‌“ক্ষমতায় এলে নিয়ন্ত্রক সংস্থায় আর রাজনৈতিক নিয়োগ নয়”—খসরুর ঘোষণা

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ২৯ ২০:২৯:১৯
‌“ক্ষমতায় এলে নিয়ন্ত্রক সংস্থায় আর রাজনৈতিক নিয়োগ নয়”—খসরুর ঘোষণা
ছবি : কালের কণ্ঠ

বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোতে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মতো প্রতিষ্ঠানে রাজনৈতিক নিয়োগ দেওয়া হবে না। অতীতেও বিএনপি শাসনামলে এসব প্রতিষ্ঠানে রাজনৈতিক নিয়োগ হয়নি, ফলে ব্যাংক খাত ও পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা ছিল।

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের রেডিসন ব্লু হোটেলে চিটাগাং স্টক এক্সচেঞ্জ পিএলসি আয়োজিত ‘অপারেশনাল ফ্রেমওয়ার্ক অব কমোডিটি ডিরাইভেটিভ মার্কেট অ্যান্ড ইটস বিজনেস প্রসপেক্টস’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু।

তিনি বলেন, পুঁজিবাজারকে আরও কার্যকর করতে হলে সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন প্রয়োজন। বিএনপি সরকার গঠন করলে পুঁজিবাজারের মানোন্নয়ন অব্যাহত রাখা হবে এবং জিডিপির তুলনায় বাজারের আকার বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে। তবে অতিনিয়ন্ত্রণ ও স্বনিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার অভাবে বাজারের কাঠামোগত সক্ষমতা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

কমোডিটি এক্সচেঞ্জ প্রসঙ্গে আমীর খসরু বলেন, এর সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে তথ্য (ডেটা) ব্যবস্থাপনা। তিনি জানান, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সক্রিয়তার এই সময়ে তথ্যের স্বচ্ছতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিএনপি সরকার গঠন করলে পুঁজিবাজারে অন্ধকারাচ্ছন্ন পরিচালনা বন্ধ করে স্বচ্ছতার পথ অবলম্বন করা হবে।

সরকারি সেবায় দুর্নীতির প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, যতদিন শারীরিকভাবে সংযোগ বজায় থাকবে, ততদিন দুর্নীতি চলবে। তাই সরকার ও সাধারণ মানুষের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ কমিয়ে সেবা ডিজিটাল মাধ্যমে পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনার কথাও জানান তিনি।

বিদেশি বিনিয়োগ সহজ করতে সম্ভাব্য উদ্যোগের কথা জানিয়ে আমীর খসরু বলেন, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য প্রশিক্ষিত সহায়ক নিয়োগ দেওয়া হবে, যারা বিনিয়োগ প্রক্রিয়ার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দেখভাল করবেন। বিনিয়োগকারী নিজ দেশ থেকেই অনলাইনে তার বিনিয়োগ প্রক্রিয়ার অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন। এই ব্যবস্থার সঙ্গে কমোডিটি ডিরাইভেটিভ মার্কেটও সংযুক্ত থাকবে।

বিমানবন্দর ও বন্দরের কার্যক্রমে স্বচ্ছতা আনতে তিনি বলেন, বিমানবন্দরে আগত যাত্রী যদি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বাইরে না আসেন, তবে সংশ্লিষ্টদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। চট্টগ্রাম বন্দরের ক্ষেত্রেও এমন স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থার কথা বলেন তিনি।

বাণিজ্যমন্ত্রী হিসেবে পূর্ববর্তী দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি জানান, একসময় তৈরি পোশাক শিল্পের কাঁচামাল আমদানির অনুমোদন নিতে হতো রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) থেকে। কিন্তু পরে সেটি বিজিএমইএর মাধ্যমে অনুমোদনের ব্যবস্থা করলে প্রক্রিয়াটি অনেক সহজ হয়।

কর্মশালায় অন্যান্য বক্তারা বলেন, আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী কমোডিটি এক্সচেঞ্জ চালু হলে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে নতুন বিনিয়োগ সুযোগ তৈরি হবে। চিটাগাং স্টক এক্সচেঞ্জের শেয়ারহোল্ডার পরিচালক আকতার পারভেজ বলেন, শেয়ার বাজার নিয়ে মানুষের মধ্যে যেসব নেতিবাচক ধারণা রয়েছে, কমোডিটি এক্সচেঞ্জ কার্যক্রমের সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমে তা পরিবর্তন করা সম্ভব।

/আশিক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ