সেভেন সিস্টার্স নিয়ে ভারতের বিকল্প রুট পরিকল্পনা: কি ভাবছে ভারত?

সত্য নিউজ:বাংলাদেশে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর দেশটির সঙ্গে ভারতের দীর্ঘদিনের ঘনিষ্ঠ কূটনৈতিক সম্পর্ক কিছুটা শীতল হয়ে পড়েছে। এই নতুন পরিস্থিতি ভারতের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও বাণিজ্য পরিকল্পনায় এক গভীর পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। বিশেষ করে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল—যা ‘সেভেন সিস্টার্স’ নামে পরিচিত—সেই অঞ্চলের সঙ্গে মূল ভূখণ্ডের যোগাযোগ নিয়ে দিল্লি এখন নতুন করে ভাবছে। কারণ, এতদিন বাংলাদেশ হয়ে এই অঞ্চলে সহজ বাণিজ্যিক ও কৌশলগত প্রবেশ সম্ভব হলেও, বর্তমানে সেই পথ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
এই অবস্থায় ভারত বিকল্প রুট খুঁজে নিয়েছে। জানা গেছে, নতুন রুটটি হবে কলকাতা বন্দর থেকে মিয়ানমারের সিত্তে সমুদ্রবন্দর হয়ে মিজোরাম হয়ে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে প্রবেশের একটি আধুনিক সমুদ্র ও সড়কপথ।
ভারতের অন্যতম জাতীয় দৈনিক দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানায়, ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার মেঘালয়ের রাজধানী শিলং থেকে আসামের শিলচর পর্যন্ত একটি নতুন চার লেনের এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের পরিকল্পনা করছে, যা হবে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রথম উচ্চগতির করিডর। এই সড়কটি নির্মাণ করছে ন্যাশনাল হাইওয়েজ অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন লিমিটেড (NHIDCL), এবং এটি ২০৩০ সালের মধ্যে শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
এই এক্সপ্রেসওয়ে সরাসরি যুক্ত হবে ভারতের পুরনো প্রকল্প ‘কালাদান মাল্টিমোডাল ট্রানজিট প্রজেক্ট’-এর সঙ্গে, যা ইতোমধ্যেই মিয়ানমারের সিত্তে সমুদ্রবন্দরকে কালাদান নদীপথ ও সড়কপথ ব্যবহার করে ভারতের মিজোরাম রাজ্যের জোরিনপুই এলাকার সঙ্গে সংযুক্ত করেছে।
এই পথটি কার্যকর হলে, কলকাতা কিংবা বিশাখাপত্তনম বন্দর থেকে বাংলাদেশের ভৌগোলিক ভূখণ্ড ব্যবহার না করেই পণ্য পৌঁছানো যাবে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে। ভারতের এক কর্মকর্তা দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, “এই প্রকল্প হচ্ছে বাংলাদেশের জন্য আমাদের কৌশলগত জবাব।”
এই উত্তেজনার পেছনে বড় একটি কারণ হল বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের বেইজিং সফরে দেয়া এক বক্তব্য, যেখানে তিনি বলেন, “উত্তর-পূর্ব ভারত ভূবেষ্টিত, এবং এই অঞ্চলের জন্য ঢাকা একমাত্র অভিভাবক।” ভারতের মতে, এই বক্তব্য ভারতের সার্বভৌম সিদ্ধান্ত গ্রহণের স্বাধীনতার ওপর চাপ প্রয়োগের ইঙ্গিত দেয়, যা দিল্লিকে বিকল্প কৌশল নিতে বাধ্য করেছে।
ভারত ইতোমধ্যে বাংলাদেশ হয়ে চলমান তিনটি রেল প্রকল্প স্থগিত করেছে, যেগুলোর মাধ্যমে শিলিগুড়ি করিডরের ওপর চাপ কমিয়ে ভারতের মূল ভূখণ্ড ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মধ্যে সরাসরি সংযোগ স্থাপন করার পরিকল্পনা ছিল। আরও পাঁচটি রেল প্রকল্পের জরিপ কার্যক্রমও স্থগিত রাখা হয়েছে। স্থগিত হওয়া এই আট প্রকল্পের মোট সম্ভাব্য ব্যয় ছিল প্রায় ৫ হাজার কোটি রুপি।
এদিকে ভারত এখন ভুটান ও নেপালের সঙ্গে বিকল্প সংযোগ পথ গড়ার দিকেও নজর দিচ্ছে। এই নতুন রুট তৈরিতে খরচ হতে পারে ৩৫০০ থেকে ৪০০০ কোটি রুপি।
বর্তমানে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার। ২০২৪ সালে দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ১২.৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। কিন্তু রাজনৈতিক অস্থিরতা ও নিরাপত্তা পরিস্থিতির কারণে ভারতের আস্থা কিছুটা কমে যাওয়ায়, তারা এখন অন্য বিকল্প পথ তৈরিতে বিনিয়োগ করছে।
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে চার্জ দাখিল, বিটিভিতে সরাসরি সম্প্রচার
- চীন না ভারত? উন্নয়ন না আনুগত্য? বুলেট ট্রেন বলছে স্পষ্ট জবাব
- অবশেষে বিসিবি সভাপতি ফারুককে নিয়ে মুখ খুললেন আসিফ
- বিশ্বশক্তির নজর এখন বাংলাদেশে: খনিজ ভাণ্ডারের নতুন মানচিত্র
- নতুন বিসিবি সভাপতিবুলবুলের কাছে আশরাফুলের চাওয়া
- হালদা নদীতে ডিম ছাড়ল রুই জাতীয় মা মাছ, সংগ্রহ প্রায় ১৪ হাজার কেজি নিষিক্ত ডিম
- শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান: রাষ্ট্র নির্মাণের এক উজ্জ্বল প্রতিমূর্তি
- ঈদের দিন বৃষ্টি হবে কি?
- জবি’র সাবেক অধ্যাপক আনোয়ার বেগম হত্যাচেষ্টা মামলায় সুত্রাপুরে আটক
- চট্টগ্রাম বন্দরে নতুন ভোর: দক্ষিণ এশিয়ার তেলের ‘রাজসিংহাসন’ দখলের পথে বাংলাদেশ?
- ধ্বংস থেকে নেতৃত্ব: ৫ আগস্ট থেকে যেভাবে শুরু হলো অর্থনীতির পুনর্জাগরণ
- ধর্ম-সংস্কৃতি উপেক্ষা নয়: সংবিধান সংশোধনে ১৮০ শিক্ষকের সরব প্রতিবাদ
- সোনাক্ষীর ‘নিকিতা রায়’-এর মুক্তি পেছাল, ঘোষণা দিলেন নতুন তারিখ
- দেশের ৬ জেলায় ৮০ কিলোমিটার বেগে ঝড়-বৃষ্টির শঙ্কা, নদীবন্দরে ২ নম্বর সতর্কতা
- ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ৪০৫ কোটি টাকার লোকসান