“ক্ষমতা নয়, জনগণের অধিকার আমাদের সংগ্রামের লক্ষ্য”—তারেক

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ৩১ ০৮:৫৭:২৪
“ক্ষমতা নয়, জনগণের অধিকার আমাদের সংগ্রামের লক্ষ্য”—তারেক
ছবি: সংগৃহীত

তারেক রহমানের ভার্চুয়াল ভাষণ: "শাসনের জন্য নয়, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম চলছে"

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, দেশের জনগণ দীর্ঘ সময় ধরে যে আন্দোলন করে এসেছে, তা কোনো দলের হাতে ক্ষমতা তুলে দেওয়ার জন্য নয় বরং নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্যই তারা জীবন দিয়েছেন। তিনি বলেন, জনগণই রাষ্ট্র ও সরকারের প্রকৃত মালিক, তাই রাষ্ট্র চালাতে হলে জনগণের মতামতকে গুরুত্ব দিতে হবে।

বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেলে সাভারের আশুলিয়ার দারুল ইহসান মাদরাসা মাঠে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন। "নারকীয় জুলাই" শীর্ষক এই অনুষ্ঠানে গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ছাত্র, শ্রমিক ও সাধারণ মানুষের পরিবারকে সম্মান জানানো হয়।

তারেক রহমান বলেন, নাগরিকদের রাজনৈতিক ক্ষমতা চর্চার অন্যতম মাধ্যম নির্বাচন। এজন্য বিএনপি বারবার একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছে। স্থানীয় সরকার থেকে জাতীয় সরকার পর্যন্ত জনগণের ভোটের মাধ্যমে প্রতিনিধি নির্বাচনের সুযোগ থাকলে দেশজুড়ে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা তৈরি হবে।

তিনি বলেন, জনগণকে দুর্বল রেখে রাষ্ট্র, সরকার বা সংস্কার—কোনোটিই টেকসই হয় না। নাগরিকদের শক্তিশালী অংশগ্রহণের মাধ্যমেই রাষ্ট্রকে ফ্যাসিবাদমুক্ত রাখা সম্ভব। ভবিষ্যতে যেন কেউ গণতন্ত্র হরণ করতে না পারে, সেই পরিবেশ গড়ে তোলা প্রয়োজন।

তারেক রহমান আরও বলেন, সরকার পরিচালনার দায়িত্ব যাদের হাতে থাকবে, তাদের জনগণের মুখাপেক্ষী হতে হবে। তাহলেই রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন আসবে এবং জনগণের রাজনৈতিক অধিকার নিশ্চিত হবে।

তিনি গত বছরের জুলাই মাসে সংঘটিত আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, শ্রমজীবী মানুষ ওই আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নিলেও তারা ব্যক্তিগতভাবে কোনো সরকারি সুযোগ-সুবিধার প্রত্যাশায় ছিলেন না। তারা রাস্তায় নেমেছিলেন শুধু এই আশঙ্কায় যে, যদি ফ্যাসিবাদী সরকার টিকে যায়, তাহলে দেশের কারও গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা পাবে না।

তারেক রহমান অভিযোগ করেন, ৫ আগস্ট আশুলিয়ায় যে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছিল, সেটিকে ‘গণহত্যা’ আখ্যা দেওয়া উচিত। শ্রমিকদের হত্যা করে লাশ পুড়িয়ে ফেলা হয়েছিল, যা ইতিহাসের এক ভয়াবহ অধ্যায় হয়ে থাকবে।

সভায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, শেখ হাসিনা ভারত থেকে অডিও বার্তার মাধ্যমে দেশে অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা করছেন। তিনি অভিযোগ করেন, ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য শেখ হাসিনা গুলি করে মানুষ হত্যা করেছেন। বহু হতাহতের পরিবার এখনও রাষ্ট্রীয় সহায়তা পায়নি।

সভায় আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু আশফাক, সাধারণ সম্পাদক নিপুণ রায় চৌধুরী, স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান, দেওয়ান মো. সালাউদ্দিন বাবু, আমিনুল হকসহ দলের কেন্দ্রীয় নেতারা।

এ ছাড়া শহীদ পরিবারের সদস্যরা—বাবুল হোসেনের স্ত্রী লাকি আখতার, আরাফাত মুন্সির বাবা স্বপন মুন্সি, বায়েজিদ মুস্তাফিজের স্ত্রী রিনা আখতার, শ্রাবণ গাজীর বাবা আবদুল মান্নান গাজী, বিপ্লবের স্ত্রী খন্দকার সাথী, সাজ্জাদ হোসেন সজলের মা শাহিনা বেগম, রাসেলের ভাই সায়েদুর রহমান বাবু এবং পুলিশের গুলিতে পঙ্গু হওয়া শান্ত—সমাবেশে অংশ নিয়ে তাদের কষ্টের কথা তুলে ধরেন। এতে পুরো সমাবেশস্থল আবেগে ভরে ওঠে।

/আশিক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ