হারুন-অর-রশিদের লাশ উদ্ধার

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ০৪ ১৫:৫০:২৭
হারুন-অর-রশিদের লাশ উদ্ধার

চট্টগ্রামের চট্টগ্রাম ক্লাবের একটি কক্ষ থেকে সাবেক সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) হারুন-অর-রশিদের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার সকাল ১১টার দিকে নগরীর কাজির দেউড়ির মোড় সংলগ্ন ঐ ক্লাবের ৩০৮ নম্বর কক্ষে তার মৃতদেহ পাওয়া যায়। চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের দক্ষিণ বিভাগের উপকমিশনার মো. আলমগীর হোসেন জানান, গত রোববার বিকেলে হারুন-অর-রশিদ ক্লাবে প্রবেশ করেন। কিন্তু সোমবার সকালে ক্লাব কর্তৃপক্ষ তার কোনো সাড়া-শব্দ না পেয়ে পুলিশকে অবহিত করে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দরজা ভেঙে তার মৃতদেহ উদ্ধার করে এবং তা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়।

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের ধারণা হারুন-অর-রশিদের মৃত্যু হৃদরোগের কারণে হয়েছে; তবে মৃত্যুর সঠিক কারণ ময়নাতদন্তের পরই নিশ্চিত হবে।

হারুন-অর-রশিদ বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর ২৪তম দীর্ঘমেয়াদি কোর্সের প্রশিক্ষণার্থী ছিলেন। ১৯৭০ সালের ৬ সেপ্টেম্বর পদাতিক কোরে কমিশন লাভের পর তিনি ইঞ্জিনিয়ার কোরে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলেও কোম্পানি কমান্ডারের পরামর্শে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে যোগ দেন। মুক্তিযুদ্ধের পর তার প্রথম পোস্টিং কুমিল্লার চতুর্থ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে (ইবিআর) হয়েছিল।

তিনি জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে জর্জিয়ায় বাংলাদেশের বাহিনীর কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সেনাবাহিনীতে তার একাডেমিক মনোভাব এবং প্রশিক্ষক হিসেবে অবদান বিশেষভাবে স্বীকৃত ছিল। আর্মি স্টাফ কলেজ ও পদাতিক ও কৌশল স্কুলে শিক্ষকতার মাধ্যমে তিনি নতুন প্রজন্মের অফিসারদের গঠন করেছিলেন।

২০০০ সালের ২৪ ডিসেম্বর সেনাবাহিনীর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার সময় পার্বত্য চট্টগ্রামে বিদেশি সার্ভেয়ার অপহরণের জটিল পরিস্থিতি মোকাবেলায় সেনাপ্রধান ছিলেন তিনি। সেনাবাহিনী থেকে অবসর গ্রহণের পর তিনি সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং পরে ডেসটিনি গ্রুপের সভাপতি পদেও অধিষ্ঠিত হন। ডেসটিনি গ্রুপের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক জালিয়াতির অভিযোগে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি হয়েছিল, কিন্তু অসুস্থতা ও বয়সের কারণে তিনি জামিনে মুক্তি পান।

ডেসটিনি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আমিন বলেন, ‘আজ সকালে লাশ উদ্ধার সংক্রান্ত খবর পেয়ে আমরা গভীর শোকাহত।’

সেনাপ্রধান থাকাকালীন তিনি আর্মি গলফ ক্লাবের প্রথম সভাপতি ছিলেন এবং ২০১৫ সালে এক আলোচনায় পাকিস্তানকে বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য একটি গুরুতর হুমকি হিসেবে উল্লেখ করেন।

সাবেক এই সেনাপ্রধানের মৃত্যুতে সেনাবাহিনী, সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম, মুক্তিযোদ্ধা সম্প্রদায়সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক মহল গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এবং তাকে স্মরণ করেছেন দেশ ও সেনাবাহিনীর জন্য অসামান্য অবদানের জন্য।

-রাফসান

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ