নিকুছড়ি সীমান্তে বাঁশ কাটতে গিয়ে বিস্ফোরণ, যুবকের পা উড়ে গেল

সারাদেশ ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ১৩ ১৭:৫০:০৭
নিকুছড়ি সীমান্তে বাঁশ কাটতে গিয়ে বিস্ফোরণ, যুবকের পা উড়ে গেল

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের নিকুছড়ি সীমান্তে আবারও ঘটে গেল একটি মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। শনিবার (১৩ জুলাই) সকাল ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে ৪২ ও ৪৩ নম্বর সীমান্ত পিলারের মাঝামাঝি এলাকায় বাঁশ কাটতে গিয়ে মাইন বিস্ফোরণে গুরুতর আহত হয়েছেন মো. হোসেন নামের এক যুবক। বিস্ফোরণে তার বাম পা সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

আহত মো. হোসেন কক্সবাজার জেলার উখিয়া উপজেলার হলুদিয়া পালং ইউনিয়নের পাড়া পাতাবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা। তিনি পেশায় একজন বাঁশ শ্রমিক এবং প্রতিদিনের মতো ওই দিনও বাঁশ কাটতে সীমান্তে যান। বাঁশ কাটার কাজ করার সময় হঠাৎ করেই বিস্ফোরণের বিকট শব্দে পুরো এলাকা কেঁপে ওঠে। মুহূর্তেই হোসেনের শরীর থেকে ছিটকে পড়ে তার বাম পা। আহত অবস্থায় স্থানীয়রা দ্রুত তাকে উদ্ধার করে প্রথমে কুতুপালং এমএসএফ হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে অবস্থার অবনতি হলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

হোসেনের মামা জসিম উদ্দিন জানান, হোসেন প্রতিদিনের মতো পাহাড়ি এলাকায় বাঁশ কাটতে গিয়েছিল। তখনই হঠাৎ মাটির নিচে পোঁতা মাইন বিস্ফোরিত হয়। বিস্ফোরণের তীব্রতায় পা ছিঁড়ে গিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এমন ঘটনায় পরিবার ও স্বজনরা শোকাহত ও ভীত।

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, সীমান্ত এলাকায় এমন দুর্ঘটনা দিন দিন বাড়ছে। বিশেষ করে মিয়ানমার সীমান্তবর্তী অঞ্চলে মাইন বিস্ফোরণের ঘটনায় সাধারণ মানুষের জীবনশঙ্কা বেড়েই চলেছে। কেবল গত এক মাসেই নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে অন্তত নয়জনের শরীর থেকে পা বিচ্ছিন্ন হয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। এসব ঘটনায় সীমান্তবাসীর মধ্যে চরম আতঙ্ক, উদ্বেগ ও নিরাপত্তাহীনতা দেখা দিয়েছে। শিশু, কিশোর থেকে শুরু করে দিনমজুর—সবাই রয়েছে ঝুঁকিতে।

গ্রামবাসীরা অভিযোগ করে বলেন, সীমান্তে মাইন পোঁতা থাকলেও এ বিষয়ে স্থানীয়দের সতর্ক করা হয় না। সাইনবোর্ড, চিহ্ন কিংবা সতর্কতা সৃষ্টিকারী কোনো পদক্ষেপ নেই। ফলে মানুষ অনিচ্ছাকৃতভাবে এসব বিপজ্জনক এলাকায় কাজ করতে গিয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। তারা সীমান্ত এলাকায় নিয়মিত সেনা ও বিজিবির টহল, জনসচেতনতামূলক প্রচার ও প্রয়োজনীয় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, “ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক এবং আমরা এটি গুরুত্বসহকারে দেখছি। সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোর নিরাপত্তা জোরদারে প্রশাসন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।”

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ