‘আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ’, আলোচনায় এনসিপি!

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ মে ১৭ ১৩:০০:৪৩
‘আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ’, আলোচনায় এনসিপি!

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) শুরুতে কিছু নেতাকর্মীর শৃঙ্খলাবিরোধী আচরণ ও সাংগঠনিক ধীরগতির কারণে সমালোচনার মুখে পড়ে। তবে ‘আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ’-এর দাবিতে আন্দোলনের মাধ্যমে দলটি নতুন করে আলোচনায় আসে। এখন এনসিপির লক্ষ্য হচ্ছে সংগঠনকে সারাদেশে ছড়িয়ে দেওয়া এবং নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন অর্জন।

দলটির নেতারা জানিয়েছেন, ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার গুছিয়ে সংগঠন বিস্তারে মনোযোগ দিচ্ছেন তারা। ইতোমধ্যে ৬৪ জেলাকে ১৯টি ভাগে ভাগ করে সাংগঠনিক টিম গঠন করা হয়েছে। চলতি মাসেই জেলা কমিটি গঠনের কাজ শুরু হবে এবং দুই মাসের মধ্যে জেলা-উপজেলায় কমিটি তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। জেলা কমিটি ৩১ থেকে ৫১ সদস্য এবং উপজেলা কমিটি ২১ থেকে ৪১ সদস্যের মধ্যে গঠিত হবে। আহ্বায়ক পদের জন্য সর্বনিম্ন বয়স নির্ধারণ করা হয়েছে ৪০ বছর।

এনসিপি ইতোমধ্যে একাধিক উইং গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে যুব, শ্রমিক, স্বাস্থ্য, নারী ও আইনজীবী উইং। সম্প্রতি 'জাতীয় যুব শক্তি' নামে যুব সংগঠনও চালু হয়েছে। নেতারা বলছেন, এসব শাখা সংগঠনের মাধ্যমে তারা সমাজের বিভিন্ন শ্রেণিতে পৌঁছাতে চান।

ভবিষ্যতের দিকরেখা: বাস্তবতাকে কেন্দ্র করে কৌশল পরিবর্তন

জাতীয় নাগরিক পার্টির জন্ম হয়েছিল এক রাজনৈতিক শূন্যতায়, বিকল্প ধারা তৈরির অঙ্গীকারে। যদিও বাস্তবতার জটিলতা ও অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলার অভাব তাদের অগ্রযাত্রায় শ্লথতা এনেছে, তবে বর্তমান কৌশলগত অবস্থান বলছে দলটি তার মৌলিক লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হয়নি। সংগঠনের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ, নিবন্ধন এবং স্তরভিত্তিক কাঠামোর বিস্তারই এখন তাদের মূল এজেন্ডা।

প্রশ্ন থাকে, এই প্রয়াস কতটা টেকসই হবে? আদর্শিক অবস্থান কতটা স্পষ্ট ও বাস্তববাদী হবে? তারা যদি কেবল ‘আওয়ামী লীগ বিরোধিতা’কে একমাত্র পরিচয় হিসেবে ধরে রাখে, তবে ভবিষ্যতে আরও বড় রাজনৈতিক প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা কঠিন হবে। কিন্তু যদি সংগঠনের ভিত মজবুত করে, জনমানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে সক্ষম হয়, তবে এনসিপি হয়ে উঠতে পারে একটি কার্যকর বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি।

নিবন্ধনের দিকে পদক্ষেপ: কৌশলগত প্রস্তুতি ও সময় ব্যবস্থাপনা

নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে নিবন্ধনের সময়সীমা ২২ জুন পর্যন্ত বাড়ানোয় এনসিপি এই সময়কে সর্বোচ্চ ব্যবহারের চেষ্টা করছে। দলীয় গঠনতন্ত্র, লোগো, নির্বাচনী প্রতীক, কার্যালয় স্থাপন এসব আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতেই এখন তাদের মূল ব্যস্ততা। একটি টিম নিবন্ধন সংক্রান্ত কার্যক্রমে সম্পৃক্ত রয়েছে, এবং ইতোমধ্যে প্রতীকের শর্টলিস্ট তৈরি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন যুগ্ম আহ্বায়ক তাজনূভা জাবীন।

দলটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলছেন, "নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধনের জন্য যে শর্তগুলো পূরণ করতে হয়, আমরা সেগুলো দ্রুতই পূরণ করে আবেদন করব। পাশাপাশি সংগঠনকে তৃণমূল পর্যায়ে পৌঁছে দিতে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছি।"

এনসিপি নেতারা বলছেন, আপাতত বড় কোনো আন্দোলনে না গিয়ে সংগঠন গঠনের কাজেই তারা বেশি মনোযোগ দিচ্ছেন। তাদের আশা, পরিকল্পনা অনুযায়ী এগোতে পারলে শিগগিরই দলটি দেশের ঘরে ঘরে পৌঁছাতে পারবে।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ