দাকোপে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ, পুলিশসহ আহত ৯: নেপথ্যে কি? 

সারাদেশ ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ মে ১৩ ১৪:৪২:৫৪
দাকোপে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ, পুলিশসহ আহত ৯: নেপথ্যে কি? 

সত্য নিউজ: খুলনার দাকোপ উপজেলায় একটি খাস খালের ইজারা এবং ছাত্রদলের কলেজ কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে বিএনপির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে রূপ নেয়। সোমবার (১২ মে) বিকেলে চালনা বাজারে সংঘটিত এ ঘটনায় ৩ পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ৯ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে দাকোপ থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আজাহার উদ্দিনের অবস্থা আশঙ্কাজনক, তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্র এবং প্রশাসন জানিয়েছে, দাকোপ উপজেলার বাজুয়া ইউনিয়নের ডাকাতিয়া খালের ইজারা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই স্থানীয় বিএনপির দুইটি গ্রুপের মধ্যে টানাপোড়েন চলছিল। সোমবার দুপুরে দাকোপ সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়ে ইজারার দরপত্র আহ্বানকে কেন্দ্র করে প্রথমে বাকবিতণ্ডা এবং পরে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের শুরু হয় চালনা পৌর বিএনপির আহ্বায়ক মোজাফফর হোসেন এবং জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শাকিল আহমেদের অনুসারীদের মধ্যে।

সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে ইটের আঘাতে এএসআই আজাহার উদ্দিন মারাত্মকভাবে আহত হন। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার পর রাতেই তাঁকে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউতে পাঠানো হয়। আহত অন্যান্য পুলিশ সদস্যরা হলেন এসআই মনোয়ার তালুকদার এবং কনস্টেবল শুভ চৌধুরী বিশ্বাস।

এছাড়াও সংঘর্ষে বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে ইব্রাহিম বিশ্বাস, সোহেল সরদার, বাচ্চু ফকির, মিজানুর রহমান, মাহাবুর শেখ ও রতন রায়সহ অন্তত ৬ জন আহত হন।

একইদিন উপজেলার বাজুয়া এসএন কলেজে ছাত্রদলের পাঁচটি কলেজ ইউনিটের কমিটি গঠন প্রক্রিয়াও উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ায়। নির্বাচন শেষে নেতাকর্মীরা চালনায় ফিরে আসার পথে আবারও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওই সময় কিছু লোক নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায়।

দাকোপের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. জুবায়ের জাহাঙ্গীর বলেন, "ডাকাতিয়া খালের ইজারাকে ঘিরে যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে, তা অনভিপ্রেত। নিরাপত্তা বিবেচনায় ইজারা কার্যক্রম আপাতত স্থগিত করা হয়েছে।" তিনি জানান, পুলিশ ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করেছে এবং পরিস্থিতি এখন তাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সি সার্কেল) মফিজুর রহমান বলেন, “ঘটনার পর দুই পক্ষের দুইজনকে আটক করা হয়েছে। আহত পুলিশ কর্মকর্তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। পরিস্থিতি শান্ত রাখতে চালনায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।”

চালনা পৌর বিএনপির আহ্বায়ক মোজাফফর হোসেন অভিযোগ করেন, “শাকিল আহমেদ ও তাঁর ভাই আওয়ামী লীগের লোকদের নিয়ে বিএনপির অভ্যন্তরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করছেন।”

অন্যদিকে শাকিল আহমেদ বলেন, “আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছিলাম, কিন্তু মোজাফফর হোসেন ও তাঁর সহযোগীরা ছাত্রদলের সদস্যদের পথ আটকে মারধর করেন। এই ঘটনার ভিডিও প্রমাণ আমাদের কাছে আছে।”

খুলনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মন্টু বলেন, “ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা দলের অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলো নিয়ে জরুরি বৈঠক করেছি। পরবর্তী সিদ্ধান্ত শিগগিরই জানানো হবে।”

পাঠকের মতামত:

ট্যাগ: খুলনা

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ

স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ

একজন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ, সামাজিক ব্যবসার পথপ্রদর্শক এবং গণতান্ত্রিক উত্তরণের নেতৃত্বদানকারী রাষ্ট্রনায়ক—এই তিনটি পরিচয়ই এখন সমভাবে প্রযোজ্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের... বিস্তারিত