বাধা পেরিয়ে চীনের সঙ্গে বিএনপি-জামায়াতের সম্পর্কের নতুন দিগন্ত

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ২৯ ১৪:৫৭:৩৯
বাধা পেরিয়ে চীনের সঙ্গে বিএনপি-জামায়াতের সম্পর্কের নতুন দিগন্ত
ছবিঃ সংগৃহীত

ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন মন্তব্য করেছেন, গত ১০ বছর ধরে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে চীনের কূটনৈতিক সম্পর্ক নানা প্রতিবন্ধকতায় থমকে ছিল। তবে বর্তমান প্রেক্ষাপটে সেই সম্পর্ক পুনর্গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ডিক্যাব)’ আয়োজিত ‘ডিক্যাব টক’ অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

অনুষ্ঠানে সম্প্রতি বিএনপি ও জামায়াতের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের চীন সফর প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রাষ্ট্রদূত বলেন, “চীনা কমিউনিস্ট পার্টি বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে আগ্রহী। তবে বিগত এক দশকে বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্ক কিছু কারণে বাধাগ্রস্ত ছিল। এখন এ সম্পর্ক উন্নয়নের লক্ষ্যে পুনরায় কাজ শুরু করা হয়েছে।”

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও চীনের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ভিত্তি হলো পারস্পরিক আস্থা, সম্মান ও সহযোগিতা। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন যে, চলতি বছরের মার্চ মাসে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুস প্রথম দ্বিপাক্ষিক সফরের জন্য চীনকে বেছে নেন। বেইজিংয়ে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে দুই দেশের সম্পর্ক আরও গভীর করার কৌশলগত রূপরেখা নির্ধারণ হয়।

চীনা রাষ্ট্রদূত জানান, বাংলাদেশ ও চীন শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পাঁচ নীতির প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থেকে পারস্পরিক রাজনৈতিক আস্থা জোরদার, উন্নয়ন কৌশলের সমন্বয় এবং কৌশলগত অংশীদারত্ব বৃদ্ধির বিষয়ে একমত হয়েছে। তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সিপিসি পলিটব্যুরোর সদস্য ওয়াং ই ঢাকায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে বহুমুখী সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে অঙ্গীকার করা হয়।

চীনা রাষ্ট্রদূত উল্লেখ করেন, বিএনপি ও জামায়াতের উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদল সম্প্রতি চীন সফর করেছে। সেখানে তারা চীনা শাসনব্যবস্থা ও রাষ্ট্র পরিচালনার অভিজ্ঞতা সম্পর্কে মতবিনিময় করে। তিনি বলেন, এই বিনিময় রাজনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ একটি ধাপ।

এক প্রশ্নের জবাবে ইয়াও ওয়েন বলেন, বাংলাদেশ, চীন ও পাকিস্তানের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় সহযোগিতা একটি স্বাভাবিক উদ্যোগ। এতে অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতাই মূল ফোকাস। এটি কোনো তৃতীয় পক্ষবিরোধী জোট নয়। তিনি বলেন, এই তিন দেশ ১২টি খাতে সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে সম্মত হয়েছে।

বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে রাষ্ট্রদূত বলেন, “নির্বাচনের সময় ও প্রক্রিয়া নির্ধারণ করবে বাংলাদেশ সরকার ও জনগণ। আমি একজন বিদেশি কূটনীতিক, এ বিষয়ে মন্তব্য করা আমার এখতিয়ার নয়।”

রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে তিনি বলেন, “রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফিরে যাওয়া ছাড়া এই সংকটের কোনো টেকসই সমাধান নেই। তবে রাখাইন রাজ্যে এখনো প্রত্যাবাসনের উপযোগী নিরাপত্তা পরিবেশ তৈরি হয়নি। এ বিষয়ে চীন নিয়মিত বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলছে।”

-রফিক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ