গাজায় ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত, দুর্ভিক্ষে মৃতের সংখ্যা বাড়ছে

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় আরও অন্তত ৩৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্য দিয়ে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে চলা ইসরায়েলি আগ্রাসনে মোট নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৫ হাজার ১৭৪ জনে। শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় গাজার হাসপাতালগুলোতে ৩৩টি মরদেহ এবং ১৪৬ জন আহতকে আনা হয়েছে। এতে ইসরায়েলি হামলায় মোট আহতের সংখ্যা এখন ১ লাখ ৬৬ হাজার ৭১ জনে পৌঁছেছে। বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, এখনও অনেক মৃতদেহ ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় পড়ে আছে, কিন্তু উদ্ধারকারীরা সেখানে পৌঁছাতে পারছেন না।
ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়েও প্রাণহানি
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় মানবিক সহায়তা সংগ্রহের সময় ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে আরও একজন ফিলিস্তিনি নিহত ও ১৭ জনের বেশি আহত হয়েছেন। গত ২৭ মে থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ নিতে গিয়ে মোট ২ হাজার ৫১৪ জন নিহত এবং ১৮ হাজার ৪৩১ জনের বেশি আহত হয়েছেন।
দুর্ভিক্ষের শিকার গাজা
গত ২৪ ঘণ্টায় অপুষ্টি ও অনাহারে শিশুসহ আরও চারজন ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে। এর ফলে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত অনাহার ও দুর্ভিক্ষ-সংক্রান্ত মোট মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৪০ জনে, যার মধ্যে ১৪৭টি শিশু।
চলতি বছরের ২ মার্চ থেকে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ গাজার সব সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে, যার কারণে উপত্যকাটির প্রায় ২৪ লাখ বাসিন্দা দুর্ভিক্ষের মুখে পড়েছে। খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্লাসিফিকেশন (আইপিসি) জানিয়েছে, গাজার উত্তরাঞ্চলে দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে। এটি সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ মধ্য ও দক্ষিণাঞ্চলের দেইর আল-বালাহ ও খান ইউনিসে ছড়িয়ে পড়বে।
এদিকে, জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধের জন্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে বারবার আহ্বান জানালেও কোনো ফল পাওয়া যায়নি। ইতোমধ্যে ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলাও দায়ের করা হয়েছে।
সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি
মরুভূমির দেশে সাদা চাদর, তুষারে ঢাকল সৌদি পাহাড়
সৌদি আরবের উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত তাবুক ও হাইল অঞ্চলসহ কয়েকটি এলাকায় বিরল তুষারপাতের ঘটনা ঘটেছে, যা স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটকদের মধ্যে ব্যাপক কৌতূহল ও আনন্দের সৃষ্টি করেছে। সাধারণত মরুপ্রধান দেশ হিসেবে পরিচিত সৌদি আরবে এমন আবহাওয়াজনিত দৃশ্য খুবই অস্বাভাবিক বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে গালফ নিউজ জানায়, তাবুক ও হাইলের পাহাড়ি অঞ্চলগুলোতে তুষারপাত হয়েছে। বিশেষ করে জর্ডান সীমান্তবর্তী জাবাল আল লজের উঁচু পাহাড়ি এলাকা সম্পূর্ণভাবে বরফে আচ্ছাদিত হয়ে পড়ে। হঠাৎ এই তুষারপাত দেখতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ সেখানে ছুটে যান।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ও ছবিতে দেখা যায়, অনেকেই পরিবার ও বন্ধুদের নিয়ে তুষারাবৃত পাহাড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কেউ কেউ স্মৃতি ধরে রাখতে ছবি তুলছেন, আবার অনেকে ঐতিহ্যবাহী আরবি সংগীতের তালে নাচে মেতে উঠেছেন। এমনকি কয়েকজন পর্যটককে সেখানে অ্যাডভেঞ্চারমূলক কার্যক্রম, যেমন স্কাই ডাইভিংয়েও অংশ নিতে দেখা গেছে।
জাবাল আল লজ সৌদি আরবের অন্যতম উচ্চভূমি হিসেবে পরিচিত। এবারের তুষারপাতের ফলে পাহাড়টির বিস্তীর্ণ অংশ সাদা চাদরে ঢাকা পড়ে, যা এলাকাটিকে এক অনন্য শীতকালীন সৌন্দর্যে রূপ দিয়েছে।
সৌদি আরবের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর বরাতে জানা গেছে, উত্তরাঞ্চলের আরও কয়েকটি স্থানে তুষারের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। রাজধানী রিয়াদের নিকটবর্তী আল ঘাট এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, তাদের জীবনে এমন দৃশ্য দেখা অত্যন্ত বিরল। অনেকের মতে, কয়েক দশকের মধ্যে এটিই প্রথমবার ওই এলাকায় তুষারপাতের ঘটনা।
-রাফসান
হাদির মৃত্যু ঘিরে আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
জুলাই বিপ্লবের অগ্রসেনানী এবং ভারতীয় আধিপত্যবাদবিরোধী আন্দোলনের দৃঢ় কণ্ঠস্বর শরীফ ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। তার মৃত্যু ঘিরে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি, গণবিক্ষোভ এবং সহিংস ঘটনার খবর গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরেছে বিশ্বের প্রভাবশালী গণমাধ্যমগুলো।
কাতারভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা তাদের প্রতিবেদনে হাদির মৃত্যুকে বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনের জন্য একটি বড় ধাক্কা হিসেবে উল্লেখ করেছে। তাদের শিরোনামে বলা হয়, “বাংলাদেশের ছাত্র বিক্ষোভের এক নেতার সিঙ্গাপুরের হাসপাতালে মৃত্যু।” প্রতিবেদনে জানানো হয়, চিকিৎসকেরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালালেও তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। আল জাজিরা আরও উল্লেখ করে যে, হাদির মৃত্যুর খবরে রাজধানী ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ক্ষুব্ধ সমর্থকেরা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভে অংশ নেয়।
হাদির মৃত্যুর পর বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়া বিক্ষোভ ও সহিংসতার খবর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করেছে ভারতের একাধিক শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম। এনডিটিভি তাদের প্রতিবেদনে শিরোনাম করে, “ছাত্রনেতার মৃত্যুর পর বাংলাদেশ উত্তাল, গণমাধ্যম কার্যালয়ে আগুন।” প্রতিবেদনে বলা হয়, পরিস্থিতি দ্রুত অস্থির হয়ে ওঠে এবং সংবাদমাধ্যমের অফিসে হামলার ঘটনাও ঘটে।
ভারতের আরেক প্রভাবশালী দৈনিক টাইমস অব ইন্ডিয়া জানায়, হাদির মৃত্যুর পর বাংলাদেশজুড়ে ব্যাপক অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়ে। তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বিভিন্ন স্থানে ভারতবিরোধী বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে, যা দুই দেশের সম্পর্কের ওপর বাড়তি চাপ তৈরি করতে পারে।
দ্য হিন্দু পত্রিকা তাদের শিরোনামে উল্লেখ করে, “তরুণ নেতা হাদির মৃত্যুর পর বাংলাদেশে সহিংসতা, সংবাদমাধ্যম কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ।” প্রতিবেদনে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
কলকাতাভিত্তিক দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা তাদের প্রতিবেদনে বাংলাদেশ পরিস্থিতিকে ‘রাতভর উত্তাল’ হিসেবে বর্ণনা করে। শিরোনামে তারা উল্লেখ করে, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের পর সংবাদপত্রের কার্যালয়ে হামলার ঘটনা ঘটেছে। প্রতিবেদনে বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় সংঘর্ষ ও হামলার খবর তুলে ধরা হয়।
পাকিস্তানের প্রভাবশালী গণমাধ্যম জিও টিভি জানায়, তরুণ রাজনৈতিক নেতার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে ব্যাপক গণবিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়, এই ঘটনাকে ঘিরে দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিবেশ আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে।
-রাফসান
৭১-এর পর ভারতের বড় কৌশলগত চ্যালেঞ্জ এখন বাংলাদেশ
১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর থেকে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি ভারতের জন্য ‘সবচেয়ে বড় কৌশলগত চ্যালেঞ্জ’ হিসেবে দেখা দিয়েছে বলে দাবি করেছে দেশটির পররাষ্ট্র বিষয়ক সংসদীয় কমিটি। কংগ্রেস এমপি শশী থারুরের নেতৃত্বাধীন এই কমিটি তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, যদিও পরিস্থিতি এখনই সম্পূর্ণ বিশৃঙ্খলা ও অরাজকতার দিকে ঝুঁকে পড়ার আশঙ্কা নেই, তবুও এই পরিস্থিতিতে ভারতকে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। ‘বাংলাদেশ-ভারতের ভবিষ্যৎ সম্পর্ক’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে দুই দেশের সম্পর্কের বর্তমান টানাপড়েনের জন্য বাংলাদেশে তথাকথিত ইসলামী মৌলবাদীদের উত্থান, চীনা ও পাকিস্তানি প্রভাব বৃদ্ধি এবং শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের আধিপত্যের পতনকে দায়ী করা হয়েছে।
কমিটির প্রতিবেদনে ১৯৭১ সালের পরিস্থিতির সঙ্গে বর্তমানের তুলনা করে বলা হয়েছে, একাত্তরের চ্যালেঞ্জটি ছিল অস্তিত্বগত, মানবিক এবং একটি নতুন জাতির জন্মের সঙ্গে সম্পর্কিত। কিন্তু বর্তমান চ্যালেঞ্জটি আরও গুরুতর ও দীর্ঘমেয়াদি। এটিকে তারা প্রজন্মগত বিচ্ছিন্নতা, রাজনৈতিক শৃঙ্খলার পরিবর্তন এবং ভারত থেকে দূরে সরে গিয়ে একটি সম্ভাব্য কৌশলগত পুনর্বিন্যাস হিসেবে অভিহিত করেছেন। প্রতিবেদনে সতর্ক করে বলা হয়েছে, ভারত যদি এই মুহূর্তে ঢাকার সঙ্গে তাদের সম্পর্ক নতুন করে সাজাতে বা পুনর্বিন্যাস করতে ব্যর্থ হয়, তবে নয়াদিল্লি বাংলাদেশে তার কৌশলগত গুরুত্ব হারাতে পারে। অর্থাৎ, বাংলাদেশে ভারত ‘অপ্রাসঙ্গিক’ হয়ে পড়ার মতো ঝুঁকির মুখে রয়েছে।
ভারতীয় সংসদীয় কমিটি তাদের প্রতিবেদনে পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের উন্নয়ন এবং চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বিশেষ করে বাংলাদেশের অবকাঠামো, বন্দর উন্নয়ন এবং প্রতিরক্ষা সহযোগিতার ক্ষেত্রে চীনের উপস্থিতি তাদের চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ প্রসঙ্গে কমিটি মোংলা বন্দর, লালমনিরহাট বিমানঘাঁটি এবং পেকুয়ায় সাবমেরিন ঘাঁটির সম্প্রসারণের মতো প্রকল্পগুলোর কথা সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করেছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, চীন বর্তমানে বাংলাদেশের সকল রাজনৈতিক পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করছে, যার মধ্যে জামায়াতে ইসলামীও রয়েছে। এমনকি এই ইসলামী দলটির প্রতিনিধিরা চীন সফর করেছেন বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
এমতাবস্থায় কমিটি ভারত সরকারের কাছে বেশ কিছু সুপারিশ পেশ করেছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো, বাংলাদেশে যাতে কোনো বিদেশি শক্তি সামরিক ঘাঁটি স্থাপন করতে না পারে, সে বিষয়ে ভারতকে কঠোর নজরদারি বজায় রাখতে হবে। একই সঙ্গে ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে সংযোগ, বন্দর ব্যবহারের সুযোগ এবং উন্নয়ন সহযোগিতার ক্ষেত্রে তুলনামূলক বেশি সুবিধা প্রদানের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া জামায়াতে ইসলামীর নির্বাচনী নিবন্ধন পুনঃস্থাপনের বিষয়টি উল্লেখ করে প্যানেলটি জানিয়েছে, এর ফলে দলটি আসন্ন নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ পাবে, যা ভারতের নীতিনির্ধারকদের ভাবিয়ে তুলেছে।
ভেনেজুয়েলাকে ঘিরে ফেলেছে যুক্তরাষ্ট্রের বিশাল নৌবহর
ভেনেজুয়েলার তেল আসলে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পদ বলে দাবি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও হোয়াইট হাউসের ডেপুটি চিফ অব স্টাফ স্টিফেন মিলার। দক্ষিণ আমেরিকার এই দেশটির তেল শিল্প জাতীয়করণকে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সম্পদ ‘চুরি’ বলে অভিহিত করেছেন। বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে মিলার লেখেন, ভেনেজুয়েলার তেল শিল্প আমেরিকানদের ঘাম, উদ্ভাবন ও পরিশ্রমে গড়ে উঠেছে। সেটিকে জবরদখল করা ছিল আমেরিকান সম্পদ ও সম্পত্তির ইতিহাসের সবচেয়ে বড় চুরির ঘটনা। তিনি অভিযোগ করেন, এই লুট করা সম্পদ সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন এবং যুক্তরাষ্ট্রে সহিংসতা ও মাদক প্রবাহে ব্যবহার করা হয়েছে।
যদিও আন্তর্জাতিক আইনের ‘প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর স্থায়ী সার্বভৌমত্ব’ নীতিমালা অনুযায়ী ভেনেজুয়েলার তেল দেশটির নিজস্ব সম্পদ। তবে ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যায়, শুরুর দিকে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের কোম্পানিগুলো সেখানে তেল অনুসন্ধানে জড়িত ছিল। ভেনেজুয়েলা ১৯৭৬ সালে তেল শিল্প জাতীয়করণ করে এবং রাষ্ট্রীয় কোম্পানি পিডিভিএসএর অধীনে আনে। পরবর্তীতে ২০০৭ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট হুগো শ্যাভেজ অবশিষ্ট বিদেশি প্রকল্পগুলোও জাতীয়করণ করেন। এর ফলে কনোকোফিলিপস ও এক্সনমবিলের মতো মার্কিন তেল জায়ান্টদের দেশটি ছাড়তে হয় এবং তারা আইনি লড়াই শুরু করে। ২০১৪ সালে বিশ্বব্যাংকের এক সালিশি ট্রাইব্যুনাল এক্সনমবিলকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিলেও আইনি প্রক্রিয়া পুরোপুরি শেষ হয়নি।
এদিকে দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় ফিরে ডোনাল্ড ট্রাম্প ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে ‘ম্যাক্সিমাম প্রেশার’ বা সর্বোচ্চ চাপ নীতি আরও জোরদার করেছেন। মঙ্গলবার ট্রাম্প ভেনেজুয়েলার তেলবাহী ট্যাংকারে অবরোধ আরোপের ঘোষণা দেন এবং সেগুলোকে ‘নিষেধাজ্ঞাভুক্ত’ বলে আখ্যা দেন। ট্রুথ সোশ্যালে তিনি লেখেন, দক্ষিণ আমেরিকার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় নৌবহর দিয়ে ভেনেজুয়েলাকে ঘিরে ফেলা হয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকে চুরি করা সব তেল ও সম্পদ ফিরিয়ে না দেওয়া পর্যন্ত এই অবস্থা চলবে। গত সপ্তাহে ভেনেজুয়েলার উপকূলে মার্কিন সামরিক বাহিনী একটি তেলবাহী জাহাজ জব্দ করেছে, যা কারাকাস ‘আন্তর্জাতিক জলদস্যুতা’ বলে নিন্দা জানিয়েছে।
ভ্যানিটি ফেয়ার ম্যাগাজিনের তথ্যমতে, হোয়াইট হাউস চিফ অব স্টাফ সুসি ওয়াইলস বলেছেন, ট্রাম্প প্রশাসন ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে ক্ষমতা থেকে সরাতে চান এবং মাদুরো আত্মসমর্পণ না করা পর্যন্ত ট্রাম্প নৌকা উড়িয়ে দিয়ে হামলা চালিয়ে যেতে চান। গত সেপ্টেম্বর থেকে যুক্তরাষ্ট্র ক্যারিবিয়ান সাগরে ভেনেজুয়েলার কাছাকাছি এলাকায় যেসব নৌযানকে মাদক পাচারের সঙ্গে যুক্ত বলে দাবি করছে, সেগুলোর ওপর বোমা হামলা চালাচ্ছে। যদিও বিশ্লেষকরা বলছেন, ভেনেজুয়েলা থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাপক মাদক প্রবাহ বা মাদুরোর নেতৃত্বে কোনো মাদক কার্টেলের সুনির্দিষ্ট প্রমাণ নেই।
ঝড়ে লণ্ডভণ্ড সব: গাজার সংকট পৌঁছাল চরমে
ফিলিস্তিনের গাজায় তীব্র শীতকালীন ঝড়ের কবলে পড়ে মানবিক সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। বাস্তুচ্যুত লাখো ফিলিস্তিনির দুর্দশার মধ্যেই তীব্র ঠান্ডায় জমে দুই সপ্তাহ বয়সী এক শিশুর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
জাতিসংঘ ও বিভিন্ন ত্রাণ সংস্থা সতর্ক করে বলেছে, ইসরায়েলি কঠোর বিধিনিষেধের কারণে জরুরি আশ্রয়সামগ্রী ও শীতবস্ত্র গাজায় প্রবেশ করানো যাচ্ছে না।
বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় শিশুটির মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। এতে অপর্যাপ্ত আশ্রয়ে থাকা শিশু ও বয়স্কদের স্বাস্থ্যঝুঁকি আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র ফারহান হক জানান, সাম্প্রতিক ঝড়ে গাজাজুড়ে বহু আশ্রয়কেন্দ্র এবং ব্যক্তিগত তাবু ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। এতে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ৩০ হাজার শিশু। জাতিসংঘের কাছে তাবু ও কম্বল প্রস্তুত থাকলেও ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ সীমান্ত ক্রসিং দিয়ে সেগুলো প্রবেশে বাধা দিচ্ছে।
গাজার ফিলিস্তিনি সিভিল ডিফেন্স বর্তমান পরিস্থিতিকে ‘সত্যিকারের মানবিক বিপর্যয়’ হিসেবে অভিহিত করেছে।
কূটনৈতিক তৎপরতা এই গভীর সংকটের মধ্যেই ওয়াশিংটন ডিসিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর সঙ্গে বৈঠক করেছেন কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুর রহমান আল থানি। বৈঠকে গাজায় চলমান ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি স্থিতিশীল করা এবং নিঃশর্তভাবে ত্রাণ প্রবেশ নিশ্চিত করার বিষয়ে আলোচনা হয়।
আলজাজিরার সাংবাদিক অ্যালান ফিশার জানান, কাতারের প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেছেন, গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছাতে কোনো শর্ত রাখা যাবে না। এছাড়া যুদ্ধ-পরবর্তী গাজায় একটি নিরপেক্ষ ‘আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনী’ মোতায়েনের সম্ভাবনা নিয়েও দুই নেতার মধ্যে কথা হয়েছে।
যুদ্ধবিরতির মধ্যেও সহিংসতা গাজায় বর্তমানে যুদ্ধবিরতি বলবৎ থাকলেও সহিংসতা পুরোপুরি থামেনি। চিকিৎসা সূত্র জানিয়েছে, গাজা সিটির কেন্দ্রীয় এলাকায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ১১ জন ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, একটি মর্টার শেল লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে এই ঘটনা ঘটেছে।
এছাড়া দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস এবং অধিকৃত পশ্চিম তীরের ক্বালকিলিয়ায় ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিবর্ষণের খবর পাওয়া গেছে।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় চলা ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৭০ হাজার ৬৬৮ জন ছাড়িয়েছে। আহত হয়েছেন ১ লাখ ৭১ হাজারের বেশি মানুষ। অন্যদিকে, হামাসের হামলায় ইসরায়েলে নিহতের সংখ্যা ১ হাজার ১৩৯ জন।
ওমরাহ ভিসায় গিয়ে ভিক্ষা: পাকিস্তানের ভাবমূর্তি সংকট
ভিক্ষাবৃত্তির অভিযোগে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে চলতি বছর ৫১ হাজারেরও বেশি পাকিস্তানি নাগরিককে তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা বা ফেডারেল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এফআইএ) সম্প্রতি এই চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছে।
সংস্থাটি জানায়, ভিক্ষাবৃত্তির দায়ে সবচেয়ে বেশি পাকিস্তানিকে ফেরত পাঠিয়েছে সৌদি আরব। পবিত্র ওমরাহ পালনের নাম করে দেশটিতে গিয়ে ভিক্ষাবৃত্তিতে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগে প্রায় ২৪ হাজার নাগরিককে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
এই তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। সেখান থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে প্রায় ৬ হাজার পাকিস্তানিকে। এছাড়া আজারবাইজান থেকেও ভিক্ষাবৃত্তির অভিযোগে ২ হাজার ৫০০ জন পাকিস্তানির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়ে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
এফআইএর মহাপরিচালক জানান, অনেক পাকিস্তানি ওমরাহ পালনের ভিসা নিয়ে সৌদি আরবে যান এবং সেখান থেকে অবৈধভাবে ইউরোপে পাড়ি জমানোর চেষ্টা করেন। এ ধরনের অপচেষ্টার দায়েও অনেককে আটক করে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
শুধু ভিক্ষাবৃত্তি নয়, পর্যটক ভিসার অপব্যবহারের চিত্রও উঠে এসেছে এফআইএর প্রতিবেদনে। চলতি বছর পর্যটক ভিসা নিয়ে ২৪ হাজার পাকিস্তানি কম্বোডিয়ায় গিয়েছিলেন, যার মধ্যে ১২ হাজার জনই আর দেশে ফেরেননি। একইভাবে মিয়ানমারে যাওয়া ৪ হাজার পর্যটকের মধ্যে ২ হাজার ৫০০ জনই নিখোঁজ বা অবৈধভাবে সেখানেই থেকে গেছেন।
তবে এফআইএ প্রধান দাবি করেছেন, কঠোর নিয়ন্ত্রণের ফলে সামগ্রিকভাবে পাকিস্তান থেকে অবৈধ অভিবাসনের হার কিছুটা কমেছে। গত বছর অবৈধ অভিবাসনে শীর্ষ পাঁচটি দেশের মধ্যে পাকিস্তান থাকলেও, এ বছর সেই তালিকা থেকে তারা বেরিয়ে এসেছে।
অবৈধ অভিবাসন কমানোর ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে দেশটির পাসপোর্টের ওপর। পাকিস্তানের পাসপোর্টের বৈশ্বিক র্যাঙ্কিং ১১৮তম স্থান থেকে উন্নতি হয়ে বর্তমানে ৯২তম স্থানে পৌঁছেছে।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত বছর প্রায় ৮ হাজার পাকিস্তানি অবৈধভাবে ইউরোপে প্রবেশ করেছিলেন। তবে এ বছর সেই সংখ্যা অর্ধেকে নেমে ৪ হাজারে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছে এফআইএ।
যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে যুক্তরাষ্ট্র-ভেনেজুয়েলা: উত্তেজনা চরমে
ভেনেজুয়েলার তেল রপ্তানি পুরোপুরি অচল করে দিতে দেশটির ওপর কঠোর পদক্ষেপ নিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি ভেনেজুয়েলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব নিষেধাজ্ঞাভুক্ত তেলবাহী জাহাজের ওপর ‘সম্পূর্ণ ও সর্বাত্মক’ অবরোধের নির্দেশ দিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের এই আকস্মিক ঘোষণাকে সরাসরি ‘যুদ্ধোন্মাদ হুমকি’ হিসেবে অভিহিত করেছে ভেনেজুয়েলা সরকার। বিবিসি জানিয়েছে, এই ঘটনা দুই দেশের মধ্যকার দীর্ঘদিনের বৈরি সম্পর্ককে সংঘাতের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে।
মঙ্গলবার নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প দাবি করেন, প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর নেতৃত্বাধীন সরকারকে যুক্তরাষ্ট্র ‘বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। তার অভিযোগ, এই সরকার মাদক ও মানব পাচারের মতো গুরুতর অপরাধে জড়িত।
এই ঘোষণার কয়েক দিন আগেই ভেনেজুয়েলার উপকূলের কাছে একটি তেলবাহী জাহাজ জব্দ করে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির অর্থনীতি প্রায় পুরোপুরি তেলনির্ভর হওয়ায় এটিকে বড় ধাক্কা হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা। এরপর আরও ৬টি জাহাজের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ওয়াশিংটন।
ট্রাম্প তার পোস্টে লিখেছেন, ভেনেজুয়েলা এখন দক্ষিণ আমেরিকার ইতিহাসে ‘সবচেয়ে বড় নৌবহর’ দিয়ে ঘেরা অবস্থায় রয়েছে। তিনি হুঁশিয়ারি দেন, পরিস্থিতি এমন হবে যা তারা আগে কখনো দেখেনি।
গত সেপ্টেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত ভেনেজুয়েলার কাছাকাছি সমুদ্রপথে চালানো অভিযানে অন্তত ৯০ জন নিহত হয়েছেন। একই সময়ে ক্যারিয়ার সাগরে বিশ্বের বৃহত্তম যুদ্ধজাহাজ ইউএসএস জেরাল্ড ফোর্ডসহ হাজার হাজার সেনা মোতায়েন করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো অভিযোগ করেছেন, যুক্তরাষ্ট্র তাদের প্রাকৃতিক সম্পদ লুট করতে চাইছে। জব্দ হওয়া ‘স্কিপার’ জাহাজটি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র জাহাজটি চুরি করেছে এবং নাবিকদের অপহরণ করেছে।
অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্র্যাট কংগ্রেসম্যান জোয়াকিন কাস্ত্রো ট্রাম্পের এই ঘোষণাকে ‘সরাসরি যুদ্ধের শামিল’ বলে মন্তব্য করেছেন। ভেনেজুয়েলার সঙ্গে শত্রুতা বন্ধে প্রেসিডেন্টকে নির্দেশ দিতে কংগ্রেসে একটি প্রস্তাবের ওপর ভোট আয়োজনের কথাও জানিয়েছেন তিনি।
ইহুদি উৎসবে হামলাকারী বাবা-ছেলের পরিচয় মিলল
অস্ট্রেলিয়ার বন্ডাই সমুদ্রসৈকতে গত রোববার ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক গুলিবর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্তদের পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে। ইহুদিদের ধর্মীয় উৎসব চলাকালে বাবা ও ছেলের চালানো ওই হামলায় ১৫ জন নিহত হন।
তদন্তে বেরিয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। হামলাকারীদের একজন সাজিদ আকরাম ভারতের হায়দ্রাবাদের বাসিন্দা ছিলেন। ১৯৯৮ সালে তিনি জীবিকার সন্ধানে অস্ট্রেলিয়ায় পাড়ি জমান বলে নিশ্চিত করেছেন তেলঙ্গানার এক পুলিশ কর্মকর্তা।
অস্ট্রেলিয়ায় থিতু হওয়ার পর সাজিদ সেখানে এক ইউরোপীয় বংশোদ্ভূত নারীকে বিয়ে করেন। তাদের ঘরে জন্ম নেওয়া সন্তান নাভিদ আকরাম জন্মসূত্রে অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক। হামলার সময় সাজিদ ভারতীয় পাসপোর্ট ব্যবহার করলেও তার ছেলে ব্যবহার করতেন অস্ট্রেলিয়ার পাসপোর্ট।
পুলিশ জানিয়েছে, হামলাকারী সাজিদ আকরাম ও তার ছেলে নাভিদ আকরাম হামলার ঠিক আগেই ফিলিপাইন সফরে গিয়েছিলেন। তারা কেন সেখানে গিয়েছিলেন এবং এর সঙ্গে হামলার কোনো যোগসূত্র আছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে অস্ট্রেলিয়া ও ফিলিপাইন কর্তৃপক্ষ তথ্য বিনিময়ে সম্মত হয়েছে।
ভারতের পুলিশের রেকর্ড অনুযায়ী, সাজিদের বিরুদ্ধে নিজ দেশে কোনো অপরাধের রেকর্ড নেই। অভিবাসনের পর তিনি মাত্র ছয়বার বৃদ্ধ বাবা-মাকে দেখতে ভারতে এসেছিলেন। তবে তাদের উগ্রপন্থায় জড়ানোর সঙ্গে ভারত বা স্থানীয় কোনো বিষয়ের যোগসূত্র পাওয়া যায়নি।
গোলাগুলির ঘটনার পরপরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে পুলিশ দ্রুত অভিযানে নামে। ঘটনাস্থলেই পুলিশের গুলিতে প্রধান অভিযুক্ত সাজিদ আকরাম নিহত হন এবং তার ছেলে নাভিদ আকরামকে জীবিত আটক করা হয়।
কূটনৈতিক উত্তেজনায় দিল্লিতে বাংলাদেশি হাইকমিশনার তলব
বাংলাদেশ–ভারত সম্পর্কের সাম্প্রতিক উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে নয়াদিল্লি ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার রিয়াজ হামিদুল্লাকে তলব করেছে। একই সঙ্গে ঢাকায় অবস্থানরত ভারতীয় হাইকমিশনারকে ঘিরে সাম্প্রতিক হুমকি এবং বাংলাদেশি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের ভারতবিরোধী বক্তব্যের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক প্রতিবাদ জানিয়েছে ভারত।
বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর দুপুরে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে রিয়াজ হামিদুল্লাকে ডেকে পাঠানো হয়। কূটনৈতিক সূত্রগুলোর মতে, এই বৈঠকে ভারত তার নিরাপত্তা উদ্বেগ এবং বাংলাদেশে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক বক্তব্য ও কর্মকাণ্ড নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
এর আগে চলতি সপ্তাহের সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়েছিল। মাত্র দুই দিনের ব্যবধানে পাল্টা এই কূটনৈতিক পদক্ষেপকে উভয় দেশের মধ্যে চলমান উত্তেজনার প্রতিফলন হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা।
দিল্লির এই পদক্ষেপের পেছনে সাম্প্রতিক সময়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা এবং শেখ হাসিনার সরকার উৎখাতে ভূমিকা রাখা ছাত্র-নেতৃত্বাধীন আন্দোলনের অন্যতম মুখ হাসনাত আবদুল্লাহর বক্তব্যকে কেন্দ্রীয় কারণ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। ঢাকায় আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি মন্তব্য করেছিলেন যে, বাংলাদেশ প্রয়োজনে ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী ও ভারতবিরোধী শক্তি’কে আশ্রয় দিতে পারে এবং ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যসমূহকে, যা ‘সেভেন সিস্টার্স’ নামে পরিচিত, দেশটির মূল ভূখণ্ড থেকে ‘বিচ্ছিন্ন’ করার সক্ষমতাও রাখে। এই বক্তব্য নয়াদিল্লিতে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে বলে জানা গেছে।
এর পাশাপাশি, চলতি সপ্তাহের শুরুতে ঢাকায় এক বিক্ষোভ চলাকালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কুশপুত্তলিকা দাহের ঘটনাও কূটনৈতিক অস্বস্তি বাড়িয়েছে। ভারত এটিকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের প্রতি অসম্মানজনক আচরণ হিসেবে দেখছে বলে কূটনৈতিক সূত্রে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
-
পাঠকের মতামত:
- জরুরি বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটি, সভাপতিত্বে তারেক রহমান
- এবার মুখোমুখি ভারত ও পাকিস্তান
- হাদির আসনে নির্বাচনে নামছেন যিনি
- হাদির জানাজা উপলক্ষে রাজধানীতে বিশেষ ট্রাফিক নির্দেশনা
- মরুভূমির দেশে সাদা চাদর, তুষারে ঢাকল সৌদি পাহাড়
- শনিবারের যে পরীক্ষা বাতিল ঘোষণা
- ওসমান হাদির জানাজা শনিবার জানাজা কোথায় ও কখন
- জুমার দিনে দরুদ পাঠের বিশেষ ফজিলত
- শেয়ারবাজারের সাপ্তাহিক পূর্ণাঙ্গ বিশ্লেষণ
- হাদি হত্যার প্রতিবাদে উত্তাল শাহবাগ: বাড়ছে জনস্রোত
- থামবে বয়সের চাকা: বৃদ্ধ কোষকে তারুণ্য দেবে ‘জাদুকরী ফুল’
- রাজশাহী আ.লীগ অফিস এখন ধ্বংসস্তূপ
- জুমার দিন কেন সেরা? হাদিসে বর্ণিত ৫টি বড় কারণ
- হাসিনার গুলিই দমাতে পারেনি, সন্ত্রাসীদের তোয়াক্কা করি না
- ওষুধের বাজার নিয়ন্ত্রণে নেই সরকারের, ভাঙেনি পুরোনো সিন্ডিকেট
- শুক্রবার সোনার বাজারে কী অবস্থা? জানুন আজকের দর
- হাদির মৃত্যু ঘিরে আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
- বদলে গেল ইতিহাস: পৃথিবীতে প্রাণের জন্ম নিয়ে বিজ্ঞানীদের নতুন দাবি
- প্রতিদিন হত্যার হুমকি পাচ্ছি: হাসনাত আব্দুল্লাহ
- হাড়ের ব্যথায় ভুগছেন? শুধু বয়স নয়, দায়ী আপনার ৫টি অভ্যাস
- লিখিত পরীক্ষা নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিজ্ঞপ্তি
- হাদির প্রথম জানাজা কোথায় ও কখন? জানাল ইনকিলাব মঞ্চ
- হাদি মৃত্যুতে জ্বলছে দেশ: মিডিয়া অফিস ও হাই কমিশনে হামলা
- খেলার খবর: বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচসহ আজকের টিভি সূচি
- খুলনায় সাংবাদিককে গুলি করে হত্যা
- ছুটির দিনেও উত্তপ্ত ঢাকা: আজ কোথায় কী কর্মসূচি?
- এবার এনসিপি নেতা হান্নান মাসউদকে মেরে ফেলার হুমকি
- হাদির মৃত্যুতে শায়খ আহমাদুল্লাহ ও আজহারীর আবেগঘন বার্তা
- দিল্লি না ঢাকা? স্লোগানে স্লোগানে কাঁপছে শাহবাগ চত্বর
- শুক্রবার কেমন থাকবে ঢাকার আকাশ? জেনে নিন
- রাজধানীতে আজ কেমন থাকবে আবহাওয়া, জানাল অধিদপ্তর
- প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারে হামলার প্রতিবাদে মির্জা ফখরুল
- ধ্বংস নয়, পুনর্গঠনেই বাঁচবেন হাদি: হাসনাত আবদুল্লাহ
- যুব এশিয়া কাপসহ আজকের পূর্ণ ক্রীড়া সূচি
- আজ বাংলাদেশ–পাকিস্তান সেমিফাইনাল এর সময় জানুন
- আজকের নামাজের সময়সূচি: ১৯ ডিসেম্বর
- যখন দেশে ফিরছে শরিফ ওসমান হাদির মরদেহ
- সবাইকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে শরিফ ওসমান হাদি
- ৭১-এর পর ভারতের বড় কৌশলগত চ্যালেঞ্জ এখন বাংলাদেশ
- টাকার চিন্তায় ঘুম নেই জেন-Z প্রজন্মের: গবেষণায় চমকপ্রদ তথ্য
- শীতে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কেন বাড়ে? জানুন বাঁচার উপায়
- বক্স অফিসে রণবীরের তাণ্ডব: আয়ের অংক শুনলে চমকে যাবেন
- সব জুলাইযোদ্ধাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখছি: সামান্তা শারমিন
- রিজার্ভের নতুন মাইলফলক: একদিনেই বাড়ল বড় অংক
- ১৪ জানুয়ারি ঢাকায় আসছে বিশ্বকাপ ট্রফি
- তারেক রহমানের ফেরা: ৭ রুটে স্পেশাল ট্রেন চায় বিএনপি
- ২৫ ডিসেম্বর ঐতিহাসিক শোডাউন: অভ্যর্থনার প্রস্তুতি নিয়ে সালাহউদ্দিনের বার্তা
- ভারত থেকে হত্যার হুমকি দিচ্ছেন হাসিনা: আসিফ নজরুল
- দুই দশকের আক্ষেপ ঘুচল: ২৭তম বিসিএসে বড় নিয়োগ
- গুম পরিবারের জন্য ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত: সম্পদ ব্যবহারে বাধা নেই
- বুধবার টানা ১০ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকবে না যেসব এলাকায়
- চিকিৎসক জানাল ওসমান হাদীর বর্তমান অবস্থা
- শনি-রবিবার বিদ্যুৎ থাকবে না বহু এলাকায়
- মাধ্যমিক স্কুলে ভর্তি শুরুর সময়সূচি প্রকাশ
- এমপি হওয়ার আগেই ভিআইপি প্রোটোকল পেলেন হাদি: ডা. মাহমুদা মিতু
- রোববার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বিদ্যুৎহীন যেসব এলাকা
- ১২ ফেব্রুয়ারি জাতীয় নির্বাচন ঘোষণা
- বাজুসের নতুন ঘোষণা: আজ থেকে কার্যকর স্বর্ণের বর্ধিত দাম
- দেশের বাজারে স্বর্ণের দামের নতুন রেকর্ড
- শীতে ত্বক শুষ্ক ও র্যাশ কেন হয়, জানুন সমাধান
- ১৬ অক্টোবর ২০২৫: জেনে নিন আজকের মুদ্রা বিনিময় হার
- সিঙ্গাপুরে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে ওসমান হাদি
- মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় দেশসেরা জাহাঙ্গীর আলম শান্ত
- আগামী ৫ দিনের আবহাওয়ার আগাম বার্তা দিল আবহাওয়া অফিস
- ২৩ ছক্কায় বিধ্বস্ত প্রতিপক্ষ, ঝড় তুললেন এডওয়ার্ডস








