চীনা অস্ত্রে সজ্জিত পাকিস্তান: ভারতের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ!

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ মে ১৮ ১৩:০৯:০৮
চীনা অস্ত্রে সজ্জিত পাকিস্তান: ভারতের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ!

সত্য নিউজ: পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যকার সাম্প্রতিক সীমান্ত উত্তেজনা দক্ষিণ এশিয়ার আকাশে এক নতুন সামরিক বাস্তবতার ইঙ্গিত দিচ্ছে। গত ৭ মে ঘটে যাওয়া এক সংঘর্ষে পাকিস্তান দাবি করেছে, তারা চীনের তৈরি জে-১০সি যুদ্ধবিমান এবং দূরপাল্লার পিএল-১৫ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে যার মধ্যে রয়েছে তিনটি ফরাসি ‘রাফাল’ এবং দুটি রুশ নির্মিত পুরনো বিমান।

পাকিস্তান বিমান বাহিনীর তথ্যমতে, ১১৪টি বিমান অংশগ্রহণকারী এই সংঘর্ষ চলে এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে, যা পুরোপুরি পরিচালিত হয়েছে ‘বিয়ন্ড ভিজুয়াল রেঞ্জ’ বা দৃষ্টির বাইরে থেকে—যা আধুনিক বিমানযুদ্ধের একটি নিখুঁত নিদর্শন।

ভারত এই দাবিগুলো সরাসরি অস্বীকার না করলেও নিশ্চিত করেছে, সংঘর্ষে তাদের কোনো পাইলট হতাহত হয়নি এবং পাল্টা হামলায় পাকিস্তানের বেশ কয়েকটি ‘উচ্চ-প্রযুক্তির’ বিমান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পাকিস্তান অবশ্য পাল্টা দাবি করেছে, কেবল একটি বিমান আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই সংঘর্ষ প্রথমবারের মতো জে-১০সি যুদ্ধবিমানের ব্যবহারকে সরাসরি রণক্ষেত্রে পরীক্ষিত করল, বিশেষ করে এমন একটি পরিস্থিতিতে যেখানে পশ্চিমা যুদ্ধবিমান রাফাল রয়েছে প্রতিপক্ষ হিসেবে। যদিও এটি প্রমাণ করে না যে জে-১০সি রাফালের চেয়ে শ্রেষ্ঠ, তবে এটি আকাশযুদ্ধের কৌশলে এক বড় মোড় পরিবর্তনের আভাস দিচ্ছে।

চীনের পক্ষ থেকে সরাসরি কোনো প্রতিক্রিয়া না এলেও ১২ মে চায়না স্পেস নিউজের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, পাকিস্তান একটি নতুন ইন্টিগ্রেটেড এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম ব্যবহার করেছে, যা টার্গেট শনাক্ত করে অন্য প্ল্যাটফর্ম থেকে মিসাইল উৎক্ষেপণের সুযোগ দিয়েছে। যদিও প্রকাশনায় চীনের সরঞ্জামের নাম নেই, বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন, পাকিস্তানে ব্যবহৃত চীনা উৎপাদিত রাডার ও আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাই এতে নিয়োজিত ছিল—যা ভারত দাবি করেছে, তারা ব্যাহত করেছে।

ভারতের জন্য এই সংঘর্ষ একটি কৌশলগত সতর্কবার্তা। দেশটি বিগত এক দশকে প্রায় ৬২টি রাফাল যুদ্ধবিমান সংগ্রহ করেছে, এবং আরও কেনার প্রক্রিয়া চলমান। অপরদিকে, পাকিস্তান ২০০৭ সাল থেকে চীনের সঙ্গে যৌথভাবে তৈরি জেএফ-১৭ সংগ্রহ করেছে, এবং ২০২۲ সালের পর চীনের কাছ থেকে ২০টি উন্নততর জে-১০সি সংগ্রহ করে যা মূলত চীনের নিজস্ব বিমানবাহিনীতে ব্যবহৃত হয় তাইওয়ান উপকূলে।

এই সংঘর্ষ কেবল ভারত-পাকিস্তান সীমাবদ্ধ নয়, বরং এর প্রভাব পৌঁছাতে পারে বৃহত্তর ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে। চীন-যুক্তরাষ্ট্র সামরিক উত্তেজনার পটভূমিতে, জে-১০সি-র সফল বাস্তব ব্যবহারের বার্তা যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের জন্যও কৌশল পুনর্মূল্যায়নের ইঙ্গিত হতে পারে। ইতোমধ্যে চীনা বিমান প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের শেয়ারমূল্যও বেড়ে গেছে, যা এই সংঘর্ষকে একটি প্রতীকী কিন্তু বাস্তব সামরিক জয়ের প্রমাণ হিসেবে দাঁড় করিয়েছে।

তবে সামরিক বিশ্লেষকরা সতর্ক করে বলছেন, একক সংঘর্ষের ভিত্তিতে যুদ্ধবিমানের কার্যকারিতা বিচার করা বিভ্রান্তিকর হতে পারে। প্রযুক্তি, পাইলটের দক্ষতা, কৌশলগত পরিকল্পনা এবং পরিস্থিতিগত চাপ—সবই এতে ভূমিকা রাখে।

তবুও, দক্ষিণ এশিয়ার আকাশে রাফালের বিরুদ্ধে জে-১০সি-র এই সংঘর্ষ বর্তমান ও ভবিষ্যৎ যুদ্ধকৌশলের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ নজির হয়ে রইল। সশস্ত্র আধিপত্যের দৌড়ে, এটি কেবল অস্ত্রের নয়, কৌশলেরও এক নতুন যুগের সূচনা করছে।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যযুদ্ধ: বৈশ্বিক অর্থনীতি এবং ভবিষ্যৎ প্রতিযোগিতা

চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যযুদ্ধ: বৈশ্বিক অর্থনীতি এবং ভবিষ্যৎ প্রতিযোগিতা

বিশ্ব অর্থনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে, এবং এই পরিবর্তনটির মূল কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধ।... বিস্তারিত