জবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলন

জবিতে দাবিপূর্ণ আন্দোলনে গণঅনশন শুরু আজ

সারাদেশ ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ মে ১৬ ০৮:৪৩:৪২
জবিতে দাবিপূর্ণ আন্দোলনে গণঅনশন শুরু আজ

সত্য নিউজ: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট বৃদ্ধি, আবাসন সংকট নিরসন ও দ্বিতীয় ক্যাম্পাস বাস্তবায়নসহ চার দফা দাবিতে চলমান আন্দোলনের দ্বিতীয় দিনেও সরকারের পক্ষ থেকে আশানুরূপ সাড়া না পাওয়ায় আন্দোলন আরও একধাপ এগিয়ে যাচ্ছে। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ঘোষণা এসেছে, শুক্রবার জুমার নামাজের পর কাকরাইল মসজিদ মোড়ে তারা গণঅনশনে বসবেন। অনশনে বর্তমান শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীরাও অংশ নেবেন।

বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে কাকরাইল মোড়ে অবস্থানস্থলে এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. রইছ উদ্দীন। তিনি বলেন, “জবি পরিবার আজ ঐকমত্যে পৌঁছেছে—হয় আমাদের দাবি আদায় হবে, না হয় আমরা জীবন দেব। দ্বিতীয় দিন পেরিয়ে গেলেও দাবি মানা হয়নি। তাই আমরা গণঅনশন কর্মসূচিতে যাচ্ছি।” একইসঙ্গে তিনি জানান, আন্দোলনরত শিক্ষকদের অনেকেই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে রাতভর অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার বিকেলে আন্দোলনকারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি পালন করেন। ক্যাম্পাসে ক্লাস, প্রশাসনিক কার্যক্রম ও পরিবহন ব্যবস্থা পুরোপুরি বন্ধ থাকে। আন্দোলনকারীরা জানান, সরকারের দিক থেকে যদি সুস্পষ্ট প্রতিশ্রুতি না আসে, তাহলে তারা পরবর্তী সময় আরও কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবেন।

উল্লেখ্য, বুধবার আন্দোলনের সূচনায় পুরান ঢাকার মূল ক্যাম্পাস থেকে একটি পদযাত্রা শুরু হয়, যার লক্ষ্য ছিল প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়। পথে পুলিশ একাধিকবার ব্যারিকেড দিয়ে তাদের থামাতে চাইলেও আন্দোলনকারীরা সেসব ভেঙে কাকরাইল পর্যন্ত পৌঁছান। তবে প্রধান বিচারপতির বাসভবনের সামনে গেলে পুলিশ লাঠিচার্জ, সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ার শেল ব্যবহার করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এরপর থেকে কাকরাইল মোড়েই আন্দোলনকারীরা অবস্থান নিয়ে কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন।

আন্দোলনের শুরুতে তিন দফা দাবি ছিল—২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন বৃত্তি চালু, প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কাটছাঁট না করে অনুমোদন এবং দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ একনেক সভায় অনুমোদনের মাধ্যমে দ্রুত বাস্তবায়ন। কিন্তু প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে পুলিশের আচরণ ও হামলার ঘটনার পর শিক্ষার্থীরা চতুর্থ দাবি হিসেবে তদন্ত ও দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করার বিষয়টি যুক্ত করেন।

এ আন্দোলন এখন কেবল বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক দাবির মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই, বরং তা বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থার বাজেট বরাদ্দ, শিক্ষার্থীদের মৌলিক চাহিদা এবং শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের সাংবিধানিক অধিকার নিয়ে জাতীয় পর্যায়ে আলোচনার বিষয় হয়ে উঠছে।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ