স্বর্ণের নতুন দাম কার্যকর আজ থেকে

দেশের স্বর্ণবাজারে আবারও মূল্যবৃদ্ধি ঘটেছে। দুদিনের ব্যবধানে ভরিপ্রতি ১ হাজার ৪৭০ টাকা বাড়ানো হয়েছে। ফলে ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের নতুন দাম দাঁড়িয়েছে প্রতি ভরি ১ লাখ ৭৫ হাজার ৭৮৮ টাকা। মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) থেকে এ দাম কার্যকর হবে বলে সোমবার রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায় বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি সোনার (পিওর গোল্ড) মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
নতুন তালিকা অনুযায়ী, ২১ ক্যারেট স্বর্ণের ভরিপ্রতি দাম দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৬৭ হাজার ৭৯৮ টাকা, ১৮ ক্যারেটের দাম ১ লাখ ৪৩ হাজার ৮২৮ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির স্বর্ণের দাম নির্ধারিত হয়েছে ১ লাখ ১৯ হাজার ৪২ টাকা। তবে রুপার দাম অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। বর্তমানে ২২ ক্যারেট রুপার ভরিপ্রতি দাম ২ হাজার ৮১১ টাকা, ২১ ক্যারেট ২ হাজার ৬৮৩ টাকা, ১৮ ক্যারেট ২ হাজার ২৯৮ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির রুপার দাম ১ হাজার ৭২৬ টাকা।
এর আগে ৩১ আগস্ট বাজুস যে দাম নির্ধারণ করেছিল, তখন ২২ ক্যারেটের ভরিপ্রতি দাম ছিল ১ লাখ ৭৪ হাজার ৩১৮ টাকা। একই সময়ে ২১ ক্যারেটের দাম ছিল ১ লাখ ৬৬ হাজার ৩৯৯ টাকা, ১৮ ক্যারেট ১ লাখ ৪২ হাজার ৬২৭ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির স্বর্ণ ১ লাখ ১৮ হাজার ২৮ টাকা। আরও আগে, ২৬ আগস্ট নির্ধারিত দামে ২২ ক্যারেটের ভরিপ্রতি স্বর্ণ ছিল ১ লাখ ৭২ হাজার ৬৫১ টাকা।
বাজুসের বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, স্বর্ণের বিক্রয় মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট এবং বাজুস নির্ধারিত ন্যূনতম ৬ শতাংশ মজুরি যোগ করতে হবে। তবে গয়নার নকশা ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে। বাজার বিশেষজ্ঞদের মতে, আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দামের ঊর্ধ্বগতি, মুদ্রাবাজারের অস্থিরতা এবং অভ্যন্তরীণ চাহিদা বৃদ্ধিই সাম্প্রতিক সময়ে স্বর্ণের ধারাবাহিক মূল্যবৃদ্ধির মূল কারণ।
-রফিক

তৈরি পোশাক শিল্পে বড় আঘাত: কার্গো ভিলেজের ক্ষতি নিয়ে যা বলল বিজিএমইএ
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজ কমপ্লেক্সে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ১০০ কোটি টাকারও বেশি হতে পারে বলে ধারণা করছেন তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর নেতারা। রোববার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে বিজিএমইএর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ইনামুল হক খানের নেতৃত্বাধীন একটি প্রতিনিধিদল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এই উদ্বেগ প্রকাশ করে।
রপ্তানি বাণিজ্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত
বিজিএমইএর নেতারা বলেছেন, এই দুর্ঘটনায় দেশের রপ্তানি বাণিজ্য, বিশেষ করে তৈরি পোশাকশিল্প মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ক্ষতির কারণ: ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ইনামুল হক লিখিত বক্তব্যে বলেন, অগ্নিকাণ্ডের ফলে উচ্চ মূল্যের পণ্য, জরুরি শিপমেন্টের জন্য রাখা তৈরি পোশাক, মূল্যবান কাঁচামাল এবং নতুন ব্যবসার জন্য গুরুত্বপূর্ণ স্যাম্পল পণ্য পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এটি শুধু বর্তমান রপ্তানির ক্ষতি নয়, ভবিষ্যতের ব্যবসায়িক সুযোগও ব্যাহত করবে।
পরিমাণের আশঙ্কা: বিজিএমইএর পরিচালক ফয়সাল সামাদ বলেন, “আমরা ভেতরে গিয়ে ভয়াবহ চিত্র দেখেছি। পুরো ইমপোর্ট সেকশন পুড়ে গেছে। আমাদের অনুমান, ক্ষতির পরিমাণ ১ বিলিয়ন (১০০ কোটি) টাকার বেশি হতে পারে।”
ক্ষতিপূরণ ও পুনরুদ্ধারের উদ্যোগ
বিজিএমইএ ইতিমধ্যে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণে কাজ শুরু করেছে। সদস্যদের কাছ থেকে নির্ধারিত ফরমে ক্ষতিগ্রস্ত পণ্যের তালিকা চাওয়া হয়েছে এবং দ্রুত তথ্য সংগ্রহের জন্য একটি অনলাইন পোর্টাল খোলা হয়েছে।
সহায়তা: ফয়সাল সামাদ জানান, ঘটনাস্থলে বাণিজ্য উপদেষ্টা উপস্থিত ছিলেন। উপদেষ্টা তাৎক্ষণিকভাবে নতুন পণ্যের আমদানি কার্যক্রমে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন।
পণ্য খালাসে দ্রুততা: আপাতত টার্মিনাল-৩–এ নতুন স্থানে আমদানি পণ্য রাখার ব্যবস্থা করা হবে। উপদেষ্টা ৭২ ঘণ্টার পরিবর্তে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে দ্রুত পণ্য খালাস করার নির্দেশনা দিয়েছেন। কাস্টমসের সঙ্গে যৌথভাবে একটি ওয়ার্কিং কমিটি করা হচ্ছে, যাতে দ্রুত মালামাল খালাস করা যায় এবং শুক্র-শনিবারও কাজ চলবে।
প্রতিদিন ২০০-২৫০টি কারখানার পণ্য আকাশপথে রপ্তানি হয় বলে জানিয়েছেন ইনামুল হক খান।
নিট পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেমও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
শাহজালালে আগুনে ছাই ব্যবসায়িক আশা: বিলিয়ন ডলারের ক্ষতির আশঙ্কা
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে আমদানি-রপ্তানির শত শত টন পণ্য আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার বিকেল আড়াইটার দিকে বিমানবন্দরের গেট নম্বর ৮–এর কাছে এ আগুনের সূত্রপাত ঘটে। দ্রুতই আগুন ছড়িয়ে পড়ে পুরো কার্গো ভিলেজ জুড়ে, যেখানে দেশের আমদানি ও রপ্তানি কার্যক্রমের একটি বড় অংশ সম্পন্ন হয়।
ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা তলহা বিন জাসিম জানিয়েছেন, অগ্নিকাণ্ডের ক্ষয়ক্ষতির সঠিক পরিমাণ এখনো নিরূপণ করা যায়নি। তবে প্রাথমিক ধারণা অনুযায়ী ক্ষতির পরিমাণ বিপুল।
বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল এয়ার এক্সপ্রেস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কবির আহমেদ বলেন, এই অগ্নিকাণ্ডে ব্যবসায়ীরা বিলিয়ন ডলারের ক্ষতির মুখে পড়েছেন। বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী (প্রতি ডলার ১২২.১৩ টাকা ধরে) ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ২ হাজার ২১৪ কোটি টাকারও বেশি হতে পারে।
তিনি আরও জানান, অগ্নিকাণ্ডের কারণে কার্গো এক্সপ্রেস সেবা, গুদাম, কার্গো বিমান এবং বিমানবন্দরের অবকাঠামোগত কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। এর ফলে শুধু ব্যবসায়ী মহল নয়, গোটা দেশের বাণিজ্যিক পরিবেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজ মূলত আমদানি-রপ্তানি পণ্যের সংরক্ষণ ও ছাড়প্রাপ্তির জায়গা। এখান থেকে আমদানিকারক বা তাদের প্রতিনিধি শুল্ক বিভাগ থেকে ছাড়পত্র পাওয়ার পর পণ্য সংগ্রহ করেন। পচনশীল পণ্য যেমন সবজি, ফলমূল বা তৈরি পোশাক সাধারণত ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই প্রেরণ করা হয়। তবে রপ্তানির ফ্লাইট সংকট বা কাস্টমস জটিলতার কারণে অনেক পণ্য এখানে কয়েকদিন পর্যন্ত থেকে যায়। ফলে অগ্নিকাণ্ডে এইসব পণ্যের বিশাল অংশ ধ্বংস হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
আরএমকে গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক খন্দকার কামরুজ্জামান ইবনে আমিন সোহেল বলেন, “এই ঘটনায় অসংখ্য আমদানিকারক তাদের পণ্য হারিয়েছেন। আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির পূর্ণ চিত্র জানা সম্ভব নয়। বীমা দাবির প্রক্রিয়াও শুরু হতে সময় লাগবে।”
বিশ্লেষকদের মতে, শাহজালাল বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজ দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক কেন্দ্র। এখানে শুল্ক বিভাগ, এয়ারলাইনস ও বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অফিস রয়েছে। আগুনে শুধু পণ্যই নয়, বরং গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ও নথিপত্রও ধ্বংস হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল সংস্থার (আইসিএও) বিধান অনুযায়ী, বিমানবন্দর কার্যক্রম পুনরায় চালুর আগে পূর্ণাঙ্গ নিরাপত্তা মূল্যায়ন সম্পন্ন করতে হবে।
দেশের আমদানি-রপ্তানি খাতের সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ী মহল আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, এই অগ্নিকাণ্ড দীর্ঘমেয়াদে বাণিজ্য প্রবাহে বড় ধাক্কা দেবে। বিশেষ করে রপ্তানি পণ্যের সময়সীমা (লিড টাইম) রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়বে, যা আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের প্রতিযোগিতামূলক অবস্থানকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
-নাজমুল হাসান
জাল টাকার প্রচলন রোধে বাংলাদেশ ব্যাংকের ৪ গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ দেশের কয়েকটি জাতীয় দৈনিকে ‘বাংলাদেশে বিপুল পরিমাণ জাল নোট প্রবেশ করছে’—এমন খবর প্রকাশিত হয়েছে। এ নিয়ে জনমনে উদ্বেগ দেখা দেওয়ায় নগদ অর্থ লেনদেনে জনগণকে আরও সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) এক বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংক এই তথ্য জানিয়েছে।
বিবৃতি ও সতর্কতা
বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, প্রকাশিত প্রতিবেদনটি জনসাধারণের মধ্যে উদ্বেগ ও বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারে। বাংলাদেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী, জাল নোট তৈরি, বহন এবং লেনদেন করা সম্পূর্ণরূপে অবৈধ এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ। সংস্থাটি জানায়, বাংলাদেশ ব্যাংক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জাল টাকার প্রচলন রোধে নিয়মিতভাবে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে তৎপর।
এ প্রেক্ষিতে নগদ লেনদেনে জনসাধারণকে অধিকতর সতর্কতা অবলম্বন এবং জাল নোট প্রচলন প্রতিরোধে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো অনুসরণ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে:
১. নিরাপত্তা যাচাই: নোট গ্রহণের সময় নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য যাচাই করুন। যেমন—জলছাপ, অসমতল ছাপা, নিরাপত্তা সুতা, রং পরিবর্তনশীল কালি ও ক্ষুদ্র লেখা।
২. ব্যাংকিং চ্যানেল: বড় অঙ্কের লেনদেনে ব্যাংকিং চ্যানেল ব্যবহার করুন।
৩. ডিজিটাল পেমেন্ট: নগদ লেনদেনের ক্ষেত্রে সম্ভব হলে ডিজিটাল পেমেন্ট পদ্ধতি ব্যবহার করুন।
৪. সন্দেহজনক নোট: সন্দেহজনক নোট পেলে দ্রুত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অথবা ৯৯৯ নম্বরে যোগাযোগ করুন।
বাংলাদেশ ব্যাংক আরও জানায়, ‘আসল নোট চিনুন, নিরাপদ লেনদেন নিশ্চিত করুন’—এই মূলমন্ত্রে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। আসল নোটের বৈশিষ্ট্য জানতে প্রতিটি ব্যাংক শাখায়ও পোস্টার টানানো আছে।
সবুজ শিল্পে নতুন মাইলফলক: আরও পাঁচটি কারখানা পেল লিড সার্টিফিকেশন
সবুজ শিল্পায়নের পথে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা আরও এক ধাপ এগিয়েছে। নতুন করে পাঁচটি তৈরি পোশাক কারখানা পেয়েছে আন্তর্জাতিক স্বীকৃত ‘লিড’ (LEED) সার্টিফিকেশন, যা দেশটিকে আবারও বিশ্বের শীর্ষ সবুজ পোশাক উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে সুদৃঢ় করেছে।
সর্বশেষ এই পাঁচটি কারখানা যুক্ত হওয়ায় বর্তমানে বাংলাদেশে মোট ২৬৮টি এলইইডি-সার্টিফায়েড পোশাক কারখানা রয়েছে—যার মধ্যে ১১৪টি প্লাটিনাম এবং ১৩৫টি গোল্ড সার্টিফিকেটপ্রাপ্ত। সংখ্যার বিচারে এটি বিশ্বের সর্বাধিক সবুজ কারখানার মালিকানা ধরে রেখেছে বাংলাদেশ।
একইসঙ্গে, বিশ্বের শীর্ষ ১০০ উচ্চমানের এলইইডি-সার্টিফায়েড কারখানার মধ্যে ৬৮টি এখন বাংলাদেশে অবস্থিত, যা পরিবেশবান্ধব উৎপাদন ও জ্বালানি দক্ষতায় দেশের পোশাক শিল্পের ধারাবাহিক অগ্রগতি ও অঙ্গীকারের প্রমাণ বহন করে।
সর্বশেষ এলইইডি স্বীকৃতি পাওয়া পাঁচটি কারখানা হলো—
পাকিজা নিট কম্পোজিট লিমিটেড, সাভার, ঢাকা — O+M: Existing Buildings v4.1 ক্যাটাগরিতে ৮৭ পয়েন্টে প্লাটিনাম সার্টিফিকেশন অর্জন।
ফ্যাশন পালস লিমিটেড, বিসিক শিল্পনগরী, ঢাকা — BD+C: New Construction v4 ক্যাটাগরিতে ৮৭ পয়েন্টে প্লাটিনাম সার্টিফিকেশন।
গাভা প্রাইভেট লিমিটেড, প্লট ১১৪-১২০, ঢাকা — BD+C: New Construction v4 ক্যাটাগরিতে ৮৭ পয়েন্টে প্লাটিনাম সার্টিফিকেশন।
ভিজ্যুয়াল নিটওয়ার্স লিমিটেড, চট্টগ্রাম — O+M: Existing Buildings v4.1 ক্যাটাগরিতে ৭৬ পয়েন্টে গোল্ড সার্টিফিকেশন।
ট্যালিসম্যান পারফরম্যান্স লিমিটেড, সিইপিজেড, চট্টগ্রাম — BD+C: New Construction v4 ক্যাটাগরিতে ৬২ পয়েন্টে গোল্ড সার্টিফিকেশন।
এই অর্জন বাংলাদেশের তৈরি পোশাক (আরএমজি) শিল্পের সবুজ রূপান্তরের ধারাবাহিক সফলতার প্রতিফলন। গত এক দশকে দেশের পোশাক খাত আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত পরিবেশবান্ধব মানদণ্ড মেনে একটি ‘গ্রিন রেভলিউশন’-এর সূচনা করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা ইউএস গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিল (USGBC) কর্তৃক প্রদত্ত এই এলইইডি সার্টিফিকেশন পাওয়া যায় জ্বালানি ও পানি ব্যবহারে দক্ষতা, কার্বন নিঃসরণ হ্রাস, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও কর্মীদের জন্য উন্নত ও স্বাস্থ্যসম্মত কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করার কঠোর মানদণ্ড পূরণের পর।
শিল্প বিশ্লেষকদের মতে, এই সাফল্যের পেছনে রয়েছে উদ্যোক্তাদের সচেতন উদ্যোগ, বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ)-এর সক্রিয় ভূমিকা এবং সরকারের সহায়ক নীতি—যা সবুজ শিল্পায়ন ও টেকসই উৎপাদন ব্যবস্থাকে উৎসাহিত করেছে।
বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান সবুজ কারখানার এই সাফল্য শুধু দেশের পোশাকশিল্পকে একটি “দায়িত্বশীল সোর্সিং ডেস্টিনেশন” হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করছে না, বরং জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের দিকেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
-সুত্রঃ বি এস এস
শায়খ আহমাদুল্লাহর কণ্ঠে ইসলামী ব্যাংকিংয়ে স্বচ্ছতার আহ্বান
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য শরিয়াহভিত্তিক বাড়ি ও গাড়ি কেনার ঋণ চালুর পরামর্শ দিয়েছেন দেশের খ্যাতনামা ইসলামী আলোচক ও আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ। তিনি বলেছেন, যারা ইসলামী নীতিমালা মেনে চলতে চান, এমন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বর্তমানে এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীতে বাংলাদেশ ব্যাংক আয়োজিত পবিত্র সীরাতুন্নবী (সা.) মাহফিলে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত হয়ে তিনি এই আহ্বান জানান।
বিকল্প পথ ও নৈতিক দায়িত্ব
শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, “বাংলাদেশ ব্যাংকের অনেক কর্মকর্তা আমাকে জানিয়েছেন, তারা হাউস লোন বা গাড়ি লোনের ক্ষেত্রে শরিয়াহ অনুসরণ করতে চান। কিন্তু বর্তমানে তেমন কোনো পদ্ধতি বা টুলস না থাকায় তারা বাধ্য হয়ে সুদনির্ভর লোন গ্রহণ করেন।”
তিনি আশা প্রকাশ করেন, বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এই বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবে। তিনি বলেন:
“আমরা কাউকে বাধ্য করতে বলছি না, বরং বলছি, যারা শরিয়াহভিত্তিক পথে লেনদেন করতে চান, তাদের জন্য বিকল্প একটি পথ থাকা উচিত। এটি শুধু ধর্মীয় দায় নয়, নৈতিক দায়িত্বও বটে।”
তিনি উল্লেখ করেন, অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তা, যেমন বিসিএস কর্মকর্তারা, সরকার নির্ধারিত নীতিমালায় ইসলামী ব্যাংক থেকে হাউজিং সুবিধা নিচ্ছেন। বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকর্তাদের জন্যও এই সুযোগ থাকা উচিত।
ইসলামী ব্যাংকিং ও আইন
শায়খ আহমাদুল্লাহ ইসলামী ব্যাংকগুলোর জবাবদিহিতা বাড়ানোর আহ্বান জানান। তিনি বলেন, বর্তমানে ইসলামী ব্যাংকিংয়ের বিকাশে সবচেয়ে প্রয়োজন একটি শক্তিশালী ‘ইসলামী ব্যাংকিং আইন’। অনেক ব্যাংক ইসলামী নামে প্রচলিত থাকলেও প্রকৃত শরিয়াহ মেনে চলছে কি না, তা জানার সুযোগ নেই। আইনের মাধ্যমে নিয়ম-নীতিনির্ধারণ করা হলে প্রতারণা ও অনিয়ম কমবে।
তিনি বলেন, ইসলামী ব্যাংকগুলোর শরিয়াহ বোর্ড নিয়ে সমালোচনা রয়েছে। অনেক বোর্ডে এমন ব্যক্তিদের রাখা হয়, যাদের ব্যাংকিং বা শরিয়াহ বিষয়ে পর্যাপ্ত জ্ঞান নেই। এজন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে একটি মান নিয়ন্ত্রণ নীতিমালা তৈরি করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বিগত সরকারের আমলে সর্বজনীন পেনশন স্কিমে ইসলামী ধারা যুক্ত করার দাবি জানানো হলেও তা গৃহীত হয়নি, তবে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে—এটা ইতিবাচক উদ্যোগ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. জাকির হোসেন চৌধুরী।
২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম, নতুন রেকর্ড
দেশের বাজারে আরেক দফা বাড়ানো হয়েছে স্বর্ণের দাম। বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) এবার ভরিতে ৪ হাজার ৬১৮ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ২ লাখ ১৩ হাজার ৭১৯ টাকা নির্ধারণ করেছে। এটি দেশের ইতিহাসে মূল্যবান এই ধাতুর সর্বোচ্চ দাম।
সোমবার (১৩ অক্টোবর) রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে বাজুস এই তথ্য জানিয়েছে। নতুন এই দাম মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) থেকেই কার্যকর হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) মূল্য বেড়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে এবং সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের এই নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।
জ্বালানি সংকট সৃষ্টি করেছেন রাজনীতিবিদেরা: বিস্ফোরক মন্তব্য জ্বালানি উপদেষ্টার
দেশের স্বল্পমেয়াদি জ্বালানি সংকট মোকাবিলায় এলপিজির দাম নিয়ন্ত্রণ করা অত্যন্ত জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। তিনি বলেছেন, বর্তমানে সিলিন্ডারের বাজার মূল্য ১২০০ টাকার বেশি হওয়ায় শিল্প ও গৃহস্থালি ব্যবহারকারীরা যথাযথ সুবিধা পাচ্ছেন না। অথচ এর দাম ১ হাজার টাকার মধ্যে হওয়া উচিত।
শনিবার (৪ অক্টোবর) রাজধানীর একটি হোটেলে ‘বাংলাদেশে এলপিজি: অর্থনীতি, পরিবেশ ও নিরাপত্তা’ শীর্ষক পলিসি কনক্লেভে তিনি এসব কথা বলেন।
ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদের সমালোচনা
উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বাজারে বাড়তি দামে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) বিক্রি বন্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত দিয়ে অভিযান চালানো হবে বলেও জানিয়েছেন।
তিনি বলেন:
“১২০০ টাকার এলপিজি সিলিন্ডার বিক্রি হয় ১৪০০ টাকায়। এটার দায় নিতে হবে ব্যবসায়ীদের। অতিরিক্ত মুনাফা করে সম্পদের পাহাড় গড়ে বিদেশে টাকা পাচার করার মানসিকতা থেকে বের হয়ে আসতে হবে।”
তিনি জ্বালানি সংকটের জন্য এক শ্রেণির রাজনীতিবিদ ও তাদের সহযোগী ব্যবসায়ীদের দায়ী করেন। তিনি অভিযোগ করেন, জ্বালানি নিশ্চিত না করেই চাহিদার অতিরিক্ত বিদ্যুৎকেন্দ্র করা হয়েছে এবং গ্যাস খাতে অসংখ্য অবৈধ সংযোগ দেওয়া হয়েছে—এসব অপকর্ম করেছেন রাজনীতিবিদেরা।
চ্যালেঞ্জ ও সমাধান
এলপিজি অপারেটরদের জবাব: এলপিজি অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (লোয়াব) সভাপতি মোহাম্মদ আমিরুল হক বলেন, এলপিজির মূল্য নির্ধারণ করে বিইআরসি। তিনি প্রশ্ন করেন, “১ হাজার টাকায় এলপিজি দিতে চান উপদেষ্টা। তিনি আমদানিকারকদের ৭ শতাংশ মুনাফা দিয়ে যদি ওই দামে বিক্রি করতে পারেন, করে দেন।”
ঘাটতি মোকাবিলা: জ্বালানি অনুসন্ধানের কাজ বাড়ানো হয়েছে এবং বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানির (বাপেক্স) জন্য নতুন রিগ কেনা হচ্ছে। এলএনজি রূপান্তরের সক্ষমতা বাড়াতে নতুন এফএসআরইউ-এর চেষ্টা করা হচ্ছে।
সাবেক মন্ত্রীর মত: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান বলেন, সবাইকে দোষারোপের কিছু নেই। বাংলাদেশের গ্যাস ফুরিয়ে যাচ্ছে। এ ঘাটতি কীভাবে পূরণ করা হবে, তার পরিকল্পনা এখন থেকেই করতে হবে।
এলপিজি খাতে নিরাপত্তা ঝুঁকি
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ জাহেদ কামাল বলেন, এ বছর গ্যাস খাতে মোট অগ্নি দুর্ঘটনা দেড় হাজারের বেশি, যার মধ্যে ৫৮০টি এলপিজি দুর্ঘটনা ঘটেছে।
ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের উপাচার্য ম. তামিম জানান, দেশে প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহের ক্ষেত্রে এখন দিনে ১৬০ কোটি ঘনফুট গ্যাসের ঘাটতি আছে। শিল্পে গ্যাস সংকট কাটাতে এলপিজি ব্যবহার করা যেতে পারে, যা ডিজেলের চেয়ে ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশ খরচ কমাতে পারে।
মার্কিন নিষেধাজ্ঞার মুখে ৫০টির বেশি জাহাজ, বাংলাদেশের আমদানি-সংক্রান্ত উদ্বেগ
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চলতি বছরে ইরানি তেল ও এলপিজি পরিবহন এবং এর উৎস গোপনের সঙ্গে জড়িত বিদেশি প্রতিষ্ঠান ও নৌবাহিনীর ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেছে। ভেসেল-ট্র্যাকিং তথ্য অনুযায়ী, ইরান-সংশ্লিষ্ট জাহাজগুলো এখনো চট্টগ্রাম বন্দরে নোঙর করা অবস্থায় রয়েছে। যদিও নিষেধাজ্ঞার তালিকায় কোনো বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানের নাম সরাসরি নেই, তবে এই ধরনের চালান ও লেনদেনের মাধ্যমে বাংলাদেশও এখন ওয়াশিংটনের সম্প্রসারিত নজরদারি ও বাস্তবায়ন ব্যবস্থার আওতায় ধরা হচ্ছে।
দীর্ঘ আলোচনার পর চলতি বছরের ৫ সেপ্টেম্বর জাহাজগুলোকে পুনরায় গ্যাস স্থানান্তরের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। মার্কিন আইনে বলা হয়েছে, নিষিদ্ধ লেনদেনে জড়িত বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো ‘সেকেন্ডারি স্যাংশন’-এর ঝুঁকিতে থাকে।
চীনা রিফাইনারি ও ‘ছায়া নৌবহর’
চলতি বছরের চতুর্থ দফার এই নিষেধাজ্ঞা বিশেষভাবে চীনের রিফাইনারি ও মধ্যস্বত্বভোগীদের লক্ষ্য করেছে। মার্কিন অর্থ বিভাগ জানিয়েছে, সংযুক্ত আরব আমিরাত, হংকং ও মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ ভিত্তিক কিছু প্রতিষ্ঠান ইরানি তেলের উৎস গোপন করতে ‘শ্যাডো ফ্লিট’ বা ছায়া নৌবহর পরিচালনা করত। এসব কার্যক্রমের মধ্যে ছিল এক জাহাজ থেকে অন্য জাহাজে তেল স্থানান্তর এবং ছদ্ম কোম্পানির মাধ্যমে পণ্যের গতিপথ লুকানো।
তালিকাভুক্ত চীনা প্রতিষ্ঠান: সর্বশেষ নিষেধাজ্ঞার আওতায় এসেছে চীনের দুটি প্রতিষ্ঠান—শানডং জিনচেং পেট্রোকেমিক্যাল গ্রুপ ও রিজাও শিহুয়া ক্রুড অয়েল টার্মিনাল। অভিযোগ রয়েছে, এই প্রতিষ্ঠানগুলো নিষিদ্ধ তালিকাভুক্ত জাহাজ ব্যবহার করে ইরানের কোটি কোটি ব্যারেল অপরিশোধিত তেল আমদানি করেছে।
বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ইরানের তেল ও এলপিজি পরিবহন বা উৎস গোপনের কাজে ব্যবহৃত বহু জাহাজ শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ‘ম্যাক্স স্টার’, ‘গ্যাস ভিশন’, ‘সি অপেরা’ এবং ‘টিউলিপ’—যেগুলোর সঙ্গে যুক্ত চালানগুলো বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, চীন ও সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বিভিন্ন দেশে পৌঁছেছে।
আঞ্চলিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব
নতুন নিষেধাজ্ঞার ফলে মার্কিন আইনের আওতায় থাকা তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর সব সম্পদ কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে এবং তাদের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক স্থাপনেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই পদক্ষেপ দক্ষিণ এশিয়ার জ্বালানি বাজারে প্রভাব ফেলতে পারে, বিশেষ করে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার মতো দেশগুলোতে, যারা স্পট মার্কেট থেকে এলপিজি ক্রয় করে। ওয়াশিংটনের নীতিগত অবস্থান স্পষ্ট হয়েছে—ইরানের সীমার বাইরে গিয়ে তারা এখন এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের মধ্যস্বত্বভোগীদেরও নজরদারির আওতায় আনছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, নিষেধাজ্ঞা ছোট আমদানিকারকদের জন্য জ্বালানি সরবরাহকে জটিল করে তুলতে পারে।
রেকর্ড ছুঁয়েছে সোনার দাম: বিশ্ব অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তায় বিনিয়োগকারীদের নিরাপদ আশ্রয় সোনা
বিশ্বজুড়ে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে বিনিয়োগকারীদের ‘নিরাপদ আশ্রয়’ খোঁজার প্রবণতা আবারও সোনার বাজারে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার দাম আউন্সপ্রতি ৪,০০০ ডলার (প্রায় ২,৯৮৫ পাউন্ড) অতিক্রম করে সর্বকালের রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। এটি ১৯৭০–এর দশকের পর সোনার সবচেয়ে বড় উত্থান বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
এপ্রিল থেকে এখন পর্যন্ত সোনার দাম বেড়েছে প্রায় ২৫ শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষিত শুল্কনীতির পর থেকেই বৈশ্বিক বাণিজ্যে অস্থিরতা তৈরি হয়, যা বিনিয়োগকারীদের সোনার দিকে ঝুঁকতে উদ্বুদ্ধ করেছে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, মার্কিন সরকারের চলমান ‘শাটডাউন’ বা আংশিক কার্যক্রম বন্ধ থাকাও এই মূল্যবৃদ্ধির অন্যতম কারণ। টানা দ্বিতীয় সপ্তাহে প্রবেশ করা এই সংকটে গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক তথ্য প্রকাশ বিলম্বিত হচ্ছে, যা বাজারে অনিশ্চয়তা বাড়িয়েছে।
সোনা ঐতিহ্যগতভাবে একটি ‘সেফ হেভেন’ বা নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে পরিচিত—যে সম্পদ বাজারের অস্থিরতা বা অর্থনৈতিক মন্দার সময়েও মূল্য ধরে রাখে, এমনকি বাড়ায়ও।
বুধবার সকালে এশীয় বাজারে স্পট গোল্ড—অর্থাৎ তাৎক্ষণিক বিক্রয়যোগ্য সোনার দাম—প্রতি আউন্সে ৪,০১১ ডলারের উপরে উঠে যায়। একই দামে ৭ অক্টোবর পৌঁছেছিল গোল্ড ফিউচারস মার্কেটও, যা বাজারের ভবিষ্যৎ প্রত্যাশার সূচক হিসেবে বিবেচিত হয়।
সিঙ্গাপুরভিত্তিক ব্যাংক ওসিবিসির (OCBC) রেটস স্ট্র্যাটেজিস্ট ক্রিস্টোফার ওং বলেন, “মার্কিন সরকারের শাটডাউন সোনার দামের জন্য শক্তিশালী অনুকূল বাতাস তৈরি করেছে। অতীতেও এ ধরনের পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ সম্পদের দিকে ঝুঁকেছেন।”
ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে এক মাসব্যাপী সরকারি অচলাবস্থার সময়ও সোনার দাম প্রায় ৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছিল। তবে ওং সতর্ক করে বলেন, “যদি শাটডাউন প্রত্যাশার চেয়ে দ্রুত শেষ হয়, তাহলে সোনার দাম কিছুটা কমে আসতে পারে।”
ইউওবি ব্যাংকের বাজার কৌশল বিভাগের প্রধান হেং কুন হাও বলেন, “গত এক মাসের সোনার অভূতপূর্ব উত্থান বিশ্লেষকদের সব পূর্বাভাস ছাড়িয়ে গেছে।” তিনি জানান, ডলারের দুর্বলতা এবং নতুন খুচরা বিনিয়োগকারীদের (রিটেইল ইনভেস্টর) অংশগ্রহণ এই উত্থানে বড় ভূমিকা রেখেছে।
প্রেসিয়াস মেটাল ব্যবসায়ী ও স্টোরেজ প্রতিষ্ঠান সিলভার বুলিয়ন–এর প্রতিষ্ঠাতা গ্রেগর গ্রেগারসন বলেন, “গত এক বছরে আমাদের গ্রাহকের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। এখন ব্যাংক, ধনী পরিবার ও খুচরা বিনিয়োগকারীরা সোনাকে বিশ্ব অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার বিরুদ্ধে একধরনের সুরক্ষা হিসেবে বিবেচনা করছেন।”
তার ভাষায়, “আমাদের বেশিরভাগ গ্রাহক দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগকারী—তারা সাধারণত চার বছরের বেশি সময় সোনা সংরক্ষণ করেন। সোনার দাম ভবিষ্যতে কিছুটা নামতে পারে, কিন্তু বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় অন্তত আগামী পাঁচ বছর পর্যন্ত এটি ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় থাকবে।”
তবে বিশ্লেষকেরা সতর্ক করছেন, সুদের হার বাড়লে বা ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা প্রশমিত হলে সোনার দাম কিছুটা হ্রাস পেতে পারে। ওসিবিসির ওং বলেন, “২০২২ সালে যখন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সুদের হার বাড়িয়েছিল, তখন সোনার দাম ২,০০০ ডলার থেকে নেমে ১,৬০০ ডলারে পৌঁছেছিল।”
তিনি আরও বলেন, “সোনা অনিশ্চয়তার বিরুদ্ধে একধরনের বীমা হলেও, সেই বীমা পরিস্থিতি বদলালে ভাঙা যায়।”
বিশ্লেষকদের মতে, এবার সোনার উত্থান মূলত বাজারে এমন ধারণা থেকে এসেছে যে, যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ শিগগিরই সুদের হার কমাবে। এতে সোনার বিনিয়োগ আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠছে।
এর মধ্যেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ফেডের ওপর প্রকাশ্যে চাপ বাড়িয়েছেন—গভর্নর লিসা কুককে বরখাস্তের চেষ্টা ও চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলকে সমালোচনা করে। অর্থনীতিবিদ ওং মন্তব্য করেন, “এভাবে ফেডের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন হলে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতি আস্থা কমে যাবে, আর তখন অনিশ্চয়তার বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষামূলক সম্পদ হিসেবে সোনার গুরুত্ব আরও বেড়ে যাবে।”
বিশ্লেষক মহল একমত—বর্তমান বৈশ্বিক অর্থনীতির অস্থিরতা, মুদ্রাস্ফীতির আশঙ্কা এবং রাজনৈতিক টানাপোড়েন মিলিয়ে সোনার এই রেকর্ড উত্থান শুধুমাত্র বাজারের প্রতিক্রিয়া নয়, বরং অনিশ্চিত সময়ে নিরাপত্তার প্রতীক হিসেবেও নতুন করে আবির্ভূত হচ্ছে।
-আশরাফুল ইসলাম
পাঠকের মতামত:
- তিস্তা মহাপরিকল্পনা’র দাবিতে চবি শিক্ষার্থীদের মশাল মিছিল, ভারতকে কড়া হুঁশিয়ারি
- ভিসা ছাড়াই যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণ: ৪২ দেশের নাগরিকদের জন্য বিশেষ সুবিধা চালু
- ২০ অক্টোবর বাংলাদেশের প্রধান অঞ্চলের নামাজের সময়সূচি
- তৈরি পোশাক শিল্পে বড় আঘাত: কার্গো ভিলেজের ক্ষতি নিয়ে যা বলল বিজিএমইএ
- শীতে আমন্ড বাদাম: ভিজিয়ে খাবেন নাকি শুকনো? জেনে নিন সঠিক পদ্ধতি
- মাথাব্যথাকে বিদায়: ৫টি সহজ ঘরোয়া টোটকা
- জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে ছুরিকাঘাতে হত্যা
- চিয়া সিড খাওয়ার সঠিক সময় কোনটি? জেনে নিন উপকারিতা
- ইসলামী আন্দোলন ক্ষমতায় গেলে হানাহানি থাকবে না: মুফতি ফয়জুল করীম
- ইতিহাসের সবচেয়ে দুঃসাহসিক ছিনতাই: ২ লক্ষ ডলার নিয়ে আকাশেই উধাও সেই রহস্যমানব!
- ড্রোন দিয়ে ঘণ্টায় ১,৮০০ চারা রোপণ: প্রযুক্তিতে বন পুনরুদ্ধারের নজির
- ১০ বছরের সন্তানকে নিয়ে মা সমুদ্র সাঁতরে পৌঁছালেন স্পেনে
- খালেদা-তারেকের নিরাপত্তা: বুলেটপ্রুফ গাড়ি কেনার অনুমতি
- নাহিদ ইসলামের তীব্র সমালোচনা: পিআর নিয়ে জামায়াতকে একহাত নিলেন এনসিপি নেতা
- মানব সভ্যতায় মুসলিম বিজ্ঞানীদের ৫ যুগান্তকারী অবদান
- আন্দোলনরত শিক্ষকদের প্রতি শিক্ষা উপদেষ্টার বার্তা
- ১৮ বছরের গণনা: যে আবিষ্কার বিশ্বকে বোঝালো আমরা মিল্কি ওয়েতে একা নই
- জুলাই সনদের ৫ দফা দাবিতে জামায়াতসহ সমমনা দলগুলোর নতুন কর্মসূচি ঘোষণা
- সুখবর: ৯ মাস বন্ধ থাকার পর খুলছে সেন্ট মার্টিন
- পা ফাটা দূর করুন: ঘরোয়া উপায়ে মসৃণ গোড়ালি পাওয়ার সহজ কৌশল
- শোয়েব আখতারের রেকর্ড ভাঙা! স্টার্কের ১৭৬.৫ কিমি গতির বল নিয়ে তোলপাড়
- ১৯ অক্টোবর ডিএসই লেনদেনের সারসংক্ষেপ
- ১৯ অক্টোবরের ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ লুজার তালিকা প্রকাশ
- ১৯ অক্টোবরের ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- পরিকল্পিত আগুন: কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ড নিয়ে বড় অভিযোগ
- ইসি জঙ্গলীয় কায়দায় চলছে: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী
- ‘বক্তব্য কাট করে বিকৃত করা হয়েছে’: জুলাই যোদ্ধা নিয়ে সালাহউদ্দিন আহমদের ব্যাখ্যা
- এনসিপি’র হুঁশিয়ারি: নির্বাচন কমিশন ‘স্বৈরাচারী কায়দায়’ চলছে
- ফ্রান্স: সভ্যতা, প্রজাতন্ত্র ও মানবমুক্তির দীপ্ত ইতিহাস
- বাংলাদেশ জলসীমায় অনুপ্রবেশ: বঙ্গোপসাগর থেকে ভারতীয় ১৪ জেলে আটক
- মেথি পানির ম্যাজিক: নিয়মিত ১৫ দিন পান করলে শরীরে আসে যে ৬ পরিবর্তন
- সাবধান! কম ঘুম ছোট করে দিতে পারে মস্তিষ্ককে, নতুন গবেষণার ভয়াবহ তথ্য
- এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়িভাড়া ভাতা বাড়াল সরকার
- ঘূর্ণিঝড়ের শঙ্কা: বঙ্গোপসাগরে নতুন লঘুচাপ সৃষ্টির পূর্বাভাস দিল আবহাওয়া অধিদপ্তর
- ইয়েমেনে জাতিসংঘ ভবনে হুথি অভিযান: সব কর্মী নিরাপদে
- গণভোটের দিনক্ষণ: নির্বাচনের দিন হবে না আগে? সিদ্ধান্ত সরকারের ওপর
- রক্ষণ থেকে আক্রমণে জাদু: আরাউহোর গোলে লা লিগার শীর্ষে বার্সা
- মেসির জাদুতে ইন্টার মায়ামির দুর্দান্ত জয়: হ্যাটট্রিকে এমএলএস গোল্ডেন বুট প্রায় নিশ্চিত
- ‘আমরা রাজা নই, আমরা জনগণ’: যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল জনতা
- রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর যুদ্ধবিরতি: দোহায় পাকিস্তান-আফগান সমঝোতা
- শাহজালালে আগুনে ছাই ব্যবসায়িক আশা: বিলিয়ন ডলারের ক্ষতির আশঙ্কা
- ১৯ অক্টোবর বাংলাদেশের প্রধান অঞ্চলের নামাজের সময়সূচি
- কার্গো ভিলেজে আগুন: ক্ষতির আশঙ্কা বিলিয়ন ডলার
- ভারতের বিরুদ্ধে নতুন সামরিক হুমকি দিলেন পাক সেনাপ্রধান
- সাম্প্রতিক অগ্নিকাণ্ডগুলো জননিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি: তারেক রহমান
- পায়ে সামান্য ব্যথা বা ঘা: নীরব ঘাতক ‘রক্তনালির ব্লকের’ সংকেত নয়তো?
- রাতে ফ্লাইট চালুর চেষ্টা চলছে: কার্গো ভিলেজের আগুন পরিদর্শনে উপদেষ্টা
- রিশাদ ম্যাজিক স্পিনে উড়ে গেল ওয়েস্ট ইন্ডিজ
- ঢাকার বিমানবন্দর অচল: ভয়াবহ আগুনে পুড়ছে কার্গো ভিলেজ, ৫ ঘণ্টায়ও নেভেনি
- ৪০-৪৫ দিনের রেণুবিন্দু: বিজ্ঞান বনাম কোরআন, গর্ভের শিশুর নিয়তি কখন লেখা হয়?
- ফ্রান্স: সভ্যতা, প্রজাতন্ত্র ও মানবমুক্তির দীপ্ত ইতিহাস
- হিটলার কেন ৬০ লাখ ইহুদিকে হত্যা করেছিলেন? নেপথ্যের কারণ কী?
- বিনিয়োগকারীদের আস্থায় ভর করে চাঙ্গা রাজধানীর শেয়ারবাজার
- পূর্বাচল প্লট অনিয়ম মামলা: শেখ হাসিনা ও পরিবারের বিরুদ্ধে পাঁচজনের সাক্ষ্য
- ১৩ অক্টোবরের ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- জায়ান-শমিতকে নিয়েই একাদশ, বেঞ্চে বসলেন দলের অন্যতম তারকা
- মাইগ্রেন কি শুধু মাথাব্যথা? জেনে নিন এর ৫টি ভিন্ন ধরন
- শি জিনপিং: সমাজে প্রকৃত সমতা চাইলে নারীর নেতৃত্ব নিশ্চিত করতে হবে
- আজ বাংলাদেশের বাঁচা-মরার লড়াই, টিভিতে নয় ২৫ টাকায় দেখুন অনলাইনে
- ১৪ অক্টোবরের ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- পরমাণু ইস্যুতে কঠোর ইরান: আইএইএ-এর সঙ্গে চুক্তি স্থগিত, কারণ কী?
- শিক্ষক আন্দোলনের মোড়বদল: ‘লংমার্চ টু যমুনা’ স্থগিত, নতুন কর্মসূচি ঘোষণা
- শীতকাল আসছে: সুস্থ থাকতে এখনই বর্জন করুন এই ৫টি অভ্যাস
- জাল টাকার প্রচলন রোধে বাংলাদেশ ব্যাংকের ৪ গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা
- ‘সামাজিক ব্যবসা তহবিল’ গঠনের প্রস্তাব দিলেন প্রধান উপদেষ্টা