়ান্ত হবে এবং নির্বাচনের তারিখ চূড়ান্ত করাসহ সার্বিক বিষয় অবহিত করা ও সম্মতির জন্য ইসি আগামী ১০ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে। রাজনৈতিক দলগুলোও পুরোদমে প্রস্তুতি নিচ্ছে। তারপরও ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে সংশয় কাটছে না। গুরুত্বপূর্ণ একাধিক সূত্র মনে করছে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে বাইরে সবাইকে পজিটিভ দেখালেও ভেতরে ভেতরে নেগেটিভ করার জন্য একটি মহল অত্যন্ত সক্রিয় রয়েছে।

২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির এক ডেডলাইনে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দুটি নির্বাচন। এক জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং দুই রাষ্ট্র সংস্কার ইস্যু নিয়ে গণভোট। সরকারের তরফ থেকে বারবার নিশ্চিত করা হচ্ছে ফেব্রুয়ারিতেই দুই ভোট অনুষ্ঠিত হবে। এ ঘোষণা আসছে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতিনিধিত্বকারী প্রায় সব প্রতিনিধির কাছ থেকেই। তবে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে নির্বাচনের বিষয়ে প্রবল আগ্রহ থাকলেও পরামর্শক অনেকের মধ্যে রয়েছে অনাগ্রহ। প্রথমবারের মতো ক্ষমতার স্বাদ পাওয়া সরকারে থাকা কেউ কেউ ঘুঁটি উল্টাতে চান বলে অভিযোগ উঠেছে। তাঁরা রাষ্ট্র সংস্কার ইস্যুকে সামনে রেখে ক্ষমতার মেয়াদ দীর্ঘায়িত করতে চান। আবার নিজেদের মুখোশের আড়ালে রেখে তারাই ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠানের পক্ষে উঁচু গলায় কথা বলছেন। যত দিন যাবে এই গ্রুপ তত বেশি সক্রিয় হবে বলে জানা গেছে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মাধ্যমে রাষ্ট্র সংস্কারে আনা হয়েছে জুলাই জাতীয় সনদ। ৩০টি রাজনৈতিক দল ও তাদের জোটের মতামত নিয়ে তৈরি হয়েছে এই সনদ। এ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিতর্ক রয়েছে আবার কিছু বিষয়ে ঐকমত্যও তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো গণভোট। উত্তর সহজ প্রশ্ন কঠিন এমন আদলে তৈরি গণভোট কাঠামোয় রায় দিতে হবে জনগণকে। বিষয়টিকে সহজভাবে নিচ্ছেন না রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তাঁদের বক্তব্য তৃণমূল পর্যায়ের জনসাধারণের কাছ থেকে কঠিন প্রশ্নে সহজ উত্তর পাওয়াটা বাস্তবসম্মত নয়। তাঁদের মতে সরকারের ভেতরে থাকা একটা অংশ মুখে নির্বাচনের ফেনা তুললেও ভেতরে রয়েছে অন্য তৎপরতা। নির্বাচন বানচাল বা নির্বাচন পেছানো তাদের লক্ষ্য এবং এজন্য ব্যবহার হতে পারে গণভোট ইস্যু। মাত্র দুই মাসের মধ্যে গণভোটে দেওয়া চার প্রশ্ন সম্পর্কে জনসাধারণকে সচেতন করা সম্ভব নয় এমন দাবি রাজনৈতিক মহল থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্টদেরও।

এ অবস্থায় রাজনীতির অন্যরকম মোড়ে অবস্থান করছে ফেব্রুয়ারির নির্বাচন। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার গুরুতর অসুস্থতা রাজনৈতিক অঙ্গনে এখন সবচেয়ে বেশি আলোচিত। শিগগিরই উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে লন্ডন নেওয়া হতে পারে। এ পরিস্থিতিকে মূল্যায়ন করে নতুন একটি দলের পক্ষ থেকে নির্বাচন পেছানোর দাবি জানানো হয়েছে। আবার একই দিনে নির্বাচন পেছাতে আদালতের আশ্রয় নেওয়া হয়েছে। এ অবস্থায় বিএনপি ৩৬টি আসনে তাদের মনোনয়ন ঘোষণা করেছে যা বিএনপির সমমনা দলগুলো ভালোভাবে গ্রহণ করেনি। তাঁদের মতে আগামী কয়েক দিন দেশের রাজনীতি ও নির্বাচনের ভূত ভবিষ্যতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সময়।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে বাংলাদেশে প্রতিটি নির্বাচনের আগে নানা ধরনের ঘোলাটে পরিস্থিতি হতে দেখা যায়। এর সঙ্গে জড়িত থাকে দেশি ও বিদেশি শক্তি। তাঁদের মতে বর্তমান সরকারের মধ্যে একাধিক পাসপোর্টধারী অনেক নাগরিক রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ হয়তো নির্বাচনটা হতে দিতে চান না। এজন্য সব ধরনের তৎপরতার সঙ্গে তারা জড়িত। সর্বশেষ ১৩ নভেম্বর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনই সংবিধান সংস্কার নিয়ে গণভোট অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূস। প্রধান উপদেষ্টা যদি তাঁর সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে না পারেন তাহলে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি আরও অবনতি হতে পারে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

পাঠকের মতামত:

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

রাষ্ট্রের ধারণাটি একসময় কেবল প্রশাসনিক ক্ষমতা, আইনের শাসন এবং নিরাপত্তা প্রদানের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল। কিন্তু আধুনিক বিশ্বে রাষ্ট্রের ভূমিকা এখন... বিস্তারিত