গভীর রাতে বন্ধুর ঘরে রক্তাক্ত হত্যাকাণ্ড, রহস্যে পুলিশ

সারাদেশ ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ১৩ ১৫:১৬:০১
গভীর রাতে বন্ধুর ঘরে রক্তাক্ত হত্যাকাণ্ড, রহস্যে পুলিশ

জামালপুরের মাদারগঞ্জে রাতের আঁধারে একটি নির্মম হত্যাকাণ্ডের ঘটনা স্থানীয় জনগণের মধ্যে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে দিয়েছে। ঘুমন্ত অবস্থায় বাড়িতে ঢুকে এক কলেজছাত্রকে গলা কেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা, একইসঙ্গে গুরুতর আহত করা হয়েছে আরেক যুবককে। বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) গভীর রাতে উপজেলার চরপাকেরদহ ইউনিয়নের ককোয়ালিকান্দি গ্রামে ঘটে এই মর্মান্তিক ঘটনা, যা শুক্রবার দুপুরে প্রকাশ্যে আসে।

নিহত কলেজছাত্রের নাম মাসুদ (১৯)। তিনি ককোয়ালিকান্দি গ্রামের সম্রাট প্রামাণিকের ছেলে এবং স্থানীয় তেঘুরিয়া শাহেদ আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্র ছিলেন। মাসুদের পাশাপাশি আহত যুবক রুবেল (২৬), একই এলাকার বাসিন্দা ও আলতাফুর রহমানের ছেলে। জানা গেছে, দুজনেই বিদেশ যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন এবং সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ঘনিষ্ঠভাবে চলাফেরা করতেন।

স্থানীয় ইউপি সদস্য জগলুল হক রিমু জানান, বৃহস্পতিবার রাতে রুবেলের পরিবারের অন্য সদস্যরা বাড়িতে না থাকায় তিনি প্রতিবেশী মাসুদকে তার ঘরে এনে রাত কাটান। পরদিন সকাল পর্যন্ত ঘর থেকে কেউ বের না হওয়ায় আশেপাশের লোকজন সন্দেহ করে তাদের ডাকাডাকি শুরু করে। দুপুর ১২টার দিকে বাড়ির লোকজন দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে মারাত্মক দৃশ্যের মুখোমুখি হন—মাসুদ নিথর দেহে রক্তাক্ত অবস্থায় মেঝেতে পড়ে আছেন, আর রুবেল গলায় গুরুতর জখম নিয়ে অসুস্থ অবস্থায় পড়ে আছেন।

আহত রুবেলকে প্রথমে মাদারগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে দ্রুত জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। চিকিৎসকদের মতে, তার অবস্থা এখনও আশঙ্কাজনক। পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেছে, তবে এই ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত এবং তাদের উদ্দেশ্য কী ছিল তা তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি।

এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর থেকে পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। সাধারণ মানুষ এমন নির্মম ঘটনাকে অভূতপূর্ব ও গভীর উদ্বেগজনক হিসেবে দেখছে। স্থানীয়ভাবে মাসুদ একজন নিরীহ ও শান্ত স্বভাবের ছেলে হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তার হঠাৎ এইভাবে প্রাণ হারানোতে এলাকাবাসীর মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। অপরদিকে, আহত রুবেলের জ্ঞান ফিরলে ঘটনার বিষয়ে আরও তথ্য পাওয়া যাবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

পুলিশ বলছে, ঘটনাটি পরিকল্পিত হত্যা নাকি ব্যক্তিগত কোনো দ্বন্দ্বের পরিণতি, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ইতিমধ্যে সন্দেহভাজনদের চিহ্নিত করতে তদন্তকারী দল কাজ শুরু করেছে। পরিবারের সদস্য ও প্রতিবেশীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে, আশপাশের এলাকা নজরদারিতে রাখা হয়েছে।

এ ঘটনায় এলাকাবাসী দ্রুত বিচার ও অপরাধীদের গ্রেপ্তার দাবিতে প্রতিবাদ জানিয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে, যেন তদন্ত কার্যক্রম দ্রুত শেষ করে দোষীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা হয়।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ