সীমানা পুনর্বিন্যাসে ‘রাজনৈতিক সুবিধা’: শ্যামনগরে বিএনপির বিক্ষোভ

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ৩১ ০৭:১৮:৩৭
সীমানা পুনর্বিন্যাসে ‘রাজনৈতিক সুবিধা’: শ্যামনগরে বিএনপির বিক্ষোভ
ছবি: সংগৃহীত

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় নির্বাচন কমিশনের প্রস্তাবিত সংসদীয় সীমানা পুনর্বিন্যাসের খসড়া নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বুধবার (৩০ জুলাই) রাতে উপজেলা সদরে তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মীরা। তারা শ্যামনগর বাজারের প্রধান সড়কে মিছিল করে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হন। সমাবেশে বক্তারা অভিযোগ করেন, সীমানা পরিবর্তনের মাধ্যমে একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলকে সুবিধা দিতে নির্বাচন কমিশন ইচ্ছাকৃতভাবে জনমত উপেক্ষা করছে। এতে ভোটাধিকার খর্ব হবে এবং স্থানীয় জনগণের সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘিত হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তারা।

বক্তারা বলেন, শ্যামনগর বাংলাদেশের বৃহত্তম ও দুর্যোগপ্রবণ উপজেলা। এর ভৌগোলিক বিচ্ছিন্নতা, যোগাযোগ সমস্যাসহ প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য আশাশুনির সঙ্গে মেলেনা। অথচ খসড়ায় শ্যামনগর ও আশাশুনিকে একত্রে একটি সংসদীয় আসনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা অযৌক্তিক ও জনস্বার্থবিরোধী। তারা বলেন, বাস্তবতা বিবেচনায় শ্যামনগরকে আলাদা একটি আসন হিসেবে রাখাই যৌক্তিক। সমাবেশে বক্তব্য দেন সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. মো. মনিরুজ্জামান মনির, উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক সোলায়মান কবির, জেলা আহ্বায়ক কমিটির সদস্য জি.এম. লিয়াকত আলী এবং শ্যামনগর উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি সামিউল মনির। নেতারা অবিলম্বে খসড়া বাতিল করে পূর্বের সীমানা পুনর্বহালের দাবি জানান। অন্যথায় শ্যামনগর নিয়ে পৃথক আসন ঘোষণার দাবিতে আন্দোলন আরও জোরদার করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তারা।

নির্বাচন কমিশনের প্রস্তাবিত খসড়া অনুযায়ী, সাতক্ষীরার চারটি সংসদীয় আসনের মধ্যে সাতক্ষীরা-৩ আসনে কালিগঞ্জ ও দেবহাটা এবং সাতক্ষীরা-৪ আসনে শ্যামনগর ও আশাশুনি উপজেলাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তবে খসড়া প্রকাশের পর থেকেই শ্যামনগরজুড়ে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই এর বিরোধিতা করে মতপ্রকাশ করছেন এবং নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তকে ‘জনমতবিরোধী’ আখ্যা দিচ্ছেন।

স্থানীয়রা বলছেন, শ্যামনগরের ভূপ্রকৃতি, দুর্যোগপ্রবণতা ও দীর্ঘদিনের প্রশাসনিক বাস্তবতা উপেক্ষা করে নতুনভাবে আসন বিন্যাস করা হলে তা শুধু রাজনৈতিকভাবে নয়, সাংবিধানিকভাবেও প্রশ্নবিদ্ধ হবে। জনমতের প্রতি সম্মান দেখিয়ে এবং জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হলে নির্বাচন কমিশনের উচিত হবে খসড়াটি পুনর্বিবেচনা করা এবং স্থানীয় বাস্তবতা অনুযায়ী সীমানা পুনর্নির্ধারণ করা। অন্যথায় এই সীমানা পুনর্বিন্যাস রাজনৈতিক উত্তেজনা ও আইনি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে।

-শরিফুল

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ