‘পশুর মতো আচরণ’: ইসরায়েলে গ্রেটা থুনবার্গসহ কর্মীদের ভয়াবহ নির্যাতনের অভিযোগ

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০৫ ১৭:২২:৫৫
‘পশুর মতো আচরণ’: ইসরায়েলে গ্রেটা থুনবার্গসহ কর্মীদের ভয়াবহ নির্যাতনের অভিযোগ
এএফপির ফাইল ছবি

ইসরায়েলে গাজামুখী গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার আটক কর্মীদের ওপর ভয়াবহ নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন মুক্ত হওয়া বিদেশি কর্মীরা। বন্দি শিবিরে জলবায়ু কর্মী গ্রেটা থুনবার্গকে চুল ধরে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া, জোর করে ইসরায়েলি পতাকায় চুমু খাওয়ানো এবং তাকে ট্রফির মতো প্রদর্শন করা হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।

শনিবার (৪ অক্টোবর) ইসরায়েল ফ্লোটিলার ১৩৭ কর্মীকে ইস্তাম্বুলে ফেরত পাঠায়। এদের মধ্যে তুরস্ক, যুক্তরাষ্ট্র, ইতালি, মালয়েশিয়া, কুয়েতসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিক ছিলেন।

গ্রেটাকে প্রচারণার হাতিয়ার

তুরস্কের সাংবাদিক এরসিন চেলিক স্থানীয় গণমাধ্যমকে জানান, তিনি নিজ চোখে দেখেছেন, বন্দি শিবিরে গ্রেটাকে চুল ধরে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হয় এবং জোর করে ইসরায়েলি পতাকায় চুমু খাওয়ানো হয়।

মালয়েশীয় কর্মীর অভিযোগ: মালয়েশীয় অধিকারকর্মী হাজওয়ানি হেলমি বলেন, “এটি ছিল ভয়াবহ। আমাদের পশুর মতো আচরণ করা হয়েছে।” থুনবার্গকে ঠেলে সরানো হয় এবং পতাকা হাতে ঘোরানো হয়।

মার্কিন কর্মীর অভিযোগ: মার্কিন নাগরিক উইন্ডফিল্ড বিবার অভিযোগ করেন, থুনবার্গকে ‘ভয়াবহভাবে ব্যবহার করা হয়েছিল’ এবং ইসরায়েলের কট্টর ডানপন্থি নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-গভিরের প্রবেশের সময় তাকে প্রচারণার হাতিয়ার বানানো হয়।

খাদ্য ও পানি বঞ্চনা: উইন্ডফিল্ড বিবার দাবি করেন, আটক কর্মীদের খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও ওষুধ থেকে বঞ্চিত করা হয়। তুরস্কের টিভি উপস্থাপক ইকবাল গুরপিনার জানান, তাদের কুকুরের মতো আচরণ করা হয়েছিল এবং টয়লেটের পানি খেতে বাধ্য করা হয়।

তুরস্কের আরেক কর্মী আয়সিন কানতোগ্লু জানান, তারা আটক কেন্দ্রে রক্তাক্ত দেওয়াল ও আগের বন্দিদের লেখা বার্তা দেখেছেন। তিনি বলেন, “আমরা আসলে ফিলিস্তিনিদের দুর্দশার সামান্য অভিজ্ঞতা পেয়েছি।”

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

ইসরায়েলি মানবাধিকার সংগঠন আদালাহ বলেছে, আটক কর্মীদের হাত জিপ-টাই দিয়ে বেঁধে ঘণ্টার পর ঘণ্টা হাঁটু গেড়ে বসিয়ে রাখা হয়, ওষুধ দেওয়া হয়নি এবং আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগে বাধা দেওয়া হয়েছে।

ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্তোনিও তাজানি জানিয়েছেন, ২৬ ইতালীয়কে বহিষ্কার করা হয়েছে, তবে এখনো ১৫ জন ইসরায়েলি হেফাজতে রয়েছেন। ইতালির সংসদ সদস্য আর্তুরো স্কোত্তো বলেন, “আইনসম্মত কাজ করছিল ফ্লোটিলায় থাকা মানুষজন; অবৈধ কাজ করেছে তারা, যারা গাজায় সাহায্য পৌঁছাতে বাধা দিয়েছে।”

তবে ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সব অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেছে, আটক ব্যক্তিদের পানি, খাবার, টয়লেট এবং আইনগত সহায়তা দেওয়া হয়েছে।


জীবাশ্ম জ্বালানি ছেড়ে পারমাণবিক শক্তিতে ফিরছে জাপান

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৯ ১৭:৫০:১১
জীবাশ্ম জ্বালানি ছেড়ে পারমাণবিক শক্তিতে ফিরছে জাপান
ছবিঃ সংগৃহীত

বিশ্বের সবচেয়ে বড় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ‘কাশিওয়াজাকি-কারিওয়া’ পুনরায় চালু করার জন্য খুব শিগগিরই সবুজ সংকেত দিতে যাচ্ছে জাপান। মূলত দেশে পারমাণবিক শক্তির ব্যবহার বাড়ানো এবং আমদানি করা জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমানোর লক্ষ্যেই এই বড় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। ২০১১ সালে ফুকুশিমায় ভয়াবহ পারমাণবিক দুর্ঘটনার পর নিরাপত্তার স্বার্থে দেশটি তাদের এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বন্ধ করে দিয়েছিল।

জাপানের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম কিয়োডো নিউজ এবং নিক্কেই বিজনেস ডেইলির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, চলতি সপ্তাহেই স্থানীয় গভর্নরের কাছ থেকে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পুনরায় চালু করার অনুমোদন পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। মধ্য নিগাতা প্রদেশের গভর্নর হিদেয়ো হানাজুমি আগামী শুক্রবার এ বিষয়ে একটি সংবাদ সম্মেলন করবেন বলে জানা গেছে। তবে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, বিশাল এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে মোট সাতটি চুল্লি থাকলেও প্রাথমিকভাবে মাত্র একটি চুল্লি পুনরায় কাজ শুরু করবে।

২০১১ সালের প্রলয়ংকরী সুনামি এবং ফুকুশিমা দাইচি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিপর্যয়ের পর জাপান সরকার দেশের সবকটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা করেছিল। পরবর্তীতে অত্যন্ত কঠোর নিরাপত্তা মানদণ্ড নিশ্চিত করার পর দেশটির পশ্চিম ও দক্ষিণ অঞ্চলে মোট ১৪টি চুল্লি পুনরায় চালু করা হয়েছে।

যদি কাশিওয়াজাকি-কারিওয়া চালুর অনুমোদন পাওয়া যায়, তবে ফুকুশিমা বিপর্যয়ের পর এই প্রথম ফুকুশিমার অপারেটর কোম্পানি ‘টেপকো’ তাদের কোনো পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র পুনরায় চালু করার সুযোগ পাবে।

জাপান সরকার ২০৫০ সালের মধ্যে কার্বন নিরপেক্ষতা অর্জনের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। এই লক্ষ্য পূরণের জন্য এবং ভবিষ্যতের জ্বালানি চাহিদা মেটাতে তারা পারমাণবিক বিদ্যুৎকে একটি নির্ভরযোগ্য ও পরিবেশবান্ধব উৎস হিসেবে সমর্থন দিয়ে আসছে।


চুক্তি খাতায়-কলমে, বাস্তবে আগ্রাসন: যুদ্ধবিরতির মধ্যেই গাজায় হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৯ ১৬:৫২:২৬
চুক্তি খাতায়-কলমে, বাস্তবে আগ্রাসন: যুদ্ধবিরতির মধ্যেই গাজায় হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল
ছবিঃ সংগৃহীত

হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তি হওয়ার পরেও গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা থামেনি। গত ১০ অক্টোবর থেকে দুই পক্ষের মধ্যে এই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। তবে চুক্তি বহাল থাকার পরেও ফিলিস্তিনিদের ওপর দখলদার বাহিনীর আগ্রাসন অব্যাহত রয়েছে বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস থেকে দেওয়া তথ্যে জানা গেছে, ইসরায়েলি বাহিনী এখন পর্যন্ত ৩৯৩ বার যুদ্ধবিরতির নিয়ম লঙ্ঘন করেছে। তাদের চালানো এসব হামলায় যুদ্ধবিরতি চলাকালীনই ২৭৯ জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন এবং আরও ৬৫২ জন আহত হয়েছেন।

গাজার বাইরেও সংঘাত ছড়িয়ে পড়েছে। দক্ষিণ লেবাননে অবস্থিত একটি ফিলিস্তিনি শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ১৩ জন নিহত হয়েছেন এবং আরও বেশ কয়েকজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া অধিকৃত পশ্চিম তীরেও সহিংসতা চলছে। সেখানে ইসরায়েলি বাহিনী এক শিশু এবং আল জাজিরার একজন সাংবাদিককে গুলি করেছে। গত মঙ্গলবার পশ্চিম তীরে গাড়ি চাপা দেওয়া এবং ছুরিকাঘাতের পৃথক ঘটনায় একজন নিহত ও তিনজন আহত হয়েছেন।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ইসরায়েলের সীমান্তে ঢুকে আকস্মিক হামলা চালিয়েছিল। সেই ঘটনায় ইসরায়েলে ১ হাজার ১৩৯ জন নিহত হন এবং প্রায় ২০০ জনকে জিম্মি করা হয়। এরপর গত প্রায় দুই বছর ধরে গাজায় চলা ইসরায়েলের ভয়াবহ হামলায় কমপক্ষে ৬৯ হাজার ৪৮৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখ ৭০ হাজার ৭০৬ জন আহত হয়েছেন।

এদিকে, ইসরায়েলি মানবাধিকার সংগঠন ‘ফিজিশিয়ানস ফর হিউম্যান রাইটস’ এক উদ্বেগজনক তথ্য সামনে এনেছে। তাদের মতে, গত দুই বছরের কম সময়ে ইসরায়েলি কারাগারে অন্তত ৯৪ জন ফিলিস্তিনি বন্দি ও আটক ব্যক্তি মারা গেছেন। সংগঠনটির নতুন প্রতিবেদনে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে যে, এসব মৃত্যু পদ্ধতিগত বা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড এবং ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার অংশ হতে পারে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, এর আগের ১০ বছরে ইসরায়েলি হেফাজতে মাত্র ৩০ জন ফিলিস্তিনি মারা গিয়েছিলেন। মানবাধিকার কর্মীদের দাবি, সাম্প্রতিক সময়ে শারীরিক নির্যাতন এবং চিকিৎসা সেবা না দেওয়ার কারণেই কারাগারে বন্দিদের মৃত্যুর ঘটনা বেড়েছে। তবে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ এসব অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করেছে। ইসরায়েলের কারা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা আইন মেনেই বন্দিদের পরিচালনা করে থাকে।


দিল্লির ‘কাঁটা’ শেখ হাসিনা, সম্পর্কে টানাপোড়েন কতদিন?

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৯ ১৪:৩৯:৫০
দিল্লির ‘কাঁটা’ শেখ হাসিনা, সম্পর্কে টানাপোড়েন কতদিন?
ছবিঃ সংগৃহীত

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। একই মামলায় পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সোমবার ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এই রায় ঘোষণা করেন। ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। এরপর থেকে তিনি দেশটির রাজধানী নয়াদিল্লিতেই অবস্থান করছেন। এখন মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত শেখ হাসিনাকে ভারত বাংলাদেশের কাছে ফেরত দেবে কি না, তা নিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে চলছে নানা বিশ্লেষণ। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা সম্প্রতি এ নিয়ে একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

প্রতিবেদনে সীমা আখতার নামের ২৪ বছর বয়সী এক শিক্ষার্থীর প্রতিক্রিয়া তুলে ধরা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষার্থী ফুটবল অনুশীলনের সময় শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের খবর পান। তার কাছে এই রায়টি ন্যায়বিচারের এক মুহূর্ত বলে মনে হয়েছে। গত বছর শেখ হাসিনার নিরাপত্তা বাহিনীর দমন-পীড়নে সীমার কয়েকজন বন্ধুও নিহত হয়েছিলেন। সীমা আল-জাজিরাকে বলেন, ক্ষমতাচ্যুত শাসক ভেবেছিলেন তাকে কখনোই পরাজিত করা যাবে না এবং তিনি চিরকাল ক্ষমতায় থাকবেন। এই মৃত্যুদণ্ড শহীদদের জন্য ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার পথে একটি বড় পদক্ষেপ। তবে তিনি মনে করেন, শুধু সাজা ঘোষণাই যথেষ্ট নয়, এই রায় কার্যকর হতে দেখতে চান তারা।

শেখ হাসিনাকে ফেরত দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ভারত সরকারের কাছে বারবার অনুরোধ জানানো হলেও এখন পর্যন্ত তাতে সাড়া মেলেনি। গত ১৫ মাস ধরে বিষয়টি দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে উত্তেজনার অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখন তাকে মানবতাবিরোধী অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার ঘটনায় এই উত্তেজনা নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। যদিও ভারত শেখ হাসিনা-পরবর্তী বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক গড়ে তুলতে আগ্রহী, তবুও ভূ-রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, নয়াদিল্লি সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে মৃত্যুদণ্ডের মুখোমুখি করতে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবে—এমন দৃশ্য কল্পনা করা কঠিন।

ঢাকায় ভারতের সাবেক হাইকমিশনার পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তী প্রশ্ন তুলেছেন, নয়াদিল্লি কীভাবে তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিতে পারে? শেখ হাসিনা বাংলাদেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম সময় ধরে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৯৬ সালে প্রথমবার এবং ২০০৯ সালে দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর তিনি টানা ১৫ বছর দেশ শাসন করেন। তার শাসনামলে অনুষ্ঠিত নির্বাচনগুলোর অধিকাংশই বিরোধী দল বর্জন করেছিল অথবা প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুযোগ পায়নি। এই সময়ে হাজার হাজার মানুষকে গুম ও বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যার অভিযোগ রয়েছে। যদিও হাসিনা সরকার অর্থনৈতিক সাফল্যকে পুঁজি করে তাদের শাসনের বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল।

২০২৪ সালের জুলাইয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে বিক্ষোভ শুরু হলে নিরাপত্তা বাহিনীর দমন অভিযানের পর তা সরকার পতনের আন্দোলনে রূপ নেয়। আন্দোলনের তীব্রতায় ৫ আগস্ট ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। এরপর নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করে। এই সরকার ভারতের সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যেই পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা করছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। সম্প্রতি বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভারতের সঙ্গে প্রত্যর্পণ চুক্তির কথা উল্লেখ করে বলেছে, হাসিনাকে ফেরত পাঠানো নয়াদিল্লির জন্য আবশ্যিক দায়িত্ব। ভারত যদি তাকে ক্রমাগত আশ্রয় দিয়ে যায়, তবে তা হবে অত্যন্ত অবন্ধুসুলভ পদক্ষেপ।

তবে ভারতের রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা ভিন্ন মত পোষণ করছেন। নয়াদিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সঞ্জয় ভরদ্বাজ মনে করেন, ভারত এই ঘটনাকে বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক শক্তির প্রতিশোধ হিসেবে দেখছে। তার মতে, নয়াদিল্লি মনে করে বর্তমানে বাংলাদেশে যারা ক্ষমতায় আছে, তারা ভারতবিরোধী। হাসিনাকে হস্তান্তর করার অর্থ হবে সেই 'ভারতবিরোধী শক্তিকে' বৈধতা দেওয়া। প্রত্যর্পণ চুক্তিতে 'রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের' ক্ষেত্রে যে ব্যতিক্রমী ধারার সুযোগ রয়েছে, ভারত সেটি ব্যবহার করতে পারে।

হাসিনার বিরুদ্ধে রায় ঘোষণার পর ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা রায়ের বিষয়ে অবগত এবং বাংলাদেশের সব অংশীজনের সঙ্গে গঠনমূলকভাবে যুক্ত থাকবে। তবে বর্তমানে দুই দেশের সম্পর্ক বেশ শীতল। ভারতের সাবেক হাইকমিশনার পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তী মনে করেন, বর্তমান সরকারের অধীনে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের টানাপোড়েন থেকেই যাবে। তবে আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন সূচনা হতে পারে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

ভারতের জিন্দাল গ্লোবাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক শ্রীরাধা দত্ত বলেন, হাসিনার বিষয়ে ভারত একটি জটিল পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছে। বাংলাদেশে তার প্রতি জনগণের ক্ষোভকে উপেক্ষা করা দিল্লির পক্ষে সম্ভব নয়। ভারত হয়তো চাইবে ভবিষ্যতে আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় ফিরুক, কিন্তু বাস্তবতা হলো—হাসিনাকে আর কখনোই সুযোগ দেওয়ার সম্ভাবনা বাংলাদেশে নেই বললেই চলে। তাই ভারতের উচিত ঢাকার অন্য রাজনৈতিক শক্তির সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলা। তিনি আরও বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে মিত্রতা আগের মতো না থাকলেও একে অপরের প্রতি শিষ্টাচার বজায় রাখা প্রয়োজন।

বিশ্লেষকরা উল্লেখ করেছেন, শেখ হাসিনার সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক ঐতিহাসিক ও ব্যক্তিগত। ১৯৭৫ সালে পরিবারের সদস্যদের হত্যার পর তিনি ভারতে আশ্রয় নিয়েছিলেন এবং দীর্ঘ ছয় বছর সেখানে নির্বাসনে ছিলেন। তার শাসনামলে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক সমৃদ্ধ হয়েছিল। ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর যখন তার পালানোর প্রয়োজন হয়, তখন ভারত তাকে আশ্রয় দেয়। পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তীর মতে, ভারত তাকে থাকতে দিয়েছে কারণ তখন আর কোনো বিকল্প ছিল না। বিশেষ করে এখন যখন তার বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায় হয়েছে, তখন তাকে ফেরত পাঠানো ভারতের জন্য নৈতিকভাবে কঠিন।

ওয়াশিংটন ডিসিভিত্তিক দক্ষিণ এশীয় বিশ্লেষক মাইকেল কুগেলম্যান মনে করেন, ভারতে শেখ হাসিনার উপস্থিতি দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের মধ্যে একটি 'কাঁটা' হয়ে থাকবে। তবে এর মাধ্যমে ভারত তার মিত্রদের প্রতি বিশ্বস্ত থাকার প্রতিশ্রুতি পালন করতে সক্ষম হয়েছে। কুগেলম্যানের মতে, হাসিনার রাজনৈতিক প্রভাব এবং আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎকে পুরোপুরি উপেক্ষা করা যায় না। দক্ষিণ এশিয়ার ইতিহাসে দেখা যায়, পরিবারকেন্দ্রিক দলগুলো কঠিন সময়ে পড়লেও পুরোপুরি বিলীন হয়ে যায় না।

সূত্র: আল-জাজিরা


ট্রুডোর নতুন প্রেম নিয়ে অবশেষে মুখ খুললেন সাবেক স্ত্রী

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৯ ০৮:১০:০৭
ট্রুডোর নতুন প্রেম নিয়ে অবশেষে মুখ খুললেন সাবেক স্ত্রী
ছবি: সংগৃহীত

কানাডার সাবেক প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সাথে বিচ্ছেদের পর তাঁর নতুন প্রেম নিয়ে অবশেষে মুখ খুললেন সাবেক স্ত্রী সোফি গ্রেগোয়ার। দীর্ঘ ১৮ বছরের দাম্পত্য ভাঙার পর ব্যক্তিগত জীবনের ঝড়ঝাপটা সামলে নিতে যে পথকে তিনি বেছে নিয়েছেন, তা নিয়ে প্রথমবার খোলামেলা কথা বলেছেন এক পডকাস্টে।

চলতি সপ্তাহের শুরুতে ‘আর্লিন ইজ অ্যালন’ শিরোনামের একটি জনপ্রিয় পডকাস্টে অতিথি ছিলেন সোফি। সেখানেই উপস্থাপিকা আর্লিন ডিকিনসন জানতে চান, সাবেক স্বামী জাস্টিন ট্রুডোর নতুন সম্পর্কে জড়ানো এবং তা নিয়ে চলমান আলোচনা এসবের পরও কীভাবে তিনি এতটা শান্ত থাকেন। উত্তরে সোফি সোজাসাপটা বলেন, অযাচিত মন্তব্য বা সমালোচনার চেয়ে তিনি গান শুনে নিজের মনকে সামলে নিতে বেশি স্বস্তি বোধ করেন।

তিনি বলেন, মানুষ হিসেবে যেকোনো কিছুই প্রভাব ফেলে, আর সেটা লুকানোর প্রয়োজন নেই। তবে নিজের শক্তি ও আবেগ নিয়ন্ত্রণের জন্য তিনি সচেতন থাকার চেষ্টা করেন। তাঁর ভাষায়, “আমাকে অনেকেই ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে আক্রমণ করতে পারে, তাই আমি নিজের পথটা নিজেই বেছে নিই। অনুভূতিহীন হওয়া কখনোই সম্ভব নয়।”

গত সেপ্টেম্বরে ট্রুডো ও তাঁর প্রেমিকা, হলিউডের সুপরিচিত গায়িকা কেটি পেরির একটি ছবি পথচারীর ক্যামেরায় ধরা পড়ে। এরপর অক্টোবরে প্যারিসে পেরির জন্মদিনে তাঁদের হাত ধরাধরি অবস্থায় দেখা গেলে সম্পর্কটি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ্যে আসে।

সোফি এবং ট্রুডোর বিচ্ছেদ হয় ২০২৩ সালের আগস্টে। ২০০৫ সালে বিয়ে করা এই দম্পতির তিন সন্তান জেভিয়ার, এলা-গ্রেস ও হ্যাড্রিয়েন এখনো তাঁদের জীবনের কেন্দ্রবিন্দু।

-রফিক


বন্ধু দেশেই অপহরণের ফাঁদ! বাধ্য হয়ে ভারতের বিরুদ্ধে ইরানের কঠোর পদক্ষেপ

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৮ ২১:৩৪:৩৫
বন্ধু দেশেই অপহরণের ফাঁদ! বাধ্য হয়ে ভারতের বিরুদ্ধে ইরানের কঠোর পদক্ষেপ
ছবিঃ সংগৃহীত

ভারতীয় নাগরিকদের জন্য ইরানে প্রবেশের ক্ষেত্রে বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে। আগামী ২২ নভেম্বর থেকে তাদের জন্য আর থাকছে না ভিসামুক্ত সুবিধায় দেশটিতে ঢোকার সুযোগ। মানব পাচার এবং জালিয়াতির ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বেড়ে যাওয়ায় ইরান সরকার এই কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, এখন থেকে ইরানে প্রবেশ করতে হলে অথবা ট্রানজিট নিতে হলেও ভারতীয় নাগরিকদের আগে থেকেই ভিসা সংগ্রহ করতে হবে।

অথচ পর্যটন খাতকে চাঙ্গা করার লক্ষ্যে মাত্র গত বছরের (২০২৪) ফেব্রুয়ারি মাসেই ভারতীয়দের জন্য এই ভিসামুক্ত সুবিধা চালু করেছিল তেহরান। কিন্তু সেই সুবিধার অপব্যবহারের কারণেই তা বাতিল করতে হলো। এই সুবিধা চালু হওয়ার পর থেকেই বেশ কিছু অপরাধমূলক ঘটনা সামনে আসতে থাকে। দেখা গেছে, একটি সংঘবদ্ধ চক্র চাকরির মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে বা ইউরোপ ও অন্যান্য দেশে পাঠানোর কথা বলে ভারতীয়দের ইরানে নিয়ে যাচ্ছে। মূলত ভিসামুক্ত প্রবেশের সহজ সুযোগটিকেই কাজে লাগাচ্ছিল মানব পাচারকারীরা।

ভারতে অবস্থিত ইরানি দূতাবাস সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) এক পোস্টে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। তারা জানিয়েছে, ২২ নভেম্বর থেকে সাধারণ পাসপোর্টধারী ভারতীয় নাগরিকদের ইসলামিক প্রজাতন্ত্র ইরানে প্রবেশ বা ট্রানজিটের জন্য ভিসা নেওয়া বাধ্যতামূলক। তবে যারা প্রকৃত পর্যটক, তাদের ভিসা পেতে কোনো সমস্যা হবে না বলেও আশ্বস্ত করা হয়েছে।

অন্যদিকে, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সোমবার (১৭ নভেম্বর) জানিয়েছে, মানব পাচারকারী চক্রের লাগাম টানতেই ইরানের এই সিদ্ধান্ত। মন্ত্রণালয়ের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, দালালচক্র বহু ভারতীয়কে ভুয়া চাকরির লোভ দেখিয়ে ইরানে পাঠাচ্ছিল। অনেককে বলা হয়েছিল ইরানে গেলে উচ্চ বেতনের চাকরির সুযোগ রয়েছে, কিংবা সেখান থেকেই সহজে উপসাগরীয় দেশ বা ইউরোপের পথে যাওয়া যাবে। কিন্তু বাস্তবে ইরানে পৌঁছানোর পর অনেককেই অপহরণ করে জিম্মি করা হয় এবং তাদের পরিবারের কাছে মোটা অংকের মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টা করে পাচারকারীরা।

তদন্তে দেখা গেছে, ভুয়া চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ভারতীয়দের ইরানে নিয়ে গিয়ে আটকে রাখার ঘটনা বাড়ছে। ক্রমাগত কয়েকটি অপহরণ ও পাচারের ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর বিষয়টি ভারত সরকারের নজরে আসে। এর আগে গত মাসেও ভারত সরকার নাগরিকদের সতর্ক করে বলেছিল যে, ভিসামুক্ত প্রবেশ সুবিধা কেবল পর্যটনের জন্য, কাজের উদ্দেশ্যে নয়।

ইরানে এমন জালিয়াতির একটি ভয়াবহ উদাহরণ দেখা যায় চলতি বছরের মে মাসে। অবৈধভাবে অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হওয়া তিনজন পাঞ্জাবি যুবক—জাসপাল সিং, অমৃতপাল সিং এবং হুশানপ্রীত সিংকে ইরানে অপহরণ করা হয়। পাঞ্জাবের এক এজেন্ট তাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে দুবাই ও ইরান হয়ে তাদের অস্ট্রেলিয়ায় পাঠানো হবে। কিন্তু ১ মে ইরানে নামার পরপরই তাদের অপহরণ করা হয়। ভুক্তভোগীদের পরিবারের দাবি, অপহরণকারীরা তাদের মুক্তির বিনিময়ে ১ কোটি রুপি দাবি করেছিল। পরে ভারতের অনুরোধে ইরানি কর্তৃপক্ষ হস্তক্ষেপ করার পর ওই তিনজনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়।


অভিমান ভুলে কি ট্রাম্পের ডিনারে যাবেন মাস্ক? নজর এখন হোয়াইট হাউসে

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৮ ২০:৪৩:২৯
অভিমান ভুলে কি ট্রাম্পের ডিনারে যাবেন মাস্ক? নজর এখন হোয়াইট হাউসে
ছবিঃ সংগৃহীত

সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সম্মানে একটি বিশেষ নৈশভোজের আয়োজন করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই আয়োজনে টেসলার প্রধান নির্বাহী এবং একসময় ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে পরিচিত ইলন মাস্কও অংশ নিতে পারেন বলে আশা করা হচ্ছে। মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) সৌদি যুবরাজের যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছানোর কথা রয়েছে, যেখানে তিনি হোয়াইট হাউসে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করবেন। মার্কিন সংবাদমাধ্যম পাঞ্চবোল নিউজের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

পাঞ্চবোল নিউজের বরাতে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম লাইভ মিন্ট জানিয়েছে, হোয়াইট হাউসের ‘ইস্ট রুম’-এ আয়োজিত এই নৈশভোজে বিশ্বখ্যাত গলফার টাইগার উডসও অংশ নিতে যাচ্ছেন। তবে ইলন মাস্ক শেষ পর্যন্ত ট্রাম্পের এই আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন কি না, সে বিষয়ে এখনো নিশ্চিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

জ্বালানি তেল এবং নিরাপত্তা খাতে দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের যে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক রয়েছে, তা আরও মজবুত করাই এই বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য। উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সাংবাদিক এবং সৌদি রাজপরিবারের কঠোর সমালোচক জামাল খাসোগি হত্যাকাণ্ডের ঘটনার পর এটিই যুবরাজ সালমানের প্রথম যুক্তরাষ্ট্র সফর।

জানা গেছে, হোয়াইট হাউসের জন এফ. কেনেডি সেন্টার ফর দ্য পারফর্মিং আর্টসে ট্রাম্প এবং সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের (এমবিএস) মধ্যে একটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এরপরই এই নৈশভোজের আয়োজন করা হয়েছে। রয়টার্সের একটি সূত্রের বরাতে জানা গেছে, এই অনুষ্ঠানে শেভরন, কোয়ালকম, সিসকো, জেনারেল ডায়নামিক্স এবং ফাইজারের মতো বড় বড় প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীরাও উপস্থিত থাকবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

এর আগে, গত জুন মাসে ট্রাম্প প্রশাসনের কর ও ব্যয় সংক্রান্ত বিল নিয়ে ইলন মাস্কের সঙ্গে ট্রাম্পের সম্পর্কের মধ্যে কিছুটা ফাটল ধরেছিল। সে সময় ডিওজিই-এর প্রধানের পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন মাস্ক। ওই বিরোধের জের ধরে হোয়াইট হাউসে শীর্ষ প্রযুক্তি ও ব্যবসায়ী নেতাদের জন্য আয়োজিত একটি নৈশভোজে যোগদানের জন্য ট্রাম্পের আমন্ত্রণও তিনি প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।


হাসিনার মৃত্যুদণ্ড 'খুবই উদ্বেগজনক ও হতাশাজনক': শশী থারুর

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৮ ১৭:১৪:৫৩
হাসিনার মৃত্যুদণ্ড 'খুবই উদ্বেগজনক ও হতাশাজনক': শশী থারুর
ছবিঃ সংগৃহীত

বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রবীণ কংগ্রেস নেতা ও সংসদ সদস্য শশী থারুর। তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের এই রায়কে 'খুবই উদ্বেগজনক এবং হতাশাজনক' বলে অভিহিত করেছেন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে দেওয়া এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এই মন্তব্য করেন।

গত বছরের আগস্ট মাসে গণঅভ্যুত্থানের মুখে দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন শেখ হাসিনা। সোমবার (১৭ নভেম্বর) বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ তাকে 'মানবতাবিরোধী অপরাধের' দায়ে মৃত্যুদণ্ড দেন।

এই রায়ের বিষয়ে শশী থারুর তার ব্যক্তিগত অবস্থান পরিষ্কার করে বলেন, তিনি দেশ বা বিদেশ—কোথাও মৃত্যুদণ্ডের পক্ষপাতী নন। তাই এই রায় তাকে বিশেষভাবে বিচলিত করেছে। তিনি বিচারের প্রক্রিয়া নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। থারুর বলেন, "অনুপস্থিতিতে বিচার, যেখানে অভিযুক্ত নিজের পক্ষে সাফাই দেওয়ার বা আত্মপক্ষ সমর্থনের কোনো সুযোগ পান না—এ ধরনের রায়কে ইতিবাচক বলা কঠিন।" তিনি আরও যোগ করেন, "অন্য দেশের বিচারব্যবস্থা নিয়ে মন্তব্য করা ঠিক নয়, তবে এটাকে খুব ইতিবাচক কিছু বলা যায় না—এটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক।"

এদিকে বিবিসি জানিয়েছে, শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের এই রায় ভারতের জন্য কূটনৈতিকভাবে একটি অত্যন্ত জটিল পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বাংলাদেশ যদি এখন তাকে ফেরত চায়, তবে ভারতকে প্রত্যর্পণ চুক্তির আওতায় কঠিন এক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ২০২৪ সালের আগস্টে ভারতে আশ্রয় নেওয়ার পর বাংলাদেশ সরকার এরই মধ্যে দুই দফায় তাকে ফেরত চেয়ে অনুরোধ জানিয়েছে, কিন্তু ভারত এখন পর্যন্ত তাতে কোনো সাড়া দেয়নি।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকাকালে বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিল। বর্তমানে ভারতের কংগ্রেসসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল তাকে বাংলাদেশে ফেরত না পাঠানোর পক্ষেই অবস্থান নিয়েছে বলে জানা গেছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই রায় এবং শেখ হাসিনার অবস্থান নিয়ে সৃষ্ট রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক জটিলতা ভবিষ্যতে দুই প্রতিবেশী দেশের সম্পর্কের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।


ওয়াশিংটন–সিউল চুক্তিতে তীব্র প্রতিক্রিয়া পিয়ংইয়ংয়ের: এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরে অস্থিরতার ইঙ্গিত

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৮ ১১:৫০:২১
ওয়াশিংটন–সিউল চুক্তিতে তীব্র প্রতিক্রিয়া পিয়ংইয়ংয়ের: এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরে অস্থিরতার ইঙ্গিত
ছবিঃ সংগৃহীত

দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পারমাণবিকচালিত সাবমেরিন নির্মাণ নিয়ে হওয়া নতুন চুক্তির কড়া নিন্দা জানিয়েছে উত্তর কোরিয়া। মঙ্গলবার দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম কেসিএনএ-তে প্রকাশিত মন্তব্যে পিয়ংইয়ং দাবি করেছে, এই চুক্তি এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে “পারমাণবিক ডোমিনো” সৃষ্টি করবে এবং সামগ্রিক নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করে তুলবে।

গত সপ্তাহে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জে মিয়ং বহু প্রতীক্ষিত যুক্তরাষ্ট্র-দক্ষিণ কোরিয়া নিরাপত্তা ও বাণিজ্য চুক্তির চূড়ান্তকরণ ঘোষণা করেন। চুক্তির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিন উন্নয়ন পরিকল্পনা এগিয়ে নেওয়া। সিউল জানিয়েছে, তারা ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ এবং ব্যবহৃত জ্বালানি পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণে তাদের সক্ষমতা ও সিদ্ধান্তগ্রহণের পরিধি বাড়ানোর বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন পেয়েছে—যা দীর্ঘদিন ধরেই তাদের লক্ষ্য ছিল।

চুক্তির প্রথম প্রতিক্রিয়ায় উত্তর কোরিয়া একে “বিপজ্জনক সংঘাত-প্ররোচনামূলক উদ্যোগ” হিসেবে বর্ণনা করে বলেছে, এটি শুধু কোরীয় উপদ্বীপ নয়, বরং গোটা এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের নিরাপত্তাকে গভীরভাবে অস্থির করে তুলবে। কেসিএনএ-র ভাষ্য অনুযায়ী, এই উদ্যোগ বৈশ্বিক অ-প্রসারণ কাঠামোকেও দুর্বল করে “নিউক্লিয়ার নিয়ন্ত্রণহীনতার” পরিবেশ সৃষ্টি করবে।

পিয়ংইয়ং আরও সতর্ক করে জানায়, দক্ষিণ কোরিয়ার হাতে পারমাণবিকচালিত সাবমেরিন গেলে তা এলাকায় একটি “পারমাণবিক ডোমিনো ঘটনার সূত্রপাত” করবে এবং নতুন করে অস্ত্র প্রতিযোগিতা উসকে দেবে। উত্তর কোরিয়া যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার “সামরিক মোকাবেলার অভিপ্রায়” উদ্ধৃত করে বলেছে, তারা “ন্যায্য ও প্রয়োজনীয় প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ” নিতে বাধ্য হবে।

অক্টোবর মাসে উত্তর কোরিয়া একটি ব্যালিস্টিক রকেট ইঞ্জিনের নবম ও চূড়ান্ত পরীক্ষার কথা জানায়, যা দ্রুতই নতুন আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) পরীক্ষার ইঙ্গিত দেয়। এমন পরিস্থিতিতে পারমাণবিকচালিত সাবমেরিন ইস্যুটি অঞ্চলজুড়ে আরও উত্তেজনা ছড়াচ্ছে।

দক্ষিণ কোরিয়ার নতুন মন্তব্যটি এসেছে এমন সময়, যখন সিউল সাত বছর পর প্রথমবারের মতো আন্তঃসীমান্ত সামরিক উত্তেজনা কমাতে পিয়ংইয়ং-কে আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছে। প্রেসিডেন্ট লি কঠোর অবস্থানের জন্য পরিচিত তার পূর্বসূরীর নীতির বিপরীতে শর্তহীনভাবে আলোচনায় বসার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।

সিউলের নর্থ কোরিয়ান স্টাডিজ ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ইয়াং মু-জিন এএফপিকে বলেন, উত্তর কোরিয়ার উদ্বেগের মূল কারণ হলো—দক্ষিণ কোরিয়ার পারমাণবিকচালিত সাবমেরিন অর্জন “তাদের আংশিক পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার সোপান হয়ে উঠতে পারে।” তার মতে, এই পরিস্থিতি আন্তঃকোরীয় সামরিক আলোচনার সম্ভাবনাকেও ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।

উত্তর কোরিয়া এখনো দক্ষিণ কোরিয়ার আলোচনার প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি।

এদিকে চীনও ওয়াশিংটন-সিউল পারমাণবিক সাবমেরিন সহযোগিতা নিয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছে। সিউলে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত দাই বিং বলেন, এই অংশীদারিত্ব “শুধু বাণিজ্যিক প্রকল্পের বাইরে গিয়ে বৈশ্বিক অ-প্রসারণ ব্যবস্থাকে সরাসরি প্রভাবিত করে, যা কোরীয় উপদ্বীপ ও বৃহত্তর অঞ্চলের স্থিতিশীলতার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।”

-নাজমুল হাসান


যুক্তরাষ্ট্র–সৌদি সম্পর্ক পুনর্গঠনে কূটনৈতিক দেনদরবার ও আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৮ ১১:৩৮:৩৬
যুক্তরাষ্ট্র–সৌদি সম্পর্ক পুনর্গঠনে কূটনৈতিক দেনদরবার ও আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা
ছবিঃ সংগৃহীত

মঙ্গলবার ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের নতুন অধ্যায় সূচনার লক্ষ্য নিয়ে হোয়াইট হাউসে পৌঁছেছেন সৌদি আরবের প্রভাবশালী ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান। গত কয়েক দশকের তেলনির্ভর সহযোগিতা ও নিরাপত্তা অংশীদারিত্ব আরও গভীর করার পাশাপাশি বাণিজ্য, প্রযুক্তি, প্রতিরক্ষা এবং সম্ভাব্যভাবে বেসামরিক পারমাণবিক শক্তি উন্নয়ন—এই বিস্তৃত ক্ষেত্রগুলোতে সম্পর্ক আরও সম্প্রসারণ করাই সফরের মূল ফোকাস।

২০১৮ সালে ইস্তাম্বুলে সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ডের পর এটি এমবিএস–এর প্রথম যুক্তরাষ্ট্র সফর। ওই হত্যাকাণ্ড বিশ্বব্যাপী তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছিল এবং মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো উপসংহারে এসেছিল—মোহাম্মদ বিন সালমান অভিযানটির অনুমোদন দিয়েছিলেন। তিনি অবশ্য সরাসরি কোনও নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন, তবে দেশের কার্যত শাসক হিসেবে দায় স্বীকার করেছিলেন।

সাত বছরের বেশি সময় পর ভিন্ন প্রেক্ষাপটে আবারও ঘনিষ্ঠতায় ফিরতে চায় উভয় দেশ—একদিকে বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতি, অন্যদিকে বৈশ্বিক জ্বালিবাজারের শীর্ষ উৎপাদক।

ট্রাম্প তার গত সফরে সৌদি আরবের করা ৬০০ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ অঙ্গীকারকে সামনে রেখে নতুন অর্থনৈতিক সুযোগ উন্মোচনে আগ্রহী। মানবাধিকার ইস্যু তিনি আগে এড়িয়ে গিয়েছিলেন, এবারও সেই ধারা বজায় রাখার ইঙ্গিত দিয়েছেন। অন্যদিকে সৌদি নেতৃত্ব আঞ্চলিক অস্থিরতার মধ্যে শক্তিশালী নিরাপত্তা নিশ্চয়তা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তিতে প্রবেশাধিকার এবং বেসামরিক পারমাণবিক কর্মসূচির লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা চায়।

সোমবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প নিশ্চিত করেন যে, রিয়াদকে উন্নত মার্কিন এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান বিক্রি করতে তিনি অনুমোদন দেবেন। এই বিক্রয় অনুমোদন মধ্যপ্রাচ্যের সামরিক ভারসাম্যে বড় ধরনের পরিবর্তন এনে দিতে পারে এবং দীর্ঘদিন ধরে ইসরায়েলের প্রতিবেশীদের ওপর ‘গুণগত সামরিক সুবিধা’ বজায় রাখার মার্কিন নীতিকে নতুন করে প্রশ্নের মুখে ফেলতে পারে।

সৌদি বিশ্লেষক আজিজ আলঘাশিয়ান বলেন, খাশোগি হত্যাকাণ্ডের অধ্যায় “এখন কার্যত পেছনে ফেলে এগিয়ে যাচ্ছে” ওয়াশিংটন ও রিয়াদ।

প্রতিরক্ষা অংশীদারিত্বে নতুন সমীকরণ

দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্র–সৌদি সম্পর্কের ভিত্তি ছিল তেলের স্থিতিশীল সরবরাহ এবং বিনিময়ে মার্কিন নিরাপত্তা নিশ্চয়তা। তবে ২০১৯ সালে ইরানের হামলায় সৌদি তেল স্থাপনাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হলেও ওয়াশিংটনের কার্যকর প্রতিক্রিয়া না পাওয়া দুই দেশের সম্পর্কে অস্বস্তি তৈরি করে। সাম্প্রতিক সময়ে হামাস সদস্যদের লক্ষ্য করে ইসরায়েলের দোহা বোমা হামলা এই উদ্বেগ নতুন করে উসকে দেয়।

এ প্রেক্ষাপটে ট্রাম্প নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে কাতারের সঙ্গে একটি প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন। অনেক পর্যবেক্ষক মনে করেন, সৌদি আরবও এ ধরনের সুবিধা পাবে।

রিয়াদ সবশেষ আলোচনায় কংগ্রেস অনুমোদিত পূর্ণাঙ্গ প্রতিরক্ষা চুক্তির দাবি জানালেও, ওয়াশিংটন এটিকে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার শর্তসাপেক্ষে বিবেচনা করছে।সৌদি নেতৃত্ব আবার ইসরায়েলের কাছ থেকে একটি দৃশ্যমান ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি না পাওয়া পর্যন্ত সেই পদক্ষেপ নিতে রাজি নয়।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সম্প্রতি গাজায় যুদ্ধবিরতির পরও ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিপক্ষে তার অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছেন। ফলে প্রতিরক্ষা চুক্তির পথ আপাতত জটিল হয়ে আছে।

পাশাপাশি আলঘাশিয়ান মনে করেন, কাতারের মডেলের মতো যে কোনও নির্বাহী আদেশ পূর্ণাঙ্গ চুক্তি না হলেও “প্রক্রিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ” হবে।

এক পশ্চিমা কূটনীতিক সংক্ষেপে বলেন, “ট্রাম্প চান স্বাভাবিকীকরণ, সৌদি চায় পূর্ণ প্রতিরক্ষা চুক্তি—কিন্তু দুই পক্ষই পুরোটা পাবে না; এটিই বাস্তবকথা, এটিই কূটনীতি।”

বিশেষজ্ঞ ডেনিস রস মনে করেন, সম্ভাব্য নির্বাহী আদেশ যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবকে যে কোনো নিরাপত্তা হুমকির ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক পরামর্শ ও সহযোগিতার কাঠামো দেবে। এতে অস্ত্র প্রতিস্থাপন থেকে শুরু করে থাড বা প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা মোতায়েন, এমনকি আঞ্চলিক নৌবাহিনী পাঠানোর মতো বিস্তৃত সহায়তা থাকতে পারে।

নিউক্লিয়ার ও এআই এজেন্ডা: আঞ্চলিক প্রতিযোগিতা তুঙ্গে

সৌদি আরবের ভিশন ২০৩০ পরিকল্পনার লক্ষ্য—তেলনির্ভরতা কমিয়ে প্রযুক্তি, জ্বালানি, উদ্ভাবন ও শিল্পায়নে নিজেদের শক্তিশালী অবস্থানে স্থাপন করা। এ কারণেই তারা এআই প্রযুক্তি এবং উন্নত চিপস অ্যাক্সেসকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মনে করছে। তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী সংযুক্ত আরব আমিরাত সম্প্রতি উন্নতমানের মার্কিন চিপস ব্যবহারের সুযোগ পেয়েছে, যা রিয়াদের ওপর প্রতিযোগিতার চাপ বাড়িয়েছে।

এছাড়া সৌদি নেতৃত্ব একটি পূর্ণাঙ্গ বেসামরিক পারমাণবিক কর্মসূচির স্বপ্ন দেখছে। তবে এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের শর্ত—ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বা ব্যবহৃত জ্বালানির পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণের অধিকার না রাখার অঙ্গীকার—রিয়াদ গ্রহণে অনীহা প্রকাশ করেছে। কারণ এই দুটি প্রক্রিয়া পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির প্রযুক্তিগত পথ উন্মুক্ত করতে পারে।

ডেনিস রস আশা করেন, আলোচনায় কিছু অগ্রগতি হবে এবং অন্তত একটি পারমাণবিক সহযোগিতা চুক্তি—অথবা এ নিয়ে আশাবাদী বিবৃতি—ঘোষণা হতে পারে।

-আলমগীর হোসেন

পাঠকের মতামত:

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

রাষ্ট্রের ধারণাটি একসময় কেবল প্রশাসনিক ক্ষমতা, আইনের শাসন এবং নিরাপত্তা প্রদানের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল। কিন্তু আধুনিক বিশ্বে রাষ্ট্রের ভূমিকা এখন... বিস্তারিত