দক্ষিণ কোরিয়ার ইতিহাসে প্রথম: সাবেক ফার্স্ট লেডির গ্রেফতারের পথে

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ০৬ ১১:১১:০০
দক্ষিণ কোরিয়ার ইতিহাসে প্রথম: সাবেক ফার্স্ট লেডির গ্রেফতারের পথে
ছবিঃ সংগৃহীত

দক্ষিণ কোরিয়ার সাবেক ফার্স্ট লেডি কিম কিয়ান হি-কে ঘিরে ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে দেশটির রাজনীতি ও জনমত। বুধবার (৭ আগস্ট) তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দেশটির বিশেষ প্রসিকিউটর দল, যার কেন্দ্রে রয়েছে একাধিক অভিযোগ—শেয়ারবাজার কারসাজি, ঘুষ গ্রহণ ও নির্বাচনী অনিয়ম।

প্রসিকিউটরদের ভাষ্য অনুযায়ী, বুধবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টার কিছু পরেই শুরু হয় কিমের জিজ্ঞাসাবাদ। ধারণা করা হচ্ছে, এদিনের জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা চাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে প্রসিকিউশন টিম। যদি তা অনুমোদিত হয়, তবে দক্ষিণ কোরিয়ার ইতিহাসে এই প্রথমবারের মতো একজন সাবেক রাষ্ট্রপতি এবং তার স্ত্রী একসঙ্গে গ্রেফতার হবেন।

২০০৯ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে একটি কোম্পানির শেয়ারমূল্য কৃত্রিমভাবে বাড়াতে কিছু ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগসাজশ করার অভিযোগ রয়েছে কিমের বিরুদ্ধে। এছাড়া, এক ভক্তের কাছ থেকে ২,২০০ মার্কিন ডলারের ডিজাইনার হ্যান্ডব্যাগ উপহার নেওয়ার অভিযোগে তিনি দেশটির দুর্নীতি দমন আইনেরও লঙ্ঘন করেছেন বলে মনে করা হচ্ছে। সেইসঙ্গে, স্বামীর রাজনৈতিক দলের মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় প্রভাব বিস্তারের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে—যা দেশটির নির্বাচন আইন অনুযায়ী গুরুতর অপরাধ।

জিজ্ঞাসাবাদের আগে গণমাধ্যমকে উদ্দেশ করে কিম বলেন, “আমি তেমন গুরুত্বপূর্ণ কেউ নই, তবুও সমস্যার সৃষ্টি করায় আন্তরিকভাবে দুঃখিত। তদন্তে আমি সর্বাত্মক সহযোগিতা করব।”

সিউলের প্রসিকিউটর কার্যালয়ের সামনে এদিন ভিড় করে সংবাদমাধ্যম, কিম-ইউন দম্পতির সমর্থক এবং বিরোধী দুইপক্ষের মানুষ। জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে অনেকে ‘নিষ্পক্ষ তদন্ত চাই’ লেখা প্ল্যাকার্ড বহন করেন। ২০২২ সালের একটি ভিডিও, যেখানে কিম একটি ডিওর ব্যাগ গ্রহণ করতে দেখা যায়, নতুন করে সমালোচনার জন্ম দেয়।

সাবেক প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল, যিনি একসময় দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধান প্রসিকিউটর ছিলেন, গত এপ্রিল মাসে সামরিক শাসন জারি করার কারণে অভিশংসনের মুখে পড়েন এবং শেষমেশ পদচ্যুত হন। এর আগে তিনি সংসদের বিরোধী দল কর্তৃক পাসকৃত তিনটি বিশেষ তদন্ত বিলও ভেটো করেন, যেগুলো মূলত কিমের বিরুদ্ধে তদন্ত চালানোর প্রস্তাবনা ছিল। ভেটোর এক সপ্তাহের মাথায় ঘোষণা করেন সামরিক শাসন, যা পরে পার্লামেন্ট বাতিল করে দেয়।

এই রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বিচারিক প্রক্রিয়া দক্ষিণ কোরিয়ার গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষায় পরিণত হয়েছে।

-সুত্রঃ এ এফ পি

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ