“শেখ হাসিনাও তো বাঙালি মুসলমান, তাকেও পুশইন করেন না কেন?”

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ২৮ ১৬:২৩:৫৩
“শেখ হাসিনাও তো বাঙালি মুসলমান, তাকেও পুশইন করেন না কেন?”
ছবিঃ সংগৃহীত

ভারতের নাগরিকত্ব ও অভিবাসন সংক্রান্ত সাম্প্রতিক পরিস্থিতি এবং প্রতিবেশী দেশের ভূমিকাকে ঘিরে এক প্রশ্নবিদ্ধ অবস্থান গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ভারতের দিকে সরাসরি ইঙ্গিত করে প্রশ্ন তুলেছেন, “শেখ হাসিনাও তো বাঙালি মুসলমান, তাকেও কি পুশইন করছেন না? শুধু নিরীহ মানুষদের কেন?”

সোমবার (২৮ জুলাই) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি মরহুম শফিউল বারী বাবুর পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত মিলাদ মাহফিলে এ বক্তব্য রাখেন রিজভী। বক্তব্যে তিনি ভারত সরকারের সাম্প্রতিক কার্যকলাপ, বাংলাদেশ সরকার ও সীমান্ত পরিস্থিতি ঘিরে বিস্তৃতভাবে মন্তব্য করেন।

রিজভী বলেন, “ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও ত্রিপুরা রাজ্যে বহু বাঙালি মুসলমান বাস করেন। তাদের ভাষা বাংলা, সংস্কৃতি বাংলা তবুও ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে তাঁদের জোর করে বাংলাদেশে পুশইন করা হচ্ছে। অথচ শেখ হাসিনাও একজন বাঙালি মুসলমান এবং বাংলাদেশের নাগরিক তাকেও কি পুশইন করছেন? যে সমস্ত দুর্বৃত্ত ভারতে আশ্রয় নিয়েছে, তাদেরকে তো পুশইন করা হচ্ছে না।”

তিনি দাবি করেন, “ভারত দীর্ঘদিন ধরে হাজারো মুসলিমকে বাংলাদেশে ঠেলে দিচ্ছে, অথচ যারা অপরাধী হিসেবে সেখানে আশ্রয় নিয়েছে, তাদের ফিরিয়ে দেওয়ার কোনো উদ্যোগ নেই।”

রিজভী সরকারের দিকে প্রশ্ন তুলে বলেন, “আমরা তো অতীতে দেখেছি, বাংলাদেশ সরকার সীমান্তে পুশব্যাক কার্যক্রম পরিচালনা করত। এখন কেন তারা পুশব্যাক করছে না? রাষ্ট্রের কি সেই সক্ষমতা নেই, নাকি ইচ্ছার অভাব?”

রিজভীর বক্তব্যে ভারতের ভূ-রাজনৈতিক ভূমিকার কঠোর সমালোচনাও উঠে আসে। তিনি বলেন, “ভারত চায় বাংলাদেশে তাদের পছন্দের সরকার থাকুক। সেই সরকার জনগণের পছন্দ হোক বা না হোক, তাদের কিছু যায় আসে না। প্রভুত্বকারী ও সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলো যেভাবে অন্য দেশের রাজনীতিকে প্রভাবিত করে, ভারতও ঠিক সেটাই করছে। শেখ হাসিনাকে তারা নিজেদের প্রতিনিধি মনে করে, তাই তাঁর অনুপস্থিতি ভারতের কাছে অস্বস্তির কারণ।”

বক্তব্যে রিজভী এ-ও জানান, বিএনপি কখনোই অপরাধের পক্ষ নেয় না। তিনি বলেন, “যদি কোনো ব্যক্তি বিএনপির নাম ব্যবহার করে অন্যায় করে, পুলিশ যেন তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়। আমরা কোনো অপরাধীকেই দলীয় পরিচয়ে রক্ষা করতে চাই না।”

স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানীর সভাপতিত্বে এবং সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল হাসানের পরিচালনায় আয়োজিত মিলাদ মাহফিলে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, আব্দুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, রংপুর বিভাগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, সাবেক সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, এবং সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল প্রমুখ।

রাফসান, নিজস্ব প্রতিবেদক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ