কিম জং উনের হুঁশিয়ারি: ‘নিরস্ত্রীকরণ নয়, চাই সহাবস্থান’

উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন আবারও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সংলাপের সম্ভাবনার ইঙ্গিত দিয়েছেন—তবে শর্ত থাকছে নিজের পারমাণবিক অস্ত্র ভাণ্ডার অক্ষুণ্ন রাখার। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে স্মরণ করে কিম বলেন, “আমি এখনো তাঁর সঙ্গে সাক্ষাতের মধুর স্মৃতি ধারণ করে আছি।”
ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে কিম ও ট্রাম্পের মধ্যে তিন দফা উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হয়েছিল। তবে ২০১৯ সালে হ্যানয়ের আলোচনায় চুক্তি ভেস্তে যায়। মূল বিতর্ক ছিল—উত্তর কোরিয়া কতটুকু ছাড় দেবে তার পারমাণবিক কর্মসূচি থেকে এবং যুক্তরাষ্ট্র কতটুকু নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবে।
কিম জং উন তাঁর দেশের rubber-stamp সংসদে দেওয়া ভাষণে বলেন, “যদি যুক্তরাষ্ট্র ভ্রান্ত ‘পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ’ আসক্তি ত্যাগ করে বাস্তবতা মেনে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের আন্তরিক ইচ্ছা প্রকাশ করে, তবে আমাদের আবার বসতে কোনো বাধা নেই।” তিনি জোর দিয়ে বলেন, “বিশ্ব জানে, যুক্তরাষ্ট্র কোনো দেশের পারমাণবিক অস্ত্র সরিয়ে নেওয়ার পর কী করে থাকে। তাই আমরা কখনো পারমাণবিক অস্ত্র ছেড়ে দেব না।”
উত্তর কোরিয়া ২০২২ সালে নিজেদের “অপরিবর্তনীয় পারমাণবিক রাষ্ট্র” হিসেবে ঘোষণা করে। কিমের মতে, জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা উত্তর কোরিয়াকে দুর্বল না করে বরং আরও শক্তিশালী করেছে, “যা কোনো চাপেই ভাঙবে না।”
দক্ষিণ কোরিয়া প্রসঙ্গে কিম সোজাসাপ্টা বলেন, “তাদের সঙ্গে বসার কোনো কারণ নেই। আমরা স্পষ্ট করছি—কোনো ধরনের আলোচনায় যাব না।” গত কয়েক বছরে উত্তর কোরিয়া দক্ষিণকে প্রধান শত্রু ঘোষণা করেছে, রেলপথ ও সড়ক সংযোগ ধ্বংস করেছে।
রাশিয়া-উত্তর কোরিয়া ঘনিষ্ঠতা
বিশ্লেষকদের মতে, ইউক্রেন যুদ্ধ কিমকে আরও সাহসী করে তুলেছে। রাশিয়ার সঙ্গে সামরিক ও রাজনৈতিক সহযোগিতা ক্রমশ বাড়ছে। মস্কোকে সমর্থন জানাতে উত্তর কোরিয়া হাজার হাজার সৈন্য ও অস্ত্র পাঠিয়েছে। গত বছর প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের পিয়ংইয়ং সফরের সময় দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি হয়।
সিউল বারবার সতর্ক করেছে—রাশিয়া উত্তর কোরিয়াকে উন্নত সামরিক প্রযুক্তি হস্তান্তরের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে, যা অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হতে পারে।
ট্রাম্পের সফরের আগে কৌশলগত বার্তা
ট্রাম্প আগামী মাসে দক্ষিণ কোরিয়া সফর করবেন, যখন দেশটি এশিয়া-প্যাসিফিক ইকোনমিক কোঅপারেশন (APEC) সম্মেলনের আয়োজন করবে। দক্ষিণ কোরিয়ার ক্যুংনাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক লিম উল-চুল বলেন, “ট্রাম্পের সফরের আগে কিমের এই মন্তব্য সময়োপযোগী। এটি একদিকে আকস্মিক শীর্ষ বৈঠকের ইঙ্গিত দেয়, অন্যদিকে ট্রাম্পের ব্যক্তিগত আকাঙ্ক্ষা—যেমন নোবেল শান্তি পুরস্কারের বাসনা—কেও স্পর্শ করে।”
বিশ্লেষক ইয়াং মুজিনের মতে, কিমের ভাষণ ছিল একই সঙ্গে আত্মবিশ্বাসী ও সতর্কতামূলক—যা যেমন আন্তর্জাতিক মহলকে বার্তা দিয়েছে, তেমনি অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতাও নিশ্চিত করার চেষ্টা করেছে।
-এ এফ পি
মার্কিন নাগরিকদের ওপর ইসরায়েলের হামলা
লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর বিনত জবেইলে ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় শিশুসহ অন্তত চার মার্কিন নাগরিক নিহত হয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে। রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর এই দাবির সত্যতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে।
লেবাননের দাবি ও নিহতদের পরিচয়
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় এক পরিবারের পাঁচ সদস্য নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে সেলিন, হাদি এবং আসিল নামের তিনজনই শিশু। তারা সবাই একই পরিবারের সদস্য। সরকারি সংবাদ সংস্থা ন্যাশনাল নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, রোববারের ওই হামলাটি একটি মোটরসাইকেল ও একটি গাড়িকে লক্ষ্য করে চালানো হয়। হামলায় আরও দুজন আহত হয়েছেন।
লেবাননের সংসদের স্পিকার নাবিহ বেরি দাবি করেছেন, নিহত শিশু ও তাদের পিতা মার্কিন নাগরিক ছিলেন।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মন্তব্য
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, পরিস্থিতি এখনো অস্পষ্ট। তবে এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যাচ্ছে নিহতরা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ছিলেন না। তবে একজনের পূর্বে একটি অভিবাসন ভিসার আবেদন ছিল।
ইসরায়েলের দাবি ও হামলা
ইসরায়েল দাবি করেছে, এই হামলায় হিজবুল্লাহর একজন সদস্য নিহত হয়েছে, তবে তারা স্বীকার করেছে যে, এতে বেসামরিক নাগরিকও মারা গেছেন।
উল্লেখ্য, ইসরায়েল প্রায় প্রতিদিনই লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে হামলা চালাচ্ছে। তারা দাবি করছে, ইরান-সমর্থিত হিজবুল্লাহ যেন নতুন করে সামরিক শক্তি গড়ে তুলতে না পারে, সে উদ্দেশ্যেই এই অভিযান চালানো হচ্ছে। গত বছরের নভেম্বরে ইসরায়েল ও লেবাননের প্রতিরোধ যোদ্ধাদের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। তবে প্রতিনিয়ত চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করে আসছে ইসরায়েল।
ড. ইউনূসকে কেন্দ্র করে উত্তাল নিউইয়র্ক: বিএনপি-আওয়ামী লীগের হাতাহাতি
নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে বিএনপি এবং আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টার দিকে (নিউইয়র্ক সময়) ড. মোহাম্মদ ইউনূসকে স্বাগত জানানো ও প্রতিহত করাকে কেন্দ্র করে এই ঘটনা ঘটে।
ঘটনার সূত্রপাত ও হাতাহাতি
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির পক্ষ থেকে সন্ধ্যা ৭টায় জ্যাকসন হাইটসে একটি স্বাগত সমাবেশ করে। প্রায় ২০০ নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে সমাবেশটি শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়।
তবে বিএনপির সমাবেশের পর ক্যালিফোর্নিয়া, ফ্লোরিডা, জর্জিয়া, মিশিগান, শিকাগো, বস্টন, পেনসিলভানিয়া, ভার্জিনিয়া, ম্যারিল্যান্ড, নিউজার্সি ও কানেকটিকাট থেকে আওয়ামী লীগের প্রায় ৫০ জন নেতাকর্মী জ্যাকসন হাইটসে জড়ো হতে শুরু করেন। তারা ইউনূস বিরোধী স্লোগান দিতে থাকে এবং এক পর্যায়ে উপস্থিত বিএনপি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করেও স্লোগান দেয়। বিএনপি নেতাকর্মীরা তাদের জ্যাকসন হাইটস থেকে চলে যেতে বললে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে দুই গ্রুপের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে নিউইয়র্ক পুলিশ এসে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
বিএনপি ও আওয়ামী লীগের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ
যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সভাপতি ও বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আব্দুল লতিফ সম্রাট জনকণ্ঠকে বলেন, ড. ইউনূস একজন বিশ্বব্যাপী সমাদৃত ব্যক্তি এবং বর্তমানে বাংলাদেশের সরকার প্রধান। তাকে স্বাগত জানানো তাদের নৈতিক দায়িত্ব। তিনি অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগের কিছু লোক তাকে নানাভাবে অপমান করার আয়োজন করছে, যা তারা যুক্তরাষ্ট্রে হতে দেবেন না। তিনি আরও অভিযোগ করেন, জ্যাকসন হাইটসে আওয়ামী লীগ কোনো কারণ ছাড়াই নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে।
বিএনপি চেয়ারপার্সনের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা কমিটির সদস্য গোলাম ফারুক শাহীন বলেন, আওয়ামী লীগ যুক্তরাষ্ট্রে সব সময় নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে এবং তারা আর কোনো বিশৃঙ্খলা সহ্য করবেন না। তিনি মন্তব্য করেন, আজকের ঘটনা যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশিদের ব্যাপারে বিরূপ ইমেজ তৈরি করেছে।
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি জ্যাকসন হাইটসের ঘটনার জন্য বিএনপিকে দায়ী করেছেন।
ড. ইউনূসকে ঘিরে আওয়ামী লীগের কর্মসূচি
আওয়ামী লীগ রোববার বিকেল থেকে জন এফ কেনেডি বিমানবন্দরে এবং জাতিসংঘের অফিসের সামনে বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে ‘যেখানে ইউনূস, সেখানেই প্রতিরোধ’ কর্মসূচি পালন করার ঘোষণা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান, সেক্রেটারি সামাদ আজাদ, যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাঞ্চলীয় শাখার সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এম ফজলুর রহমান ও সেক্রেটারি ডা. মোহাম্মদ আলী মানিক এবং নিউ ইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি ইমদাদ চৌধুরী সংবাদমাধ্যমকে এই কর্মসূচির কথা নিশ্চিত করেছেন।
মুহাম্মদ ইউনূস যে হোটেলে অবস্থান করবেন, তার সামনেও প্রতিদিন অবস্থান কর্মসূচি ও কালো পতাকা প্রদর্শনের কথা রয়েছে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের। শুক্রবার জাতিসংঘে মুহম্মদ ইউনূসের ভাষণের সময়েও বাইরে কালো পতাকা প্রদর্শন ও বিক্ষোভ-সমাবেশের ডাক দিয়েছে দলটি। পরের দিন টাইমস স্কয়ার সংলগ্ন ম্যারিয়ট মারক্যুস হোটেলে মুহম্মদ ইউনূসের মতবিনিময় অনুষ্ঠানের বাইরেও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনের জন্য নিউইয়র্ক সিটি প্রশাসনের অনুমতি নেওয়া হয়েছে বলে দলের নেতাকর্মীরা বলেছেন।
উল্লেখ্য, ড. ইউনূসসহ ছয়জন রাজনীতিবিদ রোববার বিকেল আড়াইটায় জন এফ কেনেডি বিমানবন্দরে নিউইয়র্কে পৌঁছান।
যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে ইসরায়েলের নতুন হামলা: গাজায় মানবিক বিপর্যয়
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৭৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় চলা ইসরায়েলের গণহত্যামূলক যুদ্ধে এখন পর্যন্ত অন্তত ৬৫ হাজার ২৮৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হলেন। রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) এক বিবৃতিতে এসব তথ্য জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
হতাহতের সর্বশেষ পরিসংখ্যান
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৭৫ জনের মৃতদেহ হাসপাতালগুলোতে আনা হয়েছে, যাদের মধ্যে চারজনকে ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া ইসরায়েলি হামলায় আরও ৩০৪ জন আহত হয়েছেন। এতে মোট আহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৬৬ হাজার ৫৭৫ জনে। মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, ‘অনেক ভুক্তভোগী এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং সড়কে পড়ে আছেন কিন্তু উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না।’
মানবিক সহায়তা সংগ্রহে গিয়ে প্রাণহানি
মন্ত্রণালয় আরও জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় মানবিক সহায়তা সংগ্রহের চেষ্টাকালে ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে পাঁচ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আরও ২৪ জন আহত হয়েছেন। এ নিয়ে এ পর্যন্ত সহায়তা সংগ্রহ করতে গিয়ে নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৫২৩ জনে এবং আহত হয়েছেন ১৮ হাজার ৪৭৩ জনের বেশি।
ক্ষুধা ও অপুষ্টিতে মৃত্যু
গত ২৪ ঘণ্টায় ক্ষুধা ও অপুষ্টিতে শিশুসহ চারজন মারা গেছে। এ নিয়ে ক্ষুধাজনিত কারণে মোট মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৪০ জনে, যার মধ্যে ১৪৭টি শিশু। গত মাসে খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ক সংস্থা ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্লাসিফিকেশন (আইপিসি) গাজায় দুর্ভিক্ষ ঘোষণা করার পর থেকে এখন পর্যন্ত ১৬২ জন মারা গেছেন, এর মধ্যে ৩২টি শিশু।
আন্তর্জাতিক আহ্বান ও আইসিজে মামলা
যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে গত ১৮ মার্চ থেকে ইসরায়েলি সেনারা গাজায় নতুন করে হামলা শুরু করেছে। এতে এখন পর্যন্ত অন্তত ১২ হাজার ৭২৪ জন নিহত হয়েছেন এবং ৫৪ হাজার ৫৩৪ জন আহত হয়েছেন। জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এ পর্যন্ত বেশ কয়েকবার গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধের জন্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে আহ্বান জানিয়েছে। ইতোমধ্যে ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলাও দায়ের করা হয়েছে।
রাশিয়া দাবি: একদিনে ইউক্রেন হারিয়েছে ১৫১৫ সৈন্য
গত একদিনে বিশেষ সামরিক অভিযান চলাকালে ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী প্রায় ১ হাজার ৫১৫ জন সৈন্যকে হারিয়েছে বলে দাবি করেছে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়। একই সময়ে রাশিয়ান বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ৬৫টি ইউক্রেনীয় ফিক্সড-উইং ড্রোন ভূপাতিত করেছে এবং কৃষ্ণ সাগরের নৌবহর ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর দুটি চালকবিহীন নৌকা ধ্বংস করেছে।
অঞ্চলভিত্তিক ক্ষয়ক্ষতির চিত্র
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুসারে, বিভিন্ন ব্যাটলগ্রুপ অঞ্চলে ইউক্রেনীয় বাহিনীর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে:
ব্যাটলগ্রুপ নর্থ: ১৮৫ জনেরও বেশি সেনা, একটি ট্যাঙ্ক এবং সাতটি গাড়ি হারিয়েছে ইউক্রেন।
ব্যাটলগ্রুপ পশ্চিম: ২২৫ জনেরও বেশি সেনা এবং একটি সিনেটর সাঁজোয়া যুদ্ধযান ধ্বংস করা হয়েছে।
ব্যাটলগ্রুপ দক্ষিণে: ২২০ জন সেনা, একটি সাঁজোয়া কর্মী বাহক এবং দুটি সাঁজোয়া যুদ্ধযান হারিয়েছে কিয়েভের বাহিনী।
ব্যাটলগ্রুপ সেন্টার: ইউক্রেন ৫০০ জনেরও বেশি সৈন্য এবং একটি সাঁজোয়া কর্মী বাহক হারিয়েছে।
ব্যাটলগ্রুপ পূর্বে: ৩৪০ জন পর্যন্ত সেনা ও একটি সাঁজোয়া যুদ্ধযান।
ব্যাটলগ্রুপ ডিনেপারে: ৪৫ জন সেনা এবং নয়টি অটোমোবাইল ধ্বংস করা হয়েছে।
রুশ অভিযানের অন্যান্য সাফল্য
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে যে, রাশিয়ান সেনারা ইউক্রেনের দূরপাল্লার ড্রোন উৎক্ষেপণ কেন্দ্রগুলোও ধ্বংস করেছে। পাশাপাশি ১৩৮টি এলাকায় ইউক্রেনীয় সশস্ত্র বাহিনী এবং বিদেশি ভাড়াটেদের জন্য অস্থায়ী স্থাপনাগুলো ধ্বংস করা হয়েছে।
ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিল ৩ পরাশক্তি
ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে যুক্তরাজ্য, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া। রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) পৃথক বিবৃতির মাধ্যমে তিন দেশের পক্ষ থেকে এই স্বীকৃতির কথা জানানো হয়েছে। এই স্বীকৃতিকে ‘শান্তি ও দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের আশা পুনরুজ্জীবিত করার’ একটি অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা
এক ভিডিওবার্তায় যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিয়ে বলেছেন, “শান্তি ও দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের আশা পুনরুজ্জীবিত করতে, আজ আমি স্পষ্টভাবে বলছি—এই মহান দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে—যুক্তরাজ্য আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিচ্ছে।”
কানাডার কঠোর বার্তা
কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি এক বিবৃতিতে ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বর্তমান ইসরায়েলি সরকারের কঠোর সমালোচনা করে বলেছেন, “বর্তমান ইসরায়েলি সরকার সুসংগঠিতভাবে কাজ করছে যাতে কোনোদিনো একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত না হতে পারে।” তিনি ইসরায়েলের বসতি সম্প্রসারণ নীতিকে আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে অবৈধ বলে উল্লেখ করেন এবং গাজায় তাদের ধারাবাহিক হামলাকে ‘ভয়াবহ ও প্রতিরোধযোগ্য দুর্ভিক্ষ সৃষ্টির’ কারণ হিসেবে বর্ণনা করেন।
কার্নি আরও যোগ করেন, “বর্তমান ইসরায়েলি সরকারের ঘোষিত নীতি হলো—কোনো ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র থাকবে না। এই প্রেক্ষাপটে কানাডা ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিচ্ছে এবং ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ও ইসরায়েল রাষ্ট্র উভয়ের জন্য শান্তিপূর্ণ ভবিষ্যতের প্রতিশ্রুতি গড়ে তুলতে আমাদের অংশীদারিত্বের প্রস্তাব দিচ্ছে।”
অস্ট্রেলিয়ার সমন্বিত উদ্যোগ
এছাড়া অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওয়ং এক বিবৃতিতে বলেন, রোববারের এই স্বীকৃতি “কানাডা ও যুক্তরাজ্যের পাশাপাশি, দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের জন্য নতুন গতি সৃষ্টির লক্ষ্যে সমন্বিত আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার একটি অংশ।”
ইসরায়েলে ফিলিস্তিনি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে। রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) গাজার উত্তরাঞ্চল থেকে অন্তত দুটি ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের ভূখণ্ড লক্ষ্য করে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী। ইসরায়েলের এই অঞ্চলে সামরিক বাহিনীর নির্বিচার হামলায় অন্তত ছয় ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ও ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, দুটি ক্ষেপণাস্ত্রের মধ্যে একটি আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ব্যবহার করে ভূপাতিত করা হয়েছে। অপরটি দক্ষিণ ইসরায়েলের একটি জনবসতিহীন এলাকায় পড়েছে। স্থানীয় লাখিশ ও আশদোদ অঞ্চলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সতর্কবার্তা হিসেবে সাইরেন বাজানো হয়। হামলায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। তবে হামলার পেছনে কোন ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী ছিল, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
গাজায় ইসরায়েলের হামলা
একই সময়ে গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা জানায়, রোববার ভোর পর্যন্ত ইসরায়েলের বিমান ও স্থল হামলায় অন্তত ছয় ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, শনিবার গভীর রাত থেকে ভোর পর্যন্ত গাজার বিভিন্ন অংশ বিমান হামলা ও গোলাবর্ষণে কেঁপে উঠেছে। বিমান হামলার পাশাপাশি ইসরায়েলের স্থল অভিযানও জোরদার করা হয়েছে।
প্রায় দুই বছর ধরে চলা সংঘাতে ইসরায়েল গাজা দখলের চেষ্টা চালিয়ে আসছে। সামরিক বাহিনী টানা বিমান হামলা ও ট্যাংকের গোলাবর্ষণ চালাচ্ছে। এই নির্বিচার হামলায় পুরো গাজা উপত্যকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। শনিবার ইসরায়েলি হামলায় গাজা শহরের প্রায় ৯০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে অধিকাংশই সাধারণ নাগরিক।
‘৭টি যুদ্ধ থামিয়েছি, ৭টি নোবেল চাই’: ট্রাম্পের নতুন দাবি
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও নোবেল শান্তি পুরস্কার দাবি করেছেন। শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) আমেরিকান কর্নারস্টোন ইনস্টিটিউট ফাউন্ডার্স ডিনারে ভাষণ দিতে গিয়ে তিনি বলেন, চলতি বছরে তিনি বাণিজ্যের মাধ্যমে ভারত-পাকিস্তান সংঘাত থামিয়েছেন। শুধু তাই নয়, তার দাবি—তিনি মোট সাতটি যুদ্ধ বন্ধ করেছেন এবং প্রতিটি যুদ্ধের জন্য তার একটি করে নোবেল পুরস্কার পাওয়া উচিত। সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এই খবর জানিয়েছে।
‘বাণিজ্য বন্ধের হুমকি দিয়ে যুদ্ধ থামিয়েছি’
ট্রাম্প বলেন, “বিশ্বমঞ্চে আমরা এমন কিছু করছি, যা আগে কখনো হয়নি। আমরা শান্তি চুক্তি করছি, যুদ্ধ থামাচ্ছি।” তিনি উদাহরণ হিসেবে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘাত বন্ধ করার কথা উল্লেখ করেন। ট্রাম্প বলেন, “ভাবুন তো ভারত আর পাকিস্তান—ওদের পারমাণবিক অস্ত্র আছে। আমি বলেছিলাম, যদি যুদ্ধ করো তবে কোনো বাণিজ্য হবে না। তারা যুদ্ধ থামাল।” তিনি দুই দেশের নেতাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানালেও মূল ব্যাপার হিসেবে বাণিজ্যের মাধ্যমে সংঘাত থামানোর কৃতিত্ব দাবি করেন।
সাতটি সংঘাত থামানোর দাবি
শুধু ভারত-পাকিস্তান নয়, আরও একাধিক সংঘাত বন্ধ করার কৃতিত্ব দাবি করেন ট্রাম্প। তার ভাষায়, “আমরা থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া, আর্মেনিয়া-আজারবাইজান, কসোভো-সার্বিয়া, ইসরায়েল-ইরান, মিসর-ইথিওপিয়া, রুয়ান্ডা-কঙ্গো—সব জায়গায় যুদ্ধ বন্ধ করেছি। এর মধ্যে ৬০ শতাংশই বাণিজ্যের কারণে থেমেছে।”
নিজের সাফল্যের দাবি করতে গিয়ে ট্রাম্প বলেন, অনেকে তাকে বলেছেন যে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করতে পারলে তিনি নোবেল পুরস্কার পাবেন। ট্রাম্প বলেন, “আমি তো ইতোমধ্যে সাতটি যুদ্ধ থামিয়েছি। প্রতিটি যুদ্ধের জন্য আমার একটি করে নোবেল পাওয়া উচিত।”
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ প্রসঙ্গে
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেন, তিনি ভেবেছিলেন এটি সহজেই সমাধান করা যাবে, কারণ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে তার ভালো সম্পর্ক ছিল। তবে পরে তিনি হতাশ হয়েছেন। তবুও তার দাবি, এই সংঘাতও শেষ পর্যন্ত সমাধান হবে।
ইসরায়েলের পরবর্তী লক্ষ্য কি তুরস্ক? মধ্যপ্রাচ্যে বাড়ছে উত্তেজনা
ফিলিস্তিনের গাজা থেকে শুরু করে লেবানন, ইরান এবং ইয়েমেন—প্রায় সবখানেই সামরিক হামলা চালিয়ে ইসরায়েল এখন কার্যত আঞ্চলিক অস্থিরতার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। সম্প্রতি কাতারের রাজধানী দোহায় বিমান হামলা চালানোর পর এবার তুরস্কেও উদ্বেগ বেড়েছে। আঙ্কারার কূটনৈতিক মহলে প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে—ইসরায়েলের পরবর্তী লক্ষ্য কি তবে তুরস্ক?
কাতার থেকে তুরস্ক: বিশ্লেষকদের সতর্কবার্তা
গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র কাতারে ইসরায়েলের বিমান হামলার পর আন্তর্জাতিক গবেষক ও বিশ্লেষকদের নজর এখন তুরস্কের দিকে। আমেরিকান এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের জ্যেষ্ঠ গবেষক মাইকেল রুবিন স্পষ্টভাবে বলেন, তুরস্ক ইসরায়েলের পরবর্তী টার্গেটে পরিণত হতে পারে এবং ন্যাটো সদস্যপদও হয়তো এই আক্রমণ থেকে তুরস্ককে রক্ষা করতে পারবে না। ইসরায়েলি রাজনৈতিক বিশ্লেষক মেইর মাসরিও একই সুরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, “আজ কাতার, কাল তুরস্ক।”
এর প্রতিক্রিয়ায় তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানের একজন ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টা তীব্র সতর্কবার্তা দিয়ে বলেছেন, যদি ইসরায়েল তুরস্কের ওপর হামলার চিন্তাও করে, তবে দেশটির জন্য ভয়াবহ শাস্তি অপেক্ষা করছে।
‘সবচেয়ে বিপজ্জনক শত্রু’ হিসেবে দেখছে ইসরায়েল
গত কয়েক মাস ধরেই ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলো তুরস্ককে ‘ইসরায়েলের সবচেয়ে বিপজ্জনক শত্রু’ হিসেবে উপস্থাপন করছে। বিশেষ করে, পূর্ব ভূমধ্যসাগরে তুরস্কের সক্রিয় উপস্থিতি এবং যুদ্ধ-পরবর্তী সিরিয়ার পুনর্গঠনে দেশটির ভূমিকাকে ইসরায়েল নতুন হুমকি হিসেবে দেখছে।
এই প্রেক্ষাপটেই তুরস্ক গত আগস্টে ইসরায়েলের সঙ্গে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক স্থগিত করে শক্ত প্রতিক্রিয়া জানায়। আঙ্কারার মতে, এটি শুধু অর্থনৈতিক নয়, বরং একটি রাজনৈতিক বার্তাও।
যুক্তরাষ্ট্রের নীরবতা ও ন্যাটোর ভূমিকা
কাতারে বিমান হামলার পর তুরস্কের ভেতরে আরেকটি প্রশ্ন উঠে এসেছে—ন্যাটোর প্রতিশ্রুতি কতটা কার্যকর? কারণ, কাতারকে যুক্তরাষ্ট্র ‘মেজর নন-ন্যাটো অ্যালাই’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে, তবু ইসরায়েলের হামলার পর ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে কোনো সরাসরি প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। আটলান্টিক কাউন্সিলের নন-রেসিডেন্ট ফেলো ওমর ওজকিজিলসিক আল জাজিরাকে বলেন, “তুরস্ক বুঝে গেছে কেবল যুক্তরাষ্ট্র বা ন্যাটোর ওপর নির্ভর করে জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।” তার মতে, ইসরায়েল সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে এবং এর পেছনে ওয়াশিংটনের নীরব সমর্থন রয়েছে।
নেতানিয়াহুর ‘গ্রেটার ইসরায়েল’ পরিকল্পনা
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সম্প্রতি ‘গ্রেটার ইসরায়েল’ ধারণাকে খোলাখুলিভাবে সমর্থন করেছেন। আগস্টে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “অবশ্যই, আমি এই ধারণায় বিশ্বাস করি।” আঙ্কারার কাছে এই মন্তব্য নিছক প্রতীকী কোনো বক্তব্য নয়; বরং এটিকে তুরস্কের আঞ্চলিক কৌশল ও ভূরাজনৈতিক স্বার্থের সরাসরি হুমকি হিসেবে দেখা হচ্ছে। তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান আল জাজিরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, “গ্রেটার ইসরায়েলের উদ্দেশ্য হলো—এ অঞ্চলের দেশগুলোকে দুর্বল, অকার্যকর ও বিভক্ত করে রাখা।”
ইসরায়েলের আগ্রাসী উপস্থিতি ও আঞ্চলিক আধিপত্যের নকশা
ইসরায়েল শুধু গাজা কিংবা পশ্চিম তীরেই সীমাবদ্ধ নেই। সম্প্রতি তারা সিরিয়ায় একাধিক হামলা চালিয়েছে, ইয়েমেনেও বিমান হামলা করেছে। এমনকি গাজায় সাহায্যবাহী বহর বহনকারী জাহাজের ওপর তিউনিসিয়ার উপকূলে আক্রমণ চালায়। ইরানের সঙ্গেও সামরিক সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে ইসরায়েল। সব মিলিয়ে তেলআবিবের সামরিক তৎপরতা এখন প্রায় গোটা অঞ্চলের প্রতিটি সংঘাতময় এলাকায় বিস্তৃত হয়ে পড়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইসরায়েলের মূল লক্ষ্য আঞ্চলিক আধিপত্য প্রতিষ্ঠা। গত জুলাইয়ে যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে সিরিয়া বিষয়ক বিশেষ দূত টম বারাক স্বীকার করেছিলেন—ইসরায়েল কখনোই একটি ঐক্যবদ্ধ ও শক্তিশালী সিরিয়া চায় না। সিরিয়ার ওপর হামলা, লেবাননে হিজবুল্লাহকে লক্ষ্য করে আঘাত, ইরানের সঙ্গে ১২ দিনের যুদ্ধ—সবকিছুই ইঙ্গিত দেয়, ইসরায়েল ধাপে ধাপে প্রতিদ্বন্দ্বীদের দুর্বল করছে।
সংঘর্ষের পরবর্তী ক্ষেত্র: সিরিয়া?
তুরস্কের সাবেক নৌ-অ্যাডমিরাল ও ‘ব্লু হোমল্যান্ড’ কৌশলের স্থপতি সেম গুরদেনিজ মনে করেন, তুরস্ক ও ইসরায়েলের মধ্যে সম্ভাব্য প্রথম সরাসরি সংঘর্ষের ক্ষেত্র হতে পারে সিরিয়ার ভূমি ও আকাশসীমা। তার ব্যাখ্যা অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে গ্রিস, গ্রিক সাইপ্রাস ও ইসরায়েল মিলে সাইপ্রাসে যে সামরিক ও গোয়েন্দা ঘাঁটি গড়ে তুলছে, তা তুরস্কের ব্লু হোমল্যান্ড কৌশলকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে।
সূত্র : আল জাজিরা
ভারতের আসল শত্রু বিদেশি শক্তির ওপর নির্ভরশীলতা: নরেন্দ্র মোদি
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, তার দেশের আসল শত্রু অন্য কোনো জাতি নয়, বরং বিদেশি শক্তির ওপর নির্ভরশীলতা। গুজরাটে ৪০ বিলিয়ন ডলারের বেশি মূল্যের সামুদ্রিক প্রকল্প উদ্বোধনকালে তিনি এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ভারত ‘বিশ্বব্যাপী বন্ধু হওয়ার অনুভূতি নিয়ে এগিয়ে চলছে’ এবং দেশের কোনো বড় প্রতিপক্ষ নেই।
‘স্বনির্ভর হতে হবে ভারতকে’
নরেন্দ্র মোদি বলেন, “প্রকৃত অর্থে যদি আমাদের কোনো শত্রু থাকে, তা হলো অন্যান্য দেশের ওপর নির্ভরতা।” সমৃদ্ধি অর্জন এবং ‘শান্তি ও স্থিতিশীলতা’ নিশ্চিত করার জন্য ভারতকে অবশ্যই স্বনির্ভর হতে হবে বলে তিনি জোর দেন। তিনি অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বৃদ্ধি এবং ‘বহিরাগতদের’ ওপর নির্ভরতা হ্রাস করার আহ্বান জানান।
মোদি বলেন, “আমরা যদি অন্যের করুণার ওপর নির্ভরশীল থাকি, তাহলে আমাদের আত্মসম্মানও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আমরা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে অন্যদের ওপর (নির্ভরশীল করে) ঝুঁকি নিতে পারি না।”
যুক্তরাষ্ট্র-ভারত বাণিজ্য উত্তেজনা
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য উত্তেজনার মধ্যেই নরেন্দ্র মোদির এসব মন্তব্য এলো। গত মাসে ওয়াশিংটন রাশিয়ার তেল কেনায় ভারতীয় আমদানির ওপর অতিরিক্ত ২৫% শুল্ক আরোপ করে।
হোয়াইট হাউস এইচ-১বি ভিসা আবেদনের ওপর নতুন করে ১০০০০০ ডলার বার্ষিক ফি ঘোষণা করেছে। আইটি ট্রেড অ্যাসোসিয়েশন ন্যাসকম জানিয়েছে, এটি দক্ষ ভারতীয় কর্মীদের ক্ষতি করবে।
পাঠকের মতামত:
- আইফোন ১৭ এখন বাংলাদেশে: কিনতে গেলে যে ঝুঁকিগুলো জেনে রাখা জরুরি
- মার্কিন নাগরিকদের ওপর ইসরায়েলের হামলা
- কিম জং উনের হুঁশিয়ারি: ‘নিরস্ত্রীকরণ নয়, চাই সহাবস্থান’
- সরকারি খরচে সিঙ্গাপুরে গেলেন নুরুল হক নুর
- রাজধানীতে ৯ ঘণ্টায় ১০৫ মিলিমিটার বৃষ্টি: জলমগ্ন পথঘাট, দুর্ভোগে নগরবাসী
- ড. ইউনূসকে কেন্দ্র করে উত্তাল নিউইয়র্ক: বিএনপি-আওয়ামী লীগের হাতাহাতি
- যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে ইসরায়েলের নতুন হামলা: গাজায় মানবিক বিপর্যয়
- ‘৬-০’ ও বিমানের ইশারা: ভারতকে কী বোঝাতে চাইলেন হারিস রউফ?
- নুর ও নাহিদ: তরুণ নেতৃত্বের ভবিষ্যৎ, একীভূত হচ্ছে গণঅধিকার ও এনসিপি?
- ভারত-পাকিস্তান লড়াই আর রইল না! সূর্যকুমারের স্পষ্ট ঘোষণা, একতরফা ম্যাচে বিধ্বস্ত পাকিস্তান
- শাহিবজাদা ফারহানের ঝলকে ভারতের বিপক্ষে পাকিস্তানের উড়ন্ত সূচনা
- অল্প হাঁটতেই ঘেমে যান? ঘাম থেকে রেহাই পাওয়ার সহজ উপায় জেনে নিন
- রাশিয়া দাবি: একদিনে ইউক্রেন হারিয়েছে ১৫১৫ সৈন্য
- গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্ট পরিচয়ে প্রতারণা, এনায়েতের জালে বেনজীরসহ হেভিওয়েটরা!
- কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্দোলনে উত্তাপ রাবি: পোষ্য কোটা নিয়ে জটিলতা
- রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রে বাড়ছে রহস্যজনক মৃত্যু: এবার রাশিয়ান ইলেক্ট্রিশিয়ানের মরদেহ উদ্ধার
- জাবি নিয়ে আমির হামজার বিতর্কিত মন্তব্য, প্রশাসনের কঠোর প্রতিবাদ
- মোবাইলে স্ক্রলিং বাড়াচ্ছে পাইলসের ঝুঁকি
- ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিল ৩ পরাশক্তি
- বিসিবি ঘেরাও করা হবে: নির্বাচন ঘিরে ইশরাক হোসেনের কড়া বার্তা
- জীবনের সেরা বিনিয়োগ: ওয়ারেন বাফেটের এই পরামর্শ আপনার ভাগ্য বদলে দেবে!
- রানের বন্যা বইয়ে দিল অস্ট্রেলিয়া: ভারতকে পিটিয়ে ৭৮১ রানে বিশ্বরেকর্ড!
- ইসরায়েলে ফিলিস্তিনি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা
- ভিপির জরিমানা করা অর্থ জামায়াতের বায়তুল মালে জমা হচ্ছে: রিজভী
- তামিম ইকবালের অভিযোগ: বিসিবি নির্বাচনে ‘স্বেচ্ছাচারিতা’ চলছে
- ত্বকের যত্নে নারকেল তেল ও কফি স্ক্রাব: দূর হবে কালো দাগ
- ‘৭টি যুদ্ধ থামিয়েছি, ৭টি নোবেল চাই’: ট্রাম্পের নতুন দাবি
- ইসরায়েলের পরবর্তী লক্ষ্য কি তুরস্ক? মধ্যপ্রাচ্যে বাড়ছে উত্তেজনা
- ভারতের আসল শত্রু বিদেশি শক্তির ওপর নির্ভরশীলতা: নরেন্দ্র মোদি
- আওয়ামী লীগকে দল হিসেবে বিচারের আওতায় আনা উচিত: নাহিদ ইসলাম
- ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেননি : রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী
- দিল্লি হাই কোর্টের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে জ্যাকুলিন ফের্নান্দেজের আপিল
- ২১ সেপ্টেম্বরের শেয়ারবাজার বিশ্লেষণ প্রতিবেদন
- ভারতীয় সিনেমায় পরিবার নয়, প্রতিভা: নতুন মুখ যারা ছাড়বে নিজের ছাপ
- ডিএসইতে রবিবারের লেনদেন শেষে টপ লুজার তালিকা প্রকাশ
- ডিএসইতে আজকের লেনদেন শেষে টপ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- সরকার টিকা ক্রয়ের প্রাথমিক অনুমোদন দিয়েছে
- ‘প্রথম দিনে শিক্ষার্থীদের হাতে বই’—সরকারের দৃঢ় অঙ্গীকার
- টেকসই উন্নয়নে নতুন জাতীয় বিদ্যুৎনীতির ওপর জোর দিলেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনুস
- এশিয়া কাপে বাংলাদেশের সম্ভাবনা: মাশরাফি ও হাবিবুল বাশার সুমনের বিশ্লেষণ
- উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর যাচ্ছেন নুরুল হক নুর
- অবশেষে কাটল জট: রিজার্ভ চুরির সেই ৮১ মিলিয়ন ডলার ফিরছে দেশে!
- পিআর পদ্ধতি নিয়ে বিতর্ক: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব কী বললেন?
- ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল দেশ, উৎপত্তিস্থল সিলেটে
- বিএনপি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে না দাঁড়ালে অন্য শক্তি জায়গা নেবে : ফজলুর রহমান
- আবারও কর্মচারীদের বিক্ষোভে উত্তাল সচিবালয়
- ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছি: প্রভা
- লাতিন আমেরিকায় নতুন বিক্ষোভ, এবার পেরুতে ফুঁসে উঠেছে জেন-জি
- সন্ধ্যা পর্যন্ত সাত অঞ্চলে ঝড়বৃষ্টির পূর্বাভাস
- সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল সালাউদ্দিন আহমেদের ইন্তেকাল
- রেনেসাঁর দর্শন ও দিশা: গ্রিক-রোমান জ্ঞান, মুসলিম দার্শনিকদের ভূমিকা ও আধুনিকতার উন্মেষ
- অটোমান সাম্রাজ্যের ইতিহাস: উত্থান, পতন ও সভ্যতা–বিজ্ঞানে অবদান
- ডিএসইতে রবিবারের লেনদেন শেষে টপ লুজার তালিকা প্রকাশ
- গ্রেফতার বিএনপি নেতা হাজতে সিগারেট–ফোনে ব্যস্ত, ফাঁস হলো ছবি
- ডিএসইতে আজকের লেনদেন শেষে টপ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- আফগানিস্তানে নারী লেখকদের বই নিষিদ্ধ করল তালেবান
- বরিশালে ১৭ বিয়ে কাণ্ড: বন কর্মকর্তা কবির হোসেন বরখাস্ত
- আদালত চত্বরে ব্যারিস্টার সুমনের বারবার উচ্চারণ: ‘ভালো থাকুক বাংলাদেশ’
- ১৩তম জাতীয় নির্বাচনের আগে ইসি’র নতুন সীমানা, ভোটারদের উদ্বেগ বহাল
- ভদ্রতার নিয়ম ভাঙল ভারত, ক্ষুব্ধ পাকিস্তান
- বলিউডের গ্ল্যামার থেকে ব্যক্তিগত সংগ্রামের গল্প: জিনাত আমানের জীবন ও ভালোবাসা
- ডিএসই ব্লক মার্কেট বিশ্লেষণ
- ১৭ সেপ্টেম্বর লেনদেনে উত্থান যে ১০ টি শেয়ারে
- “অপরাধী যে বাহিনীরই হোক, বিচারের আওতায় আনতে হবে”
- যুক্তরাষ্ট্রের ডালাসে ভারতীয় প্রৌঢ় খুন: অবৈধ অভিবাসনের বিরুদ্ধে কড়া বার্তা ট্রাম্পের