দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আপিল: ৫৮৭ দিনের বিলম্ব মঞ্জুর হাইকোর্ট

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ মে ১৩ ১২:৫২:১৬
দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আপিল: ৫৮৭ দিনের বিলম্ব মঞ্জুর হাইকোর্ট

সত্য নিউজ:দুর্নীতির অভিযোগে তিন বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান দেশে ফিরে মামলার বিরুদ্ধে আইনি লড়াই শুরু করেছেন। সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় আপিল করতে বিলম্ব হওয়ায় ৫৮৭ দিনের সময়মাফ চেয়ে তাঁর করা আবেদন আজ (মঙ্গলবার) হাইকোর্টে মঞ্জুর হয়েছে।

বিচারপতি মো. খসরুজ্জামানের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন। আদালতে জুবাইদার পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন ও অ্যাডভোকেট কায়সার কামাল। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আসিফ হাসান।

জুবাইদার আইনজীবী কায়সার কামাল বলেন, “ফৌজদারি কার্যবিধি অনুসরণ করে সময়মাফের আবেদনটি করা হয়। আদালত আইনের আলোকে তা মঞ্জুর করেছেন। এখন নিয়ম অনুযায়ী মূল আপিল দায়ের করা হবে।”

প্রেক্ষাপট ও মামলার ইতিহাস

২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর কাফরুল থানায় সম্পদের তথ্য গোপন ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তারেক রহমান, জুবাইদা রহমান এবং জুবাইদার মা সৈয়দা ইরিনা রহমানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ২০০৮ সালে এই মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।

দীর্ঘ বিচারপ্রক্রিয়া শেষে ২০২৩ সালের ২ আগস্ট ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. আছাদুজ্জামান এই মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে তারেক রহমানকে ৯ বছর এবং জুবাইদা রহমানকে ৩ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। রায় ঘোষণার সময় তাঁরা কেউই দেশে উপস্থিত ছিলেন না।

স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ও সাজা স্থগিতাদেশ

সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে ২০২৩ সালের মে মাসে যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফেরেন জুবাইদা রহমান। তিনি দীর্ঘ ১৭ বছর যুক্তরাজ্যে অবস্থান করেন এবং এই সময়ের মধ্যে রাজনৈতিক ও আইনি জটিলতায় দেশে ফিরতে পারেননি।

দেশে ফেরার পর জুবাইদা রহমান সরকারের কাছে সাজা স্থগিতের আবেদন করেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ ২০২৩ সালের ২২ সেপ্টেম্বর তাঁর সাজা এক বছরের জন্য স্থগিত করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মতামতের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত হয়।

বিলম্ব ও আপিল

আজ হাইকোর্টে বিলম্ব মাফ সংক্রান্ত শুনানিতে বলা হয়, আপিল করতে বিলম্বের যৌক্তিক কারণ রয়েছে। যুক্তরাজ্যে অবস্থান এবং দেশে ফেরার পরের প্রক্রিয়াগত জটিলতা বিলম্বের মূল কারণ বলে উল্লেখ করা হয়। আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে সময়মাফের আবেদন মঞ্জুর করেন।

দলীয় প্রতিক্রিয়া ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট

বিএনপির পক্ষ থেকে এই মামলা শুরু থেকেই ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে দাবি করা হয়েছে। জুবাইদা রহমানকে নিয়ে দলটি রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় হওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে। তাঁর দেশে ফেরা ও আপিল প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সক্রিয় রাজনীতিতে প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা চলছে।

আইনগত প্রক্রিয়ায় জুবাইদা রহমানের এই অগ্রগতি রাজনৈতিক ও বিচারিক উভয় দিক থেকেই গুরুত্বপূর্ণ। এখন দেখার বিষয়, আপিল বিচারাধীন অবস্থায় মামলার কী পরিণতি হয় এবং তাতে রাজনৈতিক অঙ্গনে কী প্রভাব পড়ে।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ