গাজায় দুর্ভিক্ষ, মৃত্যু আর জিম্মিদের আর্তনাদ: সংকটের মুখে আন্তর্জাতিক মানবতা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ০৬ ১২:২৩:৪২
গাজায় দুর্ভিক্ষ, মৃত্যু আর জিম্মিদের আর্তনাদ: সংকটের মুখে আন্তর্জাতিক মানবতা
ছবিঃ সংগৃহীত

গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান সম্প্রসারণ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। মঙ্গলবার নিরাপত্তা পরিষদের এক বৈঠকে জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব মিরোস্লাভ জেনচা সতর্ক করে বলেন, গাজায় যুদ্ধ আরও বাড়লে তা লাখো ফিলিস্তিনির জন্য “দুর্বিষহ বিপর্যয়” ডেকে আনবে, একইসঙ্গে গাজায় অবশিষ্ট জিম্মিদের জীবন আরও ঝুঁকির মুখে পড়বে।

জেনচা পরিষ্কারভাবে বলেন, “গাজা কিংবা সামগ্রিক ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের কোনো সামরিক সমাধান নেই।” তাঁর মতে, কূটনৈতিক এবং মানবিক পথেই এই সংকটের দীর্ঘস্থায়ী সমাধান সম্ভব।

এর আগে মঙ্গলবারই এক সামরিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে সফরকালে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, “আমাদের শত্রুকে পরাজিত করতে হবে, সব জিম্মিকে মুক্ত করতে হবে এবং নিশ্চিত করতে হবে—গাজা আর কখনোই ইসরায়েলের জন্য হুমকি হবে না।” বিভিন্ন সূত্র মতে, নেতানিয়াহু এখন গাজা সম্পূর্ণ দখলের পরিকল্পনা বিবেচনা করছেন।

তবে এই যুদ্ধের বাস্তবতা অত্যন্ত ভয়াবহ। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ২২ মাসে ইসরায়েলি সামরিক হামলায় ৬১,০২০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। অন্যদিকে, সংঘাতের সূচনা হয়েছিল ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর, যখন হামাসের হামলায় ১,২১৯ জন ইসরায়েলি নিহত হন, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক।

ওই হামলায় হামাস ২৫১ জনকে জিম্মি করে, যাদের মধ্যে এখনো ৪৯ জন গাজায় আটক, এবং ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর মতে, এদের মধ্যে ২৭ জন ইতিমধ্যে নিহত হয়েছেন।

নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকের আগে গাজায় জিম্মিদের দুর্দশা নিয়ে সরব হন ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদিওন সাআর। তিনি জাতিসংঘে দাঁড়িয়ে বলেন, “আমি এসেছি যেন বিশ্বের দৃষ্টি এখন জিম্মিদের দিকে যায়। আমরা চাই, তাদের অবিলম্বে ও নিঃশর্ত মুক্তি।” একই দাবিতে জেনচাও বলেন, গাজায় যেসব জিম্মি এখনো জীবিত আছেন, তাদের অবিলম্বে এবং বিনাশর্তে মুক্তি দিতে হবে।

তবে শুধু জিম্মি নয়, গাজায় মানবিক সহায়তার অভাবও চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। জেনচা বলেন, “ইসরায়েল এখনো গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে রেখেছে। যতটুকু সহায়তা প্রবেশ করতে পারছে, তা সম্পূর্ণ অপ্রতুল।”

তিনি আরও বলেন, “ক্ষুধা এখন গাজার প্রতিটি প্রান্তে, শিশুদের কঙ্কালসার মুখে, আর মায়েদের মরিয়া চোখে তা স্পষ্ট। পরিবারগুলো ন্যূনতম খাবার বা চিকিৎসাসামগ্রী জোগাড় করতে গিয়ে জীবন বাজি রাখছে।”

এ পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি জেনচার আহ্বান—এই মানবিক সংকটে যেন দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়।

-সুত্রঃ এ এফ পি

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ