বাংলাদেশের সিদ্ধান্তে ভারতের মিনিকেট-সোনামাসুরির চালের দাম বৃদ্ধি

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ৩০ ১৭:৫৬:১৫
বাংলাদেশের সিদ্ধান্তে ভারতের মিনিকেট-সোনামাসুরির চালের দাম বৃদ্ধি
ছবি: সংগৃহীত

আসন্ন মৌসুমে অতিবৃষ্টির আশঙ্কায় আগেভাগেই চাল আমদানির পরিকল্পনা নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় আগামী ৭ আগস্ট প্রায় ৯ লাখ টন চাল আমদানির লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হবে। সরকারের এই ঘোষণার প্রভাব ইতোমধ্যেই পড়তে শুরু করেছে ভারতের বাজারে—বিশেষ করে নন-বাসমতী চালের দামে দেখা যাচ্ছে উল্লেখযোগ্য উত্থান।

ভারতের শীর্ষ অর্থনৈতিক গণমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস জানায়, বাংলাদেশের আমদানির খবরে দেশটিতে স্বর্ণা, মিনিকেট ও সোনামাসুরির মতো জনপ্রিয় চালের দাম গত কয়েক সপ্তাহে ৮ থেকে ১০ শতাংশ বেড়ে গেছে। ভারতের ভিলা গ্রুপের সিইও সুরাজ আগরওয়াল বলেন, বাংলাদেশের সিদ্ধান্তের সরাসরি প্রভাব পড়েছে ভারতের অভ্যন্তরীণ বাজারে। প্রক্রিয়াজাতকারীদের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে প্রতি কেজি স্বর্ণার দাম দাঁড়িয়েছে ৩২ রুপি, মিনিকেট ও সোনামাসুরি বিক্রি হচ্ছে ৪৫ রুপিতে।

ভারতের রাইস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন-এর সভাপতি ভি কৃষ্ণা রাও মনে করেন, বাংলাদেশের আমদানির একটি বড় অংশ ভারত থেকেই রপ্তানি হবে। কারণ ভারত চাল উৎপাদনে শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে এবং তাদের পরিবহন ব্যয় তুলনামূলকভাবে কম। বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, অন্ধ্রপ্রদেশ, বিহার ও ঝাড়খণ্ড থেকে সংগৃহীত মিনিকেট ও সোনামাসুরি চাল বাংলাদেশে পাঠানো হতে পারে।

বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী, এই ৯ লাখ টনের মধ্যে ৪ লাখ টন আমদানি করবে সরকারি সংস্থাগুলো এবং ৫ লাখ টন বেসরকারি খাতকে অনুমতি দেওয়া হবে। দরপত্র আহ্বানের পর আমদানিকারককে ছয় সপ্তাহের মধ্যে চাল সরবরাহ করতে হবে।

এ বছর বাংলাদেশে জুলাই ও আগস্ট মাসে অতিবৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বন্যার ঝুঁকিতে ধান বপনের মৌসুম ব্যাহত হতে পারে, এমন আশঙ্কায় আগেভাগেই আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সাধারণত বাংলাদেশ আগস্টের পর আমদানির সিদ্ধান্ত নিলেও এবার পরিস্থিতি বিবেচনায় সময় এগিয়ে আনা হয়েছে।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশ ১৩ লাখ টন চাল আমদানি করেছে, যা দেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এর আগে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে আমদানি হয়েছিল ৯ দশমিক ৭ লাখ টন।

এছাড়া, চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশ ভারত থেকে ৮ লাখ টন চাল আমদানি করেছে, যা ভারতের মোট ১৪ দশমিক ১৩ মিলিয়ন টন নন-বাসমতী চাল রপ্তানির মধ্যে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ। ২০২১-২২ অর্থবছরে বাংলাদেশ ১৬ দশমিক ২ লাখ টন চাল আমদানি করেছিল, যা সে সময়ের রপ্তানির ১০ শতাংশ।

উল্লেখ্য, চাল উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বে অন্যতম শীর্ষ দেশ। ২০২৫-২৬ বিপণন বছরে দেশের চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৭ দশমিক ৫৫ মিলিয়ন টন।

আশিক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ