গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে সংশোধনী, পালিয়ে থাকা নেতাদের জন্য কড়া নিয়ম

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৩ ০৮:৩৫:৩৬
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে সংশোধনী, পালিয়ে থাকা নেতাদের জন্য কড়া নিয়ম
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে নির্বাচনী বিধান নতুন মোড় নিচ্ছে। গত বছরের ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচির মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের অধিকাংশই আত্মগোপনে বা বিদেশে অবস্থান করছেন। দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনাসহ অনেক কেন্দ্রীয় নেতা বর্তমানে ভারতে এবং অন্যান্য দেশে রয়েছেন বলে জানা গেছে। এদিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালসহ বিভিন্ন আদালতে তাদের বিরুদ্ধে মামলা চলমান রয়েছে। আইন অনুযায়ী, চলমান মামলায় আসামিরা ইচ্ছাকৃতভাবে আত্মগোপন করলে আদালত তাদের ‘পলাতক’ বা ‘ফেরারি’ ঘোষণা করার ক্ষমতা রাখে। ইতোমধ্যে শেখ হাসিনা, তাঁর বোন শেখ রেহানাসহ অনেকের বিরুদ্ধে আদালতে হাজির হতে সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে, আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতাদের অংশগ্রহণ আরও কঠিন হয়ে পড়ছে। নির্বাচন কমিশন (ইসি) জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা ও অযোগ্যতার মধ্যে নতুন একটি বিধান অন্তর্ভুক্ত করেছে। নতুন বিধান অনুযায়ী, কোনো আদালত যদি কাউকে ‘ফেরারি’ ঘোষণা করে, তবে তিনি সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য হবেন। ‘গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ’ (Representation of the People Order - RPO)–এর ১২(১) অনুচ্ছেদে সংশোধন এনে এই বিধান সংযোজন করেছে ইসি। মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) কমিশন চূড়ান্তভাবে এই খসড়া অনুমোদন দিয়েছে।

ইসি সূত্রে জানা গেছে, এতদিন পর্যন্ত সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা নির্বাচনে অযোগ্য হতেন। কিন্তু এবার রায় ঘোষণার আগেই যদি শুনানিতে হাজির না থাকার কারণে আদালত কাউকে ‘ফেরারি’ ঘোষণা করে, তবে সেই ব্যক্তিও নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। এছাড়া অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সুযোগও বাতিল করা হয়েছে। এখন প্রার্থী কিংবা তাঁর প্রস্তাবক বা সমর্থককে সরাসরি রিটার্নিং কর্মকর্তা বা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দিতে হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই বিধান কার্যকর হলে আওয়ামী লীগের অসংখ্য নেতা আগামী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ হারাবেন।

আইন বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, আওয়ামী লীগের অনেক নেতার বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই বিপুলসংখ্যক মামলা চলমান রয়েছে। যেসব নেতা নিয়মিত আদালতে হাজির হননি, তাঁদের অনেককেই আদালত ফেরারি ঘোষণা করেছে। ফলে এসব ব্যক্তি নতুন বিধান অনুযায়ী নির্বাচনে অযোগ্য হবেন। অর্থ পাচারসহ অন্যান্য ফৌজদারি অপরাধের মামলায় ফেরারি হলে তারাও একইভাবে অযোগ্য বিবেচিত হবেন। এ ছাড়া যেসব নেতা সরাসরি মামলার আসামি নন, কিন্তু আশঙ্কায় আত্মগোপনে রয়েছেন, তাঁদের জন্যও মনোনয়নপত্র অনলাইনে দাখিলের পথ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।

ইসি সূত্র আরও জানিয়েছে, দীর্ঘ আলোচনার পর মঙ্গলবার ‘গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ’–এর খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশেই ফেরারি আসামিদের প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য করার বিধান যোগ করা হয়েছে। সিটি করপোরেশন, উপজেলা পরিষদসহ স্থানীয় সরকার নির্বাচনে এই বিধান আগে থেকেই বিদ্যমান ছিল। এখন সেটি সংসদ নির্বাচনের ক্ষেত্রেও কার্যকর হতে যাচ্ছে। যদিও ইসি পূর্বে এক পর্যায়ে জানিয়েছিল, ফেরারি আসামিকে অযোগ্য করার বিধান রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার হতে পারে। তবে বর্তমান কমিশন বিষয়টি সূক্ষ্মভাবে বিবেচনা করে আইনেই তা যুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ যুগান্তরকে বলেন, “আমরা আরপিও খসড়া চূড়ান্ত করেছি। এখন এটি আইন মন্ত্রণালয়ে যাবে অধ্যাদেশ জারির জন্য। আদালত কর্তৃক ফেরারিরা নির্বাচনে অযোগ্য হবে—এই বিধান আমাদের প্রস্তাবে রাখা হয়েছে।” অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সুযোগ বাতিলের বিষয়টিও তিনি নিশ্চিত করেন।

তবে এ বিধানের ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিক রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সদস্য জেসমিন টুলি। তাঁর মতে, স্থানীয় সরকার নির্বাচনের আইনে এই বিধান আগে থেকেই কার্যকর। তাই সংসদ নির্বাচনে যুক্ত হওয়াটা যৌক্তিক। তবে প্রশাসন ও পুলিশের প্রভাব থাকলে এই আইন রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে হয়রানি করার হাতিয়ার হতে পারে।

এছাড়া ইসির চূড়ান্ত খসড়ায় আরও অন্তত ৪৫টি সংশোধনী আনা হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—কোনো আসনে একক প্রার্থী থাকলে ‘না’ ভোটের বিধান, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংজ্ঞায় সেনা, নৌ, বিমান ও কোস্টগার্ডকে অন্তর্ভুক্ত করা, প্রার্থীর দেশি-বিদেশি সব সম্পদ হলফনামায় উল্লেখ বাধ্যতামূলক করা এবং মিথ্যা তথ্য দিলে সংসদ সদস্য পদ বাতিল করা, নির্বাচনি জামানত ২০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করা, জোটভুক্ত প্রার্থীদের নিজ দলীয় প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা, প্রার্থীর নিজ এলাকায় ভোটার হতে হবে এজেন্ট ও পোলিং এজেন্ট নিয়োগের ক্ষেত্রে, এবং পুরো আসনের ভোট বাতিল করার ক্ষমতা আবারও ইসির হাতে ফিরিয়ে আনা। একই সঙ্গে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার সম্পর্কিত অনুচ্ছেদগুলো বাদ দেওয়া হয়েছে।

ইসির প্রস্তাবিত এই সংশোধনী বুধবার আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। এরপর আইন মন্ত্রণালয় অধ্যাদেশ আকারে তা জারি করতে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে তুলবে। অধ্যাদেশ জারি হলেই নতুন বিধান কার্যকর হবে এবং আসন্ন সংসদ নির্বাচনে এর বাস্তব প্রয়োগ দেখা যাবে।

-রাফসান


নুরুল হক নূর কে নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের জরুরি নির্দেশ 

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৩ ০৮:০৮:০৬
নুরুল হক নূর কে নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের জরুরি নির্দেশ 
ছবিঃ সংগৃহীত

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রধান নেতৃস্থানীয় রাজনীতিবিদ নুরুল হক নূরের গুরুতর শারীরিক অবস্থার প্রেক্ষিতে তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।

মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন নূরের সহধর্মিণী মারিয়া আক্তার, গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান এবং সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মামুন। বৈঠকে নূরের শারীরিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন মারিয়া আক্তার। তিনি জানান, নূরের মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েছে, নাকের হাড় ভেঙে গেছে, পাশাপাশি চোয়াল ও মেরুদণ্ডে গুরুতর আঘাত লেগেছে।

নূরের স্ত্রী দৃঢ়ভাবে মত প্রকাশ করেন যে তাঁর স্বামীর জীবন বাঁচাতে দ্রুত বিদেশে নিয়ে যাওয়া একান্ত প্রয়োজন। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে প্রধান উপদেষ্টা তাৎক্ষণিকভাবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেন যাতে নূরের সুচিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়।

প্রফেসর ইউনূস বলেন, “এই ঘটনায় আমরা সবাই গভীরভাবে মর্মাহত। তাঁর যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিত করতে আমরা সব ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছি। একই সঙ্গে এই হামলার কারণ উদঘাটনে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রক্রিয়া চলছে।”

বৈঠকে আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল, পরিবেশ উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট রিজওয়ানা হাসান এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট আদিলুর রহমান খান উপস্থিত ছিলেন।

আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বৈঠকে জানান, হামলার ঘটনা তদন্তে বিচারপতি আলী রেজার নেতৃত্বে একটি এক সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হচ্ছে। আগামীকাল বুধবারের মধ্যেই এই বিষয়ে সরকারিভাবে গেজেট প্রকাশিত হবে এবং পরবর্তী ১৫ দিনের মধ্যে তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদন জমা দেবে।

-রফিক


নুরকে সুচিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর নির্দেশ দিলেন প্রধান উপদেষ্টা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০২ ২১:২৩:৪৪
নুরকে সুচিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর নির্দেশ দিলেন প্রধান উপদেষ্টা
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও নুরুল হক নুর। ছবি : সংগৃহীত

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরের সুচিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। মঙ্গলবার (২ আগস্ট) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে নুরের স্ত্রী মারিয়া আক্তার এবং গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান ও সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মামুন সাক্ষাৎ করলে তিনি এই নির্দেশ দেন।

নুরের শারীরিক অবস্থার বর্ণনা দিতে গিয়ে তার স্ত্রী মারিয়া আক্তার কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি জানান, নুরের মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েছে, নাকের হাড় ভেঙেছে এবং তিনি চোয়াল ও মেরুদণ্ডে আঘাত পেয়েছেন। মারিয়া আক্তার তার স্বামীর উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন। এরপরই প্রধান উপদেষ্টা তাৎক্ষণিকভাবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে নুরকে বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “এ ঘটনায় আমরা সবাই স্তম্ভিত। তার সুচিকিৎসায় আমরা সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছি।” তিনি আরও জানান, এই হামলার ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত চলছে।

এ সময় বৈঠকে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, পরিবেশ উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান উপস্থিত ছিলেন।

আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল সাংবাদিকদের জানান, হামলার ঘটনা তদন্তে বিচারপতি আলী রেজার নেতৃত্বে একটি এক সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হচ্ছে। আগামীকালের (বুধবার) মধ্যেই এ সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশিত হবে এবং তদন্ত কমিটি ১৫ দিনের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন জমা দেবে।

/আশিক


আলোচনার টেবিলে ভিন্ন দাবি, নির্বাচনের পথে নতুন কোন সংকেত?

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০২ ২০:০১:৩৬
আলোচনার টেবিলে ভিন্ন দাবি, নির্বাচনের পথে নতুন কোন সংকেত?
ছবি: সংগৃহীত

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করছেন অন্তর্বর্তী সরকার। মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) ৭টি রাজনৈতিক দল ও একটি সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এর আগে রোববার তিনটি প্রধান রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে অন্তর্বর্তী সরকার। বৈঠকগুলোতে শীর্ষ রাজনীতিকদের স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন সরকার প্রধান।

তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন হবে। নির্বাচন ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। কেউ যদি নির্বাচনের বিকল্প নিয়ে ভাবে, সেটা হবে জাতির জন্য গভীর বিপজ্জনক। রোববার বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির সঙ্গে পৃথক বৈঠকে এই বার্তা দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বিকাল সাড়ে ৪টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় এ বৈঠক হয়।

বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, প্রধান উপদেষ্টা স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন তিনি জাতির উদ্দেশে ভাষণে নির্বাচনের যে সময় ঘোষণা করেছেন, নির্বাচন সেই সময়ের মধ্যেই হবে। একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন হবে এবং বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে সেরা নির্বাচন হবে। বৈঠকগুলোতে জাতীয় পার্টির বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না জানতে চাইলে প্রেস সচিব বলেন, জাতীয় পার্টির বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। একেকটি দল একেক ধরনের মতামত দিয়েছে, প্রধান উপদেষ্টা সেটা শুনেছেন।

এসব বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল, গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। তবে সব বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে উপদেষ্টারা সবাই উপস্থিত ছিলেন না।

বিএনপি: নির্বাচন পেছানোর কোনো সুযোগ নেই

সন্ধ্যা ৭টা ১৫ মিনিটে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় প্রবেশ করে। এক ঘণ্টারও বেশি সময় বৈঠক শেষে মির্জা ফখরুল জানান, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন হবে বলে প্রধান উপদেষ্টা আশ্বস্ত করেছেন। বিএনপি আশা রাখে, প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণা অনুযায়ী নির্বাচন হবে।

জাতীয় পার্টি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে কোনো আলোচনা হয়নি বলে জানান মির্জা ফখরুল। লন্ডনে একটি দলের প্রধানের সঙ্গে বৈঠকে নির্বাচনের সময় নির্ধারণ প্রমাণ করে সরকার একটি দলের ওপর দুর্বল—জামায়াতের এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, এটি একেবারেই অমূলক দাবি। তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে সম্প্রতি গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরের ওপর হামলার বিষয়ে বিএনপি মতামত দিয়েছে এবং মনে করে এটি অত্যন্ত গর্হিত কাজ ও উদ্বেগজনক। এটা ভালোভাবে তদন্ত হওয়া দরকার।

মির্জা ফখরুল বলেন, একটি শক্তি নির্বাচনকে বিলম্বিত করার চেষ্টা করছে। তবে নির্বাচন পেছানোর কোনো সুযোগ নেই। নির্বাচনের তারিখ হিসেবে যেটা ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, সেই তারিখেই নির্বাচন হবে। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে।

জামায়াত: সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা

জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহেরের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলে ছিলেন সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান ও হামিদুর রহমান আযাদ। বিকাল সোয়া ৪টায় জামায়াতের প্রতিনিধি দলটি যমুনায় প্রবেশ করে। ১ ঘণ্টার বৈঠক শেষে সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের সাংবাদিকদের বলেন, প্রধান উপদেষ্টা অবাধ নির্বাচন হবে বলেছেন। আমরা তার বক্তব্যের সঙ্গে একমত হয়েছি। কিন্তু কার্যকারিতার বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করেছি। আমরা সুষ্ঠু নির্বাচনের দিকে যাচ্ছি কি না তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। লন্ডনে গিয়ে নির্বাচনের সময় ঘোষণার ঘটনায় নিরপেক্ষতার প্রশ্ন রয়েছে। তিনি বলেন, জুলাই ঘোষণা সব দলের সঙ্গে আলোচনায় হয়নি। এতে নিরপেক্ষতা বজায় রাখা হয়নি। নির্বাচনের সময় ঘোষণা মনে হচ্ছে চাপে পড়ে দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা স্পষ্ট বলে আসছি, আমরা চার্টারের পূর্ণ বাস্তবায়ন চাই এবং এই চার্টারের ভিত্তিতেই আগামী নির্বাচন হতে হবে। জামায়াত নেতা বলেন, আওয়ামী লীগের সহযোগী হিসাবে জাতীয় পার্টি কাজ করেছে। আওয়ামী লীগের বিষয়ে যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, জাতীয় পার্টির বিষয়েও একই সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা বলেছেন তারা। তিনি আরও বলেন, প্রধান উপদেষ্টাকে আমরা বলেছি আগে একদল বাসস্ট্যান্ড দখলে নিত, এখন আরেকটি গ্রুপ নিয়েছে। যে সরকার এসব নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না সেই সরকার কীভাবে নির্বাচন করবে আমরা তা নিয়ে শঙ্কিত।

গণপরিষদ নির্বাচন ও জাতীয় পার্টির কার্যক্রম নিষিদ্ধ চায় এনসিপি

বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় প্রবেশ করে এনসিপির চার সদস্যের প্রতিনিধিদল। প্রতিনিধিদলে ছিলেন মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারা ও জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ। ১ ঘণ্টার বৈঠক শেষে দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব সাংবাদিকদের বলেন, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তির জন্য গণপরিষদ নির্বাচন দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তারা।

তিনি বলেন, গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের সংকট, একক ব্যক্তিকেন্দ্রিক স্বৈরতান্ত্রিক মনোভাব কিংবা কাঠামো দূর করা সম্ভব হবে। তারা আরও বলেন, জাতীয় পার্টি এবং আওয়ামী লীগের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। যেহেতু আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে, তাই জাতীয় পার্টির কার্যক্রমও স্থগিত করার বিষয়ে সরকার আরও বেশি কার্যকর হোক, সে বিষয়টি আমরা প্রধান উপদেষ্টাকে আমলে নেওয়ার জন্য বলেছি।


ভবিষ্যতে সরকারপ্রধানদের মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করা উচিত: ফারুকী

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০২ ১৭:০৫:১৮
ভবিষ্যতে সরকারপ্রধানদের মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করা উচিত: ফারুকী
উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। ছবি : সংগৃহীত

পিলখানা ট্র্যাজেডি নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রকাশিত ডকুমেন্টারি ‘পিলখানা: থার্টি সিক্স আওয়ারস অব বিট্রেয়াল’ দেখে নিজের মন্তব্য তুলে ধরেছেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) তার ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি পোস্টে তিনি এই মন্তব্য করেন।

ফারুকী তার পোস্টে লিখেছেন, “শুরুর দিকে জেনারেল শাকিলের সঙ্গে হাসিনার কথোপকথন শুনলে গা হিম হয়ে আসে। এর চেয়ে বড় কোনো বেইমানি কী হতে পারে, আমার জানা নেই।” তিনি আরও বলেন, “র‍্যাব পাঠাচ্ছি, হেলিকপ্টার পাঠাচ্ছি বলে কাউকে তো পাঠালোই না, বরং আয়োজন করে নিশ্চিত মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিল ৫৭ জন অফিসারকে।” এই বেইমানির পেছনে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর প্রতি সেনাবাহিনীর ‘প্যাথোলজিক্যাল হেইট্রেড’ কাজ করেছে কি না, সেই প্রশ্নও তোলেন তিনি।

ফারুকী মনে করেন, এই ঘটনা থেকে একটি শিক্ষা নেওয়া জরুরি। ভবিষ্যতে যারা সরকারপ্রধান হবেন, তাদের মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করা উচিত।

ডকুমেন্টারি প্রকাশ

এর আগে, সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে পিলখানা হত্যাকাণ্ড নিয়ে নির্মিত প্রামাণ্যচিত্রটি প্রকাশ করা হয়। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ফ্যাসিবাদী দুঃশাসন ও জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে একটি ডকুমেন্টারি সিরিজ তৈরি হচ্ছে, যার অংশ হিসেবে এটি মুক্তি পেল।

প্রেস উইংয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে সংঘটিত পিলখানা হত্যাকাণ্ড জাতির ইতিহাসে একটি সন্ধিক্ষণ ছিল, যেখান থেকে ফ্যাসিবাদের উত্থান এবং ১৬ বছরের পরাধীনতা শুরু হয়েছিল।

/আশিক


পুলিশের ভেতরে দুটি গ্রুপ: সাবেক আইজিপি মামুনের বিস্ফোরক জবানবন্দি

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০২ ১৫:০১:০৫
পুলিশের ভেতরে দুটি গ্রুপ: সাবেক আইজিপি মামুনের বিস্ফোরক জবানবন্দি
ছবি: সংগৃহীত

পুলিশ বাহিনীতে সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান ও এসবির সাবেক প্রধান মনিরুল ইসলামের নেতৃত্বে দুটি পৃথক গ্রুপ গড়ে উঠেছিল। সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে রাজসাক্ষী হিসেবে দেওয়া জবানবন্দিতে এই তথ্য তুলে ধরেছেন।

মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে তিনি এই সাক্ষ্য দেন। গত জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে তিনি এই জবানবন্দি দেন।

রাজনৈতিক প্রভাব ও গোপন বৈঠক

সাবেক আইজিপি চৌধুরী মামুন তার জবানবন্দিতে বলেছেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর থেকে পুলিশে রাজনৈতিক প্রভাব আরও বেড়ে যায়। কিছু কর্মকর্তা এতটাই প্রভাবশালী হয়ে ওঠেন যে, তাদের সঙ্গে ঊর্ধ্বতন রাজনৈতিক নেতাদের সরাসরি যোগাযোগ ছিল।

তিনি আরও জানান, এই প্রভাবশালী কর্মকর্তারা প্রায় রাতেই সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বাসায় গোপন বৈঠক করতেন। এসব বৈঠকে সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, ডিবিপ্রধান হারুনুর রশীদ, এসবির মনিরুল ইসলাম, ঢাকার ডিআইজি নুরুল ইসলাম, অ্যাডিশনাল ডিআইজি বিপ্লব কুমার, এএসপি কাফী, ওসি মাজহার, ফোরকান অপূর্বসহ আরও অনেকে অংশ নিতেন। তাদের মধ্যে কারো কারো সঙ্গে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনারও সরাসরি যোগাযোগ ছিল।

চেইন অব কমান্ড ভাঙা

সাবেক আইজিপি চৌধুরী মামুন বলেন, সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ থাকার কারণে এই কর্মকর্তারা 'চেইন অব কমান্ড' বা পেশাদারিত্বের শৃঙ্খলা মানতেন না। তাদের মূল লক্ষ্য ছিল নিজস্ব বলয়ের লোকজনকে গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়ন করা এবং ঢাকায় রাখা। এসব কর্মকাণ্ডের পেছনে মূলত পুলিশে গড়ে ওঠা দুটি গ্রুপই সক্রিয় ছিল।

এছাড়াও, জবানবন্দিতে তিনি র‍্যাবে থাকাকালীন 'টাস্কফোর্স ইন্টারোগেশন' (টিএফআই) সেলসহ বিভিন্ন বন্দিশালার বর্ণনা দেন।

/আশিক


হাইকোর্টের ঐতিহাসিক রায়: বিচার বিভাগ পেল নিজস্ব সচিবালয়

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০২ ১৪:২০:০৩
হাইকোর্টের ঐতিহাসিক রায়: বিচার বিভাগ পেল নিজস্ব সচিবালয়
ছবি: সংগৃহীত

বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে একটি যুগান্তকারী রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। এখন থেকে সারাদেশের অধস্তন আদালতের বিচারকদের নিয়ন্ত্রণ, বদলি, পদোন্নতি ও শৃঙ্খলার দায়িত্ব থাকবে সুপ্রিম কোর্টের হাতে। একইসঙ্গে সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদের কিছু অংশ এবং পঞ্চদশ ও চতুর্থ সংশোধনীর সংশ্লিষ্ট বিধান বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি আহমেদ সোহেল ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেন। আদালত আরও নির্দেশ দিয়েছেন যে, আগামী তিন মাসের মধ্যে বিচার বিভাগের জন্য একটি পৃথক সচিবালয় গঠন করতে হবে।

বর্তমানে প্রচলিত (সংশোধিত) সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, অধস্তন আদালতের বিচারকদের নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলার দায়িত্ব রাষ্ট্রপতির ওপর ন্যস্ত ছিল। কিন্তু ১৯৭২ সালের মূল সংবিধানে এই ক্ষমতা সুপ্রিম কোর্টের হাতে ছিল। এ নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে বিতর্ক চলছিল।

এই বিতর্ক নিরসনে গত বছরের ২৫ আগস্ট ১০ জন আইনজীবীর পক্ষে অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির একটি রিট আবেদন দায়ের করেন। রিটে মূল সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ পুনর্বহালের নির্দেশনা চাওয়া হয়। এই রিটের ওপর ভিত্তি করে হাইকোর্ট রুল জারি করে জানতে চেয়েছিলেন, বিদ্যমান ১১৬ অনুচ্ছেদ কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না।

দীর্ঘদিন ধরে মামলাটি বিচারপতি ফারাহ মাহবুবের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে ছিল। পরে তিনি আপিল বিভাগে নিয়োগ পেলে প্রধান বিচারপতি মামলাটি নিষ্পত্তির জন্য নতুন বেঞ্চ গঠন করে দেন। এরপর চলতি বছরের ২৩ এপ্রিল চূড়ান্ত শুনানি শুরু হয় এবং ১৩ আগস্ট শুনানি শেষ হয়।

আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির এবং রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। ইন্টারভেনর হিসেবে অংশ নেন অ্যাডভোকেট আহসানুল করিম। সব পক্ষের যুক্তি শোনার পর আদালত এই রায় ঘোষণা করেন, যা বিচার বিভাগের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

/আশিক


আইসিটি-২ ভবন সংস্কার পরিদর্শনে দুই উপদেষ্টা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০২ ১০:১১:১০
আইসিটি-২ ভবন সংস্কার পরিদর্শনে দুই উপদেষ্টা
ছবি: সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর মূল ভবনের সংস্কারকাজ পরিদর্শন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল এবং গৃহায়ন, গণপূর্ত ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান। মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টায় তাঁরা এ পরিদর্শন করেন।

পরিদর্শনকালে তাঁদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিমসহ সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

সূত্র জানায়, জুলাই–আগস্ট আন্দোলনের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার কার্যক্রম বর্তমানে জোরদারভাবে এগিয়ে চলছে। ইতোমধ্যে একাধিক মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন সম্পন্ন হয়েছে এবং সাক্ষ্যগ্রহণ প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। এ মামলাগুলোর মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ প্রায় শেষ পর্যায়ে পৌঁছেছে।

বর্তমানে ট্রাইব্যুনাল-১ ও ট্রাইব্যুনাল-২ উভয় শাখাতেই এসব বিচার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। তবে মূল ভবনের সংস্কারকাজ চলমান থাকায় ট্রাইব্যুনাল-২ এর কার্যক্রম আপাতত টিনশেড অস্থায়ী ভবনে পরিচালিত হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, সংস্কারকাজ সম্পন্ন হলে ট্রাইব্যুনাল-২ দ্রুতই পূর্ণাঙ্গ ভবনে ফিরে আসবে, যা বিচারকাজকে আরও স্বচ্ছ ও কার্যকর করবে।

-রফিক


কোন দলগুলো বসছে আলোচনায়?

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০২ ০৯:৩২:৩৪
কোন দলগুলো বসছে আলোচনায়?
ছবি: সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আজ মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) দেশের সাতটি রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন। বৈঠকটি বিকেল ৫টায় রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং নিশ্চিত করেছে যে, নির্ধারিত সময়ে বৈঠক শুরু হবে। তবে এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়নি কোন কোন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা এতে অংশ নেবেন। রাজনৈতিক অঙ্গনে বৈঠককে ঘিরে ইতোমধ্যেই নানা আলোচনা শুরু হয়েছে।

এর আগে গত রোববার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সঙ্গে আলাদা আলাদা বৈঠক করেছিলেন। এসব বৈঠকে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, আসন্ন নির্বাচন এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়।

বৈঠকে তিনি সুস্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তাঁর ভাষ্য অনুযায়ী, নির্বাচন ছাড়া কোনো বিকল্প নেই এবং এই প্রক্রিয়াকে পাশ কাটিয়ে অন্য কোনো সমাধানের চেষ্টা করা হলে তা জাতির জন্য হবে গভীরভাবে বিপজ্জনক।

-রফিক


নুর একজন জাতীয় পর্যায়ের নেতা, হামলা দুর্ভাগ্যজনক: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০১ ২১:৫৫:১৮
নুর একজন জাতীয় পর্যায়ের নেতা, হামলা দুর্ভাগ্যজনক: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
ছবি: সংগৃহীত

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, সিলেটের গোয়াইনঘাটে সাদাপাথর লুটের ঘটনা নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রতিবেদন সরকার গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখছে। তিনি বলেন, অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে যদি প্রতিবেদন অসত্য প্রমাণিত হয়, তাহলে দুদকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাও ছাড় পাবেন না।

সোমবার দুপুরে সিলেট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।

নির্বাচন প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে সেনাবাহিনীর পাশাপাশি নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীকেও মোতায়েন করা হবে। জনগণের নিরাপত্তা ও শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণ নিশ্চিত করাই সরকারের অগ্রাধিকার। তিনি আরও জানান, সেনাবাহিনী মোবাইল ডিউটিতে থাকবে, ভোটকেন্দ্রে আনসার সদস্যের সংখ্যা বাড়ানো হবে এবং এপিবিএন সদস্যরাও দায়িত্ব পালন করবেন।

গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরের ওপর হামলার প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, নুর একজন জাতীয় পর্যায়ের নেতা। তার ওপর হামলার ঘটনা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। সরকার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, নুর দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শিক্ষকরা অত্যন্ত যোগ্য। তাদের উদ্যোগেই শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান সম্ভব।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ৫ আগস্টের পর লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধারে সরকার তৎপর। সীমান্ত এলাকা থেকেও অস্ত্র উদ্ধার করা হচ্ছে। এ বিষয়ে কেউ তথ্য দিলে তাকে পুরস্কৃত করা হবে। তিনি জানান, চার হাজার পুলিশ সদস্যের একটি ব্যাচ প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করেছে, আরেকটি ব্যাচ প্রশিক্ষণ নিচ্ছে এবং আগামী ৭ সেপ্টেম্বর রাজারবাগ পুলিশ লাইনে নতুন ব্যাচ প্রশিক্ষণ শুরু করবে।

সিলেট সফরের দ্বিতীয় দিন দুপুরে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান। দৃঢ়কণ্ঠে তিনি বলেন, “পাথর চোরদের কোনো রক্ষা নেই। দায়ীরা অবশ্যই আইনের আওতায় আসবে।”

পাঠকের মতামত: