ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংকটে স্বাধীন ফিলিস্তিনের পক্ষে অটল কানাডা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ২৯ ১১:৫২:৫৭
ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংকটে স্বাধীন ফিলিস্তিনের পক্ষে অটল কানাডা
ছবিঃ সংগৃহীত

জাতিসংঘ আয়োজিত একটি উচ্চপর্যায়ের সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী অনিতা আনন্দ মধ্যপ্রাচ্যে ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংকটের সমাধানে ‘দুই রাষ্ট্রভিত্তিক নীতি’কেই একমাত্র কার্যকর পথ হিসেবে তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন, এই নীতির প্রতি কানাডার প্রতিশ্রুতি দৃঢ় ও অটল, কারণ তা অঞ্চলটিতে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য অপরিহার্য।

তিনি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেন, ফিলিস্তিন ইস্যু বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্য সংকটের কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থান করছে। “পরিস্থিতি যত জটিল হোক না কেন, আমাদের এই সম্মিলিত উপস্থিতি প্রমাণ করে যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় একটি আলোচনাভিত্তিক, ন্যায়সঙ্গত এবং টেকসই সমাধানের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ একটি সমাধান যা ফিলিস্তিনিদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার নিশ্চিত করবে এবং একই সঙ্গে ইসরাইলের নিরাপত্তাকেও অটুট রাখবে,” বলেন আনন্দ।

তিনি দুই রাষ্ট্রভিত্তিক কাঠামোর পক্ষে যুক্তি তুলে ধরতে গিয়ে বলেন, কানাডা বিশ্বাস করে একটি স্বাধীন, সার্বভৌম ও কার্যকর ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের সৃষ্টি ইসরাইলের পাশেই শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে। তবে এই লক্ষ্য অর্জনে অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক প্রস্তুতি ও শাসন কাঠামোর সংস্কার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

এই প্রসঙ্গে আনন্দ জোর দিয়ে বলেন, পশ্চিম তীর ও গাজার মতো দুটি পৃথক ভূখণ্ডকে কার্যকরভাবে পরিচালনার জন্য ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে এখনই একটি সমন্বিত ও শক্তিশালী সংস্কার পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। এমন না হলে ভবিষ্যতের রাজনৈতিক কাঠামো অকার্যকর হয়ে পড়বে।

গাজায় চলমান মানবিক সংকট নিয়ে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, বহু ফিলিস্তিনি খাবার ও বিশুদ্ধ পানি সংগ্রহ করতে গিয়ে জীবন হারাচ্ছে, এবং যারা বেঁচে আছে, তারাও অপুষ্টি, এড়ানো সম্ভব এমন রোগ ও যুদ্ধজনিত ধ্বংসের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই পরিস্থিতিকে 'বিপর্যয়কর' বলে আখ্যায়িত করেন।

তিনি ইসরাইলি বাহিনীর সহিংসতা এবং অব্যাহত বসতি সম্প্রসারণেরও তীব্র সমালোচনা করেন। “বিশেষ করে শিশুদের ওপর চালানো নিষ্ঠুর হামলা, জোরপূর্বক উচ্ছেদ এবং অবৈধ বসতি সম্প্রসারণ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের সরাসরি লঙ্ঘন,” বলেন তিনি। এইসব কর্মকাণ্ড শুধু মানবিক নয়, রাজনৈতিক পরিস্থিতিকেও আরও জটিল করে তোলে।

সম্মেলনের মঞ্চ থেকে কানাডা নতুন করে ফিলিস্তিনিদের জন্য ৪ কোটি মার্কিন ডলার সহায়তার ঘোষণা দিয়েছে। এই তহবিলের মধ্যে ১ কোটি ডলার ব্যয় হবে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাঠামোগত সংস্কারে এবং ৩ কোটি ডলার বরাদ্দ থাকবে গাজার সাধারণ জনগণের মানবিক প্রয়োজন মেটাতে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনন্দ বলেন, “এই সম্মেলন কেবল বক্তব্য দেওয়ার জায়গা নয়, বরং এটি আমাদের নীতিগত অবস্থান দৃঢ় করার এবং বাস্তব পদক্ষেপের আহ্বান জানানোর এক গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ।” তিনি আরও যোগ করেন, একটি কার্যকর ও ন্যায্য রাজনৈতিক সমাধানের জন্য দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধবিরতির প্রয়োজন রয়েছে, যা ভবিষ্যতের রাষ্ট্রীয় গঠনের ভিত্তি স্থাপন করতে পারবে।

-শরিফুল

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ