ট্রাম্পকে হত্যা বৈধ? কোমে ইরানি ধর্মগুরুর ভয়ংকর ঘোষণা ঘিরে চাঞ্চল্য

সম্প্রতি ইরানের শিয়া ধর্মীয় কেন্দ্র ‘কোম’-এ এক বিরল ধর্মীয় সমাবেশে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে হত্যার আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির দুই হাজারেরও বেশি ইসলামি ধর্মগুরু। আয়োজিত এই সমাবেশে ট্রাম্পের রক্তকে ‘হালাল’ ঘোষণা করে তাঁকে হত্যা করা ধর্মীয় দায়িত্ব বলে আখ্যা দেওয়া হয়। এমন ঘোষণায় পশ্চিমা বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা সংস্থা ইউএস সিক্রেট সার্ভিস ট্রাম্পের নিরাপত্তা আরও জোরদার করেছে বলে জানা গেছে।
সমাবেশে প্রকাশিত আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘বিপ্লবী ধৈর্যের সময় শেষ। এখন প্রতিশোধের সময়। ট্রাম্পের রক্ত ও সম্পত্তি হালাল।’’ কাসেম সুলেমানির হত্যার দায় ট্রাম্পের ওপর চাপিয়ে দিয়ে সেখানে বলা হয়, এই হত্যাকাণ্ডের বদলা নেওয়া প্রতিটি মুসলিম এবং স্বাধীনতাকামী মানুষের কর্তব্য। উক্ত বিবৃতিতে ট্রাম্পকে ‘বর্বর’ আখ্যা দিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে ‘চূড়ান্ত ব্যবস্থা’ নেওয়ার ডাক দেওয়া হয়।
প্রকাশিত ঘোষণায় শুধু ধর্মীয় গুরু নয়, শিয়া মাদ্রাসার বহু জুনিয়র ছাত্রও সই করেছে। এতে বোঝা যায়, ইরানে ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহে ট্রাম্পবিরোধী মনোভাব কতটা গভীরে প্রোথিত। উল্লেখযোগ্যভাবে এই ঘোষণায় সই করেছেন আয়াতুল্লাহ আলী খামিনির ঘনিষ্ঠ তিন শীর্ষ নেতা— জুমার খতিব আহমেদ খাতামি, এক্সপিডিয়েন্সি কাউন্সিলের সদস্য মহসেন আরাকি, এবং গার্ডিয়ান কাউন্সিলের সদস্য মেহেদি শাবজ়েনদার।
ইরানের শীর্ষ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামিনির অধীনে পরিচালিত আধাসামরিক বাহিনী ইসলামিক রেভলিউশনারি গার্ড কোর (আইআরজিসি) অঞ্চলজুড়ে ব্যাপকভাবে সক্রিয়। তাদের অধীনে রয়েছে দূরপাল্লার ব্যালেস্টিক ও হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা। যুক্তরাষ্ট্রকে ‘বড় শয়তান’ এবং ইজরায়েলকে ‘ছোট শয়তান’ হিসেবে বিবেচনা করেন খামিনি। আইআরজিসির সাবেক কমান্ডার কাসেম সুলেমানি ছিলেন তাঁর ঘনিষ্ঠ এবং মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের প্রভাব বিস্তারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী এক সেনা কর্মকর্তা।
২০২০ সালের জানুয়ারিতে বাগদাদ বিমানবন্দরের বাইরে সুলেমানিকে মার্কিন ড্রোন হামলায় হত্যা করা হয়। ওই হামলার নির্দেশ দিয়েছিলেন ট্রাম্প। ইজরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ সুলেমানির গতিবিধির ওপর নজর রেখে মার্কিন বাহিনীকে তথ্য দেয় বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়। সুলেমানি সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে অংশগ্রহণসহ বিভিন্ন গোপন অভিযানের মাধ্যমে ইহুদি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কার্যকর ভূমিকা রাখছিলেন। এই ঘটনার প্রতিশোধ নিতে ইরান পরে আমেরিকার কয়েকটি ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালেও বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
সুলেমানির মৃত্যুর পরপরই যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে একাধিক হামলার চেষ্টা হয়। ২০২০ সালের আগস্টে হোয়াইট হাউসের বাইরে এক বন্দুকধারীর গুলিবর্ষণের ঘটনায় নিরাপত্তাকর্মীরা দ্রুত ট্রাম্পকে সরিয়ে নিয়ে যান। একই বছরের সেপ্টেম্বরে প্যাস্কেল ফেরিয়ার নামে এক নারী ট্রাম্পকে বিষমাখানো চিঠি পাঠান, যেখানে তাঁকে ‘কুৎসিত অত্যাচারী জোকার’ বলা হয়। তাকে ‘জৈব অস্ত্র ব্যবহার’ আইনে ২২ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
২০২৪ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারে ব্যস্ত থাকার সময় ট্রাম্প অন্তত দুইবার হত্যাচেষ্টার শিকার হন। ১৩ জুলাই পেনসিলভানিয়ায় এক জনসভায় থমাস ম্যাথিউ ক্রুকস নামে এক বন্দুকধারী ট্রাম্পের ওপর এআর-১৫ রাইফেল দিয়ে গুলি চালান। একটি গুলি তাঁর কানের পাশ দিয়ে বেরিয়ে যায়। ট্রাম্প ভাগ্যক্রমে প্রাণে বেঁচে যান, এবং বন্দুকধারী ঘটনাস্থলেই নিহত হন।
-রাফসান
খামেনি যুক্তরাষ্ট্রকে দিলেন কড়া শর্তাবলী
ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করে জানিয়েছেন যে, যদি তারা ইরানের সঙ্গে কার্যকর ও সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন করতে চায়, তাহলে তাদের প্রথমে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন প্রত্যাহার করতে হবে।
সোমবার তেহরানে এক অনুষ্ঠানে খামেনি বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র স্বভাবগতভাবে আগ্রাসী এবং স্বার্থপর। তারা সাধারণত আত্মসমর্পণ ছাড়া অন্য কোনো প্রস্তাব গ্রহণ করে না। তবুও, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্কের সম্ভাবনা আমাদের বিবেচনায় আছে। তবে প্রথমে তাদের অবশ্যই ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন বন্ধ করতে হবে, মধ্যপ্রাচ্য থেকে তাদের সামরিক ঘাঁটিগুলো সরাতে হবে এবং এই অঞ্চলের নানা বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। এরপর আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্ভাব্য সহযোগিতা গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করব।”
ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের ইতিহাস জটিল। একসময় দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিল, কিন্তু ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লব এবং ইসলাপন্থী শাসকগোষ্ঠীর ক্ষমতায় আসার পর যুক্তরাষ্ট্র তেহরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে।
এর পরও দুই দেশের মধ্যে বিভিন্ন ইস্যুতে দ্বন্দ্ব চলেছে। বিশেষ করে গত প্রায় দুই দশক ধরে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি তাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের মূল উত্তেজনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সূত্র:তাসনিম নিউজ
সুদানের সংঘাতে ইসরায়েল ও আরব আমিরাতের গভীর সম্পৃক্ততা: বিশ্লেষকের বিস্ফোরক দাবি
সুদানের চলমান গৃহযুদ্ধে সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং ইসরায়েলের মতো বিদেশি শক্তির গভীর সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে দাবি করেছেন সুদানের একজন বিশ্লেষক। তার মতে, আফ্রিকার এই দেশটিতে বিদেশি হস্তক্ষেপের মূল উদ্দেশ্য হলো, মূল্যবান সোনার খনিগুলোর ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা এবং একটি বিশেষ 'আরবীকরণ' এজেন্ডা বাস্তবায়ন করা। ২০১৯ সালে প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরের পতনের পর থেকেই সমৃদ্ধ ইতিহাস ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের দেশটি সংঘাত এবং বহিরাগত হস্তক্ষেপের চক্রে আটকা পড়েছে।
ইরানের মেহের নিউজ এজেন্সির সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে সুদানের বিশ্লেষক নাসের ইব্রাহিম দেশের সাম্প্রতিক ঘটনাবলী, বিশেষ করে আল-ফাশির শহরের পতন, ক্রমবর্ধমান মানবিক সংকট এবং অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশি শক্তির ভূমিকা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
আল-ফাশিরে গণহত্যা ও জাতিগত নির্মূলের অভিযোগ
বিশ্লেষক নাসের ইব্রাহিম নিশ্চিত করেন যে, আল-ফাশির শহর প্যারামিলিটারি র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)-এর হাতে পড়েছে। তিনি এটিকে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতীক হিসেবে বর্ণনা করেন, যেখানে মাত্র তিন দিনে জাতিগত নির্মূল অভিযানের মাধ্যমে ১৫০০ জনেরও বেশি বেসামরিক লোক নিহত হয়েছে। তিনি বলেন, "যা ঘটছে তা জাতিগত নির্মূলের সমান—ধর্ম, ভাষা এবং ত্বকের রঙের কারণে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে।"
নাসের ইব্রাহিমের দাবি, আরএসএফ, যাকে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে বর্ণনা করা যেতে পারে, তারা সংযুক্ত আরব আমিরাতের সরাসরি সমর্থিত। তার মতে, ইসরায়েলি সরকারও এই সংঘাতে জড়িত। এছাড়াও, লিবিয়ায় জেনারেল হাফতারের বাহিনী এবং আরএসএফকে সমর্থনকারী চাদিয়ান সরকারও এই নৃশংসতায় ভূমিকা রাখছে। তিনি সতর্ক করে দেন যে, এই ট্র্যাজেডি কেবল আল-ফাশিরের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, সুদানের অন্যান্য অংশেও একই রকম নৃশংসতা ছড়িয়ে পড়ছে।
আরবীকরণ এজেন্ডা ও অভ্যুত্থানের চেষ্টা
বিশ্লেষক ইব্রাহিম সুদানের গৃহযুদ্ধের সূচনা নিয়ে বলেন, সেনাবাহিনী একসময় একটি কাঠামো চুক্তি প্রত্যাখ্যান করেছিল, যা আরএসএফ সেনাবাহিনীর ওপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। তার মতে, এর প্রতিক্রিয়ায় সংযুক্ত আরব আমিরাত একটি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আরএসএফকে ক্ষমতায় আনার চেষ্টা করেছিল। সেনাবাহিনীর প্রতিরোধের কারণেই এই পূর্ণমাত্রার গৃহযুদ্ধ শুরু হয়।
নাসের ইব্রাহিম আরও বলেন, আরএসএফ 'আরব শ্রেষ্ঠত্ববাদী' মতাদর্শে বিশ্বাসী এবং অ-আরব সুদানিদের তারা রাজনৈতিক বা অর্থনৈতিক অধিকারবিহীন সংখ্যালঘু হিসেবে দেখে। মূলত এই যুদ্ধের সূত্রপাত আরএসএফের সুদানকে আরবীকরণ করার প্রচেষ্টা থেকে। এটি একটি আদর্শিক ও রাজনৈতিক এজেন্ডা, যা সুদানের সেনাবাহিনী এখনো প্রতিরোধ করে চলেছে।
বিদেশি হস্তক্ষেপের মূল কারণ
কেন সুদান বিদেশি শক্তির কাছে এত কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে, সেই প্রশ্নের জবাবে নাসের ইব্রাহিম তিনটি প্রধান কারণ তুলে ধরেন:
১. সোনার খনি নিয়ন্ত্রণ: সুদানের বিশাল সোনার খনিগুলোর ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা অন্যতম প্রধান কারণ, যা আফ্রিকার অব্যবহৃত সম্পদের বৃহত্তম মজুদের একটি।
২. ইসলাম-বিরোধী এজেন্ডা: সংযুক্ত আরব আমিরাতের ইসলাম-বিরোধী এজেন্ডা রয়েছে। দেশটি পশ্চিমা শক্তিগুলোর নির্ধারিত মিশন নিয়ে এই অঞ্চলে ইসলামী আন্দোলনগুলোকে দমন করতে চায়।
৩. আদর্শিক ও রাজনৈতিক প্রভাব: সংযুক্ত আরব আমিরাত সুদানের পরিচয় পুনর্গঠন এবং সেখানে তাদের প্রভাব বিস্তারের লক্ষ্যে 'আরবীকরণ' এজেন্ডা চালাচ্ছে। তিনি অভিযোগ করেন, আরব আমিরাত জাতিগত নির্মূল এবং জনসংখ্যাতাত্ত্বিক প্রকৌশলে অবদান রেখেছে।
তিনি স্পষ্ট করেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত একা কাজ করছে না, পশ্চিমা শক্তি এবং ইসরায়েলি সরকারও এই কাজে জড়িত। তার মতে, সুদানের এই ট্র্যাজেডি লিবিয়া, ইয়েমেন, ইরাক ও লেবাননের মতো অন্যান্য অঞ্চলে দেখা যাওয়া বৃহত্তর আঞ্চলিক কৌশলের অংশ।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়ার মূল্যায়ন
নাসের ইব্রাহিম আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়ার সমালোচনা করে বলেন, বর্তমানে সুদানজুড়ে একটি জনপ্রিয় স্লোগান ছড়িয়ে পড়েছে: "সুদান ছাড়া সুদানের আর কোনো বন্ধু নেই।" তিনি মনে করেন, এই বাক্যাংশটি একটি বেদনাদায়ক সত্যকে প্রতিফলিত করে, কারণ কোনো সরকারই সুদানকে সত্যিকার অর্থে সমর্থন করে না। সাম্প্রতিক নৃশংসতার প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিক্রিয়া মূলত কেবল মিডিয়া কভারেজের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে, কোনো গুরুতর রাজনৈতিক বা মানবিক পদক্ষেপ দেখা যায়নি।
তিনি হতাশা প্রকাশ করে বলেন, আল-ফাশিরের গণহত্যা গাজায় যা ঘটছে, তা প্রতিফলিত করে। মনে হচ্ছে, সুদানের অপরাধীদের প্রতি বিশ্বের প্রতিক্রিয়া গাজায় হত্যাকাণ্ডের প্রতি তাদের প্রতিক্রিয়ার মতোই নীরব থাকবে। তবে, তিনি আশাবাদী যে নাগরিক সমাজের সংগঠনগুলোর চাপে সংযুক্ত আরব আমিরাতের সম্পৃক্ততার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক প্রচারণার প্রাথমিক লক্ষণ দেখা যাচ্ছে, যা দীর্ঘমেয়াদে তাদের অবস্থান দুর্বল করে দিতে পারে।
সুদানে রক্তপাত বন্ধে মুসলিম বিশ্বের প্রতি তুরস্কের এরদোয়ানের জরুরি আহ্বান
সুদানে প্যারামিলিটারি র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) হাতে গুরুত্বপূর্ণ শহর এল-ফাশেরের পতনের পর দেশটিতে চলমান রক্তপাত বন্ধের জন্য মুসলিমবিশ্বকে তাদের দায়িত্ব নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়িপ এরদোয়ান। তিনি জোর দিয়ে বলেন, মুসলিম রাষ্ট্রগুলোকে এই কঠিন পরিস্থিতিতে নীরব থাকা উচিত নয়।
সোমবার ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কোঅপারেশন (ওআইসি)-এর অর্থনৈতিক সম্মেলনে প্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেওয়ার সময় তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এই আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “কারো হৃদয়ে ন্যূনতম সহমর্মিতা থাকলে... এল-ফাশেরে বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে সাম্প্রতিক গণহত্যা মেনে নিতে পারে না। আমরা নীরব থাকতে পারি না।”
মুসলিম বিশ্বের কাঁধে সবচেয়ে বড় দায়িত্ব
এরদোয়ান দ্ব্যর্থহীনভাবে বলেন, সুদানে দ্রুত রক্তপাত বন্ধ করার সবচেয়ে বড় দায়িত্ব নিঃসন্দেহে মুসলিম বিশ্বের ওপর বর্তায়। তিনি ওআইসি-এর ৫৭ সদস্য রাষ্ট্রের প্রতি সংহতি ও স্বনির্ভরতার বার্তা দেন। তিনি বলেন, “মুসলিম হিসেবে আমাদের অন্যদের কাছে সাহায্য না চেয়ে নিজেদের সমস্যা নিজেরাই সমাধান করতে হবে।”
তুর্কি প্রেসিডেন্ট জোর দিয়ে বলেন, এই কঠিন সময়ে সুদানের জনগণের পাশে থাকা এবং মানবিক সহায়তা ও উন্নয়ন সমর্থন অব্যাহত রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি সুদানের আঞ্চলিক অখণ্ডতা, সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতা রক্ষা করার গুরুত্বের উপর গুরুত্বারোপ করেন। তুরস্ক বর্তমানে ৫৭-সদস্যের ওআইসির পররাষ্ট্রমন্ত্রী পরিষদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছে। ১৯৬৯ সালে প্রতিষ্ঠিত এই সংস্থাটি মুসলিম বিশ্বের স্বার্থ রক্ষা এবং তাদের সংহতি বাড়ানোকে তার প্রধান ভূমিকা হিসেবে দেখে।
এল-ফাশেরের পতন ও মানবিক সংকট
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা জানিয়েছে, আরএসএফ প্যারামিলিটারিরা এল-ফাশের শহর থেকে সুদানি সেনাবাহিনীকে তাড়িয়ে দেওয়ার পর মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে প্রায় ৩৭ হাজার মানুষ পালিয়ে গেছে। দীর্ঘ ১৮ মাসের অবরোধের পর এল-ফাশের শহরটি দারফুর অঞ্চলে সুদানি সেনাবাহিনীর শেষ সামরিক ঘাঁটি ছিল, যা মারাত্মক দুর্ভিক্ষ এবং নিরন্তর বোমাবর্ষণের দ্বারা চিহ্নিত হয়েছে।
সংবাদ সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, হাজার হাজার মানুষ এখনো শহরটির ভেতরে আটকা পড়ে আছে। সেখান থেকে গণহত্যা, যৌন সহিংসতা, সাহায্য কর্মীদের ওপর হামলা, লুটপাট এবং অপহরণের মতো ভয়ঙ্কর ঘটনার খবর আসছে। সংঘাতের কারণে ওই অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা বেশিরভাগই বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে সুদানের বর্তমান সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে তুরস্ক প্রকাশ্যে প্যারামিলিটারি র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সুদানি সেনাবাহিনীকে সমর্থন দিয়ে আসছে। জাতিসংঘের মতে, সুদানের সংঘাতে এখন পর্যন্ত হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছে এবং প্রায় এক কোটি ২০ লক্ষ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে, যা বর্তমানে বিশ্বের বৃহত্তম বাস্তুচ্যুতি ও ক্ষুধার সংকটের সৃষ্টি করেছে।
রাশিয়ার সহযোগিতায় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সক্ষমতা বাড়াচ্ছে ইরান
ইরান তার জ্বালানি উৎপাদনে পরিচ্ছন্ন এবং টেকসই উৎসের ব্যবহার বাড়ানোর লক্ষ্যে রাশিয়ার সহযোগিতায় ৮টি নতুন পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছে। রোববার (০২ নভেম্বর) দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা তাসনিম নিউজের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়। ইরানের পারমাণবিক শক্তি সংস্থার (এইওআই) প্রধান মোহাম্মদ এসলামি এই গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণাটি দেন।
জ্বালানি স্বনির্ভরতার পথে ইরান
এইওআই প্রধান মোহাম্মদ এসলামি জানান, ইরান এবং রাশিয়ার মধ্যে সম্প্রতি নতুন একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে, যার অধীনে এই ৮টি পারমাণবিক কেন্দ্র যৌথভাবে নির্মিত হবে। এই বৃহৎ প্রকল্পের মাধ্যমে ইরান ২০ হাজার মেগাওয়াট পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা অর্জন করতে চায়, যা দেশটির জ্বালানি স্বনির্ভরতা ও টেকসই উন্নয়নের পথে এক বিশাল পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
এসলামির ঘোষণা অনুযায়ী, নতুন এই আটটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মধ্যে চারটি বুশেহর প্রদেশে নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। বাকি চারটি কেন্দ্র ইরানের অন্যান্য অঞ্চলে তৈরি করা হবে এবং সরকারের পক্ষ থেকে পরবর্তীতে এসব স্থানের নাম ঘোষণা করা হবে।
ক্রমবর্ধমান বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণ
বিভিন্ন এলাকায় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে ইরান তার ক্রমবর্ধমান বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণের জন্য স্থিতিশীল ও পরিচ্ছন্ন জ্বালানির সরবরাহ নিশ্চিত করতে চায়। মোহাম্মদ এসলামি আরও জানান যে, ইরানের উত্তর উপকূলীয় অঞ্চলেও একটি পারমাণবিক কেন্দ্র নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। এর প্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে গোলেস্তান প্রদেশে একটি নতুন পারমাণবিক প্রকল্প শুরু হয়েছে এবং সেখানে কেন্দ্রটি স্থাপনের জন্য উপযুক্ত স্থানও নির্ধারণ করা হয়েছে।
রাশিয়ার সঙ্গে এই সহযোগিতা চুক্তিকে ইরান তার বিদ্যুৎ উৎপাদন কাঠামোতে পারমাণবিক শক্তির গুরুত্ব বৃদ্ধি এবং জীবাশ্ম জ্বালানির উপর নির্ভরতা কমানোর একটি বড় উদ্যোগ হিসেবে দেখছে।
গাজা শান্তি উদ্যোগে মুসলিম ঐক্যের ডাক, ইস্তাম্বুলে ছয় দেশের বৈঠক
তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান সোমবার ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিতব্য এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে গাজা উপত্যকার নিরাপত্তা ও প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ দ্রুত ফিলিস্তিনিদের হাতে তুলে দেওয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানাবেন বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্স তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি কূটনৈতিক সূত্রের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিতব্য এই বৈঠকে কাতার, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই), জর্ডান, পাকিস্তান এবং ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা অংশ নেবেন। বৈঠকের মূল আলোচ্যসূচি হবে গাজায় চলমান যুদ্ধবিরতি প্রক্রিয়া, মানবিক সহায়তা, এবং যুদ্ধ-পরবর্তী প্রশাসনিক কাঠামো।
সূত্রটির উদ্ধৃতি দিয়ে রয়টার্স জানায়, হাকান ফিদান বৈঠকে মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে সমন্বিত পদক্ষেপ ও যৌথ কূটনৈতিক অবস্থান গ্রহণের গুরুত্বের ওপর বিশেষ জোর দেবেন, যাতে যুদ্ধবিরতি স্থায়ী শান্তিতে রূপ নিতে পারে। তিনি আশা করছেন, মুসলিম বিশ্বের ঐক্যবদ্ধ ও কার্যকর অবস্থান গাজায় টেকসই রাজনৈতিক সমাধানের ভিত্তি তৈরি করতে সক্ষম হবে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই বৈঠকটি মধ্যপ্রাচ্যে চলমান সংঘাত-পরবর্তী ভূরাজনৈতিক বাস্তবতায় মুসলিম দেশগুলোর ভূমিকা পুনর্গঠনের একটি গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক উদ্যোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে। গাজা উপত্যকায় মানবিক পরিস্থিতি ক্রমেই ভয়াবহ হয়ে উঠছে, এবং আন্তর্জাতিক মহল এখন কার্যকর ও ফিলিস্তিন-কেন্দ্রিক সমাধানের আহ্বান জানাচ্ছে।
তুরস্ক দীর্ঘদিন ধরেই ফিলিস্তিন ইস্যুতে সক্রিয় অবস্থান নিয়েছে। প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান সম্প্রতি গাজায় ইসরায়েলি অভিযানের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, “ফিলিস্তিনিদের হাতে নিজেদের ভূমির নিয়ন্ত্রণ ফিরিয়ে দেওয়াই শান্তির একমাত্র পথ।”
রয়টার্স জানিয়েছে, ইস্তাম্বুলের এই বৈঠকে অংশগ্রহণকারী দেশগুলো মানবিক করিডোর, পুনর্গঠন পরিকল্পনা এবং যুদ্ধবিরতি পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থার বিষয়েও আলোচনা করবে। এর পাশাপাশি, গাজার ভবিষ্যৎ প্রশাসনে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ ও আঞ্চলিক সংস্থাগুলোর ভূমিকা কীভাবে নির্ধারিত হবে, সে বিষয়েও মতবিনিময় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, তুরস্কের এই উদ্যোগ মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে সমন্বিত ফিলিস্তিন নীতি গঠনের পথে একটি বড় পদক্ষেপ হতে পারে, যা দীর্ঘস্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠায় নতুন আশার সঞ্চার করবে।
-আল জাজিরা
তালেবান ও আইএসআই: সীমান্ত থেকে কাবুল পর্যন্ত ইতিহাসের প্রথম সংযোগ
প্রায় ৩০ বছর আগে পাকিস্তানের একজন প্রধানমন্ত্রী প্রথমবারের মতো আফগানিস্তানের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেন। এটি ছিল এক ধরনের কৌশলগত পদক্ষেপ, যা পাকিস্তানের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই এবং আফগানিস্তানের এক সীমিত ক্ষমতাসম্পন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়। 당시 সীমান্তের দুই পাশের কেউই কল্পনা করতে পারেনি যে, পরবর্তী তিন বছরের মধ্যে এই ছোট গোষ্ঠী ‘তালেবান’ নামে পরিচিত হয়ে আফগানিস্তানের প্রায় অধিকাংশ এলাকায় প্রভাব বিস্তার করবে। এই প্রেক্ষাপটে প্রশ্ন ওঠে, পাকিস্তান কেন এই পদক্ষেপ নিয়েছিল, আইএসআই এই সময়ে কী ধারণা পোষণ করছিল এবং এ পদক্ষেপের উদ্দেশ্য ও ফলাফল কী ছিল। সীমান্তে সংঘর্ষ, হামলা এবং কথার লড়াইয়ের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্লেষকরা এটিকে প্রাচীন দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অবসানের সূচনা হিসেবে দেখছেন। দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে আন্তর্জাতিক ফোরামে পাকিস্তানকে এ বিষয়ে দায়ী করার অভিযোগ উঠেছে, তবে সম্পর্কের সূচনা ও প্রেক্ষাপট স্পষ্টভাবে ইতিহাসে রেকর্ড করা আছে।
স্টিভ কোলের ‘Ghost Wars’ বইয়ে বেনজির ভুট্টোকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, ২০০২ সালে তিনি একটি সাক্ষাৎকারে মন্তব্য করেছিলেন, পাকিস্তানের জন্য আফগানিস্তানের মাধ্যমে বাণিজ্য পথ নিয়ন্ত্রণ করা অত্যন্ত লাভজনক হবে। তিনি পাকিস্তান থেকে আফগানিস্তানের মাধ্যমে মধ্য এশিয়ায় তুলা, জ্বালানি ও ইলেকট্রনিক পণ্য পাঠানোর পরিকল্পনা করেছিলেন। ১৯৯৪ সালে, সোভিয়েত বাহিনী আফগানিস্তান থেকে প্রত্যাহার করার পর দেশটি গৃহযুদ্ধের কবলে পড়ে। বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠী একে অপরের সঙ্গে লড়াই করছিল, প্রতিটি শহর ও অঞ্চল কোনো এক পক্ষের নিয়ন্ত্রণে চলে যাচ্ছিল। এমন পরিস্থিতিতে বেনজির ভুট্টো আফগানিস্তানে একটি নিরাপদ বাণিজ্য পথ গড়ে তোলার উদ্যোগ গ্রহণ করেন, যা বাস্তবায়ন করা মোটেও সহজ ছিল না।
বেনজির ভুট্টো আফগান ইস্যুতে একটি সমন্বিত দল গঠন করেছিলেন, যার মধ্যে ছিলেন সাবেক মেজর জেনারেল এবং তার সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নাসিরুল্লাহ খান বাবর। নাসিরুল্লাহ খান বাবর প্রস্তাব দেন কাবুলের মধ্য দিয়ে নয়, বরং দক্ষিণ আফগানিস্তানের কান্দাহার ও হেরাতের মাধ্যমে একটি বিকল্প বাণিজ্য পথ তৈরি করার। বেনজির ভুট্টো এই প্রস্তাব পছন্দ করেন এবং পরিকল্পনা অনুযায়ী দক্ষিণ আফগানিস্তান হয়ে মধ্য এশিয়ার বাণিজ্য পথ কার্যকর করার উদ্যোগ নেন। তিনি আশা করেছিলেন, পাকিস্তান স্থানীয় আফগান কমান্ডারদের অর্থ প্রদান করে এই পথে বাণিজ্য পরিচালনা করতে পারবে। আইএসআই এই পরিকল্পনার সঙ্গে একমত ছিল এবং কোনোরূপ দ্বিমত ছিল না।
১৯৯৪ সালের অক্টোবর, নাসিরুল্লাহ খান বাবরের নেতৃত্বে প্রথম বাণিজ্য বহর আফগানিস্তানে পাঠানো হয়। বহরের ট্রাকে পাকিস্তানি টেক্সটাইল পণ্য বহন করা হয় এবং এ নিয়ে ব্যাপক প্রচার চালানো হয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী, বহরটি কান্দাহার হয়ে তুর্কমেনিস্তানে পৌঁছানোর জন্য নির্ধারিত ছিল। আইএসআই-এর প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাভেদ আশরাফ কাজী ২০২১ সালে সাক্ষাৎকারে জানান, ট্রাকগুলো তুলা বহন করছিল। পাকিস্তানে তুলার ঘাটতি পূরণের পাশাপাশি, সড়কপথে তুলা আনা ছিল সমুদ্রপথের তুলনায় দ্রুত এবং সস্তা। তবে হেরাত থেকে কান্দাহারের পথে স্থানীয় একজন কমান্ডার ট্রাকগুলো থামিয়ে লুটপাট চালায় এবং বহরের লোকজনকে বন্দি করে।
এ পরিস্থিতিতে নাসিরুল্লাহ খান বাবর আইএসআইকে অবহিত করেন। আইএসআই এবং নাসিরুল্লাহ খান বাবর একযোগে তালেবানের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করেন, যাতে অপহৃতদের মুক্তি এবং ট্রাকগুলো ফিরিয়ে আনা যায়। এই প্রক্রিয়াটি পাকিস্তান ও তালেবানের মধ্যে প্রথম আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ হিসেবে বিবেচিত হয়। তালেবান বিনিময় ছাড়া ট্রাক ও বন্দিদের মুক্তি দেয়। ইসলামাবাদের মার্কিন দূতাবাসের গোপন চিঠি (১৯৯৫, তালেবান ফাইলস) এই ঘটনার আলাদা বিবরণ তুলে ধরে, যেখানে বলা হয়েছে, পাকিস্তানি বাণিজ্য বহরের ওপর তালেবানের মনোযোগ বৃদ্ধি পায় এবং তারা বাধা সরিয়ে দেয়।
তালেবানের শুরুর গল্পও এ সময়ের মধ্যে শুরু হয়। মোল্লা ওমরের তত্ত্বাবধানে কিছু সশস্ত্র তালেবান মাইওয়ান্দে সক্রিয় হয়। স্থানীয় ব্যবসায়ী হাজি বশির নূরজাই তাদের আর্থিক ও সামরিক সহায়তা প্রদান করেন। শুরুতে হামিদ কারজাইও তাদের সহায়তা প্রদান করেছিলেন, যিনি পরে আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট হন। তালেবান পরবর্তীতে স্পিন বোলদাক এবং অন্যান্য অঞ্চলে অস্ত্র ও লজিস্টিক সুবিধা সংগ্রহ করে। সোভিয়েত ইউনিয়নের সময়কাল থেকে কমান্ডারদের সহযোগিতায় ১৭টি সুড়ঙ্গে অস্ত্র মজুদ করা হয়, যা তাদের সামরিক ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। আইএসআই-এর তথ্য অনুযায়ী, সেখানে পর্যাপ্ত গোলাবারুদ এবং ১৮,০০০ কালাশনিকভ ছিল।
জাভেদ আশরাফ কাজী জানিয়েছেন, তালেবানের সঙ্গে প্রথম বৈঠকে তারা পাকিস্তানের নিরপেক্ষতা বজায় রাখার অনুরোধ করেছিলেন। তাদের মূল চাহিদা ছিল খাদ্য, জ্বালানি এবং অন্যান্য সরবরাহ, অস্ত্র বা অর্থ নয়। শুরুতে পাকিস্তান আফগান সংঘাতে মোটাদাগে নিরপেক্ষ ছিল এবং আইএসআই মূলত পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছিল। বেনজির ভুট্টোও বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে বলেছেন, তার সরকার আফগানিস্তানে হস্তক্ষেপ করতে চায়নি এবং কোনো গোষ্ঠীকে সমর্থন দেয়নি। ১৯৯৬ সালের সেপ্টেম্বরে ব্রিটেন সফরে তিনি একই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তালেবান তখন কাবুলের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করেছে।
বেনজির ভুট্টো উল্লেখ করেছেন, অতীতে পশ্চিমা দেশগুলো পাকিস্তানের মাধ্যমে আফগানিস্তানে অর্থ ও অস্ত্র পাঠাত। তবে পাকিস্তানের আর্থিক অবস্থার কারণে তারা কোনো গোষ্ঠীকে অর্থ, অস্ত্র বা সহায়তা দিতে সক্ষম ছিল না। এই প্রক্রিয়ার ফলে তালেবান ধীরে ধীরে আফগানিস্তানে প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হয় এবং পরবর্তীতে সামরিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতা অর্জন করে।
সূত্র : বিবিসি বাংলা
জেনারেশন জেড থেকে পরবর্তী প্রজন্মের জন্য ধূমপান নিষিদ্ধ
মালদ্বীপে জেনারেশন জেড এবং পরবর্তী সকল প্রজন্মের জন্য ধূমপান সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করার একটি ঐতিহাসিক আইন কার্যকর করা হয়েছে।
এই বিধিনিষেধ অনুযায়ী, ২০০৭ সালের জানুয়ারি মাসের পর জন্ম নেওয়া এবং জন্ম নেওয়ার পরবর্তী প্রজন্মের সকল নাগরিক তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার থেকে অব্যাহতি পাবেন না।
নিষেধাজ্ঞাটি শুধুমাত্র সিগারেট বা ধূমপান পর্যন্ত সীমাবদ্ধ নয়, বরং সকল ধরনের তামাকজাত দ্রব্যের ওপর প্রযোজ্য।
খুচরা বিক্রেতাদের জন্য আইনটি বিশেষভাবে নির্দেশ দিয়েছে যে, তামাকজাত পণ্য বিক্রি করার আগে ক্রেতার বয়স যাচাই করা বাধ্যতামূলক।
যদি কোনো অপ্রাপ্তবয়স্কের কাছে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি করা হয়, তবে বিক্রেতাকে প্রায় ৩,২০০ ডলারের জরিমানা করা হবে।
এছাড়া, ২১ বছরের নিচে কোনো ব্যক্তি তামাক সংশ্লিষ্ট বাণিজ্যিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারবে না।
নতুন আইনে ধূমপান সংক্রান্ত সব ধরনের বিজ্ঞাপন, প্রচারণা ও পৃষ্ঠপোষকতাও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।আইনের আওতায় সমস্ত বয়সের নাগরিকের জন্য ই-সিগারেট এবং ভ্যাপও সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করা হয়েছে।
১ নভেম্বর থেকে এই আইন প্রথমে জেনারেশন জেড প্রজন্মের ওপর প্রযোজ্য হবে। পর্যটনে প্রসিদ্ধ এই দ্বীপশহরেও আইনটি পর্যটকদের জন্য প্রযোজ্য, অর্থাৎ বিদেশি ভ্রমণকারীরাও এই বিধিনিষেধের আওতায় পড়বেন।
দেশটির ফার্স্ট লেডি সাজিদা মোহাম্মদ এই পদক্ষেপকে “ঐতিহাসিক” হিসেবে অভিহিত করেছেন।তিনি বলেন, এটি একটি সাহসী ও তথ্যভিত্তিক উদ্যোগ, যা মাদকচক্র ভাঙতে সাহায্য করবে, রোগ প্রতিরোধে অবদান রাখবে এবং তরুণ প্রজন্মের জন্য সুস্থ ও শক্তিশালী ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করবে।
মালদ্বীপের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, দেশের মধ্যে অসুস্থতা এবং মৃত্যুর একটি বড় কারণ হলো ধূমপান ও পরোক্ষ ধূমপান।
এই কারণেই প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জু গত বছর একটি ব্যাপক ধূমপানবিরোধী কর্মসূচি চালু করেছিলেন।
কর্মসূচির অংশ হিসেবে ই-সিগারেট এবং ভ্যাপের ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়, পাশাপাশি সিগারেটের ওপর আমদানি শুল্ক এবং কর দ্বিগুণ নির্ধারণ করা হয়েছে।
মালদ্বীপের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আশা করছে, এই আইন জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এবং ধূমপানমুক্ত প্রজন্ম গড়তে তরুণদের উৎসাহিত করবে।
জোহরান মামদানির প্রকাশ্যে আরবিতে ভোটের আবেদন
যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে জনবহুল শহর নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে অন্যতম প্রতিশ্রুতিশীল প্রার্থী হিসেবে নিজের অবস্থান দৃঢ় করতে জোহরান মামদানি সম্প্রতি একটি নির্বাচনী ভিডিও প্রকাশ করেছেন।ভিডিওটি মূলত মধ্যপ্রাচ্য থেকে আগত অভিবাসী জনগোষ্ঠীর দৃষ্টি আকর্ষণের উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছে, যেখানে তিনি আরবিতে কথা বলেছেন।
ভিডিওতে মামদানি সরাসরি ভোটারদের কাছে আবেদন জানান এবং বিভিন্ন জাতিগত সম্প্রদায়ের মানুষদের সঙ্গে সংলাপের মাধ্যমে তাদের বোঝার চেষ্টা করেছেন।
এ সময় তিনি শহরের নাগরিকদের জীবনমান উন্নত করার জন্য একাধিক প্রতিশ্রুতি দেন, যেমন বাসস্থান, পরিবহন ও সামাজিক সেবা সহজ করা। খবরটি হিন্দুস্তান টাইমস প্রকাশ করেছে।
শুক্রবার (১ নভেম্বর) প্রকাশিত ভিডিওতে মামদানি আরবিতে বলেন, “হ্যালো, আমি জোহরান মামদানি, এবং আমি নিউইয়র্ক সিটির পরবর্তী মেয়র হওয়ার জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি।”
ভোটারদের ভোট দেওয়ার আহ্বান জানাতে গিয়ে তিনি হালকাভাবে মন্তব্য করেন, “আমি জানি, আপনারা ভাবছেন, আমি যেন আমার দামেস্ক থেকে আসা কোনো আত্মীয়ের মতো লাগছি, তবে আমার আরবি ভাষার দক্ষতা আরও উন্নত করতে হবে।”
নিজেকে সমাজতান্ত্রিক হিসেবে পরিচয় দেওয়া জোহরান মামদানি মুসলিম ও আরবীয় সম্প্রদায়ের নাগরিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, “নিউইয়র্ক শহর বর্তমানে অত্যন্ত ব্যয়বহুল হয়ে উঠেছে, যার কারণে এখানে বসবাস অনেকটাই কঠিন হয়ে গেছে।”
তিনি আরও প্রতিশ্রুতি দেন, মেয়র হিসেবে তিনি ২০ লাখেরও বেশি মানুষের জন্য ভাড়া নিয়ন্ত্রণ করবেন, শহরের পরিবহন ব্যবস্থাকে দ্রুততর করবেন, এবং বিনামূল্যে বিভিন্ন সামাজিক সেবা চালু করবেন। এছাড়াও, তিনি প্রতিটি পরিবারের জন্য সর্বজনীন শিশুসেবা নিশ্চিত করার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে উল্লেখ করেন।
মামদানি বলেন, তিনি জনগণের ছোট ব্যবসাগুলোর বিকাশ, ভাড়া পরিশোধে সহায়তা এবং নিউইয়র্কে ভবিষ্যত গড়ার সুযোগকে সহজ করতে তার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন।
ভিডিওর শেষ অংশে তিনি সজাগভাবে বলেন, “আমি আপনারই একজন, এবং আমি আপনার জন্যই নিবেদিত।”
৩৪ বছর বয়সী জোহরান মামদানি ভারতীয় বংশোদ্ভূত হলেও তার মাতৃহৃদয় রামা সুয়াজি সিরীয় বংশের।নিউইয়র্কের মেয়র পদে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুওমোর সঙ্গে, যিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এছাড়া, রিপাবলিকান প্রার্থী কার্টিস স্লিওয়ারও এই নির্বাচনে মামদানির প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে রয়েছে।
চ্যাম্পিয়ন ভারতীয় নারী ক্রিকেটারদের পুরস্কারে বাজিমাত
ভারতের নারী ক্রিকেট দল দক্ষিণ আফ্রিকাকে পরাজিত করে ইতিহাস রচনা করেছে, জয় করে প্রথমবারের মতো নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপ। এর আগে দুইবার ফাইনালে উঠলেও ট্রফি ছোঁয়া হয়নি, কিন্তু এবার ভারতীয় মেয়েরা ব্যর্থ হননি এবং বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে।
বিশ্বকাপ জয়ের পাশাপাশি দলের কয়েকজন তারকা ক্রিকেটার যেমন হারমানপ্রীত কৌর ও স্মৃতি মন্ধান উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থ উপার্জন করেছেন। তাদের আয়ের পরিমাণ ভারতের পুরুষ দলের পুরস্কারের থেকেও বেশি। উদাহরণস্বরূপ, ২০২৩ সালের পুরুষদের একদিনের বিশ্বকাপ জয়ের সময় অস্ট্রেলিয়ার খেলোয়াড়রা যা পেয়েছিল, তার চেয়ে এবার ভারতীয় মেয়েদের উপার্জন বেশি।
বিশ্বকাপ জয়ের পুরস্কার হিসেবে ভারতীয় নারী দল পেয়েছে মোট ৩৯ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। এই অর্থ দলের খেলোয়াড় ও সহায়ক স্টাফদের মধ্যে সমানভাবে বিতরণ করা হবে। তুলনামূলকভাবে, ২০২৩ সালে রোহিত শর্মার নেতৃত্বে ভারত যখন বিশ্বকাপ জিতেছিল, তখন অস্ট্রেলিয়ার দল পেয়েছিল ৩৫.৫ কোটি টাকা, যা হারমানপ্রীতদের উপার্জনের চেয়ে প্রায় ৪ কোটি কম।
এবারের চ্যাম্পিয়ন দলকে গতবারের মেয়েদের বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন দলের তুলনায় ২৩৯ শতাংশ বেশি অর্থ দেওয়া হয়েছে। রানার্সআপ দলও অতীতের তুলনায় ২৭৩ শতাংশ বেশি অর্থ পেয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, গতবার চ্যাম্পিয়ন এবং রানার্সআপ দল যথাক্রমে ১১ কোটি ও ৫ কোটি টাকা পেয়েছিল। এবার সেমিফাইনাল খেলোয়াড় অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড পেয়েছে ৯.৩ কোটি টাকা করে, যা আগেরবারের ২.৫ কোটি টাকা থেকে অনেক বেশি।
২০২৫ সালের নারী বিশ্বকাপের মোট পুরস্কারমূল্য দাঁড়িয়েছে ১২৩ কোটি টাকা, যা ২০২১ সালের ২৯ কোটি টাকার চেয়ে চার গুণ বেশি। এবার আইসিসি পুরুষ এবং নারী ক্রিকেটারদের জন্য সমান পুরস্কারমূল্য ঘোষণা করেছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, গতবারের পুরুষদের বিশ্বকাপের জন্য দেওয়া অর্থ ৮৪ কোটি টাকা, যা এবার নারী ক্রিকেটারদের থেকে কম।
গ্রুপ পর্বে অংশ নেওয়া প্রতিটি দল পেয়েছে ২ কোটি টাকা করে। পঞ্চম ও ষষ্ঠ স্থানে শেষ করা দল পেয়েছে ৫.৮ কোটি টাকা, আর সপ্তম ও অষ্টম স্থানের দল পেয়েছে ২.৩ কোটি টাকা করে। পাশাপাশি গ্রুপ পর্বের প্রতিটি জয়িত ম্যাচের জন্য ২৮ লাখ টাকা প্রদান করা হয়েছে।
২০২৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের পর ভারতীয় বোর্ড রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলিসহ পুরুষ দলের জন্য ১২৫ কোটি টাকা ঘোষণা করেছিল। এবার নারী দলের বিশ্বকাপ জয় উপলক্ষে বোর্ডের সচিব দেবজিৎ শইকীয়া ঘোষণা করেছেন, দলকে ৫১ কোটি টাকা প্রদান করা হবে। এখান থেকেও জয়ী দলের খেলোয়াড়রা অর্থ পাবেন, যার মধ্যে হারমানপ্রীত কৌর ও স্মৃতি মন্ধান উল্লেখযোগ্যভাবে উপকৃত হবেন।
-রাফসান
পাঠকের মতামত:
- ডিএসই-সিএসইতে সকালের লেনদেনের মধ্যে সূচক বৃদ্ধি
 - আজকের নামাজের সময়সূচি: ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার জন্য
 - বিএনপির ৬৩ খালি আসনে যারা পেতে পারেন প্রাধান্য
 - নির্বাচনি অনিয়মের ক্ষেত্রে ইসিকে ব্যাপক ক্ষমতা প্রদান
 - বিনিয়োগকারীদের জন্য ডেব্ট মার্কেটের বর্তমান অবস্থা প্রকাশ
 - মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক বন্ডের নতুন কুপন সময়সীমা ঘোষণা
 - মনোনয়ন ‘অন হোল্ড’; তালিকা থেকে বাদ পড়া নিয়ে মুখ খুললেন ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা
 - ভোটার প্রতি নির্বাচন খরচ যত টাকায় সীমাবদ্ধ
 - প্রতীক বদল বন্ধ: বিএনপি-র দাবির বিপক্ষে সরকারের অধ্যাদেশ
 - ডিভিডেন্ড ঘোষণা করল সানলাইফ ইনস্যুরেন্স
 - খামেনি যুক্তরাষ্ট্রকে দিলেন কড়া শর্তাবলী
 - রিয়াল বনাম লিভারপুল: চ্যাম্পিয়নস লিগে হাইভোল্টেজ লড়াই আজ যখন
 - আজ মঙ্গলবার ঢাকার কোথায় দোকানপাট ও মার্কেট বন্ধ থাকবে
 - "সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজের স্থান হবে না বিএনপিতে"
 - সর্দি-কাশি ও গলা ব্যথা কমানোর প্রাকৃতিক উপায়
 - নির্বাচিত সরকারের অভাবে ব্যবসা-বাণিজ্যে অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত
 - ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার আবহাওয়ার আপডেট
 - মনোনয়নের রাতে বিএনপির চার নেতা বহিষ্কার
 - ২৩৭ আসন নয়, এবার কেন্দ্রীয় সমন্বয়- এনসিপির নির্বাচনী কৌশল
 - গ্রিন সিগন্যাল কী পেল মান্না, নুর, পার্থসহ ১২ জোটনেতা
 - রুহুল কবির রিজভীর নাম নেই বিএনপির ২৩৭ প্রার্থীর প্রাথমিক তালিকায়
 - নতুন ব্যবসা শুরু করতে চান? সফল উদ্যোক্তা হওয়ার পথে ৫টি কার্যকর পদক্ষেপ
 - ০৪ নভেম্বর বাংলাদেশের প্রধান অঞ্চলের নামাজের সময়সূচি
 - বোনের কোরআন পাঠে হার মানল দম্ভ; হজরত ওমর (রা.) এর ইসলাম গ্রহণের বিস্তারিত ঘটনা
 - সুদানের সংঘাতে ইসরায়েল ও আরব আমিরাতের গভীর সম্পৃক্ততা: বিশ্লেষকের বিস্ফোরক দাবি
 - বিএনপির প্রার্থীর তালিকায় নেই রুমিন ফারহানা; নেত্রীকে নিয়ে জল্পনা
 - ঠোঁট কোমল ও ফাটামুক্ত রাখতে আজ থেকেই শুরু করুন ৪টি সহজ যত্ন
 - বিএনপির শীর্ষ নেতারা কে কোন আসনে লড়ছেন?
 - ২ শতাধিক আসনে বিএনপির প্রার্থী: দেখে নিন জাতীয় নির্বাচনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীর পুরো তালিকা
 - বিএনপির প্রার্থী তালিকায় বাবর
 - ৪ ডিগ্রিতে নামবে পারদ: আসছে হাড় কাঁপানো তীব্র শীত
 - আসন্ন নির্বাচনে তারেক রহমানের আসন ঘোষণা করল বিএনপি
 - খালেদা জিয়ার আসন ঘোষণা করলেন মির্জা ফখরুল
 - ২৩৭ আসনে প্রার্থীর নাম চূড়ান্ত করল বিএনপি
 - সুদানে রক্তপাত বন্ধে মুসলিম বিশ্বের প্রতি তুরস্কের এরদোয়ানের জরুরি আহ্বান
 - ‘দেশ সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, গণতন্ত্রের পথ নির্বাচনে’-সিইসি
 - রাশিয়ার সহযোগিতায় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সক্ষমতা বাড়াচ্ছে ইরান
 - হালকা গ্যাস্ট্রিকও হতে পারে মারাত্মক ক্যানসারের ইঙ্গিত: প্রাথমিক উপসর্গ চিনুন ও সতর্ক হন
 - বাণিজ্য ঘাটতি মোকাবিলায় নতুন উদ্যোগ: প্রতি টন ৩০২ ডলারে মার্কিন গম
 - ডিএসই ৩০ শেয়ার সূচক: আজ শেয়ারবাজারে ওঠাপড়ার বিশ্লেষণ
 - যে শেয়ারের লেনদেন রেকর্ড ডেটের পর পুনরায় শুরু
 - ০৪ ও ০৫ নভেম্বর লেনদেন স্থগিত যে শেয়ারের
 - নগদ লভ্যাংশ নিয়ে আজকের বড় সিদ্ধান্ত
 - অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বিনামূল্যে অনলাইন কোর্স: দ্রুত আবেদন করুন
 - নতুন পদে পুরোনো বিতর্ক:প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগ পাবে না সংগীত শিক্ষক
 - ডিএসইতে আজ অপ্রত্যাশিত পরিবর্তন, বিস্তারিত জানুন ভেতরে
 - ডিএসইতে আজ অপ্রত্যাশিত পরিবর্তন, বিস্তারিত জানুন ভেতরে
 - নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর বিরুদ্ধে বিএনপি নেতার আদালতে মামলা
 - সংষ্কারের নামে বিরাজনীতিকরণ: বিএনপির বাস্তববাদী অবস্থান ও এন্টি পলিটিক্সের ফাঁদ
 - ০৩ নভেম্বর ডিএসই লেনদেনের সারসংক্ষেপ
 
- ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে একাডেমিক সংলাপ: জ্ঞানচর্চায় উপনিবেশের ছায়া কাটাতে আহ্বান বিশিষ্ট সমাজবিজ্ঞানীর
 - রাজনীতি, নির্বাসন ও নৈতিকতা: শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকার দক্ষিণ এশিয়ার বাস্তবতাকে কোথায় নিচ্ছে
 - ধ্বংসস্তূপ থেকে মহাশক্তি: চীনের পুনর্জন্মের বিস্ময়গাঁথা
 - চঞ্চল চৌধুরীর সঙ্গে আবারও পর্দায় পূজা চেরি
 - IFIC ব্যাংকের Q3 আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ
 - পূবালী ব্যাংকের Q3 আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ
 - ইতিহাসের পাতায় আজ: ৩০ অক্টোবর - বিজয়, বিপ্লব আর বেদনার দিন
 - শেয়ারবাজারে শীর্ষ বিশ শেয়ারের তালিকা প্রকাশ
 - ০৩ নভেম্বর ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ গেইনার তালিকা প্রকাশ
 - ২৮ অক্টোবরের ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ গেইনার তালিকা প্রকাশ
 - ২৯ অক্টোবর ডিএসই লেনদেনের সারসংক্ষেপ
 - আজকের বাজারের সেরা এবং খারাপ পারফরমার: লাভের সম্ভাবনা কোথায়?
 - GSP ফাইন্যান্স এর Q3 আর্থিক ফলাফল প্রকাশ
 - রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স এর Q3 আর্থিক ফলাফল প্রকাশ
 - ১২১তম ১০০ টাকা প্রাইজবন্ড ড্র, প্রথম পুরস্কার ৬ লাখ টাকা
 
								
                          







