সব অপরাধের বিরুদ্ধে চিরুনি অভিযান শুরু: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা  

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ১৩ ১৪:২৮:০২
সব অপরাধের বিরুদ্ধে চিরুনি অভিযান শুরু: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা  

রাজধানীসহ সারাদেশে অপরাধ ও সন্ত্রাস নির্মূলে বিশেষ বা চিরুনি অভিযান আজ (রোববার, ১৩ জুলাই) থেকেই শুরু হচ্ছে বলে ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

তিনি জানান, দেশব্যাপী ক্রমবর্ধমান অপরাধ পরিস্থিতি বিবেচনায় এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। খুন, চাঁদাবাজি, মাদক, নারী নির্যাতন, অপহরণ, সন্ত্রাস, ছিনতাই, ডাকাতি, এবং সীমান্তপথে মাদক চোরাচালানসহ যে কোনো ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িতদের দ্রুত শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে এই চিরুনি অভিযান পরিচালিত হবে।

রোববার সকালে সচিবালয়ে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এই ঘোষণা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।

তিনি বলেন, “দেশে জননিরাপত্তা ও জনশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান আরও জোরদার করা হচ্ছে। পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে সরকারের পক্ষ থেকে আজ থেকেই চিরুনি অভিযান চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।"

এই অভিযানে সাধারণ মানুষের সহায়তা অত্যন্ত প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, “অপরাধীরা জনগণের মধ্যেই লুকিয়ে থাকে। তাই সমাজ থেকে অপরাধ দূর করতে হলে সাধারণ জনগণের সচেতনতা ও সহযোগিতা অপরিহার্য।” তিনি এও জানান, এই অভিযানের আওতায় কোনো নিরীহ বা সাধারণ মানুষ যাতে হয়রানির শিকার না হন, সে বিষয়ে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সব সময় মাঠে আছে। তবে এখন থেকে চিহ্নিত অপরাধীদের ধরতে প্রতিটি এলাকায় এলাকায় নিয়মিত অভিযানের পাশাপাশি বিশেষ চিরুনি অভিযান পরিচালিত হবে।”

তিনি আরও বলেন, “সরকার কোনো অবস্থাতেই জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী কার্যক্রম বরদাশত করবে না। যদি কেউ ভেবে থাকে, আইনের চোখ ফাঁকি দিয়ে পার পাওয়া যাবে, তাদের জন্য এটা সতর্কবার্তা—এখন থেকে কোনো অপরাধীই রেহাই পাবে না।”

সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “চিরুনি অভিযান আজ থেকেই শুরু হয়েছে। বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা ও বাহিনী সমন্বয়ে এ অভিযান পরিচালিত হবে। যেখানে অপরাধ প্রবণতা বেশি, সেখানে বিশেষ নজর দেওয়া হবে।”

উল্লেখ্য, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে খুন, সন্ত্রাস, ধর্ষণ ও মাদকের বিস্তার নিয়ে জনমনে উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে। ঢাকার মিটফোর্ড এলাকায় প্রকাশ্যে একজন ব্যবসায়ীকে পাথর মেরে হত্যার ঘটনা এবং বিভিন্ন স্থানে সহিংস সংঘর্ষের প্রেক্ষিতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

এমন পরিস্থিতিতে সরকারের এই চিরুনি অভিযানকে জনসাধারণ ইতিবাচকভাবে দেখলেও, মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, অভিযান পরিচালনার ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও মানবাধিকার রক্ষার বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব পেতে হবে।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ