আগুন কেড়ে নিল রাঙ্গাবালীর এক ভ্যানচালকের পুরো পরিবার

সারাদেশ ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ১৯ ১২:২২:৫২
আগুন কেড়ে নিল রাঙ্গাবালীর এক ভ্যানচালকের পুরো পরিবার
ছেলেসহ পাঁচজনের মরদেহ দেখে পাথর হয়ে গেছেন রিপনের মা জরিনা বেগম। ছবিঃ jagonews24

ঢাকার সূত্রাপুরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে একই পরিবারের পাঁচ সদস্যের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলায়। আগুনে দগ্ধ হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছেন রিপন প্যাদা (৩৫), তার স্ত্রী চাঁদনী বেগম (৩০), দুই ছেলে তামিম (১৬) ও রোকন (১৩) এবং দেড় বছরের কন্যা আয়েশা।

১১ জুলাই গভীর রাতে রাজধানীর সূত্রাপুরের কাগজি টোলায় তাদের ভাড়া বাসায় অগ্নিকাণ্ড ঘটে। সেই সময় পরিবারের সবাই ঘুমিয়ে ছিলেন। আগুনে মারাত্মক দগ্ধ হন তারা পাঁচজন। এরপর তাদের ভর্তি করা হয় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে। একে একে সবাই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

প্রথমে ১৪ জুলাই মৃত্যু হয় ছোট্ট আয়েশার। এরপর ১৬ জুলাই মারা যায় দুই ছেলে তামিম ও রোকন। সেই দিনই দুই ছেলের মরদেহ নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে অ্যাম্বুলেন্সেই মারা যান মা চাঁদনী বেগম। সবশেষ ১৮ জুলাই রাত ৯টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান পরিবার প্রধান রিপন প্যাদা। তাকে দুই ছেলের পাশে গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার যুগিরহাওলা গ্রামে দাফন করা হয়।

এই হৃদয়বিদারক ঘটনায় শোকে স্তব্ধ পুরো গ্রাম। প্রতিবেশীরা জানায়, আগুন কীভাবে লেগেছিল—তা এখনও কেউ নিশ্চিতভাবে জানে না। পাঁচতলা ভবনের নিচতলায় একটি কক্ষে পরিবারটি বসবাস করত। রাতে হঠাৎ আগুন লাগলে ঘুমন্ত অবস্থায় কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই আগুন চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে।

এ ঘটনায় সবচেয়ে বড় ধাক্কা খেয়েছেনরিপনের মা জরিনা বেগম রিপনের। ছেলেসহ পাঁচজনের মরদেহ দেখে পাথর হয়ে গেছেন তিনি। অসহায় কণ্ঠে বলছিলেন, "আল্লাহ ছাড়া আমার আর কেউ রইল না। আমি নিঃস্ব হয়ে গেলাম।"

রিপনের ফুফাতো ভাই সিরাজ হোসেন বলেন, “ঘটনার পর আমরা কোনোভাবে তাদের হাসপাতালে নিয়েছিলাম। কিন্তু কারও জীবন আর বাঁচাতে পারিনি। এই শোক কোনোদিন ভুলবার নয়।”

একটি পরিবার পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়া—এই ঘটনা শুধু এক গ্রামের নয়, দেশের জন্যও এক হৃদয়বিদারক স্মৃতি হয়ে থাকবে।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ