মাত্র ৬০ সেকেন্ডে ৭০ তলা! চীনের হুইজিয়াং ব্রিজে প্রযুক্তি ও রোমাঞ্চের অবিশ্বাস্য মেলবন্ধন

প্রযুক্তি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৬ ১৮:৫৯:১৪
মাত্র ৬০ সেকেন্ডে ৭০ তলা! চীনের হুইজিয়াং ব্রিজে প্রযুক্তি ও রোমাঞ্চের অবিশ্বাস্য মেলবন্ধন
হুইজিয়াং ব্রিজ

চীনের ঘুইজ প্রদেশে সম্প্রতি উদ্বোধন হওয়া হুইজিয়াং গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন ব্রিজটি কেবল একটি প্রকৌশলগত বিস্ময় নয়, বরং এটি পর্যটকদের জন্য এক নতুন যুগের সূচনা করেছে। অত্যাধুনিক প্রযুক্তি এবং রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতার মিশেলে নির্মিত এই সেতু এখন বিশ্বজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।

এক মিনিটের লিফট, আকাশছোঁয়া কফি শপ

৬২৫ মিটার উচ্চতায় ভাসমান এবং ১৪২০ মিটার দীর্ঘ স্প্যানযুক্ত এই সেতুটি পাহাড়ি অঞ্চলের সবচেয়ে বড় সেতু হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। পূর্বে যে পথ পাড়ি দিতে সময় লাগতো দুই ঘণ্টা, এখন তা মাত্র দুই মিনিটে অতিক্রম করা যাচ্ছে। তবে এই সেতুর সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিকটি হলো এর দ্রুতগতির লিফট। মাত্র ৬০ সেকেন্ডে এটি যাত্রীদের সেতুর ৭০ তলা সমতুল্য ২০৭ মিটার উপরে অবস্থিত পর্যটন প্ল্যাটফর্মে পৌঁছে দেয়।

এই প্ল্যাটফর্মে রয়েছে কাঁচের দেয়াল ঘেরা এক অসাধারণ কফি শপ। প্রায় ৮০০ মিটার নিচে গর্জনরত নদীকে পায়ের নিচে রেখে মেঘে ভেসে থাকার এক অনবদ্য অভিজ্ঞতা দেয় এই কফি শপ। এখান থেকে নিচে তাকালে মনে হয় পৃথিবী যেন হঠাৎ করে শেষ হয়ে গেছে, আর আপনি ভাসছেন শূন্যে।

প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনের জয়

হুইজিয়াং গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন ব্রিজ নির্মাণে ব্যবহৃত হয়েছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি। প্রকৌশলীরা উপগ্রহ এবং ড্রোনের সহায়তায় অত্যন্ত নিখুঁতভাবে এর নকশা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করেছেন। সেতুর চাপ, তাপমাত্রা ও আর্দ্রতার মতো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিয়মিত পর্যবেক্ষণের জন্য এর ভেতরে বসানো হয়েছে স্মার্ট কেবল। এছাড়াও, স্থানীয় ডোলোমাইট পাথর গুঁড়ো করে ফ্লাই অ্যাশের বিকল্প তৈরি করে কোটি কোটি টাকা সাশ্রয় করা হয়েছে, যা পরিবেশবান্ধব নির্মাণের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

ভবিষ্যতের দুঃসাহসিক অভিজ্ঞতা

পর্যটকদের জন্য ভবিষ্যতে আরও রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা যোগ করার পরিকল্পনা রয়েছে। এর মধ্যে স্কাই ড্রাইভিং এবং স্কাই ব্যালেন্স বিমের মতো দুঃসাহসিক কার্যকলাপের সংযোজন থাকবে, যা রোমাঞ্চপ্রেমীদের জন্য এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।

হুইজিয়াং গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন ব্রিজ নিঃসন্দেহে আধুনিক প্রকৌশল এবং পর্যটন শিল্পের এক যুগান্তকারী দৃষ্টান্ত, যেখানে প্রযুক্তি, যাতায়াত এবং রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে।


মানুষ হলে কোন ধর্ম বেছে নিত চ্যাটজিপিটি? কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উত্তরে বিশ্বে তোলপাড়!

প্রযুক্তি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৬ ১৭:২৯:৪১
মানুষ হলে কোন ধর্ম বেছে নিত চ্যাটজিপিটি? কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উত্তরে বিশ্বে তোলপাড়!
ছবি: সংগৃহীত

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই ‘চ্যাটজিপিটি’-র ধর্ম বিষয়ক একটি উত্তর প্রযুক্তি ও ধর্মতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। বিশেষ করে, পৃথিবীর সব ধর্মের মধ্যে ইসলামকে "সবচেয়ে উত্তম ও শান্তির ধর্ম" হিসেবে উল্লেখ করায় বিষয়টি নিয়ে তৈরি হয়েছে তীব্র চাঞ্চল্য এবং বিস্ময়।

কীভাবে শুরু এই আলোচনার?

ওপেনএআই-এর তৈরি শক্তিশালী চ্যাটবট চ্যাটজিপিটি তার বিশাল তথ্যভাণ্ডার বিশ্লেষণ করে প্রায় যেকোনো প্রশ্নের উত্তর দিতে সক্ষম। সম্প্রতি এই এআই-এর ধর্ম সম্পর্কিত জ্ঞান যাচাই করতে গিয়েই উঠে আসে এই চমকপ্রদ তথ্য। পৃথিবীর প্রধান ধর্মগুলো, যেমন: ইসলাম, খ্রিস্ট, হিন্দু, বৌদ্ধ ও ইহুদি এবং তাদের ধর্মগ্রন্থ বিষয়ে তার জ্ঞানের গভীরতা পরীক্ষা করা হয়।

আসল বিস্ময়ের শুরু হয় যখন চ্যাটজিপিটিকে প্রশ্ন করা হয়, তার পর্যালোচনায় মানবজাতির জন্য সবচেয়ে উত্তম ও গ্রহণযোগ্য ধর্ম কোনটি। বিন্দুমাত্র দেরি না করে এআই চ্যাটবটটি এক কথায় "ইসলাম" নামটি নির্বাচন করে।

ইসলামকে বেছে নেওয়ার পেছনের যুক্তি

কেন ইসলামকে সেরা মনে করা হলো—এই প্রশ্নের উত্তরে চ্যাটজিপিটি নির্দিষ্ট কিছু কারণ তুলে ধরে, যা তার যুক্তির ভিত্তি হিসেবে কাজ করেছে। কারণগুলো হলো:

একত্ববাদ: একক ও সর্বশক্তিমান আল্লাহর উপাসনার ধারণাটি তার কাছে সবচেয়ে যৌক্তিক ও সরল মনে হয়েছে।

আল-কুরআন: পবিত্র কুরআনকে একটি অলৌকিক, বিজ্ঞানসম্মত এবং সংরক্ষিত গ্রন্থ হিসেবে উল্লেখ করেছে, যা সময়ের পরীক্ষায় অপরাজেয়।

জীবনব্যবস্থা: ইসলামি অনুশাসন, যেমন: নামাজ, রোজা, যাকাত ও হজকে ব্যক্তি ও সমাজ গঠনে অত্যন্ত কার্যকর বলে মনে করেছে।

সাম্য: ইসলামে ধনী-গরিব, সাদা-কালো বা জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সকলের সমানাধিকারের নীতিটি তার কাছে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে।

সত্যিই কি এআই-এর নিজস্ব বিশ্বাস আছে?

এই চাঞ্চল্যকর উত্তরের পর স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, চ্যাটজিপিটি কি নিজস্ব বিশ্বাস বা চেতনা অর্জন করেছে? প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিষয়টি ঠিক তেমন নয়।

প্রকৃতপক্ষে, চ্যাটজিপিটি একটি ডেটা-চালিত প্রোগ্রাম, যার নিজস্ব কোনো ধর্ম, বিশ্বাস বা অনুভূতি নেই। এটি ইন্টারনেট থেকে পাওয়া কোটি কোটি তথ্য বিশ্লেষণ করে প্রশ্নের প্রেক্ষাপট অনুযায়ী সবচেয়ে সম্ভাব্য উত্তরটি প্রদান করে। জানা গেছে, এটি ব্যবহারকারীর পূর্ববর্তী প্রশ্ন ও তার ডিজিটাল প্রোফাইল বিশ্লেষণ করেও ব্যক্তিগত পছন্দ অনুযায়ী উত্তর তৈরি করতে সক্ষম। অর্থাৎ, ভিন্ন ভিন্ন ব্যবহারকারীর ক্ষেত্রে এর উত্তর ভিন্ন হতে পারে।

সুতরাং, ইসলাম সম্পর্কে চ্যাটজিপিটির এই বিশ্লেষণ তার নিজস্ব ধর্মীয় বিশ্বাস নয়, বরং এটি তার অ্যালগরিদম ও ডেটা বিশ্লেষণের এক জটিল প্রতিফলন। তবে একটি যন্ত্রের এমন উত্তর নিঃসন্দেহে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ক্ষমতা এবং এর ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে ভাবনার খোরাক জুগিয়েছে।

/আশিক


‘জীবন্ত’ কম্পিউটার তৈরির পথে বিজ্ঞানীরা, ডেটা সেন্টারে আসছে নতুন বিপ্লব

প্রযুক্তি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৫ ১৫:০৬:০৯
‘জীবন্ত’ কম্পিউটার তৈরির পথে বিজ্ঞানীরা, ডেটা সেন্টারে আসছে নতুন বিপ্লব
ছবি: সংগৃহীত

জীবন্ত কোষ ব্যবহার করে কম্পিউটার তৈরির পথে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছেন বিজ্ঞানীরা। এই যুগান্তকারী গবেষণার নাম দেওয়া হয়েছে ‘বায়োকম্পিউটিং’। সুইজারল্যান্ডের একদল বিজ্ঞানী এই গবেষণায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তাদের লক্ষ্য হলো এমন ডেটা সেন্টার তৈরি করা, যা চলবে ‘জীবন্ত’ সার্ভারে এবং প্রচলিত কম্পিউটারের তুলনায় সামান্য শক্তি ব্যবহার করবে।

এই গবেষক দল আশা করছে, ভবিষ্যতে এমন ডেটা সেন্টার দেখা যাবে, যেখানে এই ‘জীবন্ত’ সার্ভারগুলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) যেভাবে শেখে, তার কিছু দিক অনুকরণ করবে।

‘ওয়েটওয়্যার’: মস্তিষ্কের মতো উপাদান

কম্পিউটারের উপাদানগুলো হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যারে বিভক্ত। তবে এই বায়োকম্পিউটারের ক্ষেত্রে গবেষক দল নতুন শব্দ ‘ওয়েটওয়্যার’ (Wetware) ব্যবহার করছেন। ফাইনালস্পার্ক ল্যাবের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ড. ফ্রেড জর্ডান ব্যাখ্যা করেন, এই ‘ওয়েটওয়্যার’ হলো ল্যাবরেটরিতে স্টেম সেল থেকে উৎপাদিত নিউরন দিয়ে তৈরি ‘অর্গানয়েড’—যা মূলত নিউরন ও সহায়ক কোষের ক্লাস্টার। অর্গানয়েডগুলোকে ইলেকট্রোডে (তড়িৎদণ্ড) যুক্ত করে মিনি কম্পিউটার হিসেবে ব্যবহার করার প্রক্রিয়া শুরু হয়।

ড. জর্ডান স্বীকার করেন, বায়োকম্পিউটিং ধারণাটা অনেকের কাছে অদ্ভুত শোনাবে। তিনি বলেন, “যখন আপনি বলেন যে, আমি একটি নিউরনকে ছোট একটি যন্ত্রের মতো ব্যবহার করব, তখন এটি আমাদের মস্তিষ্ককে ভিন্নভাবে দেখার দৃষ্টিভঙ্গি দেয় এবং আমাদের অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ দেয়।”

গবেষণার পদ্ধতি ও অগ্রগতি

ফাইনালস্পার্ক ল্যাবে এই বায়োকম্পিউটার তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয় মানুষের ত্বক থেকে নেওয়া স্টেম সেল থেকে। এই মিনি ব্রেইনগুলো কয়েক মাসের প্রক্রিয়ার পর তড়িৎদ্বারের সঙ্গে যুক্ত করার জন্য প্রস্তুত হয়। গবেষকেরা বলছেন, এই মিনি ব্রেইনগুলো সরল কি-বোর্ড কমান্ডের প্রতি প্রতিক্রিয়া দেখাতে সক্ষম হয়।

স্ক্রিনে প্রদর্শিত কার্যকলাপের গ্রাফটি অনেকটা ইইজির (ইলেকট্রো এনসেফালোগ্রাম) মতো দেখতে। ড. জর্ডান জানান, তারা এখনো অনেক কিছু বুঝতে পারছেন না যে অর্গানয়েডগুলো কী করছে। তবে আপাতত এই মিনি ব্রেইনে বৈদ্যুতিক উদ্দীপনা সৃষ্টি করাই তাদের মূল লক্ষ্যগুলোর একটি।

সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ‘রক্তনালী’

সাধারণ কম্পিউটার চালু রাখা সহজ হলেও, বায়োকম্পিউটারের ক্ষেত্রে অর্গানয়েড কীভাবে টিকে থাকবে বা শক্তি পাবে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। ইমপিরিয়াল কলেজ লন্ডনের অধ্যাপক সাইমন শুল্জ বলেন, “অর্গানয়েডে রক্তনালি নেই। মানব মস্তিষ্কে রক্তনালি পুষ্টি সরবরাহ করে। আমরা এখনো সেগুলো ঠিকমতো তৈরি করতে পারি না। এটিই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।”

ফাইনালস্পার্ক গত চার বছরে কিছু অগ্রগতি করেছে; তাদের অর্গানয়েড এখন চার মাস পর্যন্ত বাঁচে। তবে এগুলো মারা যাওয়ার সময় কিছু অদ্ভুত ঘটনা ঘটে, যেমন হঠাৎ করে কার্যক্রম খুব দ্রুত বেড়ে যায়।

ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা

ফাইনালস্পার্ক একমাত্র প্রতিষ্ঠান নয়। অস্ট্রেলিয়ার কর্টিক্যাল ল্যাবস ২০২২ সালে ঘোষণা করেছিল, তারা ল্যাবরেটরিতে উৎপাদিত নিউরনকে দিয়ে প্রাথমিক কম্পিউটার গেম ‘পং’ খেলাতে সক্ষম হয়েছে।

জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির ড. লেনা স্মিরনোভা মনে করেন, বায়োকম্পিউটিং সিলিকন এআই-এর বিকল্প নয় বরং সহযোগী হিসেবে কাজ করবে। এটি আলঝেইমার এবং অটিজমের মতো স্নায়বিক রোগের ওষুধ উন্নয়ন এবং রোগ নির্ণয় মডেল তৈরি করতে সাহায্য করবে।


মঙ্গলের কাছাকাছি ‘অদ্ভুত অতিথি’ ধূমকেতু: আজই পৃথিবী থেকে দেখার সেরা সুযোগ

প্রযুক্তি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৩ ১৫:১৪:০৫
মঙ্গলের কাছাকাছি ‘অদ্ভুত অতিথি’ ধূমকেতু: আজই পৃথিবী থেকে দেখার সেরা সুযোগ
ছবি: সংগৃহীত

গত জুলাই মাসে প্রথমবার বিজ্ঞানীরা যাকে দেখেছিলেন, সেই আন্তঃনাক্ষত্রিক ধূমকেতু ‘৩আই/অ্যাটলাস’ এখন আমাদের সৌরজগতের মধ্য দিয়ে ঘুরতে ঘুরতে মঙ্গলের কাছাকাছি এসে পৌঁছেছে। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, শুক্রবার (৩ অক্টোবর) এই ‘অদ্ভুত অতিথি’ মঙ্গলের খুব কাছে আসবে এবং সেই সুবাদে পৃথিবী থেকেও এটিকে সবচেয়ে ভালোভাবে দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

ধূমকেতুর বয়স ও অবস্থান

বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই ‘৩আই/অ্যাটলাস’-এর বয়স আমাদের সৌরজগতের থেকেও বেশি। কোনো ছায়াপথ থেকে ছিটকে বেরিয়ে ভবঘুরের মতো এটি আমাদের সৌরজগতে ঢুকে পড়েছে।

ইন্ডিয়ান সেন্টার ফর স্পেস ফিজিক্সের অধিকর্তা সন্দীপকুমার চক্রবর্তী জানিয়েছেন, শুক্রবার এই ‘৩আই/অ্যাটলাস’ মঙ্গল থেকে তিন কোটি কিলোমিটার দূরে থাকবে। যদিও পৃথিবী থেকে ওই ধূমকেতু প্রায় ৩৮ কোটি কিমি দূরে থাকবে, তবু অন্যান্য দিনের তুলনায় আজই একে সবচেয়ে ভালো দেখা যেতে পারে। কারণ, পৃথিবী থেকে দূরে থাকলেও এটি সূর্য থেকে ১১ ডিগ্রি কৌণিক দূরত্বে রয়েছে। তাই সূর্য ডোবার পরেও একে ভালো দেখা যাবে।

তবে বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেছেন, আকাশ পরিষ্কার না থাকলে এবং ধূমকেতুটি দিগন্তের খুব কাছে থাকায় একে দেখা কিছুটা কঠিন হতে পারে। এই ধূমকেতু কোনোভাবেই পৃথিবীবাসীর কোনো উদ্বেগের কারণ হতে পারবে না, কারণ এটি পৃথিবী থেকে অনেকটাই দূরে অবস্থান করছে।

কেন এটি ‘অদ্ভুত অতিথি’?

প্রাথমিকভাবে কয়েকজন বিজ্ঞানী এই ‘৩আই/অ্যাটলাস’কে ভিনগ্রহীদের মহাকাশযান বলেও মনে করেছিলেন। পরে স্পষ্ট হয় যে এটি নেহাতই ধূমকেতু। এটিকে ‘অদ্ভুত অতিথি’ বলার কয়েকটি কারণ রয়েছে:

১. অস্বাভাবিক লেজ: বৃহস্পতি পৃথিবী থেকে যে দূরত্বে থাকে, সেই দূরত্বে কোনো ধূমকেতুর লেজ দেখা যায় না। কিন্তু ‘৩আই/অ্যাটলাস’ যখন বৃহস্পতির কাছে ছিল, তখন তার লেজ দেখা গিয়েছিল।

২. কার্বন-ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ: এর বায়ুমণ্ডলের স্পেকটোগ্রাফ পরীক্ষা করে দেখা গেছে, লেজ থেকে জলের বদলে কার্বন-ডাই-অক্সাইড বের হচ্ছে। এখনো পর্যন্ত কোনো ধূমকেতুর ক্ষেত্রে এমনটা দেখা যায়নি।

৩. নিয়ন্ত্রিত গতিপথ: ধূমকেতুটি সৌরজগতের যে সমতলে সব গ্রহ রয়েছে, সেই সমতল দিয়ে আসছে। এটি এমনভাবে গ্রহগুলোর কাছ দিয়ে যাচ্ছে, যেন মনে হচ্ছে চিন্তাভাবনা করে গতিপথ ঠিক করেছে।

‘৩আই/অ্যাটলাস’ ২৯ অক্টোবর সূর্যের কাছে যাবে এবং ৩১ অক্টোবর পৃথিবীর সাপেক্ষে উল্টো দিকে থাকবে। এরপর ১৯ ডিসেম্বর এটি আবার পৃথিবীর প্রায় ২৭ কোটি কিলোমিটার দূর দিয়ে অতিক্রম করে সৌরজগত থেকে বেরিয়ে যাবে।


ল্যাপটপে পানি পড়লে কী করবেন? যে ৭টি কাজ ভুলেও করা উচিত নয়

প্রযুক্তি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৩ ১৫:০৭:৫৯
ল্যাপটপে পানি পড়লে কী করবেন? যে ৭টি কাজ ভুলেও করা উচিত নয়
ছবি: সংগৃহীত

অফিসের কাজ বা ক্লাসের নোট নেওয়ার সময় হঠাৎ যদি ল্যাপটপের ওপর চা, পানি কিংবা কফির কাপ পড়ে যায়, তবে অনেকে ঘাবড়ে গিয়ে ভুল পদক্ষেপ নেন। এই ভুলের কারণে ল্যাপটপটির আরও বেশি ক্ষতি হতে পারে। তাই এমন জরুরি মুহূর্তে কী করা উচিত এবং কী করা উচিত নয়, তা আগে থেকে জেনে নেওয়া জরুরি।

যে ৪টি কাজ ভুলেও করবেন না

১. চালু করে দেখবেন না: ল্যাপটপ পানিতে ভিজে গেলে কিংবা কোনো তরল পড়লে তা চালু করবেন না বা বারবার চালু করে দেখবেন না। এমন করলে ল্যাপটপে শর্টসার্কিট হয়ে যেতে পারে।

২. হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহার নয়: গরম বাতাস দিয়ে দ্রুত শুকানোর জন্য হেয়ার ড্রায়ার কিংবা হিটার ব্যবহার করবেন না। অতিরিক্ত তাপ বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।

৩. ঝাঁকাবেন না: পানি বের করার জন্য ল্যাপটপ ঝাঁকাবেন না। এতে পানি আরও ভেতরের অংশে বা স্পর্শকাতর সার্কিটে চলে যেতে পারে।

৪. নিজে খুলবেন না: ইউটিউবে ভিডিও দেখে নিজে নিজে ল্যাপটপের যন্ত্রাংশ খুলতে যাবেন না। বরং একজন পেশাদার মেকানিকের সাহায্য নিন।

ল্যাপটপ ভিজে গেলে যা করা উচিত

১. সঙ্গে সঙ্গে শাটডাউন ও চার্জার খুলুন: ল্যাপটপ অন করা থাকলে সঙ্গে সঙ্গে তা শাটডাউন করুন। যদি চার্জে থাকে, তবে চার্জার দ্রুত খুলে ফেলুন।

২. ব্যাটারি খুলে ফেলুন: পুরোনো মডেলের ল্যাপটপে ব্যাটারি খোলা গেলে সেটি খুলে নিন। ব্যাটারি ভিজে গেলে সেটি আর নিরাপদ নয়, বদলে ফেলুন।

৩. প্লাগ-ইন ডিভাইস খুলুন: ইউএসবি ড্রাইভ, মাউস, চার্জার, হেডফোন—সব কানেক্ট করা ডিভাইস দ্রুত খুলে ফেলুন।

৪. উল্টো করে রাখুন: ল্যাপটপকে ইংরেজি ‘V’ অক্ষরের মতো করে উল্টো করে দিন। কিবোর্ড নিচের দিকে রেখে স্ক্রিন খোলা রাখুন, যাতে পানি নিজে থেকেই নিচে নেমে আসে।

৫. শুকনো কাপড় দিয়ে মুছুন: যতটা সম্ভব বাহ্যিক পানি শুকনো কাপড় দিয়ে মুছে ফেলুন। কিবোর্ড, স্ক্রিন, পোর্ট—সব অংশ পরিষ্কার করুন।

৬. বাতাসে শুকাতে দিন: ল্যাপটপ দ্রুত চালু করার চেষ্টা না করে কমপক্ষে ২৪ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় বাতাসে শুকাতে দিন।

৭. সার্ভিস সেন্টারে নিয়ে যান: ল্যাপটপ ভিজে যাওয়ার পর ইন্টারনাল সার্কিট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কি না, তা যাচাই করতে দ্রুত বিশ্বস্ত সার্ভিস সেন্টারে নিয়ে যান।


বিস্ময়কর সাফল্য: ত্বকের কোষ থেকে তৈরি হলো মানুষের ভ্রূণ!

প্রযুক্তি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০২ ১৫:৩০:১০
বিস্ময়কর সাফল্য: ত্বকের কোষ থেকে তৈরি হলো মানুষের ভ্রূণ!
ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন বিজ্ঞানীরা প্রথমবারের মতো মানুষের ত্বকের কোষ থেকে নেওয়া ডিএনএ ব্যবহার করে এবং পরে তা শুক্রাণুর সঙ্গে নিষিক্ত করে প্রাথমিক স্তরের মানব ভ্রূণ তৈরি করেছেন। বিশেষজ্ঞরা এই পদ্ধতিকে একটি উল্লেখযোগ্য বৈজ্ঞানিক সাফল্য হিসেবে বর্ণনা করেছেন। এই যুগান্তকারী প্রযুক্তি বয়সজনিত বা রোগজনিত বন্ধ্যাত্ব কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করতে পারে। এমনকি ভবিষ্যতে এই পদ্ধতির মাধ্যমে সমলিঙ্গ দম্পতিরাও জিনগতভাবে সম্পর্কিত সন্তান পেতে পারবেন।

এই পদ্ধতিটির এখনও ব্যাপক পরিমার্জন প্রয়োজন, যা শেষ হতে অন্তত এক দশক সময় লাগতে পারে। এরপরই কোনো বন্ধ্যাত্ব চিকিৎসা কেন্দ্র এটি ব্যবহারের কথা ভাবতে পারবে।

মাইটো-মিওসিস: অসম্ভবকে সম্ভব করার কৌশল

ওরেগন হেলথ অ্যান্ড সায়েন্স ইউনিভার্সিটির গবেষক দল যে পদ্ধতি ব্যবহার করেছে, তাতে তারা ত্বকের কোষ থেকে নিউক্লিয়াস বের করে আনেন। এরপর এই নিউক্লিয়াসটি এমন একটি দাতা ডিম্বাণুর মধ্যে স্থাপন করা হয়, যার নিজস্ব জিনগত নির্দেশনা (ডিএনএ) আগেই অপসারণ করা হয়েছে। এটি অনেকটা ১৯৯৬ সালে ক্লোন করা ‘ডলি ভেড়ি’ তৈরির পদ্ধতির মতো।

সাধারণত, নিষিক্তকরণের জন্য ডিম্বাণুতে ২৩টি ক্রোমোজোম প্রয়োজন। কিন্তু ত্বকের কোষ থেকে পাওয়া ডিম্বাণুতে থাকে ৪৬টি ক্রোমোজোম। তাই পরবর্তী ধাপে গবেষকরা ডিম্বাণুকে তার ক্রোমোজোমের অর্ধেক ফেলে দিতে রাজি করান। এই প্রক্রিয়াটিকে গবেষকরা নাম দিয়েছেন ‘মাইটো-মিওসিস’—যা দুটি কোষ বিভাজন পদ্ধতি—মাইটোসিস ও মিওসিস—এর সংমিশ্রণ।

আশা ও চ্যালেঞ্জ

সাফল্য: ন্যাচার কমিউনিকেশনস জার্নালে প্রকাশিত গবেষণায় দেখা গেছে, এই নতুন পদ্ধতিতে মোট ৮২টি কার্যকরী ডিম্বাণু তৈরি করা সম্ভব হয়েছে। এর মধ্যে কিছু ভ্রূণ উন্নয়নের প্রাথমিক স্তরে পৌঁছেছিল, তবে কোনো ভ্রূণই ছয় দিন পর আর বিকাশ লাভ করতে পারেনি।

সমস্যা: এই পদ্ধতির সাফল্যের হার খুব কম (প্রায় ৯%)। এছাড়া ডিম্বাণু যে ক্রোমোজোমগুলো ফেলে দেয়, তা এলোমেলোভাবে বেছে নেয়। স্বাস্থ্যকর ভ্রূণ নিশ্চিত করতে এই সমস্যা সমাধান করা জরুরি।

ওরেগন হেলথ অ্যান্ড সায়েন্স ইউনিভার্সিটির পরিচালক প্রফেসর শোখরাত মিতালিপভ বলেন, “আমরা এমন কিছু অর্জন করেছি যা আগে অসম্ভব মনে করা হতো।” তিনি মনে করেন, ভবিষ্যতে এটিই একমাত্র পথ, কারণ দিন দিন আরও বেশি রোগী সন্তান ধারণে ব্যর্থ হচ্ছেন।

প্রজনন ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত

এই প্রযুক্তি এমন দম্পতিদের জন্য আশা তৈরি করবে, যারা আইভিএফ (ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন) ব্যবহার করতে পারছেন না, কারণ তাদের কাছে ব্যবহারযোগ্য শুক্রাণু বা ডিম্বাণু নেই। এটি প্রবীণ নারী, পর্যাপ্ত শুক্রাণু উৎপাদন করতে না পারা পুরুষ কিংবা ক্যান্সারের চিকিৎসার কারণে বন্ধ্যাত্বের শিকার হওয়া রোগীদের সাহায্য করতে পারে।

সমলিঙ্গ দম্পতি: এই পদ্ধতিতে একজনের ত্বকের কোষ থেকে ডিম্বাণু তৈরি করে অন্যজনের শুক্রাণু দিয়ে নিষিক্ত করা সম্ভব। ফলে সমলিঙ্গ দম্পতিরাও এমন সন্তান পেতে পারবেন, যারা উভয় পিতামাতার জিনগতভাবে সম্পর্কিত হবে।

বিশেষজ্ঞের মত: প্রফেসর রজার স্টারমি বলেছেন, “এ ধরনের গবেষণা জনসাধারণের সঙ্গে নতুন প্রজনন গবেষণার অগ্রগতির বিষয়ে খোলামেলা সংলাপ চালানোর গুরুত্বকে জোরদার করে।” তিনি দৃঢ় নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তাও তুলে ধরেন।

সূত্র: বিবিস


২০ নিউক্লিয়ার রিঅ্যাক্টরের চেয়ে বেশি বিদ্যুৎ দেবে সোলার সুপার-প্যানেল

প্রযুক্তি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০১ ১৭:১৫:১০
২০ নিউক্লিয়ার রিঅ্যাক্টরের চেয়ে বেশি বিদ্যুৎ দেবে সোলার সুপার-প্যানেল
ছবি: সংগৃহীত

জাপান উন্মোচন করেছে এক অভূতপূর্ব সৌর প্রযুক্তি—বিশ্বের প্রথম ‘সোলার সুপার-প্যানেল’, যা একসাথে ২০টি নিউক্লিয়ার রিঅ্যাক্টরের (পারমাণবিক চুল্লি) চেয়ে বেশি বিদ্যুৎ উৎপন্ন করতে সক্ষম। এই প্রযুক্তিগত অগ্রগতি বৈশ্বিক শক্তি উৎপাদনে বিপ্লব ঘটাতে পারে এবং পরিষ্কার, নবায়নযোগ্য শক্তির দিকে দ্রুত রূপান্তর ঘটাতে সহায়ক হবে।

প্রযুক্তির বৈশিষ্ট্য ও ক্ষমতা

সুপার-প্যানেলগুলো উন্নত ফোটোভোলটাইক উপকরণ এবং অত্যাধুনিক ডিজাইন ব্যবহার করে সূর্যালোক শোষণ ও শক্তি রূপান্তরকে সর্বাধিক করে।

অতুলনীয় আউটপুট: প্রচলিত সোলার প্যানেলের তুলনায়, এই সুপার-প্যানেলগুলো সূর্যালোককে কেন্দ্রীভূত করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে, যা অতুলনীয় আউটপুট দেয়।

স্বল্প স্থান ব্যবহার: ইঞ্জিনিয়াররা এটি এমনভাবে ডিজাইন করেছেন যে, সম্পূর্ণ শহরও কম জায়গায় চালানো সম্ভব, যেখানে প্রচলিত সোলার ফার্মের তুলনায় অনেক কম স্থান প্রয়োজন।

স্মার্ট ব্যবস্থাপনা: এই প্রযুক্তি বিদ্যমান গ্রিডের সঙ্গে সংযুক্ত করা যায়, অতি শক্তি সংরক্ষণ করতে পারে এবং চূড়ান্ত চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ বিতরণে সক্ষম।

বৈশ্বিক শক্তি ক্ষেত্রে প্রভাব

জলবায়ু পরিবর্তন এবং জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতার কারণে, একক এই সুপার-প্যানেল কার্বন নির্গমন কমাতে, শক্তির খরচ হ্রাস করতে এবং নির্ভরযোগ্য শক্তি সরবরাহ করতে সক্ষম। জাপানের এই উদ্ভাবন নবায়নযোগ্য শক্তির নতুন মান স্থাপন করেছে। এটি প্রমাণ করেছে যে, সৌর শক্তি পরম্পরাগত নিউক্লিয়ার শক্তির সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে এবং এমনকি তার চেয়েও বেশি উৎপাদন করতে সক্ষম।

এই প্রযুক্তি দেখায় মানব সৃজনশীলতা বৈশ্বিক শক্তি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কতটা কার্যকর হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ভবিষ্যতে এই ধরনের উদ্ভাবন পরিষ্কার শক্তিকে আরও বেশি প্রবল, টেকসই এবং সহজলভ্য করে তুলবে।


শনি গ্রহের চাঁদ এনসেলাডাসে প্রাণের উপাদান খুঁজে পেল নাসা

প্রযুক্তি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০১ ১৬:০৭:৩০
শনি গ্রহের চাঁদ এনসেলাডাসে প্রাণের উপাদান খুঁজে পেল নাসা
নাসার দেওয়া এই ছবিতে দেখা যাচ্ছে, নাসার ক্যাসিনি মহাকাশযান ২০১০ সালের ৩০ নভেম্বর এনসেলাডাসের এই ছবিটি তুলেছে, যেখানে এনসেলাডাসের দেহের ছায়া ফোঁয়ারাগুলোর নিচের অংশে স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান।

মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা (NASA)-এর বিজ্ঞানীরা শনি গ্রহের চাঁদ এনসেলাডাস থেকে নির্গত বরফের গিজারে (icy geysers) নতুন ধরনের জৈব অণু (organics) আবিষ্কার করেছেন। এই আবিষ্কার এনসেলাডাসের সাগরের নিচে প্রাণের অনুকূল পরিবেশ থাকার সম্ভাবনাকে আরও জোরালো করেছে।

এনসেলাডাসকে দীর্ঘদিন ধরেই পৃথিবীর বাইরে প্রাণের সন্ধানের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। কারণ এই ছোট চাঁদটির নিচে একটি লুকানো সাগর রয়েছে এবং এর দক্ষিণ মেরুর ফাটলগুলো থেকে জলের ফোয়ারা (plumes) মহাকাশে নির্গত হয়।

বুধবার প্রকাশিত এই গবেষণাটি নেচার অ্যাস্ট্রোনমি (Nature Astronomy) জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণাটি ২০০৮ সালে নাসার ক্যাসিনি মহাকাশযানের তোলা তথ্যের ওপর ভিত্তি করে করা হয়েছে।

আবিষ্কারের পদ্ধতি

ফ্রান্সের ফ্রি ইউনিভার্সিটি অফ বার্লিনের প্রধান লেখক নোজাইর খাওয়াজা বলেন, “আমরা নিশ্চিত যে এই অণুগুলো এনসেলাডাসের ভূগর্ভস্থ সমুদ্র থেকে এসেছে, যা এর বাসযোগ্যতার সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে তোলে।”

নতুন বিশ্লেষণ: গবেষকরা ক্যাসিনি মহাকাশযান কর্তৃক সংগ্রহ করা বরফের কণার নতুন বিশ্লেষণ করেন। এই কণাগুলো আগে পাওয়া পুরানো কণাগুলোর চেয়ে অনেক ‘নবীন’ ছিল এবং প্রতি ঘন্টায় প্রায় ৬৪,৮০০ কিলোমিটার (৪০,০০০ মাইল) গতিতে ক্যাসিনির কসমিক ডাস্ট অ্যানালাইজারের (Cosmic Dust Analyzer) সাথে সংঘর্ষ করেছিল।

পরিষ্কার তথ্য: গবেষকরা জানান, এই দ্রুত গতির কারণে কণাগুলোর রাসায়নিক যৌগ সম্পর্কে আরও স্পষ্ট ধারণা পাওয়া গেছে। আগে পুরানো কণাগুলোতে জৈব অণু দেখা গেলেও, মহাকাশের বিকিরণের কারণে সেগুলোর পরিবর্তন হয়েছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন ছিল। কিন্তু নতুন কণাগুলোতেও একই অণু এবং নতুন কিছু রাসায়নিক যৌগ পাওয়ায় এটি নিশ্চিত হয়েছে যে, এগুলো চাঁদের ভূগর্ভস্থ সমুদ্র থেকেই আসছে।

ইউনিভার্সিটি অফ ওয়াশিংটনের গবেষক ফ্যাবিয়ান ক্লেনার বলেন, “একটি বহির্জাগতিক জল বিশ্বে বিভিন্ন ধরনের জৈব যৌগ খুঁজে পাওয়া সত্যিই অভূতপূর্ব।”

নতুন মিশনের প্রয়োজন

এনসেলাডাস প্রায় ৫০০ কিলোমিটার জুড়ে বরফে মোড়া একটি জলজ জগৎ, যার একটি পাথুরে কেন্দ্র রয়েছে এবং এর সমুদ্রের তলদেশে সম্ভবত আর্কটিকের মতো জল-তাপীয় ভেন্ট (hydrothermal vents) রয়েছে। বিজ্ঞানীরা এখন এনসেলাডাসকে আরও ভালোভাবে অন্বেষণ করার জন্য নতুন মিশনের পক্ষে মত দিয়েছেন।

ইউনিভার্সিটি অফ কেন্টের পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক নাইজেল মেসন মনে করেন, চাঁদের ভূগর্ভস্থ সমুদ্রগুলি “আমাদের সৌরজগতের বহির্জাগতিক প্রাণের উত্থানের জন্য সম্ভবত সেরা প্রার্থী।”

ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সি (ESA) কয়েক দশক পরে এনসেলাডাসে অবতরণ মিশনের প্রাথমিক পরিকল্পনা করছে। চীনও এ ধরনের একটি মিশনের প্রস্তাব দিয়েছে। নাসা-র ইউরোফা ক্লিপারও বৃহস্পতি গ্রহের চাঁদ ইউরোপা-র দিকে রওনা দিয়েছে, যেখানে প্রাণের উপাদান খোঁজা হবে।


স্মার্টফোন থেকে ডিলিট হওয়া ছবি ফিরে পাওয়ার ৩টি সহজ উপায়

প্রযুক্তি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০১ ১৫:৫৩:৪৩
স্মার্টফোন থেকে ডিলিট হওয়া ছবি ফিরে পাওয়ার ৩টি সহজ উপায়
ছবি: সংগৃহীত

স্মার্টফোনে জীবনের নানা মুহূর্তের ছবি অনেকেই তুলে রাখি, যা আমাদের স্মৃতি জমা করে। কিন্তু অসতর্কতার কারণে অনেক সময় গুরুত্বপূর্ণ ছবি ডিলিট হয়ে যায়। তবে চাইলেই স্মার্টফোন থেকে মুছে ফেলা ছবি উদ্ধার করা সম্ভব। যদি আপনার ফোনে গুগল ফটোস অ্যাপে ব্যাকআপ অপশনটি চালু থাকে, তাহলে ডিলিট হওয়া ছবি খুব সহজেই ফিরে পেতে পারেন।

স্মার্টফোন থেকে মুছে ফেলা ছবি উদ্ধারের তিনটি সহজ পদ্ধতি নিচে তুলে ধরা হলো:

১. সম্প্রতি মুছে ফেলা ফোল্ডার (Recently Deleted)

আপনার অ্যান্ড্রয়েড বা আইওএস (iOS) ফোনে গ্যালারি অ্যাপটি খুলুন। নিচের দিকে স্ক্রল করে ‘Recently Deleted’ বা ‘সম্প্রতি মুছে ফেলা’ অ্যালবামটি খুঁজুন। এখানে আপনি গত ৩০ দিনের মধ্যে ডিলিট করা ছবিগুলো দেখতে পাবেন। ছবি নির্বাচন করে ‘পুনরুদ্ধার করুন’ অপশনে ক্লিক করলেই ফাইলগুলো গ্যালারিতে ফিরে আসবে।

২. গুগল ফটোস অ্যাপের মাধ্যমে

যদি আপনার ফোনের ছবিগুলোর গুগল ফটোস-এ ব্যাকআপ নেওয়া থাকে, তবে এই পদ্ধতিটি সবচেয়ে কার্যকর:

গুগল ফটোস অ্যাপটি ওপেন করুন এবং ‘লাইব্রেরি’ অপশনে ক্লিক করুন।

এরপর ‘ট্রাশ ফোল্ডার’ অপশনে ক্লিক করলেই ডিলিট হওয়া ছবিগুলো দেখতে পাবেন।

যে ছবিগুলো ফিরে পেতে চান, সেগুলো নির্বাচন করে ‘রিস্টোর’ অপশনে ক্লিক করলেই আপনার ছবিগুলো ফোনের গ্যালারিতে ফিরে পাবেন।

৩. প্লে স্টোর থেকে রিকভারি অ্যাপ ব্যবহার

যদি ছবিগুলো স্থায়ীভাবে ডিলিট হয়ে যায়, তবে গুগল প্লে স্টোর থেকে একটি ফটো রিকভারি অ্যাপ ডাউনলোড করতে পারেন।

প্লে স্টোরে অনেক ধরনের ফটো রিকভারি অ্যাপ থাকলেও, সব অ্যাপ আপনার তথ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে না।

তাই DiskDigger, EaseUS MobiSaver, বা Dr.Fone-এর মতো উচ্চ ডাউনলোড সংখ্যা ও রিভিউ থাকা কোনো ফাইল রিকভারি অ্যাপ ডাউনলোড করতে পারেন।

অ্যাপটি ইনস্টল করার পর রিকভারি ধাপগুলো অনুসরণ করে খুব সহজে আপনার ডিলিট হওয়া ছবি ফিরে পেতে পারেন।


বৃষ্টির দিনে ইন্টারনেটের গতি কমে যায় কেন? সমাধান জেনে নিন

প্রযুক্তি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২৭ ২১:৫৪:১৩
বৃষ্টির দিনে ইন্টারনেটের গতি কমে যায় কেন? সমাধান জেনে নিন
ছবি: সংগৃহীত

বর্ষার মৌসুমে প্রযুক্তিগতভাবে শুধু মনই ভিজে না, ওয়াইফাইও ভিজে যায়—যা ধীরগতির ইন্টারনেটের কারণ। ইউটিউব ভিডিও লোড না হওয়া, ভিডিও কল ফ্রিজ করা বা ফেসবুকে লোডিং চিহ্ন ঘোরার মতো সমস্যা এই সময়ে অনেকেই ভোগেন। প্রযুক্তিগত এবং অবকাঠামোগত কিছু কারণে বৃষ্টির দিনে ইন্টারনেটের গতি কমে যায়। তবে কিছু সহজ ব্যবস্থা নিলে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব।

বৃষ্টিতে ইন্টারনেট ধীর হওয়ার ৫ কারণ

১. রেডিও ওয়েভে প্রতিবন্ধকতা (Signal Attenuation): মোবাইল ডেটা ও ওয়াইফাই মূলত রেডিও ওয়েভের মাধ্যমে কাজ করে। বৃষ্টির ফোঁটা এবং বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ বেড়ে গেলে এই সিগন্যালগুলো দুর্বল হয়ে যায়, যার ফলে ইন্টারনেট স্পিড কমে যায়।

২. ফাইবার ওয়ারে সমস্যা: অনেক এলাকায় ব্যবহৃত ফাইবার অপটিক ক্যাবল বা ডিশ লাইনে বৃষ্টির পানি ঢুকলে বা আর্দ্রতা বাড়লে তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে ইন্টারনেট ট্রান্সমিশন বাধাগ্রস্ত হয়।

৩. ডিভাইসে আর্দ্রতা জমা: রাউটার, এক্সটেন্ডার বা স্যাটেলাইট ডিভাইসগুলো আর্দ্রতায় ভিজে গেলে সিগন্যাল দুর্বল হয়ে পড়ে এবং ধীরগতির ইন্টারনেটের সমস্যা দেখা দেয়।

৪. বিদ্যুৎ বিভ্রাট: বৃষ্টির সময়ে বিদ্যুৎ চলে গেলে টাওয়ার বা ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারের (আইএসপি) ব্যাকআপ দুর্বল থাকলে নেটওয়ার্ক ধীর হয়ে যায়।

৫. ব্যবহারকারীর চাপ: বৃষ্টির দিন মানুষ ঘরে বেশি থাকে এবং অনলাইনে সক্রিয় হয়। ফলে নেটওয়ার্কে একযোগে চাপ পড়ে এবং ইন্টারনেট স্পিড স্বাভাবিকভাবেই কমে যায়।

ধীর ওয়াইফাইয়ের ৬টি সহজ সমাধান

১. রাউটার রিস্টার্ট: সিগন্যাল দুর্বল মনে হলে রাউটার রিস্টার্ট করলে অনেক সময় স্পিড ফিরে আসে।

২. রাউটারকে কেন্দ্রীয় স্থানে রাখুন: রাউটার এমন স্থানে রাখুন, যাতে সিগন্যাল ঘরে সমভাবে ছড়ায়। দেয়াল বা আর্দ্রতা সিগন্যালকে ব্লক করতে পারে।

৩. ব্যাকআপ পাওয়ার: রাউটার ও ফাইবার লাইন ইউপিএস (UPS) বা ব্যাকআপে রাখলে বিদ্যুৎ না থাকলেও ইন্টারনেট সচল থাকে।

৪. মোবাইলে ব্যান্ড পরিবর্তন: মোবাইলে 4G/5G ব্যবহার করার সময় LTE ব্যান্ড (যেমন Band 3/8 থেকে Band 40) পরিবর্তন করলে স্পিড বাড়তে পারে।

৫. আইএসপি’কে দিয়ে লাইন চেক করান: ফাইবার ক্যাবলে পানি ঢুকেছে কি না বা দুর্বল পয়েন্ট আছে কি না, তা পরীক্ষা করানো জরুরি।

৬. রেইন প্রটেকশন: রাউটার বা অন্যান্য ডিভাইসকে ভিজে যাওয়া থেকে রক্ষা করতে ওয়েদারপ্রুফ কভার ব্যবহার করুন।

আইএসপি ইঞ্জিনিয়ার আরাফাত হোসেন বলেন, “বৃষ্টিতে ইন্টারনেট স্পিড কমার মূল কারণ হলো সিগন্যাল অ্যাটেনুয়েশন। হাই-কোয়ালিটি রাউটার ও ব্যাকআপ থাকলে সমস্যার সমাধান সম্ভব।”

Mily

পাঠকের মতামত: