এক রাতেই বঙ্গোপসাগরে ৪ ভূমিকম্প!

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) রাতে বঙ্গোপসাগরে দেড় ঘণ্টার ব্যবধানে চারটি ভূমিকম্প রেকর্ড করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (USGS) জানিয়েছে, ভূমিকম্পগুলো অনুভূত হয়েছে আন্দামানের পোর্ট ব্লেয়ারের আশপাশে। প্রথমটি রাত পৌনে ১০টায় এবং সর্বশেষটি রাত সোয়া ১১টার দিকে রেকর্ড করা হয়। প্রতিটি কম্পনের মাত্রাই ছিল ৪ রিখটার স্কেলের বেশি।
সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্পটি ছিল আন্দামানের পোর্ট ব্লেয়ার থেকে প্রায় ২৭৫ কিলোমিটার দূরে, সমুদ্রতলের ১০ কিলোমিটার গভীরে। এর মাত্রা ছিল ৫ রিখটার স্কেল। বাকি কম্পনগুলোর মাত্রা ছিল যথাক্রমে ৫, ৪.৯ ও ৪.৬। এই স্বল্প সময়ের মধ্যে পরপর চারটি ভূমিকম্পের ঘটনায় ওই এলাকায় উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
এছাড়া বুধবার রাশিয়ার সুদূর পূর্বাঞ্চলের কামচাটকা উপদ্বীপে ৮.৮ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। USGS জানায়, ভূমিকম্পটির গভীরতা ছিল মাত্র ১৯.৩ কিলোমিটার, যা ভূ-পৃষ্ঠের খুব কাছাকাছি। এর উৎপত্তি ছিল আভাচা উপসাগরের উপকূল বরাবর, পেট্রোপাভলভস্ক-কামচাটস্কি শহর থেকে প্রায় ১২৬ কিলোমিটার পূর্ব-দক্ষিণ-পূর্বে।
এই ভূমিকম্পেরফলে ৪ মিটার (১৩ ফুট) পর্যন্ত সুনামি সৃষ্টি হয়েছে। রাশিয়া ছাড়াও জাপানে সুনামি আঘাত হেনেছে। এ প্রক্রিয়া এখনও চলছে।
একই সময়, কামচাটকা অঞ্চলের ক্লিউচেভস্কয় আগ্নেয়গিরিতে অস্বাভাবিক সক্রিয়তা দেখা গেছে। ভূমিকম্পের পর আগ্নেয়গিরিটির আশপাশে ৩ কিলোমিটার উচ্চতার ছাই স্তর আকাশে ছড়িয়ে পড়ে। রাশিয়ার বিজ্ঞান একাডেমির আগ্নেয়গিরি ও ভূকম্পবিদ্যা ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুযায়ী, আগ্নেয়গিরিটি বর্তমানে অগ্ন্যুৎপাতের সম্ভাব্য অবস্থায় রয়েছে। এর ফলে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
/আশিক
উত্তর কোরিয়া-রাশিয়া প্রতিরক্ষা চুক্তি, যুক্তরাষ্ট্রের মহড়ায় উত্তেজনা
উত্তর কোরিয়ার ক্ষমতাধর নেতা কিম জং উনের বোন কিম জো ইয়ং যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের আসন্ন যৌথ সামরিক মহড়াকে "অপরিণামদর্শী শক্তি প্রদর্শনী" বলে অভিহিত করেছেন, যা "অপ্রীতিকর ফলাফল" ডেকে আনতে পারে বলে সতর্ক করেছেন। রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম KCNA এ খবরটি প্রকাশ করেছে।
দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও জাপান আগামী সোমবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত দক্ষিণ কোরিয়ার জেজু দ্বীপের আশেপাশে যৌথ সামরিক মহড়া পরিচালনার পরিকল্পনা করেছে। এই মহড়ায় নৌ, বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা কার্যক্রম একত্রিত হবে, যা পারমাণবিক অস্ত্রশস্ত্রধারী উত্তর কোরিয়ার হুমকির বিরুদ্ধে প্রস্তুতি বাড়াবে।
যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রায় ২৮,৫০০ সেনা মোতায়েন করেছে এবং যৌথ সামরিক মহড়ার পাশাপাশি একটি টেবিলটপ এক্সারসাইজও অনুষ্ঠিত হবে। এতে দুই দেশের সামরিক সম্পদকে সমন্বিত করার চেষ্টা করা হবে।
কিম জো ইয়ং এই মহড়াকে “বিপজ্জনক ধারণা” হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। তার বক্তব্যে বলা হয়েছে, “যারা (মিত্র দেশগুলি) এ অঞ্চলে বাস্তব ক্রিয়ায় শক্তি প্রদর্শন করছে, তারা ভুল জায়গায় এটি করছে। এর ফলে তাদের নিজেকেই অপ্রীতিকর ফলাফল ভোগ করতে হবে।”
উত্তর কোরিয়া দীর্ঘদিন ধরে এমন যৌথ সামরিক মহড়ার বিরোধিতা করে আসছে এবং এগুলোকে আক্রমণের মহড়া হিসেবে অভিহিত করেছে। কিম জো ইয়ং-এর এই সতর্কবার্তা তার ভাই কিম জং উনের সাম্প্রতিক অস্ত্র গবেষণা কেন্দ্র পরিদর্শনের পর এসেছে। সেখানে কিম জং উন বলেছেন, উত্তর কোরিয়া "পারমাণবিক ও প্রচলিত সামরিক শক্তি একযোগে এগিয়ে নেওয়ার নীতি অব্যাহত রাখবে"।
২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের ব্যর্থ শীর্ষ সম্মেলনের পর, উত্তর কোরিয়া বারবার ঘোষণা করেছে যে তারা কখনও পারমাণবিক অস্ত্র ছাড়বে না এবং নিজেকে "অপ্রত্যাহারযোগ্য" পারমাণবিক রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করেছে।
কিম জং উন ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষিতে আরও সাহসী হয়েছেন, এবং রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সমর্থন স্থাপন করেছেন। গত বছর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের উত্তর কোরিয়ার সফরের সময় রাশিয়া ও পিয়ংইয়াং পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে।
-হাসানুজ্জামান
গুপ্তচরবৃত্তির আশঙ্কা, নাসা থেকে বহিষ্কার চীনা গবেষকরা
যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা গুপ্তচরবৃত্তির আশঙ্কায় চীনা নাগরিকদের ওপর নতুন বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। বৈধ ভিসা থাকা সত্ত্বেও তারা আর নাসার কোনো স্থাপনা, গবেষণা প্রকল্প কিংবা অভ্যন্তরীণ নেটওয়ার্কে প্রবেশ করতে পারবেন না। ফলে নাসায় ঠিকাদার, গবেষক বা শিক্ষার্থী হিসেবে কাজ করা চীনা নাগরিকদের কার্যক্রম হঠাৎ করেই স্থগিত হয়ে যায়।
ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, ৫ সেপ্টেম্বর থেকে চীনা নাগরিকরা নাসার ডিজিটাল সিস্টেম থেকে লগআউট হয়ে যান এবং তাদেরকে ভার্চুয়াল কিংবা সরাসরি বৈঠকে অংশ নিতে নিষিদ্ধ করা হয়। এরপর নাসার পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয় যে, সংস্থার নিরাপত্তা রক্ষার স্বার্থে চীনা নাগরিকদের সুযোগ-সুবিধা ও নেটওয়ার্ক ব্যবহার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
নাসার প্রেস সচিব বেথানি স্টিভেন্স বলেন, সংস্থার সংবেদনশীল কার্যক্রম সুরক্ষায় এই পদক্ষেপ জরুরি ছিল। তাঁর ভাষায়, শারীরিক এবং সাইবার উভয় ধরনের নিরাপত্তা ঝুঁকি সীমিত করার জন্য নাসা এই অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থা নিয়েছে।
এই সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি খাতে চীনা নাগরিকদের ওপর বাড়তি নজরদারির আরেকটি ধাপ। মার্কিন কর্মকর্তারা দাবি করছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনা কমিউনিস্ট সরকারের সঙ্গে যুক্ত একাধিক গুপ্তচরবৃত্তির ঘটনা ধরা পড়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, চীনের দ্রুত অগ্রসরমান মহাকাশ কর্মসূচি যুক্তরাষ্ট্রকে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে এবং উভয় দেশের প্রতিযোগিতা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
ফক্স বিজনেসের ভারপ্রাপ্ত প্রশাসক শন ডাফি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রকে অবশ্যই ‘দ্বিতীয় মহাকাশ প্রতিযোগিতায়’ নেতৃত্ব দিতে হবে। তিনি সতর্ক করে বলেন, চীনের চন্দ্রাভিযান শান্তিপূর্ণ অনুসন্ধানের আড়ালে সামরিক উদ্দেশ্যে পরিচালিত হচ্ছে। একই ধরনের আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারাও। স্পেস ফোর্সের প্রধান জেনারেল বি. চান্স সাল্টজম্যান সম্প্রতি বলেছেন, চীনের মহাকাশ কর্মসূচি সরাসরি তাদের সামরিক কৌশলের সঙ্গে সম্পর্কিত।
এদিকে চীনও মহাকাশ কর্মসূচি এগিয়ে নিচ্ছে দ্রুতগতিতে। আগস্টে দেশটি সফলভাবে লং মার্চ-১০ চন্দ্র রকেটের পরীক্ষা চালিয়েছে এবং দশকের শেষ নাগাদ নভোচারীদের চাঁদে পাঠানোর পরিকল্পনা করছে। ফলে নাসার সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্র-চীন মহাকাশ প্রতিযোগিতায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এটি শুধু প্রযুক্তি বা গবেষণার ক্ষেত্রেই নয়, বরং বৈশ্বিক রাজনীতি ও নিরাপত্তা প্রেক্ষাপটেও গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।
-শরিফুল
সরকার পরিবর্তনের ডাক দিলেন ইলন মাস্ক, লন্ডনে বিক্ষোভ
শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় বিকেল তিনটার পর লন্ডনের হোয়াইটহলে হাজারো মানুষের অংশগ্রহণে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। বিবিসি জানিয়েছে, ‘ইউনাইট দ্য কিংডম’ শীর্ষক এ কর্মসূচিতে আয়োজকদের বিভিন্ন নেতা বক্তব্য রাখেন এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভিডিও বার্তার মাধ্যমে যোগ দেন টেসলা ও এক্স-এর মালিক ইলন মাস্ক। তিনি সমাবেশে সরাসরি সরকার পরিবর্তনের ডাক দিয়ে বলেন, চার বছর অপেক্ষা করার মতো সময় নেই, পার্লামেন্ট ভেঙে অবিলম্বে নতুন ভোট আয়োজন করতে হবে। তাঁর এ বক্তব্যে বিক্ষোভকারীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস দেখা দেয়।
বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীদের হাতে ছিল যুক্তরাজ্যের ইউনিয়ন জ্যাক পতাকা, ইংল্যান্ডের লাল-সাদা সেন্ট জর্জ ক্রস, এমনকি মার্কিন ও ইসরায়েলি পতাকাও। অনেকেই পরেছিলেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রচারণার লাল টুপি ‘মেক আমেরিকা গ্রেইট এগেইন’। আয়োজক রবিনসন সামাজিক মাধ্যমে দাবি করেন, ইতোমধ্যেই লন্ডনের কেন্দ্রস্থলে লাখ লাখ মানুষ স্বাধীনতার দাবিতে একত্রিত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে দিতে বিক্ষোভকারীরা ওয়েস্টমিনস্টারের দিকে অগ্রসর হয়। তাদের বহন করা প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল “ওদের ফেরত পাঠাও”। অনেক পরিবার শিশুদের সঙ্গেও মিছিলে অংশ নেয়। তবে বিক্ষোভের মধ্যে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে। মেট্রোপলিটন পুলিশ জানায়, সমাবেশে উচ্ছৃঙ্খল আচরণের অভিযোগে অন্তত নয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশকে লক্ষ্য করে কাচের বোতল, লোহার পাইপ ও বিয়ারের ক্যান ছোড়া হয়।
এদিন কাছেই পাল্টা কর্মসূচি হিসেবে আয়োজিত হয় ‘স্ট্যান্ড আপ টু রেসিজম’ শীর্ষক বিক্ষোভ, যাতে প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ অংশ নেন। দুই পক্ষের কর্মসূচি সামলাতে লন্ডনে মোতায়েন করা হয় এক হাজার ৬০০-এর বেশি পুলিশ সদস্য, যাদের মধ্যে ৫০০ জন এসেছিলেন অন্যান্য অঞ্চল থেকে। একইসঙ্গে শহরে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ ফুটবল ম্যাচ ও কনসার্ট থাকায় পুলিশকে অতিরিক্ত চাপ সামলাতে হয়।
চলতি বছর যুক্তরাজ্যে অভিবাসন ইস্যু রাজনৈতিক অঙ্গনে বড় ধরনের উত্তাপ সৃষ্টি করেছে। এ পর্যন্ত ২৮ হাজারের বেশি অভিবাসী ছোট নৌকায় ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে দেশটিতে প্রবেশ করেছে, যা ইতিহাসে রেকর্ড। সমর্থকরা ইংল্যান্ডের লাল-সাদা পতাকাকে জাতীয় গৌরবের প্রতীক বলে দাবি করলেও, বর্ণবাদবিরোধী কর্মীদের কাছে এটি বিদেশিদের প্রতি বৈরিতার প্রতীক।
-রফিক
ন্যাটো সীমান্তে নতুন উত্তেজনা: রাশিয়ার ড্রোন অভিযান প্রসারিত
ন্যাটো সদস্য রাষ্ট্রগুলোর নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে রাশিয়ার সাম্প্রতিক ড্রোন হামলা ও সীমান্ত অতিক্রমের ঘটনায়। শনিবার রোমানিয়া জানিয়েছে, দেশটির আকাশসীমায় একটি ড্রোন প্রবেশ করেছে, যা ইউক্রেনের অবকাঠামো লক্ষ্য করে রুশ হামলার সময় শনাক্ত করা হয়। এ ঘটনার পরপরই রোমানিয়া দুটি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান উড়িয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ড্রোনটি রোমানিয়ার আকাশসীমায় প্রবেশের পর রাডারে কিছু সময় দেখা যায় এবং শেষ পর্যন্ত দেশটির চিলিয়া ভেকে গ্রাম সংলগ্ন এলাকায় তা অদৃশ্য হয়ে যায়।
পোল্যান্ডও একই দিনে রুশ ড্রোন হামলার জবাবে নিজেদের ও ন্যাটো মিত্রদের হেলিকপ্টার ও যুদ্ধবিমান মোতায়েন করে। পোলিশ সামরিক কমান্ড জানায়, সম্ভাব্য হামলার ঝুঁকির কারণে বিমান প্রতিরক্ষা ও রাডার নজরদারি ব্যবস্থা সর্বোচ্চ সতর্কতায় আনা হয়েছিল। পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্ক সতর্কতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিলেও সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সতর্ক করে বলেছেন, রাশিয়া ইচ্ছাকৃতভাবে ড্রোন অভিযান সম্প্রসারণ করছে। তার মতে, এটি যুদ্ধকে নতুন মাত্রায় নিয়ে যাচ্ছে এবং পশ্চিমা দেশগুলোর উচিত আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা ও সম্মিলিত প্রতিরক্ষা সহযোগিতা জোরদার করা। জেলেনস্কি বলেন, “রাশিয়া জানে তাদের ড্রোন কোথায় যাচ্ছে এবং কতক্ষণ আকাশে থাকবে। এখন সময় এসেছে নতুন নিষেধাজ্ঞা ও সম্মিলিত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার।” তিনি পশ্চিমাদের উদ্দেশে বলেন, “দশক সংখ্যক ‘শাহেদ’ ড্রোন ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পড়ার অপেক্ষা না করে সিদ্ধান্ত নিন।”
ওয়াশিংটনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন, তিনি বড় ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপে প্রস্তুত, তবে শর্তসাপেক্ষে—সব ন্যাটো সদস্যকে একসঙ্গে পদক্ষেপ নিতে হবে এবং রাশিয়ার তেল কেনা বন্ধ করতে হবে। ট্রাম্পের বক্তব্য নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে, কারণ তিনি পূর্বেও একাধিকবার নিষেধাজ্ঞার হুমকি দিয়েছেন কিন্তু বাস্তবায়ন করেননি। এদিকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেছেন, পোল্যান্ডের আকাশসীমায় রাশিয়ার ড্রোন অনুপ্রবেশ যদি ইচ্ছাকৃত প্রমাণিত হয়, তা হবে “বড় ধরনের উত্তেজনা বৃদ্ধির” ইঙ্গিত।
অন্যদিকে, রাশিয়ার ভিতরেও ড্রোন হামলার খবর পাওয়া গেছে। ইউক্রেনের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা জিইউআর দাবি করেছে, তারা রাশিয়ার অন্যতম বৃহৎ তেল শোধনাগারে ড্রোন হামলা চালিয়েছে। উফা শহরের উপকণ্ঠে অবস্থিত এ শোধনাগারে আগুন লাগে এবং কিছু ক্ষয়ক্ষতি হয় বলে রাশিয়ার কর্মকর্তারা স্বীকার করেছেন। বিশ্লেষকদের মতে, ইউক্রেনের এ ধরনের হামলার লক্ষ্য রাশিয়ার জ্বালানি শিল্পকে দুর্বল করা এবং যুদ্ধ চালানোর অর্থায়ন ক্ষমতা কমিয়ে দেওয়া।
ইউক্রেন সীমান্তে বাড়তে থাকা এ উত্তেজনা ইউরোপে নিরাপত্তা ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। ফ্রান্স, জার্মানি ও সুইডেনসহ একাধিক ইউরোপীয় দেশ পোল্যান্ডের আকাশসীমা সুরক্ষায় সহায়তা বাড়িয়েছে। ন্যাটো মিত্ররা আশঙ্কা করছে, এ ধরনের ড্রোন অনুপ্রবেশ সীমান্ত সংঘাতের ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।
-রফিকুল ইসলাম
ফ্রান্সের নতুন প্রধানমন্ত্রীর বড় সিদ্ধান্ত: সরকারি ছুটি কাটছাঁটের পরিকল্পনা বাতিল
ফ্রান্সের নতুন প্রধানমন্ত্রী সেবাস্তিয়ান লেকর্নু বাজেট ঘাটতি মোকাবিলার বিতর্কিত প্রস্তাব থেকে সরে এসে বামপন্থী দলগুলোর প্রতি সমঝোতার আহ্বান জানিয়েছেন। শনিবার আঞ্চলিক গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি পূর্বসূরি ফ্রাঁসোয়া বাইরুর পরিকল্পিত দুটি সরকারি ছুটির দিন বাতিলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন।
এই অবস্থান পরিবর্তন আসে এমন এক সময়ে, যখন আন্তর্জাতিক রেটিং সংস্থা ফিচ ফ্রান্সের ঋণ পরিশোধ সক্ষমতার মান কমিয়ে “এএ-” থেকে “এ+” করেছে। সংস্থাটি সতর্ক করেছে, ২০২৭ সাল পর্যন্ত ফ্রান্সের ঋণের পরিমাণ অব্যাহতভাবে বাড়তে থাকবে যদি না জরুরি সংস্কারমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
ফিচের সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। কট্টর ডানপন্থী নেতা মেরিন ল্য পেন ও বামপন্থী নেতা জ্যঁ-লুক মেলঁশো উভয়েই প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁর নীতিকে “বিপজ্জনক” আখ্যা দিয়ে তার রাজনৈতিক ধারার অবসানের দাবি জানিয়েছেন। মেলঁশো সরাসরি প্রেসিডেন্টের অভিশংসনের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
লেকর্নু অবশ্য কঠোর কৃচ্ছসাধন নীতির পরিবর্তে সামাজিক সংলাপের মাধ্যমে বিকল্প সমাধান খুঁজে বের করার ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “আমি দুটি সরকারি ছুটি বাতিলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করেছি। এখন সামাজিক অংশীদারদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে ২০২৬ সালের বাজেটের জন্য বিকল্প পথ খুঁজব।”
এদিকে, দেশটির নিয়োগকর্তাদের সংগঠন মেদেফ (MEDEF) সতর্ক করে বলেছে, ব্যবসা-বাণিজ্যের ওপর নতুন কর চাপানো হলে তারা কঠোর প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। যদিও লেকর্নু ধনকুবেরদের ওপর প্রস্তাবিত ‘জুকম্যান ট্যাক্স’ পুনর্বিবেচনার বিষয়ে সরাসরি কোনো মন্তব্য না করলেও “কর ন্যায়বিচার” নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন।
ফ্রান্সের বাজেট ঘাটতি বর্তমানে জিডিপির ৫.৮ শতাংশ, আর সরকারি ঋণ ১১৩ শতাংশ, যা ইউরোজোনের নির্ধারিত সীমা—ঘাটতির ক্ষেত্রে ৩ শতাংশ ও ঋণের ক্ষেত্রে ৬০ শতাংশ—এর দ্বিগুণেরও বেশি। ফিচ পূর্বাভাস দিয়েছে, ২০২৭ সালে ফ্রান্সের ঋণ জিডিপির ১২১ শতাংশে পৌঁছাতে পারে, যা ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য বড় হুমকি।
রেটিং অবনমন স্বাভাবিকভাবে ফ্রান্সের সরকারি বন্ডের সুদের হার বাড়িয়ে তুলেছে। দশ বছর মেয়াদি বন্ডের সুদহার এখন ৩.৪৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যা ইউরোজোনের সবচেয়ে দুর্বল অর্থনীতির দেশ ইতালির সমান প্রায়। এতে ঋণের সুদ পরিশোধ ব্যয় আরও বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।
লেকর্নু এখন এমন এক সরকারের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, যার সংসদে স্পষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই। ফলে বাজেট অনুমোদনের জন্য তাকে রাজনৈতিক সমঝোতার ওপর নির্ভর করতে হবে। এ কারণে আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ শুধু অর্থনৈতিক নয়, রাজনৈতিকও।
জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরো ইনসে (INSEE) জানিয়েছে, ২০২৫ সালে ফ্রান্সের প্রবৃদ্ধি ০.৮ শতাংশ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে, যা আগের পূর্বাভাসের চেয়ে সামান্য বেশি। তবে রেটিং সংকট ও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা এই প্রবৃদ্ধিকে কতটা প্রভাবিত করবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে।
-আমির হোসেন
মেক্সিকো সিটিতে গ্যাস ট্রাক বিস্ফোরণে নিহত বেড়ে ১৩
মেক্সিকো সিটির ইস্তাপালাপা জেলায় ভয়াবহ গ্যাস ট্রাক বিস্ফোরণে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ জনে। শনিবার মেয়রের কার্যালয় এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
বুধবার প্রায় ৫০ হাজার লিটার গ্যাস বহনকারী একটি ট্রাক হঠাৎ বিস্ফোরিত হলে পুরো এলাকা কেঁপে ওঠে। ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় ঘটে যাওয়া এ ঘটনায় প্রথমে তিনজন নিহত ও বহু আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেলেও পরে নিহতের সংখ্যা ক্রমেই বাড়তে থাকে।
সর্বশেষ সরকারি হিসাব অনুযায়ী, এখনো শহরের বিভিন্ন হাসপাতালে ৪০ জন গুরুতর আহত রোগীর চিকিৎসা চলছে। এদের অধিকাংশের শরীরে দ্বিতীয় ও তৃতীয় ডিগ্রির মারাত্মক দগ্ধের চিহ্ন রয়েছে।
মৃতদের মধ্যে আছেন ৪৯ বছর বয়সী আলিসিয়া মাতিয়াস, যাকে স্থানীয় গণমাধ্যমে “হিরো দাদিমা” বলা হচ্ছে। বিস্ফোরণের সময় তিনি নিজের দুই বছরের নাতনিকে শরীর দিয়ে ঢেকে প্রাণ বাঁচানোর চেষ্টা করেন। তার শরীরের ৯০ শতাংশ পুড়ে গেলেও তিনি নাতনিকে জীবিত রাখতে সক্ষম হন। বিস্ফোরণের পর শিশুটিকে কোলে নিয়ে সাহায্যের জন্য ছুটে বেড়ানোর তার হৃদয়বিদারক ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গেছে।
মেক্সিকো সিটির মেয়র ক্লারা ব্রুগাদা এক্স (পূর্বের টুইটার)-এ লিখেছেন,
“আলিসিয়ার ভালোবাসা ও আত্মত্যাগ আমাদের সবাইকে গভীরভাবে নাড়া দিয়েছে।”
প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, ট্রাকটি অতিরিক্ত গতিতে চলছিল এবং কোনো বস্তুতে ধাক্কা খেয়ে গ্যাস ট্যাঙ্কে ছিদ্র হয়ে বিস্ফোরণ ঘটে। মেয়র ব্রুগাদা জানিয়েছেন, শহরের ৯২ লাখ বাসিন্দার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গ্যাসবাহী ট্রাকের গতিবিধির ওপর নতুন বিধিনিষেধ আরোপের উদ্যোগ নেওয়া হবে, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানো যায়।
-রাজু আহামেদ
আফগান সীমান্তে পাকিস্তান সেনার বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি
আফগান সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় সাম্প্রতিক সামরিক অভিযানে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ও তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি)-এর মধ্যে। গত কয়েক দিনে চালানো এসব অভিযানে অন্তত ১৯ জন পাকিস্তানি সেনা ও ৩৫ জন সশস্ত্র যোদ্ধা নিহত হয়েছে বলে শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে সেনাবাহিনী।
বিবৃতিতে বলা হয়, উত্তর-পশ্চিম খাইবার পাখতুনখোয়ার বাজৌর জেলায় চালানো অভিযানে ২২ জন টিটিপি সদস্য নিহত হয়। দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানের আরেক অভিযানে আরও ১৩ জন নিহত হয়েছে, যেখানে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ১২ কর্মকর্তা প্রাণ হারান। পাশাপাশি লোয়ার দির জেলায় এক আস্তানা ঘিরে ফেলার পর উভয় পক্ষের গোলাগুলিতে সাত সেনা ও ১০ জন টিটিপি যোদ্ধা নিহত হয়।
টিটিপি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বার্তা দিয়ে এসব হামলার দায় স্বীকার করেছে। পাকিস্তান কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, আফগানিস্তানের মাটি ব্যবহার করে এসব হামলা চালানো হচ্ছে। এ কারণে ইসলামাবাদ কাবুলের তালেবান সরকারকে আহ্বান জানিয়েছে যেন তাদের ভূখণ্ড পাকিস্তানবিরোধী সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে ব্যবহার না হয়।
পাকিস্তান সেনাবাহিনী নিহত টিটিপি সদস্যদের ‘খারেজি’ আখ্যা দিয়ে দাবি করেছে, তারা ভারতের সহযোগিতা পাচ্ছে। তবে এ বিষয়ে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি। ভারত সব সময়ই এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে, আর কাবুল থেকেও এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া আসেনি।
২০২১ সালে আফগানিস্তানে তালেবান পুনরায় ক্ষমতায় ফেরার পর থেকে পাকিস্তানে টিটিপির হামলা বেড়ে গেছে। সীমান্ত পেরিয়ে টিটিপি নেতারা আফগানিস্তানে আশ্রয় নিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। শনিবারের সংঘর্ষ সাম্প্রতিক মাসগুলোর মধ্যে খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে সবচেয়ে প্রাণঘাতী ঘটনা। উল্লেখ্য, একসময় টিটিপি এ প্রদেশের বড় অংশ নিয়ন্ত্রণ করত, তবে ২০১৪ সালের সেনা অভিযানে তারা পিছু হটতে বাধ্য হয়েছিল।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, সম্প্রতি বিভিন্ন এলাকায় টিটিপির নাম লেখা গ্রাফিতি দেখা যাচ্ছে। এতে নতুন করে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। এএফপি’র হিসাবে, চলতি বছরের শুরু থেকে পাকিস্তানে সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলায় অন্তত ৪৬০ জন নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য।
গত বছর নিহতের সংখ্যা ছিল প্রায় ১ হাজার ৬০০, যা ছিল গত এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে প্রাণঘাতী বছর। নিহতদের অর্ধেকেরও বেশি ছিলেন সেনা ও পুলিশ সদস্য।
-রাফসান
এবার মন্ত্রী নির্ধারণে ভিন্নধর্মী উদ্যোগ নেপালে
নেপালে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) অন্তর্বর্তী সরকারের নতুন মন্ত্রিসভা ঘোষণা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন সদ্য দায়িত্ব পাওয়া প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কার্কি। সরকারি সূত্র উদ্ধৃত করে নেপালি গণমাধ্যম খবর হাব জানিয়েছে, এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পরামর্শ এখনো চলছে এবং আজকের মধ্যেই ছোট পরিসরের একটি মন্ত্রিসভা গঠনের সম্ভাবনা রয়েছে।
গত শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাতে নেপালের ইতিহাসে প্রথম নারী সরকারপ্রধান হিসেবে শপথ নেন সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কি। তরুণ প্রজন্মের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রেসিডেন্ট রামচন্দ্র পৌডেল ও প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শেষে তাঁকে অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
শপথ নেওয়ার পরপরই তিনি প্রতিনিধি সভা ভেঙে দেওয়ার সুপারিশ করেন এবং তা দ্রুত অনুমোদন করেন প্রেসিডেন্ট। একইসঙ্গে কার্কি আগামী ৫ মার্চ সাধারণ নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণা দেন।
তবে নেপালের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো নেপালি কংগ্রেস, সিপিএন-ইউএমএল এবং মাওবাদী কেন্দ্র—এই সিদ্ধান্তে অসন্তুষ্টি জানিয়েছে। তাদের মতে, সংসদ বহাল রেখেই সাংবিধানিক প্রক্রিয়ায় সুশীলা কার্কিকে নিয়োগ দেওয়া সম্ভব ছিল। দলগুলোর আশঙ্কা, এ ধরনের পদক্ষেপ রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে।
নতুন মন্ত্রিসভা নির্বাচনের প্রক্রিয়াও এবার ভিন্নধর্মী হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রচলিত দলীয় কাঠামোর বাইরে গিয়ে গণআন্দোলনের চরিত্র ধরে রাখতে প্রধানমন্ত্রী কার্কি হয়তো জনভোট বা গণপরামর্শের মাধ্যমে মন্ত্রী নির্বাচনের ঘোষণা দেবেন।
ইতোমধ্যে বিদ্যুৎ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক কুলমান ঘিসিং এবং আইনজীবী ওমপ্রকাশ আয়ারেলের নাম আলোচনায় এসেছে, যারা মূলধারার রাজনীতির বাইরে থেকেও জনসমর্থন অর্জন করেছেন।
এ প্রেক্ষাপটে মনে করিয়ে দেওয়া যায়, গত ৮ সেপ্টেম্বর দুর্নীতি, সরকারবিরোধী দমননীতি এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে তরুণ প্রজন্ম রাস্তায় নেমে আসে। আন্দোলন দমাতে নিরাপত্তা বাহিনী জলকামান, টিয়ার গ্যাস, রাবার বুলেট ও গুলি ব্যবহার করে এবং বিভিন্ন শহরে কারফিউ জারি করা হয়। কিন্তু কঠোর দমননীতি সত্ত্বেও আন্দোলনকারীরা দমে যায়নি।
পরদিনও বিক্ষোভ অব্যাহত থাকে এবং ক্রমবর্ধমান চাপের মুখে পদত্যাগ করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি। সেই সময় বিভিন্ন নেতার বাড়ি ও সরকারি ভবনে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। দেশজুড়ে সহিংসতায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৫১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
-রাফসান
কিম জং উনের নতুন সামরিক নীতি: একসাথে পারমাণবিক ও প্রচলিত শক্তি বৃদ্ধির ঘোষণা
উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন জানিয়েছেন, আসন্ন শাসকদল ওয়ার্কার্স পার্টির গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে তিনি এমন এক নীতি ঘোষণা করবেন যা একযোগে দেশটির পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডার ও প্রচলিত সামরিক শক্তি বৃদ্ধির রূপরেখা দেবে। শনিবার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি (KCNA) এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ব্যর্থ শীর্ষ বৈঠকের পর থেকেই পিয়ংইয়ং বারবার ঘোষণা দিয়ে আসছে যে তারা আর কখনও পারমাণবিক অস্ত্র ত্যাগ করবে না। দেশটি নিজেকে "অপরিবর্তনীয় পারমাণবিক রাষ্ট্র" হিসেবে ঘোষণা করেছে। সম্প্রতি অস্ত্র গবেষণা কেন্দ্র পরিদর্শনের সময় কিম বলেন, "উত্তর কোরিয়া পারমাণবিক বাহিনী এবং প্রচলিত সশস্ত্র বাহিনী – উভয়ের শক্তি বৃদ্ধি করবে।" তিনি প্রচলিত সেনাবাহিনীকে আধুনিকায়নের প্রয়োজনীয়তার ওপরও জোর দেন। তবে বৈঠকের নির্দিষ্ট তারিখ জানাননি।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, কিমের এই পদক্ষেপ প্রমাণ করে যে শুধু পারমাণবিক অস্ত্রই প্রতিরোধ ক্ষমতার একমাত্র ভরসা নয়। উত্তর কোরিয়া এখন তার যুদ্ধ-সক্ষমতা বাড়াতে চায় এবং আধুনিক যুদ্ধের উপযোগী প্রচলিত অস্ত্রভাণ্ডার তৈরি করতে চায়। কোরিয়া ইনস্টিটিউট ফর ন্যাশনাল ইউনিফিকেশনের সিনিয়র বিশ্লেষক হং মিন বলেন, "রাশিয়ার সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার সামরিক সহযোগিতা ক্রমেই বাড়ছে, যা কেবল পারমাণবিক প্রযুক্তি নয় বরং প্রচলিত অস্ত্রখাতেও বিস্তৃত হচ্ছে।" তিনি আরও যোগ করেন, আসন্ন বৈঠকে আধুনিক যুদ্ধের উপযোগী দীর্ঘমেয়াদি আধুনিকায়ন পরিকল্পনা ঘোষণা করা হতে পারে।
উত্তর কোরিয়ার এই অবস্থানকে আরও দৃঢ় করেছে ইউক্রেন যুদ্ধ। মস্কোর পাশে দাঁড়িয়ে হাজার হাজার উত্তর কোরীয় সৈন্য পাঠানোর পর পিয়ংইয়ং রাশিয়ার কাছ থেকে রাজনৈতিক ও সামরিক সমর্থন পাচ্ছে। গত বছর রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের পিয়ংইয়ং সফরের সময় দুই দেশ পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি সই করে।
দক্ষিণ কোরিয়া বারবার সতর্ক করছে যে রাশিয়া উত্তর কোরিয়াকে সংবেদনশীল সামরিক প্রযুক্তি সরবরাহ করতে পারে, যা আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি হতে পারে।
এর আগে ২০২১ সালের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত পার্টি কংগ্রেসে কিম এক উচ্চাকাঙ্ক্ষী সামরিক এজেন্ডা ঘোষণা করেছিলেন। তখন তিনি সামরিক উপগ্রহ, কঠিন জ্বালানির আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্রসহ উন্নত অস্ত্র তৈরি করার অঙ্গীকার করেছিলেন। বিশ্লেষকদের ধারণা, আসন্ন বৈঠক আগামী বছরের শুরুতেই হতে পারে।
সম্প্রতি বেইজিংয়ে আয়োজিত বিশাল সামরিক কুচকাওয়াজে কিম জং উন, পুতিন ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং একসঙ্গে অংশ নেন। এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে অভিযোগ করেন, এই তিন নেতা যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী পরিকল্পনা করছেন।
-সুত্রঃ এ এফ পি
পাঠকের মতামত:
- জাতীয় ঐকমত্য: বাংলাদেশের জন্য এক ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণ
- নেপালের গণঅভ্যুত্থান থেকে বাংলাদেশের শিক্ষা: বৈধতার সংকট, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও আগামীর চ্যালেঞ্জ
- মালয়েশিয়ায় প্রবাসী ভোটার নিবন্ধন শুরু বুধবার
- গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজন রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান: ড. আলী রিয়াজ
- শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইনের অস্ত্র মামলায় নতুন মোড়
- উদ্যোক্তা সৃষ্টির আর্থিক কাঠামো গড়ে তোলার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের
- ব্লক মার্কেটে রেকর্ড লেনদেন
- ১৪ সেপ্টেম্বর ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (DSE) বাজার বিশ্লেষণ প্রতিবেদন
- ১৪ সেপ্টেম্বর ডিএসইতে দর পতনের শীর্ষ ১০ শেয়ার
- ১৪ সেপ্টেম্বর ডিএসইতে দর বৃদ্ধির শীর্ষ ১০ শেয়ার
- তারেক জিয়ার কেন দেশে ফেরা কেন জরুরি?
- উত্তর কোরিয়া-রাশিয়া প্রতিরক্ষা চুক্তি, যুক্তরাষ্ট্রের মহড়ায় উত্তেজনা
- গুলিবর্ষণের পর প্রথম প্রকাশ্যে দেখা গেল দিশা পাটানিকে
- ডিএসই–৩০ সূচকে মিশ্র লেনদেন
- গুপ্তচরবৃত্তির আশঙ্কা, নাসা থেকে বহিষ্কার চীনা গবেষকরা
- ছুটির মুডে অনন্যা পাণ্ডে: ফ্যাশনপ্রেমীদের জন্য নতুন অনুপ্রেরণা
- সরকার পরিবর্তনের ডাক দিলেন ইলন মাস্ক, লন্ডনে বিক্ষোভ
- ন্যাটো সীমান্তে নতুন উত্তেজনা: রাশিয়ার ড্রোন অভিযান প্রসারিত
- ফ্রান্সের নতুন প্রধানমন্ত্রীর বড় সিদ্ধান্ত: সরকারি ছুটি কাটছাঁটের পরিকল্পনা বাতিল
- PRIME1ICBA ফান্ডের সাপ্তাহিক এনএভি প্রকাশ
- মেক্সিকো সিটিতে গ্যাস ট্রাক বিস্ফোরণে নিহত বেড়ে ১৩
- ভিয়ারিয়ালকে হারিয়ে মৌসুমের প্রথম জয় পেল আতলেতিকো
- এমবাপ্পের ঝলকে রিয়াল মাদ্রিদের টানা চতুর্থ জয়
- ২১ সেপ্টেম্বর প্রাথমিক, ২৫ সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত তালিকা
- ঢাকায় মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি দল, শুল্ক কমানোতে নতুন আশার আলো
- আফগান সীমান্তে পাকিস্তান সেনার বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি
- ক্যাম্পাস হবে জ্ঞান ও নেতৃত্ব বিকাশের স্থান: শিবির
- এবার মন্ত্রী নির্ধারণে ভিন্নধর্মী উদ্যোগ নেপালে
- আজকের ক্রীড়া সূচি (শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর)
- ফরিদা পারভীনের মৃত্যুতে ড. ইউনূসের শোক
- শ্রীলঙ্কার ঝড়ে উড়ে গেল বাংলাদেশ, ৩২ বল বাকি থাকতেই লঙ্কানদের দাপুটে জয়!
- কিংবদন্তি ফরিদা পারভীনের শেষনিঃশ্বাস: শোকস্তব্ধ সংগীতাঙ্গন
- জাকসু নির্বাচনে শিবিরের দাপট, ভিপি পদে স্বতন্ত্রের চমক!
- বাংলাদেশে মিথ্যা মামলা: আইনি প্রতিকার ও প্রতিরোধমূলক কৌশল
- শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে অর্থ পাচারের অভিযোগে নতুন করে আলোড়ন
- বাজার ব্যবস্থাপনায় টেকসই সরবরাহই স্থিতিশীলতার মূলমন্ত্র: শেখ বশির উদ্দিন
- নেপালের প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কার্কিকে অভিনন্দন জানালেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস
- অপারেশন থিয়েটারের আলো: ছায়াহীন বিস্ময়ের বৈজ্ঞানিক রহস্য
- আজকের মুদ্রা বিনিময় হারের বিশ্লেষণ
- বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ংকর পাখি: সাউদার্ন ক্যাসোয়ারির রহস্যময়তা ও আতঙ্ক
- জাকসু নির্বাচনের ফলাফল দেওয়ার সময় জানা গেল
- দিশা পাটানির বাড়িতে গুলিবর্ষণ: আতঙ্কে পরিবার, কঠোর নিরাপত্তায় বাড়ি ঘিরে ফেলল পুলিশ
- ম্যানচেস্টার ডার্বির আগে রুবেন আমোরিমের হুঁশিয়ারি: "আমরা ভিন্ন দল"
- ওল্ড ট্রাফোর্ডে ইতিহাস: ফিল সল্টের ঝড়ো সেঞ্চুরিতে ইংল্যান্ডের রেকর্ড জয়
- কিম জং উনের নতুন সামরিক নীতি: একসাথে পারমাণবিক ও প্রচলিত শক্তি বৃদ্ধির ঘোষণা
- মোদি বনাম ভাগবত: বিজেপি–আরএসএস সম্পর্কে ফাটল
- বোলসোনারোর ২৭ বছরের কারাদণ্ড: ব্রাজিলের রাজনীতিতে নতুন অনিশ্চয়তা
- ভূমি মন্ত্রণালয়ে বড় নিয়োগ!
- জানুন নিয়মিত সাঁতারের ছয় বড় উপকারিতা
- রাশিয়ার উপকূলে শক্তিশালী ভূমিকম্প, সুনামির আশঙ্কা
- এফটির তথ্যচিত্র: শেখ হাসিনার আমলে বাংলাদেশের হারানো বিলিয়ন ডলারের গল্প
- উন্নয়ন, নিরাপত্তা ও ভূরাজনীতি: জাপান–বাংলাদেশ সম্পর্কের ভবিষ্যৎ সমীকরণ
- ডাকসু নির্বাচনের ভোট শেষ, ফলাফলের আগে অস্থির ঢাবি—পাল্টাপাল্টি অভিযোগে উত্তপ্ত পরিবেশ
- নেপালে অন্তর্বর্তী সরকার, নেতৃত্বে সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কারকি
- জুলাই সনদ বাস্তবায়নে রাজনৈতিক দলের অঙ্গীকার জরুরি: বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন
- ফাউন্ডেশনাল ইলেকশন সামনে: জুলাই সনদ বাস্তবায়নে জোর দিলেন ড. ইউনূস
- লিটনের ব্যাটে স্মার্ট জয়: হংকংকে উড়িয়ে দিল বাংলাদেশ
- ডাকসু নির্বাচন: ৪৭১ প্রার্থী, ৩৯ হাজার ভোটার, টানটান নিরাপত্তায় উৎসবমুখর ভোটযুদ্ধ
- নেপালে অস্থিরতা: বাংলাদেশি নাগরিকদের ঘরে থাকার নির্দেশ দূতাবাসের
- প্রথমবার আস্থা ভোটে প্রধানমন্ত্রী বিদায়, ইতিহাস গড়ল ফ্রান্স
- উটাহে চার্লি কার্ক হত্যা: রাজনৈতিক সহিংসতার নতুন ধাক্কায় আমেরিকার গণতন্ত্র ও নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা
- ডোপ টেস্ট কী, কেন করা হয়, কেন এত এখন জরুরি
- শেখ হাসিনার উত্তরাধিকার প্রশ্ন: আওয়ামী লীগের সামনে এক অমীমাংসিত সংকট
- জাকসু নির্বাচন: প্রার্থীদের জন্য আজ বাধ্যতামূলক ডোপ টেস্ট
- রজনীকান্ত–কমল হাসান আবারও একসঙ্গে বড় পর্দায়