আজ বাদ জুমা আ.লীগ বিরোধী জনজোয়ার

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ মে ০৯ ১০:৫৪:৫৩
আজ বাদ জুমা আ.লীগ বিরোধী জনজোয়ার

সত্য নিউজ:আওয়ামী লীগকে ‘ফ্যাসিস্ট ও সন্ত্রাসী সংগঠন’ আখ্যা দিয়ে তা নিষিদ্ধ করার দাবিতে আজ শুক্রবার বাদ জুমা বড় ধরনের গণজমায়েতের ডাক দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের পূর্ব পাশে, যমুনার সামনে অবস্থিত ফোয়ারার সামনের সড়কে এ জমায়েত অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন দলের দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ।

এনসিপির আয়োজনে এই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার রাত থেকেই যমুনার সামনের রাজপথ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। রাত ১০টা থেকে শুরু হওয়া অবস্থান কর্মসূচি টানা চলছে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত। এই কর্মসূচিতে শুধু এনসিপির নেতা-কর্মীরাই নয়, যোগ দিয়েছেন জামায়াতে ইসলামী, হেফাজতে ইসলাম, এবি পার্টি, ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও ধর্মভিত্তিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরাও।

‘আজ ফয়সালা হবে—কে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ চায়’

সকালে যমুনার সামনে সংবাদ সম্মেলনে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, “আজকের গণজমায়েত শুধু একটি রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে নয়, এটি একটি রাজনৈতিক সংস্কৃতির বিরুদ্ধে জনতার রায়।” তিনি আরও বলেন, “আজ বাদ জুমা ফোয়ারার সামনের রাস্তাটি ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেল থেকে বাংলামোটর পর্যন্ত জনসমুদ্রে পরিণত হবে।”

এ সময় তিনি ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দল, সাংস্কৃতিক সংগঠন, বিডিআর ট্র্যাজেডির ভুক্তভোগী পরিবার, গুম-খুনের শিকার পরিবার এবং সাধারণ জনগণের প্রতি আহ্বান জানান যাতে সবাই এই কর্মসূচিতে অংশ নেয়।

এনসিপির মুখ্য সমন্বয়কারী নাসিরুদ্দীন পাটোয়ারী সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “আজ জুমার পর ছাত্র-জনতা ফোয়ারার সামনে অবস্থান নেবে। আমরা ফয়সালা করেই ঘরে ফিরব—কে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ চায় আর কে চায় না, তা আজ স্পষ্ট হবে।”

বিক্ষোভে বিরোধী জোটের সমাবেশ

রাজপথে এনসিপির নেতৃত্বে চলমান বিক্ষোভে অংশ নিচ্ছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও গোষ্ঠী। রাত একটার পর হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীরা সেখানে যোগ দেন, রাত দেড়টায় এবি পার্টি, এবং রাত দুইটার দিকে ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় নেতারাও যমুনার সামনে উপস্থিত হন। এই সমবেত উপস্থিতি থেকে ধারণা করা যাচ্ছে, আওয়ামী লীগ বিরোধী জোট এই মুহূর্তে রাজপথে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান নিতে চাচ্ছে।

‘আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছাড়ছি না’

হাসনাত আবদুল্লাহ তাঁর বক্তব্যে বলেন, “যতক্ষণ না পর্যন্ত ফ্যাসিস্ট গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা দিয়ে নিবন্ধন বাতিল করে নিষিদ্ধ করা হয় এবং বিচারিক প্রক্রিয়ার রোডম্যাপ আমাদের সামনে উপস্থাপন করা হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা এই রাজপথ ছাড়ব না।”

এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম দায়িত্ব ছিল আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা। সেই দাবি আমরা ভেতরে–বাইরে বলেছি। কিন্তু ৯ মাস পেরিয়ে গেলেও সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়নি। তাই আমরা আবার রাজপথে।”

রাজনৈতিক বিশ্লেষণ ও প্রেক্ষাপট

বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এনসিপির এমন স্পষ্ট অবস্থান একটি বৃহত্তর রাজনৈতিক শক্তি পুনর্গঠনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। বিশেষত আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের শাসনের বিরুদ্ধে সংগঠিত হয়ে মাঠে নামা একাধিক রাজনৈতিক দলের একত্রিত হওয়া আগামী দিনের রাজনীতিতে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের ইঙ্গিত বহন করছে।

রাজপথে জমায়েত হওয়া এই অংশগ্রহণ রাজনৈতিকভাবে প্রতীকী হলেও এর তাৎপর্য বাস্তব, কারণ এটি বিরোধী মতের সংগঠিত হওয়ার প্রবণতার বহিঃপ্রকাশ। যদিও এই আন্দোলনের স্থায়িত্ব, জনসম্পৃক্ততা এবং কার্যকারিতা এখনো সময়ের ওপর নির্ভরশীল।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ