‘জুলাই অভ্যুত্থান’ ডকুমেন্টারি: ইতিহাস সংরক্ষণে সুপ্রিম কোর্টের বিরল উদ্যোগ

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ৩১ ০৯:৩২:৫৫
‘জুলাই অভ্যুত্থান’ ডকুমেন্টারি: ইতিহাস সংরক্ষণে সুপ্রিম কোর্টের বিরল উদ্যোগ
ছবিঃ সংগৃহীত

জুলাই গণঅভ্যুত্থানকালে রাজধানীর হেয়ার রোডে প্রধান বিচারপতির সরকারি বাসভবনে সংঘটিত হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে নির্মিত একটি তথ্যচিত্র স্মৃতি সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর’-এ পাঠিয়েছে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। এ তথ্যচিত্রটি ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণের প্রামাণ্য দলিল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

গতকাল বুধবার (৩০ জুলাই) সুপ্রিম কোর্টের গণসংযোগ কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঐ সময় দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রায় ছাত্রসমাজ ও সাধারণ জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে এক ঐতিহাসিক গণআন্দোলনের সূচনা হয়, যা কেবল রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়, বরং জনগণের ন্যায়বিচার, জবাবদিহি ও গঠনমূলক রাষ্ট্রচেতনার বহিঃপ্রকাশ ছিল।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, উত্তাল সেই মুহূর্তে রাজধানীর একাধিক স্পর্শকাতর এলাকায় আন্দোলনের ঢেউ ছড়িয়ে পড়ে এবং বিচারব্যবস্থার কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে বিবেচিত প্রধান বিচারপতির সরকারি বাসভবনও উত্তেজনার বাইরে ছিল না। সেই সময় বাসভবনের কিছু অংশে অনাকাঙ্ক্ষিত ভাঙচুর ও ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটে।

এই প্রেক্ষাপটে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন একটি তথ্যনির্ভর ভিডিও ডকুমেন্টারি তৈরি করে, যাতে সেই দিনের বাস্তবতা, জনগণের উত্তাল অনুভূতি ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট দলিলবদ্ধভাবে তুলে ধরা হয়েছে। তথ্যচিত্রটি শুধুমাত্র একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে নির্মিত নয়, বরং সময়ের আবেগ, রাজনৈতিক বাস্তবতা ও নাগরিক প্রতিক্রিয়ার ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে বিবেচিত হবে বলেও জানানো হয়।

সুপ্রিম কোর্টের বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ওই দিনকার অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাকে বিচ্ছিন্নভাবে না দেখে বরং জনগণের দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত অসন্তোষ, প্রত্যাশা এবং রাষ্ট্রব্যবস্থায় পরিবর্তনের আহ্বানের প্রতিফলন হিসেবে বোঝা উচিত।

সুপ্রিম কোর্ট আশা প্রকাশ করেছে, তথ্যচিত্রটি যথাযথ গুরুত্বসহকারে সংরক্ষণ ও প্রদর্শনের মাধ্যমে নাগরিকদের ইতিহাস সচেতনতা বৃদ্ধি এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ জাগ্রত করতে 'জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর' কার্যকর ভূমিকা পালন করবে। এটি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে ঐ সময়ের বাস্তবতা তুলে ধরার পাশাপাশি জাতীয় স্মৃতি-ভাণ্ডারে গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন হিসেবেও কাজ করবে।

-রফিক


বিশ্ব পর্যটন দিবসে ভ্রমণ মেলা, থাকছে ছাড় ও র‍্যাফেল ড্র

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৫ ১৩:০৮:০৪
বিশ্ব পর্যটন দিবসে ভ্রমণ মেলা, থাকছে ছাড় ও র‍্যাফেল ড্র
ছবি: সংগৃহীত

আসন্ন বিশ্ব পর্যটন দিবস উপলক্ষে ঢাকায় আয়োজন করা হচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ ভ্রমণ ও পর্যটন প্রদর্শনী ১২তম এশিয়ান ট্যুরিজম ফেয়ার (এটিএফ)। ভ্রমণপ্রেমীদের কাছে পর্যটনকে আরও জনপ্রিয় করে তোলা, পর্যটন শিল্পকে এগিয়ে নেওয়া এবং দেশি-বিদেশি ভ্রমণ উদ্যোক্তাদের এক মঞ্চে আনার লক্ষ্যে এই আয়োজন আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হবে রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায়। তিন দিনব্যাপী এ মেলা চলবে ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এবং প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

আয়োজক ও সহযোগী সংস্থাগুলো

সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান আয়োজক পর্যটন বিচিত্রা। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মেলার আয়োজনকে সফল করতে সহযোগিতায় রয়েছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড এবং ট্যুরিস্ট পুলিশ বাংলাদেশ। সরকারি সহযোগিতা ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সমন্বিত উদ্যোগে এটি হয়ে উঠবে একটি পূর্ণাঙ্গ আঞ্চলিক পর্যটন উৎসব।

মেলায় কী থাকছে

পর্যটন বিচিত্রার সম্পাদক ও এশিয়ান ট্যুরিজম ফেয়ারের চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন হেলাল সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “দেশি-বিদেশি পর্যটন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানগুলো অংশ নিচ্ছে এই মেলায়। দর্শনার্থীদের জন্য থাকছে নানা রকম ডিসকাউন্ট অফার, বিশেষ প্যাকেজ ডিল, আকর্ষণীয় র‍্যাফেল ড্র, এবং পর্যটন শিল্প সংশ্লিষ্ট নতুন সুযোগ-সুবিধার তথ্য।”

মেলায় বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে থাকছে—

বিজনেস-টু-বিজনেস (B2B) সেশন: যেখানে দেশি ও বিদেশি পর্যটন উদ্যোক্তা এবং ট্রাভেল এজেন্সিগুলো পারস্পরিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারবেন।

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান: দেশের ঐতিহ্য, লোকসংস্কৃতি ও বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতির পরিচয় তুলে ধরা হবে।

আঞ্চলিক পর্যটন গন্তব্যের প্রচার: ভ্রমণপিপাসুদের জন্য দেশি-বিদেশি ভ্রমণ প্যাকেজ ও গন্তব্য সম্পর্কিত তথ্য সহজলভ্য করা হবে।

বিশেষ ছাড়: শীত মৌসুমের ভ্রমণ পরিকল্পনার জন্য হোটেল, এয়ারলাইন্স, ট্রাভেল এজেন্সি এবং ট্যুর অপারেটররা বিশেষ অফার দেবে।

প্রবেশ ও পুরস্কার ব্যবস্থা

মেলায় প্রবেশমূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০ টাকা। তবে আগ্রহীরা যদি অনলাইনে নিবন্ধন করেন, তবে প্রবেশ সম্পূর্ণ বিনামূল্যে। প্রতিটি প্রবেশ কুপনের বিপরীতে দর্শনার্থীরা অংশ নিতে পারবেন আকর্ষণীয় র‍্যাফেল ড্র–তে, যেখানে থাকবে আন্তর্জাতিক ও দেশীয় এয়ারলাইন্সের টিকিট, ভ্রমণ ভাউচার, এবং অন্যান্য উপহার।

এশিয়ান ট্যুরিজম ফেয়ারের চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন হেলাল বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি পর্যটন কেবল অর্থনীতির চালিকাশক্তি নয়, এটি আমাদের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও জাতীয় পরিচয়ের গুরুত্বপূর্ণ বাহক। এই মেলার মাধ্যমে আমরা শুধু নতুন ভ্রমণের সুযোগ তৈরি করছি না; বরং আমরা চাই টেকসই পর্যটনশিল্প গড়ে তুলতে, যা আগামী প্রজন্মের জন্য অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক দিক থেকে সমানভাবে সমৃদ্ধ হবে।”

-রফিক


সংস্কার কমিশনের ৭০ শতাংশ সুপারিশ ডিসেম্বরের মধ্যে বাস্তবায়ন করা সম্ভব: আসিফ নজরুল

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৫ ১১:৫৬:৩৩
সংস্কার কমিশনের ৭০ শতাংশ সুপারিশ ডিসেম্বরের মধ্যে বাস্তবায়ন করা সম্ভব: আসিফ নজরুল
ছবিঃ বি এস এস

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অস্থায়ী সরকার দলগতভাবে কাজ করছে এবং ইতিমধ্যেই প্রায় অর্ধেক সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন করা হয়েছে।

রবিবার রাজধানীর ফোরেন সার্ভিস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংহতি কমিশনের বৈঠকে তিনি জানান, “ছয়টি সংস্কার কমিশনের তৎক্ষণাৎ বাস্তবায়নযোগ্য প্রস্তাবের মধ্যে প্রায় ৭০ শতাংশ কাজ চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে সম্পন্ন করা সম্ভব।”

বৈঠকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি অংশ নেন এবং ‘জুলাই জাতীয় চাটার ২০২৫’ বাস্তবায়নের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন। ড. আসিফ বলেন, “আমরা প্রথমে সেই প্রস্তাবগুলো বাছাই করেছি যা তৎক্ষণাৎ বাস্তবায়নযোগ্য, এবং তার প্রায় অর্ধেক ইতিমধ্যেই কার্যকর করা হয়েছে।”

সংবিধান সংশোধনের প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, “সংবিধানকে আদেশ বা নির্বাহী সিদ্ধান্তের মাধ্যমে পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। তবে সংসদীয় স্থায়ী কমিটি কে নেতৃত্ব দেবে—এর মতো কিছু বিষয় সহজেই প্রসিডিউর রুলস পরিবর্তনের মাধ্যমে সমাধান করা যেতে পারে।”

তিনি আরও বলেন, “কিছু প্রস্তাব পুনরাবৃত্তিমূলক বা রুটিন কাজের মতো, যেমন দুর্নীতি বিরোধী কৌশলপত্র প্রস্তুতি। অনেক সংস্কার রুটিন কার্যাবলী; কিছু নির্বাহী আদেশ বা অর্ডিন্যান্সের মাধ্যমে করা যায়, আর কিছু সংবিধানগত বিষয় যা বিস্তৃত সংহতির দাবি করে।”

নির্বাচনের বিষয়ে ড. আসিফ জানান, সরকার আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার প্রতিশ্রুতিতে অটল। তিনি বলেন, “একবার নির্বাচন সময়সূচি ঘোষণা হলে কোনো আইনগত সংশোধনী প্রক্রিয়ায় প্রভাব ফেলতে পারে। তাই সমস্ত প্রয়োজনীয় আইনগত সংস্কার ৩০ নভেম্বরের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে।”

ড. আসিফ আশা প্রকাশ করেন, “আপনাদের মত শুনে খুব আশাবাদী হলাম। সবাই চায় সংহতির ভিত্তিতে ভালো সমাধান। যদি আমাদের লক্ষ্য থাকে গণআন্দোলনের ঐক্য রক্ষা, ফ্যাসিবাদ প্রতিহত করা এবং দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, তাহলে সমাধান খুঁজে পাওয়া সহজ হবে।”

তিনি ঐক্য বজায় রাখার গুরুত্বকেও উল্লেখ করেন, “সর্বোপরি, উদ্দেশ্যই মূল। যদি উদ্দেশ্যে আমরা একসাথে থাকি, সামনের পথ স্পষ্ট হবে।”

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংহতি কমিশনের উপ-সভাপতি প্রফেসর আলী রিয়াজ, বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ, জামায়েতে ইসলামের সহ-সাধারণ সম্পাদক হামিদুর রহমান আজাদ এবং ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টির সাধারণ সম্পাদক আখতার হোসেন। সভার সঞ্চালক ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার, যিনি জাতীয় সংহতি চাটার প্রণয়ন প্রক্রিয়ায় যুক্ত ছিলেন।

-সুত্রঃ বি এস এস


১৩তম জাতীয় নির্বাচনের আগে ইসি’র নতুন সীমানা, ভোটারদের উদ্বেগ বহাল

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৫ ১০:৫১:২৭
১৩তম জাতীয় নির্বাচনের আগে ইসি’র নতুন সীমানা, ভোটারদের উদ্বেগ বহাল
ছবিঃ সত্য নিউজ

১৩তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে অবশেষে দেশের ৩০০টি সংসদীয় আসনের নতুন সীমানা চূড়ান্ত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গত ৪ সেপ্টেম্বর কমিশন আনুষ্ঠানিক গেজেট প্রকাশ করে। এবার মোট ১৬ জেলার ৪৬টি আসনে পরিবর্তন আনা হয়েছে।

নতুন সীমানায় গাজীপুর জেলার আসন সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ছয়টি, আগে ছিল পাঁচটি। অন্যদিকে বাগেরহাট জেলার আসন সংখ্যা কমে হয়েছে তিনটি, আগে ছিল চারটি। এ ছাড়া ঢাকা, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, নোয়াখালীসহ বেশ কিছু জেলার বিভিন্ন আসনের সীমারেখায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হয়েছে।

তবে যে প্রতিশ্রুতি ছিল আসন মানচিত্রকে আরও “পরিষ্কার” করার, তা পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়নি। চূড়ান্ত মানচিত্রেও অন্তত ২২টি উপজেলা একাধিক আসনের মধ্যে বিভক্ত রয়ে গেছে। এর মানে, এসব উপজেলার মানুষকে ভোট দিতে হবে ভিন্ন ভিন্ন আসনে। নতুন করে বিভক্ত হয়েছে ফরিদপুরের ভাঙা, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর এবং নোয়াখালী সদর উপজেলা। আবার পূর্বে বিভক্ত চারটি উপজেলা—পাবনার বেড়া, সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ সদর এবং চট্টগ্রামের বোয়ালখালী—এখন একীভূত হয়ে গেছে একটি আসনে।

বিভক্ত থাকা ২২টি উপজেলার মধ্যে রয়েছে—ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল, সিরাজগঞ্জ সদর, চুয়াডাঙ্গা সদর, ঝিনাইদহ সদর, যশোর সদর, মাগুরা সদর, নড়াইল সদর, খুলনার দিঘলিয়া, মানিকগঞ্জ সদর, ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জ ও সাভার, গাজীপুর সদর, নরসিংদী সদর, গোপালগঞ্জের কাশিয়ানি, মাদারীপুর সদর, শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর, নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি ও নোয়াখালী সদর, লক্ষ্মীপুর সদর এবং চট্টগ্রামের সাতকানিয়া।

ইসি জানিয়েছে, পুনঃসীমানা নির্ধারণের সময় তারা তিনটি বিষয় বিবেচনা করেছে—প্রশাসনিক সুবিধা, এলাকাকে যতটা সম্ভব কম্প্যাক্ট রাখা এবং ভোটারের সংখ্যা সমান করার চেষ্টা। সর্বশেষ ২০২২ সালের জনশুমারি অনুযায়ী দেশে প্রায় ১৭ কোটি মানুষ এবং প্রায় ১২ কোটি ৬০ লাখ ভোটার রয়েছে। গড় হিসেবে প্রতিটি আসনে ভোটারের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ২০ হাজারের বেশি। ঢাকা ও চট্টগ্রাম শহরের আসনে ভোটারের গড় সংখ্যা আরও কিছুটা বেশি।

এবারের পুনঃসীমানা প্রক্রিয়ায় জনগণের অংশগ্রহণ ছিল উল্লেখযোগ্য। ইসি যখন খসড়া মানচিত্র প্রকাশ করে, তখন ৮৪টি আসন নিয়ে ১,৮৯৩টি অভিযোগ, আপত্তি ও প্রস্তাবনা জমা পড়ে। এসব বিষয়ে শুনানি হয় ২৪ থেকে ২৭ আগস্ট চারদিনব্যাপী। শুনানি শেষে কিছু পরিবর্তন এনে কমিশন চূড়ান্ত মানচিত্র ঘোষণা করে।

তবে দেশের বিভিন্ন এলাকায় এই নতুন মানচিত্র নিয়ে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ হয়েছে। বিশেষ করে বাগেরহাট, ফরিদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মানুষ সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করে নতুন সীমানা বাতিলের দাবি জানিয়েছেন। তাদের অভিযোগ, সীমানা পুনঃনির্ধারণে জনসংখ্যা ও প্রশাসনিক সুবিধার কথা যথাযথভাবে বিবেচনা করা হয়নি।

এর আগে অতীতের প্রতিটি বড় নির্বাচনের আগে আসন পুনর্নির্ধারণ হয়েছে। কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন কমিশন ১২তম নির্বাচনের আগে ১০টি আসনের সীমানা পরিবর্তন করে। কেএম নূরুল হুদা কমিশন পরিবর্তন করেছিল ২৫টি আসনের সীমানা, আর ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে কাজী রকিবউদ্দিন কমিশন পরিবর্তন করেছিল ৮৭টি আসন। ২০০৮ সালে এটিএম শামসুল হুদা কমিশন একযোগে ১৩৩টি আসনের সীমারেখা নতুন করে এঁকে দেয়।

আইন অনুযায়ী, নির্বাচন কমিশনের এ ধরনের সিদ্ধান্ত আদালত বা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষ চ্যালেঞ্জ করতে পারে না। ফলে এখন আর কোনো আইনি বাধা নেই—নতুন সীমানা অনুযায়ীই ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির শুরুতে নির্ধারিত ১৩তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

-হাসানুজ্জামান


জাতীয় ঐকমত্য: বাংলাদেশের জন্য এক ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণ

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৪ ২৩:৪৭:১৪
জাতীয় ঐকমত্য: বাংলাদেশের জন্য এক ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণ

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস রবিবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের চলমান সংলাপে যে বক্তব্য রেখেছেন, তা নিছক একটি রাজনৈতিক বিবৃতি নয়; বরং একটি জাতির জন্য নতুন সামাজিক চুক্তির ঘোষণা। তাঁর কথায় স্পষ্ট প্রতিধ্বনিত হয়েছে ছাত্র-যুবকেন্দ্রিক অভ্যুত্থানের শক্তি, যে শক্তি শুধু একনায়কতন্ত্রকে উৎখাত করেনি, বরং জাতিকে নতুন পথের সামনে দাঁড় করিয়েছে।

ইউনূস বলেছেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মাধ্যমে যে অগ্রগতি এসেছে, তা শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, গোটা বিশ্বের জন্যও এক দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। গণতান্ত্রিক সংকট ও সামাজিক বিভাজনে জর্জরিত এই সময়ে বাংলাদেশ দেখাচ্ছে—সংলাপ, আলোচনা ও আপসের মাধ্যমে কীভাবে রাজনৈতিক ঐক্য গড়ে ওঠে। তাঁর ভাষায়, শুরুতে এই ধারণা টিকবে কি না তা নিয়ে তিনি নিশ্চিত ছিলেন না, কিন্তু দীর্ঘ পথ অতিক্রম করার পর যে দৃশ্যপট দাঁড়িয়েছে, তা অভূতপূর্ব।

নির্বাচনের প্রসঙ্গে ইউনূস ঘোষণা করেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং সেটি হবে "জাতির নবজন্মের মহোৎসব"। এটি কেবল একটি ভোট আয়োজন নয়, বরং একটি জাতির আত্মপ্রকাশ। তাঁর বক্তব্যে ইতিহাসের ধারাবাহিকতা স্পষ্ট—অসংখ্য রক্ত ও ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত এই মুহূর্তকে অর্থবহ করে তুলতে হলে ঐকমত্য ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। তিনি সতর্ক করেছেন, "আমরা অনেক কথা বলতে পারি, কিন্তু দ্বিমত রেখে সমাপ্ত করতে পারব না।"

অধ্যাপক ইউনূস রূপক টেনে বলেন, এখন জাতির হাতে আলাদিনের প্রদীপ এসে গেছে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান সেই শক্তি দিয়েছে। ছোটখাটো চাওয়া-পাওয়া নয়, চাইলে জাতিকে নতুনভাবে গড়া সম্ভব। কিন্তু এই সুযোগ একবারই এসেছে—পুনরায় আসবে না। এখানেই তাঁর দৃষ্টিভঙ্গির মৌলিকত্ব; তিনি বুঝতে পারছেন যে রাজনৈতিক নেতারা যদি এই সুযোগ হাতছাড়া করেন, তবে ইতিহাস তাদের ক্ষমা করবে না।

প্রধান উপদেষ্টা তাঁর বক্তব্যে একটি মৌলিক দিকনির্দেশনা দিয়েছেন—সংস্কারের লক্ষ্য হলো সব পথঘাট বন্ধ করে দেওয়া, যাতে ভবিষ্যতে কোনো স্বৈরাচার পুনরায় মাথাচাড়া দিতে না পারে। এ জন্য কেবল সরকার বা প্রশাসন নয়, বরং সব রাজনৈতিক শক্তিকে একমত হতে হবে। একে তিনি ব্যাখ্যা করেছেন “হাইওয়ে” হিসেবে—পথ ইতিমধ্যেই তৈরি, এখন শুধু সাইনবোর্ড বসানো বাকি।

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় অংশ নিয়েছেন বিএনপি, জামায়াতে ইসলামি, এনসিপি এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতারা। আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল, কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা মতামত দেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (ঐকমত্য গঠন) মনির হায়দার। এই অংশগ্রহণ নিজেই প্রমাণ করে, রাজনৈতিক বৈরিতার মধ্যেও সংলাপের ক্ষেত্র রচিত হচ্ছে।

ইউনূসের বক্তব্যের কেন্দ্রে ছিল একটি বার্তা—এবার ব্যর্থ হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ব্যর্থ হলে তা কেবল একটি নির্বাচন বা একটি সরকারের পরাজয় নয়, বরং একটি জাতির নবজন্মের ব্যর্থতা। বাংলাদেশের ইতিহাসে বহু আন্দোলন হয়েছে, বহু অভ্যুত্থান ঘটেছে, কিন্তু সবসময় তা জাতির দীর্ঘমেয়াদি রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান গঠনে রূপান্তরিত হয়নি। এবার সেই পথ খোলা।

প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য শুধু রাজনৈতিক অঙ্গনেই নয়, সামাজিক মনস্তত্ত্বেও গভীর প্রভাব ফেলবে। এটি নাগরিকদের জন্য আশ্বাস, আবার রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য একধরনের নৈতিক চাপ। ঐকমত্যের এই যাত্রা সফল হলে বাংলাদেশ শুধু নিজেদের জন্য নয়, দক্ষিণ এশিয়ার জন্যও এক উদাহরণ তৈরি করবে। আর ব্যর্থ হলে—অতীতের মতো আবারও বিশৃঙ্খলা ও অস্থিরতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ হতে হবে।

বাংলাদেশ এক নতুন ইতিহাসের সামনে দাঁড়িয়ে। অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের ভাষায়, "এই নির্বাচন শুধু নির্বাচন নয়, এটি হবে জাতির নবজন্ম।" প্রশ্ন এখন একটাই—রাজনৈতিক নেতৃত্ব কি এই নবজন্মকে বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হবে?


মালয়েশিয়ায় প্রবাসী ভোটার নিবন্ধন শুরু বুধবার

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৪ ১৬:৩২:৪০
মালয়েশিয়ায় প্রবাসী ভোটার নিবন্ধন শুরু বুধবার
ছবিঃ সত্য নিউজ

বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন (ইসি) মালয়েশিয়ায় বসবাসরত প্রবাসীদের ভোটার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে এবং জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) প্রদানের প্রক্রিয়া শুরু করতে যাচ্ছে। এর মাধ্যমে প্রবাসী বাংলাদেশিরা আসন্ন ১৩তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সরাসরি অংশগ্রহণের সুযোগ পাবেন।

ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগামী বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) মালয়েশিয়ায় এই কর্মসূচির উদ্বোধন হবে। শনিবার মালয়েশিয়ায় পৌঁছানো নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে এই উদ্যোগের উদ্বোধন করবেন।

নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলামের একান্ত সচিব মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বাসসকে নিশ্চিত করেছেন যে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সম্পন্ন হবে।

ইসি সূত্রে জানা গেছে, প্রবাসী ভোটারদের অন্তর্ভুক্তি বর্তমান সরকারের একটি অগ্রাধিকারমূলক উদ্যোগ, যা বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের নাগরিকদের গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করতে বড় ভূমিকা রাখবে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে প্রবাসীরা শুধু ভোটার তালিকায় যুক্ত হবেন না, বরং ভবিষ্যতে স্মার্ট এনআইডি ব্যবহার করে সরকারি বিভিন্ন সেবায়ও অংশ নিতে পারবেন।

-নাজমুল হোসেন


গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজন রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান: ড. আলী রিয়াজ

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৪ ১৬:২৬:৩০
গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজন রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান: ড. আলী রিয়াজ
ছবিঃ বি এস এস

ন্যাশনাল কনসেনসাস কমিশনের (এনসিসি) সহ-সভাপতি ড. আলী রিয়াজ বলেছেন, দেশে অন্তত তিনটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে, কিন্তু পরাজিত পক্ষ তা কখনোই মেনে নেয়নি। তিনি বলেন, “দেশ অন্তত তিনটি সুষ্ঠু নির্বাচন করেছে, কিন্তু পরাজিতরা তা কোনোভাবেই মেনে নেয়নি।”

রবিবার রাজধানীর গুলশানে এক গোলটেবিল আলোচনায় অংশ নিয়ে ড. রিয়াজ বলেন, দেশে গণতন্ত্রের রূপান্তর ঘটেনি, কারণ এ লক্ষ্যে কোনো শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠেনি। তার মতে, নির্বাচন পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজনীয় হলেও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য তা যথেষ্ট নয়।

আলোচনায় অংশ নিয়ে সিটিজেন্স ফর গুড গভর্ন্যান্স (সুজন)-এর সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, “জনগণের মধ্যে ঐক্য আছে, কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সে ঐক্য বাস্তবায়নের সদিচ্ছা নেই।” তিনি আরও বলেন, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের তাদের নিজ নিজ ক্ষেত্রে মনোনিবেশ করতে হবে।

ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সম্পাদক ড. তাসনিম জারা বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে ব্যর্থ হচ্ছে।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, রাজনৈতিক সংস্কারের বাস্তবায়ন নিয়ে দলগুলোর মধ্যে যে অবিশ্বাস রয়েছে তা দূর করতে আইনগত বাধ্যবাধকতা প্রয়োজন। তিনি বলেন, “দলগুলো শুধু নিজেদের এজেন্ডা নিয়েই কথা বলছে, অথচ এই মুহূর্তে জনগণ জাতীয় ঐকমত্য চায়।”

আলোচনায় বক্তারা জোর দিয়ে বলেন, দেশে গণতান্ত্রিক রূপান্তরের জন্য কেবল নির্বাচন নয়, শক্তিশালী গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও জনগণের আস্থার পরিবেশ তৈরি জরুরি।

-সুত্রঃ বি এস এস


উদ্যোক্তা সৃষ্টির আর্থিক কাঠামো গড়ে তোলার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৪ ১৬:১৭:২৭
উদ্যোক্তা সৃষ্টির আর্থিক কাঠামো গড়ে তোলার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের
ছবিঃ বি এস এস

প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস আজ বলেছেন, দেশের আর্থিক কাঠামো এমনভাবে গড়ে তুলতে হবে যাতে প্রত্যেকে উদ্যোক্তা হওয়ার সুযোগ পায়—শুধু চাকরির প্রত্যাশী হয়ে না থাকে।

রবিবার রাজধানীর মোহাম্মদপুরের খিলজি রোডে পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) নতুন ভবন ‘ভবন-২’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, “মানুষ চাকরি করার জন্য জন্মায়নি, মানুষ জন্মায় উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য। তাই আমাদের আর্থিক ব্যবস্থা এমন হতে হবে যেখানে প্রত্যেকে উদ্যোক্তা হওয়ার সুযোগ পাবে।”

ড. ইউনূস বলেন, আজকের প্রজন্ম বিশেষ করে গ্রামের তরুণ-তরুণীরা অনেক বেশি সচেতন, তথ্যসমৃদ্ধ ও কল্পনাশীল। তাই এমন আর্থিক ও সামাজিক পরিবেশ তৈরি করতে হবে যেখানে তারা নিজেদের উদ্যোগ শুরু করতে পারে—ব্যক্তিগতভাবে বা প্রাতিষ্ঠানিকভাবে।

তিনি আরও বলেন, “আমরা যদি এমন কাঠামো তৈরি করতে পারি যেখানে মানুষ ইচ্ছা করলে নিজের উদ্যোগ শুরু করতে পারে, এমনকি বিনিয়োগকারী হিসেবেও যুক্ত হতে পারে, তবে পরিবর্তন সম্ভব।”

প্রধান উপদেষ্টা বিশ্বাস করেন, এমন পরিবেশে প্রত্যেকে চাইলে সংগঠিতভাবে বা ব্যক্তিগতভাবে উদ্যোক্তা হিসেবে এগিয়ে যেতে পারবে। তারা স্থানীয়ভাবে উদ্যোগ শুরু করতে পারে, বিনিয়োগ সংগ্রহ করতে পারে এবং নিজেদের এলাকায় কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারে।

তিনি বলেন, “আমরা এগিয়ে যেতে চাই। পরীক্ষামূলকভাবে দেখতে চাই কোনটা ভালো, কোনটা খারাপ। ইতোমধ্যেই লাখো উদ্যোক্তা তৈরি হয়েছে, যাদের মধ্যে অনেকে মেয়ে-ছেলেদের নিয়ে দল গঠন করে কাজ করছে। এ অভিজ্ঞতা ব্যবহার করে এ ধারা আরও প্রসারিত করা সম্ভব।”

-সুত্রঃ বি এস এস


ফরিদা পারভীনের মৃত্যুতে ড. ইউনূসের শোক

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৪ ০৯:৩৪:০১
ফরিদা পারভীনের মৃত্যুতে ড. ইউনূসের শোক
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের সংগীতাঙ্গনে গভীর শোক নেমে এসেছে একুশে পদকপ্রাপ্ত কিংবদন্তি লোকসংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীনের মৃত্যুতে। শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাত সোয়া দশটার দিকে ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। তিনি স্বামী ও চার সন্তান রেখে গেছেন।

ফরিদা পারভীনের প্রয়াণে গভীর শোক প্রকাশ করে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস শনিবার রাতে এক বিবৃতিতে বলেন,

“নজরুলগীতি, দেশাত্মবোধক ও আধুনিক গানসহ বিভিন্ন ধারায় তিনি কণ্ঠের স্বাক্ষর রেখেছেন। তবে সর্বাধিক পরিচিতি তিনি পেয়েছেন ‘লালনকন্যা’ হিসেবে। তাঁর কণ্ঠে লালন সাঁইয়ের গান বিগত পাঁচ দশক ধরে মানুষের অন্তরে সাড়া জাগিয়েছে এবং বাঙালি সংস্কৃতিকে বিশ্বমঞ্চে নতুনভাবে উপস্থাপন করেছে।”

শোকবার্তায় ড. ইউনূস আরও উল্লেখ করেন, নানা প্রতিকূলতার মাঝেও ফরিদা পারভীন কখনো সংগীতচর্চা থেকে বিচ্ছিন্ন হননি। সংগীতের প্রতি তাঁর অগাধ ভালোবাসা ও নিবেদন কেবল একজন শিল্পী হিসেবেই নয়, একজন সাংস্কৃতিক যোদ্ধা হিসেবেও তাঁকে অমর করেছে। প্রজন্মের পর প্রজন্ম তাঁর গান থেকে অনুপ্রাণিত হয়েছে, যা ভবিষ্যতেও চলমান থাকবে।

বাংলাদেশের সংগীত জগতে ফরিদা পারভীনের অবদান অনন্য। তিনি শুধু লালন সংগীতের ধারক ও বাহকই ছিলেন না, বরং তা জনপ্রিয় করে তোলার মাধ্যমে আধুনিক শ্রোতাদের মধ্যে লোকসংগীতের নতুন আগ্রহ সৃষ্টি করেছিলেন। তাঁর কণ্ঠের মাধুর্য ও অনুভবজাত পরিবেশনা লালনের দর্শনকে কেবল গ্রামবাংলা নয়, শহুরে প্রজন্মের কাছেও পৌঁছে দেয়।

‘লালনকন্যা’ খ্যাত ফরিদা পারভীনের কণ্ঠে পরিবেশিত “আমি কুলহারা কলঙ্কিনী”, “তোরা সবাই কইতে পারিস”, “মন রে ক্রমে শুদ্ধ কর”সহ অসংখ্য লালনগীতি শ্রোতাদের হৃদয় ছুঁয়ে গেছে এবং আজও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক।

শোকবার্তায় প্রধান উপদেষ্টা ফরিদা পারভীনের ব্যক্তিগত সংগ্রামের কথাও স্মরণ করেন। তিনি বলেন, জীবনের নানা প্রতিকূলতায়ও গান থেকে দূরে যাননি এই শিল্পী। সংগীতের প্রতি তাঁর অবিচল অনুরাগ শুধু শিল্পচর্চার ক্ষেত্রেই নয়, সাংস্কৃতিক আন্দোলনেও প্রজন্মকে অনুপ্রেরণা দিয়েছে।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস ফরিদা পারভীনের মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়ে বলেন, “বাংলাদেশের সংগীত জগতে তাঁর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে তাঁর সৃজনশীলতা ও চিন্তাভাবনা ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য খোরাক যোগাবে।” তিনি মরহুমার আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

-রফিক


কিংবদন্তি ফরিদা পারভীনের শেষনিঃশ্বাস: শোকস্তব্ধ সংগীতাঙ্গন

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৩ ২৩:১১:৩৮
কিংবদন্তি ফরিদা পারভীনের শেষনিঃশ্বাস: শোকস্তব্ধ সংগীতাঙ্গন
দেশবরেণ্য লালনসংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীন

দেশবরেণ্য লালনসংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীন আর নেই। দীর্ঘদিন ধরে নানা জটিল রোগে ভুগে তিনি শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাত ১০টা ১৫ মিনিটে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তাঁর বড় ছেলে ইমাম নিমেরি উপল গণমাধ্যমকে মায়ের মৃত্যুসংবাদ নিশ্চিত করে জানান, “আম্মা রাত ১০টা ১৫ মিনিটে ইন্তেকাল করেছেন। পরিবারের সবার সঙ্গে কথা বলে বিস্তারিত জানানো হবে।” ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশীষ কুমার চক্রবর্তীও তাঁর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

কিডনির রোগ, শ্বাসকষ্টসহ নানা জটিলতায় তিনি দীর্ঘদিন ধরে ভুগছিলেন। নিয়মিত ডায়ালাইসিস চলছিল তাঁর। কিন্তু গত ৫ জুলাই ডায়ালাইসিস চলাকালে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর থেকে তাঁর অবস্থার উন্নতি হয়নি।

ফরিদা পারভীনের সঙ্গীতযাত্রা শুরু হয় ১৯৬৮ সালে রাজশাহী বেতারে নজরুলসংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে। ১৯৭৩ সালে দেশাত্মবোধক গান গেয়ে তিনি জাতীয়ভাবে পরিচিতি পান। তবে তাঁর প্রকৃত পরিচয় লালনসংগীতশিল্পী হিসেবে। এই ধারার গানকে তিনি বিশ্বমঞ্চে পৌঁছে দিয়েছেন। সংগীতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৮৭ সালে তিনি একুশে পদক লাভ করেন।

এরপর একে একে অর্জন করেছেন বহু আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। ২০০৮ সালে জাপান সরকারের পক্ষ থেকে তিনি ‘ফুকুওয়াকা এশিয়ান কালচার’ পুরস্কার পান। চলচ্চিত্রে গাওয়া গানের জন্য ১৯৯৩ সালে তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন।

বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে ফরিদা পারভীনকে বলা হয় ‘লালনসংগীতের রাণী’। তাঁর কণ্ঠের মায়াবী ছোঁয়ায় লালনের দর্শন ও সঙ্গীত পৌঁছে গিয়েছিল ঘরে ঘরে, শহর থেকে গ্রাম, এমনকি আন্তর্জাতিক পরিসরেও। তাঁর মৃত্যুতে দেশের সঙ্গীতাঙ্গনে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

পাঠকের মতামত: